ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল,১৪,১৫

0
326

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল,১৪,১৫
তন্বী ইসলাম
১৪

শ্রাবণের আবেশি কথাগুলো পদ্ম’র হৃদয়ে নাড়া দিলো। সে অসহায়চোখে তাকালো শ্রাবণের দিকে। ঠোঁট কাঁপছে তার, যেনো কিছু বলতে চাইছে। শ্রাবণ অপলকভাবে তাকিয়ে আছে পদ্ম’র দিকে। এ যে তার পদ্মফুল, একান্তই তার। শ্রাবণ বললো
“এখনো অভিমান করে আছিস পদ্মফুল?
“হুম। ছোট্র করে উত্তর দিলো পদ্ম। পদ্ম’র উত্তর শুনে হাসলো শ্রাবণ। বললো
“আমার পদ্মফুল আমার উপর অভিমান করেছে, ভাবতেও ভালো লাগছে।
পদ্ম অবাক হলো৷ বিস্ময়ে বললো
“অভিমান করলে কারো ভালো লাগে নাকি!
“অভিমান কি মানুষ সবার উপর করে পাগলি। যার প্রতি ভালোবাসা থাকে, মানুষ তার সাথেই অভিমান করে৷
পদ্ম আকাশপানে তাকালো। ভাবলো, ‘সত্যিই তাই। অভিমানটা সবার উপর আসে না। অভিমান করার জন্যও বিশেষ মানুষ প্রয়োজন’

ভাইয়ের বাড়ি থেকে ফিরে পদ্ম’কে ঘরে না পেয়ে শাপলাকে ডাকলো আলেয়া। শাপলা বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে ফলো করা লোকটাকে নিয়ে ভাবছিলো। এমন সময় মায়ের ডাক পেয়ে হুশ হলো তার।
“শাপলা, পদ্ম কই গেছে?
শাপলার মনে হলো পদ্ম তো শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে বসে কথা বলছে। মা যদি দেখে শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে একান্তে বসে পদ্ম কথা বলছে তাহলে বেশ বকাঝকা করবেন উনি। শাপলা হুড়মুড় করে বিছানা ছাড়লো। মাকে উদ্দেশ্য করে বললো
“ওরে দিয়া কি করবা আম্মা?
“কিছু করমু না। ঘরে নাই তাই জিগাইলাম।
“ওহ! আমি ডাকতাছি ওরে। দেখি ঝিলের কাছে আছে নাকি।

শাপলা ঘর থেকে বেরোলো পদ্ম’কে ডাকতে। এমন সময় ওর চোখ গেলো শ্রাবণ ভাইয়ের ঘরের দিকে। ওখানে একটা ছেলে একভাবে দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি শাপলার দিকে। ছেলেটাকে চিনতে একটুও ভুল হলো না শাপলার। এটা’তো সেই ছেলে, যে সেদিন ওর সাথে অটোতে করে গিয়েছিলো। আজ সকালেও এই ছেলেকেই সে ঝিলের ওপাশের বাড়িটার পেছন দিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলো। শাপলার মনে খটকা লাগলো, এ ছেলে এখানে কি করছে! কখনো কোনোদিন তো এ বাড়ির দিকে এ ছেলেকে দেখা যায় নি। শাপলা লম্বা লম্বা পা ফেলে ছুটলো ঝিলের দিকে। শ্রাবণের ভাই আর পদ্ম এখনো কথা’ই বলে যাচ্ছে। শাপলার রাগ লাগলো, মেয়েটা যানে মা এইসব পছন্দ করেনা, তাও এতো এতো কিসের কথা বলে এরা৷ মায়ের কথা চিন্তা করে হলেও তো এদের একটু নিজেদের সংযত করা উচিৎ।

