#ছদ্মবেশ,পর্ব ৫১,৫২
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ
৫১
রুশানকে নিয়ে ডিরেক্ট কুমিল্লায় চলে গেলো পিন্টু। যেখানে নিলয় খুব বেশি প্রয়োজন ছারা যায় না।
মুখে পানির ছিটা পরলে চোখ খোলে রুশান। দেখে একটা চেয়ারে বাধা অবস্থায় বসে আছে সে। কয়েকবার এদিক ওদিক নাড়া দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। পাশে দেখে তার সহকারি আজিমও একই অবস্থার শিকার। সামনে একটা ছেলে বসে রুশানের মুখের উপর সিগারেটের ধোয়া ছাড়লো। রুশান বিরক্তিবোধ করলে ছেলেটা হেসে বলে,
– এভাবে আমাদের কয়টা লোকটে বেধে জবানবন্ধি নিয়েছিস বলতো? কেও কি স্বীকার করেছে? মনে তো হয় না কেউ কিছু স্বীকার করেছে। কারণ কি জানিস? যারা আমাদের লাইনে আছে, তাদের সবার ফ্যামিলি আমাদের আয়ত্বেই থাকে। যেমন করে ওদের কোনো ক্ষতি আমরা হতে দিই না, তেমন করেই আবার কেও মুখ খুললে তাদের ফ্যামিলিকেও হারিয়ে ফেলি। সেই সূত্রে তারা নিজের জীবনের ভয়ে মুখ খুলতে চাইলে বৌ বাচ্চার দিকে চেয়ে হলেও কেও মুখ খুলবে না। আর আজ সেই তুই আমার হাতে এসে ধরা দিলি। কে বাচাবে তোকে? সারা দেশেই তো তোর টিম ছড়িয়ে আছে। ডাক তাদের, দেখি কে আশে তোকে বাচাতে। হা হা হা,,,
ছেলেটার হাসিতে সারা ঘর কম্পিত অবস্থা হয়ে উঠে। হাসি থামিয়ে ছেলেটা বলে,
– কেউ জানেনা তোর অবস্থার কথা। জানবে সময় হলে। যখন তোর লাশ কোনো নদীতে ভাসমান অবস্থায় তীরে এসে ভিড়বে। অনেক উড়েছিস, আর কতো? এবার অন্তত একটু থাম। তোর কারণে আমাদের অনেক লোক হারিয়েছি। হারিয়েছি কোটি কোটি টাকার মালামাল। তোর সালা পশংসা না করে পারছি না। আমাদের আড়ালে কতো কিছু করে ফেললি। কিভাবে এতো কিছু পরিচালনা করলি ভাই, যে আমরা আন্দাজও করতে পারিনি? সব পেশা সন্দেহের তালিকায় পরবে দেখে স্টুডেন্টের বেশে সব করছিলি। বাহ্ আই লাইক ইট। তবে আফসোস তোর ইচ্ছে টা পুরণ হবে না৷ কারন নির্জন এখন শুধু একটা ব্যাক্তির নামই না। একটা ব্র্যান্ড এর নামও বলতে পারিস। একটা ব্র্যান্ডের বিপক্ষে পাঙ্গা নিয়েচিস তুই।
চুপচাপ পিন্টুর বকবক শুনেই যাচ্ছে রুশান। এতোক্ষনে বুঝে গেছে সে কোন জায়গায় ফেসে গেছে। যেখান থেকে বেচে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। রাজের প্রতি বার্তা পাঠানোর একটু সময় হাতে থাকলেও কিছু করা যেত।
এর মাঝে পিন্টু উঠে পাশের টেবিল থেকে একটা আপেল ও একটা ছুড়ি নিয়ে রুশানের সামনে এসে আপেল কেটে মুখে দিলো। আরেকপিস রুশানের মুখের সামনে এগিয়ে দিয়ে একটা হাসি দিলো সে। চুপচাপ সব চেয়ে আছে রুশান। ছেলেটা রুশানের চেয়ে বয়সে কমই হবে।
পিন্টু এবার আপেল খেতে খেতে রুশান ও আজিমের চার পাশে ঘুরতে থাকে। আপেল খাওয়া শেষ হলে রুশানের সহকারি আজিমের পেছনে দারিয়ে যায় সে। একটা হাসি দিয়ে আজিমের চুল গুলোতে হাত বুলায় কিছুক্ষন। তারপর হুত করে চুল ধরে পেছন দিকে টান দিয়ে অন্য হাতে আজিমের গলায় ছু’রিটা ধরে টান বসিয়ে দেয় সে। কয়েক সেকেন্ড স্বাভাবিক থাকলেও এরপর রক্তের শ্রোত বয়ে যেতে শুরু করে আজিমের গলা দিয়ে। হাত পা নাড়াতে পারছে না শুধু গলা দিয়ে শব্দ করতে লাগলো সে।
পিন্টু মুচকি হেসে ছু’রিতে লাগা র’ক্ত একটা রুমাল দিয়ে মুছে আবার টেবিলে নিয়ে রাখে।
মৃত্যুর যন্ত্রনায় কাতরানো এই আজিমকে দেখে রুশানের চোখ দিয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পরলো। কতো দিন পর আজ চোখে পানি জমেছে সেটা তার নিজেরই মনে নেই। সেই শুরু থেকেই আজিম তার সাথে ছিলো। একই সাথে কাজ করেছে দুজন। আর আজ সেই আজিমই তার সামনে মৃত্যুর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। কাছে থেকে দেখা ছারা কিছুই করতে পারছে না সে।
পাশ থেকে একজন রুশানের দিকে চেয়ে পিন্টুকে বলে,
– ভাই এটাকেও শেষ করে দিবো নাকি?
