চুক্তির_বিয়ের_সংসার পর্বঃ১১_এবং_শেষ পর্ব

0
3130

চুক্তির_বিয়ের_সংসার
পর্বঃ১১_এবং_শেষ পর্ব

রাজ অসহায়ের মতো করুন দৃষ্টিতে মৌর দিকে তাকিয়ে আছে। রাজ কোনো কথা বলতে পারছে না।

-এদিকে মৌ রাজকে চর মারায় মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। এখন যেনো তার কাছে কেমন লাগছে।
-রিচি তার মাকে বলতেছে বাবাইকে কেনো মারলে.?
– মৌ কোনো কথা বলছে না।
-রিচি দৌড়ে গেলো বাবাইয়ের কাছে,বাবাই তুমি কষ্ট পেয়ো না। মা তোমাকে ইচ্ছে করে মারে নি।

-রাজ কষ্ট গুলো চেপে রিচিকে কোলে নিয়ে বলতেছে না বাবাই আমার আবার কষ্ট কীসের। এসব আমার প্রাপ্ত।
-এদিকে মৌ তাদের কথা বার্তা নির্বাক হয়ে শুনে যাচ্ছে।
– রাজ রিচির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মৌকে বললো আর তোমাদের বিরক্ত করতে আসবো না। আরাল থেকে তোমাদের ভালোবেসে যাবো। ভালো থেকো তুমি।
-এ বলে রাজ মৌয়ের ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর পিছনে তাকাচ্ছে।
– মৌয়ের মন চাইছে রাজকে আটকাতে। কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না ।
-রাজ চলে গেলো। মৌ রিচিকে বুকে নিয়ে কান্না করছে। রিচি তার মাকে বললো মা আমার বাবাইকে নিয়ে আসো। আমি তোমাদের এক সাথে দেখতে চাই।
-রাজ বাড়িতে ফিরে এসে এসব নিয়ে চিন্তা করতে লাগলো। যদি আজ রাতের স্বপ্নের মতো আমার জীবনের অধ্যায় সত্যি হতো। এদিকে রাজের শরীরে অনেক জ্বর উঠতে লাগলো। অচেতন অবস্থায় রাজ শুধু মৌ ডেকে যাচ্ছে।
-রাজের বোন রিও রাজকে বার বার ফোন করছে। কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই। রাজ ফোন রিসিভ করছে না। তাই সে তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আসলো।
– এসে দেখলো……
-রাজ বিছানায় শুয়ে আছে। রিত্তি যখন রাজকে ডাকতে গিয়ে গায়ে হাত দিলো দেখে জ্বরে গাঁ পুড়ে যাচ্ছে।

-মৌর মনটা যেনো কেমন করছে। সারারাত ঘুমাতে পারেনি। তার সাথে ওমন ব্যবহার করা ঠিক হয়নি,এসব নিয়ে চিন্তা করতে লাগলো। কারণ সেও তো রাজকে অনেক ভালোবাসে।আর ভালোবাসে বলেই পরে আর বিয়ে করে নাই।রিচিকে নিয়ে জীবন পার করে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।আর ওই গুলা মৌ এর অভিনয় ছিলো রাজকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।একটু বুজানোর জন্য যে কষ্ট পেলে নিজের কেমন লাগে।কিন্তু রাজতো তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিল তাহলে কেনো আমি এমন করলাম ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেছে। মৌ খেয়াল করলো তার ফোনটা বাজঁতেছে। অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসছে। কল রিসিভ করতেই বুজতে পারলো এটা রিও করেছে। রিওি বলে উঠলো রাজ ভাইয়ের অনেক জ্বর। ভাইয়া অচেতন অবস্থায় শুধু আপনার নাম বলে যাচ্ছে। আপনি পারলে একবার আসুন। এই বলে ফোনটা কেটে দিলো।
-মৌ কথাটা শুনে আর স্থির হয়ে থাকতে পারলো না। কোনো রকম ফ্রেশ হয়ে তার মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। খুব সকালে এভাবে যাওয়াতে তার মেয়ে বিচলিত হয়ে মাকে প্রশ্ন করলো মা আমরা কোথায় যাচ্ছি? মৌ তার মেয়েকে বললো মা আমরা তোমার বাবাইয়ের কাছে যাচ্ছি। রিচি বললো মা আমরা কী বাবাকে নিয়ে আসবো.? হা মা আমরা তাকে নিয়ে আসবো।
– এদিকে রাজের বোন রাজের মাথায় পট্টি দেওয়াতে কিছুটা জ্বর কমে আসছে।
– মৌ কিছুক্ষণের মধ্যে রাজের বাসায় চলে আসলো। রাজের পাশে মৌ কান্না করছে। রিচি বাবাইকে বলছে, বাবাই তোমার কী হয়েছে? চিন্তা করো না আমরা তোমায় নিতে আসছি।
-রাজ মৌ ও রিচিকে দেখে অবাক হয়ে গেছে। কারণ তাদের তো এখানে আসার কথা না। রাজ মৌকে বলতেছে তোমরা এখানে.? আমি তো তোমাদের অনেক বিরক্ত করি। তাইতো কথা দিয়েছি আর বিরক্ত করবো না তোমাদের।
– মৌ রাজকে বলছে, প্লিজ এমন করে বলো না। আমি না জেনে তোমায় অনেক কষ্ট দিয়েছি। যা একজন আর্দশ্য স্ত্রী হিসেবে আমার করা ঠিক হয়নি। এক্সিডেন্টের পর আমি নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করি। এজন্য মনে মনে তোমাকে দোষারোপ করতে থাকি। আমি তোমার থেকে নিজেকে অনেক দূরত্বে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার ভালোবাসা আমাকে তোমার কাছে নিয়ে আসছে।
জানো প্রতিটা রাত তোমার জন্য আমার হৃদয় কেঁদেছে। যখন তুমি আমায় পেতে আমার কাছে আসছো, আমি তোমাকে নানাভাবে অপমান করে তাড়িয়ে দিছি। আজ আমি বুঝতে পারছি তোমাকে এভাবে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল না। তাইতো তোমার কাছে ফিরে এসেছি। বড্ড ভালোবাসি তোমায়।
-রাজের চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল মৌ এর কথাগুলো শুনে। মৌকে বলছে ভুল তোমার নয়। আমিই সেইদিন ভুল করে ছিলাম।তোমাকে বুঝতে পারি নি। কালসাপিনী কে পাওয়ার জন্য তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। ওর জন্য তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিই নি। তাইতো আমার করুন অবস্থা। দুই হাত তুলে মৌয়ের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।
– মৌ রাজের হাত দুটো ধরে বললো কি বলছো এসব। আমাদের মাঝে যা হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভালোর জন্যই করেছেন। এই বলে রাজকে জড়িয়ে ধরলো। রিত্তি ও রিচি দুজনেই খুশিতে আত্মহারা। রিচিও তার বাবাইকে জড়িয়ে ধরলো।
– রাজ বললো তোমরা আমার একেকটা কলিজা, ভালোবাসি তোমাদের। রাজ মৌকে বলতেছে আমরা আবার সংসার করবো☺
-মৌ বলছে হুম করবোই তো সংসার
-রিচি মাঝখান থেকে বলে উঠলো বাবাই মা আমাদের সংসারের নাম হবে সুখের সংসার??
-কথাটা শুনে সবাই হেসে দিলো।
মৌ আর রাজ আর তাদের মেয়ে এখন অনেন হ্যাপি।

সমাপ্ত

লিখা_রাইসা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here