#ডেভিল,08,09
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
[8]
ওদের মধ্যে থেকে একটা ছেলে নীল ভাইয়াকে নামিয়ে বাকি ছেলেদের দিকে চেনে নিয়ে যেতে লাগলো আর একজন তার জ্যাকেট দিয়ে ভাইয়ার মুখসহ মাথা ঢেকে ওনার ওপর ঝাপিয়ে পড়লো।কেউ পা টানছে তো কেউ হাত টানছে।এসব দেখে আমার মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল তাই ওদের কাছে গিয়ে একটা ছেলেকে কষিয়ে দিলাম একটা থাপ্পড়। এক থাপ্পড়েই সবাই চুপ হয়ে গেল আর নীল ভাইয়া মাথা থেকে জ্যাকেট খুলে ছেলেদের দেখে অনেক অনেক অবাক হলো।আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে নীল ভাইয়াকে অনেক জোরে জরিয়ে ধরলাম,কারন আমি অনেক ভয় পেয়ে আছি।তখনি–
নীল ভাইয়া __জয়,রাজ,অভি তোরা এখানে?আর জয় তুই দেশে আসলি কবে?
জয়__আজকেই আসলাম।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এসে ভুল করছি।এ মেয়েটা কে রে?এতো জোরে কেউ মারে?
নীল ভাইয়া __ও নীলার বান্ধবী
রাজ__দোস্ত ডুবে ডুবে জল খাওয়া হচ্ছে না তো?
অভি__মামা ঠিক কইছোস। এই জন্যই বলি ও এতো পাল্টে গেছে কেমনে
তারপর সবাই মিলে নীল ভাইয়াকে জরিয়ে ধরে নিচে ঘাসের ওপর ফেলে উল্টাউল্টি শুরু করলো।আর এগুলা দেখে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতেছি না।তবে বেশি অবাক হয়নি কারন অনেক দিন পর বন্ধুর সাথে দেখা হলে এরকম একটু আদটু পাগলামি করেই।এই যেমন নীলার সাথে যদি অনেকদিন পর দেখা হয় তাহলে ও আমার চুল ছিড়ে এলোমেলো করে ফেলে।এগুলা হলো ভালবাসার বহিপ্রকাশ। তারপর নীল ভাইয়া এক এক করে ওনার বন্ধুদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন।”আমায় বাসায় পৌছে দিয়ে দেখা করবে “একথাটা বলে আমরা আবার রওনা হলাম।মনে মনে আমার অনেক ভাল লাগছে কারন নীল খাটাস টার উধম কেলানি কইছে আজ এমন কেলানি দিনে একবার করে দিলে খুব একটা খারাপ হতো না।উফফ খুব খুদা লাগছে পেটে ব্যান্ড বাজতেছে।আসার সময় একটু খেয়ে এসছি।
__ভাইয়া
__কি হলো
__খুদা লাগছে
__আর একটু অপেক্ষা করো। একটুপরি বাসায় পৌছাবো।
__আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না।
__বলতে না বলতেই?
__আমি কিন্তু কেদে দিবো।এ্যায়ায়া এ্যায়ায়া
__ইউ ফুল কি করছো হ্যা?এটা রাস্তা বুঝেছো? কোনো সার্কাস না(ধমক দিয়ে)
__কি লোকরে বাবা একটু খেতেই তো চেয়েছি(মনে মনে)
উনি ওনার মতো বাইক চালাতেই আছেন।পুরায় অসহ্য একটা লোক।কোনো ফিলিংস নেই মনে হয় রোবট।ধুর ভাল্লাগেনা
কিছুদূর যাওয়ার পর একটা নদীর সাথে ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে থামলেন।
__এখানে থামালেন কেন?
__তোমার নাকি খুদা লাগছে?তাইতো দারালাম
__আমি এই ছোট্ট স্যাতস্যাতে দোকানে খাব?
__তো?
__আমি পারবো না।আপনি চলুন আমি বাসায় গিয়েই খাবো
__কখনো তো এগুলা দোকানে খাওনি একবার খেয়ে দেখো ভাল লাগবে
__ঠিক আছে আপনি যখন এতো করে বলছেন তখন খাওয়া যেতে পারে
__জ্বি না। আমি মোটেও এতো করে বলছি না।জাস্ট সিম্পিল যেটা বলা লাগে তাই বলছি
||
||
মামা খুব স্পেশাল করে দুইটা চা করে দেন তো(দোকানির উদ্দেশ্য)
দোকানি__এই নেন
আরে নেহা কোথায় গেল?এখানেই তো ছিল।দোকানে কিছু লোককে বললে তাদের উত্তরটা ছিল না সূচক ।চারিদিকে অনেক খুজেও নেহাকে খুজে পাচ্ছে না নীল।নেহাকে না পেয়ে নীলের সারা শরীর শিহরিত হতে লাগলো।নীল যখন চা নিতে ব্যাস্ত তখন নেহা কোথায় যেন নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।
বুঝলাম না একা একটা মেয়ে কোথায় গেল?ওতো এখানে কিছুই চিনে না।কোথায় গেল,ওর নাম্বারো তো নেই আমার কাছে কি করে খুজে পাবো এবার?এইই মেয়েকে নিয়ে আর পারি না।আচ্ছা নীলার কাছে নিশ্চয়ই ওর নাম্বার আছে।নীলাকে ফোন করি
