#ডাকপাড়ি
#পর্ব_৫৫,৫৬
#আফনান_লারা
৫৫
________
সজীব,তার বাবা মা,উর্মি সকলে একসাথে এসেছেন হাবিজাবিতে।একটা ছোটখাটো বৈঠক বসবে আজ।তাদের সাথে বসেছে দাদাজান,আজিজ দাদু,মানিক সাহেব এবং মিসেস সোনালী ও।
সারথি যে বাসায় নেই এ কথা এখনও সজীবের পরিবার জানেনা।
পূর্ণতা ওনাদেরকে নাস্তা দিয়ে এক কোণায় দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কথা শুনছে।
শুরুতে সজীবের বাবাই কথা শুরু করেছিলেন।তিনি বলেন,’দেখুন বিয়েটা যেমন পরিবার ছাড়া দেয়া যায়না তেমনই বিয়ের বিচ্ছেদ ও পরিবার ছাড়া করা যায়না।আর যদি পরিবারের অমতে এসব হয়ে থাকে তবে নিশ্চিত দূর্ভাগ্য।দেখলেন তো নিজের চোখে?সজীব আমাদের কাউকে না জানিয়ে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো।এটা তার উচিত হয়নি,আমি মানছি।তার দোষ,সে তার জন্য অনুতপ্ত এখন। কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন?এখানে কি সম্পর্কটা কেবল ওর আর সারথির মাঝেই সীমাবদ্ধ?
তা নয় বরং সৈয়দ ফ্যামিলি এবং হাবিজাবি ফ্যামিলিও জড়িয়ে আছে।তাদের ডিভোর্স হয়ে গেলেও তো আর দু পরিবারের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবেনা।’
দাদাজান সব শুনে চুপ করে আছেন দেখে মানিক সাহেব দাঁতে দাঁত চাপ দিয়ে বলেন,’একটা কাঁচের গ্লাস ভেঙ্গে সেটা আবার জোড়া লাগালে তাতো পানি খাওয়া যাবে?রুচিতে দিবে?’
‘বেয়াই সাহেব আপনি রাগ করছেন কেন!আমি দেশে এসেছি বিষয়টা ঠিক করার জন্যই।জানেন আমার এ সময়ে দেশে আসার কথা না।নিজের কাজ থেকে ছুটি নিয়ে আমি এসেছি, নিজের লস ভাবছিনা।শুধু চাই ছেলে যে ভুল করেছে তার মাশুল দিতে’
‘আপনার ছেলে যেটা করেছে সেটা অন্যায় করেছে।এখন আপনি কি চাইছেন,সোজাসুজি বলুন?’
‘আমি চাই ওদের নতুন করে আবার বিয়ে দিতে।আমি চাইনা দু পরিবারের বিচ্ছেদ হোক।সারথিকে আমি নিজে পছন্দ করে ছেলের বউ করেছিলাম।আমি কিভাবে ওকে পরিবার থেকে দূরে থাকতে দেখবো?ওরে একবার জিজ্ঞেস করবেন।বিয়ে করে বউ হয়ে আসার পর থেকে একবারও তার অমর্যাদা হয়েছে কিনা?’
মিসেস সোনালী তখন বললেন,’অমর্যাদা কি কেবল ছেলের বাবা মাই করে?ছেলে নিজেই তো করেছে।আর কার দরকার!যেখানে আসল স্বামীই গুনাহগার সেখানে আর কাকে দোষ দেবেন?’
‘আপা আমি মানছি সজীবের দোষ।সে স্বীকার ও করেছে।আমরা কি এবার বিষয়টা সর্ট আউট করতে পারিনা?’
সবাই চুপ এবার।ঠিক সেসময়ে হাজির হলো আনাফ আর সারথি।আনাফ সারথিকে পৌঁছে দেয়ার জন্য এসেছিল।একবার দাদাজানের সাথে কথা বলবে ভেবে বাড়ির ভেতরে ঢুকে।
সে এসেই দেখে হলরুম ভর্তি মানুষ।সবার চোখ ওদের দিকে।
আনাফ সারথির হাত ধরেছে।সজীব এবং বাকিরা সেটাই লক্ষ করলো সবার আগে।
সজীবের বাবা কপাল কুঁচকে বললেন,’সারথির সাথে ও কে?’