শাপলা পদ্ম’কে ডাকতে যাবে তার আগেই আশিকের গলা শোনা গেলো। সে হুড়মুড় করে দৌড়ে এসে শ্রাবণকে উদ্দেশ্য করে বললো
“শ্রাবণ ভাই, আপনেরে কেডায় জানি খোঁজতাছে।
শ্রাবণ চমকে তাকালো পেছনে। শাপলা আর আশিক দুজনকে একসাথে দেখে অবাক হলো। শাপলাকে উদ্দেশ্য করে বলেই ফেললো
“তুই এই আশিকের সাথে কি করছিস শাপলা?
“আমি’তো ওর সাথে কিছু করি নাই। শুধু পদ্ম’রেই ডাকতে আসছি আমি।
আশিক হেসে বললো
“পদ্ম’ এইখানেই থাকুক। একটু গল্প করি। আপনে যান শ্রাবণ ভাই।
শ্রাবণ রেগে বললো
“কে আসছে?
“আপনের কোনো বন্ধু বোধহয়। ঘটকও হইতে পারে, আমি জানি না।
শ্রাবণ পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বললো
“শাপলার সাথে ঘরে যা পদ্মফুল।
“ও এখানে থাকুক না শ্রাবণ ভাই, একটু গল্পই তো করমু বলছি।
শ্রাবণ কপালে ভাজ এনে রাগী চোখে তাকালো আশিকের দিকে। ওর তাকানো দেখে আশিক নিচের দিকে চোখ ফিরিয়ে বললো
“আজকাল ভালো কথার দাম নাই। আচ্ছা, আমি গেলাম। আপনেও আসেন, লোকটা সেই কখন থেকে আপনেরে খোঁজতাছে।
আশিক চলে যাবার পর শ্রাবণ পদ্ম’র হাত ধরে টেনে দাঁড় করালো। এরপর শাপলার দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললো
“তোরা ঘরে যা।

প্রায় অনেক্ষন যাবৎ ঘরে বসে সে ছেলেটার সাথে আলাপ করছে শ্রাবণ ভাই। শাপলার মন কেমন যেনো উশখুশ করছে। হঠাৎ এই ছেলেটা এ বাড়ি আসলো কেন, আর শ্রাবণ ভাইয়ের সাথেই তার এতো কিসের কথা? আগে তো কখনো শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে এ ছেলেকে দেখে নি সে। শাপলা চাইছে এইসব উদ্ভট চিন্তা মাথা থেকে ঝাড়তে। ওরা যা খুশি তাই করুক, তাতে তার এতো চিন্তা করার কি আছে। কিন্তু শত চেষ্টা করেও চিন্তা মাথা থেকে যাচ্ছে না। উলটো ঝাঁকে ঝাঁকে দুশ্চিন্তা এসে মাথায় ভর করছে। শাপলার হাতে থাকা ফোনটা হঠাৎ কেঁপে উঠলো, ফোনের দিকে তাকিয়েই মৃদু হাসলো সে। দ্বিতীয় বার কোনো চিন্তা ভাবনা না করে ফোনটা রিসিভ করে খুবই সন্তপর্ণে ঝিলের দিকে এগিয়ে গেলো সে।

বিকেলের পরপরই হাতের কাজকর্ম সেড়ে আলেয়ার সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে এলো জুবেদা। রান্নাবান্নার কাজ আসমার উপর ন্যস্ত করেই তিনি এসেছেন। ছেলের বউ আসার পর রান্নার কাজকর্ম করা তিনি প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। আসমাও নিজের মতো করে সংসারের সব কাজ করছে, বেশ আনন্দেই আছে তারা। শাশুড়ির ব্যাপারে তার কোনো অভিযোগ নেই, নেই ছেলের বউ এর প্রতি জুবেদারও তেমন কোনো অভিযোগ। আলেয়া কাঁচা তরকারি কেটে ধুয়ে দিচ্ছেন, আর ওদিকে লাকড়ির আগুনে রান্না করছে শাপলা। রান্নাবান্না কিংবা ঘড়ের কাজের প্রতি পদ্ম’র তেমন রুচি নেই। মা আর বড় বোন থাকতে সে কেন রান্না করবে। যদিও এতে শাপলার কোনো অভিযোগ নেই, মাঝেমধ্যে দুষ্টুমি করে ছোটবোনকে একটু আধটু বলে এই যা। কিন্তু আলেয়ার কাছে ব্যাপারটা ভালো লাগে না। মেয়ে মানুষ হয়ে জন্মানো মানে, ঘরের কাজ করাই লাগবে, আজ তার বোন আছে, দুদিন পর যখন বোনের বিয়ে হয়ে যাবে তখন কোথায় পালাবে? আর পালালেও বিয়ে দেবার পর শশুর বাড়ি গিয়ে কাজে ফাঁকি দেওয়ার কোনো চান্সই নেই। এ নিয়ে মেয়ের প্রতি উনার অভিযোগের কোনো শেষ নেই। এখনও তিনি কাজ করছেন আর পদ্ম’র প্রতি রাগ ঝাড়ছেন। মায়ের এমন রাগান্বিত কথায় শাপলার বড্ড হাসিই পাচ্ছে। ওদিকে মুখ ভাড় করে ঘরে গিয়ে বসে আছে পদ্ম।

