#তবু_ফিরে_আসা,পর্ব : (৮)
লেখনীতে : তামান্না আক্তার তানু
(২৫)
সারাঘরময় মেহমানে গিজগিজ করছে। ছোটো বাচ্চাদের ছুটোছুটি, বড়োদের আলাপচারিতা ছাড়াও কানাঘুঁষা চলছে। বিয়ে বাড়িতে দু’একটা নেগেটিভ কথাবার্তা ছড়ানো মানুষ থাকবে না এমনটা হয় নাকি। এখানে একদল নেগেটিভ আলোচনা করছে অন্যদল পজেটিভ। যদিও এসবে কারও কোনো ভাবান্তর দেখা গেল না দুই পক্ষের মুরব্বিদের মাঝে। ওনারা নিজেরা নিজেদের কাজ নিয়েই ব্যস্ত।
বড়ো ড্রয়িংরুমের একপাশে দুটো চেয়ারে বসে আছে বর-কনে। দুজনের মুখেই হাসি লেপটে আছে। মেঘ বার বার নওরিনের এটা-সেটা এগিয়ে দিচ্ছে কখনও টিস্যু দিয়ে মেকাপ ঠিক করছে। অন্যদিকে একদল আথিতেয়তা গ্রহণ করছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বিয়ের আসরে উপস্থিত হলো শ্রাবণ। ফুলের বুকিটা আদনানের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“অভিনন্দন ব্রো। নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা রইলো। কেমন আছেন ভাবি?”
নওরিনের দিকে ঘুরে তাকাতেই মেঘকে দেখে চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে শ্রাবণ। একই ডিজাইনের পোশাক দুজনের পরনে। শুধু নওরিন মাথায় উড়না দিয়ে বউ সেজে আছে আর মেঘ উড়নাটা লেহেঙ্গা স্টাইলে একপাশে পিন দিয়ে আটকে দিয়েছে। শ্রাবণের চোখের সামনে আঙুল নাড়ালো নওরিন। চমকে উঠে চোখ সরিয়ে সরে গেল শ্রাবণ। কেন যেন মেঘকে এই রূপে দেখে সহ্য হচ্ছে না। এই সাজটা কেবল তার জন্যই যদি হতো, তখন হয়তো মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েই থাকতো। এভাবে ঘুরে বেড়ালে যেকোনো সময় যেকোনো ছেলের নজরে পড়বে। কিছু একটা ভাবতে হবে। মেঘ যে শুধু তার। শুধুই তার।
অন্যপাশে সরে গিয়েই এইসব কথা ভাবছিল শ্রাবণ। হঠাৎ দেখলো একটা ছেলে ভেতরে এসে সোজা মেঘের সামনে এসে হাত নাড়ালো। মেঘ সামনে তাকিয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে বলল,
“তুমি! এখানে কীভাবে?”
থেমে গেল মেঘ। ছেলেটা একটু এগিয়ে এসে মেঘকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“সারপ্রাইজ ডার্লিং। হাউ আর ইউ? ইউ উইল বি ফাইন নাও, আ’ম নট হেয়ার?”
চোখ বন্ধ করে মেঘ বিড়বিড় করলো,
“আবার কোন ঝামেলায় ফেললে খোদা!”
ছেলেটা আবারও বলল,
“হেই বিউটিফুল, আর ইউ ওকে?”
চমকে উঠলো মেঘ। কী জবাব দিবে ভেবে পেল না। দুহাতে তাকে কোনোমতে ছাড়িয়ে বলল,
“ইউ ইনজয় দেয়ার কোম্পানি! আ’ম জাস্ট কামিং।”
হাওয়ার মতো উড়ে পালালো মেঘ। দ্রুত নওরিনের রুমে ঢুকে ডাটা অন করে ইরার নাম্বারে অনলাইনে কল দিল। ইরা তখন লাইনেই ছিল। ঝটপট রিসিভ করে বলল,
“কী রে কেমন আছিস?”
“ভালো থাকতে দিচ্ছিস কই তোরা? যেখানেই যাচ্ছি একটা না একটা উটকো ঝামেলা। এতদিন শ্রাবণকে ফেইস করতে হিমশিম খেলাম এখন আবার ওই নাটেরগুরুটা এসে হাজির হয়েছে। তুই পাঠিয়েছিস ওকে?”
“কে? কার কথা বলছিস? ওহ তুই রোশানের কথা বলছিস। নারে বাবা, আমি কেন পাঠাবো। ওতো তোর জন্য পাগলপ্রায়। তাই সামিই সব ব্যবস্থা করে পাঠিয়ে দিল।”
“উফফ, যার জন্য সিডনী ছেড়ে বাংলাদেশ ব্যাক করলাম, সেই ঝামেলাটা এখানেও চলে আসলো। কোথাও শান্তি নেই আমার। ধ্যাৎ…!”
