ডাকপাড়ি #পর্ব_২৩,২৪

0
164

#ডাকপাড়ি
#পর্ব_২৩,২৪
#আফনান_লারা
২৩
________
পূর্ণার কথাগুলো জনাব হাবিবুল্লাহর অনেক অনেক ভাল লাগলো। এতই ভাল লাগলো যে তিনি তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে আসতে বলে দিছেন।তারপর একসাথে দুজনে ঐ বাসায় যাবেন।লোকটাকে হাসিমুখে যেতে দেখে পূর্ণতা নিজেও খুশি খুশি বাদাম খেতে খেতে বাগানের আরও ভেতর দিকে গেলো।এই দিকটায় এত বনজঙ্গল। সাপ থাকা একেবারেই অস্বাভাবিক কিছুনা।মতিনকে অনেকবার করে সায়না বলেছে এগুলো পরিষ্কার করতে।মতিন এইদিকটা পরিষ্কার করতে আসে সেটা ঠিক কিন্তু বানুকে যখন বাউন্ডারির ঐ প্রান্তে দেখে তখন তার কাজ ভুলে সে প্রেমে লেগে পড়ে।এমন করে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কাজটা হচ্ছেইনা।এইদিকে বর্ষার পানি পেয়ে বনগুলো যেন ফুলে ফেঁপে উঠে দিনের পর দিন।পূর্ণতা বন দেখে সাপগোপের কথা না ভেবে বনে হাত বুলিয়ে দেখে মনের সুখে বাদাম খাচ্ছিল।
তখন চিকন আকৃতির একট সাপ সেই বনের মধ্যেই ছিল।।পূর্ণা বনটাকে ধরে নাড়িয়ে চাড়িয়ে দিয়েছে বলে সাপটার ডিস্টার্ব হলো ভীষণ।সে ভাবলো পূর্ণতা ওকে মারতে এসেছে সুতরাং আত্ন রক্ষার খাতিরে ধরে এক কামড় বসিয়ে দিতে হবে এই ভেবে সাপটা বেরিয়ে পূর্ণতার পায়ের কাছে গিয়ে বসিয়ে দিলো এক কামড়।
পূর্ণতার হাত থেকে বাদাম পড়ে গেলো তখনই।বাদামের খোসাটা গিয়ে পড়েছে সাপের মাথায়।আর একটুর জন্য সাপটা নিজেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো।সে নিজেই ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছে, এদিকে পূর্ণতা নিচে চেয়ে সাপের লেজ দেখে তার দুনিয়া দারি অন্ধকার হয়ে গেছে।চিৎকার চেঁচামেচি করে সে মাটিতে বসে পড়ে।সাপটা মোটেও বিষদর ছিলনা।কামড়ে পূর্ণতার ভয়টাই ওকে অসুস্থ করে তুলছে।ওর চিৎকার সবার আগে ফারাজ শুনেছে।কারণ সে তখন ছাদে ছিল।ছাদ থেকে বাগানে চেয়ে পূর্ণতাকে চেঁচামেচি করতে দেখে সে ছুটে আসলো এদিকে।ওকে দেখে পূর্ণতা আঙুল তুলে বললো,’খবরদার কাছে আসবেন না।’

‘কেন?আর আপনার কি হয়েছে?ষাঁড়ের মতন চেঁচাচ্ছেন কেন?’

‘সাপে কামড় দিয়েছে’

‘সেকি!!!দেখি দেখি!’

ফারাজ আরও এগিয়ে আসলো।পূর্ণতা ওকে আবারও থামিয়ে বললো,’দূরে থাকুন।দাদাজান বলছেন আমাদের একসাথে দেখলে বিয়ে পরিয়ে দিবেন’

‘তাই বলে কি মরতে দিব আপনাকে?’