সেসময় দাদাজান বললেন,”‘আপনাদের ছেলে আমাদের মেয়েকে ছেড়ে চলে গেলে আমরা তো বসে থাকবোনা।ছেলের তো অভাব নাই দুনিয়ায়।আপনাদের ছেলের চাইতেও দায়িত্ববান একটা মানুষ সারথির জীবনটাকে গুছিয়ে দেয়ার জন্য এসে গেছে ঠিক এই কারণে আমি চুপ ছিলাম।সঠিক সময় এসে গেলো তবে।দেখে নিন।আমাদের বাড়ির হবু জামাইকে’
সজীব মাথা নিচু করে বসে আছে।আনাফের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে লেভেনের কথা উঠে যাবে।তাই সে চুপ।
দাদাজান যে মজা করার মানুষ না তা বেশ জানে সজীবের বাবা। কিন্তু কছুই যে বিশ্বাস হয়না। আসলেই কি সারথি আর ফিরে আসবেনা তাদের বাসায়।সব কি সত্যি সত্যি শেষ??
দাদার কথা সারথিও শুনেছে এবং বুঝে গেছে তার সামনে সজীবের পরিবার। সে হাতটা আনাফের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলো।মুখের ভাষা নেই তার।লজ্জ্বায় আর অপরাধবোধ তাকে খেয়ে ফেলছে।এমন একটা পরিস্থিতিতে তাকে পড়তে হবে সে একেবারেই ভাবেনি।একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে আছে।আনাফ মনে মনে অংক কষাকষি করছে।কি দিয়ে শুরু করবে সেটা নিয়ে।
———
ইতোমধ্যে সজীবের বাবার কথাই সব হাওয়া হয়ে গেছে।সব কিছু কল্পনা মনে হচ্ছে তার কাছে।তবে শেষ মূহুর্তে মনে হলো হয়ত ঠিকই হলো যা হবার।সজীব সারথিকে ডিজার্ভ করেনা।
সবাই যেন একটা সময়ের ব্যবধানে ভুলেই গেছে এখানে সজীব বসে আছে যে কিনা তাদের মেয়ে জামাই ছিল।সবাই এখন আনাফকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেছে।আনাফের হাত ধরে বৈঠকের বড় চেয়ারটাতে বসিয়ে দিয়েছেন দাদুজান।
আনাফ ও রোবটের মতন যা যা করছে তারা তাতে সাঁই দিয়ে দিচ্ছে।
সজীব হঠাৎ মাথা নিচু করে উঠে চলে গেলো বাইরের দিকে।তার নিজেকে তুচ্ছ মনে হচ্ছে এখানে।কেন যেন সব থেকেও নেই।
সারথি সজীবের গায়ের গন্ধ পেলো তীব্র আকারে।সজীব যখন ওর পাশ ঘেঁষে চলে যাচ্ছিল ঠিক তখন।
সারথি বুঝে গেছে সজীব চলে গেছে।যাক!ওর চলে যাওয়াই উচিত।ওদের মাঝে তো কোনো সম্পর্ক আর নেই।
সজীব চলে যাওয়ায় নিরবে এক এক করে ওর বাবা মা বোনও চলে গেছেন বিদায় দিয়ে।
——-
‘তো ছোকরা বলো,আমাদের নাতিনকে কবে ঘরে তুলছো?’
আনাফ মুচকি হাসে আজিজ খানের কথা শুনে।তার হাসি দেখে আজিজ খান আরও চেপে ধরে তাকে।
আনাফ তখন বলে,’আমার পকেটে আংটি আছে।এটা আমি বিশেষ করে সারথির জন্য নিয়েছিলাম।আমি চাই আজ শুভ কাজটা হয়ে যাক।১ম ধাপ শেষ হোক’
এই কথা শুনে দাদাজান ব্যস্ত হয়ে পড়ে বললেন,’তা কি করে হয়??আমরাও যে তোমায় আংটি পরাবো।আমাদের তো প্রস্তুতি নেই’
‘আমি বসলাম এক ঘন্টা।ফারাজকে বলুন এই কাজটা করে দিতে’
এবার হইচই আরও বেড়ে গেলো।যে যার গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছে।
আনাফ তখন সারথিকে একা দেখে।সারথি সেই তখন থেকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল।সব শুনছিল আর মনে মনে নিজেকে শত শত দোষ দিচ্ছিল,ঘুরে ফিরে দোষটা তারই মনে হয় নিজের কাছে।তাই হাসির সময় হলেও সে হাসতে পারছেনা।এরই মাঝে হাওয়াতে আনাফের গায়ের সেই মিষ্ট আতরের ঘ্রাণ ভেসে উঠলো।সারথি অনুভব করে তার পাশে আনাফ।
সে হেসে ফেলে।তার হাসি দেখে আনাফ কোমড়ে হাত দিয়ে বললো,’কি ভাবে যে ধরে ফেলো!’
সারথির হাসিটা এবার গাঢ় হয়ে যায়।খিলখিলিয়ে হাসছে সে।আনাফ ওর এই হাসিতেই আটকে আছে।এতগুলো দিনের পর সে সারথিকে মন থেকে হাসাতে পেরেছে।এর চেয়ে বড় এচিভমেন্ট তার জন্য আর কি হতে পারে!