__হ্যালো নীলা
__হ্যা ভাইয়া বল
__নেহার নাম্বারটা মেসেজ করে দে তো
__কেনো ভাইয়া কিছু হয়েছে?
__কিছু হয়নি যেটা বললাম সেটা কর।ওর নাম্বারটা আমায় মেসেজ করে দে।
একটু পর মেসেজে পাওয়া নেহার নাম্বারটায় ফোন দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ। এবার আরো টেনশন হচ্ছে।এখানে কোথায় খুজবো ওকে।এই জায়গাটাতো আমিও ঠিক করে চিনি না।কয়েক বার নেহা নেহা বলে ডেকেও কোনো লাভ হলো না।এবার মেজাজটা চরম পর্যায়ে চলে গেছে।
আরে ওইটা কি? নদীর পাড়ে একটা মেয়ে দারিয়ে মনে হচ্ছে?কে মেয়েটা? আরে মেয়েটাকে তো নেহার মতোই লাগছে।ওটাই নেহা নয়তো??
নদীর পাড়ের দিকে যেতে লাগলাম। কেনো জানিনা মনে হচ্ছে এটা নেহা।আরেকটু যেতেই পুরোটা বুঝতে পারলাম, হ্যা এটা তো নেহাই। আজ ওর খবর আছে।
নেহা আমায় আসতে দেখে মহা খুশিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর এদিকে তো আমার মাথায় রক্ত উঠে গেছে। ওর কাছে যেতেই গালে কষে একটা চর বসিয়ে দিলাম।
__তোমার মাথায় কি মিনিমাম সেন্স নাই হ্যা?এভাবে কেউ না বলে চলে আসে?তোমার কতো খুজেছি তার কোনো ধারনা আছে??আর এখানল একা একা আসার সাহস কোথায় পেলে? (প্রচন্ড রেগে কথাগুলা বললাম)
__(গালে হাত দিয়ে চুপ করে দারিয়ে আছে)
__কি হলো কথা বলছো না কেনো?আমার কথাকু শুনতে পারছো না?আজ যদি তোমার কিছু হতো তাহলে সবাইকে আমি কি বলতাম?মাথায় কি বুদ্ধি বলতে কিচ্ছু নেই
__সরি(নিচু স্বরে)
__ধুর রাখো তোমার সরি।এখানে আসার আগে আমায় বললে কি হতো?
__আসলে আমি বুঝতে পারিনি
__তা পারবে কেনো, সবসময় তো আবেগে মেতে থাকো
__সরি বললাম তো।এরকম আর হবে না
__হলেও আমার কিছু যায় আসে না
__আমি কি এমনি এসছি নাকি?দেখছেন কতো সুন্দর কাশফুল? এগুলা নেওয়ার জন্যই তো এসেছি(হাতে রাখা অনেকগুলা কাশফুল দেখিয়ে বললো)
__তুমি কাশফুল লেওয়ার জন্য এখানে এসছো?(অবাক হয়ে)
__নয়তো কি। আপনিতো আমায় কিছু বলতেই দিচ্ছেন না শুধু বকেই যাচ্ছেন। (কাদতে কাদতে)
কথাগুলি কান্না করতে করতে বললো। এবার আমার নিজের ওপর একটু রাগ হচ্ছে। মেয়েটাকে এতো জোরে চর দেওয়াটা ঠিক হয়নি।ফর্সা গালগুলা লাল হয়ে গেছে।
