তবু মনে রেখো ০৯,১০

0
466

তবু মনে রেখো ০৯,১০
লেখা: জবরুল ইসলাম
(৯ম পর্ব)
.
বাড়ির রাস্তায় পৌঁছে দেখা গেল সবাই তুমুল ব্যস্ত। বারান্দায় পুরাতন আসবাবপত্র বের করা হয়েছে। একজন কাজের লোকও হায়দার সাহেব এনেছেন। উঠানে এসে সিএনজি থামতেই ইমা দৌড়ে এলো। ইমাদ নেমে বললো,

– ‘কিরে আজ কলেজে গেলি না?’

ইমা জবাব না দিয়ে ভাবিকে নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। হায়দার সাহেবও এগিয়ে এসেছেন। ইমাদ ভেতরে চলে গেল। তাদের রুমের মালপত্র সবকিছু বাইরে। ফাঁকা ঘর। পুষ্পিতাকে ইমা নিজের রুমে নিয়ে বসালো। হায়দার সাহেব এসে ইমাদকে বললেন,

– ‘যাও বাবা, রইসুরে নিয়ে পালঙ্কটা সেটিং করো৷’

ইমাদ কাপড় পালটে সেদিকে চলে যায়। তার বাবার আনন্দটা সে বুঝতে পারছে। সবাইই এরকম আনন্দিত হয়। কিন্তু ইমাদ এই আনন্দের কারণ আগে থেকেও বুঝতে পারতো না। এখন নিজে পেয়েও অনুভব করতে পারছে না। তাহলে কি বাবার কথাই ঠিক, সে ব’লদ শ্রেণির মানুষ। ছোটবেলা থেকেই গুরুজনদের থেকে এই গা’লিটাই সে খেয়ে এসেছে৷ তাই অনেক ভাবনাই প্রকাশ করার সাহস হয় না। তার ধারণা এই নিয়মটার কোনো ভালো যুক্তি নেই৷ একটা মেয়েকে আমার ঘরে বিয়ে করে আনলাম, সে এসে এখানে ঘুমানোর জন্য পালঙ্ক নিয়ে আসতে হবে? কাপড় রাখার জন্য আলমারি নিয়ে আসতে হবে? এটা কেমন যুক্তি, এটা কেমন কথা। ইমাদ একবার ফুফাতো ভাইয়ের বিয়েতে গিয়ে প্রচণ্ড অবাক হয়েছিল। বিয়ের আগেরদিন পালঙ্ক, সোফা, আলমারি সহ যাবতীয় জিনিসপত্র এসেছে। ফ্যামিলির মুরব্বিরা হাত দিয়ে ভালোভাবে দেখে এগুলো কোন গাছের কাঠ হতে পারে, ভালো কি-না মন্দ এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন৷ ফুফাতো ভাইও তাকে একবার বললো, ‘মালগুলো ভালোই দিয়েছে কি বলিস?’
সেদিনও তার কাছে মনে হয়েছে এরা এত খুশি হচ্ছে কেন, এগুলো নিয়ে আলোচনাই তো লজ্জার। তবে মাঝে মাঝে মনে হয় এগুলোই হয়তো নিয়ম। এটাই হয়তো সমাজ। তার মতো ব’লদ শ্রেণির মানুষের নিয়ম নিয়ে ভাবনার কথা নয়। নিয়ম ভাঙার স্পর্ধা দেখানোর জ্ঞান-বুদ্ধি আর সাহস তাকে দেয়া হয়নি৷ তার কাছে জীবন খুবই সহজ, সরল। পালঙ্ক না থাকলে ফ্লোর আছে। আলনা না থাকলে রশি আছে৷ সোফা না থাকলে পাটি আছে। অবশ্য এরকম শোচনীয় অবস্থায় কেউ দান করলে ভিন্ন কথা। গরিবদের সমাজে চিকিৎসার টাকা দেয়া হয়। গৃহহীন মানুষকে ঘর বানিয়ে দেয়া হয়। সেরকমই যদি আর্থিক সচ্ছল শ্বশুরবাড়ি থেকে দেয়, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু নিজেরই প্রাপ্য ভেবে, সেটাকে নিয়ম বলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে আদায় করাটাই সমস্যা। এই কথাগুলো কাউকে বললেই হেঁসে উড়িয়ে দিয়ে ব’লদ বলে গা’লি দেবে। অসংখ্য সরল আর সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব’লদ শ্রেণির মানুষের মতো তার ভেতরেও বি’দ্রোহ জাগে না। প্র’তিবা’দী, বি’দ্রোহী হতে হলে নিজের মতাদর্শের প্রতি যে আত্মবিশ্বাসটুকু থাকতে হয়, তাদের হয়তো সেটা ক্রমশই বিলুপ্ত হয়ে যায়। ইমাদ আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে রইসুর সঙ্গে কাজে লেগে পড়ে। জোহরের আগেই সবকিছু গোছানো হয়ে গেল। গোসল করে, খাওয়া-দাওয়া শেষে চলে গেল সে বাজারে। কিন্তু এই ব্যস্ত, কোলাহলে থেকেও সে যেন বারবার একা হয়ে যাচ্ছিল। পুষ্পিতার কথা ভাবছে। কোনোভাবেই কাজে মন বসছে না। আসরের আগেই কর্মচারি শফিককে বললো,