——-
ফারাজ বৈঠকের নাম শুনেও রুম থেকে বের হয়নি।এখন বের হয়ে দেখে বাড়ির সবাই হইচই করছে। শুরুতে সে ভেবেছিল হয়ত তার আর পূর্ণার বিয়ে নিয়ে ছোটাছুটি।কিন্তু এর পরেই মা বললো এসব নাকি সারথির আংটি বদল নিয়ে।এটা শুনে ফারাজ এত বেশি খুশি হলো যে এক দৌড়ে আনাফের কাছের দিকে ছুটলো।তার দৌড় ছিল এলোমেলো। সামনে ছিল পূর্ণতা।দুজনের লেগে গেলো উল্টাসিধা ধাক্কা।দুজনেই ধপ করে দুই পাশে পড়ে এখন মাথা ঘঁষছে।ফারাজ রাগ দেখায়নি।তার মাথায় ঘুরছে অন্য কিছু।কোনো কিছু না বলেই মাথা ঘঁষতে ঘঁষতে আনাফের কাছে চলে গেছে।
এদিকে পূর্ণতা অবাকের শেষ সীমানায় পৌঁছে এখনও নিচে বসে বসে মাথা ঘঁষছে।
“ধাক্কা খেয়ে পজিটিভ/নেগেটিভ কোনো রিয়েকশান কেন দেখায়নি উনি?পাগল-টাগল হইলো নাকি!
অবশ্য কাকে কি বলছি! এই লোকটা তো আগের থেকেই পাগল!
আচ্ছা আমি এখনও নিচে বসে আছি কেন?যাঃ বাবা!
মনে হয় আমাকেও পাগলের কাতারে নিয়ে যাবে এই লোক!না না আমি কিছুতেই পাগল হবোনা।
দুই পাগলের সংসারে কোনেদিন
উন্নতি হয়না।ভাত রাঁধা হয় আর ভাত ফেলে দেয়া হয় তারপর আবার ভাত বসানো হয়।
এমন করে জীবনে আর ভাত খাওয়া হয়ে ওঠেনা।
না পূর্ণতা তোমাকে কিছুতেই পাগল হওয়া চলবেনা!সংযত হও!
সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে!এই ভদ্র উন্মাদের সঙ্গ ত্যাগ করো তবেই তুমি যেমন ছিল তেমনই থেকে যাবে’
মিসেস সায়না আর মিসেস সোনালী এসে পূর্ণতার হাতে ৭হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন,’পূর্ণতা যাও ফারাজের সাথে গিয়ে সুন্দর ডিজাইনের একটা স্বর্ণের আংটি কিনে আনো তো’
‘না না।আমি কেন??আপনারাই জান।মুরুব্বীরা ভাল চিনবে’
‘আরেহ আমাদের যে কাজ এই কাজ তোমায় দিয়ে গেলে পারবেনা।তুমি আর ফারাজ ফ্রি আছো।জলদি যাও’
‘না আমি দোষে সঙ্গ করবোনা’
‘দোষে সঙ্গ কি আবার?’
‘না মানে লোহা দোষে!!’
মিসেস সায়না হাসতে হাসতে বললেন,’ফারাজের সাথে এক রাত কাটিয়েই মেয়ের মাথা গেছে বুঝলেন ভাবী!!’
হাসতে হাসতে দুই জা চলে গেলো এদিকে পূর্ণতা অনন্ত জলিলের মতন করে তার বলা কথাটা সঠিক আকারে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে।
একটা মিথ্যেকে আরেকটা মিথ্যে দিয়ে না না।মিথ্যেকে সত্য দিয়ে না না।ধুর আমি এটা কেন বলতেছি!!
এটা তো অনন্ত জলিলের কথা।উনার কথা উনি ঠিক করবেন।
আমার কথা ছিল—- সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।হুম ঠিক করে বলে ফেললাম।তার মানে আমি এখনও ঠিক আছি।ফারাজের অভ্যাস আমার মধ্যে আসেনি। ‘
———-
সবাই ঠেলে- ধাক্কিয়ে ফারাজ আর পূর্ণতাকে হাজির করিয়েছে স্বর্ণের দোকানে।
ফারাজ ডিজাইন দেখে বললো এইটা সুন্দর।এটা নিব আমরা।
‘আরে না না।আপনার চয়েস ভাল না।আমি অন্যটা দেখছি’
‘আপনাকে কিন্তু আমিই চয়েস করে বিয়ে করেছি’
‘সেটা তো বুঝেছি।আমার চয়েস ভাল কিন্তু আপনার চয়েস ভাল না।আপনি ফর্সা,আপনার বউটাও ফর্সা হলে বাচ্চা কাচ্চা গুলা ফর্সা হতো।’
‘কারোর কাছে সাদা সুন্দর আর কারোর কাছে শ্যামলা সুন্দর’
‘আপনার কাছে শ্যামলা সুন্দর বুঝি?’