__খুব লেগেছে?
__না(চোখের জল মুছে অন্যদিকে ঘুরে)
__কি করবো বলো রেগে গেলে মাথাটা ঠিক থাকে না
__সেজন্য এতো জোরে মারবেন?
__আমিতে এতো জোরে মারতে চাইনি।তাছাড়া আমার কতো টেনশন হচ্ছিল জানো?পৃথিবী অব্ধকার হয়ে গেছিল
__হইছে। এখন আমায় মারার শাস্তি আপনায় পেতে হবে
__শাস্তি?? কি শাস্তি??
__আমি ওই নৌকায় উঠবো আর আপনি আমার নৌকার মাঝি হবেন
__বল্লেই হলো নাকি? আমি নৌকা চালাতে পারিনা
__এ্যায়ায়ায়া(কান্না করতে করতে)
__না না না না পারি তো।যাও তুমি ওঠো
__গুড বয়
__(উফফ কি পাগলি মেয়েরে বাবা)
নৌকায় উঠে লাঠি দিয়ে ঠেলতে ঠেলতে নেহার কাছে আনলাম।
__নাও ওঠো
__নৌকাটা এতো দুলছে কেনো? উঠতেই তো পারছি না
__তো আমি কি করবো?এমনিতেই পারবা।
__হাতটা ধরেন
__পারবো না
__এ্যায়ায়ায় এ্যায়ায়া
__কই দাও হাত দাও (হাত বারিয়ে দিলাম)
__এক কথা একবার বললে শুনেন না কেন হুম?
নেহার হাত ধরে নৌকায় তুলতেই ও ইচ্ছে করেই আমায় জলে টেনে ফেলে দিলো।আমার সারা শরীর ভিজে গেছে।রক্ত মাথায় উঠে গেছে,আর ওদিকে পাগলিটা হেসেই যাচ্ছে।ওর হাসিটা দেখে কেন জানিনা সব রাগ নিমিষেই হারিয়ে গেলো।হাতে তালি দিচ্ছে আর খিলখিল করে হেসেই যাচ্ছে।
নীল__হোয়াট দ্যা হেল?
আমি__দারান আগে হেসে নেই
__আমি কি সার্কাস দেখাচ্ছি (ধমক দিয়ে)
__আপনায় দেখে হাসি আটকাতে পারছি না
__তবে রে
বলেই নীল ভাইয়া আমার হাত টেনে জলে নিয়ে যেতে চাইলে আমি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বাধা দিলাম।কিন্তু উনি হার না মেনে আমায় কোলে তুলে জলে ফেলে দিলো।কোলে নেওয়ার ব্যাপারটা আমার তেমন একটা ভাল লাগেনি। লজ্জা করছে অনেক।আমিও সব ভুলে ওনাকে শক্ত করে ধরে ছিলাম।পানিতে ফেলে দেওয়ার পর —
নীল ভাইয়া__এবার হাসো?
আমি__(চুপ করে আছি)
__আময় ফেলে দিয়েতে খুব মজা নিচ্ছিলে এবার কি হলো?
__আমি ফেলেছি সে জন্য আপনিও ফেলে দিবেন?
__নীল কখনো কারো ধার বাকি রাখে না
__আপনি খুব পঁচা
__সেটা আমি জানি
__আমার যদি জ্বর হয় তখন?
__হলে হবে তাতে আমার কি
__আমি অসুস্থ হলে আন্টিকে বলে দিবো সব আপনার জন্য হইছে
__যা ইচ্ছে বলতে পারো।কোনো সমস্যা নাই
__আপনি একটা।
__এখন কি এখানেই থাকবো নাকি যাবো?
__হুম চলেন।
উনি জল থেকে উঠে যেতে লাগলো আর আমিও পিছন পিছন হাটছি।বাইকের কাছে যাওয়ার পর
নীল ভাইয়া__এই নাও এটা পড়ো (বাইক থেকে ওনার একটা জ্যাকেট দিয়ে বললেন)
__আমি এটা পড়বো?
__হ্যা
__এটাতো ছেলেদের
__তো কি হইছে?এই ভেজা শরীরে গেলেতো অসুস্থ হয়ে পড়বে।এটা পড়ো
__আপনি কি পড়বেন?আপনারো তো ঠান্ডা লাগবে
__আমার চিন্তা তোমায় করতে হবে না। যা বলছি তাই করো।আর তোমার তো খুদা লাগেছে।কিছু খাবে?রুটি আর চা খাবা?
__না কিছু খাবো না।বাসায় চলেন।
তারপর চুপচাপ জ্যাকেটটা পড়ে নিলাম।ভাইয়া বাইক স্টার্ট করলেন।গোধুলি লগ্ন পরে গেছে।চারিদিকটা কতো সুন্দর লাগছে।ইচ্ছে করে এই অপরুপ যায়গায় হারিয়ে যাই।আজ কাল তো সব কিছু যান্ত্রিক মনে হয়,নিঃপ্রান,কেমন জানি রোবট হয়ে গেছে সবাই।আচমকাই বাইক থামালেন।সামনে তাকিয়ে দেখি আমার বাসায় চলে আসছি।আমি নামতেই বাপি বেড় হলো।
বাপি__কিরে মা এতো দেরি হলো কেনো?রিক্সায় তোর লাগেজ গুলা সেই কখনি এসেছে কিন্তু তুই নেই,আর তোর ফোন বন্ধ কেনো?কোনো বিপদ হয়ে ছিল?
__আরে বাপি এতো চিন্তা কোরো না তো।আমার কিচ্ছু হয়নি চার্জ নেই তাই ফোনটা ওফ হয়ে গেছে
বাপি__আমি কতো চিন্তায় ছিলাম।তোর গা দিয়ে তো পানি পড়ছে।ভিজলি কিভাবে?