ফারাজ নিচে বসে পূর্ণতার পা চেপে ধরলো।কামড়ের দাগ বসেছে,রক্ত ও বের হচ্ছিল।পূর্ণতা কাঁপছে অনবরত।ভয়ের কারণে তার অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিল।ফারাজ এদিক ওদিক তাকিয়ে কয়েকবার মতিনকে ডাক দিছে কিন্তু সে তো আবার কানে কম শুনে।দূরের আওয়াজ তার কানে জীবনেও আসেনা।বাধ্য হয়ে ফারাজ পূর্ণতাকে তুলে বাড়ির ভেতরে নিয়ে এসে সোফায় বসালো।মিসেস সোনালী ওখানেই ছিলেন।এমনটা দেখে এসে জানতে চাইলেন কি হয়েছে।সাপের কামড় শুনে তিনি জোর গলায় সবাইকে ডাকা ডাকি শুরু করে দিছেন।এদিকে ফারাজ গেছে ফার্মেসীর দিকে।পূর্ণতা ভয়ে ভয়ে দাদাজান কোথাও আছেন কিনা সেটাই দেখছে।
ফারাজ বাতাসের গতিতে ছুটে ফার্মেসি থেকে একজন সাধারণ ডাক্তার নিয়ে এসেছে।
দোকানদার আজ অবাক হয়ে শুধু ফারাজের দৌড়ই দেখছিলেন।জীবনে এই ছেলেকে তিনি দ্রুত হাঁটতে পর্যন্ত দেখেননি।আর আজ তিনি কিনা দেখলেন ঐ ছেলে বাতাসের গতিতে ছুটছে।কি এমন হলো?
চায়ের দোকানে নিজের মেজো ছেলেকে বসিয়ে তিনি দেখতে নেমেছেন মূল কাহিনী।
আফসোস গেইট অবধি এসে আর ভেতরে ঢুকতে পারলেননা।মতিন ওনাকে বরাবরই অপছন্দ করেন।আজ সেটার প্রমাণ ও দিয়ে দিলো।
দোকানদারের বুকের ভেতর হাশপাশ করছে একটিবার জানার জন্য যে ফারাজ কেন ছুটছিল।শেষে বাধ্য হয়ে মতিনের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন তিনি।হাসিমুখে গেটের উপর হাত রেখে বলেন,’মতিন মিয়া ভাল আছো?’

‘এতক্ষণ ছিলাম।আপনাকে দেখে ভাল থাকা বাপের বাড়ি চলে গেছে’

দোকানদার নড়েচড়ে দাঁড়ালেন।মতিন যাই বলুক ওটাতে পাত্তা দেয়া যাবেনা।জরুরি হলো ভেতরের খবর জানা।
———-
‘ফারাজকে দেখলাম ছুটে একবার বাজারের দিকে গেলো,আবার দেখলাম ছুটে বাড়ির দিকে যাচ্ছে।ঘটনা কি জানো?’

মতিন হাত তুলে বললো,’এত্ত বড় একখান সাপ বাগানে ঢুকছে।কাইট্টা দিছে আমাদের মেহমানকে।তাই ঔষুধ আনতে গেছে ভাই’

‘মেহমান?কিরকম মেহমান?’

‘দাদাজানের দূর সম্পর্কের এক ছেলের মেয়ে।নাম পূর্ণা’

‘ওহহহহ।বয়স কত?’

‘কেনো?ছেলে দেখবেন?’

‘দেখতে তো সমস্যা নাই’

‘এই হবে তেইশ/ চব্বিশ! ‘

‘তাহলে তো কেল্লা পথে!’

‘কেনো কেনো!’

‘ঘরেই তো ছেলে আছে।ফারাজের সাথে ওরে বিয়ে দিলেই হয়’

‘বিয়া বললেই হয়?ভাগেন তো!’

‘আরেহ মতিন ভাল বুদ্ধি দিলাম।কথাটা গিয়ে বেলায়েত আঙ্কেলকে কইও।যদি বিয়েটা ঠিক হয় তবে আমি হয়ে যাবো উকিল চাচা।তোমাকেও একটা কিছু বানিয়ে দিবো। চিন্তা করোনা’

মতিন ভেংচি কেটে অন্যদিকে ফিরে গেছে।এদিকে দোকানদার ভাবছে অন্য কিছু।মুখে যাই বলুক ভেতরে ভেতরে তিনি ভাবছেন ফারাজ আর পূর্ণতা হয়ত প্রেম করছে।
এসব ভাবতে ভাবতে নতুন গল্প বানাতে বানাতে তিনি তার দোকানে চলে গেছেন।

