ডেবিল লাভার (পর্ব ১১,১২)
Labiba Islam Roja
পর্ব-১১
·
·
কি হলো যান বলছি কথা কি কানে যায় না।.
.
উহুম যায় না!!আবার যায়ও কিন্তু এখন শোনার ইচ্ছা নাই।
.
এতো আজব লোক!!আপনার রুম থাকতে আমার রুমে থাকবেন কেন…?এবার আপনার রুমে যান প্লিজ।
.
যাব তবে এক শর্তে…যদি শর্ত মানিস তাহলে যাব আর যদি না মানিস তাহলে আজকে এখানেই থাকবো।
.
উনার কথা শুনে খানিকটা ভ্রু কুঁচকে গেলো আমার শর্ত!!কি শর্ত
.
তেমন কিছু না।তোর সাধ্যোর বাইরেও না।যদি চাস তাহলে করতে পারবি।আর যদি না চাস তাহলে পারবি না।
.
ঠিক আছে আগে বলুন তারপর দেখছি পারি কি না।
.
নাহ!!আগে বল পারবি।।।
.
না কথাটা না শুনে আমি কিছু বলতে পারবো না।
.
আচ্ছা বাদ দিলাম বলছি….কিন্তু পরে না করা চলবে না ঠিকাছে…!!
.
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি!!লাফাঙ্গা কোথাকার তোর কথায় কথায় সব হবে নাকি। কিচ্ছু করবো না দেখবো তুই আমায় কি করতে পারিস।
.
রোজ সকালে উঠে সবার আগে আমার ঘরে যাবি।গিয়ে আমাকে মিষ্টি সুরে ডেকে ঘুম থেকে তুলবি…লাইক এইভাবে ওগো শুনছো উঠে পড়ো না প্লিজ।প্লিজ লক্ষ্মী টি উঠো।(ডেবিল স্মাইল দিয়ে)
.
উনার কথা শুনে ৪৪০ বোল্ডের শক খেলাম আমিহ।বলে কি এই ডেবিল।ছিঃকি নোংরা হচ্ছে দিন দিন।চোখ দুটি রসগোল্লার মতো করে আংরি ফেস নিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে আছি আমি ।
.
আরে বাবা রাগছিস কেন…?এটা জাস্ট ফান ছিলো আর কিছু নয়।এবার আসি আসল কথায়…রোজ সকালে আমার কফি নিয়ে আমার ঘরে যাবি তখন যদি ঘুম থেকে উঠে পড়ি তাহলে ভালো নইলে তুই ডেকে তুলবি এই যা আর কিছু নয়।
.
আমি পারবো না!!আপনার মতো লোককে কফি বানিয়ে দেই সেটাই অনেক।আর কিছু করতে পারবো না।আপনি আসতে পারেন।
.
তাহলে আমি যাচ্ছি না এখানেই থাকছি।বেশি বাড়াবাড়ি করলে মাকে ডেকে এনে তোকে ঝাঁড় খাওয়াবেো।আর সকালে তোকে আমাকে একসাথে দেখলে এমনি তোর বারোটা বাজিয়ে দেবে সবাই।এবার বল কি করবি…?
.
ঝাঁড় খাওয়ার জন্যই যে আমার জন্ম!!আপনার জন্য না হয় আরো কয়েকটা খাবো।
.
ঠিক আছে তাহলে ঘুমিয়ে পড়ি।সকালে যখন সবাই দেখবে আমরা একসাথে তখন সবাই কি ভাববে বুঝতে পারছিস…?সবার কথা না হয় বাদই দিলাম তের উডবি হাজবেন্ড সে কি ছেড়ে দেবে তোকে।বদনাম হবে তোর বাবার কাছে আবার ছোট হবি।
.
শয়তানের কথাগুলো ফেলার মতো নয়।সত্যি যদি এরকম কিছু হয় তাহলে কেউ ছেড়ে কথা বলবে না আমায়।এখন উনার প্রস্তাবে রাজি হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই আমার কাছে।সাত পাঁচ না ভেবেই ঠিক আছে আমি রাজি এবার আপনি আসতে পারেন।
.
