চোখের_তারায়_তুই? #পর্ব_৩৯

0
820

?#চোখের_তারায়_তুই?
#পর্ব_৩৯
#ইভা_রহমান

ভয়ে ভয়ে শিশিরের পিঠের ঠিক সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লো রোদেলা। রাতের নীরবতায় রোদের নিশ্বাসের তপ্ত শ্বাসের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে স্পষ্ট। সে-ই শ্বাসের ছোঁয়া গিয়ে লাগছে শিশিরের পিঠে। কিন্তু শিশির সেই ছোঁয়া টাকেও আজ অগ্রাহ্য করে ইচ্ছে মতো সিগারেট টেনে যাচ্ছে তো যাচ্ছে। যেনো শরীরের কোনো হেলদোল নেই বুঝি আর তার মধ্যে। থাকতে না পেরে অকপটে শিশিরকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো রোদেলা। এক ফোঁটা দু ফোঁটা করে অশ্রু ফেলতে ফেলতে অঝোরে কেঁদে ভাসিয়ে দিলো মেয়েটা। সেই অবিরত অশ্রুফোটা নিমিষে ভিজিয়ে দিলো শিশিরের শার্ট কিন্তু এ-ই পাথরটাকে দেখো,মেয়েটা এতো কাঁদছে তবুও তার কোনো আক্ষেপ’ই হচ্ছে না!

– এখনো নিজের এই রোদরানির সাথে কথা না বলে থাকবে। আমার কি দোষ ছিলো এতে। আমি নিরুপায় ছিলাম সেদিন। সহ্য করতে পারিনি তোমার ঔ পরিস্থিতি। আমার কাছে আর কোনো উপায় ছিলো না এটুকুতো বুঝো তুমি।

তাচ্ছিল্যের এক হাসি টেনে হাতের সিগারেট টা সামনে ছুঁড়ে ফেললো শিশির। শিশিরের এ-ই অসহ্য রকম এ্যাটিটিউট দেখে রেগেমেগে আরো কাঁদতে শুরু করলো রোদেলা। কেনো বুঝতে চাইছে না শিশির যে, তার সত্যি খুব কষ্ট হচ্ছে,খুব কষ্ট!

– কথা-ই যখন বলবে না তখন নিয়ে আসলে কেনো। খুব তো বাবাকে বলে আসলে আমার দায়িত্ব নিবে,আমাকে সারিয়ে তুলবে আর এখন, এখন ইগো দেখানো হচ্ছে আমাকে। কথা বলবে না তো বেশ,তাহলে আমিও থাকবো না আর এ বাড়িতে, চলে যাবো,অনেক দূরে চলে যাবো আর এমন জায়গাতে যাবো এবার যে তু..

আর কিছু বলতে পারলো না রোদেলা। তার আগেই তার এক হাত টেনে সামনের এক পিলারে ধাক্কা দিয়ে তাকে চেপে ধরলো শিশির। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিয়ে রাগানিত্ব সুর টেনে বললো,

– সত্যি কোনো উপায় ছিলো না না সেদিন। খুব হেল্প লেস ছিলা তুমি তাই না। তাহলে এরপরো ফিরে আসলে না কেনো তুমি, ডিভোর্স হয়ে যাবার পরো কেনো পড়ে থাকলে ঔ রানার কাছে। বলো কেনো থাকলে?

এতো উঁচু কন্ঠে কথাটা বললো শিশির যে ভয়ে আবার কেঁদে উঠলো মেয়েটা।

– তুমি ভূল বুঝছো,আমি বাধ্য হয়ে পড়ে ছিলাম ওখানে। আরমান আমাকে তোমার জানের ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন এসব অবৈধ কাজে..

রোদকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রোদের ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে তাকে থামিয়ে দিলো শিশির। কান্না ভেজা কন্ঠে বললো,

– ইউ নো রোদ সেদিন যখন ঔ ইনস্পেকটর টা আমার সারা শরীরে আঘাত করছিলো না আমি একটুও ব্যাথা পাইনি বিশ্বাস করো একটুও না। ব্যাথা আমার কখন লাগছে জানো, বলো কখন?

– আমি কি করে জানবো কখন!

– তাহলে শুনো, তোমাকে এ-ই অবস্থায় দেখে ব্যাথা লাগছে আমার। তোমাকে এই পোশাকে দেখে কষ্ট পাইছি আমি। তোমাকে নেশা করতে দেখে আঘাত লাগছে আমার,খুব আঘাত। মনে হচ্ছিলো তুমি আমার ভেতর থেকে না এ-ই আমি টাকেই পিষে মা*রতেছিলা। ম*রে যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো আমার জানো।

– সরিই তো। আমি তো বলছি আমি বুঝতে পারিনি তুমি এতো কষ্ট পাবা।

রাগিসুরে শিশির বললো,

– তুমি ছোট বাচ্চা যে কিছু বুঝো না। আমার উপর তোমার এতটুকু বিশ্বাস ছিলো না। এতটুকু না। আসলে কি জানো রোদেলা তুমি কোনো দিন আমাকে ভালোবাসোনি,ভালোবাসার ভীত টাই তৈরি হয় বিশ্বাসে যেটা তুমি করতে পারোনি রোদ। পারোনি বিশ্বাস করতে আমায়।