__ও কিছু না বাপি পড়ে একসময় বলবো
__এই ছেলেটাকে তো চিনলাম না(ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললো)
আমি__বাপি উনি নীল ভাইয়া। নীলার ভাইয়া।
নীল ভাইয়া __আঙ্কেল ভাল আছেন? (বাপির উদ্দেশ্য বললেন)
বাপি__হ্যা বাবা ভাল আছি।এই দেখেছো এতো কিছুর মধ্যে তোমায় ভেতরে ডাকতেই ভুলে গেছি। আসো ভেতরে আসো
নীল ভাইয়া__আঙ্কেল আজ থাক।অন্য একদিন আসবো নি
বাপি__কোনো কথা শুনবো না। চলো
বাপি জোর করে নীল ভাইয়ার হাত ধরে টানতে টানতে বাসায় নিয়ে গেলেন।।
বাপি__তোমাদের দুজন ই তো ভিজে আছো।এক কাজ করো চেঞ্জ হয়ে নাও তারপর অনেক গল্প করবো আজ।এই নেহা মা নীলকে একটু দেখিয়ে দে তো।নীল তুমি নেহার সাথে যাও আমি বাজার থেকে আসছি কারন আজকেই তো আসলাম তাই বাজার করা নেই। বুঝতেই তো পারছো
নীল ভাইয়া __হ্যা আঙ্কেল সমস্যা নাই আপনি যান।
আমি__এইযে মিঃ আমার পিছু পিছু আসেন (ভাইয়া কে বললাম)
আর উনি বাধ্য ছেলের মতো আমার পিছন পিছন আসছেন।ওনাকে আমার রুমে নিয়ে এসে ওয়াসরুম দেখিয়ে দিলাম।উনি ওয়াসরুমে যাওয়ার পর আমি অন্য ওয়াসরুমে গেলাম ফ্রেশ হতে।
ও মাই গড আমার জামা কাপর তো আমার ঘরে রাখা আছে।সাথে নিতে ভুলে গেছি।এবার আনবো কিভাবো?এখানে তো একটা টাওয়াল ছাড়া কিছুই নেই।নীল ভাইয়া মনে হয় এখনো ওয়াসরুমেই আছে এই টাওয়ালটা পেচিয়ে চট করে নিয়ে আসি।তারপর চুপিচুপি আমার রুমে চোখ বুলালাম।নীল ভাইয়া কই?রুমে তো দেখতে পাচ্ছি না।যাক এখনো তাহলে বেড় হয়নি এই সুজগে জামা কাপর গুলা নিয়ে তারাতারি পালাই।বিছানা পাশে জামাগুলা রাখা ছিল।জামা নিয়ে পিছন ঘুরতেই দেখি নীল ভাইয়া দারিয়ে আছে।হঠাৎ দেখে ভয়ে হাত থেকে জামাগুলা মাটিতে পড়ে গেল।আর আমি এক হাত দিয়ে টাওয়ালটা সামলাচ্ছি। এই সময়ে হারামি টাওয়ালটাও এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
ওদিকে নীল ভাইয়া এক পা এক পা করে আমার দিকে এগোতে লাগলো। আর ভয়ে আমার শরীর হীম হতে লাগলো। উনি এক পা এগোচ্ছেন আর আমি এক পা করে পিছনে যাচ্ছি। একসময় পিছুতে পিছুতে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেলাম।নীল ভাইয়া একিভাবে এগোচ্ছে তো এগোচ্ছে।
আচ্ছা উনি এভাবে আমার দিকে এগোচ্ছে কেন?ইচ্ছে করছে বিলাইটার লম্বা লবা চুলগুলা ছিড়ে ফেলি।এক পর্যায়ে উনি এতোটাই আলায় কাছে আসলেন যে ওনার নিশ্বাস আমায় মুখে এসে পড়ছে।ভয়ে আর লজ্জায় আমি চোখ বন্ধ করলাম।উনি হাত দিয়ে আমার সামনের চুলগুলা সরিয়ে দিয়ে নখ দিয়ে আমার ঠোঁটে হালকা স্পর্স করলো।খুব জেরে চোখ বন্ধ করে আছি।এরপর যা হলো সেটা আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি।
চলবে?
