ডিভোর্স পেপার,Part : 2
Write : Sabbir ahmed
-সেটা কখন কখন??(রিনি)
-সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমাতে যেতে (অভ্র)
-আর??
-বাথরুমে যেতে
-কুত্তাআআআ
-এত জোরে কেউ চিল্লানী দেয়?? থাম
-ওকে
-বাবা বলেছে এনগেজমেন্ট করেই এবার বাসার ফিরবো
-হুমম ভালো
-তুই ভালো ভালো বলছিস কি জন্য?
-তো আর কি বলব বল
,,
অভ্র গাড়িটা ব্রেক করলো।
-থামলি কেনো??(রিনি)
অভ্র রিনির ঠোঁটে একটা চুমু একে দিলো আর বুঝিয়ে দিলো কি চায় সে।
রিনি ঠোঁট ছাড়িয়ে নিলো..
-এটা কি করলি??(রিনি)
-আমি কি চাচ্ছি বুঝেছিস তো? (অভ্র)
-এসব হবে না তুই এটা কি..
-তুই আমাকে ভালবাসিস না?
-না আমি তোকে ভালোবাসতে যাবো কেনো??
-তাহলে আমি যে তোর চোখের চাহনি তে যা দেখতে পাই সেটা ভুল??
-তুই কি দেখতে পাস আমি জানি না
-প্লিজ এমন করিস না চল বিয়ে করে নেই
-অভ্র মেজাজ গরম করবি না আমার, আমি আজ তুই বিয়ের কাজ সারতে যাচ্ছিস কথা না বলে গাড়ি স্টার্ট কর
,,
অভ্র গাড়ি স্টার্ট করলো..
-আমার আসাটাই ভুল হয়েছে (রিনি)
-চলে যা তাহলে (অভ্র)
-আবার কথা বলিস তুই! একটু আগে আমাকে কি করলি সেটা তোর মনে আছে??
-কি করেছি??
-ঐ যে ঐটা দিলি
-ভালবাসি তো
-তোর মতো হাবলা কেবলার মুখ থেকে ভালবাসি কথা আসে কিভাবে??
-হাবলারা কি কাউকে ভালবাসে না?
-জ্বি না ভালবাসা বুঝলে তো ভালবাসবে
-তোর সাথে তর্কে জড়াতে চাই না
-হ্যা চুপ চাপ থাক
,,
দুজনেই বেশ রাগ করলো। সারা পথ আর কোনো কথা হলো না। পৌঁছে গেলো অভ্রর চাচার বাসায়। সবার সাথে দেখা হলো কথা হলো অভ্র রিনিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। আর এর মধ্যেই দেওয়া হয়ে গেলো সুস্মিতার সাথে।
,,
সে দেখতে বেশ সুন্দরী। গ্রামের মেয়েরা একটু বেশি সাজুগুজু করে থাকে সুস্মিতাও তার বিপরীত নয় বেশ সাজুগুজু করেছে। অভ্র কে দেখে সালাম দিলো। অভ্র উত্তর নিয়ে বলল…
-কেমন আছিস??(অভ্র)
-জ্বি ভাইয়া ভালো তুমি কেমন আছো?? (সুস্মিতা)
-ভালো
-হবু বরকে কেউ ভাইয়া বলে ডাকে! (রিনি)
,,
রিনির এমন কথায় সুস্মিতা লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।
-যাহহ তোর বউ তো চলে গেলো! (রিনি)
-তুই ওর সামনে এমন কথা বললি কেনো??(অভ্র)
-তো কি বলব! তোর বউ হবে তো মানে আমার ভাবি তাই একটু মজা করলাম
-আমার ভালবাসা তোর কাছে কোনো দাম নেই তাই না?
-কিসের ভালবাসা! তুই আমাকে কবে ভালবাসছিলি??
-প্রথম থেকেই
-না না আমি তো জানি না তুই কখনো আমাকে বলিস নি
-আমি বলেছি
-থাক এসব নিয়ে চিল্লাবিল্লা করিস না এখন কেউ শুনে ফেললে তোর মান সম্মান যাবে
,,
অভ্র আর কথা বাড়ালো না। সেদিন বিয়ে নিয়ে বাড়িতে কোনো আলাপ আলোচনা হয়ি নি। সবার সাথে হাসি ঠাট্টা এগুলোই হয়েছে। আর এখানে আসার পর থেকেই অভ্র একা হয়ে গেছে। রিনি সবসময় সুস্মিতার সাথেই থাকছে। অভ্র ইশারায় ডাকলেও কাছে আসছে না।
,,
সন্ধ্যায় সুস্মিতার ভাই বোন সহ রিনি অভ্র একটা জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলো। আড্ডা টা নিয়ন্ত্রণ করছে রিনি, সবাইকে বেশ মাতিয়ে রাখছে।
অনেকটাসময় আড্ডা হলো সবাই যখন চলে যাচ্ছিলো অভ্র তখন রিনি কে যেতে বারন করলো। সবাই চলে যাওয়ার পর…
-কি বলবি বল (রিনি)
-বস না একটু কথা বলি (অভ্র)
-হুমম বল
-ভালবাসি
-ওয়েট ওয়েট ওয়েট এসব কথা শোনার জন্য আমি এখানে বসবো না আমি গেলাম
-না শোন
-কি??