পিন্টু হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে বলে,
– না, এই সালা অনেক খেলেছে আমাদের নিয়ে। আমাদেরও তো একটু খেলতে ইচ্ছে করে, নাকি? আপাতত তোরা খেল কিছুক্ষন। তবে খেয়াল রাখবি, ম’রে যেন না যায়। এতো সহজে মারবো না তাকে। টুকে টুকে খেলবি।
বলেই কিছুক্ষনের মাঝে সেই স্থান ত্যাগ করে পিন্টু। একজন লোক এসে রুশানের গায়ে গরম পানি ঢেলে দিলে চোখ মুখ বন্ধ করে নিশ্চুপ হয়ে থাকে রুশান। পানি ঢেলে লোকটা বলে,
– আমাদের লোক গুলোকেও তো এভাবেই টর্চার করতি তাই না? সমস্যা নেই তোর ঐ সব ধরনের টর্চারের ব্যবস্থা আমাদের কাছেও পাবি৷
,
,
ঐ দিন রাতটা পার হয়ে গেলো। রুশান যেহেতু প্রায় সময়ই বাইরে থাকতো সেই হিসেবে আজও তার নিখোজটা নিয়ে কেও এতোটা ভাবছে না। হয়তো কোনো কাজে গেছে এমনটাই ভাবছে সবাই।
নিবিড় যখন খুব অসহায় অবস্থায় থাকে তখন তার পালিত মায়ের কবর জিয়ারত করতে চলে যায় সে। জিয়ারত শেষে মায়ের মাথার পাশে বসে তার কষ্ট গুলো বলে একএক করে। জানে এতে কোনো লাভ হবে না তবুও মনটা হালকা হয় কিছুটা।
নিবিড় ঢাকা থাকার সুবাদে সব সময় যাওয়া হয় না। কারণ তার পালিত মায়ের কবর টা সেই কুমিল্লায়।
আজ অনেকদিন পর সকালে বের হলো তার মায়ের কবর জিয়ারত করার উদ্দেশ্যে দুপুরের আগেই পৌছে গেলো কুমিল্লা। সেখানে তার একজন পরিচিত চাচা আছে। যে নিবিড়কে ঢাকা নিয়ে কাজের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলো।
এখন কুমিল্লায় আসলে তার বাসাতেই উঠে নিবিড়। তার নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই এটা ছারা।
বিকেল বেলায় কবর জিয়ারত শেষে সন্ধার সময় ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতি নেয় সে। আজ হটাৎ কাকতালিয় বাবে বাস কাউন্টারে সেদিনের তার চেহারার মতো মেয়েটার সাথে দেখা।
নিবিড়ের মাঝে একটু ভাবান্তর অদয় হলো, কি যেন নাম মেয়েটার? ওহ্ হ্যা ফারিহা। সেদিন বেশ কিছুক্ষন তাদের সাথে থাকায় নামটা দেখছি মনে আছে এখনো। একটা পানির বোতল হাতে কাউন্টারে বসে আছে মেয়েটা।
নিবিড় প্রথমে একটু সঙ্কোচবোধ করলেও ফারিহার কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে,
– এক্সকিউজ মি. আপু। একটু বসতে পারি?
ফারিহা একটু ভ্রু-কুচকে বলে,
– হ্যা বসুন।
নিবিড় তার পাশে বসে বলে,
– আমাকে চিনতে পেরেচেন?
ফারিহা অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে বলে,
– আপনি কি আইন্সটাইন নাকি যে দেখলেই চিনতে হবে?
একটু অপমান বোধ করলো নিবিড়। কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে,
– আমি কিন্তু আপনাকে চিনতে পেরেছি।
ফারিহা অবাক ভঙ্গিতে বলে,
– কিভাবে?
