ঝর_বর্ষায় পর্বঃ ২

0
3425

ঝর_বর্ষায়
পর্বঃ ২
Witer: #Warina_Jyoti
.
.
.
.
.
বিছানা থেকে উঠে গোসল করতে গেলাম। এসে দেখি উজান আমার জন্য খাবার নিয়ে এসেছে।

খেয়ে নাও। (উজান)

আমি খাবো না।

কেনো? খাবে না? ভুতে ধরছে নাকি তোমাকে??(উজান)

আপনি এতো বাজে কথা কেন বলেন বলুন তো??আমার খেতে ইচ্ছে করছে না তাই খাবো না। আপনি এখান থেকে যান। আমার ভালো লাগছে না।

ভালো লাগছে না বললে চলবে? খেতে হবে। না খেলে শরীর খারাপ করবে, খেয়ে নেও।(উজান)

আমি না খেলে কি আপনি আমাকে জোর করে খায়াবেন??

হু! খাওয়াবো। হা করো, (উজান)

আমি খাবো না মানে খাবো না।

তাই বুঝি? উজান আমাকে জোর করে খাইয়ে দিল। আমার অস্বস্তি লাগছে। উজানের এসব নাটক আম্র ভালো লাগছে না।

আসতে পারি??
আমার শাশুড়ি এসেছেন।

এইভাবে বলছ কেনো আম্মু? এসো না। (উজান)

আমার শাশুড়ি হেসে বললেন বউমা তোমাকে সাজাতে এসেছে পার্লার থেকে। খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি।

আমি মাথা নেড়ে বললাম আমার খাওয়া শেষ। আপনি ওনাদের আসতে বলুন মামুনি।

ঠিক আছে বউমা। বলে আমার শাশুড়ি চলে গেলো।

উজানও বাহিরে বের হয়ে গেল।
আমাকে আজ একটা গোলাপি আর নীল রঙের বেনারসি পড়ানো হয়েছে।
সব মেয়েরই বিয়ে নিয়ে একটা স্বপ্ন থাকে, আমারও ছিল, কিন্তু উজানের জন্য সব নষ্ট হয়ে গেল। আমি কি পাপ করেছিলাম যে আল্লাহ্‌ আমার সাথে এটা করলো?

আমার শাশুড়ি আমার রুমে এসেছেন। বউমা দেখ কারা এসেছে!
আব্বু আম্মু তোমরা।
হ্যাঁ রে মা। কেমন আছিস? আর জামাই কোথায়? (আম্মু)
আমার শাশুড়ি বললেন উজান বাহিরে গেছে, ওর সব ফ্রেন্ডরা আসছে, ওদের সাথে গল্প করছে। আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি ডেকে দিচ্ছি বেয়ান।

আমার শাশুড়ি গেলো উজানকে ডাকতে।

আম্মু আমাকে আবার জিজ্ঞেস করলো আমি কেমন আছি।

এবার আর আমি চুপ করে থাকলাম না। তখন আমার শাশুড়ি থাকায় কিছু বলতে পারি নি।
আমি বললাম আর ভালো থাকা। আমি তো তোমাদের কাছে বোঝা হয়ে গেছিলাম তাই না??
এই জন্য আমাকে এইভাবে বিয়ে দিয়ে দিলে?

কি বলছিস কি এসব মা? আমরা তো তোর ভালোর জন্যই
কিসের ভালোর জন্য? নিজেদের? তোমরা যে উজানের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছো সেটা আমাকে বলো নি কেন আগে?

কি হইছে তোর জয়া?? জামাই কি কিছু বলেছে? (আম্মু)

আমি তাচ্ছিল্যের সুরে বললাম, ওনি আমাকে কি বলবেন?

দেখ মা, তোর বিয়েটা এখন হয়ে গেছে, এসব বলে এখন কোনো লাভ নেই, উজান খুব ভালো ছেলে, ভালো চাকুরি করে, ভালো ফ্যামিলি, আর সবথেকে বড় কথা ও তোকে ভালোবাসে। তোকে নিজেকে উজানের সাথে মানিয়ে নিতে হবে।

পারব না আমি উজানকে স্বামী হিসেবে মানতে মনে মনে কথাটা বল্লেও চুপ করে রইলাম, কারন আম্মুকে এসব বলে কোনো লাভ নেই।

উজান রুমে এসেই আম্মুকে সালাম দিল। আম্মু ওর সাথে কথা বলতে লাগলো।

ও আমার আম্মুর সাথে এমন করে কথা বলছে যেন কিছু হইনি, যেন আমদের মধ্যে সব সম্পর্ক স্বাভাবিক। একটা মানুষ যে এতো নাটক করতে পারে তা আমার জানা ছিল না।

২ঘন্টা ধরে বসে আছি, গরমে ভারি গহনা আর শাড়ি পড়ে বিরক্ত লাগছে। নিজেকে যেন সার্কাসের জোকার মনে হচ্ছে। হয়তো অন্য কারো সাথে বিয়ে হলে এমনটা মনে হতো না, উজানের সাথে বিয়ে হইছে বলেই…

উজান দূর থেকে বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে, এই কারনে আরও বেশি বিরক্ত লাগছে।

আমার সব ফ্রেন্ডরা আমাদের বউভাতে এসেছে। সবাই আমাকে বোঝাচ্ছে যা হবার তা হয়ে গেছে এখন তুই উজানকে মেনে নে। মেনে নিয়ে ওর সাথে সংসার শুরু কর। ও অনেক ভালো ছেলে।
আমি চুপ করে ওদের কথা শুনছি। কিছু বলার নেই এদের। আমি এদের কিভাবে বোঝাবো যে আমার পক্ষ ওকে মেনে নেওয়া অসম্ভব?

হঠাৎ প্রীতিকে আসতে দেখে আমি থমকে গেলাম। আমি তো ভেবেছিলাম ও আসবে না। আমার আবার পুরনো কথা গুলো মনে পরতে থাকলো।

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here