বালিশে হেলান দিয়ে বসে একা একাই বিড়বিড় করে মায়ের প্রতি রাগ ঝাড়ছে সে। বলছে
“এখন আমারে এমনে বকো তো, দেখবা বিয়ার পরে তোমাগো বাড়ি আর আসমুই না। তখন কারে বকবা দেইখা নিমু। কথাটা ভেবেই হাসলো পদ্ম। কারণ তার বিয়ে তো অন্য কোথাও নয়, এ বাড়িতেই হবে। ঘুম থেকে উঠার পর থেকে ঘুমোতে যাবার আগ পর্যন্ত মায়ের সাথে তার দেখা হবেই। পদ্ম আবারও হাসলো। নিজের এতো সুন্দর ভাগ্যের কথা ভাবতেই মনের মধ্যে খুশি অনুভব করলো সে।
আলেয়া কে কাজ করতে দেখে ডাকলো জুবেদা।
“আলেয়া, তোর হাতের কাম শেষ হইলে একটু আমার সাথে আয় তো। কথা আছে।
আলেয়া হাতের কাজ রেখে আচলে মুখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়াবেন। বিস্ময়ে বললেন
“কি কথা আপা?
“আয় না আমার সাথে, আইলেই তো জানতে পারবি।।
আলেয়া শাপলার দিকে তাকালেন। বললেন
“ঠিকমতো জাল দিস মা, তরকারি ধুইয়া রাইখা গেলাম। ভাতটা হইয়া গেলে বসাইয়া দিস। দেখি তোর চাচী আমার কেন ডাকতাছে।
মায়ের কথায় কোনো কথা বললো না শাপলা, শুধু হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ালো।

জুবেদাকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো আলেয়া। বিছানার এক মাথার উনাকে নিয়ে বসে বললো
“কি কইবেন আপা? কোনো জরুরি কথা?
জুবেদা একবার দরজা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলেন, দেখলেন আশেপাশে কেউ আছে কিনা কিংবা শাপলা ঘরে ঢুকছে কিনা। আশেপাশে তেমন কেউ নেই। শুধু ওপাশের বিছানার উপর শুয়ে আছে পদ্ম।
জুবেদা আলেয়ার দিকে তাকিয়ে বললেন
“একটু পান দে তো।
আলেয়া পানের বাটা’টা হাতে নিয়ে সেখান থেকে একটা পান নিয়ে ছিড়ে অর্ধেক টা পান সুপারি আর চুনসহ জুবেদার হাতে দিলেন। পানটুকু মুখে পুড়ে তিনি বললেন
“জর্দ্দা নাই?
“আছে।
“দে একটু।
আলেয়া আরেকটা ছোট পট থেকে জর্দ্দা নিয়ে জুবেদার হাতে দিয়ে পানের বাটা’টা দূরে সরিয়ে রাখলেন।

পান চিবোতে চিবোতে জুবেদা ধীরেসুস্থে বললেন
“মাইয়ার বিয়া দিবি না?
“শাপলার কথা কন? অবাক হয়ে বললেন আলেয়া।
“হো।
আলেয়া কিছুক্ষণ বসে রইলেন।। এরপর বললেন
“যদিও মাইয়ার অহনো বিয়ার বয়স হয় নাই, তবুও যদি ভালা কোনো পাত্রের সন্ধ্যান পাই, আর সবকিছু যদি মিলে তাইলে মাইয়ারে দিয়া দিমু।
জুবেদা হেসে বললেন
“একখান ভালা ছেলের খোঁজ পাইছি। ছেলে লেখাপড়াও করতাছে আবার চাকরিও করতাছে। বাড়িতেও অনেক জমাজমি আছে। তোর শাপলারে খুব পছন্দ করছে। যদি তুই রাজি থাকোস আমি আলাপ করতে পারি।
আলেয়া বিস্ময়ে বললেন
“ছেলেডা কেডা?
জুবেদা হেসে বললেন
“তুই চিনোস ছেলেরে। একেবারে স্বর্ণের টুকরা। দেখতেও নায়কের মতন।
“কোন গ্রামের? নাম কি ছেলের?
“আমাগো গ্রামেরই ছেলে। ওইযে ওই পাড়ার ইব্রাহিম ভাই আছে না?
“কোনো ইব্রাহিম ভাই? আমাগো ঝিলের পাড়ে দাঁড়াইয়া যাগো বাড়ি দেখা যায় সেই ইব্রাহিম ভাই?
“হো, তার একমাত্র ছেলে আরহাম। তোর মাইয়ারে দেইখা খুব পছন্দ করছে। বিয়া করবার চায়। আইজ আইছিলো আমাগো ঘরে শ্রাবণের সাথে আর আমার সাথে অনেক্ষন কথা কইছে শাপলার ব্যাপারে। যদি তোরা রাজি থাকোস তাইলে প্রস্তাব নিয়া আইবো কইছে।

