ছদ্মবেশ (গল্পের ট্রেইলার)

0
2385

#ছদ্মবেশ (গল্পের ট্রেইলার)
#মেহেদী_হাসান_রিয়াদ

এক রাতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এক সাথে ৪৭ জন মাফিয়াকে শুট করা হয়েছে। জানা যায় এদের মাঝে সকলেই বড় বড় ক্রাইমের সাথে জড়িত ছিলো। তবে কে বা কারা এতো গুলো মানুষকে একই টাইমে শুট করেছে, সেই ব্যাপারে এখনো কিছুই জানা যায় নি।

টিভিতে সংবাদ ভােসে আসতেই একটু মুচকি হাসে রুশান। রাজ দুই কাপ চা নিয়ে পাশে এসে বসলো। রুশানের দিকে এক কাপ এগিয়ে দিয়ে বলে,
– ভাই আমার মাথায় ধরছে না। একই টাইমে এতো গুলো মানুষকে এক সাথে শুট করা টা কিভাবে পসিবল? তাও এক জায়গায় না। দেশের বিভিন্ন জায়াগায়।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে রুশান একটা হাসি দিয়ে বলে,
– পসিবল হয়েছে বলেই তো টিভিতে নিউজ এসেছে তাই না?

ওদিকে একটা হোটেলে সুইমিংপুলে বসে আছে আদ্রিয়ান মাহমুদ নির্জন। তার এক বডিগার্ড এসে ৪৭ জন টিম মেম্বারের মৃ’ত্যুর সংবাদ দিলে পুনরায় রিলেক্সে চোখ বন্ধ করে নিলো সে। কারণ তার টিমের ৪৭ জন মাফিয়া এভাবে শেষ হয়ে গেলেও একটুও ভেঙে পরেনি সে। কারণ তার গড়ে তোলা এতো বড় অন্ধকার সম্রাজ্যে ৪৭ জন মাফিয়া মাত্র গুটি কয়েক।

চরিত্র,

১. রাজঃ~ ভার্সিটির মাঠে সজোড়ে থা’প্পর পরে রাজের গালে। সামনে দাড়িয়ে থাকা অরিন ফুসতে ফুসতে বলে, ছোট লোকের বাচ্চা, অরিন চৌধুরির মতো মেয়েকে প্রপোজ করার সাহস তুই কোথায় পাস? ব্রামন হয়ে চাঁদ ধরার স্বপ্নটা নিজের মাঝেই রেখে দে বুঝলি? নিজের দিকে একবার তাকা আর আমার দিকে একবার তাকা। আমার সাথে কোনো ভাবে তোর যায়?
অপমানে ও লজ্জায় গালে হাত দিয়ে নিচের দিকে চেয়ে আছে রাজ। বড় বড় কয়েকটা নিশ্বাস নিয়ে নিচের দিকে চেয়ে রাগ কে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে সে। চোখ দুটু রক্তিম হয়ে উঠেছে তার।

২. রুশান ও রিমাঃ~ অনেক দিন পর বাড়িতে এসেছে রুশান। রিমা আজ খুব শান্ত শিষ্ট একটা মেয়ে। কারণ রুশানের কাছে কোনো আকাম ধরা পরলেই টাস টাস গালের মাঝে পরবে।
ছাদের মাঝে একটা পাত্রে লাল রং এর আলতা নিয়ে বসলো রুশান। সামনে রিমার একটা পা নিয়ে আলতো করে লাগিয়ে দিচ্ছে সে। রিমা গালে এক হাত দিয়ে রুশানের দিকে চেয়ে থাকে বললো,
– তোমার সব কিছু আমার কাছে সব থেকে বেষ্ট মনে হয় ভাইয়া। শুধু মাঝে মাঝে ঠাস টাস মা’রো দেখে ভালো লাগে না।
রুশার রিমার দিকে চেয়ে বললো,
– তুই একে তো আমার খালাতো বোন। আর তার উপর আমি তেমন একটা বাসায় থাকিনা৷ নয়তো ঠিকই আলিফের মতো সোজা বানিয়ে রাখতাম। শুনলাম কলেজে নাকি আবার কোন ছেলে বন্ধুর থেকে এসাইনমেন্ট নিয়েছিস?
মুহুর্তেই ভয়ে দুই গাল দুই হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে জ্বিভে কামড় কাটে রিমা।
কারণ সে নিশ্চিত কিছু বললেই রুশান ভাইয়া ঠিকই গালের মধ্যে ঠাস ঠাস মে’রে দিবে।