পূর্ণতার পায়ের ব্যাথা সারার জন্য কিছু ঔষুধ লিখে দিয়েছে ডাক্তার।তারপর চলে গেছে।পূর্ণতা এখন শক্ত হয়ে বসে আছে।ভয় ছাড়া বারতি কিছু নেই।হালকা পা ব্যাথা কেবল।ওটা সেরে যাবে।বেশি চিন্তাভাবনা করেনা সে এটা নিয়ে ।তার মাথায় শুধু ঘুরছে দাদাজান যেন আর উল্টাপাল্টা কিছু না ভাবেন।
ফারাজ অবাক করা কাজ করছে আজ,পূর্ণতাকে নিয়ে সে এত ভাবে তা পূর্ণতাও জানতো না।অবাক হচ্ছে কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেনা।
———-
সারথি আজ আবারও একা একা বেরিয়ে পড়েছিল।সজীবকে সব ভুলে শেষবার ফোন করেছিল কিছুক্ষণ আগে।কলটা সজীবের দ্বারা ভুলে রিসিভ হয়।সে লেভেনকে নিয়ে হাসাহাসিতে মেতে ছিল।ফোন পকেটে থেকে চাপ লেগে রিসিভ হয়ে পড়ায় সারথি সব শুনেছে।সজীব ওখানে কত খুশি।
তার হয়ত তখন কল দেয়াটাও ঠিক হয়নি।
একা একা পথ চলছে সে।গন্তব্য যেকোনো একটা নদী।ডুবে মরবে।
কতক্ষণ দম বন্ধ থেকে সে চিরজীবনের জন্য মারা যাবে।ছাদ থেকে পড়ে,গাড়ীর সামনে দাঁড়িয়েও যখন সে মরলোনা তবে আজ পানিতেই ডুবে মরার চেষ্টা চালাবে।এখানে নিশ্চয় আনাফ আসবেনা।পথে লোকদের জিজ্ঞেস করে করে সে পথ চলছে।কাছাকাছি একটা নদী আছে।এটা সারথি জানে এবার মানুষ জিজ্ঞেসা করে চলছে।
নদীর কাছাকাছি আসতেই লঞ্চ স্টিমারের আওয়াজ ভারী হয়ে উঠলো।সারথি বুঝে গেলো সে নদীর খুব কাছে চলে এসেছে।
পাশেই এক লোকের কথা শুনতে পেলো সে।লোকটা বাদামওয়ালা থেকে বাদাম কিনে খাচ্ছে আর বাদামের দাম বেশি কেন সেটা নিয়ে দরকষাকষি করছে।সারথি সেদিকে গিয়ে বললো,’ভাই আমাকে একটি নদীর কিণারা দেখিয়ে দেবেন?’

লোকটা বাদাম খাওয়া বন্ধ করে বললো,’মনে হয় চোখে দেখেননা।কি দরকার কিণারায় যাওয়ার?’

‘আমার ইচ্ছে পানির কিণারায় এসে স্রোত আঁচড়ে পড়ার আওয়াজ শুনব।প্লিজ বলে দিন’

লোকটা বললো সোজা গিয়ে নিচে নামতে।সারথি সেই কথামতন সোজা গিয়ে নিচে নামছে এবার।
অনেক কষ্টে নিচে নামলো সে।তারপর বসে থাকলো গালে হাত দিয়ে।

আজ ওখানে আনাফ ও এসেছে।তাজা ইলিশ মাছ কিনতে।পাঁচটা দশ মিনিটে একটা ট্রলার ইলিশ মাছ নিয়ে আসবে।ওটা থেকে নিলামের দরে সে ৩০টা ইলিশ মাছ কিনবে।আগে থেকে খবর নিয়ে রেখেছিল।অনেকদিন ধরে ইলিশ মাছ খাওয়ার ইচ্ছা জেগেছিল।আজ সময় করে তাই সে এদিকে এসেছে।এখানে সে এসেছে আরও আধ ঘন্টা আগে।এত সুন্দর পানি দেখে তার গোসল করতে মন চাইলো।তাই গায়ের নীল রঙের টি শার্টটা খুলে কিণারায় শুকনো জায়গায় ফেলে সে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।সাঁতরে পানির মাঝেও চলে গেছে।কি যে ভাল লাগছে তার।কতদিন পর নিজেকে কেমন যেন স্বাধীন মনে হচ্ছে।উপর থেকে একটা সেতু দেখা যায় সেটা দেখতে দেখতে আনাফ শুয়ে শুয়ে সাঁতার কাটছে।হাসা অবস্থায় হঠাৎ ডান পাশে তাকালো সে।দূরে বসে থাকা লাল শাড়ী পরা মেয়েটিকে একদম সারথির মতন দেখতে।ও এখানে কেন আসতে যাবে তা ভেবে আনাফ গুরুত্ব না দিয়ে সাঁতরে আরও দূরে চলে গেলো।স্রোত বেড়ে যাচ্ছে,
সন্ধ্যা নামছে বলে।সাঁতারানোর সময় আনাফ আরও একবার সেই কিণারায় তাকাতেই দেখলো মেয়েটি উঠে দাঁড়িয়েই হুট করে চোখের সামনে ঝাঁপ দিয়ে দিয়েছে পানিতে।
এটা দেখে আনাফ কোনোদিক না ভেবে দ্রুত সেদিকে সাঁতরে গেলো।মেয়েটিকে যতজন ঝাঁপ দিতে দেখেছে সবাই হইচই করতে করতে দেখতে চলে আসলো কিন্তু কেউ বাঁচাতে পানিতে নামলোনা।