#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
[9]
হালকা স্পর্স পেয়ে কেপে উঠলাম।মনের ভিতর এক অজানা ভয় কাজ করছে।কি করবো বুঝতে পারছি না।
একটু পর নীল ভাইয়া ওনার ঠোঁট আমার ঠোঁটের সাথে মিলিয়ে দিলেন।আর আমি যেন অন্য দুনিয়ার ভেসে যাচ্ছি।ওনাকে অনেক সরাতে চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।উনি দেয়ালের সাথে আরো জোরে চেপে ধরতেই আছে।ব্যাথায় আমার চোখ দিয়ে জল পড়লে লাগলো।প্রায় কিছুক্ষণ পর আমায় বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে উনি রুম থেকে চলে গেলেন।
বিছানা থেকে উঠে আয়নায় গিয়ে দেখলাম ঠোঁটটা অনেকদূর কেটে গেছে রক্ত পড়ছে।কিন্তু নীল ভাইয়ার ওপর অনেক ঘৃনা হচ্ছে। কি করে করতে পারলেন উনি এটা? পৃথিবীর সব থেকে খারাপ মানুষ হিসেবে নীল ভাইয়াকে বেছে নিলাম।ঠিক করলাম এখন থেকে ওনার সাথে কোনো কথা বলবো না।
বেশি চিন্তা করকে আমার খুব তারাতারি ঘুম চলে আসেতাই এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।ঘুমের ঘোরে ঠোঁটে কিছুর একটা স্পর্স পাচ্ছি। এতোটাই ঘুম ছিল যে চোখটা খুলতে পারছিলাম না।কিন্তু ভাল ভাবেই বুঝতে পারছি কেউ আমার ঠোঁটে স্পর্স করছে।অনেক চেষ্টার পর চোখ খুলতেই দেখি সেই ছায়ার আড়ালের লোকটি।আমি ভয়ে চমকে উঠলাম। উনি একটা চিরকুট আমার হাতে দিয়ে চলে গেলেন।কি আছে এই চিরকুটে?এই লোকটা ছায়ার আড়ালে থেকে চিরকুট কেনো দেয় আমাকে?কে এই লোকটা।আগে দেখি কি লেখা এখানে,চিরকুটটা পরার পর আমি ভিষন ভয় পেয়ে গেলাম কি করবো বুঝতে পারছি না।সেখানে লিখা ছিল
কেউ তোমার দিকে তাকালেও মেনে নেইনি সে যায়গায় তোমায় কেউ স্পর্স করলো। এটা আমি কখনোই মেনে নিবো না।নীলকে তো এর শাস্তি পেতেই হবে। সেটা ওর জীবন দিয়ে হলেও দিতে হবে।
আমার এখন কি করা উচিত? নীল ভাইয়াকে কি ব্যাপারটা জানাবো? নাহ্ আজ উনি যে কাজটা করেছে তারজন্য ওকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না।ওনার শাস্তি পাওয়ারি দরকার তাহলে অনেক খুশি হতাম।কিন্তু এই লোকটাতো পুরায় একটা ডেভিল । যদি নীল ভাইয়ার সত্যি বড় কোনো ক্ষতি করে দেয় তাহলে?? যেনে শুনে কারোর বিপদের কথা তাকে না বলাটা কি ঠিক হবে?? না কখনোই না,নীল ভাইয়া না হয়ে অন্য কেউ থাকলে অবশ্যই জানাতাম কিন্তু এখন ওনার ওপর ঘৃনা হচ্ছে আমার।।।
এগুলা ভাবতে ভাবতে আবারো ঘুমিয়ে পড়লাম।সকালে ফোনের শব্দে ঘুম ভাংলো। স্কিনে নীলার নাম। বুকটা হঠাৎ কেঁপে উঠলো।এতো সকালে নীলার ফোন? নীল ভাইয়ার কি কোনো ক্ষতি করে দিয়েছে ওই লোকটা?? আগে ফোনটা রিসিভ করি
রিসিভ করতেই
__হ্যা হ্যা হ্যালো নেহা (কান্না জরিত কন্ঠে)
__কাঁদছিস কেন?কি হয়েছে?
__ভা ভা ভাইয়া
__ভাইয়া?? কি হয়েছে ভাইয়ার?? কি হলো বল কি হয়েছে??
__ভাইয়ার এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে(খিব জোরে কেদে কেদে)
__কিহ্? (কথাটা শোনা মাত্র অজান্তেই চোখের কোনে থেকে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল।তার মানে কি ওই লোকটা সত্যি সত্যি।, ও মাই গড। সব আৃার জন্য হয়েছে আমি যদি কাল জানিয়ে দিতাম তাহলে এসব হতো না।আজ নীল ভাইয়ার কিছু হলে নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না)
__হ্যা তোকে বাসায় রেখে আসার পথে হয়েছে।মাথা দিয়ে অবেক রক্ত বের হয়েচে
__তুই কাদিস না।কোন হয় হসপিটালে তোরা?
__সিটি হসপিটালে
__আমি ৫মিনিটের মধ্যে আসছি
যতো দ্রুত সম্ভব হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা হলাম।খুব খারাপ লাগা কাজ করছে মনে মনে।আজকে রাস্তাটাও যানি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।হসপিটালে পৌছার পর দেখি ওখানে আঙ্কেল আন্টি নীলা বসে কেদেই চলেছে।আমায় দেখে নীলা জরিয়ে ধরে অনেক কাদলো।এবার আমারো অনেক খারাপ লাগছে।সব আমার জন্য হলো।আরেকবার লোকটা এলে এর হিসাব বুঝে নিবো।আন্টি আমায় দেখে কেদে কেদে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়লেন।ওনাকে শান্তনা দিচ্ছি তখনি আই সি ইউ থেকে ডাক্তার বেড় হলেন।
আঙ্কেল __ডাক্তার আমার ছেলের কি অবস্থা? ও ভাল আছে তো?
ডাক্তার __এখনো আমাদের হাতে কিছু নেই। আমরা চেস্টা করে যাচ্চি।হাতে আর মাথায় বেশ চোট পেয়েছে
আঙ্কেল __ডাক্তার বাবু যে ভাবেই হোক আমার ছেলেকে বাচান প্লিজ ( কেদে কেদে)
__আমরা সকল চেষ্টা করবো। বাকিটা ওপরওয়ালার কাছে
বলে ডাক্তার চলে গেলেন।এভাবেই সারাদিন কেটে গেলো।সন্ধায় ডাক্তার বাবু এসে বললেন নীল ভাইয়ার জ্ঞান ফিরেছে। কথাটা শুনে যেন সবার দেহে প্রান ফিরলো
আন্টি__ডাক্তার বাবু আমি আমার ছেলের সাথে দেখা করতে পারবো?
