জলদানব (পর্ব ৩)

0
270

#গল্প১২৫

#জলদানব (পর্ব ৩)

ময়মনসিংহ থানার ওসি শাহাবুদ্দিন আর ত্রিশাল থানার ওসি মনোরঞ্জন বোকার মতো তাকিয়ে আছে রাহাতের দিকে। গলা খাকড়ি দিয়ে শাহাবুদ্দিন জিজ্ঞেস করে, “রাহাত ভাই, নিজ চোখেই দেখলেন ভিকটিমের মোবাইলে কোনো ছবি নাই, সব ডিলিট। তাইলে এখন ছবি কই পাবেন? আপনি বলতেছেন ছবি আছে, বুঝলাম না ব্যাপারটা।”

মনোরঞ্জনও মাথা নেড়ে সহমত প্রকাশ করে। রাহাত মুচকি হেসে বলে, “শোনেন, যুগ অনেক এগিয়ে গেছে। ভিকটিম পরীর মোবাইলটা এন্ড্রয়েড ফোন, এ ধরনের ফোনে বেশিরভাগ মানুষ তথ্যগুলো ব্যাকআপ রাখে গুগল ড্রাইভে। ফোন হারিয়ে গেলেও তাই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ছবি হারায় না।”

মনোরঞ্জনের চোখ চকচক করে ওঠে, উত্তেজিত গলায় বলে, “এইটা কী শোনাইলেন রাহাত ভাই। তাইলে এখনই পরীর গুগল ড্রাইভে খুঁইজা দেখি ছবিগুলা, দেরি কইরা লাভ কী?”

রাহাত চিন্তিত গলায় বলে, “এখানে দুইটা জিনিস আমাদের জানতে হবে এখন, এক, পরীর জিমেইল এড্রেস আর তার পাসওয়ার্ড। জিমেইল এড্রেসটা না হয় পরীর বন্ধু বান্ধব, কলিগের কাছ থেকে জানা যাবে। কিন্তু পাসওয়ার্ড?”

ওসি শাহাবুদ্দিন হতাশ চোখে তাকিয়ে থাকে, বলে, “পাসওয়ার্ড, ঢাকার আমাদের সাইবার ডিপার্টমেন্ট বাইর কইরা দিতে পারব না?”

রাহাত মাথা নেড়ে বলে, “পারবে, একটু হয়ত সময় লাগবে। কিন্তু আমি ভাবছি সহজ কোনো উপায় আছে কি না। আচ্ছা শাহাবুদ্দিন, পরী তো একটা বেসরকারি অফিসে কাজ করত, ওখানকার ঠিকানাটা দাও তো।”

শাহাবুদ্দিন একটু বিভ্রান্ত হয়, পরীর অফিসের ঠিকানা দিয়ে ইনি কী করবেন? অফিসের লোক কী পাসওয়ার্ড জানে?
*******************

গ্রীন এন্ড ফ্রেশ কোম্পানির অফিসে ঢোকার মুখে পরীর একটা ছবি টানানো দেখতে পায়, নিচে লেখা, Justice for Pori. রাহাত মনে মনে আরেকবার উচ্চারণ করে, অবশ্যই, ঐ নরপশুকে না ধরে এক মুহূর্তের জন্যও থামবে না ও।

আজো রাহাতের সাথে এস আই রুখসানা এসেছে, মেয়েটার তদন্ত কাজ শেখার খুব আগ্রহ। ভালো লাগে রাহাতের। গ্রীন এন্ড ফ্রেশ কোম্পানির কর্ণধার সাজ্জাদ হোসেন নিজে এসে ওদের উপরে অফিসঘরে নিয়ে যান। পরীর ঘটনায় ভদ্রলোক ভীষণ দুঃখ প্রকাশ করেন। বলেন তাদের গ্রীন এন্ড ফ্রেশ কোম্পানি সারাদেশে সতেজ শাকশব্জি থেকে শুরু করে মাছ, দেশি ফলসহ নানাধরণের পণ্য সরবরাহ করে। পরী মার্কেটিং সাইটটা দেখত।