আলেয়া যেনো বিস্ময়ে হতবাক। তার মতো এক মধ্যবিত্ত মায়ের মেয়ের কপালে এতো ভালো ছেলে আল্লাহ লিখে রাখছে এইটা বিশ্বাস করতেও তার কষ্ট হচ্ছে। তিনি বিস্ময়ে বলে উঠলেন
“কি কন আপা, এরা অনেক বড়লোক। আমার মাইয়ারে কেমনে ওরা পছন্দ করতে পারে?
“আল্লাহ যদি কপালে ভালো কিছু লিইখা রাখে তাইলে সেইটা একভাবে না একভাবে হইবোই রে আলেয়া। অহন তুই কি কস? এই ছেলের কাছে মেয়ে বিয়া দিবি তো?
আলেয়া খুশির হাসি হাসলো। বললো
“এমন ছেলের কাছে মেয়ে বিয়া দিতে পারা তো ভাগ্যের ব্যাপার আপা। ভাইজানের সাথে আপনে কথা কইয়া দেইখেন। ভাইজান যদি রাজি হয় তাইলে আমার কোনো আপত্তি নাই।
“তোর ভাইজানও রাজি আছে। উনিও তখন ঘরে ছিলো যখন এই ব্যাপারে কথা হইছে।
আলেয়া হেসে বললো
“তাইলে তো ভালোই। ভাইজানরে কইয়েন ওগো সাথে কথা কইতে। যদি সব ঠিকঠাক থাকে তাইলে মাইয়ারে ওই ছেলের কাছেই বিয়া দিমু।।

ওপাশে বিছানার উপর শুয়ে থেকে সব কথাই শুনলো পদ্ম। ঠোঁটের কোনে তার হাসি ফুটলো। বোনের বিয়ে হবে, আনন্দ হবে। তার একটা সুন্দর দুলাভাই হবে ভেবেই নাঁচতে ইচ্ছে করছে তার। পদ্ম এক লাফে বিছানা ছেড়ে নামলো। তার যে মন খারাপ ছিলো বেমালুম ভুলে গিয়ে দৌড়ে চললো রান্নাঘরের দিকে। ওখানে আপা আছে। খুশির খবরটা আপাকে জানাতে হবে তো নাকি। শাপলা মনোযোগ সহকারে রান্না করছে। পদ্ম’র মন ভালো হয়েছে দেখে ভালোই লাগলো তার। হেসে বললো
“যাক, তোর মন অনেক তারাতাড়িই ভালো হয়ে গেছে। ভালোই হইছে, মন খারাপ থাকলে দেখতেও ভাল্লাগে না।
পদ্ম হেসে দুষ্টুমি করে বললো
“মন কি আর এমনি এমনি ভালো হইছে! বিয়ার খবর পাইলে সবার মনই ভালো হয়। তোর মনও ভালো হইবো?
“বিয়ে! কার বিয়ে?
আকস্মিক উৎসাহিত হয়ে শাপলা বলে উঠলো
“চাচি কি শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে তোর বিয়ের আলাপ করার জন্য আম্মার ধারে আসছে?

পদ্ম হেসে বললো
“আমার সিরিয়াল তো তখনই আইবো যখন তুই এ বাড়ি ছাইড়া শশুর বাড়ি যাইবি। আগে তো তোকে বিদায় করতে হবে নাকি।
“খামখেয়ালিপনা বাদ দিয়া সোজাসাপটা বল কার বিয়ে।
“তোর বিয়া।
শাপলা হাসলো। বললো
“দিনে দিনে বড় হইতেছিস আর ফাজিল হইতেছিস। ফাইজলামি বাদ দিয়া সত্য করে বল কার বিয়ে?
“কইলাম তো তোমার বিয়া। আমি সত্য কইতাছি আপা, চাচী তোমার বিয়ার আলাপ নিয়াই আম্মার কাছে আইছে। আমি শুয়া থাইকা সব শুনছি।
শাপলার মুখ দেখে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। সে খুশি হয়েছে নাকি হয়নি তাও বুঝা যাচ্ছে না। ঠোঁটের কোনে এখনো তার হাসি। হাসি হাসি মুখ করেই বললো
“তা পাত্রটি কে?
“ওই ওইধারের বাড়িটা আছে না! ওই বাড়ির ছেলে। আজ সকালেই তো আইছিলো আমাগো বাড়ি।
শাপলা হেসে বললো
“ওহ আচ্ছা।
“তুমি খুশি তো আপা?
“খুশি না হবার কি কোনো কারণ আছে?
“একদমই না। ফিক করে হেসে বললো পদ্ম।

চলবে…….