ফোন কেটে বেরিয়ে যেতে গিয়েই আচমকা ধাক্কায় আবারও ভেতরে ঢুকে গেল মেঘ। চারপাশ ভালোমতো তাকিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো শ্রাবণ। দরজাটা বন্ধ করে এগোতে লাগলো। মেঘ রীতিমতো স্তব্ধ শ্রাবণকে দেখে। কেঁপে কেঁপে বলল,
“কী…কী চাও এখানে? দরজা খুলো। বের হবো তো।”
শ্রাবণ কিছু না বলেই চোখ দুটো গরম করে মেঘের দিকে এগিয়ে গেল। একসময় নিজের জায়গাতেই থেমে গেল মেঘ। পিছনে যাওয়ার জন্য আর ফাঁক নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে অলরেডি। দু’হাতে মেঘের মুখটা তুলে ধরলো শ্রাবণ। মেঘ বাধা দিয়ে গিয়েও পারছে না। নিজের জায়গাতেই জমে গেছে পুরোটা। ধীরে ধীরে শ্রাবণের নরম ঠোঁটটা স্পর্শ করলো মেঘের কপাল। চোখ বন্ধ করে এবার রাগে ফুঁসতে লাগলো মেঘ। ধাক্কা মেরে শ্রাবণকে সরাতে গিয়েও পারলো না। শ্রাবণের চোখদুটো টকটকে লাল হয়ে আছে। রোশানের সাথে মেঘকে দেখে একদম বেপরোয়া হয়ে গেছে সে। এই রূপের ঢালিটাকে এইভাবে জনসম্মুখে বের হতে দেয়া যাবে না। আটকাতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই এই টর্চার করা।
মেঘের কপাল, চোখ, মুখ, নাক, ঠোঁট কিচ্ছু বাকি রাখছে না শ্রাবণ। পাগলের মতো চুমু দিচ্ছে মেঘকে। ঠোঁটের উপর দাঁতের চাপ পড়তেই চমকে গেল শ্রাবণ। চোখ তুলে দেখলো মেঘ ততক্ষণে কেঁদে ফেলেছে। ওভাবে দাঁড়িয়ে থেকেই বলল,
“এভাবে অন্যকারও সামনে যেও না মেঘ৷ সহ্য করতে পারবো না। দু’বছর আগে তুমি যতবার আমাকে স্পর্শ করেছো আমি বার বার আনিকা ভেবে তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। তাই আজ আমার স্পর্শ দিয়ে তোমার স্পর্শটাও চিনে নিলাম। যেন আর ভুল না হয়।”
মেঘকে ছেড়ে টিস্যু বের করলো শ্রাবণ। ঠোঁটে চেপে ধরে সামনে এনে দেখলো রক্ত বের হচ্ছে। মেঘ নিজেকে সামলাতে না পেরেই দাঁত বসিয়ে দিয়েছে। অন্য আরেকটা টিস্যু মেঘের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“এতটা ব্যথা না দিলেও পারতে। যাও হাত-মুখ ধুয়ে আমার স্পর্শটা সরানোর চেষ্টা করো। যদি পারো ধরে নিব, তুমি জিতে গেছো। হেরে যাব আমি, হেরে যাবে আমার ভালোবাসাও।”
“মুছে ফেলবো সব। কোনো স্পর্শ থাকবে না। তোমার কোনো অস্তিত্বকেই জায়গা দিব না আমি আমার মাঝে।”
হনহনিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল মেঘ। শ্রাবণ মুচকি হেসে ঠোঁটে আঙুল বুলালো। চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে। তবে সেটা মন্দ না। রাগ আছে হেব্বি। মেঘকে ঘায়েল করতে কঠিন অস্ত্র দরকার। কিন্তু কী সেটা! ভাবতেই ভাবতেই দরজা খুলে বেরিয়ে গেল শ্রাবণ।
(২৬)
কনে বিদায়ের আগ মুহূর্তে নওরিনের আম্মু অনেকবার খুঁজেও মেঘের হদিস পেলেন না। এদিকে মেয়েকেও বিদায় দিতে হবে। কোথায় যে গেল মেয়েটা? এসব ভেবে ভেবেই সারাঘর খুঁজে বেড়ালেন মেঘকে। অবশেষে ছাদে এসে দেখলেন মেঘ বার বার টিস্যু দিয়ে চোখ মুছছে। নওরিনের আম্মু এবার নিজেও কেঁদে ফেললেন। প্রিয় বান্ধবীর বিদায়ে মেঘ বন্ধু হয়েও নিজেকে আটকাতে পারছে না আর তিনি মা হয়ে কীভাবে আটকে রাখবেন তার সত্ত্বাকে? মেঘের কাঁধে হাত রেখে বললেন,
“কাঁদিসনে মা। ও তোর জন্য অপেক্ষা করছে। চোখ মুছে নিচে আয়। শ্বশুরবাড়ি বিদায় দিবি না ওকে?”
