ঠোঁট,পাট ৭-৯

0
2195

ঠোঁট,পাট ৭-৯
Written by- Ibna Imtiaj
সাত,

ইমতির বাঁধনটা ঢিলে হয়ে আসছে। নিজের ঘন নিশ্বাস থেমে আসছে যেন।
তবুও সে আগের কথাটাই বলে। উহু, আমার কিচ্ছু হবে না। এখন ঠিক যেমনটা ভালোবাসি। তখনো ঠিক এমনটাই ভালোবাসবো। আমি কখনো আপনাকে কষ্ট দিয়ে বুঝিয়ে দিব না। আপনার কাছে আমার কোন স্বার্থ ছিল। বাচ্চা হয় না হবে না হয়নি।
এসব নিয়ে ভাবার দায়িত্ব আপনার না। এমনও তো হতে পারে। আমিও আপনাকে মা বানাতে অক্ষম।তাহলে কি আপনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য পুরুষের কাছে চলে যাবেন?
বলেন আমাকে।

ঝরনা এমন কথা শোনার পর স্থির হয়ে যায়। ইমতি বুঝতে পারে। ঝরনা হয়তো আবার কাঁদছে। ইস এ মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেল না।
ইমতি তখন ঝর্নাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। ঠিক তাই। ঝরনা চোখ দুটো চিক চিক করছে।

ইমতি তখন মুচকি হাসে। আস্তে করে নিজের ঠোঁটেদুটো নিয়ে যায় ঝরনার ঠোঁটের কাছে।
জিব্বা দিয়ে চেটে ভিজিয়ে দেয় দুটো ঠোট।

ঝরনা তখন বলে। আমার কেন যেন মনে হয়। আমি আপনার যোগ্যই না।

ইমতি তখন চোখ রাঙ্গিয়ে উঠে। রাগান্বিত কন্ঠে বলে।

দেখ, তুই এখন আমার বউ। এসব আজেবাজে কথা বলবি তো। মেরে হাড্ডি গুড্ডি ভেঙ্গে গরুর মাংসের সাথে সাথে ভুনা করে খাব।
এসব কি কথা। কে কার যোগ্য না হ্যাঁ।
এখন তো শুনছি আপনি নাকি আমার বড়। তাহলে?

নাহ ইমতি, এসব বলে আমাকে লজ্জা দিবেন না। আমি ছোট নিয়ে কখনো আপনাকে ঝামেলা করিনি করতে চায় না করব না। এসব আমার কাছে কোনো কিছুই না। আপনাকে যে জীবনে পেয়েছি আমি। এটা আমার কাছে এক অপূরণীয় সংবাদ। যা আপনাকে ছোঁয়ার পরও আমার বিশ্বাস হয়না।
আমি সত্যি অনেক ভাগ্যবতী।

এই গর্ব যেনো সারাটা জীবন থাকে। আমি তাই চেষ্টা করব।

তবে আমি আপনাকে এখনো বিশ্বাস করি না। কখন না জানি কোন মেয়েকে পটিয়ে ফেলেন। বিশ্বাস নাই। এমনি তো আপনাকে মেয়েরা দেখলে কেমন জানি করে। আমার যা গা জ্বালা করে। আবার আপনি পড়তে চাচ্ছেন কলেজে। যদি আমারচে কোন সুন্দরী মেয়ে দেখে আপনার পছন্দ হয়ে যায়। তখন আমার কি হবে।

ঝরনা আপনি এসব কি বলছেন। মাথা ঠিক আছে আপনার। আমি আপনি থাকা সত্ত্বেও অন্য মেয়েকে পছন্দ করব মানে। কেন এ চারটা বছরে কোন মেয়েকে আমি পছন্দ করেছি নাকি কাউকে পটিয়েছি?

