ডাকপাড়ি #পর্ব_৫৭,৫৮

0
193

#ডাকপাড়ি
#পর্ব_৫৭,৫৮
#আফনান_লারা
৫৭
________
সারথির জ্ঞান ফিরেছে আধা ঘন্টার মাঝামাঝি সময়ে।আনাফ যেমন করে পিছু নিয়েছিল সারথির জ্ঞান ফেরানোর জন্য, জলদিতে জ্ঞান না ফিরে হবে কি করে!
সারথির মলিন মুখ তাকে অতিরিক্ত ভাবিয়ে তুললো ওকে হারিয়ে ফেলার ভয়।আংটির ডালা সরিয়ে সে সোজাসুজি বলে দিলো সে আজই সারথিকে বিয়ে করবে।এবং এ মূহুর্তে।
উপস্থিত সকলে হতভম্ব হয়ে গেছে ওর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা শুনে।
সবার আগে অবজেকশান সঁপলো আনাফের বাবা।তিনি কিছুতেই মত দিলেননা আজকে বিয়ের ব্যাপারে।
আনাফ তার হবাবে বলে দেয় বিয়ে একদিন না একদিন হবেই,তবে আজই হতে ক্ষতি কোথায়!
তার এ কথায় আনাফের বাবা আর কিছু বললেন না।আসলেই তো!আজ মানা করে লাভ কি হবে!আনাফ যখন ঠিক করে রেখেছে সে এই মেয়েটাকেই বিয়ে করবে তখন তিনি কোনো ভাবেই আটকাতে পারবেন না।
এরপর অবজেকশান দেখালো সারথির বাবা।তিনি বললেন এ সময়ে বিয়ের এত আয়োজন অসম্ভব।
এর উত্তরে আনাফ বলে দেয় সে এক পোশাকে বিয়ে করবে,হুজুর ডেকে বিয়েটা হবে।
ধুমধামের প্রয়োজন নেই।
দুজন গুরুজনের কথার শেষে কেউ আর অবজেকশান তুললোনা আর।সকলে নেমে পড়েছে বিয়ের আয়োজনে।
সারথির হুশ ফিরলেও সে ঘোরের ভেতরে ডুবে ছিল।তার বিয়ে হচ্ছে সে জানেনা। শুয়ে শুয়ে মাথার উপরের চলন্ত ফ্যানের আওয়াজ শুনছে।তার বাম হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে আছে আনাফ।সে এটা টের পাচ্ছে কিন্তু নড়চড় করছেনা।
শুভক্ষণের আগে কেন একটা বিপদ এসে পড়ে?না হলে হতোনা?আংটি বদলটা তছনছ করে দিলো একেবারে!
সারথির মুখ কালো দেখে আনাফ নিজ থেকেই বলে দিলো আজ তাদের বিয়ে।কিন্তু সারথি তো তার কথা শুনার জন্য বসে ছিল না।সে ভাবছে অন্য কিছু।আংটি বদল হয়নি বলে তার মন খারাপ,এদিকে তার যে একেবারে বিয়েই হয়ে যাবে আজ, সেটা সে ভাবেওনি,বলা কথাটা শুনেওনি।

আনাফ ওর হাতটা টেনেটুনে ঠিক করে দিচ্ছে।সেও বুঝতে পারছে সারথি ঘোরের মধ্যে আছে এখন।তাই ২য় বার আর বিয়ের কথা বলেনি।
—–
পূর্ণতা পাকা রাঁধুনীর মতন চুলায় বসানো কষা মাংসে লবণ দিচ্ছে।মুখে এক পিস মাংস পুরে নুন দিতে দিতে মতিনকে বললো এক দৌড়ে দোকান থেকে জলপাই আচার এক বোয়াম কিনে আনতে।মাংসে দিলে স্বাদ বাড়বে। মতিন মাথা নাড়িয়ে চলে যায়,ওমনি ভেতরে ঢুকে ফারাজ। সে এতক্ষণ পূর্ণতাকে রাঁধতে দেখছিল।এখনও দেখছে,কোনো আওয়াজ করেনি,আর তাই পূর্নতাও বুঝেনি রান্নাঘরে সে ছাড়াও আরও একজন উপস্থিত।
অনেকক্ষণ মাংস নাড়ানাড়ি করা শেষে চামচটা বাটিতে রেখে পেছন ফিরতেই সে দেখে ফারাজ দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে আরামসে ওকেই দেখছে।

‘একি আপনি!!কখন এলেন?’

‘সময় হিসেব করিনি’

‘এতটাই বিভোর?’

‘নিজেকে অনেক কিছু মনে করেন তাই না?’