ডাক্তার __হ্যা পারবেন কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য
এরপর আন্টি, আংকেল আর নীলা নীল ভাইয়াকে দেখার জন্য গেলেন।আমি বাহিরেই অপেক্ষা করছি। আমারো অনেক ইচ্ছে করছে ওনাকে দেখতে।একটু পর আন্টি বের হয়ে আমায় বললো আমি যাবো কিনা,আমি হ্যা সূচক দিয়ে নীল ভাইয়ার কাছে গেলাম।মাথায় হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ করা, এ অবস্থায় দেখে বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে গেলো।ওনার সামনে হাটু গেড়ে বসে হাতটা ধরে অনেক কাদলাম।কেনো জানিনা খুব কাদতে ইচ্ছে করছে।ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি চোখে পানি।পানিটুকু মুছে দিলাম তখনি নার্স এসে জোর করে বাহিরে বের হতে বললেন।ডাক্তার বললো রাতে কাউকে থাকতে।আমি অনেকবার ভেবেছিলাম যে আমি থাকবো কিন্তু সমাজে সেটা ভাল দেখাবে না।সমাজ এটাকে মেনে নিবে না।তাই রাতে আন্টি থাকলো।আর আমায় জোর করে বাসা পাঠিয়ে দিল। রাতে শুয়ে আছি আর নীল ভাইয়ার জন্য চোখের জল ফেলছি।আর মনে মনে অনেক রাগ হচ্ছিল যদি লোকটি আজ আসে তাহলে ওকে ছাড়বো না।
পরের দিন সকালে যা হলো সেটা আমি কখনোই ভাবতে পারি নি..
সকালে উঠে দেখি আমার রুমে কয়েকশো বেলুন দিয়ে সাজানো।বিছানা,দেয়ালে সব যায়গায় বেলুন দিয়ে পরিপূর্ণ।আর প্রতিটা দেয়ালে খুব সুন্দর করে লেখা “হ্যাপি বার্থ ডে”।রুমটা আমার মনের মতো করো সাজানো।শুধু বেলুন না গোলাপ ফুলেরো সমাহার।চারিদিকে কয়েক রকম ফুলের সাজসজ্জা আর মন মাতানো সৌরভ।
মানে কি? আজ যে আমার জন্মদিন সেটা আমারি মনে নেই আর এগুলা কার কাজ? বাপি করেছে এগুলা?নাহ্ বাপি করেছে বলেতো মনে হচ্ছে না।ভাবতে ভাবতে দেয়ালে দেখলাম একটা চিরকুট ঝুলছে।সেখানে লেখা –
হ্যাপি বার্থডে মাই প্রিন্সেস। এবারের উইস টা আড়ালেই করলাম তবে পরের বার তোমার সামনে দারিয়ে উইস টা করবো।আজ তোমার জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে।এখন চট করে ফ্রেস হয়ে নাও তো।
ব্যাপারটা জানতে বাপিকে ডাকলাম-
বাপি, বাপি কই তুমি
এইতো মা তোর কফি বানিয়ে নিয়ে আসলাম।আরে? রুমে এতো বেলুন আসলো কোথা থেকে?
তার মানে এগুলা তুমি করোনি?তাহলে কে করলো
আমিতো তোকে অন্য একটা সারপ্রাইজ দিবো ভেবেছি।কিন্তু নেহা মা রুমটা এতো সুন্দর করে কে সাজালো?