হুম যাচ্ছি আর কথাগুলো যেন মনে থাকে নইলে খবর আছে।আসছি।বলেই চলে গেলেন উনি উফ অসহ্য..!!
.
.
আজকে আমার বিয়ে।এই দিনটাকে কেন্দ্র করে হাজারো স্বপ্ন ছিলো আমার।আমার বাবা মাও অনেক স্বপ্ন দেখেছিলো কিন্তু আজ তার কিছুই পূরণ হচ্ছে না।বাবার কত ইচ্ছা ছিলো তার মেয়ের ধুমধাম করে বিয়ে দেবে এই শহরের সবাই জানবে কিন্তু কিছুই হলো না।সব কেমন পাল্টে গেলো বদলে গেলো আমার জীবন।নাহিদ ভাইয়াকে স্বামী মানতে কষ্ট হচ্ছে আমার।ভিতরে ভিতরে দুমড়ে মুচরে মরছি আমি। কারো নামে যেন কত শত অভিযোগ জমেছে আমার।কিন্তু এই অভিযোগ কার প্রতি কে সেই।নাদিম ভাইয়া হুম উনিই কেন উনার প্রতি দরদ এত টান আমার কি হন উনি।কিছুই তো না তাহলে আজ এত করে টানছেন কেন উনি আমায়।কেন মনে হচ্ছে উনিই আমার সব।আচ্ছা তবে কি উনাকে ভালোবেসে ফেললাম আমি।না না এটা কি করে সম্ভব আমি তো উনাকে ঘৃণা করি ভালোবাসি না।উনি খুব খারাপ আমার সাথে কত বাজে ব্যবহার করেছেন কত ছোট করেছেন কত অপমান করেছেন তাহলে কেন এসব মানতে পারছি না আমি।কেন উনাকে ছেড়ে থাকার কথা মনে হলে কষ্টে মরে যাচ্ছি কেন কেন কেন…?
.
সকাল থেকে কোথাও আজকে উনাকে দেখতে পাচ্ছি না আমি।কোথায় গেলেন নাদিম ভাইয়া উনার সাথে কথা বলাটা খুব জরুরি আমার। উনাকে না দেখে থাকতে কষ্ট হচ্ছে আমার সকালে রুমে গিয়েও উনাকে পেলাম না আমি।রুমে বসে উনার কথা ভাবছি আমি তখনই তিতলি আপু পাশে বসলেন আমার।মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলেন….
.
নাদিমকে খুব ভালোবেসে ফেলেছিস তাই না….?
.
আপুর এমন প্রশ্নে চমকে উঠলাম আমি।আমি নাদিমকে ভালোবাসি।সত্যি কি ভালোবাসি।আমি অবুঝের মতো মুখ করে তাকিয়ে আছি আপুর দিকে।
.
কিরে বল না ভালোবাসিস….?
.
না জানিনা আমি।
.
তাহলে ওর চিন্তায় এতটা অধীর কেন তুই…?কেন এত উদাসী।কেন এত এত প্রশ্ন তোর চোখে মুখে বলতে পারিস…?
.
আপু আমি কিছু বুঝতে পারছি না..!!তবে কোথাও না কোথাও খুব খারাপ লাগছে আমার।কেন জানিনা কিচ্ছু ভালো লাগছে না।নাদিম ভাইয়াকে কোথাও দেখছি না তাই সত্যি অস্থির লাগছে….খুব চিন্তা হচ্ছে উনার জন্য আমার।
.
জানি আমি এটাই হবে কারণ তুই ওকে ভালোবাসিস।সেটা প্রথমে না বুঝলেও এখন ঠিক বুঝতে পারছিস।এখনও সময় আছে বোন এই বিয়েটা বন্ধ কর নইলে তোর সাথে সাথে ভাইয়ার জীবনটাও নষ্ট হয়ে যাবে।প্লিজ এটা করিস না।
.