৩. নিবিড়ঃ~ বিকেল থেকে শুয়ে আছে নিবিড়। সারা শরির ব্যাথা। রাজ পাশে এসে বলে,
– তোমার এইসব লু*চ্চামি যত দিন চলবে, ততোদিন এভাবে লোক জনের হাতে মা’র খাবে? এতো গুলো মেয়ের সাথে প্রেম করিস। আবার কয়দিন পর পর একটার সাথে ধরা খেয়ে মার খাস। তোর কি লজ্জা করেনা নিবিড়?
নিবিড় একটু হেসে বলে,
– মেয়ে ছারা জীবনটাই বৃথা রে বন্ধু। তুমি ওসব বুঝবা না। আর এগুলো কে লুচ্চামি বলে না। এগুলোকে বলে রোমান্টিকতা। আর এটাও একটা আর্ট, আর তোমার এই বন্ধু হলো সেই আর্টের আর্টিস্ট।

৪. তুষার ও নিলয়ঃ~ প্রথম সেমিস্টার কমপ্লিট হওয়ায় ব্যাচেলর বাসায় খুব ভালো পার্টি হবে পাঁচ বন্ধুর। এর মাঝে তুষার সকলের মাঝখানে ঢুকে বলে,
– মামা আজ বোতল নিবি না? জমিয়ে পার্টি হবে।
পাশ থেকে নিলয় নিজের দুই গালে থাপ্রাতে থাপ্রাতে বলে,
– আসতাগফিরুল্লাহ্, তওবা তওবা। বোতল মোতল নিয়ে আসলে আমি এসবের মাঝে নাই মামা। এসব হারাম জিনিস।
এবার নিবিড় চোখ রাঙিয়ে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলে,
– তুই সালা মাল খোর, কখনোই ঠিক হবে না।
তুষারও রেগে নিবিড়ের দিকে চেয়ে বলে,
– মাল খোর হলেও ঠিক আছি, তোর মতো তো আর মাইয়া খোর না।
রাজ হাত দিয়ে সব থামিয়ে বলে,
– কোনো কিছু হবে না। এসব করলে ফরিদা আন্টি নির্ঘাত সব কয়টাকে লা’থি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করবে। আন্টির আপন বলতে কেও নেই। তাই আমাদেরকে নিজের ছেলের মতোই ভাবে। এমন কিছু করা যাবে না, যা ফরিদা আন্টির মনে কষ্ট লাগবে।

৫. আরোহিঃ~ আজ টিউশনিতে গিয়েই চমকে গেলো রাজ। কলিং বেল বাজানোর পর সামনে আরোহিকে দেখে। আরোহি নীল রঙের একটা শাড়ি পরে লজ্জা মাখা মুখে দাড়িয়ে আছে রাজের সামনে। রাজ রাগি লুক নিয়ে বলে,
– তোমাকে একদিন বলেছিলাম না এমন সাজুগুজু করে আমার সামনে পড়তে আসবে না? এমন ভুল করতে তাকলে আমি আর পড়াতে আসবো না তোমায়।
আরোহি মাথা নিচু করে বিষণ্ন মনে বলে,
– সরি স্যার। আর এমন করবো না।
রাজ ভেতরে চলে গেলে আরোহি তার দিকে চেয়ে মনে মনে ভাবতে লাগে,
‘আপনার চোখে কি কখনোই আমার সৌন্দর্যটা ধরা পড়বে না স্যার? কেন বুঝেন না, আমার অনুভূতি গুলো?’

৬. সিক্রেট~ একটা টোল টেনে সামনে এসে বসে রুশান। হাতের বাহুতে গু’লি লেগে সামনে শুয়ে আছে তাদের পাঁচ বন্ধুর মাঝে একজন। হাতে বেন্ডেজ করা। রুশান তাকে আধ শোয়া করে বসিয়ে চামচ দিয়ে তাকে খাইয়ে দিতে দিতে বললো,
– নিজের আসল রুপ টা যতই লুকিয়ে রেখেছিলি, বাট আমার চোখ ফাকি দিয়ে বেশি দিন থাকতে পারিস নি। এই প্রথম কোনো অপরাধির দিকে গুলি চালানোর সময় আমার টার্গেট মিস হয়েছে। তাও সেটা তুই ছিলি বলে। কিন্তু নেক্সট টাইম মিস হবে না। সময় থাকতে এই অন্ধকার জগৎ থেকে বেড়িয়ে আয় দোস্ত। কারণ অপরাধিদের বুকে গু’লি চালাতে আমি দ্বিতীয় বার ভাবি না। কিন্তু নিজের কাছের বন্ধুর বুকে গু’লি চালাতে আমার একটু হলেও কষ্ট হবে রে।

~ ট্রেইলারে শুধু চরিত্র গুলো প্রকাশ করলাম। মেইন গল্পের কিছুই প্রকাশ করিনি। কারণ আমার এই গল্পটা হবে সবচেয়ে আলাদা।

দিন শেষে সবাই দৃষ্টির আড়ালে থাকা মুখশ পরিহিত চরিত্র। সকলের একটাই পরিচয়। ‘ছদ্মবেশ’।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here