সারথি দম ছেড়ে দিয়েছে ইচ্ছাকৃত। আনাফ যত দ্রুত পারছে আসছে কিন্তু স্রোতের কারণে তার বেগ কমে আসছে।ততটাও দক্ষ না সে।অনেকবছর পর পানিতে নেমেছে।এর আগে মনে হয় পাঁচ ছয় বছর আগে নানুর বাড়িতে পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল।তাই সাঁতারে তার
কষ্ট হচ্ছে।তাও কাছে এসে পানিতে ডুব দিলো সে।সারথি দম ছেড়ে যখন টের পেলো তাকে দিয়ে মরা হবেনা,তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।নাকে দিয়ে পানি ঢুকে তার ভেতরটা জ্বলছে।বাঁচার জন্য সে চোখ খুলে তাকালো।উপরটা অন্ধকার।সন্ধ্যা বলে কোনো আলো নেই পানির ভেতর।এমনিতেও সারথি চোখে অন্ধকারই দেখে সবসময়।
হাত উপরে তুলে সারথি উঠার চেষ্টা করলো।সে সাঁতার জানেনা।তাও উপরে উঠার বৃথা চেষ্টা করে সে ব্যর্থ।দম চেয়েও এখন সে ধরে রাখতে পারছেনা।হেরে গিয়ে সারথি আরও একবার দম ছেড়ে দিয়েছে ওমনি পিঠের তলা দিয়ে আনাফের হাতের ছোঁয়া পেলো সে।ততক্ষণে সে চোখ বুঝে ফেলেছে,জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।আনাফ ওকে শক্ত করে ধরে উপরে নিয়ে আসলো।উপরে তুলতেই সারথির মুখ দেখে আনাফ যেন আকাশ থেকে পড়েছে।ওকে জলদিতে কিণারায় নিয়ে এসে শোয়াতেই দেখলো আশেপাশে মানুষে ভীড় ধরে গেছে।জলদি করে সারথির আঁচল টেনে ওর গা ঢেকে পালস চেক করলো সে।পানি ঢুকে গেছে শরীরে।পেটে চাপ দিয়েও লাভ হচ্ছেনা।সারথির ঠোঁট ছুঁয়ে পানি বের করা কিংবা হাওয়া দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।পেটে চাপ দিয়েও পানি বের করা যাচ্ছেনা।দম আটকে আছে ওর মনে হয়।বাতাস ঢুকাতে হবে মুখে।সবাই বলছে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে কিন্তু কেউ জানেনা আনাফ নিজেই ডাক্তার।সারথির মুখ ধরে সে বাধ্য হয়েই হাওয়া দিলো মুখে।অনেকবার দিয়েও কোনো রেসপন্স না পেয়ে সারথিকে তুলে সে সামনের দিকে গেলো।রোডেই তার গাড়ী।জলদি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, এখনও বেঁচে আছে ও।
সকলে ওর পিছু পিছু আসছে।আনাফ সারথিকে গাড়ীতে তুলে ড্রাইভিং সিটে বসে স্পীড বাড়িয়ে হাসপাতালের দিকে গেছে।টি শার্টটা ওখানেই রয়ে গেছে।আনাফের গা খালি।সারথি এমন কিছু করবে তা জানা ছিল কিন্তু সেটা এত দ্রুত করবে তা জানা ছিল না ওর।
তার নিজেরই দম বন্ধ হয়ে আছে।সারথিকে বাঁচানো জরুরি।প্রাথমিক উপায়ে পারেনি বলে বুকের ভেতর ভয় ঢুকে আছে। ওরে যেকোনো মতে বাঁচাতে হবে।সারথি চোখ খুলছেনা এখনও।কাছেই একটা হাসপাতাল আছে এদিকে,নতুন হয়েছে।তবে চালু হয়েছে। ওটাতেই নিচ্ছে আনাফ।সারথি মরতে পারেনা।ওকে মরতে দিবেনা আনাফ,কিছুতেই না।এত সুন্দর জীবন নষ্ট হতে দিবেনা সে।
———–
পূর্ণতা তার রুমে বসে আছে।ড্রয়িং রুম থেকে মেহমানদের হাসাহাসি শোনা যাচ্ছে।ফারাজকে হাবিবুল্লাহর পরিবারের কজন দেখতে এসেছেন।
তাদের নিয়েই যত হট্টগোল।পূর্ণতা চুপচাপ বই পড়ছে।ফারাজ তার নিজের রুমেই ছিল।হাবিবুল্লাহর পরিবার দেখে তার মেজাজ গরম হয়ে আছে।কিছু ভাল্লাগছেনা

ফারাজকে একটা নীল পাঞ্জাবি ধরিয়ে দাদাজান চলে গেছেন।ওটা পরে নিচে আসতে বলেছেন। ফারাজের রঙিন কিছু ভাল লাগেনা।দাদাজান ওকে ওর অপছন্দের সবকিছুতে বাধ্য করেন।
চলবে♥