-কিছু না যা
-শোন তোকে একটা গুড নিউজ দেই সুস্মিতা আমাকে বলেছে ও তোকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে
-পছন্দ করতেই পারে
-হুমমম তোর বউ তো একটা বাচ্চা পরীর মতো দেখতে কেমন যেন গুলুমুলু ভাব তোর সাথে বেশ মানাবে
-যা সর তোর সাথে কথাই বলব না
-শোন আমাদের এই ভেজাল টা ক্লিয়ার করা দরকার। আমি তোকে ভালবাসি এটা ঠিক ধরতে পেরেছিস। কিন্তু তুই জানিস আমার জীবনে বড় একটা দাগ আছে
-হুমম জানি
-কি সেটা?
-ঐ যে রিলেশন
-হ্যা শুধু রিলেশন না ওর সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে আবার বাচ্চা ও হয়েছিলে এবরশন করি
-হুমম জানি
-তুই যদি আমাকে বিয়ে করিস এটাই বিয়ের পর কিন্তু হয়ে থাকবে। আমি তোকে এতটাই ভালবাসি যে আমি চাই না আমাদের ভালবাসায় কোনো কিন্তু থাক
-তার মানে তুই কখনো রাজি হবি না
-না আর সেটা এখনই ক্লিয়ার করলাম
-ঠিক আছে তুই থাকতে পারলে আমিও পারবো
,,
অভ্র উঠে চলে যাচ্ছিলো রিনি ডেকে বলল..
-ভালবাসাটা ঠিকিই থাকবে..(রিনি)
-আমার টা ঠিক থাকবে, অবশ্যই কেউ নিয়ে নিবে (অভ্র)
-হুমমমম
,,
অভ্র চলে যায় রিনি বসে থেকে কিছুক্ষণ চোখের পানি ফেলে তারপর সেও সেখান থেকে চলে আসে। রাতে খাওয়া শেষ করে অভ্র বাইরে এসে দাড়ায়। ঠিক তখনই সুস্মিতা অভ্রর কাছে এসে বলে…
-ভাইয়া তোমার জন্য বিছানা ঠিক করা হয়েছে (সুস্মিতা)
-কোথায়??(অভ্র)
-আমার রুমে
-হুমম ঠিক আছে
,,
সুস্মিতা চলে যাচ্ছিলো অভ্র সুস্মিতা কে ডেকে বলল..
-রিনি কই থাকবে??(অভ্র)
-আপু আমার সাথে থাকবে (সুস্মিতা)
-আচ্ছা তুই ওকে রুমে পাঠিয়ে দে
-কেনো ভাইয়া
-ওর সাথে কথা আছে
-আচ্ছা
,,
অভ্র রুমে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। একসময় রিমি গলায় আওয়াজ দিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। অভ্র তার দিকে একবার তাকিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায় আর দরজা লাগিয়ে দেয়।
-দরজা লাগালি কেনো?? (রিনি)
-এমনি (অভ্র)
-তো ডাকছিস কি জন্য?
-এমনি কথা বলতে
-আমার ঘুম পাচ্ছ ভাই আমি এখন যাই
-তুই আগে তো আমার সাথে এমন করতি না
-তোর জীবনে নতুন কেউ আসছে আমাকে সরে যেতেই হবে তাই এখন থেকে চেষ্টা করছি
-তোর চেষ্টার আমি…
-আস্তে কথা বল কেউ শুনে ফেলবে। আচ্ছা কি বলবি বল আমি শুনছি
-তোর অনুমতি পেলে আমি তোর কথা বাবা কে বলব
-এক কথা তোকে আমি কতবার বুঝাবো
-আমি যে তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না
-অবশ্যই পারবি
-পারবো না
-পারবি
,,
অভ্র এবার রেগে গিয়ে রিনির গাল টা দুহাত দিয়ে শক্ত করে ধরলো। দুজনের চোখেই পানি। একে অপরের চোখের ভাষা দুজনই বুঝতে পারছে কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য বাধার জন্য এক হচ্ছে না।
-ব্যাথা লাগছে ছাড় (রিনি)
-…(অভ্র চুপ)
-ওই ব্যাথা লাগছে তো
,,
অভ্র রিনির ঠোঁটে আবার চুমু দেওয়া শুরু করে। রিনি তো রাগে অভ্র কে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে দেয়। কিন্তু অভ্র থেমে থাকে না সে আবার এসে জোর করে রিনির ঠোঁটে চুমু দেয়।
রিনি অভ্রকে আর থামাতে পারে না। অভ্র শান্ত না হওয়া পর্যন্ত রিনি চুপ চাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
,,
অভ্র এবার ঠোঁট ছাড়িয়ে নিয়ে রিনির দিকে তাকায়। অভ্র তাকিয়ে দেখে রিনি কান্না করছে। সে তার হাত দিয়ে দু চোখের পানি মুছে দেয়। পুরো মুখটাতে একবার হাত বুলিয়ে নেয়। রিনির মুখের সামনের চুল গুলো সরিয়ে দেয়। আর কাঁদো কাঁদো গলা বলে…
-তুমি বুঝেছো আমি কি চাচ্ছি?? (অভ্র)
-বললাম তো হবে না (রিনি)
-আমি কিন্তু
-তুমি আমাকে যা ইচ্ছা করতে পারো তবুও আমি রাজি হবো না
,,
অভ্র রিনিকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলে..
-একবার হ্যা বলে দেখো সকালেই আমরা এখান থেকে চলে যাবো সোজা কাজি অফিস আর তারপর আমাদের জীবন গুছিয়ে নিবো (অভ্র)
-উহুমমম হবে না
-তুমি এমন করতেছো কেনো? আমাকে বোঝো না কেনো?
-বুঝি দেখেই তো এখনো দাঁড়িয়ে আছি তোমার সামনে…
চলবে