বাপি সেটাতো আমিও বুঝতে পারছি না। আর এই চিরকুট এ লেখা আজ নাকি অনেক কিছু অপেক্ষা করছে আমার জন্য।
তোর বান্ধবীদের কাজ এটা মনে হয়।তুই ফ্রেস হয়ে নিচে আয় কলেজের সময় হয়েচে তো
আচ্ছা তুমি যাও।
ফ্রেস হতে ওয়াসরুমে যেতে দেখি বিশাল একটা টেডি বিয়ার।এতো বড় বিয়ার আমি কখনো দেখিনি।ছোট থেকেই এমনিতেই আমার বিয়ার খুব পছন্দের আর এতো বড় বিয়ার দেখে জরিয়ে ধরলাম।তখনি দেখলাম বিয়ারের বুকের যায়গাটায় একটা চিরকুট। ওখানে লেখা ছিল
এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমার ভালবাসার মানুষটার জন্য তো এইটুকু করতেই পারি তাই না।আর চুল গুলা ঠিক করো পাগলি পাগলি লাগছে।আমি থাকলে হয়তো এতোক্ষণে ঠিক করে দিতাম। এখন ফ্রেস হয়ে নাও
ওয়াসরুমের আয়নায় দেখলাম সত্যিই তো চুলগুলা এলোমেলো হয়ে আছে।যে এগুলা করছে সে কি আমার আশে পাশে আছে?নইলে আমি কোন অবস্থায় আচি বুঝছে কিভাবে?চারিদিকে ভাল করে দেখলাম কেউ তো নেই, কোনো ক্যামেরা আছে নাকি সেটাও দেখে নিলাম কিন্তু কিচ্ছু নেই। ফ্রেস হয়ে নিচে আসলাম।বাপি আমার জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়ে বসে আছে।একসাথে ব্রেকফাস্ট করে কলেজের উদ্দেশ্য বেড় হতেই দেখি বাহিরে একটা নতুন স্কুটি দার করা।
ওয়াও এতো সুন্দর একটা স্কুটি, কিন্তু কার এটা? এখানে কেন?তখনি পিছন থেকে বাপি একটা চাবি দিয়ে বললো” হ্যাপি বার্থডে মামনি”। আমার পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা উপহার
__ঠাংকু বাপি আ লাবু
__আ লাবু তু। রাস্তার চারিদিকে দেখে আস্তে আস্তে সাবধানে চালাবি
মনে আর আনন্দ ধরছে না।কি যে খুশি লাগছে বলে বুঝাতে পারবো না।বাপিকে কবে থেকে বলছি স্কুটি কিনে দিতে কিন্তু বাপি বলতো “মেয়েদের ওসব স্কুটির কোনো দরকার নেই ” আর বারবার আমার মন খারাপ হয়ে যেত।সে যায়গায় আজ বাপি নিজেই এতো সুন্দর একটা স্কুটি কিনে দিলো।বাবারা এতো অদ্ভুত হয় কেনো??
নতুন স্কুটি পেয়ে আজ কলেজ যাওয়ার ইচ্ছে প্রবল বেড়ে গেল।বাপির কথা কে শোনে অনেক জোরে চালিয়ে কলেজে পৌছে ফিল্মি হিরোদের স্টাইলে নামলাম।আজ নিজেকে সেলিব্রিটি মনে হচ্ছে। আমায় দেখে দীপা,সাদিয়া,নিশু সবাই দৌড়ে এসে আমায় সরে দিয়ে একজন স্কুটির ওপর বসে আছে আরেকজন পিক তুলছে।আমার হাত থেকে চাবি নিয়ে দীপা স্কুটিটা নিয়ে গেলো।আর আমি মনে মনে ভাবছি এরা কারা?আমার স্কুটি নিয়ে এতো কিছু করছে আর আমাকেই পাত্তা দিচ্ছে না?
এগুলা ভাবতে ভাবতে একটা আওয়াজ পেলাম।ও মাই গড!! আমার স্কুটিটা মাটিতে একটা ছেলের গায়ের ওপর পড়ে আছে, আর দীপা মাটিয়ে বসে কান্না করছে। এটা দেখে আমার যায়যায় অবস্থা। শয়তানিটা আমার নতুন স্কুটিটা নিয়ে এক্সিডেন্ট করছে,তাও আবার একটা ছেলের সাথে।আমি দৌড়ে গিয়ে স্কুটিটা চেক করছি কিছু হলো কি না,নাহ্ সব ঠিকি আছে।কারন স্কুটিটা একটা ছেলের ওপর পড়েছে সে জন্য কোনো কিছু হয়নি।
দীপা__কুত্তী আমার চেয়ে তোর স্কুটি বেশি দামি হলো?হারামী তোল আমায়
__তোরে তো খাইছি আমার নতুন স্কুটি ফেলে দিয়া আবার কথা বলতেছিস দারা
__দোস্ত পড়ে মারিস এখন টেনে তোল কোমর ভেঙে গেছে মনে হয়
ওকে তুলে ছেলেটাকে দেখতেই চমকে উঠলাম। আরে এটাতো জয় ভাইয়া!নীল ভাইয়ার বন্ধু,সেদিনি তো নীল ভাইয়া এনার সাথে পরিচয় করে দিয়েছিল। এই রে কি যে হবে
কলেজ ক্যাম্পাসে স্কুটি চালাও ঠিক আছে কিন্তু কে কোথায় আছে সেটা তো দেখে চালাবে নাকি(যে ছেলেটির সাথে এক্সিডেন্ট হইছে সে ছেলেটা)
দীপা__ওই আমি দেখেই চালাইছি। আপনি সামনে আসলেন কেন?