আরো কেঁদে ভাসিয়ে রোদ বললো,

– তোমাকে কখনো কেউ আমার মরবার হুমকি দেয়নি তো তাই তুমি বুঝো না আমার কষ্ট টা। যদি দিতো বুঝতা প্রিয়জনকে হারানোর ভয় টা কিরকম। আমি তো নিজে থেকে খারাপ হয়নি। ওরা বানিয়েছে আমাকে খারাপ। আমার এমনি এমনি নেশা হয়নি ওরা আমাকে নেশা ধরিয়েছে। কোন ভালো মানুষ চায় নিজের আসল রুপ টা বদলে এই মুখোশে পরিণত হতে। বলো। বলো কেউ কি চায়। কিন্তু আমি চাইছি তোমাকে ভালোবাসি বিধায় চাইছি,তবুও তুমি বুঝলা না আমাকে,এখনো রাগারাগি করে গেলা..

কান্নারত রোদকে বুকে আগলে একদম শক্ত করে ধরে নিলো শিশির। রোদের মাথায় চুমু এঁকে বললো,

– আর কখনো আমার সামনে এভাবে কাঁদবি না রোদ তুই। মনে থাকবে।

চোখ মুছে মাথা নাড়ালো রোদেলা। হুম মানে মনে থাকবে!

!
!

আর একটা দিন অবধি দেড়ি করেনি শিশির। পরেরদিনই কাজিকে ডেকে দুপুর বারোটার মধ্যে বিয়েটা সম্পূর্ণ করে সে। রোদের সাথে একটা মুহুর্তের দূরত্ব যেনো সহ্য হচ্ছিলো না তার। তাই যতদূত পারা যায় একটা পবিএ বৈবাহিক সম্পর্কে সে রোদকে বাঁধিয়ে নিজের নামের পাশে জায়গা দিতে পাগল হয়ে ওঠে। এদিকে এরকম পানসে পানসে নিজেদের বিয়ে হবে বিষয়টা রোদ আর শিশির উপভোগ করলেও হিয়া মহারানী তো প্রচুর ক্ষি*প্ত হয়ে আছে। কোথায় সারারাত ভাবলো আজকে আগে কি কি প্ল্যানিং চলবে,কি জামা জুতা পড়বে কি আহামরি খাবারদাবারের আয়োজন হবে তা না শুধু মিষ্টি মুখ করেই কাজি সাহেব বিয়ে মিটিয়ে দিলো। না না এটা তো পুরাই বেআইন সাফি।

– আমি জানি না আমি আমার নিজের বিয়ের সময়ো একটা সাজার সুযোগ পাইনি। কোথায় ভেবেছিলাম নিজের বিয়েতে বেনারসি পড়ার সুযোগ পায়নি তো কি হইছে ভাইয়ার বিয়েতে আমি বউয়েরো বউ সাজবো কিন্তু তুই,তুই আমাকে এই বাসি জামা পড়িয়ে দিয়েই বিয়ে করে নিলি। না আমি খেলবো না। এভাবে হবে না। আমি আমি এখন নিজেও ঠোঁটে লিপিস্টিক দিয়ে সাজবো আর রোদ আপুকেও বউ সাজিয়ে দেবো। তারপর তোরা আবার বিয়ে করবি। কবুল বলবি। বল বলবি?

রোদ অভিমান রত হিয়াকে আগলে ধরে বললো ” ঠিক আছে বুড়ি আমরা সাজবো,সবাই গেলে তুই আমাকে একটা শাড়ি পড়িয়ে বউ সেজে দিস কেমন” হিয়া শুনলো না কাজি আঙ্কেল টাকে গিয়ে বললো,

– এ-ই যে কমলা দাঁড়ি ওয়ালা আঙ্কেল শুনুন এদিকে,এখন যাচ্ছেন যান কিন্তু রাতে কিন্তু খাবার-দাবার এর আয়োজন হচ্ছে হ্যা তখন না আসলে কিন্তু খবর আছে আপনার। আপনি আসবেন খাবেন আর সাথে আরো একবার বিয়ে পড়িয়ে দেবেন কেমন।

শিশির চোখ বড়বড় করে হিয়ার দিকে তাকাতেই উজানের পেছনে ঘাপটি দিয়ে লুকিয়ে পড়লো হিয়া। শিশির চাচাসহ কাজির সাথে বের হতে চাচা কাজিকে উদ্দেশ্য করে বললো,

– রাতে কিন্তু পরিবার সহ বাড়িতে আসতেই হবে আপনাকে। এখন তো কিছু আয়োজন করার সুযোগ টাও এই বদমাইশ টা দিলো না। তবে রাতে আর কারো না শুনছি না আমি।