আপনি না হয় না করলেন। কিন্তু মেয়েরা তো আপনাকে করতে পারে। তখন কি আমার গা জ্বলবে না।

কে পছন্দ করলো কিংবা না করলেও আমার সেটা দেখার বিষয় না। আমি ব্যস্ত থেকে মুক্ত হলে আপনার কথাই ভাবি এবং ভাববো। কারণ আমি আপনাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি।

আচ্ছা দেখা যাবে। আমি এই চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারছি না।

তখনকার মতো কথা ওখানেই বন্ধ করে দিলাম। তাকে মুক্ত করলাম কাজের জন্য। তবুও আমি আমার জ্বালানোর কাজ চালু করে রেখেছি। কখনো শাড়ি টেনে খুলে দিচ্ছি। চুল এলোমেলো করে দিচ্ছি। বুকে হাত দিয়ে বিরক্ত করছি। কখনো কখনো বা চেপে ধরছি পেছন থেকে খুব শক্ত করে। ও যে বিরক্ত হচ্ছে না। তা কিন্তু নয়। তবে সে কিন্তু মনে মনে চাচ্ছে। আমি তাকে বিরক্ত করি।
এটা আমি খুব ভাল করেই জানি। সে আমার কাছে এই মুহুর্তের বিরক্ত গুলো চাই। মুখে হয়তো না বলছে। কিন্তু তার ভেতর থেকে চাইছে আরো জ্বালাচ্ছি না কেন। আমি তার মনের ভালোবাসা ও চোখের ভাষা দুটোই বুঝতে পারি।

রান্না শেষে দুজনা চাচ্ছিলাম গোসল করতে। জীবনের প্রথম এমন এক অবস্থায় আমরা দুজনে। যা একসময় কল্পনা ছিল এখন তা বাস্তবে। গোসলের সময় লেপ্টে আছি দুজনে। এক অস্বাভাবিক উষ্ণতার মাঝে। যেন প্রতিটা স্পর্শ কাঁপিয়ে তুলছে দুজনকে। গভীর থেকে গভীরে নিয়ে যাচ্ছে দুজনের ভালোবাসা। উষ্ণতার ভালবাসা শেষ করতে ইচ্ছে হয় না। ডুবে থেকে যেন সময় পার করে দিতে ইচ্ছা করে।

গোসল শেষে দুজন একসঙ্গে বের হলাম। কিন্তু গোসলের পরে তাকে যে ভেজা অবস্থা এতটাই সুন্দরী লাগে। যা আমার বিশ্বাসকে আবার উল্টিয়ে দেয়। আমি এবার চোখ ফেরাতে যেন পারলাম না। তার ভেজা চুল। চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে ফর্সা শরীরের চামড়ায়। এমন দৃশ্য দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল পেছন থেকে আমার। ঠিক তাই করি। ঝরনা বিরক্ত হয়না।বরং সে সব সময় আমার কাছ থেকে এমন ভালবাসায় আশা করে।

দুপুরে আমার আবদার ছিল। তার হাতে খাব। তবে আরও একটি আবদার করেছিলাম। যা এখন উল্লেখ করতে পারছি না। সেটা ঝরনার দিবে বলেছে তবে দেয়নি। কেন যেন সে আমাকে মনে করে।আমি হয়তো তার অনেক উষ্ণতা কিংবা ভালোবাসাতে ইতস্ত করতে পারি। আমি কিছু বলিনি বলবো না। হতে পারে কিছুদিন পর তার এই ধরণা উল্টিয়ে যাবে।
আমি তার কাছে কি চাই।
কিন্তু সে আমাকে নিয়ে সব সময় গল্প গবেষণা করে। আমি কি করে তার থেকে ভালোবাসা পাবো। কোন ভালোবাসাতে আমি সবচেয়ে বেশি সুখ পাব। কি করে সবসময় তাকে নিয়ে ভাববো।
এমন গবেষণা তার ভেতর সবসময় হতেই থাকে। আমারও খুব ভালো লাগে। কেউ একজন আমাকে নিয়ে গবেষণা করে। আমি কি করে সুখে থাকব কি করে সুখ পাব তা নিয়ে ভাবে। এমন একজন সঙ্গিনী পাওয়া একজন পুরুষের বড়ই ভাগ্যের ব্যাপার।

আমি খাবার দাবার শেষ করে বারান্দায় আসলাম মুখ মুছতে। মনটা আমার খুব ফুরফুরে ছিল।যা হয়তো প্রকাশ করার মত শক্তি আমার ছিল না তখন।এতো ভালোবাসা উষ্ণতা মাঝে মন খারাপ থাকবে কিংবা আমি কোন অন্য মনষ্ক এর মধ্যে থাকবো তা হয় না।