#ঝিলের_ওপারে_পদ্মফুল
তন্বী ইসলাম -১৫

রাতের শেষ ভাগে হঠাৎ একটা দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেলো শাপলার। বাইরে এখনো চাঁদের মৃদু আলো রয়েছে। ঘরের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে অল্প চাঁদের আলো ঘরে ঢুকেছে। সেটা দেখেই শাপলা ঠাহর করতে পেরেছে এখনো আকাশে চাঁদ রয়েছে। বালিশের ওপাশ থেকে মোবাইল টা হাতে নিয়ে তাতে সময় দেখলো শাপলা, তখন চারটে ছুইছুই। দুঃস্বপ্ন টা কি ছিলো সেটা ঠিক মনে করতে পারছে না সে। তবে অস্বস্তি লাগছে খুব। ওপাশে ফিরে দেখলো তার ছোটবোন পদ্ম বেশ আরামেই ঘুমোচ্ছে। পদ্ম’কে এভাবে দেখে ঠোটের কোনে মৃদু হাসির রেখা টানলো শাপলা। এরপর ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে ঢুকলো সে। বেশ কিছুক্ষণ ফোনে কিছু একটা করে এরপর একসময় আপনমনেই ঘুমিয়ে গেলো সে।

পাখির কিচিরমিচির আর মোরগের ডাকে ঘুম ভাংলো পদ্ম’র। হাই তুলতে তুলতে বিছানা ছেড়ে নেমে ঘর থেকে বেরোতেই দেখলো শ্রাবণ ভাই দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনেই। এভাবে শ্রাবণ ভাইকে কখনো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় না। বিশেষ করে এতো সকালে তো নয়ই। অবাক হলো পদ্ম। বললো
“এতো সকালে তুমি এখানে কি করতাছো শ্রাবণ ভাই?
“আজকের দিনটা যেনো তোর মুখ দেখেই শুরু করতে পারি সেজন্য তোকে দেখার অপেক্ষাতেই দাঁড়িয়ে আছি পদ্মফুল।
পদ্ম হাসলো। মিহি-কন্ঠে বললো
“যদি এখন আমি বের না হইয়া আম্মা নইলে আপা বের হইতো, তখন কি করতা?
শ্রাবণ হাসলো। বললো
“ভেবে নিতাম সেটা আমার দুর্ভাগ্য, মেনে নিয়ে চুপচাপ সরে যেতাম। আর তো কিছু করার থাকতো না।
পদ্ম হেসে এবার ফিসফিস করে বললো
“আম্মা বোধহয় এখনই উইঠা যাইবো শ্রাবণ ভাই। তুমি এখন যাও তো।
শ্রাবণ হাসলো। এরপর পদ্ম’র দিকে একটা উড়ন্ত চুমু ছুড়ে দিয়ে মৃদু হেসে সেখান থেকে সরে গেলো শ্রাবণ।।

লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করতে পদ্ম’র। আবার মনে মনে ভালোও লাগছে। আজকের দিনের শুরুটা এতো সুন্দর হবে সেটা কল্পনাও করতে পারেনি পদ্ম। লজ্জা আর ভালো লাগার মিশ্র অনুভূতি নিয়ে দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে রইলো পদ্ম। এমন সময় পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো
“দরজা থেইকা সরবি নাকি উষ্ঠা দিয়া সরাইতে হইবো?
পদ্ম মুখ কালো করে তাকালো শাপলার দিকে। মুখ বাকা করে বললো
“তুই আসলেই একটা খবিশ। সকাল সকাল আমার ভালো মুডটারে খারাপ করার জন্য উঠেপড়ে লাগছিস। শাপলা পদ্ম’র মাথায় একটা টুকা মেরে বললো
“এখনো মুড খারাপ হয় নাই, কারণ তোগো প্রেমালাপ আমি শুনছি। যদি আম্মার কানে যাইতো তাইলে এতোক্ষণে নাকের পানি আর চোখের পানি এক হইতো।
পদ্ম জিহবায় কামড় বসিয়ে বললো
“তুই সব শুনছোস?
শাপলা হেসে বললো
“হু।