কাজি সাহেব অভয় জানিয়ে বললেন বেশ তাই আসবো। কাজি বিদায় নিতে রাতের আয়োজনের জন্য বেড়িয়ে পড়লেন চাচু। এদিকে দাদি আর চাচির সাথে রোদের গল্প দিতে ঘড়িতে তখন দুইটার কাটা ছুঁই ছুঁই। দাদি নামাযের জন্য এ বাড়িতে আসতেই চাচি আসলো দুপুরের ভাত টা সবার জন্য হটপটে বেড়ে দিয়ে আসতে। সবাই তো ভেবেছিলো চাচি হয়তো এই বিয়ের বিষয়টা নিয়ে একটু হলেও কথা কাটাকাটি করবে কিন্তু আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি ওনার মাঝে কথার কোনো বর্ণ তো দূর বরং উনি হাসিখুশি ভাবেই রোদকে গ্রহন করতে ব্যস্ত।
!
শিশিরের রুমে স্তুপরত দুটো বালিশের উপর মাথাটা একটু হেলিয়ে শরীর টা মেলে দিলো রোদেলা। অনেক সময় বাদে একটু একা থাকার সুযোগ হলো তার সেই সুবাদে শিশিরের রুমটাকে চক্ষুকোটরের সব দিয়ে দেখতে যেনো মগ্ন মেয়েটা। সাথে মগ্ন সকাল থেকে হয়ে যাওয়া এক একটা সত্যি হওয়া স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি মনের দৃষ্টি দিয়ে পুনরাবৃত্তি করে দেখতে। দুদিন আগেও কি সে ভেবেছিলো শিশিরের বউ হবার,শিশিরের আদর নেবার স্বপ্ন গুলো তার এভাবে পূরণ হবে। আচ্ছা আজকে তো শয়ীরত মোতাবেক সত্যি সত্যি বিয়ে হলো তাদের, এখন কি শিশির তাকে তার সেই কাঙ্ক্ষিত আদর করবে। ভাবতেই লজ্জায় গাল গুলো পুরো রক্তিম আভাতে যেনো ভরে উঠলো মেয়েটার। আনমনে মুচকি হেঁসে দিতেই শিশির এসে উপস্থিত হলো রুমে। মুহুর্তে হাসিটা মলিন হয়ে চুপসে গেলো। ঠিক হয়ে একটু বসে নিতে শিশির এসে পাশে বসলো তার। রাতের পর থেকে ঔ দরকারি এক দুটো কথা ছাড়া কোনো কথাই বলে নাই এই খাটাস টা। এখন আবার কি বলতে আসছে শুনি।

– তোমার আর রানার ডিভোর্সের পেপার কার কাছে?

– আমার কাছেই আছে কেনো?

– কোথায় আছে?

– আমার কাছে আছে বলতে বগুড়াতে আমি যেই মামনির বাড়িতে ছিলাম ঔ মামনির কাছে আছে। লাগবে ওটা?

– তারমানে আমি যেদিন ঔ ভদ্রমহিলার সাথে দেখা করে আসি সেদিন তুমি বাড়িতেই ওনার কাছে ছিলা?

জিহ্ব কাটলো রোদেলা,কিরকম কথার জালে ফাঁসিয়ে দিলো দেখো,কি উওর দেই এখন,কখনো মিথ্যা বলবো না বলে তো কথা দিয়েছি কাল,এখন সত্য না বললেও তো নয়!

– হ্যা মানে ঔ কি বলো তো আমার মাথায় তো তখন অন্য কিছু চলছিলো না তাই আমি ঔ ভেবে..

– ইউ নো রোদ তুমি কোনোদিন আমাকে ভালোবাসোনি,নাহলে সেদিন আমাকে দেখার পরো পারতে না আমার সামনে এসে না দাঁড়িয়ে থাকতে।

রোদ দুহাতে শিশিরের গলা জড়িয়ে আদুরে সুর টেনে বললো,

– সরিই না। এখনো তুমি ঔ নিয়ে থাকবে। আজ আমাদের বিয়ে হলো,এরপর আমি একটু সাজুগুজু করবো,আমাদের ফুলসজ্জা হবে,তুমি আমাকে আদর করবে,ইশশ আমার কত্তোদিনের স্বপ্ন তোমার আদর নেবার,,বলো বলো কতো আদর দিবে আজ আমায়,বলো?