তবে এই বারান্দায় যাওয়া যেন আমার জন্য এটা কাল হয়ে দাঁড়ালো। যা আমি ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগেও কল্পনা করতে পারিনি।
বারান্দাতে যাওয়ার পর আমি যখন দেখি রাস্তার দিকে তাকিয়ে। বাসা থেকে একটু দূরে একটা কালো গাড়ি পার্কিং করা। যেই গাড়িটা আমার ভিতর দুমড়ে মুচড়ে দেয়। মুহূর্তে যেন আমার বুকের মনটা আতঙ্কে ঘিরে বসে।

চলবে

Written by- Ibna Imtiaj ( Abdullah bin imtiaj)

ঠোঁট
আট,

আমি তখন ঝর্নাকে ডাকতে গিয়েও ডাকতে পারি না। গলার ভেতর থেকে আমার শব্দগুলো আটকে যাচ্ছে। তখন নিজেকে কন্ট্রোল করে ঘরের ভিতরে যায়। তবে এখন আগের সেই অবস্থা আমার ভিতরে নেই। ঘরে ঢোকার পরে ঝরনার চেহারাটা সামনে আসার পরেই আবারো আতঙ্কে দুমড়ে যেতে শুরু করি। এখন আমার সত্যি মনে হচ্ছে। আমি অনেক বড় ভুল করেছি। ঝরনা এখন আমার কাছে সেফ মনে হচ্ছে না। এমনকি আমার জীবনটা সম্ভবত আতঙ্কের ভিতরে পড়ে গেছে। আমি আমাকে নিয়ে ভাবছি না। আমি ভাবছি ঝর্ণাকে নিয়ে। আমার কিছু হয়ে গেলে ওর অনেক বড় ক্ষতি হবে। এমন কি তার নিজের ক্ষতি মানেও তার অনেক বড় ক্ষতি। তাৎক্ষণিকভাবে আমার মাথায় কিছু আসছিল না। মুখের ভিতর হাসিটাও টানতে পারছিলাম না। সবকিছু যেন আমার ভিতরে জ্বলছে।

বিছানায় বসার সময় ঝর্না আমাকে বেশ কয়বার দেখেছিল। তার চোখমুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম। আমাকে সে পরোক্ষ করছে। কিন্তু তখন হয়তো কিছুই বলেনি।
সেও যখন সবকিছু গুছিয়ে বিছানায় আসে। আমার মাথাটা টেনে নেয় তার বুকের ভেতর। আমি তখন তাকে বলি।

ঝরনা, আপনার উরুতে আমি মাথা রাখি।

ঝরনা তখন হেসে বলে। এটার জন্য অনুমতি চাওয়ার কি দরকার। আসেন মাথা রাখেন।

মাথাটা রাখার পরে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি। ঝরনা তার হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আমার মাথার উপরে।
আমি চোখ বন্ধ করে বুঝতে পারছি। সে আমাকে খুব গভীর ভাবে দেখছে। হয়তো কিছু বুঝার চেষ্টা করছে। আমি হঠাৎ এভাবে চুপ হয়ে গেলেন কেন।
কিন্তু সত্যি যদি প্রশ্ন করে বসে। আমি কোন উত্তর দিতে পারবো না। এর কোন উত্তর আমার কাছে নেই।

বেশ অনেকক্ষণ পর। ঝরনা আমাকে বলে।
ইমতি, একটা কথা বলবো?

হ্যাঁ বলেন। মাত্র একটা কেন।

আপনার মুখটা হঠাৎ করে এভাবে অফ হয়ে গেল কেন। কি হয়েছে আপনার এই মুহূর্তে।

আমি জানতাম। এমন কোন একটা প্রশ্ন আমাকে কিছুক্ষণের মধ্যে শুনতে হবে। তখন আমি। একটা কৃত্রিম হাসি মাখিয়ে বলি।
আরে না। এমনি একটু চুপ করে আছি। খেয়ে উঠলাম তো।

আপনি কি আমাকে নতুন করে জানতে বলছেন আপনাকে ?