ছেলেটা__আমি সামনে এসছি?একে তো দোষ করছো তার ওপর আমায় দোষারোপ করছো
দীপা__মোটেও না আপনি সামনে চলে আসছেন
এই তোমরা থামো।দীপা তুই এতো কথা বলছিস কেনো? চুপ কর আমি দেখছি ব্যাপারটা
__জয় ভাইয়া ও আমার বান্ধবী।ও ড্রাইভিং ভাল জানে না।প্লিজ মাফ করে দেন
জয় ভাইয়া__নেহা তুমি! আচ্ছা ঠিক আছে মাফ করে দিলাম।তবে একটা শর্ত আছে
__কি শর্ত?
__তোমার বান্ধবীকে বলো আমায় যেন সরি বলে
__আচ্ছা আপনি একটু জাস্ট ওয়েট করেন
__হুম
দীপার কাছে এসে–
__ওই হারামি যা ওনাকে সরি বল।
__পাগল হইছোস নাকি??আমি সরি বলতে যাবো কেন?
__কেন মানে?তুই ওনার ওপর স্কুটি ফালায় দিলি তো সরি বলবি না?
__আমি পারবো না।এমনিতেই কোমরে ব্যথা হচ্ছে। হাতটাও ভেঙে গেছে মনে হয়
__হইছে থাক আর বলতে হবে না।পড়ে গিয়ে হাতটা ঘাসের সাথে একটু লাগছে।কেটেও তো যায়নি আবার বলে ভেঙে গেছে
__তুই কি আমার বান্ধপি নাকি ওই আবুলটার হ্যা?
__দোস্ত বুঝার চেষ্টা কর।আর সরি বললে তো কেউ ছোট হয় না।বরং ব্যাক্তিত্বের নিদর্শন পাওয়া যায়।আমার কথাটা একটু রাখ প্লিজ
__আচ্ছা ঠিক আছে
তারপর দীপা গিয়ে জয় ভাইয়াকে সরি বললো।আর জয় ভাইয়া ড্যাবড্যাব করে দীপার দিকে তাকিয়ে আছে।বিষয়টা কেমন লাভ এট সাইট মনে হলো।এরপর সবাই মিলে ক্যম্পাসের বট গাছটায় বসলাম।হঠাৎ আদনানের কথা মনে হলো।সেদিনের পর কয়েকবার ফোন দিছিলাম বাট কোনো রেসপন্স পাইনি।কলেজেও তো দেখছি না।কোথায় ও? আমার জন্য আজ ওর এই অবস্থা।একটু পর ক্লাসের সময় হলে ক্লাসে গেলাম।ক্লাস থেকে বেড় হতেই সারা ক্যাম্পাস জুরে ফুল দিয়ে ভরা।কোথাও ঘাস দোখা যাচ্ছে না।বর্তমানে আমি আর আমার বান্ধবীরা ক্যাম্পাসের মধ্যে স্থানে।তারপর অনেক জোরে কিছু রোমান্টিক নয়েস আসছিলো।আর একটা মাইক এ কেউ একজন আমার বান্ধবীদের যেতে বললো।আমি বাধা দেওয়া সত্বেও চলে গেল।এখন আমি ক্যাম্পাসের মাঝে একা দারিয়ে আছি।চারিদিকে স্টুডেন্টরা ঘিরে ধরে এসব দেখছে।কয়েকটা ছেলে এসে নিমিষে আমার চারিদিকে বেলুন দিয়ে সাজিয়ে দিলো।আর কেউ একজন মাইকে বলছে–
নেহা আমি জানি তুমি অনেক অবাক হচ্ছো।তোমার মনে হচ্ছে আড়ালে থাকা এই লোকটা কে, কে তোমায় এভাবে ডিস্টার্ব করছে তাই না? আসলে কি জানো তো ভালবাসাটা একেকজন একেকভাবে প্রকাশ করে আর আমি না হয় এভাবেই করলাম।অনেক ভালবাসি নেহা অনেক অনেক অনেক ভালবাসি।আমি সারাজীবন এইভাবেই ভাল বাসতে চাই।তুমি আমার ছিলে আছো থাকবে।এটা আমার দেওয়া জন্মদিনে তোমার কাছে শেষ সারপ্রাইজ।
আর এদিকে লজ্জায় আমি মরে যাচ্ছি। তবে কিছুটা ভালোও লাগছে।কেউ আমায় নিয়ে এতোটা ভাবে,আমায় এতো ভালবাসে কিন্তু কে সে?? আমার সামনে আসছে না কেন? আর ভাবতে পারছি না।ক্যাম্পাসের সবাই আমার দিকে চেয়ে আছে।আমি আর এক মুহুর্ত না দারিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
কি হচ্ছে এসব? আজ কলেজে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটবে কখনো ভাবতেই পারিনি।তখনি ফোনটা বেজে উঠলো।স্কিনে দেখলাম নীলা ফোন করছে।রিসিভ করতেই —
নীলা__হ্যাপি বার্থডে বাবু
__ঠাংকু।আচ্ছা রে নীল ভাইয়া এখন কেমন??
__এখন ভাল আছে।আজ সকালেই রিলিজ নিয়ে বাসায় নিয়ে এসছি
__থ্যাংস গড! দোস্ত আমি বিকেলে তোদের বাসায় যাচ্ছি
__হুম আয়। মা তোর জন্য কেক বানাচ্ছে। তোকে আসার জন্য ফোন করেছিলাম
__আর আজ কলেজে একটা ঘটনা হইছে
__কি?
__থাক বাসায় গিয়ে বলবোনি
__আচ্ছা।
ফোন কেটে দিয়ে বিছানায় শুয়ে ফোন টিপছি হঠাৎ একটা ভিডিও আসলো।ভিডিওটা দেখে চমকে উঠলাম।
চলবে?