– ‘আমি চলে গেলে পারবি না একা? ভালো লাগছে না৷ নামাজ পড়ে চলে যাব।’

সামনের দোকান থেকে সমবয়সী একজন বললো,

– ‘পারবে ভাই পারবে, তুমি যাও। নতুন বিয়ে করছো দোকান-টোকান বন্ধ থাকুক কিছুদিন। এগুলো ব্যাপার না।’

ওর পাশের দোকান থেকে একজন বললো,

– ‘এভাবে বউ রেখে দোকানে এসে বসে থাকলে হঠাৎ একদিন দেখবা মিয়া বউ নাই।’

সবাই এক সঙ্গে হেঁসে উঠলো। ইমাদ ওদের রসিকতার ভাষা বুঝতে পারে। তর্কে জড়ায় না, কথা বাড়ায় না৷ পুষ্পিতাকে সে ভালোবাসে। সমাজ, মানুষ কি বললো তাতে তার কিচ্ছু যায় আসে না।
যে মেয়ে বিশ্বাস করে ধোঁ*কা খায়, সে বড়োজোর বোকা হতে পারে, চরি*ত্রহীন বা খা*রাপ মেয়ে নয়। যে বিশ্বাস ভঙ্গ করে সেইই বরং সমাজের এসব কথা শোনার যোগ্য। পুষ্পিতারা অবুঝ, শিশু, অন্ধ। বিশ্বাস করাই তাদের অপরাধ। আর যে বিশ্বাস ভঙ্গ করে তারাই বন্ধুমহলে হিরো। ইমাদ এই ভাবনাগুলো থেকেই পুষ্পিতাকে অবলীলায়, অনায়েসে গ্রহণ করতে পেরেছিল।

আসরের নামাজের পরেই শফিককে রেখে সে চলে এসেছিল বাড়িতে। সাবিনা বেগম আর মহসিন সাহেব এসেছেন। তারা হায়দার সাহেবের সঙ্গে বসে গল্প করছেন। সে সালাম দিয়ে ভেতরের রুমে চলে গেল। পুষ্পিতা আর ইমা লুডু খেলায় ব্যস্ত।

হাত-মুখ ধুয়ে বাথরুম থেকে বের হয়ে বললো,

– ‘ইমা আজ আবার বিলে যাবি?’

ইমা খুশিতে লাফ দিয়ে উঠলেও পুষ্পিতা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। ইমা বিষয়টা খেয়াল করে বললো,

– ‘ভাবি তোমার না ওইদিন ভালো লেগেছিল।’

– ‘ভালো লেগেছে, আমি এমনিই যাব না আজ।’

– ‘ও হ্যাঁ ভাইয়া, আন্টি-আঙ্কেল এসেছেন। আন্টি তোমাদেরকে নিয়ে বেড়াতে যেতে চান।’

– ‘কবে?’

– ‘কালই, বাবার সঙ্গেই কথা হয়েছে৷ আমরা তিনজন আর আন্টি যাবে।’

– ‘কোথায় যাবেন।’

– ‘সেটা তোমরাই ঠিক করে নিবে।’

– ‘যাইহোক, তাই বলে আজ বিলে যাওয়া ক্যান্সেল?’

পুষ্পিতা লুডুর চাল দিয়ে বললো,

– ‘ক্যান্সেল হবে কেন? তুমি ইমাকে নিয়ে যাও৷ সে তো যেতে চাচ্ছে।’

ইমা অবাক হয়ে বললো,

– ‘ভাইয়া তো তোমার জন্যই যেতে চাচ্ছে ভাবি।’

পুষ্পিতা হেঁসে ফেললো কথাটি শুনে। ইমাদ হাসির অর্থ বুঝতে পারে৷ পুষ্পিতা ওই দিনের কথা মনে রেখেছে।
ইমা হঠাৎ উঠে যেতে যেতে বললো,

– ‘আমি গিয়ে রান্না বসাই, তোমরা দু’জন খেল।’

ইমা চলে যাওয়ার পর পুষ্পিতা লুডু বন্ধ করে নিল। ইমাদ বিছানায় বসে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,

– ‘খেলার জন্যও তাহলে পছন্দসই মানুষ লাগে।’

পুষ্পিতা বিছানা থেকে নেমে লুডু রাখতে চলে গিয়েছিল৷ কথাটি শুনে ভ্রু কুঁচকে পিছু ফিরে তাকিয়ে বললো,

– ‘বুঝিনি কথাটা।’

– ‘বলেছি তুমি হয়তো যার-তার সঙ্গে খেলতে পছন্দ করো না।’

– ‘এটা কেন মনে হলো?’