আরে না। সত্যি বলছি আমি।

ঠিক আছে। আমি আর কিছুই জিজ্ঞেস করবো না। কখনো না কখনো আমি সত্যি ঠিকই জানতে পারবো। কখনো তো আমাকে কিছু লুকাতে পারেননি আপনি। পারলে না হয় একটা কথা ছিল।

আমি তখন তার কথাগুলো কানের মধ্যে বারবার বাজাতে শুরু করলাম। হ্যাঁ তা তো অবশ্যই। কোন না কোন এক সময় তাকে জানাতেই হবে। তবে সেটা আমি এখন বলতে পারছি না।

তুমি তখন থেকে আমার ভেতরটা কেমন যেন হয়ে গেল। সেদিন আর নিজেকে জাগিয়ে তুলতে পারিনি। তাই বলে ঝর্নাকে যে ইগনোর করেছি তাও নয়। তাকে ভাসিয়ে রেখেছে আমি কৃত্রিম ভালোবাসার মধ্যে। যা আমার জন্য খুবই একটা অসহ্যকর ব্যাপার ছিল। তখন নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেছিলাম। আমি এইভাবে ঝর্ণাকে ধোকা দিচ্ছি না তো। তার কৃত্রিম ভালোবাসা পাওয়ার কথা না। তাহলে তাকে আমি এই ভালোবাসাতে কেন বসিয়ে রেখেছি।
আমার ভেতর থেকে কোনো উত্তর ফিরে আসেনি।

নিজেকে দু-একদিনের মধ্যে গুছিয়ে তুলতে পারলেও। ঠিক সেই উষ্ণতা ভালোবাসা ফিরিয়ে আমি কোন ভাবে আনতে পারছি না। বারবার ভেতরটা আতঙ্কে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে আমার।

তারপর সময় চলে আসে কলেজে ভর্তি হবার। ঝরনা ও বারবার তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি তার প্রতিউত্তর দিচ্ছি না। আমার এখন কেন যেন মনে হচ্ছে। এই শহরটা আমার জন্য খুব বিপদজনক হয়ে গেছে। আমার জন্য নয়। আমার সঙ্গিনী ঝরনার জন্য।আমার কিছু হয়ে যাওয়া মানে ঝরনার একা হয়ে যাওয়া। তারপরের পরিস্থিতি আমি কল্পনা করতে চাই না। আর আমার কিছু হয়ে গেলে সে যাবে কোথায়। এটা ভাবলে আমার মাথা পুরো ব্যথা হয়ে ওঠে। আমি কোনোদিন ভাবতে পারিনি। এমন একটা মুহূর্তে এরকম একটা বিপদ চোখের সামনে ভেসে উঠবে।

ঝরনা আমাকে সন্ধ্যায় নিয়ে বসে। সে জানতে চাই আমি পড়াশোনা কেন করতে চাচ্ছি না। তার সাথে তো আমার এটা কথা ছিল না। কথা ছিল বিয়ের পর আমি পড়াশোনা চালু রাখব। তাহলে এখন কেন পিছু হচ্ছি।

আমি ছোট বাচ্চার মত তখন নিশ্চুপ হয়ে ছিলাম। কোন জবাব পাচ্ছিলাম না খুজে আমি।

তাও ছোট বাচ্চার মত কান্নার একটা ভান করে বসি।

খুব আহলাদী সুরেই বলতে থাকি। না ঝর্না না। আমি আর পড়াশোনা করব না। আমি আপনার কাছে চব্বিশ ঘন্টা থাকতে চাই। আপনাকে একা রেখে আমি একমুহুর্ত নরবো না।

ঝরনা তখন আমার গালে হাত রাখে।
তারপর মুচকি হাসি দিয়ে বলে।

ইমতি, আপনি আমাকে কি ওয়াদা করেছিলেন ভুলে গেছেন। আপনি না আমাকে বলেছেন। আপনি অনেক বড় হবেন। আমাকে একজন গর্বিত স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি করবেন। আপনি কি আমাকে বলেননি।আপনি অনেক বড় হয়ে আমাকে গর্ব করার মতো অনেক কিছু অর্জন করে দিবেন। এসব কি তাহলে এখন ঢোকাতে দিয়ে যাচ্ছেন।

আমি ঝর্ণার দিকে তাকায়। তার মুখে তখনও মুচকি হাসি লেগে আছে। বুঝতে পারছি সে আমাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। কিন্তু আমি কেন চাইছি না তাকে ছাড়তে সেটা তো সে বুঝতে পারছে না।