পদ্ম খানিক সময়ের জন্য লজ্জায় লজ্জিত হলো। পরক্ষণেই সব লজ্জা উধাও হয়ে গিয়ে একরাশ রাগ উঠলো তার মাথায়। কিঞ্চিৎ রাগী গলায় অত্যন্ত চাপাস্বরে সে বললো
“তোর কি একটুও শরম লজ্জা নাই রে আপা? যখন তখন তুই আমার আর শ্রাবণ ভাইয়ের মাঝখানে আইসা ঢুইকা পরিস। কেন আপা কেন?
পদ্ম’র কথা শোনে হাসি পেলো শাপলার। হাসিটাকে দমিয়ে সে বললো
“কি জানি। আল্লাহ সবসময় তোগো এই প্রেম পিরিতির মাঝেই কেন আমারে নিয়া আসে। শাপলা কপালে হাত রাখলো। বোনের এমন কর্মকান্ডে মুহুর্তেই সব রাগ উধাও হয়ে গেলো পদ্ম’র। ফিক করে হেসে দিয়ে বোনকে জরিয়ে ধরে বললো
“তবুও ভালো, আল্লাহ আমারে তোর মতো একটা বোন দিছে। যদি আম্মার মতো হইতি তাইলে তো আমার কপালে দুর্গতি ছাড়া আর কিছুই থাকতো না। এরপর দু-বোন একসাথে হেসে উঠলো।

কলেজে যাবার পথে আবারও পেছনে কারো পায়ের আওয়াজ পেলো শাপলা। যদিও এবার তার সাথে তানিও ছিলো। শাপলা পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো একটা লোক তাদের পেছন পেছন হেঁটে আসছে। লোকটিকে দেখে শাপলার চোখ কপালে উঠে গেলো যেনো। এই লোক তাকে ফলো করছে? পরণে একটা ময়লা ছেঁড়া লুঙ্গি, গায়ে হাফ হাতার একটা শার্ট। শার্টটারও যায়গায় যায়গার জোড়া তালি দেওয়া। শাপলা একবার নিজের দিকে তাকালো, তাকে দেখতে কি এতটাও বাজে লাগে যে এমন একটা লোক তালে ফলো করে!!
শাপলাকে এমন করতে দেখে তানি একটু অবাক হলো। প্রশ্ন করলো
“কি’রে, এইভাবে কি দেখিস?
শাপলা অসহায় মুখ করে তানির দিকে তাকালো। মৃদু গলায় বললো
“আমায় দেখতে কি খুব বাজে লাগে রে তানি?
“এইটা আবার কেমন কথা? অবাক হয়ে বললো তানি।
শাপলা এবার পেছনের লোকটিকে দেখিয়ে তানিকে বললো
“কয়দিন ধরেই খেয়াল করতেছি আমারে কেউ ফলো করতাছে। আজো কারো পায়ের আওয়াজ শুনেই পেছনে তাকাইছি। কিন্তু এনারে দেখতে পাবো আশা করি নাই রে।
তানি হেসে বললো
“এইটা আমাগো নামে লিখা রাস্তা না রে শাপলা। এইটা পাব্লিকের রাস্তা। আমাগো মতো অনেক পাব্লিকই এই রাস্তা দিয়া হাঁটবো, আইবো, যাইবো। তার মানে তো এই না যে সবাই আমাগোরে ফলো করতাছে। আর তাছাড়া, এনারে দেইখা কি কোনোদিক দিয়া মনে হইতেছে যে সে তোরে ফলো করতাছে?
“না! কিন্তু অন্য দিনের মতোই তো আজও সেই পায়ের আওয়াজ পাইছি আমি। তাকাইয়া তো শুধু ইনারেই দেখলাম, অন্য কেউ হইলে দেখি না কেন?
“তুই দেখিস না এইটা তোর দুর্ভাগা। যাইহোক, বাদ দে। এবার সামনে তাকিয়ে হাঁটা দে। কলেজের টাইম হইয়া যাইতেছে।।

ওরা সামনের দিকে হাঁটা শুরু করলো ঠিকই। তবে মনের মধ্যে খচখচানিটা রয়েই গেলো। কিছুদিন ধরে সেই ফলো করা ব্যক্তির পায়ের আওয়াজ টা শুনতে শুনতে সেই আওয়াজ টা যেনো শাপলার মুখস্থ হয়ে গেছে। সে নিশ্চিত আশেপাশে সেই ব্যক্তিটা আছে, যে রোজ তার পিছু নেয়। মনের খচখচানি থেকে শাপলা আবারও পেছনে তাকালো। এবারেও সে নিরাশ, কাউকে দেখতে পেলো না। যদিও শাপলার মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে সেই আরহাম নামের ছেলেটাকে নিয়ে, যে গতকালই শ্রাবণ ভাইয়ের পরিবারের কাছে তার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে এসেছিলো। তবে সেই আরহামই যদি হয়ে থাকে তবে সে তাকে দেখতে কেন পায় না? শাপলার চিন্তিত মন আবারও না চাইতেও সামনের রাস্তার দিকে মনোযোগ দেয়। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই তার ফোনের মেসেজ টোনটা বেজে উঠে। সে হাঁটতে হাঁটতেই মেসেজটা ওপেন করে। মুহুর্তেই ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ভেসে উঠে। যেটা খেয়াল করে তানি। দুষ্টুমি করে বলে
“নির্ঘাত আমাদের সিনিয়র ভাইয়ের মেসেজ৷
শাপলা হেসে বললো
“নাহ, সিম কোম্পানি।
শাপলার কথায় আবারও হাসে শাপলা ।