– ‘এইযে আমার সঙ্গে না খেলে লুডু বন্ধ করে দিলে।’

পুষ্পিতা অবাক হয়ে বললো,

– ‘আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আমার মতো কোনো চরিত্রহীন মেয়ের সাথে খেলবেই না।’

ইমাদের মুখটা নিমিষেই মলিন হয়ে গেল। সে খানিক পর আমতা-আমতা করে বললো,

– ‘এটা কি বললে পুষ্পিতা, আমি কি এরকম কিছু বলেছি।’

– ‘সবকিছু কিছু তো বলতে হয় না, বুঝা যায়।’

– ‘কিভাবে বুঝলে? আর তোমাকে চরি*ত্রহীন ভাবলে কি বিয়ে করতাম?’

– ‘সেটা তুমিই জানো কেন বিয়ে করেছো। আমি আজ আসার সময় মায়ের কাছে মোবাইল চাইলাম, দেননি, তুমি না-কি চাও না। যার আমার প্রতি এতো ঘৃণা, অবিশ্বাস। একই বিছানায়ই থাকতে চায় না। সে যে আমার সঙ্গে খেলবে না তা তো স্বাভাবিক।’

– ‘কি বলো এসব? যাইহোক তুমি চাইলে মোবাইল ব্যবহার করো, আমার কোনো সমস্যা নেই।’

পুষ্পিতা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

– ‘আমি তো মোবাইলের জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছি না। নিষেধ আছে না জেনে চেয়েছিলাম। জানলে চাইতামই না৷ আমার মোবাইল ব্যবহার করার ইচ্ছা নাই।’

কথাগুলো বলে পুষ্পিতা রান্নাঘরে চলে গেল৷ ইমা আনাজ কাটছে৷ সে চেয়ারে বসে ভাবনায় ডুবে গেল। ইমাদের সঙ্গে এই রূঢ় আচরণ করার দরকারই ছিল না। ভেবেছিল সব অভিযোগ ঘৃ’ণা ভেতরে ক’বর দিয়েই সংসার করবে। অথচ প্রথমেই হেরে গেল নিজের কাছে। ইমাদ অনেক পালটে গেছে। সেটা লোভে হলেও সমস্যার কিছু নেই। মা-বাবা তো এটাই চেয়েছিলেন। তাহলে সে নিজে এতো ক্ষুব্ধ হচ্ছে কেন? কেন ইমাদকে এতো অসহ্য লাগছে৷ মোটেও এরকম করা ঠিক হয়নি। অসহ্য লাগলেও মানিয়ে নিতেই হবে।

– ‘কি হলো ভাবি? কি এতো ভাবছো?’

‘না কিছু না’ বলে পুষ্পিতা পুনরায় রুমে চলে গেল। ইমাদ দুইহাতে মুখ ঢেকে বিছানায় বসে আছে। পুরো পরিস্থিতি হালকা করার জন্য পুষ্পিতা গলা খাঁকারি দিয়ে বললো,

– ‘পাশে বসলে তো জাত যাবে না? বসলে তো আবার ধমক খেতে হবে মনে হয়।’

ইমাদ মাথা তুলে তাকালো। সঙ্গে সঙ্গে তার মন খারাপ ভাবটা উধাও হয়ে গেল। পুষ্পিতা মুচকি হাসছে। সে পুনরায় বললো,

– ‘স্যরি, এতটা কঠিনভাবে বলতে চাইনি।’

– ‘কিযে বলো পুষ্পিতা, এটুকুর জন্য স্যরি বলতে হয়? বসো তো, পাশে বসো।’

পুষ্পিতা দুইহাত কোলে রেখে পাশে বসলো। পুরো ব্যাপারটাই তার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে। যে মানুষটা দু’দিন আগেই তাকে অপমান-অপদস্থ করেছে, সে কি-না এত দ্রুত পালটে গেল? আসলেই মা-বাবা ঠিক। তারা যাইই বলেন সেটাই একটা সময় সঠিক হয়ে যায়। ঠিকই জানতেন বাসাটা দিলে ইমাদ খুশি হয়ে যাবে। একেবারে বাস্তবে প্রমাণ হয়ে গেল।

ইমাদের ইচ্ছা করছে পিঠের দিকে হাত নিয়ে ধরে বসবে। কিন্তু হাত যেন যাচ্ছেই না৷ একটু অন্ধকার হলে ঠিকই পারতো। দিনে-দুপুরে হাত নিলে পুষ্পিতা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে কে জানে। খানিক পর পুষ্পিতাই বললো,

– ‘লুডু খেলবে?’