আমি তখন তাকে বলি।

তাহলে আমার সাথে প্রতিদিন কলেজে যেতে হবে। আমার যতক্ষণে ছুটি হবে। যতক্ষণ না ক্লাস শেষ হবে। ততক্ষণ আপনি কলেজে অপেক্ষা করবেন আমার জন্য।

ঝরনা তখন হেসে বলে।
ওরে পাগল। আপনাকে সব বলতে হবে না। আমি আগে থেকে ভেবে রেখেছি। পাগল নাকি। আপনাকে আমি একা ছাড়বো। কখনোই না। মাঝে মাঝে ক্লাসে যেয়ে চেক দিয়ে আসবো। কোন মেয়ের দিকে তাকাতাকি করছেন কিনা বা কথা বলছেন কিনা।
নিয়ে যাব সঙ্গে। নিয়ে আসবো সঙ্গে। বুঝলেন আমার পাগল টা।

এবার যেন একটা তৃপ্তির হাসি ছাড়লাম আমি। তবে কেন যেন মনে হচ্ছে। এই হাসিটা অনেকদিন পরে হাসছি।

আমি তখন ভাবলাম। ঝরনা একজন ভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ে। আর কিছুদিন পরেই হয়তো তার অনার্স কমপ্লিট হয়ে যেতো। কিন্তু সে আমার জন্য সেটা বিসর্জন করেছে। পুরোপুরি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে নি। এমন কি যেটা আমি জানতাম না সেটা ও জানে। তবে এর মধ্যে বিশাল একটা অজানা কথা ছিল।যেটা ছিল আমার ধারণা ও আমার পরিবারের কথা। আর সেটা হলে আমার বয়স নিয়ে।কিন্তু এই নিয়ে ঝরনার সাথে আমার দ্বিতীয় বার কোনো কথা হয়নি আমার জানা হয়নি সে এসব কথা জানলো কোথায় থেকে। এখন এসব ভাবতেও চাচ্ছি না।

সেদিন রাত্রে ঝরনা আমার কাছে উষ্ণতা চাই। খুব করেছে নিয়েছিল। আমি না করিনি তাকে। দিয়েছিলাম ভালবাসা মাখিয়ে।

তবে রাতে একটি ঘটনা ঘটে যায় আমার সাথে।

চলবে

Written by-Ibna Imtiaj ( Abdullah bin imtiaj)

ঠোঁট
নয়,

আমি তখন ঝর্নার সাথে লেপ্টে ঘুমিয়ে আছি। ও আমার নগ্ন বুকে বিভর ঘুমে মগ্ন। আমিও সপে আছি তার সাথে। কিন্তু আমার ঘুমটা অত গভীরে নেই।
ঠিক মাঝ রাতে একটা শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুমটা ভালো করে ভাঙ্গার পর বুঝতে পারি। একটা দড়ি টান এর শব্দ আসছে বারান্দা থেকে। আমি প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ বারান্দা থেকে এমন শব্দ আসছে কেন?

ঝর্নাকে তখন আস্তে করে বুক থেকে সরিয়ে বিছানায় রাখি। আমি ধীরে ধীরে হাঁটা দিলাম বারান্দার দিকে।
বারান্দা যাওয়ার পর মারাত্মকভাবে চমকে যায়।

একটা সাদা চিকন দড়ির বাহির থেকে এসে আমার বারান্দায় পড়েছে। এমনকি এই সাদা চিকন দড়ির মাথায় একটা সাদা কাগজ মোড়ানো। তাও আবার একটি ছোট্ট ঢিলের সাথে।

ঠিক তখনই খেয়াল করি বাসার সামনে থেকে একটা লোক হেঁটে চলে গেল।তবে সেইেলোকটা বেশ কয়েকবার পিছন ঘুরে ছিল আমার বারান্দার দিকে তাকিয় । ব্যাপারটা আমার বুঝতে বাকী নেই।