নিবিড় বলে,
– মাস দুয়েক আগে আপনার বাবা মায়ের সাথে মনে হয় ঢাকায় গিয়েছিলেন। আপনার মা আমাকে টিকিট দেখিয়ে সময় জিজ্ঞেস করেছিলো। মনে পরছে না আপনার?
ফারিহা একটু ভেবে বলে,
– হুম এবার মনে পরেছে। তবে আবার তো দেখি স্মৃতি শক্তি দারুন স্ট্রং। এক দেখাতেই চিনে ফেললেন। তবে আমি ঢাকা যাইনি। আমি ঢাকাতেই থাকি। কুমিল্লায় এসেছি আমার এক বান্ধবির বিয়েতে।
নিবিড় অবাক হয়ে বলে,
– এতটুকু একটা মেয়ে একা একা চলাফেরা করে ভয় করে না?
ফারিহা এবার একটু রাগি ভাব নিয়ে বলে,
– আমাকে কি আপনার এতটুকু একটা মেয়ে মনে হয়? আর ঢাকা গিয়ে গাড়ি থেকে নামলেই বাবা আমায় ওখান থেকে নিয়ে যাবে।
নিবিড় বলে,
– আমিও কিন্তু ঢাকাতেই যাচ্ছি।
ফারিহা একটু সৌজন্য মুলক হেসে বলে,
– ওহ্।
একটু পর ফারিহা ফোনের স্কিন অন করে। কয়টা বাজছে তা দেখতে। ফারিহার ফোনের স্কিনে একটা ছোট ছেলের ছবি দেখলে নিবিড় উৎসাহ নিয়ে বলে,
– কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন করি?
ফারিনা বলে,
– মনে না করার মতো হলে করেন।
নিবির কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকলো। এই মেয়ে দেখছি ভাড়ি চালাক প্রকৃতির। ফারিহার ফোনের দিকে চেয়ে বলে,
– আপনার ফোনের এই ছোট ছেলেটা কে?
ফারিহা একটা দির্ঘশ্বাস নিয়ে বলে,
– আমার ভাইয়া।
নিবিড় হেসে বলে,
– ভাইয়া নাকি ছোট ভাই?
ফারিয়া স্বাভাবিক ভাবে বলে,
– আমার ভাইয়া। সেই ছোট বেলায় হারিয়ে গেছে। বাবা মা অনেক খুজেছে বাট পায় নি। আমি মাঝে মাঝে তাদের শান্তনা দিতে বলি যে ভাইয়াকে আমি একদিন খুজে আনবো। বাট তা কি সম্ভব বলেন?
নিবির এবার ফারিহার দিকে চেয়ে বলে,
– কিছু মনে না করলে আমি কি একবার ছবিটা দেখতে পারি?
ফারিহা গম্ভির ভাবে বলে,
– আপনাকে কেন দেখাবে?
নিবিড় বলে,
– এমনি আমার ইচ্ছে করছে আপনার ভাইকে দেখতে। বেচারা আমার মতোই হতভাগা।
ফারিহা এবার ফোনটা নিবিড়ের দিকে এগিয়ে দিলে নিবিড় ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে। কিউট ছিলো আপনার ভাই। কবে হারিয়ে গিয়েছিলো সে?
ফারিহা বলে,
– আজ থেকে বিশ বছর আগে।
নিবিড়ের আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো। সে মনে অধিক আগ্রহ জাগিয়ে বলে,
– তো আপনি যে তাকে খুজে দিবেন বলছেন, ধরেন তাকে কোনো ভাবে পেয়ে গেলেন তাহলে চিনবেন কিভাবে?
পারিহা বলে,
– কখনো খুজে পেলেই তো চিনতো। বাট খুজেই তো পাবো না। তার চেয়ে বড় কথা এখন অব্দি বেচে আছে কি না তারও কোনো ঠিক নেই। তবে আমার মা সব সময় একটা কথা বলে, ভাইয়ার পিঠে নাকি একেবারে কাধ থেকে কোমড় কর্যন্ত একটা কাটা দাগ ছিলো। যার কারণে ছোট বেলায় একবার মারাও যেতে বসেছিলো। ছোট বেলায় একটা বেখেয়ালি এক্সিডেন্টের কারনে কেটে গিয়েছিলো। মা সব সময় আমাকে সেই গল্প শুনায়। আচ্ছা আপনিই বলেন এমনটা থাকলেও কি আমি কোনো ছেলের কাছে গিয়ে গিয়ে পিট চেক করতে পারো বলেন? তবুও মা বুঝে না। এখনো বুলতে পারেনি ভাইয়াকে।
নিবির কিছুক্ষন চুপ মেরে বসে ছিলো। তারপর ফারিহার দিকে চেয়ে বলে,
– আপনার মায়ের সাথে আমার দেখা করিয়ে দিতে পারবেন? ধরেন এখন ঢাকায় ফিরে আমি আপনার সাথে আপনাদের বাসায় গেলাম।
ফারিহা এবা সন্দেহ জনক ভাবে নিবিড়ের দিকে চেয়ে বলে,
– আপনি লোকটাতো দেখছি সুবিধার না।
নিবিড় একটু হেসে বলে,
– ভুল বুঝবেন না। আমাকে নিয়ে গেলে আপনাদের উপকার ই হবে। তবে ক্ষতি হবে না।
ফারিহা এক গাল হেসে বলে,
– আপনাকে এতো উপকার করতে হবে না।
নিবিড় আবার বলে,
– ধরেন যদি আমি আপনার ভাইকে খুজে দিতে পারি? আমি যেমনটা ভাবছি এমনটা তো সত্যিও হয়ে যেতে পারে তাই না?