না আপু আমার যতই কষ্ট হোক না মামুর কথার অবাধ্য হতে পারি না।মামুকে এভাবে ছোট করতে পারবো না।তাছাড়া নাদিম ভাইয়া তো আমাকে সহ্য করতেই পারেন না তাহলে এসব নিয়ে এত ভেবে কি লাভ….
.
এগুলো তোর ভুল ধারণা একটা সময় ছিলো নাদিম তোকে খুব ভালোবাসতো।কিন্তু পরে যা ঘটেছিলো তাতে ও ক্ষেপে গিয়েছিলো আর এটা ওর জায়গায় থেকে যে কেউ করতো।হুম তখন এভাবে তোকে নিয়ে ভাবতো না কিন্তু এখন ভাবে এখন ভালোবাসে তোকে তাই জেদ কিংবা অভিমানের বশে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিস না যাতে তিন জনেই কষ্ট পেতে হয়।
.
প্লিজ আপু বাদ দাও আমি আর শুনতে পারছি না।থামো তুমি আমার মাথা কাজ করছে না।আচ্ছা যদি ভালোই বাসতো তাহলে এত অপমান কেন করতো আমায়।ভালোবাসার মানুষকে কি অপমান করা যায় কষ্ট দেওয়া যায় তুমিই বলো…..
.
হুম যায় যখন ভিতরে ভিতরে তার জন্য রাগ থাকে তাহলে তাকে নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায়।তাছাড়া এখন যে তোকে ভালোবেসে সেটা বুঝিসনা তুই ।যাইহোক আমার য়া বলার বলে দিয়েছি এবার তোর ইচ্ছা আসছি…..পৃথিবীটা থমকে যাচ্ছে আমার কি হচ্ছে এসব।কি করবো আমি…..
.
লাল বেনারসি পরে রুমে বসে আছি আমি।এখনও নাদিমের জন্য ওদিক ওদিক তাকাচ্ছি কিন্তু না কোথাও নেই।এবার খুব ভয় লাগছে আমার রাগের বশে কিছু করে বসে নি তো।না না কি করবে এমনি কোনো কাজে গেছে হয়তো।ঠিক ফিরে আসবে।কিন্তু কখন আসবে বিয়েটা হয়ে যাওয়ার পর।খুব তো বলেছিলো তোর উপর শুধু আমার অধিকার আর কারো না…তাহলে এখন কোথায় উনি।কিছুক্ষণের মধ্যে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো আপু।নিচে আমার ডাক পরেছে যে।মামির মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।মামুর কথার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে না বিধায় চুপ করে আছে নইলে এতক্ষণে কি যে হতো কে জানে।তিয়া আপুও মামির পাশে আছে ওর মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে এইসব বিষয়ে চরম বিরক্ত সে।আমাকে নিয়ে ড্রয়িংরুমে সোফায় বসিয়ে দিলো আপু।এবার বিয়ে পড়ানো শুরু করলেন কাজী সাহেব।বুকের ভিতরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কেমন চিনচিন ব্যাথা করছে আমার।অশান্তিটা বেড়েই চলেছে তারমধ্যে কাজী সাহেব বলে উঠলেন….বল মা কবুল…
.
কথাটা শুনেই চমকে উঠলাম আমি…কেন চমকালাম নিজেই জানিনা।এটা তো হওয়ারই ছিলো তাহলে….কবুল বলার জন্য সকলে রীতি মতো জোর করছে আমায় কিন্তু বলতে পারছিনা আমি।কোথায় যেন আটকে যাচ্ছি।বার বার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।গলা দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করছি কিন্তু ব্যর্থ আমি।এরমধ্যেই অনেকগুলো কথা শুনিয়ে দিয়েছেন মামি।তাই নিজের মনকে শক্ত করে যেই ক….বলতে যাবো তখনই একজনের গলা কানে এলো আমার।এ সুর এই সুরটা যে চিরচেনা আমার।ইনি এখানে কিন্তু এটা কি করে পসিবল।দাঁড়িয়ে চোখের সামনে উনাকে দেখে নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিনা আমি।চোখ ঢলে আবার তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি রেখা ফুটে উঠলো আমার।দৌড়ে উনার কাছে গিয়ে উনাকে জরিয়ে ধরলাম আমি।এটাই যে চির শান্তির স্থান আমার।উনিও আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে নিলেন আমায় অস্পষ্ট সুরে বলে উঠলাম আমি…..