রাহাত সব শুনে বলে, “আপনার ছোট্ট একটা সাহায্য দরকার। পরী যে কম্পিউটারটা ব্যবহার করত সেটা একটু আপনার আইটিকে বলেন পরীর আইডি ব্যবহার করে লগইন করতে। সাধারণত আমরা যে ডিভাইসগুলো ব্যবহার করি সেগুলো অটোমেটিক লগইন হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আমরা পরীর কম্পিউটার থেকে ওর গুগল ড্রাইভে ঢুকতে পারব যা এই কেসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

সাজ্জাদ হোসেন মাথা নেড়ে বলেন, “আপনি তো একদম ঠিক বলেছেন, আমিও আমার কম্পিউটারে জিমেইল সবসময় লগইন করে রাখি। আমি এখনি বলে দিচ্ছি, আপনি বসুন।”

কিছুক্ষণের মধ্যেই পরীর অফিশিয়াল ল্যাপটপটা চলে আসে, রাহাতের টেনশনটা বাড়তে থাকে, মনে মনে প্রার্থনা করে, পরীর জিমেইলটা যেন লগইন থাকে। আইটি ডিপার্টমেন্টের ছেলেটা পরীর ল্যাপটপ খুলে সরাসরি গুগল পেজটা ওপেন করতেই রাহাতের দমবন্ধ হয়ে যায়। পেজটার জিমেইল বক্সে মেইল আসার সংখ্যাগুলো দেখাচ্ছে। তারমানে অটো লগইন হয়েছে। উফফ, একটা বিশাল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রাহাত। এবার নিজেই বসে যায়, দ্রুত ও গুগল ড্রাইভে ঢুকে পড়ে। বুকটা কেমন যেন ধকধক করছে। ছবিগুলো আছে তো? পরী ব্যাকআপ সিস্টেম চালু রেখেছিল তো? ডাটা বা ওয়াইফাই এর অপশন কোনটা দেওয়া ছিল? রাহাত রীতিমতো ঘামতে থাকে।

কাঁপা হাতে ক্লিক করতেই অনেকগুলো ফোল্ডার চলে আসে। রাহাত দ্রুত ক্লিক করতে থাকে ফোল্ডার গুলোয়, নাহ, নেই। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়, তীরে এসে তরী ডুববে? কী মনে হতে রাহাত ‘বিন’ লেখা ফোল্ডারটায় ঢুকে। উপরে লাল অক্ষরে লেখা ৩০ দিনের মাঝে ছবিগুলো স্থায়ীভাবে এই ফোল্ডার থেকে ডিলিট হয়ে যাবে। রাহাত দ্রুত মনে মনে হিসেব কষে, নাহ, এখনো কিছুদিন বাকি আছে, পরী খুন হওয়ার পর এখনো ৩০দিন হয়নি। রাহাত এবার প্রথম ছবিটা খুলতেই পুরো স্ক্রীণ জুড়ে পরী আর মারুফের হাস্যোজ্জ্বল ছবিটা দেখতে পায়। বুকটা যেন কেমন করে উঠে, আহারে তখনও ওরা জানত না একটু পরই কী ভয়ানক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে ওদের সাথে।

রাহাত আর দেরি করে না, সবগুলো ছবি ডাউনলোড করে ফেলে। তারপর পরীর মেইল থেকেই নিজের মেইল এড্রেসে মেইল করে ছবিগুলো। একটা পেনড্রাইভেও ছবিগুলো নিয়ে নেয়, সাথে পরীর ল্যাপটপটাও। অফিসে যেয়ে ভালোমতো ছবিগুলো দেখতে হবে।

আসার সময় রাহাত অনেক ধন্যবাদ জানায় সাজ্জাদ সাহেবকে। আর ছবির এই ব্যাপরটা ঘুনাক্ষরেও যেন কেউ না জানতে পারে সেটা বলে আসেন। আসার পথে রুখসানা শুধু বলে, “স্যার,আপনি জিনিয়াস। কেস তো প্রায় সমাধান করে ফেললেন।”