#ডাকপাড়ি
#পর্ব_২৪
#আফনান_লারা
________
পূর্ণতা এত হইহুল্লড় শুনে বাধ্য হয়েই নিজে নিজে বের হয়েছে দেখার জন্য।ড্রয়িং রুমে যেতে যে সিঁড়ি আছে সেটাতে দাঁড়িয়ে দূর থেকেই দেখার চেষ্টা করছে পূর্ণতা।
সোফায় মধ্য বয়স্ক তিনজন বসে আছেন।একজনকে সে চিনে।জনাব হাবিবুল্লাহ তিনি।সবাই হাসছে।শুধু কি কথা নিয়ে হাসছে তা বুঝতে পূর্ণতা আরেকটু নিচে নামে।তখন বুঝে তারা ফারাজ আর ওর হবু বউয়ের গুণ নিয়ে মজা করছে।দুজনের নাকি অনেক মিল।বিয়ের পর কোনো ঝগড়া হবেনা এটা ওনাদের ধারণা।পূর্ণতা সব শুনে আবারও রুমে আসতে গিয়ে দেখতে পায় ফারাজকে।সে নীল পাঞ্জাবি পরে এদিকেই আসছিল।পূর্ণতাকে দেখে রেগে গেলো সে।ব্রু কুঁচকে বললো,’কি সমস্যা?আপনার তো রেস্ট করা উচিত।এদিকে কি করেন?’

‘আমি ন্যাকামি পারিনা।সাপকে ভয় পাই,সাপের কামড়ে না।আমি বেশ ভাল আছি।আপনি যান ওদিকে।সবাই আপনার অপেক্ষায় আছে’

ফারাজ আর কিছু না বলেই চলে গেলো।পূর্ণতা আর রুমে গেলো না।ওখানে দাঁড়িয়েই দেখছে কি হয়।
ফারাজ সবাইকে সালাম দিয়ে এক কোণায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। জনাব হাবিবুল্লাহর সাথে এসেছেন ওনার স্ত্রী আর বোন।সবাই ফারাজের দিকে চেয়ে আছে এখন।ফারাজের লজ্জা লাগলো।প্রথমবার এভাবে কেউ ওকে দেখতে এসেছে।তার উপর কেমন করে যেন সবাই চেয়ে আছে।
হাবিবুল্লা্হ ফারাজকে বসতে বলেন।ফারাজ ঠিক আছি বলে দাঁরিয়ে ছিল কিন্তু দাদাজানের ধমকে বসতে বাধ্য হলো।দাদাজান ওর ঘাড়ে হাত রেখে হাসি মুখে বললেন,’ও আমার আদরের নাতি।আমার কথায় বলতে গেলে উঠে- বসে।ছোটকাল থেকেই আমায় খুব সম্মান করে।ঠিক অর্কর মতন।অর্ক হলো ফাহাদের ছেলে।ফাহাদকে তো চিনেনই।সে এখন নাই এখানে।বিয়ের কথা পাকা হলেই এসে পড়বে।আপনারা মিষ্টি মুখ করুন না সকলে।বসে আছেন কেন?’

হাবিবুল্লাহ এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন।ফারাজকে প্রশ্ন করা জরুরি। প্রশ্ন সব গুছিয়েই এনেছেন, এবার শুধু বলার পালা।ওনাকে এভাবে এদিক সেদিক তাকাতে দেখে ফারাজের দাদা বলেন ‘আপনার কিছু জানার থাকলে জেনে নিতে পারেন ওর থেকে’

‘হ্যাঁ অবশ্যই।আচ্ছা বাবা তুমি যে চাকরি করো সেটাতে তোমার ইনকাম কিরকম?’

‘ ছবি যত আঁকবো তার উপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক। ‘

‘তার মানে ত্রিশ দিনে ত্রিশ টা ছবি আঁকলে একটা ছবি এক হাজারের উপরে বিক্রি করলে তোমার বেতন দাঁড়ায় ৩০হাজার?’

ফারাজ হাসলো।হাসিকে এক পাশ করে বললো,’ছবি তো সহজে আঁকা যায়না আঙ্কেল।একটা ছবির পেছনে সময় এবং মেধা দুটোই দিতে হয়।একটা ছবি আঁকতে আমার চার পাঁচদিন লেগে যায় অনায়াসেই’

‘তার মানে তোমার তো মাসে পনেরো হাজার ও আসেনা? ‘

ফারাজ আবারও হাসলো।তারপর বললো,’৩০হাজারই পাই।এবার বলবেন কিভাবে।আমি বলছি কিভাবে।আমার একটা ছবি এক হাজার নয় বরং চার হাজারেও বিক্রি হয় কখনও কখনও।’

‘এত দাম?’