– তোকে তো আমি জীবনেও আদর করবো না। সেদিন থানা থেকে বের হবার সময় ভেবেছিলাম তোকে এবার গিয়ে অনেক আদর করবো কিন্তু এসে কি শুনি মহারানী আমাকে বাঁচাতে গিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে। বাহ চমৎকার। বুঝো সেই কষ্ট টা আমার তুমি। বুঝো না। বুঝতে পারবাও না।

রোদেলা শিশিরের রাগান্বিত নাকটা টেনে দিয়ে বললো,

– সরি সরি সরি। কোথায় তোমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমি এতো বড় স্যাকরিফাইজ করলাম,আমাকে তুমি বাহ বাহ দিবা আর দেখো উল্টে তুমি কি করছো। এটা কিন্তু একদম ঠিক না হ্যা।

কিছু বললো না শিশির। হালকা করে মাথা নাড়িয়ে চোখ নামালো। রোদ শিশিরের গলা আরো সুন্দর মতো জড়িয়ে নিয়ে বললো,

– আচ্ছা বাদ দেও না। আর কতো অভিমান করে থাকবে,এ-র চেয়ে সেদিন থেকে জমানো সেই আদর গুলো সুদে আসলে আজ পূরণ করে দিও কেমন…… তবে তুমি এখন সেই আবেগ নিয়ে আমাকে আদর না করতেও পারো। আফটার ওল আমি একজনের বিয়ে করা বউ ছিলাম,কতো ছেলের সাথে ওঠা বসা করেছি তুমি তো ভাবতেই পারো না যে আমি..

আর কিছু বলতে পারলো না রোদেলা। তার আগেই আবারো এক মারাত্মক চড় এসে পড়লো তার গালে। তব্দা খেয়ে চোখ দিয়ে এক ফোঁটা অশ্রুও গড়িয়েও পড়লো নিমিষে! রোদের ঘাড়ে হাত চেপে রোদকে নিজের কাছে এনে ঠেকালো শিশির, রাগান্বিত দৃষ্টি ছুঁড়ে বললো,

– তুমি একশোটা ছেলের সাথেও থেকে এসে যদি আমাকে বলো না আমি তোমাকে গ্রহন করবো কি না। আমি তাও তোমাকে গ্রহন করবো রোদ। এতোটাই ভালোবাসে এ-ই শিশির তোমাকে। কিন্তু আপসোস তুমি বুঝোনি। তোমার সেই বুঝটাই নেই।

ঠোঁট কামড়াতে শুরু করলো রোদেলা। রাগ ভাঙ্গাতে গিয়ে তো আরো রাগিয়ে দিলো ছেলেটাকে। কি করে সে এখন। কিছু না বুঝতেই শিশিরের ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে একটা দীর্ঘ চুমু আঁকলো সে। রাগের সাথে এরকম আদরের পর্ব আহা! কোনটা উপভোগ করবে শিশির এখন! না খাটাস মশাই রাগ টাকেই প্রাধান্য দিলো। রোদকে ছাড়িয়ে দিয়ে রুম থেকে বের হতে হতে বললো” রাগ তুলবি না আমার,নাহলে রাতে তোকে আস্ত রাখবো না” লজ্জায় লাল হয়ে বালিশে মুখ লুকালো রোদেলা। ইশশ এতো বাজে এই ছেলেটা!

!
!

কাবাডের সামনে দাঁড়িয়ে রাতে কি শাড়ি পড়ে একটু সাজুগুজু করবে তাই খুঁজতে ব্যস্ত হিয়া। সাথে ব্যস্ত তার প্রাণপ্রিয় ভাইয়ের পিন্ডি কিভাবে চটকানো যায় তার বদবুদ্ধি খুঁজতে। মানুষ এরকমো হয়। এতো ডেস্পারেট। আরে রোদ আপু কি পালিয়ে যাচ্ছে নাকি আবার যে একটুও তর সহ্য হলো না তার। ঘুম থেকে উঠেই সোজা বিয়ে। এটা কোনো কথা!

– কি শাড়ি পড়বো এখন আমি। আর রোদ আপুকেই বা কি পড়তে দেবো। মানুষ তো নিজের বউয়ের জন্য হলেও একটা শাড়ি গহনা কিনে বিয়ে করে আর ভাইয়াকে দেখো। ভাইয়াকেই বা বলছি কি আমি নিজেই বা কি পড়েছিলাম বিয়েতে। আমার বরটাও তো ঔ একি গোয়ালের গরু ছিলো না! হবেই তো____আআআ রাগে মনে হচ্ছে ভাইয়ার মাথায় পেট্রোল জ্বালিয়ে সব চুলে আগুন লাগিয়ে দেই। কতো করে উজানটাকে বলছি রাতে তো আসবে সবাই এখন এই দুপুরে গিয়ে একটু মার্কেট থেকে ঘুরে আসলে কি ক্ষতি হয় কিন্তু না ওনার তো যেনো সময়ই নেই। কেউ ভালো না কেউ না।

হিয়াকে কাবাডের সামনে জামাকাপড় আউলিয়ে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বকবক করতে দেখে বিছানা ছেড়ে ফোন রেখে উঠে আসলো উজান। হিয়াকে পেছন থেকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিতেই রাগে নিজেকে ছাড়র আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকলো হিয়া।

– ছাড়ো নাআআআ,দরজা খোলাআআআ তো।

– এতোটুকু একটা শরীর তোমার কিসের এতো রাগভর্তি এতে হ্যা।

– রাগ করবো না তো কি করবো তখন থেকে বলছি চলো একটু মহিপুরে যাই,নিশাত থেকে আপুর জন্য একটা বেনারসি আর আমার জন্য একটা শাড়ি কিনে আনি,তোমার সেই না না না।

উজান চুলের ভাঁজে দিয়ে হিয়ার কানের লতিতে চুমু দিতে দিতে বললো,

– ঠিক আছে চলো,বাট সন্ধ্যার আগে অবধি ফিরে আসতে হবে রাজি।

– তুমি সত্যি যাবে?