ফারিহা এবার অবাক ভঙ্গিতে বলে,
– আপনি আবার কি ভাবছেন?
নিবিড় আবার বলে,
– সেটা পরে বলবো। এখন আপনার মাকে ফোন দিয়ে বলে দেকেন যে একটা ছেলে আমাদের বাসায় যেতে চায়। সে বলছে হয়তো ভাইয়ার খোজ দিতে পারবে।
ফারিহা এবার বিরক্ত হয়ে বলে,
– ফাজলামির একটা লিমিট থাকে।
নিবিড় সিরিয়াস ভাব নিয়ে বলে,
– আমি অপরিচিত কারো সাথে ফাজলামি করি না। আমি আপনার সাথে সিরিয়াসলিই কথা বলছি। আচ্ছা আপনি বাসায় কল দিয়ে দেখেন কি বলে। আমি একটু আসি।
নিবিড়ের প্রচুর প্রশ্রাবের ব্যাগ পেয়েছে। কাউনন্টারের পাশে একটা পাবলিক টয়লেট আছে। দুর্গন্ধে গম বন্ধ হয়ে আসার মতো অবস্থা।
নিবিড় কিছুটা হেটে বাজারের সাইডে এসে একটা নিঝুম জায়গা খোজে। একটা প্রবাদ মনে পরলো তার। ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ। তাই যেকোনো ভাবে ত্যাগ করতে পারলেই হলো।
লোক লজ্জার ভয়ে বাজার থেকে অনেকটা দুড়েই আসলো নিবিড়। রাস্তাটা বাজারের তুলনায় নির্জন। বাজারের মত এতো কোলাহল নেই। শুধু গাড়ি চলছে।
নিবিড় লক্ষ করে কিছুটা দুরে কয়েকজন লোক মিলে একজনকে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটা সি’এন’জি তে তুলছে। রোগি নয়তো? রোগি হলে তো ডিরেক্ট বাসায় বা হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কথা। এভাবে রাস্তায় গাড়ি থেকে নামিয়ে সি’এন’জি তে তুলতো না। একটু ঘটকা লাগলো নিবিড়ের।
ওদিকে ফারহা বাসা থেকে কল দেয় ফারিহার ফিরে কতোক্ষন লাগবে তা জানার জন্য। এর মাঝে ফারিহা মানে নিবিড়ের বিষয়টা খুলে বলে। যে ছেলেটা বলছে ভাইয়ার খোজ দিতে পারবে। তাই তোমার সাথে দেখা করতে চায় একবার।
ফারহা তো ছেলে ফাহাদ বলতেই পাগল। সেও বললো,
– ছেলেটাকে তোর সাথে বাসায় নিয়ে আসলে আশে পাশের লোকজন তা ভালো চোখে দেখবে না। তুই তাকে আমাদের বাসার এড্রেস দিয়ে আয়। কালকে সকালে আসতে বল।
ফারিহা চার দিকে চেয়ে বলে,
– সে তো একটু বাইরে গেছে। তবে আমার সাথেই ঢাকায় ফিরবে বলছিলো। এখন তো গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়েছে এখনো আসছে না৷ আচ্ছা আমি দেখি, তুমি টেনশন নিও না।
পিন্টু রুশানকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সি’এন’জি তে তুলে দিয়ে কয়েকটা ছেলেকে বলে,
– সামনে গিয়ে মেইন রোড থেকে বামে গেলে একটা খাল পাবি। রাস্তাটা নিঝুমও আছে। মেরে খালের পানিতে ফেলে সোজা ঢাকায় চলে যাবি। এটা সাধারন মানুষ নয়। গুম হয়ে গেলেও খোজ করতে করতে আমাদের অব্দি পৌছে যাবে। এই গ্রাম অঞ্চলে লাশ পেলে আমাদের অব্দি পৌচানো টা এতোটা সহজ হবে না। আর নিলয় ভািও সন্দেহ করবে না। তাই সাবধানে করবি সব।
বলেই গাড়ি টান দিয়ে সোজা চলে গেলো পিন্টু। আর সি’এন’জি টা কিছুটা সামনে গিয়ে বামের একটা রাস্তায় ঢুকলো।