রাহাত মৃদু হাসে, তারপর বলে, “এখনো অনেক পথ বাকি। খেয়াল করে দেখো, যদি সত্যিই নৌকার মাঝি খুনটা করে থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে সে কিন্তু সহজ লোক না। একটা ভয়ংকর নরপশু এখনো মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

রুখসানার বুকটা ভয়ে হিম হয়ে আসে, একটা অজানা আশংকায় ওর কেমন অস্থির লাগে।

সেদিন বিকেলে রাহাত বাকি দুইজন ওসিকে নিয়ে বসে। তারপর পরীর ল্যাপটপটা খুলে রুদ্ধশ্বাসে ছবিগুলো দেখতে থাকে, বিশেষ করে শেষ দিকের ছবিগুলো যেখানে পরী আর মারুফ ছইয়ের উপর বসে ছিল। এই ছবিগুলো থেকে পেছনে বসা মাঝি দু’জনকে দেখা যাচ্ছে। তারমানে নৌকায় দু’জন মাঝি ছিল। রাহাত জুম করে মাঝবয়েসী মাঝিটাকে দেখে, চোখ দুটোতে কেমন একটা নিষ্ঠুরতা। এই চোখ রাহাত চেনে, অনেক খুনীর চোখ দেখেছে, এমন ভাবলেশহীন। আর পাশে বসে থাকা কম বয়েসী ছেলেটাই তাহলে পরীর মোবাইলটা গফরগাঁও বাজারে বিক্রি করেছিল।

ওসি শাহাবুদ্দিন গলা খাকড়ি দিয়ে বলে, “রাহাত ভাই, আপনি অবিশ্বাস্য কাজ করেছেন। এসপি স্যার ফোন দিছিলেন, কেসের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চেয়েছেন।”

রাহাত মাথা নাড়ে, তারপর বলে, “স্যারকে বলো, কাল সকালে আমরা একটা প্রেজেন্টেশন দেব কেসের ব্যাপারে। বিশেষ করে কেসটা এখন কী করে এগোব।”

পরদিন সকালে রাহাত সুন্দর করে কেসটা প্রেজেন্ট করে, সাবলীল ভঙ্গিতে বলে, “স্যার, আমরা গতকালই পরীর ল্যাপটপ থেকে ওর মোবাইলের ছবিগুলো উদ্ধার করেছি। ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা দেখি, পরী আর মারুফ মাঝিদের দিকে পেছন ফিরে বসেছিল। মারুফের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায় ওর মাথার পেছনে আঘাত করা হয়েছিল। তারমানে মাঝিদের কেউ একজন এই কাজটা করে। মনে হয়, নৌকায় থাকা লম্বা কোনো বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর পরীকে এরা রেপ করে, আর গলা চেপে মেরে ফেলে। লাশটা নদীতে ফেলার সময় নৌকায় থাকা পানির কলসিটা পায়ে বেঁধে দেয়। যেটা পরে লাশের সাথে উদ্ধার হয়েছিল। এই দু’জন ঘৃণ্য নরপশুকে আমরা দ্রুতই ধরে ফেলব স্যার।”

এসপি হারুনুর রশীদ প্রশংসার চোখে তাকিয়ে বলেন, “সাবাস রাহাত। খুনী যেহেতু চিহ্নিত হয়েছে এখন সাঁড়াশি অভিযান করে ধরে ফেলো।”

রাহাত বিনয়ের সাথে বলে, “স্যার, আমরা যদি হইচই করি তাহলে এই খুনীরা পালিয়ে আত্মগোপন করতে পারে। আমি একটা উপায় খুঁজে পেয়েছি ওদের ধরার।”