এই কথা বলে পূর্ণতা লজ্জায় লাল হয়ে টইটুম্বুর হয়ে গেছে।ফারাজ তখন কপাল কুঁচকিয়ে বলে,’নাহ।আমার কালো পছন্দ ছিল।বউটা যদি আরও কালো হতো তবে ভাল হতো, সাদা কালো দারুণ কম্বিনেশন।আপনি কি করবেন শুনেন,প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ডেকচির কালি গালে মেখে ৩০মিনিট পর ধুয়ে ফেলবেন।এমন করে করে একদিন কালো হয়ে গেলে আমার খুব ভাল্লাগবে’
পূর্ণতা স্বর্ণকারের দিকে তাকিয়ে বললো,’আঙ্কেল আমাকে ধরে রাখেন’
‘কেন মা?’
‘নাহলে এই ব্যাডার আজ রফাদফা করে দিবো আমি।৪৫দফা জারি করবো।কি বলছে শুনছেন?এইসব কোনো নতুন জামাই বলে?ঠাট্টার ও একটা করে টপিক থাকে ‘
‘আরে মা ও তো মজা করেছে।নতুন জামাই মজা করবেনা তো কে করবে?’
——-
আনাফ সুযোগ বুঝে সারথির রুমের দরজা লাগিয়ে ফেলেছে ভেতরে ঢুকেই।সারথি একা একা একটা বেগুনি রঙের শাড়ী পরছিল।আংটি বদলের জন্য মা তৈরি হতে বলে গেছেন।
আনাফ ভেতর থেকে দরজা খুলে ঢুকে সারথির দিকে না তাকিয়ে চোখে একটা ওড়না বাঁধে তারপর সারথির কাছে গিয়ে বললো ‘আমি এলাম’
সারথি আশ্চর্য হয়ে বলে,’আমি চেঞ্জ করতেছি।আপনি নক না করে ঢুকলেন কেন?আপনার কি লজ্জা শরম নাই?’
‘আজ ১৫মিনিটের জন্য আমিও চোখে দেখবোনা।
চোখ বেঁধেছি।আমি তোমায় শাড়ী পরিয়ে দিবো’
‘এটা বিয়ের পরে করে ছেলেরা’
‘আমি নাহয় বিয়ের আগেই করি’
সারথি পিছিয়ে গিয়ে বলে,’নাহ!সময় হোক’
‘সারথি আমার মনে হয় আমার এই সুখ বেশিদিন টিকবেনা।হারাতে চলেছি নাহয় হারতে চলেছি।আমাকে প্লিজ আমার ইচ্ছা পূরণ করতে দাও।টাচ করবোনা।কেবল শাড়ী পরাবো আমি,চোখে ওড়না বেঁধেছি।দেখবোনা কিছু’
সারথি গম্ভীর হয়ে গেলো।এরপর বললো,’আপনি বারবার বিপদের কথা কেন ভাবেন বলুুন তো?’
‘চারিদিক থেকে সুখ আসছে দেখে মনে হয় বেশিদিন সুখটাকে ধরে রাখতে পারবোনা।মানুষের জীবন দুঃখের সাগরে ভাসে,আর মাঝে মাঝে সেই সাগরোর স্রোত সুখের নদীর দেখা পায়।
জানো আমি বাবাকে কল দিয়ে কয়েক লাইন কথা বলে আবার কেটে দিয়েছি।বলেছি বাবা আজ আমার আংটি বদল,হাবিজাবি মেনশনে চলে আসো।ঠিকানা তোমার বিছানার উপরে রেখে এসেছি’
এইকথা বলে আনাফ কুচি করা শুরু করে।গুনে গুনে কুচি করতে করতে জানতে চাইলো শাড়ীটা কয় হাতের।সারথি বললো সে জানেনা।আনাফ তাই কুচি করে দিয়ে আঁচল কাঁধে উঠিয়ে বললো,’আমি অধরাকে ছোটকালে সাজিয়ে দিতাম।আম্মুর ওড়না দিয়ে ওকে শাড়ী পরিয়ে আমার শাশুড়ি বানাতাম।’
‘শাশুড়ি?’
‘হুম।আর কি হবে??’
