#গল্প১২৫
#জলদানব (পর্ব ৪)
চাঁদপুরের মতলব উপজেলার এখলাসপুর এলাকাটা মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষেই অবস্থিত। জায়গাটা গফুরের কোনো এক অজানা কারণে খুব প্রিয় জায়গা। এখলাসপুর বাজারে গফুর সেদিন বিকেলে আয়েশ করে রহিম ব্যাপারির দোকানে দুই চামচ চিনি দেওয়া এক কাপ চা খাচ্ছিল। মাঝে মাঝে ফোনের দিকে তাকাচ্ছে, চার্জ কতটুকু হইল তাই দেখছে। সেই ঘটনার পর মোবাইল বেশিরভাগ সময় বন্ধই রাখছিল। আইজ চার্জ দেওয়া শেষ হইলে মোবাইলটা খোলা দরকার।
কিছুক্ষণ পর ফুল চার্জ হয়ে গেলে গফুর মোবাইলটা খোলে। প্রথমেই একটা বিশেষ নাম্বারে ফোন দেয়, কিন্তু ওপাশ থেকে কেউ ফোনটা ধরে না। মনটা একটু খারাপ হয়ে যায়। একটু পরেই ফোনটা বাজতেই গফুরের মনটা চঞ্চল হয়ে যায়, কিন্তু ফোন ধরেই দেখে ময়মনসিংহ থেকে দোকানদার বকুল মিয়া ফোন দিছে। ফোনটা কানে ধরতেই ওপাশ থেকে বকুল মিয়ার মোলায়েম গলা পাওয়া যায়, “গফুর ভাই, আমার খুব জরুরি ২০ গাইট কাপড় লাগব। পারলে কাইলই মাল ডেলিভারি দিবেন, আমি নগদ টেহা দিয়া দিমু।”
গফুর অবাক হয়ে বলে, “কয়দিনা আগেই না মাল দিয়া আসলাম, এত তাড়াতাড়ি সব শ্যাষ? ভাইজান কী কোনো জাদুর লাঠি পাইছে নাকি। ২০ গাইট কাপড়ের দাম তো হাজার পঞ্চাশের মতো। মজা করতাছেন নাকি?”
গফুরকে চমকে দিয়ে বকুল মিয়া বলে, “ভাই, আমি তোমার মোবাইলে এখুনি বিশ হাজার টাকা বিকাশ কইরা দিতাছি। তুমি কবে মাল লইয়া আসবা?”
গফুর এবার সিরিয়াস হয়, তারপর হিসেব কইরা বলে, “তিনদিন পরই পাইবা, চিন্তা কইরো না।”
ফোনটা রেখে গফুর এবার আরেক কাপ চায়ের কথা বলতেই রহিম ব্যাপারি আরেক কাপ চায়ের অর্ডার দেয়। রহিম বেপারি গফুরকে খুব পছন্দ করে, লোকটা এমন বাহারি ডিজাইনের কাপড় এত কম দামে নিয়ে আসে যে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গফুরও তাই সময় পেলে রহিম বেপারির দোকানে বসেই এক কাপ চা খায়, পুরানো খবরের কাগজগুলো পড়ে, দেশের রাজনীতি, আইন শৃঙ্খলা নিয়া তর্ক বির্তকও হয়।
আজকেও কথায় কথায় কথায় রহিম বেপারি বলে, “দেখছ নাকি কামডা, মাইয়াটার খুনী নাকি ধরা পড়ল, তারপর বিচারের আর কোনো খবর নাই। নিশ্চয়ই পুলিশ পয়সা খাইয়া কেস বন্ধ কইরা দিছে। আর সাংবাদিকরাও কয়দিন আর কোনো খবর দেয় না।”
গফুর চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে, “কোন মাইয়া খুনের কাহিনি? ”
রহিম বেপারি উৎসাহের গলায় বলে, “আরে মিয়া তুমি তো সারা মাস পানিতেই থাকো, কোনো খবরই রাখো না। মাইয়াটার লাশ তো তোমার আসা যাওয়ার পথেই পাওয়া গেছে। হোন নাই যে ত্রিশালের নদীতে একটা মাইয়ার লাশ পাওয়া গেল। কয়দিন পর তো পুলিশ কইল আসামি ধরা পড়ছে, তার কাছে নাকি হেই মাইয়ার মোবাইল পাওয়া গেছে। খবরের কাগজেও তাই লিখল। কিন্তু দেহ কামটা, এহন আর বিচারের খবর নাই।”
গফুর এবার চায়ে শেষ চুমুকটা দেয়,তারপর নিচে পড়ে থাকা ঘন চিনির প্রলেপটুকু একটা আঙুলে উঠিয়ে চেটে খেতে খেতে নির্লিপ্ত গলায় বলে, “খুবই জঘন্য কাম। কিন্তু রহিম ভাই, মাইয়াটার মোবাইল পাইল কেমনে পুলিশ? পুলিশ কী জাদু জানে নাকি?”