‘আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন।আপনার পেছনে দেয়ালে যে ছবিটি টাঙানো ওটা আমারই আঁকা’

‘এক্সিলেন্ট!আমি তো ভাবলাম জানতে চাইবো এটা কোথা থেকে কেনা’

দাদাজান পায়ের উপর পা তুলে বললেন,’খাঁটি সোনা আমার নাতি।এবার আপনার মেয়ে নিয়ে কিছু বলুন’

‘তাকে নিয়ে বলে শেষ করা যাবেনা।রুপে গুণে সব দিক দিয়েই আছে।কমতি পাবেননা।যাকে বলে পারফেক্ট ‘

‘আমাদের ছেলে তো পারফেক্ট না।আপনার পারফেক্ট মেয়ের জন্য তো সরকারি চাকুরজীবি খুঁজতে পারেন,আমাদের ছেলে কেন?’

‘একটা পেলে একটা পাইনা”

‘তো এখন বুঝি পেয়েছেন?’

মিসেস সোনালী তখন দাদাজানের কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন,’মেয়ের হয়ত কোনো সমস্যা আছে নাহলে এত পারফেক্ট মেয়ে আমাদের ফারাজের জন্য কেন আসবে?’

জনাব হাবিবুল্লাহ হালকা ঝেড়ে কেশে বললেন,’আসলে হয়েছে কি! আমার মেয়ের একবার ফোনে বিয়ে হয়েছিল।ছেলে আসেনি দেশে তার আগেই ছেলের সাথে ওর ডিভোর্স হয়ে যায়।এটা তো বিয়ে ছিল না তাই না?ওদের তো একসাথে থাকা হয়নি। এটা নিয়ে অনেক পরিবার কটু ভাবে।এটাই আসলে সমস্যা, তাছাড়া আমাদের মেয়ের কোনো সমস্যা নেই’

দাদাজান ফারাজের মুখের দিকে তাকালেন।ফারাজ চুপ করে আছে।মিসেস সোনালী গেলেন রেগে তাও দাদার ভয়ে গলার আওয়াজ কমিয়ে বললেন,’কি কারণে ডিভোর্স হয়েছিল?’

‘আর কি বলবো আপা!ছেলে চায় সারাদিন ফোনে কথা বলতে।পারোনা ফোনের ভেতর ঢুকে আমার মেয়েটাকে বিদেশে নিয়ে যায়।এত জ্বালাতন কার সহ্য হয়?বাথরুমে গেলেও ভিডিও কল দেয়।কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ এমন করতে পারে?১ম দশ বারোদিন বাথরুমেও ভিডিও কলে কথা বলেছে।তাও হয়না ছেলের।সে চায় যতবেলা বাথরুমে যাবে ততবেলা ভিডিও কল।
মেয়ের কি খাওয়া দাওয়া নাই?জীবন নাই?ছেলে নাহয় চাকরির কাজে সারাদিন বসে থাকে অফিসে তাই বলে কি আমার মেয়েও বসে থাকে?তারউপর ছেলের মা- বাবা বিয়ে হয়েছে বলে আমার মেয়েকে তাদের বাসায় নিয়ে রেখেছেন।যে কাজ ওখানে!!কি করে সময় দিবো ছেলেকে?’

‘এটাই কি ডিভোর্সের কারণ?এটা তো তুচ্ছ একটা ব্যাপার!’

‘আপা সমস্যা তো সেটা না।মেয়ে গিয়ে দেবরকে এসব নিয়ে বলতো।কষ্টের কথা শেয়ার করতো!ওমনি হয়ে গেলো বিপত্তি।আজকালকার মানুষ এত নিচ!!আমার মেয়েকে সন্দেহ করে! মেয়ে নাকি দেবরের সাথে প্রেম করে।কত বড় অভিযোগ তুলেছে ভাবতে পারেন?’

‘তো আপনারা দুই পরিবার মিলে বুঝাননি?’

‘বুঝাইছি মানে!ছেলের পরিবার আরও খারাপ।তাদের ও এক কথা আমার মেয়ে নাকি দেবরের সাথে ইটিশপিটিশ করে’