সারথি হাসছে।আনাফ তখন বললো,’আচ্ছা বলো তো আমি বেশি ভাল নাকি সজীব?তোমরা মেয়েরা তো আবার গায়ের গন্ধ শুঁকে ভাল খারাপ বলে দিতে পারো’
‘পারফিউম ইউজ করা ছেলেটার চেয়ে আতর ইউজ করা ছেলেটা আমার কাছে আলাভোলা মনে হলো’
চলবে♥
#ডাকপাড়ি
#পর্ব_৫৬
#আফনান_লারা
________
আনাফের বাবা রাজি ছিলেন না আনাফের আংটি বদলে আসা নিয়ে।তিনি রেগে ছিলেন ওর উপর,অনেক বেশি রাগ তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছিল।এই অবস্থায় আনাফকে কোন শাস্তিটা দিলে কাজে আসবে তাই ভাবছিলেন তিনি।অংকতে গড়মিল হবেনা,আনাফকে তিনি এর সাজা দিবেনই।কোনো কিছুর খেলাপ হবেনা।
যখন তিনি ভেবে নিলেন আনাফকে কি করবেন তখন তার চোখে দৃশ্যমান হলো কান্নারত আনাফের মায়ের মুখ।
গায়ের সুতির ওড়নাটা দিয়ে মুখ চেপে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন সোফার এক কোণে বসে।
আনাফের বাবা পানি খেতে ডাইনিংয়ের অন্তরে এসেছিলেন।ওনাকে তিনি শেষবার কাঁদতে দেখেছিলেন আনাফের নানু মারা যাবার সময়,এর বাইরে ওনাকে কাদতে দেয়ার মতন কোনো কাজ তিনি করেননি।তবে আজ কেন কাঁদছে?
ভাবনার অচির থেকে বেরিয়ে হাতের গ্লাসটা আগের জায়গায় ফেলে কাছে এসে থামলেন।আনাফের মা খেয়াল করেননি তিনি আসার কথা,তিনি আগের মতন কোঁদে চলেছেন।
একটা সময়ে আনাফের বাবা বললেন,’তোমার কি হয়েছে?কাঁদতেছো কেন?আমি কি করলাম?’
‘কেউ কিছু করেনি’
‘তবে এভাবে কাঁদার মানেটা কি?’
‘কেন?আমি কি কাঁদতেও পারবোনা?’
‘অবশ্যই পারবে তবে আমার সেই কারণ জানা লাগবে।কান্না কোনো কাজ না যে ওটা তোমার ব্যাক্তিগত হবে’
‘অবশ্যই ব্যাক্তিগত’
‘না তুমি ভুল।আমায় বলো কি হয়েছে?
‘আনাফ আমাদের আদরের ছেলে।আজ তার আংটি বদল হবে আর আমরা থাকবোনা সেখানে?’
‘না থাকবোনা।এমন ছেলে আর আমাদের দরকার নেই।আজ থেকে ওর এ বাড়িতে আসা বন্ধ।তুমি কাঁদো কেন?ওর তো নিজের বাসা আছে।সেটার জোরেই তো এত উড়ছে,বাবা মায়ের কি দরকার!’
‘উড়ছে মানে?সব কিছুতে জোর করা যায়না।ওকে জোর করে ডাক্তারি লাইনে পড়িয়েছেন সেটা সে মেনে নিয়েছে কিন্তু বিয়েটা ওর সারাজীবনের ব্যাপার’
‘তাকে তো বলছিনা বিয়ে করলে মরা মুখ দেখবে।তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলাম।যা খুশি করুক’
এ কথা বলে আনাফের বাবা চলে গেছেন।আনাফের মা কাঁদছিলেন ওনাকে মানিয়ে নেয়ার জন্য।বিকাল পাঁচটা বাজে এখন, সন্ধার দিকে গয়ত আংটি বদল হবে।
যদি যাওয়া যেতো সেই পরিকল্পনা করে তিনি কাঁদছিলেন,আজব তার কাঁদাতে কেউ গললোনা মাঝ দিয়ে ওনার চোখ জ্বলছে।
মুখে পানি দিয়ে এসে আড় চোখে দেখে নিলেন আনাফের বাবা কি করছেন।
তিনি কাগজপত্রে আঁকিবুকি করছিলেন।
এই আঁকিবুকি জরুরি কিছুই না,এমনিতেই গাছ লতাপাতা।
আনাফের বাবা দেখে ফেললেন ওনাকে।ওমনি মুখ ঘুরিয়ে ফেলেছেন,সাথে খাতাটাকেও।
আনাফের মা বিরক্তি নিয়ে বললেন,’আমি যাচ্ছি, আপনি না গেলে আপনার ব্যাপার।আমি আবার কারোর ব্যাক্তিগত বিষয় নিয়ে টানাটানি করিনা’
এ কথা বলে তিনি রুমে ঢুকে আলমারি খুলে শাড়ী চয়েজ করতে নেমে পড়েছেন।
আনাফের বাবা আঁকিবুকি চালু রেখে শেষে খাতাটা সরিয়ে বললেন,’তুমি যদি যাও আমি আর তোমার হাতের রান্না কখনও খাব না’
‘খাইয়েন না।এমনিতেও দুদিন ধরে পুডিং/পায়েশ রেঁধে দিয়েও আমি আপনার মুখ থেকে প্রশংসা শুনিনি।তাই না খেলেও চলে’
——–
সারথির কানে দুল পরিয়ে দিতে দিতে আনাফ আয়নায় চোখ রেখে বলে,’জানো আমাদের দুজনকে এত ভাল লাগছে যে আমার ইচ্ছে করছে এই মূহুর্তটা ক্যাপচার করে রেখে দিতে আজীবন।
আহা যদি এমন করেই জীবনটা কেটে যেতো!’