– ‘হ্যাঁ খেলবো। লুডু আমার খুবই প্রিয় খেলা।’

ইমাদ কথাটা বলে নিজেই অবাক হয়ে গেল। সে মোটেও লুডু খেলা পছন্দ করে না, শেষ কবে খেলেছিল তাও মনে করতে পারছে না৷ পুষ্পিতা লুডু নিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বিছানায় গিয়ে বসে। ইমাদও ওর সামনে গিয়ে বসলো। পুষ্পিতা দু’জনের গুটি আলাদা করছে। ইমাদ তন্ময় হয়ে ওর আঙুলগুলো দেখছে। বুক শিরশির করছে৷ ইচ্ছে করে এই নরম কোমল আঙুলগুলো মুঠোয় নিয়ে গালে চেপে ধরতে। দরজা খোলা ছিল। সাবিনা বেগম এসে ঢুকলেন। দু’জনকে এক সঙ্গে লুডু খেলতে দেখে মনটা খুশিতে ভরে গেল৷ ইমাদ বিছানা থেকে নেমে আমতা-আমতা করে বললো,

– ‘বসুন আন্টি।’

সাবিনা বেগম ব্যস্ত হয়ে বললেন,

– ‘আরে বাবা নামছো কেন, খেলো দু’জন, যাও খেল। আমি চলে যাচ্ছি।’

__চলবে….
লেখা: জবরুল ইসলাম

তবু মনে রেখো (১০ পর্ব)
.
সাবিনা বেগম রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। মহসিন সাহেব বারান্দা থেকে ডাকলেন,

– ‘কই আসো, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে তো।’

– ‘আসছি তুমি বের হও।’

ইমাকে সামনে পেয়ে সাবিনা বেগম ওর কপালে চুমু দিয়ে বিদায় নিলেন। মহসিন সাহেব তাকে উঠানে দেখে পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছেন। সাবিনা বেগম কাছাকাছি গিয়ে স্বামীকে না বলে আর থাকতে পারলেন না। ভেতরের আনন্দ যেন চোখে মুখে উপচে পড়ছে।

– ‘জানো ওদের রুমে গিয়ে কি দেখলাম?’

মহসিন সাহেব আনমনে জবাব দিলেন,

– ‘কি?’

– ‘দু’জন কি সুন্দর একই বিছানায় বসে লুডু খেলছে।’

– ‘বাহ, ভালো তো।’

– ‘ভালো তো হবেই। দেখছো? আমি বলেছিলাম না, এমনি এমনি কিছুই হয় না। চেষ্টা করতে হয়। আমার কথা তো শুনো না।’

মহসিন সাহেব বিল থেকে চোখ সরিয়ে এনে বললেন,

– ‘তোমার কথা শুনি না? মিথ্যে অপবাদ না দিয়ে আজ বাড়িতে গিয়ে লিস্ট করবে তো কি কি না শুনে থেকেছি৷ দেখবে কিছুই খুঁজে পাবে না৷ তোমার কথা না শুনে বাসাকে নরক বানাবো না-কি।’

সাবিনা বেগম হাসলেন। এভাবে গল্প করতে করতে তারা বাড়ির রাস্তার কাছাকাছি চলে এসেছেন। হঠাৎ মহসিন সাহেব অনেক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন,

– ‘ওই যে একটা ছেলে যাচ্ছে। ও আমাদের রাস্তা দিয়েই বের হলো মনে হচ্ছে না?’

– ‘হ্যাঁ আমিও তো তাই দেখছি। কে চিনেছো?’