নিবিড়ও ফোনের ক্যামরা অন করে লুকিয়ে পেছন পেছন চলে যায় তাদের।
রাস্তাটা কিছুটা খারাপ ছিলো দেখে সি’এন’জি ও ধীড়ে ধীড়ে সামনের দিকে আগাচ্ছে। আর নিবিড়ও ফলো করতে করতে চলে গেলো তাদের পেছন পেছন।
,
,
লোক গুলো রুশানকে মারার জন্য রেডি হচ্ছে। লাইটের আলোয় রুশানের মুখটা সামনে আসতেই নিবিড় যেন এক মুহুর্তের জন্য দিশা হারা হয়ে যাওয়ার অবস্থা। ভিডিও করা বন্ধ করে ফোনটা পকেটে নিয়ে এগিয়ে যায় সামনের দিকে।
লোকটা পাশে একটা বড় ছু’রি রেখে রুশানকে ব্রিজের উপর হেলান দিয়ে দাড় করায়। নাক মুখ দিয়ে রক্ত পরছে রুশানের। শুধু চোখ দুটু মিটি মিটি করে বন্ধ হচ্ছে আর খুলছে।
নিবিড় কাঁপতে কাঁপতে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দৌড়ে গিয়ে সেখান থেকে বড় ছু’রিটা নিয়ে জোড়ে কো’প মে’রে দিলো লোকটার ঘা’ড়ে। এটা হুট করে হয়ে যাওয়ায় পাশের দুজন তা বুঝে উঠতেই পারেনি।
ছু’রির আঘাতে লোকটার মা’থাটা ছিটকে গিয়ে পড়লো খালের পানিতে। লোকটার গলা থেকে ছিটকে পরা র’ক্ত নিবিড়ে মুখ লাল হয়ে যায়। লোকটার মাথাহীন দেহ আছড়ে পরে ব্রিজের উপর। যা দেখে পাশে দুজন দ্রুত সি’এন’জি নিয়ে চলে যায় সেখান থেকে। তাদের আর পেছন থেকে ধাওয়া করেনি নিবিড়। তার একটাই চিন্তা রুশানকে বাচাতে হবে।
এক হাত দিয়ে মুখে ছিটকে থাকা র’ক্ত মুছে নিলো নিবিড়। তবুও মুখটা টকটকে লাগ হয়ে আছে তার। আর লোকটার মাথাহীন দেহ ব্রীজের উপর হাত পা ছোড়াছুড়ি করছে।
নিবিড় এখনো একটা ঘোড়ের মধ্য দিয়ে কাটাচ্ছে। উত্তেজনা বসত সে কি করে ফেলেছে তা নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না। শরির টা ঘামছে খুব। আর কিছু না ভেবে রুশানকে কাধে তুলে নিয়ে ছুটে চললো মেইন রোডের দিকে। গাড়ি ধরে দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।
To be continue……..
#ছদ্মবেশ (পর্ব ৫২)
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ
আহত রুশানকে কাধে নিয়ে মেইন রোডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে নিবিড়। রক্তে শার্ট ভিজে গেছে তার। রুশানের এই অবস্থা, সাথে একটু আগে করে ফেলা কাজটা, সব মিলিয় দিশেহারা হয়ে ছুটছে সে। বুকের ভেতর হার্ট খুব জোড়ে বিট হচ্ছে। মনে হচ্ছে জায়গা পেলে এখনি বেড়িয়ে আসবে।
রুশানকে নিয়ে মেইন রোডে দাড়ালো নিবিড়। রুশানকে একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে গায়ের উপরের জামাটা খুলে হ্যাল্প হ্যাল্প বলে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছে সে। মেইন রোডে কয়েকটা গাড়ি তাকে ক্রস করে চলে গেলেও একটা সি’এন’জি এসে তার সামনে দাড়িয়ে বলে,
– কি হইছে ভাই? সমস্যা কিতা?