চারটের দিকে স্কুল ছুটি হলে হুরমুর করে বেরিয়ে আসে পদ্ম। সকলের সাথে পাল্লা দিয়ে বেরিয়ে আসে স্কুলের গেইট দিয়ে। সকালের মতো এবারেও সে গেইট থেকে বেরোতেই শ্রাবণ ভাইকে দেখতে পায়। শ্রাবণ পদ্ম’কে দেখে মৃদু হাসে, পদ্ম’ও হাসে। শ্রাবণ তাকে ইশারায় নিজের দিকে যেতে ডাকে। তবে আশেপাশে তার অনেক বন্ধুবান্ধব থাকায় পদ্ম কনফিউজড হয়ে যায় যাবে কি যাবে না সেটা ভেবে। তার মাথায় কাজ করে একটা কথা, শ্রাবণ ভাইয়ের সাথে গেলে মানুষে কি বলবে। গ্রামের মানুষ, ওরা’তো তার ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক ভাবে নিবে না। আর শ্রাবণ ভাই যে তার আপন চাচাতো ভাই সেটাও তো সবাই জানে না। নির্ঘাৎ অন্যকিছু ভেবে তিলকে তাল বানিয়ে ছাড়বে। ঘটবে এক আর রটাবে আরেক।

এতোকিছু ভেবে পদ্ম আর শ্রাবণের দিকে গেলো না। নিচের দিকে মাথা দিয়ে শ্রাবণকে ইগ্নোর করে সে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো, দেখে মনে হচ্ছে শ্রাবণকে সে দেখেনি, ইনফ্যাক্ট তাকে সে চিনেও না। নিজের যায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই হতভম্ব হলো শ্রাবণ। তার পদ্মফুল তাকে ইগ্নোর করছে, ব্যাপারটা বেশ ভাবাচ্ছে তাকে। পরবর্তীতে কোনোকিছু না ভেবেই সে পদ্ম’র পিছু পিছু হাঁটা দিলো। বেশ জোরে জোরে হাঁটছে সে। পদ্ম তার থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেছে। লম্বা লম্বা পা ফেলে বেশ অল্প সময়ের মধ্যেই সে পদ্ম’ র কাছাকাছি পৌঁছে যায়। এরপর কোনো কথা না বলেই আকস্মিক পদ্ম’র হাত থেকে ওর বইয়ের ব্যাগটা ছিনিয়ে নিয়ে হাঁটতে থাকে। পদ্ম সামান্যই অবাক হয়, তবে তার আশেপাশে থাকা বন্ধু বান্ধবরা বেশ অবাক হয়। তারা শ্রাবণের ব্যাপারে পদ্মকে প্রশ্ন করতে থাকে। এক সময় পদ্ম না পেরে সকলের উদ্দেশ্যে বলে
“আমার চাচাতো ভাই। ভাই হইলেও এখন সে আমার পাহাড়াদাড়। আমারে পাহাড়া দেয় সে, বড়লোক দের যেমন বডিগার্ড থাকে, তেমনই সে আমার পাহাড়াদাড়।

পদ্ম’র বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে একটা হইহই রব পরে যায়। পদ্ম সেগুলোকে পাত্তা না দিয়ে শ্রাবণের দিকে দৌড়াতে থাকে। শ্রাবণ নিরবে হাসছে আর হাঁটছে৷ দৌড়াতে দৌড়াতে একসময় শ্রাবণ ভাইকে গিয়ে ধরে ফেললো পদ্ম। শ্রাবণ তখনো পদ্ম’র দিকে তাকালো না। আপনমনে সে মুচকি হেসে হেঁটে যাচ্ছে। পদ্ম শ্রাবণের হাত থেকে ব্যাগটা টানলো। কিন্তু নিতে পারলো না। সে আবারও শরীরের শক্তি খাটিয়ে শ্রাবণের হাত থেকে ব্যাগটা টানলো, একের পর ব্যাগ টেনেই যাচ্ছে পদ্ম, কিন্তু কিছুতেই সে সফল হচ্ছে না। এক সময় রাগান্বিত চোখে শ্রাবণের দিকে তাকালো পদ্ম। শ্রাবণের মুচকি মুচকি হাসি দেখে রাগটা আরো বেড়ে গেলো। সে বুঝে গেলো শ্রাবণ ভাই ইচ্ছে করেই এমন করছে। এবার সে কিঞ্চিৎ রাগী গলায় বললো
“এমন করতাছো কেন শ্রাবণ ভাই?
“কি করছি?
“আমার স্কুলের সামনে আইলা কেন ? আর ব্যাগ নিয়াই বা এমন করতাছো কেন?
শ্রাবণ হেসে বললো
“আমি না তোর পাহাড়াদাড়, তোর বডিগার্ড। তো তোর বডিগার্ডের কাজই তো আমি করছি। সারাজীবনই এ কাজটা করেই যাবো দেখে নিস।