‘আমায় অনেক ভালবাসেন?’
‘জানিনা আসলে।তবে হ্যাঁ,আমি ভালবাসার শর্ত নিয়েছি’
‘কি সেই শর্ত?’
‘আমি সজীবের মতন হবোনা।আমি কদর করবো সেই মেয়েটার যাকে কেউ একজন অনেক অবহেলা করে বারে বারে কাঁদিয়েছে।আমিও কাঁদাবো,তবে সেই কান্না যেন দম ফাটা হাসির পরে আসে।জানো সারথি! কিছু মানুষ কাউকে খুব বেশি ভালবাসলে এক সাথে মরে যায়।একদিন আগে কিংবা একদিন পরে,কিংবা কয়েক ঘন্টার তফাত।তাও একসাথেই মরে।তোমার কি মনে হয়?আমাদের বেলায় কি হবে?’
‘আপনি বিহীন আমার সেই জীবন প্রয়োজন নেই।চাইবো আপনি চলে যাবার ১সেকেন্ড সময় ও যেন না থাকতে হয় আমায়’
আনাফ পেছন থেকে সারথিকে খুব শক্ত করে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ গুজে ধীরে বললো,’বলোনা থাক।আমি আবেগী হবো বলে তুমি কেন হবে!তুমি আবেগী হবেনা।তোমায় স্ট্রং মানায়।আমি মরার কথা বললে তুমি সাঁই কেব দিবে?
বলবে যেন এই কথা আর না বলি।কেউ না মরুক’
—
সারথির সারা গায়ে শিহরণ দিয়ে ওঠে।সজীবও আজ অবধি এমন করে ওকে ছোঁয়নি।আনাফ ছুঁয়ে দেবে কে জানতো!
সারথির দাঁতে দাত লেগে গেছে।ভয় আর লজ্জা দুজন মিলে তাকে চেপে ধরেছে।আনাফের কথার জবাবে কিছুই সে বলতে পারছেনা।
মিসেস সায়না হাতে আঁংটি নিয়ে ঘুরঘুর করছিলেন, তখন সারথিকে দেখতে এসে দেখলেন ভেতর থেকে রুমের দরজা বন্ধ।দরজায় কড়া নেড়ে ওকে কয়েকবার ডাকলেন তিনি।আনাফ সারথিকে ফিসফিস করে বললো কথা কাটাতে।
সারথি ও ফিসফিস করে বললো ওকে ছাড়তে।
ওমনি আনাফ তার ভুল বুঝতে পেরে সারথিকে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়ালো।
সারথি বলে দিলো তার তৈরি হতে আরও কিছু সময় লাগবে।তাই মিসেস সায়না চলে গেলেন।
আনাফ বিছানায় বসে সারথির দিকে চেয়ে থেকে বলে,’সরি’
সারথি ইটস ওকে বলে কানের দুলটা ধরে দেখে হাতিয়ে হাতিয়ে দরজার দিকে গিয়ে ছিটকিনি খুলে বের হয়ে গেলো।আনাফ নিজের মাথায় নিজেই একটা বাড়ি দিয়ে মিটমিট করে হাসছে এবার।
——
ফারাজ আলমারিতে নিজের একটা পাঞ্জাবি খুঁজছে।আদরের বোনের আংটি বদল,তাকে তো সাজতে হবেই।
কথা হলো তার সব পাঞ্জাবি রংচটা।
সাদা তাও মনে হয় বছরাবছর পরা পাঞ্জাবি।একেবারে পুরান।
অনেক ভেবে সে ঠিক করলো সাদার কাতার ফেলে অন্য রঙের যে পাঞ্জাবি তার আগে ছিল মানে তুলে রাখা আছে ওখান থেকে একটা বেছে নেবে।এই ভেবে ফারাজ টুল এনে আলমারির উপর থেকে টাংকটা বের করতে উদ্ধত হয়।
পূর্ণতা হাতে আংটির ডালা নিয়ে ফারাজকে দেখাতে আসছিল।ফারাজ ঠিক সেসময়ে টাংকের মুখ খুলে এক গাদা পাঞ্জাবি সমেত টুলের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল।তার হাত থরথর করে কাঁপছিল পাঞ্জাবি ১ডজনের ভারে।পাতলা নয় গেমন কিন্তু টুল নড়ছে, তার উপর নিচে মেয়ে মানুষ।