নিবিড় উত্তেজিত গলায় বলে,
– ভাই আমার বন্ধুকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে যত তারাতারি সম্ভব। নয়তো ম’রেই যাবে।
লোকটা এবার রুশানের দিকে চেয়ে দেখে জায়গায় জায়গায় যখম তার। শরিরের বিভিন্ন অংশ কেটে রক্তে লাল হয়ে আছে। নাক মুখে রক্তে যা তা অবস্থা।
লোকটা এবার নিবিড়ের দিকে চেয়ে বলে,
– হিয়ার(তার) তো অবস্থা খুব খারাপ ভাই। তারাতারি গাড়িত তোলেন।
নিবিড় এবার রুশানকে ধরে গারিতে গিয়ে বসায়। রুশান মিটি মিটি চোখ খুলছে আবার বন্ধ করছে। নিবিড় তার গালে হাত রেখে বলে,
– কিছু হবে না ভাই। একটু ধৈর্য ধর।
সি’এন’জি ড্রাইবার গাড়ি চালাতে চালাতে বলে,
– কন্ডে মারামারি কইত্তেন গেছেন? এমুই জায়গা এতো সুবিধার নো। আই নোয়াখালির তুন আই ইয়নে গাড়ি চালাই আইজ্জা চাইর মাস। এর ভিত্রে ২ জনের খুনের খবর হাইছি। জায়গা এতো ভালা নো।
নিবিড় বলে,
– ভাই তারাতারি কোনো হসপিটালে চলেন আপনি। পরে বলবো সব।
,
,
ওদিকে আজ ২ দিন রুশানের কোনো খবর না পেয়ে সন্ধা থেকে কয়েকবার ফোন দিলো রাজ। কিন্তু ফোনও বন্ধ পাচ্ছে তার। সকালে নাকি ফরিদা আন্টি ফোন দিয়েছিলো। তখনও বন্ধ ছিলো। তখন তিনি ভেবেছিলো হয়তো ফোনের চার্জ নেই বা অন্য কিছু হবে। এর পর আজ রাত হয়ে যাওয়ার পরও কোনো ফোন না পাওয়ায় আর ফোন বন্ধ পাওয়ায় রিতিমত টেনশন শুরু হয়ে গেলো তার।
নিলয় কিছুটা সন্দেহজনক ভাবে সরে যায় সেখান থেকে। পিন্টুকে ফোন দিলে দেখে সে ফোন রিসিভ করছে না।
পিন্টুও ইদানিং তার আগে আগে হাটার চেষ্টা করছে। আগে ফোন দিলেই ফোন রিসিভ করতো আর এখন দুই বার দেওয়ার পরও রিসিভ করছে না।
তিন বারের সময় রিসিভ করলে নিলয় বলে,
– ওই শুয়’রের বাচ্চা, ফোন কি ** ভিতর ঢুকাই রাখছস?
পিন্টু স্বাভাবিক ভাবে বলে,
– কাছে ছিলো না তাই শুনতে পাইনি।
নিলয় বিশ্রি একটা গালি দিয়ে বলে,
– কানের ভেতর কি ** দিয়ে রাখছ?
পিন্টু এবার কিচুক্ষন চুপ থেকে বলে,
– স্যরি ভাই। ভুল হয়ে গেছে।
নিলয় এবার কিচুক্ষন চুপ থেকে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করে বলে,
– রুশান কোথায়?
পিন্টু কিছুটা অবাক ভঙ্গি নিয়ে বলে,
– কোন রুশান?
নিলয় আবার উত্তেজিত হয়ে বলে,
– সোজা কথার সোজা উত্তর দে, কোনো তিরিং বিরিং চো*** একবারে হাতের মুঠে চিপে পি’ষে ফেলবো। হাটতে শিখালাম আমি, আর এখন আমার আগে আগে দৌড়াচ্ছো, না?
পিন্টু এবার কিছুক্ষন শান্ত থেকে বলে,
– ভাই দলের বাকি লোকেরা খবর পেয়েই তুলে নিয়ে মে’রে দিয়েছে। আমি বারন করার সময় টুকুও পাইনি ভাই।
নিলয় এবার এক মুহুর্তের জন্য নিশ্চুপ হয়ে গেলো। ফোনটা অটোমেটিক কানের কাছ থেকে সরে গেলো তার। রোবটের মতো দাড়িয়ে আছে ছাদের এক পাশে।
,
,
রাজের ফোনটা বেজে উঠতেই হাতে নিয়ে দেখে নিবিড়ের ফোন। রিসিভ করলে রাজকে রুশানের অবস্তার কথা জানায়। কথা বলার সময়ও যেন নিবিড়ের গলাটা কাঁপছিলো খুব।
কথা শেষে পাশ থেকে তুষার ও ফরিদা আন্টি কি হয়েছে জানতে চাইলে রাজ বলে,
– রুশানের নাকি ছোট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে। এখন কুমিল্লায় একটা হসপিটালে ভর্তি।
ফরিদা আন্টিও যেন ভুত দেখার মতো হতভম্ব হয়ে যায়। তিনি আশা করেছিলো অন্য কিছু। ভেবেছিলো নিবিড় আজ এতোদিন পর ফোন দিয়ে তার ভুল শিকার করে মাপ চাইবে। আর ফরিদা আন্টি বাসায় নিয়ে আসবে আবার। রাগ আগের থেকে অনেকটা কমেছে। তবে নিবিড়কে চোখে হারাচ্ছে সে।
এর মাঝে নিলয় ছাদ থেকে নেমে সবাইকে এমন উত্তেজিত দেখে কারণ জানতে চাইলে রাজ বলে,
– আমাদের এখন কুমিল্লায় যেতে হবে রেডি হও।
বলেই সেখান থেকে উঠে রুমে চলে গেলো রাজ। নিবিড় অবাক ভঙ্গিতে সবার দিকে তাকালে তুষার বলে,
– রুশান নাকি কুমিল্লায় একটা হসপিটালে ভর্তি। নিবিড় আছে ওখানে। আমি আর রাজ যাচ্ছি। তুইও গেলে রেডি হ।
রুশান বেচে আছে এটা শুনে একটা স্বস্থির নিশ্বাস ছাড়ে নিলয়। এরপর স্বাভাবিক হয়ে বলে,
– হুট করে এতো রাতে গাড়ি পাবি কই?