দাদাজান বার বার ফারাজের দিকে তাকাচ্ছেন।ফারাজ চুপ করে শরবতের দিকে চেয়ে আছে।পূর্ণতা সব শুনে কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে উপরে চলে গেছে।এমনটা হবে আশা করেনি।ফারাজের বিয়েটা হয়ে গেলেই বাঁচা যাবে।শুরুতেই এমন একটা প্রস্তাব আসলো!!কে সত্যি কথা বলছে কে জানে!মেয়েটা যদি ভাল হয়ে থাকে তবে যেন এর সাথেই ফারাজের বিয়ে হয়।
——–
সজীব আজ তার সেই ট্রলি ব্যাগটা খুলে ভেতরের জামাকাপড় বের করছো যেটা সে বাংলাদেশ থেকে আসার পথে এনেছিল।সারথি গুছিয়ে দিয়েছিল ব্যাগটা।দেশে যেগুলো সে পরে,মালেশিয়াতে সেগুলো পরেনা।তাই ব্যাগটা জামাকাপড় সহ তুলে রেখেছিল।এখন ব্যাগটা প্রয়োজন বলে বের করে নিজে নিজে জিনিসপাতি সব বের করছে।হঠাৎ ওর শার্টটা টান দিতেই ঝুনঝুন আওয়াজে কি যেন পড়লো।
একটা ঘড়ি।সজীব অবাক হয়ে ঘড়িটা নিয়ে দেখছে।একটা সুইচ আছে তাতে।সেটাতে টিপ দিতেই সারথির গলা শোনা গেলো।এই ঘড়িটা সজীব আর সারথির বিয়ের সময় সজীবের বাবা সারথিকে দিয়েছিলেন।এটাতে ভয়েস রেকর্ড করে গিফট দেয়া যায়।সারথি সেটাই করেছে এবং কোনোভাবে লুকিয়ে এটা সজীবকেই পাঠিয়েছিল।
সারথি বলছে——-

সজীব ভাইয়া,
জানেন আমার খুব শখ ছিল স্বামীকে ভাইয়া বলে ক্ষেঁপাবো।কিন্তু আপনাকে আর ক্ষেঁপাবো কি আমি নিজেই ভয়ে থাকতাম আপনার সাথে কেমন করে কথা বলা উচিত তা নিয়ে।আপনাকে বুঝতে আমার অনেক সময় লাগতো।সেই সময় পাইনি।আপনি যেন খুব জলদি চলে যাচ্ছেন।আবার কবে আসবেন জানিনা।আপনাকে নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই।একটা অন্ধ মেয়ে এত ভাল পরিবারের একমাত্র বধু হতে পেরেছে এর চেয়ে আর পাওয়ার কি আছে!
তবে হয়ত স্বামীর ভালবাসা চাওয়াটাও বড় কিছুনা।আপনি সেটা দিবেন কিনা তাও জানিনা,কিন্তু আপনার ছোট ছোট কিছু কেয়ার আমার কাছে অনেক মাইনে রেখেছে।আমি সেগুলো নিয়েই দিনের পর দিন থাকতে পারবো। আপনার মনে আছে? আমি খাটের সাথে পায়ে চোট পাওয়ায় আপনি ঘুরতে যাওয়া ক্যানসেল করে বসে বসে পায়ে বরফ দিচ্ছিলেন আমার?
আমার না খুব মনে পড়বে সেই মূহুর্তগুলো। আপনার এই সামান্য কেয়ারে আমার এত যায় আসে,আর আপনি যেদিন আমায় ছুঁবেন সেদিন হয়ত আমি মূহুর্তগুলোকে গুনে গুনে মনে বন্দী করে রেখে দিবো।সেগুলো সারাজীবন বুকে ধরে কাটিয়ে ফেলবো।জানিনা কেন এত ভালবাসি।আমি কোনো মূল্য চাইনা,শুধু পাশে চাই।এরপর অনেক ব্যাথা পাবো।চেয়ার টেবিলের সাথে।নতুন বাড়ি তো।পরিচিত না কিছুর সাথে।
আপনি জলদি ফিরবেন।এখানে আমার এখন আর কেউ নেই আপন বলতে।আপনার বাবা মাও দূরে চলে যাবেন।একা কতদিন থাকবো?প্লিজ জলদি আসবেন’
———-
সারথিকে বেডে এনে আনাফ নিজের পরিচয় দিতেই দুজন ডাক্তার ওর সাথে পরিচিত হয়ে সারথির জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টায় লেগে পড়েছে।আনাফই পারতো কিন্তু তার হাত পা কাঁপছিল।পারছিল না কিছু করতে।ডাঃ জহির আনাফকে রেস্ট নিতে বললেন।আনাফ ডাক্তারের একটা পোশাক পরে পাশে থাকা চেয়ারে বসে আছে।মাথা কাজ করছেনা।সারথি এত বড় সিদ্ধান্ত কেনো নিয়েছে।সজীব কিছু করেনি তো?যার জন্য ডেস্পারেট হয়ে সে এই কাজ করেছে!সেটাই হবে নাহলে সারথির এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আর কোনো কারণ দেখছেনা সে।
সারথির জ্ঞান ফিরেছে অল্প সময়ের ভেতরেই।জহির আনাফকে ডাক দিলো তখন।আনাফ ছুটে এসে সারথির হাত চেপে ধরলো সঙ্গে সঙ্গে।সারথি চোখ খুলেছে। আনাফের স্পর্শ পেয়ে চিনতে পেরেছে কিন্তু কিছু বলছেনা।আনাফ জহিরকে ইশারা দিতেই সে আর বাকি ডাক্তার চলে গেলো।আনাফ সারথির কানের কাছে মুুখ নিয়ে বললো,’আপনি এমনটা করতে পারেননা সারথি।আপনার সেই অধিকার নেই।’

সারথি কাঁপা স্বরে বলে,’কেন পারিনা?