‘আগে মনে করতাম না,এখন করি।কারণ একটা ছেলে আমাকে দেখার সময় হিসাব করেনা।আমি কতটা সুন্দরী হলে ছেলে এমন পাগল হতে পারে,ভেবে দেখেছেন একবারও?আমি তো আর মাটিতে পা’ই ফেলবোনা ‘

ফারাজ হাসলো পূর্ণতার কথা শুনে।
কি উদ্ভট কথাবার্তা! কখন কোন কথা নিয়ে রচনা বানিয়ে ফেলতে পারে তা কেউ এই মেয়েটা থেকে শিখুক!
ফারাজের ঠোঁটের কোণার হাসিটা পূর্ণতা দেখেছে।এরপর চুলার আঁচটা কমিয়ে আবার বললো,’আপনার আলমারিতে এক জোড়া সোনার বালা দেখলাম।এগুলো নিশ্চয় আপনার মায়ের?’

‘নাহ’

‘তবে?’

‘আমার টাকায় কেনা।যাকে নিয়ে কেনা সে নেয়নি তাই ওভাবেই আছে’

‘খবরদার আমাকে দিবেন না!পরে আমাকে যতবার দেখবেন ততবার ঐ মেয়ের কথা ভাববেন, সেটা আমার ভাল লাগবেনা মোটেও’

‘ওটা বিক্রি করে অন্য ডিজাইনে বানিয়ে দিলে নিবেন?’

‘ভাবতে হবে’
———
দোকানদার লোকমান তার দোকানের ছোট্ট টিভিটা অন করে বিটিভির সংবাদ শুনছিল,মতিনকে এদিকে আসতে দেখে চট করে টিভিটা সে বন্ধ করে ফিটফাট হয়ে বসে পড়ে।মতিন টাকা দেখিয়ে বললো আচার এক বেয়াম দিতে।

‘আচার??কার বাচ্চা হবে রে মতিন?’

‘আপনাকে কেন বলবো? বাচ্চা হলেই কি আচার লাগে?’

লোকমান মিয়া আচারের বোয়াম তাক থেকে নামাতে নামাতে বলে,’আমি তো সেটাই জানি’

‘ভুল জানেন।মাংসে আচার দিলে মজা হয়’

‘এই রাত বিরাতে মাংসের আয়োজন কেন?কি হচ্ছে হাবিজাবিতে?’

‘হাবিজাবি হচ্ছে।দেখতে হলে আসেন।চুষে রাখা হাড্ডিতে পানি ঢেলে নেহারি বানিয়ে খাওয়াবো’

‘আমি কি এতটাই ফেলনা?এভাবে বলতে পারলি?’

‘ফেলনা না।আপনি হইলেন খেলনা।একেবারে ফুটবলের মতন।মন চায় একটা কিক দিয়ে রোনালদোর বাড়ির বাগানে ফেলে আসি’

মতিন টাকা রেখে আচারের বোয়াম নিয়ে মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো।
লোকমান এবার দোকান বন্ধ করতে নেমেছে।কেউ দাওয়াত না করলেও দাওয়াতে যেতে হয়।কারণ দাওয়াত মানেই দাওয়াত।কাউকে ডাকা হয়,আর কাউকে ডাকা হয়না।যাদের ডাকা হয়না তারা গেলে আবার ফিরিয়ে দেয়া হয়না।এই নিয়ম মাথায় রেখে লোকমান মিয়া এই অবধি ১৩১টা বিয়ে খেয়েছে।
——–
সারথির চোখ লেগে এসেছিল।হঠাৎ মনে হলো সে উপর থেকে পড়ে যাচ্ছে,এরকম বিদঘুটে একটা স্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার।হাতটা নিজের কাছে টেনে আনতে গিয়ে বুঝলো আনাফ তখনও ধরে আছে।ওর সাড়া শব্দ নেই কেন?
সারথি হাত টানতে টানতে ওর নাম ধরে ডাকলো।
আনাফ ও ঘুমিয়ে পড়েছিল হেলান দিয়ে। সারথির আওয়াজে চোখ খুলে হাতটা ছাড়লো ওর।এরপর ঠিক হয়ে বসে জানতে চাইলো কি হয়েছে।

‘আমাদের আংটি বদল হবেনা?’

‘হবে’

‘এত রাতে??পোকা ডাকতে শোনা যায়।রাত তো অনেক হয়েছে মনে হয়’

‘হ্যাঁ,অনেক রাত’

‘তবে আজই কেন আংটি বদল হবে?’

‘কারণ আজই সঠিক সময়,আর একদিন ও দেরি করা ঠিক হবেনা’

সারথি উঠে বসে আনাফের হাতটা খুঁজে বললো,’আমি যে পড়ে গেলাম,আপনার বাবা কিছু বলেছেন?’

‘নাহ’

‘আপনার কি মন খারাপ?কথা ছোট কেন?’