হিয়াকে সামনে ঘুড়িয়ে কাবাডে ঠেসে দিলো উজান। কোমড় জড়িয়ে বললো,

– হুম। ছোট green chilli যে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে red chilli তে কনভার্ট হচ্ছে এরপর তো সব ঝাঁজ এই আমার উপরই এসে পড়বে না।

রাগে চোখ বড় করে আঙ্গুল তুলে হিয়া বললো,

– আমি আমি মরিচ,লাল-সবুজ মরিচ,আমি মরিচ হলে তুমি তুমি একটা এলাচ।

হেঁসে ফেললো উজান, মৃদু হেঁসে হিয়ার চুল প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে বললো,

– একটা লাল টুকটুকে দেখে শাড়ি কিনবে হ্যা। একদম নতুন বউয়ের মতো সাজবে। আজ একদম নতুন করে তোমাকে আদর করবো কেমন।

মুচকি হেঁসে হিয়া বললো,

– আচ্ছা একটা মানুষের মধ্যে এতো আদর আসে কোথ থাইক্কা শুনি। আমার তো মনে হয় আপনার শরীরে দিনে না ঘন্টাতেও না,মিনিটে মিনিটে আদরের যতো রকম হরমোন আছে সব গ্রো করে।

আবারো হেঁসে দিলো উজান। হিয়ার কপালে কপাল ঠুকে দিয়ে বললো,

– মিনিটে মিনিটে করে কি না জানি না তবে আপনাকে দেখলেই সংযত থাকা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় ম্যাডাম।

– এতোটাও অসংযত হয়ে যাবেন না যে ভাইয়ার আগে আমাদের কোল আলো করে আবারো একটা ফুটফুটে বাবু এসে যাবে।

– আসলে আসবে। আমি তো ঠিক করেছি তোমার এ্যাডমিশন ওভার হয়ে গেলে ডজনে ডজনে বাবু নেবো আমরা,একটা তোমার কোলে একটা আমার পিঠে,একটা শিশিরের ঘাড়ে,একটা রোদের বুকে,আরেকটা আমার এই বুকে আরেকটা..

– থামো থামো থামো,আমাকে দেখে কি বাচ্চা পয়দা করার মেশিন মনে হয় নাকি তোমার।

আরো হেঁসে ফেললো উজান,হেঁসে দিয়ে হিয়ার ঠোঁটে কিস করতে নিতেই ওমনি কাবাডের দরজায় ঠকঠক আওয়াজ পেতেই লাফিয়ে উঠলো হিয়া। কাবাড থেকে বেড়িয়ে নিতেই দেখলো কিরকম হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে তার রোদআপু।

– আমার ভাইয়ের যে দরজা খোলা রেখে দিনরাত তার আদরের বউকে আদর করতে মন চায় জানা ছিলো না তো।

লজ্জায় পুরো টমেটোর মতো লাল হয়ে এক দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো হিয়া। উজান কাবাডের দরজা লাগিয়ে বাঁকা চোখে রোদের দিকে তাকাতেই দেখলো এখনো মুখে হাত টিপে কিরকম হেঁসে যাচ্ছে সে! চোখ জোড়া সরু করে উজান বললো,

– এতো দাঁত না কেলিয়ে,যেই মেডিসিন গুলো আনছি ওগুলো প্রপারলি খাবি। আমি শিশিরকে বুঝিয়ে দেবো কিন্তু তোকেও আমাদের সাথে কম্প্রমাইজ করতে হবে বোন।

– তুই পাগল ভাই,তোর মনে হয় এসব মেডিসিন আমার এই মারাত্মক নেশাটাকে কাটিয়ে দিতে পারবে।

– আমার উপর ভরসা করে দেখ একবার। আর তাছাড়া আমি শিশিরকে কথা দিয়েছি তোকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলার। আর আমি আমার কথা রাখবো।

– দেখ কি করবি,কখন না আবার আমার নেশা উঠে যাই আর আমি নেশায় বুদ হয়ে পড়ে থাকি….. আচ্ছা শোন না,শিশিরকে তো কিছু বলাই যাচ্ছে না,যেভাবে আমাকে ঔ ক্ল্যাব থেকে তুলে নিয়ে আসলো,রানা হয়তো এতোক্ষণে তুলকালাম বাধিয়ে দিয়েছে, আমার শুধু ভয় সে না শিশিরের কোনো ক্ষতি করে বসে।

– শিশিরকে এতোটাও অক্ষম ভাবিস না রোদ। তোর জন্য কোন লেভেল অবধি পৌঁছাতে পারে তোর ধারণাও নেই।