– ‘এলাকার তো মনে হয় না৷ চারদিকে তাকাচ্ছে, উঁকিঝুঁকি মারছে।’

– ‘কাছাকাছি গেলে জিজ্ঞেস করো কি চায়।’

কিন্তু তারা আর সে সুযোগ পেলেন না। ছেলেটি তাদের দেখে কিংবা এমনিতেই দ্রুত চলে গেল। দু’জন খানিক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে চারদিকে তাকালেন। ছেলেটিকে আর আশেপাশে দেখা গেল না।

– ‘চলে যাই, কোনো মেহমান হতে পারে। রাস্তা না চিনে হয়তো এসেছিল।’

সাবিনা বেগমের সন্দেহ তবুও গেল না। বাড়িতে যেতে যেতে বারবার পিছু ফিরে তাকালেন। উঠানে এসে দেখেন মজিদা মেইন গেইটের সিঁড়িতে বসে আছে। সাবিনা তাকে দেখে বললেন,

– ‘কিরে তুই কখন এলি।’

– ‘একটু আগে আইছি চাচি। গেইট বন্ধ দেইখা বইসা রইছি।’

– ‘তোর মায়ের এখন কি অবস্থা।’

– ‘ভালাই, কিন্তু চাচি রাস্তায় একটা পোলারে দেখছো তোমরা। আমি আসার সময় রাস্তা থেকে এদিকে উঁকি-ঝুঁকি মারছিল।’

সাবিনা বেগম তাকে ধরে বললেন,

– ‘তারপর?’

মহসিন সাহেব থামিয়ে বললেন,

– ‘আগে তালা খুলে ভেতরে আসো জানা যাবে।’

সাবিনা বেগম তালা খুলে দিলেন। মহসিন সাহেব টেনে গেইট খুলে ভেতরে গেলেন। সাবিনা বেগম বারান্দায় পা দিয়েই বললেন,

– ‘তারপর তুই জিজ্ঞেস করলি না এখানে কি?’

মজিদা রুমে ঢুকে বললো,

‘আমি জিগাইবার আগে আমার দিকে ভালো কইরা তাকিয়ে উলটা আমারে কয় আপনি এ বাড়িতে যাচ্ছেন নাকি? আমি বললাম, হ্যাঁ, আপনি কে, এইখানে কি চান?
উত্তর না দিয়ে আবার আমারে জিগাইল আপনি এ বাড়ির কে হন?
আমি কইলাম কাজ করি।
তারপর বললো, এটা পুষ্পিতাদের বাড়ি না? আমি কইলাম হ্যাঁ ওদেরই তো বাড়ি।
তারপর কয় আমি ওর বন্ধু হইল, প্লিজ পুষ্পিতাকে একটু ডেকে দিন।
আমি কইলাম, তারে কই পামু হে তো শ্বশুরবাড়ি। আর আপনে কে পরিচয় দেন? এত আপনের জাননের কি দরকার?
পোলায় আর কথা বললো না। বোবা হইয়া গেল যেন। তারপর কিছু না বলে রাস্তা থাইকা চইলা গেল।’

মহসিন সাহেব একটা সিগারেট ধরিয়ে বিছানায় বসলেন। স্বামীর শান্তশিষ্ট ভাব দেখে সাবিনা বেগমের গা জ্বলে যাচ্ছে৷

– ‘আরে তুমি বসে আছো কেন? কোথাকার ছেলে আইসা এতকিছু জিজ্ঞেস কইরা চইলা যাচ্ছে।’

মহসিন সাহেব সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে বললেন,

– ‘আশ্চর্য আমি কি এখন ছেলের পিছনে গিয়ে দৌড়াইতে হবে না-কি?’

– ‘এত বড়ো একটা ঘটনা ঘটে গেল তুমি এইভাবে বসে থাকবে তাহলে?’

– ‘এই চুপ, মুখ বন্ধ রাখ তোর৷ এতো বড়ো কাণ্ড, এতো কাণ্ড৷ একটা কিছু হইলেই পাগল হয়ে যায়।’

সাবিনা বেগম সোফায় গিয়ে মুখ ঢেকে বসে পড়লেন। মহসিন সাহেব খানিক ভেবে মোবাইল বের কল দিলেন হায়দার সাহেবকে। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই তিনি বললেন,

– ‘হ্যালো হায়দার।’

– ‘হ্যাঁ খান ভাই, কি হয়েছে? বাড়িতে চলে গেছো?’

– ‘হ্যাঁ বাড়িতে চলে এসেছি। কল দিয়েছি অন্য দরকারে।’

– ‘বলো।’

– ‘আমি তোমাদের বাড়ি থেকে আসার সময় একটা ছেলেকে দেখলাম আমাদের বাড়ির রাস্তায়। দেখে চিনতে পারিনি। মজিদাকেও না-কি রাস্তায় পেয়ে পুষ্পিতার কথা জিজ্ঞেস করছে।’

– ‘তাই না-কি, কে হতে পারে?’