সবাই আগ্রহ নিয়ে রাহাতের দিকে তাকাতেই ও আবার শুরু করে, “স্যার, আমারা যতটুকু বুঝেছি এরা ময়মনসিংহ এসেছিল কোনো পণ্য সরবরাহ করতে। এই ছবিটা দেখেন, কিছু কাপড়ের বান্ডিল পড়ে রয়েছে নৌকার পাটাতনে। আমার মনে হয় এরা ময়মনসিংহ এসেছিল কাপড় ডেলিভারি দিতে। আমার যদি ভুল না হয় এই ধরনের কাপড় কম দামে নরসিংদীতে কিনতে পাওয়া যায়। আর এই মাঝিদের গতিপথও কিন্তু ওইদিকেই। মেয়েটার লাশ পাওয়া যায় ত্রিশালে, তারপর ফোনটা পাওয়া যায় গফরগাঁও এ। আমরা যদি ব্রম্মপুত্র নদীর ম্যাপটাই দেখি তাহলে বোঝাই যাচ্ছে এরা কোনদিকে যাচ্ছে, হয় নরসিংদী না হয় ভৈরব বাজার থেকে এরা কাপড় সংগ্রহ করে।

আমরা খুব গোপনে ময়মনসিংহে এমন কাপড় যেসব দোকানে বিক্রি হয় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করব তারা এই মাঝিদের চিনতে পেরে থাকতে পারে। তবে বোঝাই যাচ্ছে এরা সব ছোট দোকানের কাস্টমার। একবার এই খুনীদের নাম পরিচয় জানতে পারলে আমরা ওদের সহজেই ধরে ফেলতে পারব। আর এর পাশাপাশি নৌ পুলিশের কাছে মাঝিদের ছবিগুলো দিয়ে দেই। ওরা সতর্ক চোখ রাখুক।”

এসপি হারুনুর রশীদ সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন, বলেন, “রাহাত, তোমার প্ল্যান একদম ঠিকঠাক। আশা করি এরা দ্রুতই ধরা পড়বে।”
************

পরদিন সকালে রাহাত ময়মনসিংহ শহরের গাঙিনারপাড় এলাকায় কয়েকটা ছোট দোকান ঘুরে দেখে। ছবিতে দেখা কাপড় চোখে পড়ে না। রাহাত কায়দা করে শুধু কাপড়ের ছবিটা দেখাতেই এক দোকানদার পাশের রোডে দোকানগুলোর দিকে ইশারা করে।

রাহাত এবার আরো সতর্ক হয়, নির্দিষ্ট দোকানটায় আসতেই ছবিতে দেখা কাপড়গুলো দেখতে পায়। রাহাত এবার দোকানির সাথে ভাব জমিয়ে বলে, “ভাই, এই কাপড়গুলা আপনি কই থেইকা কিনেন? আমি কম দামে সাপ্লাই দিতাম।”

দোকানিটা পাত্তা না দেবার ভঙ্গিতে বলে, “এর চেয়ে কমে পারবেন না। একজন মাঝি আমারে সরাসরি ভৈরব বাজার থেকে এই কাপড় আইনা দেয়। হের নিজের নৌকা, তাই অনেক কম রেটে কাপড় দিতে পারে।”

রাহাত মন খারাপ করা ভঙ্গিতে বলে, “ওহ, তাইলে তো সম্ভব না।”

দোকানটা থেকে বের হয়ে রাহাত এবার ওসি শাহাবুদ্দিনকে ফোন দিয়ে বলে, “এই দোকানদারকে অন্য একটা ছুতায় থানায় ডেকে আনো। ট্রেড লাইসেন্স দেখার নাম করেও নিয়ে আসতে পারো।”

কাপড়ের দোকানদার বকুল মিয়া ভীষণ চিন্তায় আছে, ময়মনসিংহ থানা থেকে ফোন এসেছিল, জরুরি দেখা করতে বলেছে। সেদিন বিকেলে বকুল মিয়া ভয়ে ভয়ে থানায় আসে, আবার কী ঝামেলা হইল। থানায় ঢুকতেই বকুল মিয়া অবাক হয়ে দেখে সকালের সেই লোকটা!

রাহাত সময় নেয় না, প্রথমেই মাঝি দু’জনের ছবি দেখিয়ে বলে, “এদের চেনো?”