‘একটু ওর মন অনেক ভাল হয়ে যাবে।কাজটা হওয়া অবধি মনে ভয় বাসা বেঁধে আছে।সেটা কেটে যাক তারপর আগের মতন চঞ্চল দেখবে আমায়’
———
আনাফের বাবা মায়ের সামনে টেবিল সাজিয়ে নাস্তার বাহার গড়িয়েছেন মিসেস সোনালী আর মানিক সাহেব মিলে।সব নাস্তা দেখেও আনাফের বাবা টু শব্দ টুকু ও করেননি।তিনি বারবার বোঝাতে চাইছেন এ বিয়েতে তার মন নেই।একটুও নেই।তিনি বাধ্য হয়ে করছেন সব।

কিন্তু সারথিদের বাসার কেউই এ কথার কাতারেও যায়নি যে আনাফের বাবা রাজি নন।তারা ভেবে নিছেন রাজি বলেই তো এসেছে এখানে।রাজি না হলে তো আসতোনা।

পূর্ণতা মাংস নামিয়ে এবার পোলাও বসিয়েছে।ফারাজ নড়ছেনা এখনও।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজিয়ে রাখা পোলাও মুঠো করে নিয়ে মুখে পুরে চিবোচ্ছে।মিসেস সায়না শরবতের খালি গ্লাস রান্নাঘরে রাখতে এসে এই দৃশ্য দেখে বললেন,’ফারাজ??তোমায় তো রান্নাঘরে আগে এমন অনেকক্ষণ ধরে দেখতাম না।আজ কি হলো শুনি?’

ফারাজের মুখে পড়লো এক কামড়।জোরে চিবোতে গিয়ে কামড় বসিয়ে দিয়েছে ঠোঁটে।ঠোঁট মুছে সে বললো,’চাল খেতে মন চাইলো’

‘তাই বলে এক ঘন্টা ধরেই?তুমি যখন ঢুকলে তখন ঘড়ি দেখেছি,এখনও দেখলাম।হুমমমমমম বরাবর ৪৫মিনিট হলো’

ফারাজ লুকিয়ে পালিয়ে গেলো ততক্ষণে।মিসেস সায়না এবার পূর্ণতাকে ধরলেন।পূর্ণতা পালাবে কোথায়, তার তো রান্নার চাপ।

‘কি হলো নতুন বউ?তোমার বরকে একদিনেই পাগল বানিয়ে ফেললে?’

‘আরেহ না।নাটক করছে।উনি আমায় দু চোখের কিণারা দিয়েও দেখতে পারেননা।’

‘দেখতে পারেনা নাকি চোখে হারায়? কোনটা?’

পূর্ণতা মিসেস সায়নার কথার প্যাঁচে পড়ে আগাগোড়া সব ভুলিয়ে যাচ্ছে।।সায়না আর বিরক্ত করেনি তাকে।হাসতে হাসতে তিনিও চললেন অন্য কাজে।
——–
হাতে এক প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে লোকমান দোকানদার হাজির হাবিজাবিতে।
এসেই বসে পড়েছে আনাফের বাবার পাশে।আনাফের বাবা তাকে দেখেই চিনেছে।তাই তিনি আগ বাড়িয়ে কথা বলতে চাননি।টিভিতে কার্টুন চলছে,অর্ক বসে বসে দেখছিল।সেই কার্টুনটা মনযোগ সহকারে দেখতে লাগলেন আনাফের বাবা।
লোকমান মিয়া সেটা খেয়াল করে বললেন,’আরে বড়রা কেন কার্টুন দেখবে?আপনি টিভিতে কি দেখেন??আমার দিকে দেখেন।বড়রা একসাথে হলে একটু আলাপ জমাতে হয়।আপনি দেখি মান্ধাতার আমলের মানুষ।দেখে যতটা আধুনিক মনে হয়,মনের দিক দিয়ে পুরোনো’

লোকমানের ঠেলা কথায় আনাফের বাবার গায়ে লাগলো তাও কিছু বললেন না।প্যাঁচ করা মানুষের সাথে কোনো হালেই তিন কথা বলেননা।
এত কিছুর পরেও তাকে চুপ থাকতে দেখে লোকমান মিয়া আবার বলে উঠলো,’মেয়েটা অনেক ভাল কিন্তু ঐ যে আগের বিয়ের দাগ পড়ে গেলো।আগের জামাইটাও ভাল ছিল।খারাপ না।আমি তো দেখে মানতে পারছিলাম না,অন্ধ মেয়ে এত ভাল ছেলে বিয়ে করলো।আমার সেই ধারনা ভুল করে দিলো ওদের বিয়ের ভাঙ্গন। মনে হয় পরিবারের চাপে পড়ে করছিল তাই এখন হুশ আসায় ছেড়ে চলে গেছে’