আমি তখন সেই কাগজটা হাতে নেই। খারাপ আর যা দেখি তা কখনো আমার কল্পনাতেও ছিল না।

লেখা আছে-

‘এস আই’ তুমি নিশ্চয় চাও একটা নিরাপদ জীবন। একটা সুখী জীবন। একটা ভালবাসা ময় জীবন। এমন কি সবগুলো ঝরনার সাথে। তবে সত্যিই যদি চেয়ে থাকো। তাহলে আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে ফেলো। আমরা তোমার কোন ক্ষতি করব না এমনকি তোমার ঝর্নারো না। তোমার যা উত্তর। উত্তরটা উল্টো পিঠে লিখে আগামীকাল এই সময়ে এই কাগজটা বাইরে ফেলে দিবে। তাহলে তুমি ও নিরাপদ থাকবে তোমার ঝরনা নিরাপদ থাকবে। এবং উপকার হবে আমাদেরও। সালাম।

কথাগুলো পড়ার পরে আমার পুরো শরীর কাঁপছিল। যেন আমার পায়ের তলা থেকে দুনিয়ায় সরে গেছে। আমি কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। সুখে থাকা ইচ্ছার পরেও যদি এমন একটা বিপদ আসে। যেটা আমার পক্ষে সামলানো মোটেও সম্ভব না। তাহলে নিজেকে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পাই। এখানে যদি আমাকে হুমকি দেয়া হতো আমি মেনে নিতাম। কিন্তু এখানে ঝর্ণাকে টানা হয়ে গেছে। যেটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় দুর্বল একটা জায়গা।

আমি ঠিক কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। হাতের মুঠোয় কাগজটা নিয়ে গ্রিলে হাত দিয়ে ভাবছি গভীরভাবে।

ঠিক এমন সময় আচমকা ভাবে ঝরনা পেছন থেকে আমাকে চেপে ধরে। তার নরম হাত ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে যায় আমার তলপেটের দিকে। পুরো শরীর ঝাকুনি খায় আমার।

আমি তখন ভয় পেয়ে যায়। এখন যদি ঝরনা আমার এই কাগজটা দেখে ফেলে। তাহলে পরিস্থিতি টা কোন দিকে যাবে ভেবে পাচ্ছি না।
হাতের মুঠোয় কাগজটা নিয়ে ঝর্ণার দিকে ঘুরলাম।
খুব শক্ত করে লেপ্টে নিলাম আমার সাথে। দুটো নগ্ন বুক। যেন একই দেহে পরিণত হয়ে গেছে। তার গালে একটা চুমু খেয়ে বলি। উঠে গেলেন যে ?

ঝরনা তখন অভিমানী সুরে বলে। কথা বলবো না আপনার সাথে আমি। নিজে আমাকে একা ফেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। সেটা কিছুই না। এত রাতে কাকে দেখছেন বারান্দায় দাঁড়িয়ে। তাও আবার কাপড় ছাড়া। কি কাহিনী টা কি।

আমি তখন হাসি। হেসে বলি।
ধুর পাগলী। তোকে খুলে খুলে দেখি তাও আমার মন ভরে না। আবার এত রাতে অন্য কাউকে দেখতে আসবো। পাগল নাকি।

হুহু , বিশ্বাস নাই। আপনাকে আমার এমনিতেই ভয় লাগে। কখন না জানি বলে বসেন। ঝরনা আপনাকে আমার আর ভাল লাগছে না। তখন তো আমি মরে যাব।

এই কী বলছেন এসব।

আমি তখন তাকে আরও শক্ত করে চেপে ধরি।
আমার পা টা তখন তার দুই পায়ের নিচে ঠেলে দিই। তার পুরো ভারটা উঠিয়ে নিই আমার দুই পায়ের মধ্যে।
কৌশলে হাতের কাগজটা বারান্দায় ফেলে দিই। সকালের আগে উঠে হয়তো সে কাগজটা আমার লুকাতে হবে।

কিন্তু এখন তো ঝর্ণাকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে ঘরে নিয়ে যেতে হবে। দুটো ঠোট ডুবিয়ে তাকে ধীরে ধীরে ঘরে নিয়ে যাচ্ছি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাকে বিছানায় ফেলে দিই। ধীরে ধীরে উঠিয়ে নিই আমার উপরে।

তবে খুব গভীরে নিয়ে যায় না। কারণ আমার ভেতরের অবস্থা এখন ভালো নেই। ঝর্নাকে ওভাবে পাগল করতেও চাইনা। যদি সে মন থেকে আমার ভালবাসার উষ্ণতা না পায়। তাহলে সে তৃপ্ত হবে না।