রহিম বেপারি ক্রাইম পেট্রোল দেখার পোকা। যুৎসই বিষয়ে প্রশ্ন আসাতে এবার সে আয়েশ করে মোবাইল ট্র্যাকিং করে কী করে কতশত অপরাধী ধরা পড়েছে তার বিস্তারিত কাহিনি শোনায়। গফুর আনমনে শুনতে শুনতে একটা বিড়ি ধরায়, দূরে ঘাটে ওর নৌকাটা দেখা যাচ্ছে। ওর সহকারী রতন নৌকাটা পরিস্কার করছে। পোলাডা মিষ্টি পছন্দ করে, ওর জন্য আইজ পুরা এক কেজি মিষ্টি কিনব। বিড়িটা শেষ করে গফুর বলে, “রহিম ভাই, আইজ উঠি, একটু তাড়া আছে।”
বেপারির দোকান থেকে বের হয়ে মোবাইলটা বন্ধ করে নীল ফতুয়ার পকেটে ঢোকায়, আপাতত এইটা বন্ধই থাকুক। তারপর এক কেজি রসগোল্লা কিনে নৌকার দিকে গম্ভীরমুখে রওনা দেয়।
রতন অবাক হয়ে চেয়ে আছে, উস্তাদ আইজ হাতে কইরা মিষ্টি নিয়া আসছে। কোনোদিন তো এমন এক প্যাকেট মিষ্টি কিনতে দেখে নাই ও। কাছে আসতেই উৎসাহ আর চেপে না রাখতে পেরে জিজ্ঞেস করে, “উস্তাদ, মিষ্টি কার লাইগা? কোথাও যাইবেন?”
গফুর একটা কেমন যেন হাসি দেয়, বলে, “তোর লাইগায় আনছি। নাও ছাড়, তারপর আস্তেধীরে মিষ্টি খা। পুরা প্যাকেটই তোর।’
রতনের কেন জানি খুব খুশি লাগার পরিবর্তে একটা অজানা ভয় লাগছে। এক প্যাকেট মিষ্টি শুধু ওর জন্য আনব? যদিও সবাই জানে, মিষ্টি ওর খুব পছন্দ।
নৌকাটা ছাড়তেই গফুর মিষ্টির প্যাকেটটা খুলে নিজে দুইটা মুখে দেয়, তারপর রতনের দিকে প্যাকেটটা ঠেলে দিয়ে বলে, ” নে, খাওয়া শুরু কর।”
গফুরের মিষ্টি খাওয়া দেখে রতনের মনের অজানা দুশ্চিন্তাটা কমে, নাহ, মনে হয় কিছু হয় নাই। হাউশ হইছে তাই এমন এক প্যাকেট মিষ্টি কিনছে। রতন এবার রসে ভরা মিষ্টিটা মুখে দেয়, দারুণ স্বাদ। খেতে খেতে বলে, “উস্তাদ, মিষ্টিটা জব্বর।”
গফুর কথাটায় সায় দেয়, তারপর বলে, “জব্বর না হইয়া উপায় আছে, এরা নিশ্চয়ই খাঁটি দুধ দিয়া বানায়। খাঁটি জিনিসের স্বাদই এমুন। দুধে ভেজাল থাকলে বোঝা যায়। মনে কর মানুষের মধ্যে ভেজাল থাকলেও কিন্তু বুঝন যায়।”