– যেমন তুই হিয়ার জন্য করিস সেরকম।

মুখটা মলিন করে বিছানায় বসে পড়ে উজান বললো,

– হিয়ার জন্য আর কি বা করতে পারলাম রোদ। যবে থেকে ওর জীবনটা আমার সাথে জড়িয়েছে সেদিন থেকেই ডিজাস্টার শুরু হয়েছে ওর লাইফে। একটা দিন মেয়েটাকে শান্তি দিতে পারি নি। তুই দূরে ছিলি আর আমি,আমি কাছে থেকেও কাছে থাকতে পারি নি মেয়েটার। তুই জানিস না একয়েকদিনে ওর সাথে কি কি ঘটেছে,সাইক্রাটিস অবধি কনসাল্ট করতে হয়েছে,ওর পাগলামি ওর চিৎকার ওর কষ্ট,কান্না,ক্ষোভ আমি আমি যেনো..

অশান্ত উজানকে শান্ত করতে তাকে আগলে ধরলো রোদ,উজানকে শান্ত করতে করতে বললো,

– না ভাই,সোনা ভাই আমার৷ এরকম করে না। সব ঠিক হ’য়ে যাবে। হিয়া আমাকে সব বলেছে। কি থেকে কি হয়েছে সব বলেছে। তুই একটু ধর্য্য ধর,আমি তো বলছি,আমি এখন এসে গেছি না আর কোনো ভয় নেই। আমিও সুস্থ হবো হিয়াও সুস্থ হবে,কথা দিচ্ছি তোকে!

– বলছিস হিয়া এখন যেভাবে সবাইকে পেয়ে হাসিখুশি আছে সেভাবে আজীবন থাকবে। আর তুই ও ঠিকমতো রিকভার করবি।

– করবো করবো করবো। কি যেনো একটা বলে হিয়া হুম পাক্কা প্রমিস করবো। যা তো এখন গিয়ে টপাটপ সুন্দর দেখে শাড়ি কিনে আন তো। আমাদের জন্য।

উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে মৃদু হেঁসে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মানিব্যাগে টাকা গুছাতে গুছাতে বললো,

– ম্যাডামের যা আবভাব দেখছি,আজ এ কয়টা টাকায় হবে বলে তো মনে হচ্ছে না,

– দিবি না হয় আজকে একটু কিনে,কখনো তো হিয়াকে কোনো কিছুর আবদার করতে দেখি নি তোর কাছে। আজ করছে দে একটু।

– হুম সে দিলাম ,কিন্তু তুই একটা কথা বলতো তুই এতোকিছু কি করে জানলি,

– কি এতো কিছু?

– এই যে হিয়ার মিচক্যারেজ,অসুস্থতা,সিয়াম এইসব।

– কে আবার বলবে হিয়া বললো,

– এ-ই এতোকিছুর মাঝে হিয়ার সব গল্প শোনানো শেষ!

– বউটা কার দেখতে হবে না!

উজান শুধু মুখ পাকিয়ে বললো”সিরিয়াসলি”রোদ হেঁসে দিয়ে ফোড়ন কেটে বললো”তোর বউ”
!
!
!
সত্যি হিয়া আজ উজানের পুরো পকেট ধ্বংস করে দিয়ে তবেই বাড়িতে ফিরেছে। নিজের জন্য তিনটে শাড়ি,রোদের জন্য বেনারসি সহ আরো একটা ভারী শাড়ি,চাচির জন্য একটা সাথে দাদির জন্য একটা শাড়ি নিয়ে তবেই শান্তি মিটছে তার। আরো তো ফেরার পথে ম্যাচিং চুড়ি টিপ আছেই।