রাহাতের গলার সুরে কিছু একটা ছিল, বকুল মিয়া ভয় খেয়ে যায়। তোতলানো গলায় বলে, “স্যার, এরে চিনি, এর নাম গফুর। হেই তো আমার দোকানে কাপড় সাপ্লাই দেয়। আমি আর এর কাছ থেকে কাপড় নিমু না, আপনি যেই দামেই দেন আমি আপনার কাছ থেকেই নিমু।”

রাহাত হাসে সকালের কথা মনে করে, তারপর গম্ভীরমুখে বলে, “বকুল মিয়া, এই লোকের কাছ থেকেই কাপড় নিবা, আর এরে ফোন দিয়া কও কালকেই কাপড় নিয়া আসতে।”

বকুল মিয়া অসহায় গলায় বলে, “স্যার, এই লোকের ফোন কয়দিন ধইরা বন্ধ পাইতাছি। এরা তো নদীতে থাকে, চার্জ দিবার পারে নাই মনে লয়।”

রাহাত একটু চুপ থেকে বলে, “এর ফোন নাম্বারটা দাও। আর আজকের এই কথাগুলা কাউকে বলবা না। ফোন খোলা পাওয়া মাত্রই আমাদের জানাবে। মনে রাইখো, এই লোক কিন্তু ডাবল মার্ডারের আসামী।”

বকুল মিয়ার খুব প্রস্রাবের বেগ পায়, কী মুসিবতে পড়ল। কসম কেটে বলে আজকের কথা কাউকে বলবে না। কোনোমতে ফোন নাম্বারটা দিয়া থানা থেকে কাঁপা পায়ে বাড়ির পথ ধরে।

বকুল মিয়া চলে যেতেই রাহাত এবার ওসি শাহাবুদ্দিন আর মনোরঞ্জনকে দায়িত্ব দেয় গফুরের সব তথ্য খুঁজে বের করতে। আর মোবাইলটা নাম্বারটা সার্ভিল্যান্সে দিতে যাতে মোবাইলটা খোলামাত্রই জানতে পারে ও কোথায় আছে এখন।

পরদিন রাহাত দুটো খবর পায়, দুটোই খুব মারাত্মক খবর। হাফিজকে ও একটা কাজ দিয়েছিল, বিভিন্ন নদীর কাছাকাছি থানাগুলোতে রেপের সাথে মার্ডার হওয়া কেসের খবর জানতে। হাফিজ জানিয়েছে দু’বছর আগে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে কয়েক মাইল দূরে একটা মেয়ের লাশ পাওয়া যায়। পরে জানা যায় মেয়েটা পতিতাপল্লীর ছিল। রাহাত হাফিজের পাঠানো ছবির দিকে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে, এই মেয়েটার গলাতেও গলা চেপে ধরার সেই কালো দাগ। তারমানে খুনী কী একই মানুষ!?

আরেকটা খবর হলো, পরীর রেপের ডিএনএ রিপোর্ট এসেছে। পরীর রেপে শুধু একজনেরই স্পার্ম পাওয়া গেছে, তারমানে মাঝবয়েসী লোকটাই হয়ত সেই অপরাধী। রাহাত দ্রুতই নিলুফার আর পরীর রিপোর্ট দুটো হোয়াটসঅ্যাপে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বশীর আহমেদের কাছে পাঠায়।

ঘন্টাখানেক পর যখন স্যার উত্তর দেন তখন রাহাত অবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে থাকে, ডিএনএ দুটো একই মানুষের। তারমানে দুটো রেপ একই অপরাধী করেছে!!!! একটা ঠান্ডা স্রোত রাহাতের পিঠ বেয়ে নেমে যায়, একটা ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার ঘুরে বেড়াচ্ছে, যার মূল টার্গেট নদীর আশেপাশে সুযোগ বুঝে মেয়েদের রেপ করে মেরে ফেলা! রাহাত তীব্র একটা রাগ টের পায়, নাহ, আর সময় নেওয়া যাবে না, দ্রুতই এই পশুকে গ্রেফতার করতে হবে।

(চলবে)

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সুবাস
শিমুলতলী, গাজীপুর
২৪/০৯/২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here