শেষ কথাটায় রতনের গলায় মিষ্টিটা একটু আটকে যায়। কাশতে কাশতে খাওয়া শেষ করে কোনোমতে বলে, “হ, উস্তাদ।”
এরপর আর কথা তেমন বাড়ে না। এখলাসপুর বাজার থেকে ওরা অনেক দূর চলে আসছে, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের শুরু। আকশে একটা দুটো করে তারা ফুটছে। গফুর এবার বলে, “রতন, তুই এহন একটু ঘুমাই ল, রাইতে আমি আজ জাগতাম না। তুই রাইতে নৌকা চালাবি।”
সাধারণত পালা করেই ওরা দু’জন ঘুমায়। রতন বিনা বাক্যব্যয়ে ছইয়ের ভেতরে চলে যায়, তারপর আরাম করে শুয়ে পড়ে। শুয়ে পড়ার সাথে সাথেই ঘুম চলে আসে, সারাদিন নৌকা বেয়ে ক্লান্ত। একটা স্বপ্নও দেখে, সেই পরী নামের মাইয়াটা লাল একটা শাড়ি পইরা নাচতেছে। আর একটু পরপরই ওর গলায় শাড়ির আঁচল দিয়ে টেনে সামনে নিয়ে যাচ্ছে।
রতন ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ গলায় একটা কিছু চেপে বসা টের পায়, কেমন দমবন্ধ হয়ে আসছে। বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে দেখে ওর উস্তাদ গফুর একটা দড়ির ফাঁস ওর গলায় পেঁচিয়ে টেনে ধরেছে। রতন দুই হাতে গলার রশিটা টেনে আলগা করার চেষ্টা করতেই গফুর হিংস্র গলায় বলে, “কোনো লাভ নাই। আমি ভেজাল মানুষ বাঁচাই রাহি না। ওই মাইয়াটার সবকিছু আমি তোরে নদীতে ফালায় দিতে কইছিলাম। তুই বেইমানি করছস, মাইয়াটার মোবাইলটা গফরগাঁও বাজারে বেইচা দিছস। আর পুলিশ ঠিক হেইডা খুঁইজা পাইছে। এহন খালি তোরে আর আমারে খুঁইজা পাওয়া বাকি।”
রতন চোখ বড় বড় করে কী যেন বলতে চায়, গফুর দড়িটায় একটু ঢিল দিতেই রতন কাশতে কাশতে বলে, “উস্তাদ, আমারে মাফ কইরা দেন। আমি লোভে পইরা কামটা করছি। পুলিশ ওই মাইয়ার মোবাইল পাইলেই কী আমাগো ধরতে পারব?”