অনেকক্ষণ হাতে পাঞ্জাবি নিয়ে কাঁপাকাঁপি করে অবশেষে টুলটা সমেত পড়েই গেলো সে।তাও পড়লো তো পড়লো সঙ্গে করে পূর্ণতাকেও ফেললো।পূর্ণতা ওসব না ভেবে মেঝেতে শুয়ে আংটি মিলিয়ে নাক্সে রাখছিল।ফারাজ ও শুয়ে শুয়ে ওকেই দেখছিল।
সিরিয়াস মোমেন্টে অতিরিক্ত সিরিয়াস কি করে হওয়া যায় তা পাঠককে পূর্ণতা শেখাবে।
নিজের মাথায় ফারাজের পাঞ্জাবি ঝুলছে সেদিকে তার খবর নেই। অথচ সে দিব্যি ঢালা আগের মতন করে সজাতে ব্যস্ত।আংটি গুছিয়ে ফারাজকে এক ধমক দিয়ে সে বললো যেন ফুলগুলো তুলে ঢালায় রাখে।সে এখন রেডি হতে যাবে।
ফারাজ এ কথা শুনে বললো,’নিচে পড়ে নষ্ট হয়ে গোলোনা?আর ফুল নেই?’
‘আছে তো।বাগানের সেই বিচ্ছিরি গন্ধের ফুল গাছটা ফুলে ফুলে ভর্তি।গিয়ে ডালা সাজিয়ে নিন।এবার বুঝতে পারতেছি কেন এই বাড়ির নাম হাবিজাবি।
এখানের কাজকর্ম থেকে শুরু করে মানুষের আচার আচরণ সব হাবিজাবি।কেউ কিছু বুঝবেনা কখন কি ঘটে যাবে।কখন দুজন অপরিচিতর বিয়ে হয়ে যাবে”
——–
আনাফের বাবা আনাফের মায়ের সাথে না পেরে এক গাড়ীতে রওনা হয়েছেন আনাফের দেয়া ঠিকানায়।ছেলে চাকরি করে,মাসে মাসে একাউন্টে ৫০/৬০ হাজার টাকা পাঠায়,ভালবাসে,যত্ন নেয়।এমন ছেলেকে সামান্য বিয়ের ব্যাপার নিয়ে ঘর ছাড়া করলে সমাজ কি বলবে?এই ছেলেই তো তাদের দেখবে ভবিষ্যতে।এইসব তিনি নিজ থেকে ভাবেননি।আনাফের মা বুদ্ধি করে তার মাকে দিয়ে এইসব বুঝিয়েছেন।
অনেকগুলো ডালা নিয়ে হাবিজাবির কাছাকাছি এসে সেই লোকমানের দোকানের সামনে গাড়ী থামালেন তিনি।গ্লাস বের করে জানতে চাইলেন হাবিজাবি বাড়ি কোনদিকে।
‘আপনারা কারা?’
‘আমরা হাবিজাবি বাড়ির মেয়ে সারথির হবু শ্বশুর- শাশুড়ি’
এ কথা শুনে লোকমান লাফ দিয়ে বেরিয়ে আসলো।গাড়ীর কাছে ঘেঁষে বললো,’আল্লাহ রে!!এই বাড়িতে আত্নীয়তা করিয়েন না।অনেক বড় লস খাইবেন’
‘লস খায় কি করে?’
‘খাইবেন মানে লসে পড়বেন’
‘লস খায় কিংবা পড়ে না।লস হয়।এবার বলুন সেটার কি কারণ?’
‘মেয়ের তো আগের বিয়া হইছে জানেন না?’
আনাফের বাবা আনাফের মায়ের দিকে একবার তাকালেন তরপর আবার লোকমানের দিকে তাকিয়ে বললেন,’বিয়ের আগে মেয়েদের নিয়ে আশেপাশের মানুষ উল্টা-পাল্টা বলে এটা শুনছিলাম,আজ দেখেও নিলাম’
এ কথা বলে গ্লাসটা আবার উঠিয়ে তিনি সামনের দিকে চললেন।
———
পূর্ণতা আংটির ডালাটা রেখে কি মনে করে ফারাজের কাছে গিয়ে হাজির।ফারাজ সেসময় পাঞ্জাবির হাতার বোতাম লাগাচ্ছিল।
‘আপনি জানেন আমাদের আংটিবদল হয়নি’
‘জানি’
‘তো হবেনা?কেউ না দিক,আপনি তো অন্তত আমায় একটা আংটি দিবেন।আমাদের আজকে বাসর রাত সিজন ২’
‘বাসর রাত সিজন ২ মানে?’