– ‘বুঝতে পারছি না। ওই ছেলে তো পুষ্পিতাকে খোঁজার কথা না।’

– ‘হ্যাঁ, ওই ছেলে উল্টো খুঁজতে আসবে কেন।’

– ‘ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না।’

– ‘মোবাইল বন্ধ থাকায় অন্য কোনো ফ্রেন্ড এসেছে হয়তো।’

– ‘তুমি এক কাজ করো হায়দার। বাজারে তোমার পরিচিত কেউ থাকলে বলো ওই রাস্তায় খেয়াল রাখতে।’

হায়দার সাহেব খানিক ভেবে বললেন,

– ‘ছেলেটা দেখতে কিরকম। পরনে কি ছিল?’

মহসিন সাহেব বিস্তারিত বললেন। সবকিছু শুনে হায়দার সাহেব বললেন,

– ‘ফোন রাখো দেখছি আমি। আর এগুলো ইমাদ বা পুষ্পিতা মা’কে জানানোর দরকার নেই। কাজের মেয়েকেও বলে দাও।’

– ‘হ্যাঁ, ভালো কথা মনে করিয়ে দিয়েছো।’

মহসিন সাহেব কল কেটে বললেন,

– ‘মজিদা এইসব কথা কাউকে বইল না। পুষ্পিতাও যেন না জানে।’

– ‘আস্তাগফিরল্লাহ, আমি কেন এই কথা লোকজনরে কইতে যাইমু। আমারে কি পা*গলা কু*ত্তা কা*মড়াইছেনি। এই কথা যদি মজিদার মুখ থেকে বাইর হয় আমি যেন ঠা’ডা পইড়া ম’রি..।’

মহসিন সাহেব ধমক দিয়ে বললেন,

– ‘এই থাম, তোরে এতো কসম কাটতে কি আমি কইছি? যা সামনে থেকে।’

সাবিনা বেগম কপাল থেকে হাত সরিরে বললেন,

– ‘এগুলো কি লোকজন জানবে না মনে করছো? ছেলেটা তো লোকজনকে জিজ্ঞেস কইরা কইরাই এখানে আসছে।’

– ‘তো এখন কি হইছে। তোর জন্য কি কবর খুঁড়ে ফেলতে হবে না-কি? আর বাঁচবি বলে তো মনে হচ্ছে না।’

– ‘তুই-তুকারি করবা না। আমি মরলেই তো দুনিয়া শান্তি। এতো বড়ো কাণ্ড হয়ে গেল সিগারেট টানতেছো বসে বসে।’

মহসিন সাহেব স্মিথ হেঁসে অস্ফুটে বললেন, ‘পা*গলের ঘরের পা*গল হার্ট অ্যা*টাক করবো।’
তারপর সিগারেট শেষ টান দিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে বললেন,

– ‘সাবিনা কাণ্ডটা কত বড়ো হাত দিয়ে একটু দেখাও তো।’

সাবিনা বেগম ক্রোধান্বিত গলায় বললেন,

– ‘ঢং করতেছো তাই না? এতকিছু হয়ে যাচ্ছে তোমার ঢং থামে না। আমারে পাগল মনে হয় তোমার? আমার লগে তামাশা করো।’

মহসিন সাহেব ততক্ষণে বাইরে চলে এলেন। পেছনের সবজি বাগানটা দেখা হয়নি আজ।

রাতের খাবার শেষে ইমাদ রুমে এসে বিছানায় শুয়ে আছে। পুষ্পিতার সঙ্গে লুডু খেলায় বিকেলে হেরে গিয়েছিল সে। পুরো খেলাতেই বিশেষ কোনো কথা হয়নি। কি বলবে কিছুই খুঁজে পাচ্ছিল না। সম্পর্কটা সহজ করেও আনতে পারছে না৷
আচ্ছা কোনো রোমান্টিক নাটক কি দেখবে ওকে নিয়ে? খানিক পরই পুষ্পিতা এসে রুমে ঢুকে। তাকে বিছানায় দেখে আমতা-আমতা করে বললো,

– ‘আমি না হয় আজ নিচে থাকি?’

– ‘না না, বিছানায়ই আসো। মাঝখানে বালিশ রাখলেই হবে।’

পুষ্পিতা মাঝখানে একটা বালিশ রেখে শুয়ে গেল। ইমাদ খানিক্ষণ পর আমতা-আমতা করে বললো,

– ‘নাটক দেখো তুমি?’

– ‘তা তো দেখি মাঝেমধ্যে।’

– ‘এখন দেখবে?’