আনাফের বাবা কানে ইয়ারফোন দিয়ে, ফোন টিপে সূরা বাকারা প্লে করে চুপ করে আছেন।
লোকমান যা পারছে সারথির নামে,মানিক সাহেবের নামে,সোনালীর নামে,ফারাজের নামে, পূর্ণতার নামে বলেই যাচ্ছে।
———
আনাফ সারথির রুমের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গায়ের আকাশী রঙের সুতির পাঞ্জাবিটাতে হাত বুলাচ্ছে।বিয়ে নিয়ে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে।আনাফের তেমন স্বপ্ন নেই।সে কাজে, পড়াশুনায় এতই মগ্ন থাকতো যে খোলসা করে কখনও তার বিয়ে নিয়ে কল্পনা করা হতোনা।
আজ তার বিয়ে,না চেয়েও কেমন যেন অনুভূতি মনের মধ্যে খেলে যাচ্ছে।আনাফ সবসময় ভাবতো সে যেমন চায় তেমন পাবেনা,সারথির মতন একটা মেয়েকে সে জীবনে চাইতো।এভাবে হুট করে পেয়ে যাবে তা সে ভাবেইনি।এখন পেয়ে গিয়ে আর বিশ্বাস হয়না।আয়নায় চোখ বুলিয়ে একবার সারথিকেও দেখে নিয়েছে সে।সারথি মননরা হয়ে বসে আছে ওখানে, সে জানেই না আজ তার বিয়ে।
আনাফ পাঞ্জাবিটা টেনে টুনে সারথির কাছে এসে ওর পায়ে আলতো করে হাত লাগিয়ে বলে,’এই ব্যাথায় হাঁটতে পারবে?’

‘না,মনে হয় পারবোনা।টনটন করে’

‘হুম জানি।এ ব্যাথা আজ তো দূরে থাক,
আগামী সাত দিনেও যাবেনা,বরং বাড়বে।’

‘তাহলে আংটি বদল হবে কি করে?’

‘ওসব তুমি ভেবোনা।তুমি এখানেই বসো, আমি গিয়ে বাইরেটা দেখে আসি’

এই বলে আনাফ বাইরে বের হতেই বাবার সাথে ধাক্কা খেলো। বাবা এদিকেই আসছিলেন ওকে পেয়ে কেন যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন।

‘বাবা কিছু বলবে?’

‘তোমার সাথে আমার জরুরি কথা আছে’

‘বলো’

বাবা আনাফের হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসলেন, এরপর বললেন ‘সারথি অন্ধ মেনে নিলাম,সারথি ডাক্তার না,তাও মেনে নিলাম।কিন্তু সারথি নাকি বিয়ে হয়েছিল? এটা কি করে মানবো?তুমি আমাকে এটা বলোনি কেন?’

‘এটা বলার মতন না।’

‘বলার মতন না মানে!তাও কার বউ ছিল জানো?আমাদের বাসার সজীবের ওয়াইফ সে!সজীবকে চেনো তো?’

‘হুম।সব জেনেশুনেই আমি রাজি হয়েছি’

‘এটা হয়না।সমাজে মুখ দেখানোর কিছু আর রাখলেনা তুমি’

‘বাবা আমি সারথিকে ভালবাসি।’

আনাফের বাবা মুখ গোমড়া করে চলে গেলেন ওখান থেকে।তার কোনো কথাতেই আনাফকে আটকানো যাবেনা।সে বাবাকে কথা শেষই করতে দিচ্ছে না।
কি এমন জাদু করলো!!!
——
বেশ অনেকক্ষণ পর একজন হুজুরের গলা শুনে সারথি নড়েচড়ে বসে পড়ে।পাশ থেকে সায়না বললেন হুজুরের কথামতন যা যা বলতে হয় বলতে।সারথি মনে মনে অবাক হচ্ছিল।আংটি বদলে হুজুর কেন আসছে??
ওমা!তার এই অবাককে আরও অবাক করে দিলো যখন হুজুর তাকে কবুল বলতে বললো।সারথি কাকির দিকে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে জানতে চাইলো কবুল কেন বলতে হবে।
কাকি মিটমিট করে হেসে বললেন,”বোকা মেয়ে!কবুল না বললে বিয়ে হবে কি করে?”

‘বিয়ে?আজ না আংটি বদল?’

‘আরেহ না।আজ বিয়ে।আনাফ তোকে কিছু বলেনি?’

‘না তো।কি বলছো এসব!’