‘মানে কাল বাসর রাত হয়েছে, আজও তো হবে।আমরা তো এখনও নতুন তাই না?’
‘কোথায় শিখেন এসব আজগুবি কথা?আচ্ছা টাকা হাতে আসলে একটা রিং কিনে দিব’
‘আপনাকে আমার একটা কথা বলার আছে’
‘বলেন’
‘এখন থেকে রঙিন পাঞ্জাবি পরবেন।সাদা পাঞ্জাবিতে আপনাকে কোণ আইসক্রিমের মতন লাগে’
এটা বলে পূর্ণতা এক দৌড়ে চলে গেলো।এদিকে ফারাজ কল্পনা করছে কোণ আইস্ক্রিম দেখতে কেমন হয়।
———
আনাফ বাগানে ঘুরঘুর করছিল।সময় যেন হচ্ছেইনা।সেই কখন আংটি বদল হবার কথা।কেউ ডাকছেনা কেন?
ঐ সজীব আবার চলে আসেনি তো?
এইসব ভাবতে ভাবতে কারের আওয়াজ পেয়ে আনাফ বুঝে গেছো বাবা এসেছে।কারণ বাবা গাড়ীর আওয়াজ সে চেনে।এক দৌড়ে গেটের কাছে গিয়ে দেখে বাবা গাড়ী থেকে নেমে ডালা বের করছেন।
এত সহজে মেনে যাবে তা আনাফ কখনও ভাবেনি।সে ওখানে দাঁড়িয়েই আছে অবাক হয়ে। বাবা ওকে দেখেছেন কিন্তু কিছুই বলেননি।ওর পাশ দিয়ে হেঁটে বাড়ির ভেতরে চললেন।
দাদাজান তখন আজিজ খানকে নিয়ে হল রুমে হেঁটে হেঁটে বিয়ে নিয়ে কথা বলছিলেন,বাড়ির ভেতরে সবলদেহী,একজন ভদ্র লোককে দেখে তিনি কথা থামালেন।ভাল করে দেখে যা বুঝলেন,আনাফের চেহারার সাথে অনেক মিল।একেবারে বলতে গেলে হুবুহু মিল।মনে হয় আনাফের বাবা হবে,এই আন্দাজ করে তিনি এগিয়ে আসলেন।আনাফের বাবা সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে আর দম ফেলতে পারেননি।
সবাই মিলে তাকে ধরে সোফায় বসিয়ে দিলো,সকলে হইচই তে মেতে উঠেছে আনাফের বাবার আগমনে।যেন এনারই অপেক্ষায় ছিল সবাই।
সারথি দোতলা থেকে শুনেছে আনাফের বাবা এসেছেন।এতক্ষণ যে ভাবনায় সে ছিল হঠাৎ সে ভাবনা গায়েব হয়ে মুখে এক রাশ হাসি এসে খেলে গেলো।খুুশিতে সে দ্রুত হেঁটে নিচে নামার চেষ্টা করে,কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত পা পিছলে সে সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে গেলো।
আগে কখনও এমন হয়নি,কিন্তু শুভক্ষণে বিপদ বেশি ধরে তার আজ সত্যতা প্রমাণ করলো।চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আনাফ বাগান থেকে এক দৌড় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে দেখে সারথি অজ্ঞান অবস্থায় নিচে পড়ে আছে।বাকিরা সবাই চিৎকার করছে।আনাফ ওর কাছে এসে নিচে বসে জানতে চাইলো কি হয়েছে।মতিন বললো সারথি যে সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছে।
মাথায় চোট লাগেনি তবে সে পায়ে ব্যাথা পেয়েছে।ব্যাথা খুব বেশি ছিল বলে জ্ঞান হারাতে হলো তাকে।
আনাফ সারথিকে রেখে সামনের একটা ফার্মেসীতে গিয়ে ইনজেকশান আর ঔষুধ নিয়ে আনলো।
সে তার নিজের মতন চিকিৎসা করছে।
সকলের মুখে যে হাসি ছিল ওটা আর নেই,
আনাফের বাবা ফিসফিস করে আনাফের মাকে বললেন,’আমাদের বাসায় তো ১৪টা সিড়ি।এ মেয়ে তো সারাদিন পড়বে।আনাফ কেন বিপদ ডেকে আনছে বলতে পারো?’
‘বাদ দেন।মেয়েটা অসুস্থ। দোয়া করুন যাতে ও অন্তত চোখটা খোলে।একবার আনাফের মুখের দিকে তাকিয়েছেন?চোখের পলক ও ফেলছেনা।গলার পাশে রগ খাড়া হয়ে আছে।আমার আনাফ খুব কষ্ট না পেলে তার এমন রুপ আমি দেখিনা’
চলবে♥