·
·
·
চলবে….
ডেবিল লাভার (পর্ব ১২)
Labiba Islam Roja
·
·
·
আম্মু বলেই ঢুকরে কেঁদে উঠলাম আমি।আমাকে জরিয়ে আম্মুও কাঁদছেন।অনেক্ক্ষণ দুজনে এভাবে থাকার পর কেউ আমাকে আম্মুর থেকে ছাড়িয়ে নিলো।এই বাজে খারাপ লোকটা কে সেটা দেখার জন্য চোখ তুলে তাকালাম আমি…নাদিম ভাইয়া…আমাকে বুকে জরিয়ে বললেন….
.
কাঁদিস না নাদিয়া সব ঠিক হয়ে যাবে।উনাকে ছাড়িয়ে স্থির হয়ে দাঁড়ালাম আমি।
.
রেহানা তুই বেঁচে আছিস…? আম্মুকে দেখে এখানে উপস্থিত সকলেই অবাক।আমিও তো কম অবাক নই।আম্মু আর আব্বুর তো এক্সিডেন্ট হয়েছিলো তাহলে আম্মু এখানে কি করে…?আম্মু এখানে তাহলে আব্বু কোথায়…?
.
হ্যাঁ ভাইয়া আমি বেঁচে আছি…!!
.
রেহানারে আজ আমার থেকে খুশি কেউ নয়।তোমরা সবাই দেখ আমার রেহানা বেঁচে আছে।কিন্তু তুই কি করে বাঁচলি।যখন লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না তখন মনের মধ্যে একটা আশা ছিলো তোর কিছু হয়নি একদিন ঠিক ফিরে আসবি।দেখ সত্যি তুই ফিরে এসেছিস…!!
.
ওই এক্সিডেন্টে কপাল জোরে আমি বেঁচে গিয়েছিলাম।নাদিমের কাছ থেকে শুনেছি রোহান নাকি বলেই কেঁদে উঠলেন আম্মু।
.
আম্মু কেঁদো না প্লিজ!!এতদিন জানতাম তোমারা সবাই আমাকে একা ফেলে এতিম করে চলে গেছো।এখন সবাই দেখ আমি এতিম নই আমার মা আছে।দেখেছো মামি আমার আম্মু বেঁচে আছে।
.
মামুঃতুই শান্ত হ মা…!!রেহানা এতদিন তুই কোথায় ছিলিস আর নাদিম ওকেই বা কোথায় পেলি…?
.
তাহলে শোন তোমরা অনেককিছুই জানো না এখনও।আমাদের এক্সিডেন্ট টাও এক্সিডেন্ট ছিলো না….প্রি প্লান্ট ছিলো….!!
.
প্রি-প্লান্ট মানে….?
.
কেউ একজন ইচ্ছে করে আমাদের গাড়ির ব্রেক কেটে রেখে দেয়।যা টের পায় নি আমরা।তাই মাঝপথে আমাদের গাড়ি ব্রেকফেল করে।তখনই নাদিয়ার বাবাকে হারিয়ে ফেলি আর আমি বেঁচে যাই।এর পেছনে সেই লোকটা ছিলো যে নাদিয়াকে অপমান করতে চাইছিলো…..যখন আমরা জানতে পারি সেই লোকটা আমাদেরই খুব কাছের একজন তখনই আমাদের মারার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে সে।সবার সামনে নাদিমকে দোষী প্রমাণ করে নিজে বেঁচে যায় আর আমরা ভুল বুঝি নাদিমকে কিন্তু আসল কার্লপিট অবধি পোঁছাতে পারিনি।আমিও বাঁচতাম না যদিনা নাদিমের বন্ধু আমায় না বাঁচাতো।এতদিন কোমায় ছিলাম আমি যার ব্যয়ভার বহন করেছে নাদিম।ওই দিন এক্সিডেন্টের পর আমাকে সাকিব ওখান থেকে হসপিটাল নিয়ে যায় কিন্তু তখন আমায় চিনতো না ও।কিছুদিন আগে সাকিবের সাথে হসপিটালে যায় নাদিম সেখানে গিয়ে আমাকে চিনে ফেলে। এরপর নাদিম উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে আমাকে সুস্থ করে তুলে।
.