গফুর হিংস্রভাবে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে বলে, “ময়মনসিংহের দোকানদার বকুল মিয়া আমারে কোনোদিন ভাইজান বইলা ডাকে নাই। নাম ধইরা ডাকত, কিন্তু আইজ সে আমারে বার বার গফুর ভাই কইয়া কতা কইছে। আবার এত তাড়াতাড়ি এতগুলান মালের অর্ডার দিল, তোর কী মনে হয়? ওই বকুলে পুলিশের কতামতোই আমারে ফোন দিছে, পুলিশ আমাগো ধরল বইলা। এতক্ষণে হয়ত পুলিশ আমাগো কাছেই চইলা আসছে। সব তোর বেইমানি আর লোভের জন্য হইছে। এইবার মর তুই।”
নিষ্ঠুর একটা হাসি ফুটে ওঠে গফুরের মুখে। রতনের গলায় দড়ির ফাঁস শক্ত হয়ে বসতে থাকে, রতন মুখে ওর প্রিয় মিষ্টি রসগোল্লার স্বাদটা টের পায়। ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে রতনের, মরে যাওয়ার কষ্টটা ও বুঝতে পারছে না।
গফুর আর দেরি করে না, রতনের নিথর দেহটা টেনে নৌকার কিনারে নিয়ে এসে আলগোছে নদীতে ফেলে দেয়। পোলাডা কামে ভালো ছিল, কিন্তু লোভই খাইল। রাত মোটে আটটা এখন, এখালাছপুর থেকে অনেক দূর চলে এসেছে এখন। সামনেই কালির বাজার, গফুর নৌকাটা ধীরে ধীরে বাজারের ঘাটে ভেড়ায়।
*******************************
এদিকে সেদিন বিকেলে গফুরের ফোনটা একটিভ হতেই পুলিশের সার্ভিল্যান্স টিম সজাগ হয়ে ওঠে। রাহাত দ্রুত ময়মনসিংহের বকুল মিয়াকে আগে থেকেই শেখানো কথাগুলো বলে ফোন করতে বলে। পুলিশ এর মাঝেই গফুরের অবস্থানটা ট্র্যাক করে বলে, “স্যার, আসামি এখন এখলাসপুর বাজারেই আছে। কিন্তু ফোনটা এখন আবার বন্ধ।”
রাহাত নিশ্চিন্ত গলায় বলে, “অসুবিধে নেই, আসামি কথা দিয়েছে সে ময়মনসিংহ আসতেছে। তবে আমরা সেই ঝুঁকি নেব না। এখলাসপুর বাজারে এখনই লোক পাঠাচ্ছি। আর আপনার নিয়মিত গফুরের মোবাইল খোলামাত্রই তার অবস্থান আমাদের জানাবেন।”
ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের অফিসের একটা কক্ষে জরুরি মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। রাহাত, শাহাবুদ্দিন আর মনোরঞ্জন পুরো অভিযানটা রাতদিন এই কক্ষে বসেই পরিচালনা করছেন। গত কয়েকদিন ওরা ঠাঁই বসে ছিল গফুরের মোবাইল খোলার অপেক্ষায়। যাক, আসামির লোকেশন পাওয়া গেছে। পারলে আজ রাতেই ধরে ফেলবে।
এরপর অনেকক্ষণ আর কোনো খবর নেই। ওদিকে এখলাসপুর বাজার থেকে ব্যবসায়ী রহিম বেপারিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা যায়, আসামি ঘন্টাখানেক আগে তার দোকান থেকে চলে যায়। আরো জানা যায়, গফুর নরসিংদী যাবে আজ, তারপর সেখান থেকে ময়মনসিংহ।
এই খবর অবশ্য রাহাত জানে। কিন্তু নৌকাটার লোকেশনটা জানা দরকার। রাহাত মনে মনে একটা অস্থিরতা অনুভব করে, আচ্ছা লোকটা ফোনটা খুলেই আবার বন্ধ করে ফেলল কেন? রহিম বেপারি নাকি বলেছে মোবাইল ফুল চার্জ দিয়েছে, তাহলে মোবাইল বন্ধ কেন? মনের কোণে দুশ্চিন্তার মেঘ জমতে থাকে।
রাত ঠিক এগারোটায় সার্ভিল্যান্স টিমের ফোন আসতেই রাহাত সোজা হয়ে বসে, জানতে পারে আসামি আবার মোবাইল খুলেছে, লোকেশন কালির বাজার। রাহাত এবার দ্রুত ওই এলাকার নৌপুলিশের দল, কাছাকাছি থানাকেও ইনফর্ম করে যেন যত দ্রুত সম্ভব নৌকার মাঝিদের আটক করে। আর সেইসাথে এটাও বলে, আসামি একজন দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার, খুব সাবধানে যেন অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রাহাতের ভীষণ আফসোস হতে থাকে, ইশ, ও থাকতে পারলে ভালো হতো। নিজ হাতে এই নরপশুটাকে গ্রেফতার করতে পারত। ওসি শাহাবুদ্দিন আর মনোরঞ্জনেরও তাই ইচ্ছে। ইশ, এত কষ্ট করে নিজ হাতে আসামিকে ধরতে পারছে না। মাঝখান দিয়ে ওই কালির বাজার এলাকার পুলিশ সব কৃতিত্ব পেয়ে যাবে। যাই হোক আসামি ধরা পড়তেছে এইটাই বিশাল খবর।
ওসি শাহাবুদ্দিন বলে, “রাহাত ভাই, সাংবাদিকদের কী খবর দিয়ে রাখব?”