‘আচ্ছা পরে অংক কষাকষি করিস।এখন কবুল বলে দে’
——-
হুজুর চলে যাবার ঠিক ২৩মিনিট পর আনাফের গলা কিঞ্চিত আকারে শুনতে পেলো সারথি।এতক্ষণ সে তার রুমে একাই বসে ছিল।গুটিকয়েক গলার স্বরের ভীড়ে আনাফের গলা খুঁজতেছিল সে।অবশেষে সেই গলা তার কানে আসে।মুখে হাসি ফুটিয়ে পরক্ষণেই হাসি কমিয়ে রাগ জমালো মুখে।এতবড় একটা কথা আনাফ তার থেকে লুকিয়ে নিলো?বিয়ের ব্যাপারেও কেউ সারপ্রাইজ দেয়??এটার শাস্তি আনাফকে পেতেই হবে!
আনাফ সেসময় বাইরে ফারাজের সাথে কথা বলছিল।বাবা মায়ের সাথে সারথিকে নিয়ে আনাফ বাসায় ফিরবে।সেটা নিয়ে কথা বলছে তারা দুজন।সারথি কান খাড়া করে কথাগুলো স্পষ্ট শোনার চেষ্টা করছে।তাও কিছুই বুঝছেনা।গিয়ে কাছ থেকে শুনলে হয়ত শোনা যেতো।
কিন্তু পায়ের যে হাল,কি করে যাওয়া যাবে’
—–
‘বুঝি তো দুলাভাই!কোলে করে বউকে বাড়ি নিয়ে যাবেন।সেই ধান্ধায় এখন এই রাতে বাসায় ফিরতে চাইছেন।নাহলে এই বাড়িতে বাসর ঘরের আয়োজন করলে কি এমন ক্ষতি হতো?’

চলবে♥

#ডাকপাড়ি
#পর্ব_৫৮
#আফনান_লারা
________
সারথির পায়ের কথা ভেবে সকলে একমত হয়েছে আজ ওরা এখানেই থাকবে।কাল সকালে চলে যাওয়া যাবে।
আনাফ চেয়েছিল আজই নিয়ে যেতে কিন্তু বড়দের সাথে আর কথায় পেরে ওঠেনি।তবে আনাফের বাবা মা চলে গেছেন,থেকে গেছে আনাফ আর সারথি।

সারথি বিছানায় বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছে এদিকে নামতেও পারছেনা,আর বাহিরে কি কান্ড ঘটছে তাও বুঝতে পারছেনা।
অনেককাল বসে থাকার পর দরজা খোলার কিঞ্চিত একটা আওয়াজ তার কান অবধি ছুঁয়ে গেলো।সারথি ভেবেছে আনাফ এসেছে।কিন্তু নাহ!সায়না কাকি এসেছে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত আর কষা মাংসের প্লেট নিয়ে।তার ঘাড়ে দায়িত্ব চেপেছে সারথিকে খাইয়ে দেয়ার।সকলের নাকি খাওয়া হয়ে গেছে।সারথি মুখে লোকমা নিয়ে চুপচাপ চিবোচ্ছে।সায়না কাকি আরেকটা লোকমা সাজানোর সময় বললেন,’জানিস সারথি!সজীব আর আনাফের রুপের কোনো বৈসাদৃশ্য নেই।সজীব যেমন সুদর্শন ছিল,আনাফ ও তেমনই।যেটা আলাদা সেটা হলো তোর প্রতি প্রেম।সজীবের ছিল না,আর আনাফের ঘরভর্তি।কে জানতো সঠিক মানুষটা এত দেরিতে আসবে!’

‘উনি কোথায় এখন?’

‘ফারাজের সাথে বাগানের দিকে যেতে দেখলাম।ফারাজের সাথে ওর যা খাতির কি বলবো, একেবারে! ‘

‘পূর্ণতা কোথায়? ওরা হলো নতুন বর বউ,তাদের পাত্তা না দিয়ে তোমরা আমাদের নিয়ে পড়ে আছো!’

‘আরেহ ওদের জোড়া লাগতে আরও অনেক দেরি।দুজন দুজনকে পছন্দ করে কিন্তু স্বীকার করতে কিপটামো করে।ভাবতে পারো!একই স্বভাবের দুটো মানুষ একই গড়ায় বাঁধা পড়লো।অথচ তারা সেটা জানেইনা।হাহা!’

‘ভালবাসি কথাটা বলতে দেরি করা উচিত না।যখন যেটার সময় চলতে থাকে তখন সেটা বলে ফেলা উচিত’

‘তুই বলেছিস আনাফকে?’

সারথি থতমত খেয়ে গেলো।তা দেখে সায়না কাকি হাসছেন মিটমিট করে।
———-
ফারাজ আনাফের সাথে বাগানে আসলেও তেমন একটা গল্পের আসর জমায়নি।সে ভাবছে পূর্ণতার কথা আর আনাফ ভাবছে সারথির কথা।অথচ তারা দুজনেই এখানে গল্পের আসর জমাতে এসেছিল।
পূর্ণতা দুই গ্লাস দুধ নিয়ে এসে ওদের দুজনের সামনে রেখে দাঁতটা ভাল ভাবে কেলিয়ে বলে,’নতুন জামাইরা খেয়ে নিন’

ফারাজ ভ্রু কুঁচকে বললো,’আমি পুরোনো হয়ে গেছি’

‘বিয়ের দুইদিন ও হয়নি।পুরোনো হবেন কি করে?’