সেই শাড়ি গহনা দিয়ে রোদকে সাজিয়ে একদম লাল টুকটুকে বউ বানিয়ে দিলো হিয়া। এমনিতে তো রোদ সুন্দর তারউপর হিয়ার এই দিয়ে দেওয়া লাল টিপ,লাল ঠোঁটের আবরন,ছোট ছোট লাল পাথরের ঝুমকো সব মিলিয়ে এতোই মাধূর্য্যে মাখিয়ে দিলো যে তা বর্ণনায় বর্ণনা করা অসম্ভব। সময় মতো কাজি সহ,কিছু কাছের আত্নীয় স্বজন, শিশিরের কলিগ,নীরব রিমা সহ কোচিং এর অনেক প্রিয়মুখ সবাই এসে একটা সুন্দর সময় কাটিয়ে বিদায় নিতে বাড়িটা আবার বিজনশূন্য হয়ে পড়লো। চাচি আর দাদি অবশ্য রাত সাড়ে এগারোটা অবধি গল্প জুড়ে তারপরই প্রস্থান গ্রহন করেছিলো!
!
!
রাত তখন দুটোর প্রায় মাঝামাঝি,হিয়াকে নিয়ে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়েছে উজান। না এ-ই মেয়ের তো দেখছি এখনো এ্যানার্জি পুরো হাই,এতো গল্প একটা মানুষ কি করে করতে পারে হাউ? উজান হিয়াকে নিয়ে রুমে আসতেই বাড়িটা পুরো এক নজর দেখে নিয়ে, সবকিছু ঠিকঠাক বন্ধ করে রুমে আসলো শিশির। কেবলই কপালের টিপ টা তুলে আয়নায় বসিয়ে দিচ্ছিলো রোদেলা। শিশিরকে রুমে ঢুকে দরজা লাগাতে দেখে একটু বিব্রত হয়ে পড়লো যেনো মেয়েটা। টিপ টা আয়নায় বসিয়ে দিয়ে স্লিকি চুল গুলো চিরুনি দিয়ে ব্রাশ করতে থাকলো আর আড় চোখে আয়নার ভেতর দিয়ে দেখতে থাকলো শিশিরকে। টাই খুলে শার্টের বোতামের হুক গুলো খুলতে খুলতে তোয়ালেটা নিয়ে একবার আয়নার দিকে তাকালো শিশির। চোখে চোখ পড়তে সেই চোখ নামিয়ে নিলো রোদেলা। ইশশ কি লজ্জার ব্যাপার। মৃদু হেঁসে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে গেলো শিশির। একটা দীর্ঘ গোসল সেরে একটা কালো ট্রাউজার সাথে হাফহাতা ওফহোয়াইটের গেঞ্জি জড়িয়ে মাথা মুছতে মুছতে ধীয় পায়ে বিছানায় এসে বসলো সে। এদিকে হঠাৎই এ-ই মুহুর্তে শিশিরকে দেখে হাত পা কিরকম ঠান্ডা হতে শুরু করলো রোদেলার। কি হচ্ছে টা কি এটা তার সাথে। এই বদ্ধ রুমে কি সত্যি সত্যি সে আর শিশির আবদ্ধ। এখন কি হবে। শিশির কি তাকে আদর করবে। সারাটা জীবন যেই আদর আদর করে ছেলেটার মাথা খারাপ করে দিলো আজকে সেই কাঙ্ক্ষিত সময়ে কিসের এতো ভয় হচ্ছে তার। কেনো বুকের হৃদ স্পন্দন এতো তীব্র থেকে তীব্র তর হচ্ছে। এতো দেখছি মহাজ্বালা।

হাত দিয়ে বালিশ ঝারতে ঝারতে বিছানার চাদর টেনে টুনে ঠিক করছে রোদেলা। শিশির উঠে তোয়ালে টা বারান্দায় নেড়ে দিয়ে রুমে আসলো। বারান্দার ছিটকিনি টা লাগিয়ে আবারো বিছানায় এসে বসে পড়লো শিশির। ভয়ে বিছানার চাদর ছেড়ে এদিকে ফিরতেই রোদের একহাত মুঠো করে টেনে ধরলো সে। কাঁপতে থাকা বুকটা আরো কম্পমান গতিতে চলতে শুরু করলো রোদের। আশ্চর্য তো। আরে কি মুশকিল দুপুর বেলাই তো আদর নেবো আদর নেবো বলে কতো কি বললাম তাহলে এখন কিসের, কোন ভূতের লজ্জা এসে ঘিরে ধরলো আমায়!

মুঠ করা হাতটাকে পেঁচিয়ে রোদকে নিজের চড়ুতে এনে বসালো শিশির। চুল গুলো ঘাড় থেকে সরিয়ে ব্লাউজের খোলা পিঠে একটা চুমু দিলো। চোখ বন্ধ করে মৃদু হেঁসে নিলো রোদেলা। শিশির নিজের ট্রাউজারের পকেট থেকে একটা স্বর্ণের চেইন বের করে রোদের গলায় পড়িয়ে দিতে দিতে বললো,

– আমি এতোটাও কৃপণ না যে বউকে ফিকে ফিকে গ্রহন করবো। হিয়ার শাড়ি চুজ করতে পারিনি ঠিকই কিন্তু এই চেইন টা দেখে মনে হলো তোমার গলায় ভীষণ মানাবে তাই জন্য নিয়ে আসলাম।

লজ্জা কাটিয়ে শিশিরের দিকে মুখ ঘুরে তাকালো রোদেলা। প্রাণখোলা এক হাসি দিয়ে শিশিরের নাকটা টেনে দিয়ে বললো” Thank_you”

– আদর আদর করে তো সারাটা জীবন পাগল করে দিলি এখন এতো লজ্জা পাচ্ছিস কিসের শুনি।

– ল ল লজ্জা কথায় পাচ্ছি। সব স্বপ্ন গুলো সত্যি হচ্ছে বলে একটু অবাক হয়ে আছি।

রোদের ঠোঁটের দিকে নেশাক্ত চাহনি ভরে তাকিয়ে উঠে শিশির বললো,

– এখনো তুমি আমাকে মিথ্যে বলতে পারো না রোদ!