আম্মু কি বলছো তুমি…?তোমাদের মারার চেষ্টা করা হয়েছিলো…?কে করেছিলো এটা…?কে যার জন্য আমার বাবাকে হারিয়েছি আমি তোমাকেও কাছে পাইনি।কে সে আম্মু নাম বলো তার…?
.
হুম আজ সবটা বলবো আমি..!!কিন্তু ভাইয়া আজ নাদিয়া এভাবে সেজেছে কেন…?দেখে মনে হচ্ছে বিয়ের কনে…
.
হ্যাঁ রে আজ বড় খুশির দিন।আজ যে তোর নাদিয়ার বিয়ে।কত আশা করেছিলি মেয়ের বিয়ে দিবি নিজ চোখে দেখবি দেখ শেষপর্যন্ত তাই হচ্ছে।বড় করে বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারিনি এটা ঠিক ছোট খাটোভাবেই বিয়ে দিচ্ছি।
.
এটা তো ভালো কথা ভাইয়া কিন্তু কার সাথে বিয়ে…?বর কে…?
.
ওই তো আমার বড় ছেলে আর তোর ভাইপু নাহিদ…!!
.
না ভাইয়া এটা কিছুতেই হতে পারে না।এই ছেলের সাথে আমি আমার মেয়ের বিয়ে কিছুতেই দেবো না।
.
কেন রেহানা…?
.
কারণ ও সেই ছেলে যে নাদিয়া কে অসম্মান করতে চেয়েছিলো সেটা আমরা জানতে পারায় আমাদের মেরে ফেলার প্ল্যান করেছে এবং ফাইনালি আমাকে মারতে পারেনি কিন্তু নাদিয়ার বাবাকে ঠিকই মেরে দিয়েছে।
.
মামুঃরেহানা….
.
আম্মু এসব কি বলছো তুমি…?তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে ভাইয়া কেন এসব করতে যাবে।ভাইয়া তো এমন নয়।ভাইয়া কতো ভালো সবসময় আমাকে সাপোর্ট করে আমাকে বুঝে।
.
এটা ওর মুখোশ!!লোক সমাজে সকলের কাছে ভালো হলেও পিছনে একজন নোংরা কুৎসিত মনের মানুষ ও।তাই তো তোর ক্ষতি করতে চেয়েছিলো।ও তোর বাবার খুনী নাদিয়া তোর বাবার খুনী।হুম ভাইয়া আমি যা বলছি সব সত্যি।
.
মামি+তিয়া+তিতলিঃনা না এ হতে পারে না।আমার নাহিদ এমন ছেলেই নয়।
.
মাহিঃনা আন্টি উনি যা বলছে সব সত্যি।একটা কথাও মিথ্যা নয়।ও আমাকেও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেছে।সেদিন নিজের প্রাণের ভয়ে নাদিমকে কিছু বলতে পারিনি।কিন্তু আজকে আর চুপ থাকবো না।ওই সেই যে এতকিছু ঘটিয়েছে।ভদ্র সমাজের আড়ালে মুখোশধারী একটা শয়তান।
.
নাহিদঃওহহ!! এখন সবাই সবটা জেনে গেছো তাহলে আর লুকানোর কিছু নেই।হ্যাঁ সবকিছু আমিই করেছি।
.
মামুঃনাহিদ তুই…?কিন্তু কেন…?
.