‘সে যাই হোক।একদিন আগে কিংবা পরে হলেও আমি পুরোনো হয়ে গেছি।
আপাতত আনাফ ভাইকে সমাদর করো’

পূর্ণতা চট করে ফারাজের জন্য আনা দুধের গ্লাসটা তুলে খাওয়া ধরতেই ফারাজ সেটা আটকে বলে,’এটা তো আমার জন্য এনেছিলে না?’

‘আপনি বললেন আপনি পুরোনো হয়ে গেছেন।তবে এটা খাবেন কেন?’

‘আমি এই কারণে বলিনি।দাও আমার গ্লাস’

‘দিব না।পুরোনো জামাই,পুরোনো জামাইর মতন থাকেন’

এই বলে পূর্ণতা গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে গ্লাসটা আবার রেখে চলে যায়।
আনাফ অনেক কষ্টে হাসি দমিয়ে রেখেছিল কিন্তু পূর্ণতা যেতেই হাসির ঢল নামিয়ে দিলো ওখানে।খিলখিল করে হেসে উঠলো সে।ফারাজ মুখ গোমড়া করে গ্লাস টা নিয়ে বাকিটুকু দুধ খেয়ে বললো,’নিজের বউয়ের এঁটো খাওয়া যায়’

‘আমি কৈফিয়ত চাইনি ‘

‘না আসলে বললাম আর কি।এ বাড়িতে পূর্ণতা সম্বন্ধিত কিছু করলেই সবাই মিলে পেছনে লেগে যায়।তাই অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে’

‘মানে সবাই তোমার মুখ দিয়ে বের করাতে চাইছে যে তুমি পূর্ণতাকে পেয়ে খুশি ?’

‘খুশি না!আসলে ঠিক সেটা নয়’

‘থাক।আর বোঝাতে হবেনা।শুনেছি বিয়েটা নিজের মতের ভিত্তিতেই করেছো।তবে আর কি জানতে চায় সবাই?’

ফারাজ মাথা চুলকে এদিক সেদিকে চোখ বুলিয়ে বলে,’বিয়েটা নিজের ইচ্ছেতেই করেছি কিন্তু হয়েছে কি আসলে!!!আমি এখনও পূর্ণতাকে বলে উঠতে পারিনি ফিলিংসের কথা’

‘তো বলে ফেলো।দেরি করলেও সমস্যা নেই।বিয়ে তো হয়েই গেছে’
————
সায়না কাকি চলে যাবার পর সারথি একটু বিছানা ছেড়ে নামার চেষ্টা চালাচ্ছিল।মুখ হাত ধুলে একটু শান্তি লাগবে।সেই কখন থেকে বিছানায় বসে আছে।আর কত বসে থাকা যায়?
পা ফ্লোরে নামিয়ে মনে মনে সাহস জোগাচ্ছিল সে।অনেক ভেবে দেয়ালে হাত রেখে উঠে দাঁড়ায় সে।দেয়ালে হাত রেখে উঠার সময় একবারও ব্যাথা অনুভব হয়নি বলে সারথি ধরে নিলো সে হাঁটার জন্য প্রস্তুত।
সাত পাঁচ না ভেবে হাঁটার জন্য পা বাড়াতেই দুনিয়া দারি কেমন যেন হয়ে গেলো তার কাছে।পড়েই যাচ্ছিল কিন্তু সেই চিরচেনা আপন বাহক তাকে ঠিকসময়ে ধরে ফেলেছে।
হাতটা সে চেনে,তার খুব পরিচিত এই হাত,এই গন্ধ।
আবেগে হাতটাকে নিজ থেকেই আকড়ে ধরে সারথি।প্রাণভরে ঘ্রাণ নিলো চোখদুটি বন্ধ করে।কি নেশা এই গন্ধে।
আনাফ বুঝে গেছে সারথি তাকে পেয়ে খুশি হয়েছে।সে সারথিকে বিছানায় আবার বসিয়ে দিতে দিতে বললো,’কোথায় যাচ্ছিলে?তোমায় না মানা করেছি বিছানা থেকে একা একা না নামতে?’