তুষার এবার কিছুটা ভাবান্তর হয়ে রাজের কাছে চলে যায়। পেছন পেছন নিলয় ও ফরিদা আন্টিও যায়।
ফরিদা আন্টি বলে,
– এখন মাঝ রাতে কুমিল্লায় যাওয়ার গাড়ি পাবে কোথায়?
নিজের গাড়ি আছে, কথাটা রাজ অস্থিরতা নিয়ে বলতে গিয়েও নিজের ভেতর রেখে কথা ঘুরিয়ে বলে,
– গাড়ি না পেলেও যেতে হবে এখন।
পাশ থেকে তুষার বলে,
– আমার পরিচিত একটা লোক আছে। ভাড়ায় গাড়ি চালায়। এইতো কাছেই তার বাসা। তবে এতো রাতে যাবে কিনা ঠিক বলতে পারছি না।
রাজ বলে,
– আমাকে নাম্বার টা দাও আমি কথা বলছি।
তুষার নাম্বারটা দিয়ে বলে লোকটার নাম ইব্রাহিম।
রাজ সবাইকে রেডি হতে বলে বেলকনিতে চলে যায়।
মাঝ রাতে ঘুমু ঘুমু ভাব নিয়ে ওপাশ থেকে বলে,
– হ্যালো, কে বলছেন?
রাজ বলে,
– একটা জরুরি প্রয়োজনে কল দিয়েছি। আপনাকে ইমার্জেন্সি কুমিল্লা যেতে হবে এখন।
লোকটা বলে,
– ভাই মাফ করবেন এতো রাতে গাড়ি নিয়ে বের হইনা আমি। তাছারা অনেক দুরের পথ। রাতের বেলায় পুলিশ চেক পোষ্টেরও অনেক ঝামেলা আছে।
রাজ বলে,
– ওসব আপনাকে ভাবতে হবে না।
লোকটা আবার বলে,
– ভাই আমি ভাড়া গাড়ি চালাই। সামান্য ৪-৫ হাজার টাকার জন্য এতো রাতে রিস্ক নিতে পারবো না।
রাজ এবার বিরক্ত হয়ে বলে,
– আপনার এক মাসের ইনকামের সমান পেমেন্ট পাবেন। তবে যেতে হবে খুবই ইমার্জেন্সি।
লোকটা এবার শোয়া থেকে উঠে বসে চোখ ডলে ডলে বলে,
– সত্যি বলছেন নাকি পরে পল্টি মারবেন?
রাজ বলে,
– আমি এক কথা বার বার বলতে পছন্দ করি না।
লোকটা এবার হাস্যজ্জল মুখে বলে,
– আচ্ছা ঠিকানা বলেন, আমি আসছি।
,
,
রাতের বেলায় রাস্তা মোটামুটি ফাকা ছিলো দেখে সময় বেশি লাগেনি। রাত ২ টার দিকে তারা পৌছে গেছে কুমিল্লায়।
নিবিড়ের থেকে হসপিটালের ঠিকানে নিয়ে সেখানে চলে গেলো রাজ, নিলয়, তুষার ও ফরিদা আন্টি। ফরিদা আন্টিকে আসতে নিষেধ করেছিলো বার বার। তবুও তিনি বারণ শুনেনি। নিজের ছেলের মতোই সবাইকে ভেবে এসেছে এতো দিন। আর ছেলের কিছু হলে মা কিভাবে শান্ত থাকে?
রাজ ওখানে গিয়ে জানতে পারে রুশানের অবস্তা এতোটা ভালো না। যত তারাতারি সম্ভব ঢাকায় কোনো ভালো হসপিটালেে নিয়ে যেতে।
নিলয় নিশ্চুপ হয়ে চেয়ে আছে রুশানের দিয়ে। এই প্রথম কোনো শত্রুকে দেখে তার চোখ ছলছল করে উঠলো। এক দিক দিয়ে তার খুব কাছের বন্ধু। আর অন্য দিক দিয়ে তার সবচেয়ে বড় শত্রু। কোনটাকে আগে প্রাধান্য দেবে সে?