রাহাত হাসে, “শাহাবুদ্দিন, এখনই না। আগে সফলভাবে সব শেষ হোক।”
রাহাত এবার গফুরকে ধরার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ টিমের প্রধান গুলজারের সাথে যোগাযোগ করতেই বলে, “স্যার, আমরা নৌকাটার কাছে পৌঁছে গেছি। নৌ পুলিশরা দুইটা স্পীডবোট দিয়ে পেছন থেকে ঘিরে ফেলেছে। আমরা এখন একশনে নামব স্যার। দোয়া রাখবেন।”
রাহাতের প্রেশারটা বাড়ে, দমবন্ধ হয়ে হাতের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকে গুলজারের ফোনের অপেক্ষায়।
ঠিক বাইশ মিনিট পর ফোনটা আসে, রুমের সবাই অধীর আগ্রহে রাহাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। রাহাত ফোনটা কানে জোরে চেপে ধরে বলে, “গুলজার, বলো কী খবর? ”
ওপাশ থেকে গুলজারের বিভ্রান্ত গলা পাওয়া যায়, “স্যার, নৌকায় তো কেউ নাই। বুঝলাম না, আপনাদের কথা অনুযায়ী এই নৌকাটাই তো হওয়ার কথা। ছইওয়ালা নৌকা এইখানে একটাই আছে।”
রাহাতের মাথায় যেন বাজ পড়ে, নিঃশ্বাসটা আটকে আসে, চিৎকার করে বলে, “কী বলছ, নাই মানে। দেখো আশেপাশে কোথাও গেছে কি না। পুরো বাজারটা খুঁজে দেখো।”
রুমের অন্যান্যরা একদম বোকা হয়ে যায়। মনোরঞ্জন বিস্ময়ের সুরে বলে, “এইটা কী হইল?”
রাহাত ওর কথার উত্তর না দিয়ে দ্রুত সার্ভিল্যান্স টিমকে জিজ্ঞেস করে আসামির লোকেশন এখন কোথায় দেখাচ্ছে। ওরা জানায় একই জায়গায় দেখাচ্ছে।
এবার রাহাত বিভ্রান্ত হয়ে যায়, এটা কী করে সম্ভব। রাহাত এবার গুলজারকে ফোন করে বলে পুরো নৌকাটা ভালো করে সার্চ করতে।
ঘন্টাখানেক পর গুলজার হতাশ গলায় বলে, “স্যার, আসামির মোবাইল পাইছি। নৌকার ছইয়ের ভেতরে ছিল। মনে হইতেছে আসামি আমাদের ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবে একজনকে পাওয়া গেছে, তার নাম রমজান, এখানেই দোকান করে। বলল, গফুর নাকি নৌকাটা অর্ধেক দামে বেচে দিছে তার কাছে। আরো বলল গফুরকে কুমিল্লা যাবার গাড়িতে উঠতে দেখেছে ও। আমরা এই রুটের সব গাড়ি চেক করার ব্যবস্থা নিচ্ছি স্যার।”
রাহাত হতভম্ব হয়ে যায়, এটা ঘটতে পারে ও ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি। গফুর এতটা সতর্ক ছিল এটা বোঝা যায়নি। লোকটা পালিয়েই গেল? এত কষ্ট করে খুনীকে চিহ্নিত করে হাতের নাগালে পেয়েও ধরতে পারল না, এই ব্যর্থতা ও লুকাবে কী করে?
আর এসপি স্যারের কাছে মুখই দেখাবে কী করে?? ওই নরপশুদের কী ধরতে পারবে না ও??
(চলবে)
মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সুবাস
শিমুলতলী, গাজীপুর
২৫/০৯/২০২১