– ইয়ে মানে আমি ক কখন…

রোদের ঠোঁট জোড়া বন্ধ করলো শিশির। আমতা আমতা করতে ওখানেই থামতে হলো রোদকে। শুরু হলো শিশিরের আদর নামক ভালোবাসার পরশ,সাথে রক্তিম বর্ণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠা রোদের আহাজারি। সব ভূলে নতুন পথে পথ চলার অঙ্গীকার। সব বিপদে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি!

!
!

এদিকে সন্ধ্যা থেকে এখন অবধি হিয়ার ফোন সহ সকলের ক্যামেরায় বন্দি শতহাজার ছবি একটার পর একটা দেখতে ব্যস্ত যেনো হিয়া। সাথে শাড়ির আঁচল কোমড়ে পোটলা করে গরম নেভানোর বৃথা এক চেষ্টা। এমনিতে উজান টেনে হিঁচড়ে রুমে নিয়ে আসলো আর একটু গল্পও করতে দিলো না তার উপর দেখো এ-ই একটা ছবিও যদি মনের মতো উঠে,ধ্যাত কাকে যে তুলতে দিয়েছিলাম ছবি কে জানে।

এদিকে উজান নিজেও একটা ফ্রেশ গোসল সেরে তোয়ালে হাতে মাথা মুছতে মুছতে রুমে ঢুকতেই হিয়ার দিকে চোখ আঁটকে গেলো তার। শাড়ির আঁচল নামিয়ে,লাল ব্লাউজে,না*ভি উন্মুক্ত করে এটা কেমন ধরনের লো*ভ দেখাচ্ছে হিয়া তাকে। মাথা নাড়িয়ে তোয়ালে টা রোলিং চেয়ার টায় মেলে দিলো উজান। আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিয়ে পুরো বডিতে পাউডার মাখলো। সাথে চুল গুলো হাত দিয়ে এলোমেলো ব্রাশ করে নিয়ে দুটো জানালা ভালো করে চেইক করে দেখলো ঠিকঠাক মতো লাগানো আছে কিনা। যাগ একটা কাজ তো অন্তত মেয়েটা ঠিকঠাক করেছে। বিছানায় শুইয়ে হিয়ার কোলে মুখ ডুবালো উজান। না*ভিতে একটা চুমু দিতেই পাশের বালিশটায় হেলে পড়লো হিয়া। এখনো দৃষ্টি তার ফোনস্ক্রিনে আবদ্ধ। আর উজানের দৃষ্টি আবদ্ধ তার হিয়াতে। হিয়ার মলিন পেটে চুমু এঁকে হিয়ার ঘাড়ের ভাঁজে মুখ গুজলো উজান। এতেও হিয়ার হেলদোল না দেখতে পেয়ে ফোনটা কেড়ে একদম পায়ের কাছে ছুড়ে ফেললো সে। এতো ফোন কি হ্যা,হিয়া কি দেখছে না তার এ-ই সাদাবিলাইয়ের আদরের সময় হয়ে উঠেছে এখন।

– আআ ফোন কেনো ফেলে দিলে আমার। ছাড়ো না কি ওজন।

– চুপ। আর ফোন গল্প কিচ্ছু না এখন শুধু..

– যাও তো,এমনিতে এতটুকু একটা শরীর আমার তারউপর নিজের এই ভর দেও রোজ,কষ্ট হয়না আমার। আর কিসের এখন আদর হ্যা। কয়টা বাজে। এখন স্লিপিং টাইম,ঘুমোনোর সময় তুমি জানো না।

– আমার কি দোষ এতে,তুমি যেভাবে লোভ দেখাচ্ছিলে, আমার তো ইচ্ছে ছিলো বই সহ তোমায় নিয়ে একটু বসি কিন্তু এসে যা দেখলাম। পিচ্চিটা তো।

– উফ হো উজান। তুমি কি হ্যা। আমার শাড়ি পড়াই ভূল হয়েছে দেখছি। এখন এরকম করো পাঁচ ছয়টা ছেলে মেয়ে হলেও কি এরকম থাকবে।

হিয়ার মুখে সাথে মুখ ঘষে নিয়ে উজান বললো” তোমার সন্দেহ আছে তাতে,নিজেই তো বললে হরমোন নাকি মিনিটে মিনিটে গ্রো হয় আমার” হিয়া গালে তবা কেটে বললো” তবা তবা ছিঃ পুরাই নি*র্লজ্জ তুমি একটা উজান ” মুচকি হেঁসে হিয়াকে নিজের সাথে আবদ্ধ করে নিলো উজান। হাত উল্টিয়ে হিয়ার ব্লাউজের ফিতে খুলতে খুলতে বললো” তাই সই,নি*র্লজ্জ আমি,পুরাই নি*র্লজ্জ” আর কিছু বলতো গিয়েও থেমে গেলো হিয়া। উজানের চুল খামচে ধরে বললো” এটাই শেষ, এরপর থেকে আমি আর রোদআপু একসাথে ঘুমাবো তখন দেখবো কিরকম লাগে”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here