“আন্টি…!”
মেঘ পিছু ঘুরে কান্নার মাত্রাটা আরও বাড়িয়ে দিল। সব আপনজন দূরে সরে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে বহুদূরে। বিয়ের পর আর কি কখনও নওরিন তার সাথে দেখা করবে? ক্যাম্পাসে আগে কতশত আড্ডা হতো, রঙতুলি দিয়ে কত সুন্দর আঁকিবুঁকি হতো, আর কি হবে সেসব? কী আছে শ্বশুরবাড়ি? সব মেয়েদেরকেই কেন এভাবে রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করে শ্বশুরবাড়ি যেতে হবে? নওরিনের কত্ত ইচ্ছে ছিল, তার স্বামীকে ঘরজামাই হিসেবে রাখবে। একদিন সেকথা সবাইকে শুনিয়েছিল, এই তাহলে তার ঘরজামাই সাজা? প্রাণের বন্ধুটাকে নিয়ে দিব্যি তো আদনান চলে যাবে আজ। কীভাবে আটকাবে মেঘ? তার কি সেই ক্ষমতা আছে? নওরিন এখন কারও স্ত্রী, কারও ঘরের বউ, আর সে তো মাত্র বন্ধু। বন্ধুত্বটাকে তুচ্ছ করে আজ থেকে নওরিনও পর হয়ে যাবে। বুকের ভেতরটায় মুচড় দিল মেঘের। কান্নারা যেন দলা পাকিয়ে গলায় আটকে আছে। নিঃশ্বাস ফেলতেও ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আজ যে ভীষণ মনে পড়ছে সেদিনের কথা। এমনি একটা দিন তো তার জীবনেও এসেছিল। বধূ সেজে শ্রাবণের জন্য অপেক্ষা করছিল সে, তার সব স্বপ্নকে সেদিন আবির গলা টিপে হত্যা করে, দূরে ঠেলে দেয় দু’জনকে। সেই দূরত্বটা যে আজও গুছলো না। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নওরিনের আম্মুর চোখের পানি মুছে বলল,
“কী বোকা আমি! তোমাকে ইমোশনাল করে দিচ্ছি। এসো, নওরিনকে বিদায় দেই। সবাই অপেক্ষা করছে। তুমি কিন্তু একদম ভেঙে পড়বে না। আমি আছি না?”
হাসার চেষ্টা করলো মেঘ। নিচে এসে আদনান আর নওরিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,
“সিডনী যাওয়ার আগে বলেছিলাম, দুজনের মান-অভিমান মিটিয়ে একটা সুন্দর জীবনের জন্য এগিয়ে যাও। দেশে ফিরে তোমাদের মাঝখানে তৃতীয় জনকে চাই। অথচ দেখো, আজ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রিয় বন্ধুটাকে বিদায় দিচ্ছি। কী সৌভাগ্য আমার, আমার হৃদয়ে থাকা মানুষগুলো একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে আমি আটকাতেও পারছি না। ওর দায়িত্ব আজ থেকে তোমার। আমি জানি তুমি ওকে ভালো রাখবে। তবুও বলি, ওর ছোটো ছোটো ইচ্ছেগুলোর মূল্য দিও। দেখবে জীবনটা সুন্দর হবে। ভালো থেকো দুজনে। সুখী থেকো। মাঝেমধ্যে ফোন দিয়ে বিরক্ত করবো, কখনও বকে দিও না যেন। কষ্ট পাব খুব।”
বলতে বলতে মেঘ চোখ মুছলো। নওরিন এবার মেঘকে শক্ত করেই জড়িয়ে ধরলো। কেঁদে কেঁদে দুজনেই অস্থির। এই বন্ধুটা যে কী দামী সেটা এই দুজন খুব ভালো করে জানে। আজ থেকে দুজনের দূরত্ব বাড়বে তবুও যেন এই সম্পর্কটা টিকে থাকুক অনন্তকাল। কান্না মুছে নওরিনকে স্বাভাবিক করলো মেঘ। বাবা-মা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাইকে বিদায় দিতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো নওরিন। মেঘ আড়ালে সরে গেল। এখানে বেশিক্ষণ থাকলে দমবন্ধ হয়ে মারা যাবে সে।
(২৭)
নওরিন যাওয়ার ঘণ্টা খানেক পর মেঘ বাকিদের সামলে নওরিনের মায়ের কোলে মাথা রেখে বেশ আহ্লাদী কণ্ঠে বলল,
“এখন তো সব কাজ শেষ। আমি বাসায় যাই। আম্মু অপেক্ষা করছে তো।”
“আজকের রাতটা থেকে গেলে হয় না? তোর আংকেল খুব ভেঙে পড়েছেন।”