‘আমি বলছি তাই পারেন না।একটা মানুষের জন্য আপনি কেন নিজের জীবন দিবেন?’

‘আমার জীবন,আমার ইচ্ছে।আপনি কেন বারবার আমায় বাঁচান?আমাকে শান্তিতে মরতেও দেবেননা?আপনার মাথায় ঢোকেনা কথাটা!এই জীবন আমার অসহ্য হয়ে গেছে’

‘আমায় বিয়ে করবেন মিসেস সারথি?’

‘একজন পছন্দ করে বিয়ে করে মাঝ রাস্তায় হাত ছেড়ে দিয়েছে।ধোকা খেয়েছি,আর খেতে চাইনা।’

‘যদি আমি হাত ধরে রাখি সারাজীবন? ‘

‘আমি সজীবকে ভালবাসি।আমার পক্ষে অন্য কাউকে ভালবাসা অসম্ভব। ‘

কথাটা বলে সারথি উঠার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলোনা।আনাফ ওর হাতটা আরও শক্ত করে ধরে বলে,’আমায় ভালবাসতে হবেনা।টায়ার্ড হয়ে হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন বাড়ি ফিরলে একজন সঙ্গীর প্রয়োজনবোধ হয়।পাশে বসে গল্প করার,কেয়ার করার মানুষের অভাব।সেগুলো করলেই হবে’

‘ঐ যে বললাম ভালবাসতে পারবোনা।কেয়ার তো ভালবাসা থেকেই আসে।যদি ভালোই না বাসি তবে ওগুলো আসবে কোথা থেকে?’

‘সজীবকে বিয়ের আগে চিনতেন?চিনতেন না।বিয়ের পর তার সাথে কয়েক মাস থেকে তার প্রেমে পড়েছিলেন।আমার সাথেও নাহয় সেটাই হোক।
আমি যতদূর জানি একদিনেই প্রেমে পড়ে যাবেন আমার’

সারথি জোর দিয়ে উঠে বসলো।গায়ে হাত দিয়ে টের পেলো তার সারা শরীর ভেজা।গলা খুশখুশ করছে।গলায় হাত দিয়ে সে চুপ করে থাকলো।আনাফ একজন স্টাফকে ডাক দিয়ে রঙ চা আনতে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে টুল টেনে বসে সারথির দিকে তাকিয়ে থাকলো।সারথি আঁচল দিয়ে গা ঢেকে বসে আছে।আনাফ এবার বললো,’আমার বাসায় চলুন। ফ্রেশ হবেন।আলাদা একটা দুনিয়ার সেটা।সজীবের কথা মনে পড়বেনা একবারও’

‘সেখানেই সজীবের বাসা।আমি ধোকা খেয়ে ধোকা দেয়ার মানুষ নই’

‘এভাবে বসে থাকলে জ্বর হবে আপনার।আর আমার কেবল একটাই বাসা না।আমার নিজস্ব বাসাও আছে। যেটা আপনি দেখেছেন সেটা আমার বাবার বাসা।’

‘জ্বরেই মরলে বাঁচি’

‘এত মরার শখ?বিষ এনে দিবো?’

‘দিন’

আনাফ উঠে চলে গেছে।সারথি বিছানার চাদর খাঁমছে নিজেই নিজেকে দুষছে।এত কিছু করেও সে মরতে পারলোনা।বারবার আনাফকে যেন কেউ খবর দিয়ে দেয়।
‘যেই জায়গাতেই থাকি কোথা থেকে চলে আসে।ওনার জন্য মরাটাই মুশকিল হয়ে গেছে আমার।উনি তো জানেননা আমার এভাবে বেঁচে থাকা কত কঠিন।যাকে ভালবাসি সে অন্য কউকে ভালবাসে,তাকে নিয়েই সুখী আছে।এই কথা জেনে কার বেঁচে থাকতে মন চাইবে?হয়ত যারা খুব শক্ত মনের মানুষ তারা ভুলে থাকতে পারে।কিন্তু আমি মোটেও শক্ত না।আমি পারছিনা সইতে।’
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here