হ্যাঁ বাবা আমি!!কারণ আমি নাদিয়াকে ভালোবাসতাম কিন্তু ওই মেয়েতো আমাকে ভাইয়া ছাড়া কিছুই ভাবতো না। সেটা সহ্য করতে পারতাম না আমি।আর ঠিক সেই কারণে ওই দিন ওকে অসম্মান করার প্ল্যান করি যাতে ফুপি ফুপা পরবর্তী তে ওকে আমার সাথে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়।তখন তো সমাজ ওকে মানতো না কেউ ধর্ষিতা মেয়েকে বিয়েও করতে চাইবে না।কিন্তু নাদিম আমার সব প্ল্যানে জল ঢেলে দিলো।তাই নিজেকে বাঁচাতে মাহিকে ব্যবহার করি আমি।সবকিছু আমার নিজের মতো সাজাই কিন্তু ফুপা আবার সব গড়মিল করে দেয়।কোথা থেকে যেন সবকিছু জেনে যায়।তাই ওদের শেষ করা দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না আমার হাতে।কিন্তু এতকিছুর পর আবারও ফুপি তুমি বেঁচে গিয়ে সবকিছুতে পানি ঢেলে দিলে।এই তোমাকে কে বাঁচতে বলেছিলো…ফুপার সাথে মরতে পারলে না।যদি মরে যেতে তাহলে আমাকে এমন দিন দেখতে হতো না।সকলের কাছে এত ছোট হতে হতো না।
.
ঠাসস!!তুই ছিঃ।
.
আচমকা এমন আওয়াজে চমকে উঠলাম আনি।মামু ভাইয়াকে মারছেন।ছিঃ উনি কি মানুষ উনাকে কিনা সবসময় ভালো মানুষ একজন ভালো ভাই ভেবে এসেছি এখন উনিই কিনা আমার বাবার খুনী আমার সাথে অসভ্যতামো করতে চেয়েছিলেন ছিঃ ছিঃ।
.
আজ ভাবতেও খারাপ লাগছে তুই আমার বড় ছেলে।তোকে সবসময় নাদিমের থেকে ভালো সেনসেটিভ মনে করে এসেছি আর আজ কিনা তোর আসল রূপ বের করে নিলি।সত্যি তোকে আমরা চিনতে পারিনি।তুই মানুষ নস আস্ত একটা ডেবিল।
.
ছিঃ ভাইয়া ছিঃ আপনি এতটা নীচ…!!আপনাকে এতটা শ্রদ্ধা সম্মান করতাম আমি আর তার বিনিময়ে এটা পাওনা ছিলো আমার।আপনি কিনা আমার মা বাবাকে মারতে চেয়েছেন।মেরেও ফেলেছেন।আমার সাথে যা ইচ্ছা করলেন তাই বলে আমার বা বা মাকেও ছাড় দিলেন না ছিঃ।
.
এত ছিঃ ছিঃ করো না।বাবা এখানে শয়তানির কি দেখলে তুমি।এই নাদিয়াকে সবসময় ভালো বেসে এসেছি আমি কিন্তু পাওা পাইনি তাই বাধ্য হয়েছি ওইদিন ওই ব্যবহার করতে।আমি এমনই নাদিয়া।আমি তোমার যে সে লাভার নয়।মিস নাদিয়া আই এম ইউর ডেবিল লাভার।
.
নাদিমঃথামো ভাইয়া এটা কখনও তোমার ভালোবাসা হতে পারে না।তুমি নাদিয়ার সাথে যা করেছো সেগুলো কোনো মানুষ মানুষের সাথে করে না।নিজের ফুপি ফুপাকে শেষ করতে চেয়েছিলে ভাবতেই পারছি না।অফিসার উনাকে এরেস্ট করো…!!
.
আমাকে এরেস্ট করবে হা হা করে হেসে উঠলো ভাইয়া।ওর এমন সময় এমন ভয়ংকর হাসি দেখে ভয়ে চুপসে গেছি আমি।
·
·
·
চলবে……