ফরিদা আন্টিতো কেঁদে একাকার। হুমায়ুন আহমেদ এই জন্যই বোধ হয় বলেছিলেন। ছেলে মানুষ সহজে কাঁদে না। আর মেয়েরা তো সামান্য লিপস্টিক হারালেও কাঁন্না করে ফেলে।
তুষার রাজের সাথে সাথেই দৌড়াচ্ছে। আর নিবিড় ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছে এক পাশে।
রাজ ওখান থেকে একটা এম্বুলেন্স নিয়ে রুশানকে তুলে বাকি সবাইকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। নিবিড় এখনো গাড়ির ভেতর চুপচাপ একপাশে বসে আছে। হুট করে কি হয়ে গেছে তা এখনো মস্তিষ্কে ধারণ করতে পারছে না সে। সহজ ভাষায় যাকে বলে জ্ঞান শুন্য।
,
,
ঢাকায় সবচেয়ে উন্নত হসপিটালে নিয়ে যায় রুশানকে। রাজ আগেই লোক দিয়ে সেখানে সব ঠিকঠাক করে রেখেছে। এরপর সরে গেছে লোক গুলো। হসপিটালে নিয়ে যেতেই একজন ডাক্তার বলে উঠে,
– আরে এটা তো মি. রিদ সাহেবের ছেলে। আগেও অনেকবার এখানে এসেছিলো রিদ সাহেবের সাথে দেখা করতে।
তুষার ফরিদা আন্টি এরা কিছুই বুঝলো না। কে রিদ আর কে কার ছেলে। কিছুই তাদের মাথায় ঢুকছে না।
রুশানকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলো তারা। ওটির বাইরে বসে আছে সবাই। নিবিড় এখনো জড়োসড় হয়ে চুপচাপ বসে আছে সবার মাঝখানে। গায়ে ছোপ ছোপ রক্ত ওয়ালা জামাটা এখনো রয়ে গেছে। মুখে ছিটকে পড়া রক্ত গুলোও শুকিয়ে কালচে রং এর হয়ে আছে।
নিবিড়কে এমন দেখে রাজ পাশ থেকে তার কাধে হাত রাখে একটু স্বাভাবিক করার জন্য। নিবিড় চমকে উঠলে রাজ বলে,
– এতো কিছু হয়ে গেলো কিভাবে? তুমি না হয় কুমিল্লায় গিয়েছিলে। রুশান কুমিল্লায় গেলো কেন? তুমিই বা তাকে পেয়েছো কোথায়?
নিবিড় এবার গড়গড় করে রাজকে বলে দেয় সব। কিভাবে লোক গুলোকে রুশানে নিয়ে যাচ্ছিলো, আর কিভাবে সে দেখেছিলো।
আর নিবিড়ের গায়ে রক্ত গুলো রুশানের না। রুশানকে বাচাতে গিয়ে অন্য কাউকে কু’পিয়ে মা’থা আলাদা করে দেওয়ায় র’ক্ত ছিটকে মুখে এসে পরেছে।
সবাই অবাক হয়ে নিবিড়ের দিকে কিছুক্ষন স্থির হয়ে তাকিয়ে থাকে। নিবিড়ের মত একটা ছেলে এমনটা করেছে এটা বিশ্বাসই হচ্ছে না তাদের। যেই ছেলেটা ঝগড়া ঝামেলা থেকে দুরে থাকতো সব সময়। অজান্তে কারো মনে কষ্ট দিলেও পরে গিয়ে মাপ চেয়ে নিতো। সে কিনা একজনকে মার্ডার করে ফেলেছে?
নিবিড় এবার রাজের হাত চেপে ধরে ভয়ার্ত গলায় বলে,
– ভাই আমি একজনকে খু’ন করে ফেলেছি। নিজ হাতে করেছি। আমি তো ইচ্ছে করে করিনি। হুট করে হয়ে গেছে মা’র্ডার টা। আমাকে কি এখন পুলিশ দরে নিয়ে যাবে? ফাঁ’সি দিবে আমায়? বিশ্বাস করো তোমরা। আমি তো ইচ্ছে করে কিছু করিনি। বিশ্বাস করো তোমরা।
নিলয় এতোক্ষন বুকে দুই হাত গুজে দেওয়ালে হেলান দিয়ে সবটা শুনলো। এবার নিবিড়ের চোখে মুখে আতঙ্ক দেখে নিবিড়ের পাশে বসে সেও নিবিড়ের কাধে হাত রাখে।
রাজ ও নিলয় দুজন একই সাথে বলে উঠে,
– কিছু হবে না। আমরা আছি তো।
To be continue……