“আন্টি, আংকেলকে এখন তোমাকেই সামলাতে হবে। আমি দেখা করে যাব আংকেলের সাথে। বুঝিয়েও যাব। ক’দিন পর পর তো আদনান ভাইয়া নওরিনকে নিয়ে আসবেন। আস্তেধীরে সব মানিয়ে যাবে তাই না? মন খারাপ করো না।”
ঠিক রাত দশটার দিকে বাসায় ফিরলো মেঘ। নওরিনের বাবা-মা দুজনকে বুঝিয়ে শান্ত করে রাতের খাবার খাইয়ে তবেই সে ফিরতে পেরেছে। বাড়ি এসে দেখলো ড্রয়িংরুমে রোশান দিব্যি আলাপ জমিয়ে ফেলেছে বাবা-মায়ের সাথে। রাগ হলো মেঘের। দু’হাতে চুল খামচে ধরে বলল,
“কপাল! এই পাগলটা এখন আবার পিছু নিয়েছে। এরা তো আমার লাইফটাকে খেলার পুতুল বানিয়ে ছাড়বে।”
ভেতরে এগোতেই মেঘকে দেখে রোশান প্রথমে হাই বলে এগিয়ে আসলো। তারপর বলল,
“হেই বিউটিফুল! চলো একটু গল্প করি।”
মেঘ কয়েক’পা সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল,
“আ’ম সো টায়ার্ড রোশান! প্লিজ এ্যাক্সকিউজ মি! গুড নাইট।”
মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমি ও বাসায় খেয়ে এসেছি। তোমরা খেয়ে নাও।”
ভেতরে এসে লাগেজ রেখেই বিছানায় বসলো মেঘ। মাথা চেপে ধরতেই আপদটাকে তাড়ানোর চিন্তাভাবনা খেলে যাচ্ছে তার মাথায়। উঠে ফ্রেশ হয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিল মেঘ। ক্লান্ত শরীর থাকায় বিছানায় গড়াতেই ঘুমে তলিয়ে গেল মেঘ।
অন্ধকার রুমে টেবিল ল্যাম্পের রঙিন আলোতে মেঘের চেহারাটাও নীলাভ হয়ে গেছে। ল্যাম্পটা নিভিয়ে দিল কেউ। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। আযান হয়েছে বেশ খানিকক্ষণ আগে। জানালার পর্দা আলতো টেনে দিল সে। আবছা আলো সেই ফাঁক গলে রুমের ভেতরে এসে পড়েছে। মেঘ তখনও গভীর ঘুমে। হঠাৎ কপালে নরম কিছুর স্পর্শ পেল মেঘ। কেঁপে উঠলো পুরোটা। চোখদুটো কুঁচকে তাকানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু এই গভীর ঘুমটা তার চোখকে টেনে তুলতে ভীষণ বিরক্ত করছে। দু’চোখে আবারও সেই একই স্পর্শ। ঠিক তখনই কপালে কয়েক ফোটা পানি টের পেল মেঘ। হালকা নড়াচড়া করে চোখ মেলে কপালে হাত রাখতেই চমকে গেল। ভোরের আলো ততক্ষণে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। সেই আলোয় পানিটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। চারদিকে তাকিয়ে কাউকেই খুঁজে না পেয়ে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যায় মেঘ। বিছানা ছেড়ে নেমে জানালাটা ভালো করে খুলে দিল। বেলকনির দিকে এগিয়ে যেতেই দরজার ঠকঠক আওয়াজ শোনে পিছু ঘুরে দরজা খুলে মাকে দেখে বলল,
“গুড মর্নিং মা।”
“মর্নিং। চল আয়, নাশতা রেডি। আজ এত দেরী হলো উঠতে।”
“এখন আর তোমার মেয়ের স্বপ্নে কেউ আসে না মা, যার জন্য শেষরাতে ঘুম ভেঙে যাবে।”
“কেন এভাবে বলছিস? নতুনভাবে সব শুরু করা যায় না?”
“সকাল সকাল মাথা খারাপ করো না। ফ্রেশ হয়ে আসছি। যাও তুমি।”
দরজা বন্ধ করে ভেতরে এসে আবারও চারপাশ ভালো করে তাকালো মেঘ। কিছু একটা ভেবে ওয়াশরুমে ঢুকতে গিয়েও ফিরে এসে আয়নার সামনে দাঁড়ালো। কপালে, চোখে ভালো করে হাত বুলিয়ে বিড়বিড় করলো,
“আজও কি তুমি স্বপ্নেই এসেছো শ্রাবণ? কেন মনে হচ্ছে একটু আগে এখানে তুমি ছিলে!”
চলবে…
(ভুল ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইলো।)