‘ওয়াশরুমে যাবো’

‘চলো আমি দিয়ে আসি’

সারথি আশ্চর্য হয়ে গেলো এই কথা শুনে।আমতা আমতা করতে করতে বললো যাবেনা সে।আনাফ জোর করলো যাবার জন্য কিন্ত এবার সারথি পা দুটো উঠিয়ে ফেলেছে বিছানায়।সে যাবেই না কোথাও।এতক্ষণ পর আনাফ বুঝতে পারলো সারথি যেতে মানা কেন করছে।

‘আমি তোমার সাথে ভেতরে যাব না তো।ওখান অবধি শুধু এগিয়ে দিয়ে আসবো’

সারথি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।বিয়ের পরে হয়ত এটাই সব চাইতে লজ্জাকর অবস্থা তার কাছে!!
এতকিছুর পরেও সে আনাফকে বললো সে যাবেনা এখন।তাই আনাফ আর জোর করেনি।
রুমের আলো নিভিয়ে দুপাশে দুজন বসে আছে এখন।মাথার উপরে ফ্যান চলছে আর বাহিরের চোরা বাতাস থেমে থেমে জানালা ভেদ করে গায়ে এসে লাগছে।সারথির রুমের বিছানা একেবারে জানালা ঘেঁষে।ঠাণ্ডা টা যেন আরও বাড়িয়ে তুলছে সেই বাতাসে।সারথি শীতে নড়েচড়ে বসলো।
আনাফ তখনও আগের মতন পা তুলে গোল হয়ে বসা ছিল।কোনো কথা নেই কারোর মুখে।
সারথির চোখে ঘুম নেই,সন্ধ্যা থেকে অনেক ঘুমিয়েছে,এখন ঘুম আসার কথানা,এদিকে আনাফ তো ঘুমানোর কথা ভাবতেও পারেনা।প্রতিদিন ঘুমাতে গিয়ে তার রাত ১টা ২টা বেজে যায়।আর এখন বাজে সবে এগারোটা।
সে ভাবছে কোন কথা শুরু করবে।অনেক আগ থেকে চেনা দুজন দুজনকে।দুনিয়ার সব কথা বলা হয়ে গেছে।তবে কি কথা দিয়ে শুরু করা যায়?

শেষে সারথি বললো,’ঘুমাবেন?’

‘নাহ,তুমি?’

‘আমিও না’

‘কি করবে?’

‘কি আর করবো!শুয়েই পড়ি।শুয়ে পড়লে আপনাআপনি চোখ লেগে যাবে’

সারথির এমন সোজাসুজি কথায় আনাফ অবাক হলো।এটা হয়ত সে আশা করেনি,তাও ভাল।সে যেমন চায় তেমনটাই হোক।সারথির কথার খেলাপ না করে আনাফ চট করে বালিশ পেতে শুয়ে পড়েছে।সারথি সেটা টেরও পেয়েছে।
কপালে হাত রেখে আনাফ চুপ করে রইলো।সারথি আনাফের মতন নিজেও শুয়ে আছে।আনাফ হঠাৎ ভাবলো সারথির আর সজীবের বাসর ঘরেও তো নাকি সজীব এমনটাই করেছিল,কোনো কথা না বলেই ঘুম দিয়েছিল।তবে তার আর সজীবের কি তফাৎ?

ওমনি আনাফ মোড় দিয়ে সারথির দিকে ফিরলো।সারথি এমনিতেই সোজা হয়ে শুয়েছিল।আনাফ ওর দিকে যে ফিরেছে সেটাও ও টের পেয়েছে,তাও কিছু বলেনি।

‘আচ্ছা তোমার আর সজীবের বাসর ঘরে সজীব ঘুমিয়ে পড়েছিল তাই না?’

‘হুম’

‘ওহ!’

সারথি ভাবছে হঠাৎ এগুলা জিজ্ঞেস করার কি কারণ তখনই তার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে আনাফ তাকে বুকে এনে জড়িয়ে ধরে ফেললো।এটা সারথি কল্পনাই করেনি।আশ্চর্যান্বিত হয়ে চুপ করেই থাকলো।আনাফ বললো,’সজীব যেটা করেনি সেটা আমি করবোনা এটা তোমায় কে বলেছে?’

‘কেউ বলেনি,তবে অবাক হলাম’

‘আমি চাইনি এটা,কিন্তু কিছু না করলে সজীব আর আমার তো তফাৎ থাকবেনা তাই না?’
————
ফারাজ তার সিঙ্গেল খাটের রুমে এসে পা দোলাচ্ছিল আপন মনে ঠিক সেসময়ে হঠাৎ ঝড়ের গতিতে তার ছোট্ট রুমটাতে ঢুকে পড়লো সায়না কাকি আর মা।তাদের এখানে দেখে ফারাজ শুরুতে বুঝতে পারেনি আসলেই কি ঘটেছে।
পরে তাদের মুখের ভাবগতি দেখে আস্তে আস্তে টের পেলো যে বিষয়টা মনে হয় পূর্ণতাকে নিয়ে।তাই সে বুঝেও না বুঝার ভান ধরে বালিশ গুছিয়ে শুয়ে পড়লো ওনাদের দেখিয়ে।

‘কিরে ফারাজ??পূর্ণতা কোথায়?’