– ‘না ভালো লাগছে না।’

ইমাদ পুনরায় কি বলবে ভেবে না পেয়ে ফেইসবুকে নিউজফিড স্ক্রল করছে৷ খানিক পর বললো,

– ‘পুষ্পিতা বাইরে যাবে, আজ চাঁদনী রাত।’

– ‘না তুমি যাও, আমার ভালো লাগছে না।’

ইমাদ ওর দিকে তাকায়। পাশ ফিরে শুয়ে আছে। চুল খোঁপা করা। নগ্ন ঘাড় দেখা যাচ্ছে। পরনে গোলাপি একটা ড্রেস৷ এক হাত মাথার নিচে আরেক হাত লম্বা করে কোমরে। তার ভীষণ ইচ্ছা করছে একবার ছুঁয়ে দেখতে। কোনো মেয়েকে আজও তার সেভাবে ছোঁয়া হয়নি৷ প্রেম করা হয়নি। কিন্তু কোন ছুতোয় ওকে স্পর্শ করবে সে? ইমাদ আস্তে করে মাঝের বালিশটা সরিয়ে ওর কাছাকাছি গিয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকা আনাড়ি হাতটি পুষ্পিতার কপালে রেখে বললো,

– ‘জ্বর হয়নি তো আবার।’

পুষ্পিতা আঁতকে উঠে পাশ ফিরিয়ে বললো,

– ‘হঠাৎ করে আমার জ্বর আসবে কেন?’

ইমাদটা হাতটা সরিয়ে বললো,

– ‘না মানে বাইরে যেতে চাচ্ছ না তাই আরকি জিজ্ঞেস করলাম।’

পুষ্পিতা উঠে বসে ওড়না ঠিক করে বললো,

– ‘এমনিই।’

– ‘তাহলে চলো যাই। অনেক ভালো লাগবে।’

পুষ্পিতা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়। ইমাদ বিছানা থেকে নেমে বললো,

– ‘আসো।’

পুষ্পিতা বাইরে এসে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেল। বাড়ি-ঘর, উঠান, পুকুরঘাট সবকিছু যেন চাঁদের আলোয় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইমাদ ঘাটে গিয়ে বললো,

– ‘বসো।’

পুষ্পিতা বসে আকাশের দিকে তাকায়। চাঁদ যেন তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। ইমাদ পুকুরে পানিতে পা দিয়ে নাড়তে নাড়তে বললো,

– ‘তুমি সাঁতার শিখলে না কেন?’

পুষ্পিতা মুচকি হেঁসে বললো,

– ‘ছোটবেলায় ভয় পাইতাম, এখন লজ্জা পাই।’

ইমাদ মুচকি হেঁসে বললো,

– ‘লজ্জা কেন পাবে?’

– ‘মানুষ কি বলবে এতো বড়ো মাইয়া সাঁতার শিখে।’

– ‘তাহলে রাতে শিখতে পারো। এইযে চাঁদনি রাত। দিনের মতো আলো।’

পুষ্পিতা ফিক করে হেঁসে বললো,

– ‘রাতে ভয় লাগবে।’

– ‘ভয় লাগার কি এইযে দিনের মতো আলো।’

– ‘সূর্যের আলো স্বাভাবিক, চাঁদের আলো রহস্যময়। তাছাড়া এখন পুকুরে নেমে সাঁতার কাটলে প্রচুর শব্দ হবে।’

ইমাদ মাথা নেড়ে বললো,

– ‘তা ঠিক, আচ্ছা এখন বিলে গেলে কেমন হয়?’

– ‘খুবই বাজে, কারণ কাল বেড়াতে যেতে হবে৷ তাই এখন ঘুমানো দরকার।’

– ‘ও হ্যাঁ, তাহলে চলে যাবে?’

‘বসি আরও কিছুক্ষণ’ তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো ‘আচ্ছা তুমি না-কি ভালো গান গাও।’

ইমাদ লজ্জা পেয়ে বললো,

– ‘এই কথা কে বলছে?’

– ‘যেই বলুক, সত্য কি-না বলো।’

– ‘ওই একটু-আধটু৷ তবে এই তথ্য ইমাই দিয়েছে। ওকে ধরবো।’

– ‘ধরাধরি বাদ দাও। পারলে গাও শুনি।’

– ‘কিযে বলো। আমি সেরকমও গাইতে পারি না যে তোমাকে শুনাবো।’

– ‘যেরকমই হোক শুনতে চাই।’

– ‘কোথায়? এখানে?’