ঝরনা তখন আমার গালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে। ইমতি, আপনি আমার থেকে খুব বড় কিছু লুকাচ্ছেন। আমি আপনার চেহারা দেখে বুঝতে পারছি।

আমার তখন ভিতরের কলিজা টা চমকে ওঠে।

তবুও তাকে মিথ্যা বলি। নাগো আমার কিচ্ছু হয়নি। শুধু একটা কথাই ভাবছি। আপনাকে আমি সুখ দিতে পারছি কিনা। আপনি আমার সুখে তৃপ্ত হচ্ছেন কি না।

ঝরনা তখন বলে।

আপনাকে আমি কতবার বলেছি এই কথা। আপনার থেকে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সুখ পায়। যা কোনদিন পাইনি হয়ত পেতাম না আপনাকে না পেলে।

এটা কি সত্যি ঝরনা?

হ্যাঁ একদম খাঁটি সত্যি।

আমি তখন আস্তে করে হাত বুলিয়ে দিই বুকের উপরে। তারপর বলি। আমি এখন এই বুকে ঘুমাতে চাই। দিবেন ঘুমাতে।

এটা চাইতে হবে না। আমি এখন আপনাকে দিব আমার বুকে ঘুমাতে।

ঝরনা নরম বুকে মাথা রেখে আমি হালকা ঘুমে নিজেকে মগ্ন রাখি। যেন ঝর্না উঠার আগে আমি উঠে সেই কাগজটা আড়াল করতে পারি।
সারাটা রাত কেটেছে সেই একই চিন্তায়।

সকাল বেলায় যখন ঝরনার ঘুম ভেঙে যায়।
ও তখন ধীরে ধীরে আমার মাথাটা বালিশে রাখতে চাচ্ছিল। কিন্তু তার চোখ টা আমার মুখের দিকে আটকে যায়। আমি ঘেমে পুরো জবজবে হয়ে গেছি।

ঝরনা তখন আমার পুরো মুখটা মুছে দিতে দিতে বলে। একি, আপনি এত ঘেমে গেছেন কেন। পুরোটা মুখ আপনার ঘামের পানি। যেন মনে হচ্ছে মুখটা ধুয়ে এসেছেন পানি দিয়ে।

ঝরনা মারাত্মক চিন্তায় পড়ে যায়। অস্থির হয়ে যায় পুরো ভাবে।

আমি তখন বলি। ঘুমের মধ্যে হয়ত ঘেমে গেছি।

কিন্তু ঝরনা এটা মানতে রাজি না। ওর ধারনা আমার জ্বর এসেছিলো। সেইজন্য জ্বর সারার সাথে সাথে হয়তো আমি ঘেমে গেছি।
আমাকে খুব আহলাদে তার বুকের সাথে লেপ্টে ধরে। তার নিজেকে খুব অপরাধী লাগে। তার বুকের সাথে সারাটা রাত লেপ্টে ছিলাম। এরমধ্যে আমার জ্বর এসেছিলো ‌। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি। এটা তার ধারণা। কিন্তু আসলে ও তো আমার জ্বর আসেনি। কেন ঘেমে গেছি তাও বলতে পারব না। হতে পারে চিন্তার কারনে ঘেমে গেছি।

ঝর্নাকে তখন বলি। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন। সারারাত আপনার কাপড় ছাড়া দেখেছি।এখন একটু থ্রি পিস পড়ে আমার জন্য হালকা সাজবেন। আপনাকে সাজানো অবস্থায় দেখব।

আমার মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে ঝরনা যে কত আনন্দ পায়। তা সে নিজেও জানে না। খুব একটা দেরি করে না। আমাকে ছোট্ট একটা আদর দিয়ে চলে যায় আমার পছন্দের জিনিস করতে।

কিন্তু সে যখনই বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হতে। আমি তখন সুযোগটা পেয়ে যায়। আমিও তড়িঘড়ি করে বারান্দায় যায় সে কাগজটা লুকোতে।

কিন্তু বারান্দায় যাওয়ার পরে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

চলবে

Written by- Ibna Imtiaj (Abdullah bin imtiaj)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here