পদ্ম জায়গায় দাঁড়িয়ে গেলো। খানিক লজ্জাও পেলো সে। সে তার বন্ধুবান্ধবদের কাছে মিছে মিছে বলেছিলো এটা, শ্রাবণ ভাই দেখি সেটাও শুনে নিয়েছে। এখন কি ভাবছে সে আমাকে নিয়ে। শ্রাবণ কিছুদূর এগিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় পদ্ম’কে নিজের থেকে বেশ খানিক দূরে পিছিয়ে থাকতে দেখে সেও দাঁড়িয়ে গেলো। পেছনে ফিরে পদ্ম’র দিকে তাকিয়ে বললো
“ম্যাম, আপনি পিছিয়ে আছেন কেন? আপনার স্থান তো আমার সামনে। প্লিজ, আপনি আমার সামনে এসে আমাকে ধন্য করুন।
পদ্ম এবার কোমড়ে হাত দিয়ে চোখমুখ খিচে তাকালো শ্রাবণের দিকে। তার পদ্মফুলকে রাগতে দেখে বেশ হাসিই পেলো শ্রাবণের। সে এগিয়ে এলো পদ্ম’র কাছে। মৃদু গলায় বললো
“পদ্মফুল, রাগ করলি? তুই রাগ করিস কিংবা বিরক্ত হোস, যাই করিস না কেন, আমি এমনই থাকবো… ঠিক এভাবেই সারাজীবন তোর পাহাড়াদাড় হয়ে থাকবো আমি। তুই কি রাজি আছিস? রাজি না হলেও আমি এমনই করবো।

পদ্ম হাসলো। এমন একজন মানুষের সাথে কি আর রাগ করে থাকা যায়!!

হেলতে দুলতে বাড়িতে ফিরে এলো পদ্ম। বাড়ির কাছাকাছি যখন এলো ঠিক তখনই শ্রাবণ ভাইয়ের কাছ থেকে ব্যাগটা নিয়ে আগে আগে চলে এলো পদ্ম। এবারে আর শ্রাবণ বাধা দেয় নি। পিছু পিছু সেও এসে বাড়িতে ঢুকেছে। বাড়িতে ঢুকতেই অবাক হলো পদ্ম। তাদের ঘরে দু-তিনজন মহিলা বসে আছে। এই মহিলাদের সে চিনে। শাপলা আপার জন্য যে বাড়ি থেকে বিয়ের আলাপ এসেছে সে বাড়ির মানুষ এরা। তবে কোনোদিন কোনো কালে এদের এ-মুখো হতে দেখেনি পদ্ম। তবে আজ কেন এসেছে? আপার বিয়ের আলাপ করতে? সবেমাত্র গতকাল বিয়ের কথা উঠলো, আর আজই তারা এসে হাজির। এতই তাড়া তাদের।
পদ্ম খেয়াল করলো শাপলা সুন্দর একটা থ্রিপিস গায়ে জড়িয়ে খাটের এক কোনে সুন্দর করে বসে আছে। মহিলারা তার বোনকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। শাপলারও তেমন আপত্তি আছে বলে মনে হচ্ছে না। দেখে মনে হচ্ছে সেও বেশ খুশিই। পদ্ম মনে মনে আনন্দিত হলো। যাইহোক, বোন দেখা যায় এ বিয়েতে রাজিই আছে।

পদ্ম ঘরের ভেতর গিয়ে ঢুকলো। যেহেতু ওরা সবাই আগে থেকেই পরিচিত তাই পদ্ম’কে দেখেও তেমন কোনো সাড়া দিলো না ওরা। তবে একজন কালোগোছের মহিলা আলেয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন
“আপনার মেয়ে কিন্তু দুইজনই সুন্দর। তবে আমাদের শাপলা মাশাল্লাহ বলার মতো সুন্দরী, আপনার ছোট মেয়ে সুন্দর হলেও মাশাল্লাহ বলার মতো তেমন সুন্দরী না। মোটামুটি গোছেন, যেমন চলবে এমন আরকি।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here