– ‘হ্যাঁ, কত সুন্দর পরিবেশ।’

– ‘কিন্তু লোকজন শুনবে।’

– ‘এখানে এসে বসে আস্তে আস্তে গাইলে শুনবে না কেউ।’

ইমাদ ভাবলো ওর সঙ্গে মেশার এটাও একটা ভালো দিক৷ সে পুষ্পিতার একেবারে কাছাকাছি এসে বসলো, তারপর গুনগুন করে লতা মঙ্গেশকরের গান ধরলো,
“প্রেম একবারই এসেছিলো নীরবে
আমারই এ দুয়ার প্রান্তে
সে তো হায় মৃদু পায়…….
আজ কাছে তারে এত আমি ডাকি গো
সে যে মরীচিকা হয়ে দেয় ফাঁকি গো
আজ কাছে তারে এত আমি ডাকি গো
সে যে মরীচিকা হয়ে দেয় ফাঁকি গো
ভাগ্যে যে আছে লেখা হায় রে
তারে চিরদিনই হবে জানি মানতে….।”

পুষ্পিতা অবাক হয়ে বললো,

– ‘বাহ অনেক সুন্দর গাও তো, এতো সুন্দর গাইতে পারবে ভাবতেই পারিনি।’

ইমাদ মুচকি হেঁসে বললো,

– ‘চলো এখন যাই।’

দু’জন পুনরায় ঘরে ফিরে এলো। ইমাদ বিছানায় গিয়ে মাঝের বালিশটা আলগোছে সরিয়ে নিল। পুষ্পিতা লক্ষ্য করে বললো,

– ‘কি হলো সরিয়ে ফেললে যে?’

ইমাদ লজ্জা পেয়ে ওর দিকে না তাকিয়ে বললো,

– ‘এমনিই।’

– ‘আমার শরীরে স্পর্শ লাগলে তো সমস্যা। একটা চ’রিত্রহীন মেয়ে।’

– ‘কি বলো তুমি এসব?’

– ‘কেন তুমিই তো প্রথম রাতেই বলেছিলে যে মেয়ে মা-বাবার মান-সম্মান বুঝে না তার জন্য ইমাদের মন গলবে না।’

– ‘দেখো পুষ্পিতা, এই কথার মানে ভিন্ন। তাছাড়া মা-বাবার মান-সম্মান না বুঝতে পারার সঙ্গে চরিত্রের কি সম্পর্ক! এটা তোমার ভুল ছিল। বোকামি ছিল। তোমার পরিবারও বকা দিতে পারে এরজন্য। আমি মোটেও তোমাকে খারাপ চরিত্রহীন মনে করি না৷ করলে বিয়ে করতাম না।’

পুষ্পিতার মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি। ইমাদের এতো দ্রুত পালটে যাওয়ার কারণ সে জানে। পুনরায় বললো,

– ‘সবাই খারাপ ভাবলে তুমি ভাবো না কেন শুনি?’

ইমাদ মুখ কালো করে বললো,

– ‘দেখো পুষ্পিতা, আমি পড়ালেখাও তেমন করিনি। নাইনে উঠে বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম। তাই গুছিয়ে বলতে পারবো না। তবে আমার কাছে মনে হয় তুমি মানুষ চিনতে ভুল করেছিলে, একজন প্র’তারককে বিশ্বাস করেছিলে। তুমি বড়োজোর একজন বোকা, কিন্তু খারাপ নয়। যে প্র’তারণা করলো, বিশ্বাস ভঙ্গ করলো অ’পরাধী তো সে। আমাদের সমাজটাই উলটো। দেখবে যে মেয়েকে ধ’র্ষণ করা হয় সে আ’ত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। আর যে ধ’র্ষণ করে সে দিব্যি ঘুরে বেড়ায়৷ ধ’র্ষণ মানেই কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে জো’র করে কাজটা করা। এখানে এই ধ’র্ষিতার কিইবা দোষ? সে কেন সুন্দর একটা জীবন পায় না।’

– ‘হোয়াট! আমি ধ’র্ষিত হয়েছি কে বললো?’

– ‘আরে আমি সেটা বুঝাতে চাইনি। মানে তোমার সঙ্গে যা হয়েছে৷ সেটার জন্য তোমার কোনো দোষ নেই৷ ধ’র্ষণের কথা শুধু উদাহরণ।’

পুষ্পিতা হা-হা-হা করে হেঁসে উঠলো। এসব নীতিবাক্য এতদিন কোথায় ছিল? পুষ্পিতার এখন সবকিছুতে কেমন হাসি পায়। ঘে’ন্নাও লাগে। মানুষ এমন কেন? পুষ্পিতার মুখে একদলা থুতু জমে গেল। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে এলো সে। পুষ্পিতা নিজের ঘে’ন্না প্রকাশ না করে ওর পাশে এসে বললো,

– ‘বাহ সবাই যদি তোমার মতো ভাবতো। তুমি আসলেই অন্যরকম মানুষ।’

ইমাদ বিভ্রান্ত হয়ে পুষ্পিতার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে৷ একটু আগে সে কি এমন হাসির কথা বলেছে?

__চলবে__
লেখা: জবরুল ইসলাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here