‘কোথায় আবার!তার রুমে’

‘তার রুমে মানে!তুই এখানে কি করিস?তোর তো ওর সাথে সেই রুমে থাকার কথা’

‘কেন থাকবো?আমার রুম তো এটা’

‘কিন্তু এই খাটে জায়গা হয়তনা বলেই তো তোদের সেই রুমটা ঠিক করে দেয়া হয়েছিল।তুই এমন নাছোড়বান্ধা গিরি ছাড়াবি নাকি আব্বাকে ডাক দিব?’

‘দাদাজানকে সামান্য কারণে ডিস্টার্ব করবে?’

‘হ্যাঁ করবো,কারণ তুই তার কথাই খেলাপ করছিস।’

‘মা বিশ্বাস করো!পূর্ণতার সাথে এক খাটে শুলে আমার ঘুম আসেনা।আমাকে একটু শান্তিতে ঘুমাতে দাও’

‘তা হবেনা।বিয়ে যখন করেছিস তখন সব খানে বউকে রাখতে হবে।তুই এখন পূর্ণতার কাছে যাবি নয়ত পূর্ণতাকে এই রুমে নিয়ে আসতেছি’

ফারাজ চট করে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে বলে,’না থাক।যাচ্ছি আমি।এই রুমে গাদাগাদি করে শোয়ার চেয়ে আমি বরং সেই রুমেই যাই।তোমরা শান্ত হও’
———
পূর্ণতা গোটা একটা বিছানায় শুয়ে শুয়ে বাদাম খাচ্ছে।আজ আর তাকে কষ্ট করে ঐ চিকন বিছানায় শুতে হয়নি বলে মনে তার অনেক আনন্দ।বড় করে শ্বাস নিয়ে আবার ফেলার আগেই দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ পেয়ে হুমড়ি খেলো সে।শান্তিতে দমটাও ফেলা যাবেনা না কি!!
পা টিপে টিপে নিচে নেমে দরজার কাছে এসে সে জানতে চাইলো কে ওখানে।
ওপাশ থেকে ধমকের সুরে শোনা গেলো”‘আমি ফারাজ””

পূর্ণতা বিরক্ত হয়ে দরজা খুলতেই ফারাজ কোনো কথা না বলে ভেতরে চলে আসে।

‘একি!নিজের রুম রেখে আমার রুমে কি করেন?’

‘বিবাহিত ট্যাগ লাইন লেগে গেছে কিনা!!আলাদা শোয়া পাপ’

‘মানে কি এখন আমার সাথে ঘুমাবেন নাকি?’

‘আমি চাইনি,সকলে জোর করে পাঠিয়ে দিলো’

‘না হতে পারেনা!আমি একা ঘুমাবো’

‘তো গিয়ে আমার রুমেই ঘুমান,আমাকে অন্তত এখানে ঘুমোতে দিন।আমি গেলে আবার ফেরত পাঠাবে।ট্রাই করে বিফল হয়েছি’

‘বিয়ে জোর করে করিয়েছে ঠিক আছে,তাই বলে একসাথে থাকাও কি জোর করে করাবে!আপনার পরিবার আর আপনি সামলে নিতে পারছেন না।আমি তো হলাম বাইরের মানুষ।আচ্ছা এক মিনিট, ওয়েট’

পূর্ণতা পা টিপে টিপে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।ফারাজ দেখলো ও সোজা সারথির রুমের দিকে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।যেতে যেতে আঁচল কোমড়ে গুছছে।মানে তার ভাবনায় দুষ্টুমি লেপটে আছে। নির্ঘাত ওদের বাসর ঘরের কথা শুনার জন্য চলেছে।ফারাজ তড়িঘড়ি করে ওকে আটকাতে গেলো তার আগেই পূর্ণতা দরজার সাথে কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা চালাচ্ছে ভেতরে ওরা কি কথা বলে।

‘পূর্ণতা!আপনার কি লজ্জা নাই?’

‘একটুও নাই’

‘সরুন,কেউ দেখলে কি বলবে?’

ফারাজ পূর্ণতার হাত ধরে টানার চেষ্টা করছিল তখনই সারথির রুমের দরজা খুলে গেলো,আনাফ খুলেছে।তার গায়ের পাঞ্জাবিটা খুলে হাতে ঝুলিয়ে রেখছিল সে।পূর্ণতা ওকে উদম দেখে বলে উঠলো,’এত জলদি……….’

ওমনি ফারাজ ওর মুখ চেপে ধরে দাঁত কেলিয়ে বলে,’হেহে!!এত জলদি দরজা খুললেন ভাই।আমরা তো দরজা নকই করলাম না এখনও’

আনাফ পাঞ্জাবি দিয়ে গলা মুছে বললো,’অনেক গরম।তোমার বোনের নাকি শীত লাগে।ফ্যানটাও চালাতে দিচ্ছেনা’

চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here