ভালোবাসি_প্রিয়তম,পর্ব_২,৩
তাসনিম_তামান্না
পর্ব_২
???
কলেজের বড় বটগাছটার নিচে তুষার আর ওর ফেন্ডেগুলো বসে গল্প করছিলো রিমাও সাথে ছিলো ছেঁচড়ার মতো!রিমা তুষারের ফুফাতো বোন তুষার এতো অপমান করে রিমা তা গায়ে মাখে না উল্টো আরও তুষারের গা ঘেঁষে থাকে সবসময়। তুষার রিমাকে দুচোখে সহ্য করতে পারে না সবসময় দূরে দূরে থাকে কিন্তু রিমা গায়ে পড়তে থাকে সবসয়ম।রিমা যখন নেকামো করছিলো তুষারের সাথে তখন মেঘ পরপর চারটা থাপ্পড় মারে চার নম্বার থাপ্পড় খেয়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়লো।
কলেজের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কি হলো ব্যাপাটা বোঝার চেষ্টা করছে কিন্তু কেউ-ই বুঝতে পারছে না।মেঘ রাগে ফোঁস ফোঁস করছে। রিমা মেঘের হাতে থাপ্পড় খেয়ে মাথা ঝিমঝিম করছে।একজন পুলিশ অফিসারে হাতে থাপ্পড় খেয়ে ঝিমঝিম করার-ই কথা। রিমা নিজেকে সামলিয়ে উঠে দাড়িয়ে রেগে বলল-হাও ডেয়ার ইউ? এই তোর সাহস হলো কেমন করে আমাকে থাপ্পড় মারার তুই জানিস আমি কে?
-সে যেই হওনা কেনো আই ডোন্ট কেয়ার? আর সাহসটা আমার বড়াবড়ি বেশি। বাট তুমি সাহস দেখিয়ে ভুল করছো। তোমার সাহস কি করে হয় আমার বোনকে মারার, যার গায়ে কিনা বাসার কেউ কখনোই গায়ে হাত তুলেনি তাকে মেরে তুমি তার গা থেকে রক্ত বের করে দিলো। আবার গালি ও দিয়েছো ছোটলোকের বাচ্চা বলে? আমি তো দেখছি তুমি ছোটলোক। মেয়ে বলে ছেড়ে দিলাম এর পরে যদি আর আমার বোনের কোনো ক্ষতি করতে আসো তোমারকে মেরে ফেলতেও দুবার ভাববো না (বলে হনহন করে চলে গেলো)
কয়েক মিনিটে কি থেকে কি হলো কারোর বোধগম্য হলো না। রিমা রাগে,অপমানে ফোঁস ফোঁস করছে।
-তুমি কাকে মারছো রিমা(তন্নি)
-……(রিমা)
-রিমা বলছো না কেনো কাকে মারছো যে তার ভাই এসে তোমাকে মেরে গেলো(রিদ)
-ঔ মেয়েটাকে তো আমি এবার সামনে পেলে মেরেই ফেলবো(রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে রিমা বলল)
-কোন মেয়েটাকে(অবাক হয়ে হাসান বলল)
রিমা কোনো উওর না দিয়ে চলে গেলো কলেজ থেকে
মুন তখন খেয়াল করেছিলো একটা মেয়ে মেঘকে দেখিয়ে দিচ্ছিল এদিকে ঔ মেয়ে এখানেই দাড়িয়ে ছিলো মুন মেয়েটাকে ডাক দিলো।
-এই মেয়ে শুনো(হাত উঠিয়ে ডাকলো মুন)
-জি(মেয়েটা ভয়ে ঢোক গিলে এগিয়ে এসে বলল)
-তোমার নাম কি?(মুন)
-মিম
-তুমি ঔ ছেলেটাকে এদিকে দেখিয়ে দিয়েছিলে তুমি জানো কি হয়েছে(মুন)
-হ্যাঁ(মিম)
-তাহলে বলো ওখনে কি হয়েছিলো(মুন)
-আসলে ঔ রিমা আপুটা……. (তখনকার সব কথা বলল)
-মেয়েটার নাম কি(রিদ)
-কুয়াশা (মিম)
সবাই অবাক হয়ে চিল্লিয়ে বলল
-হোয়াট
তুষার এতোক্ষণ রিলাক্স মুডে ছিলো আর মজা নিচ্ছিলো রিমাকে সবার সামনে অপমান হতে দেখে ওর ভালোই লাগছিলো।কিন্তু কুয়াশা নামটা শুনে ওর বুকটা ধক করে উঠলো।এবার ওনিজেই মেয়েটার কাছে শুনলো
-ও কোথায় এখন(তুষার)
– ওর ফেন্ডেরা নিয়ে গেছে কোথায় তা জানি না(মিম)
– ওর কি বেশি লাগছে(তুষার)
-ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছিল আর খুব কান্না করছিলো (মিম)
তুষার রাগে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নিলো। চোখের রং মুহূর্তে লাল হয়ে গেলো।
তুষারের ফেন্ডরা ওর দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে তুষার কোনো মেয়েকে নিয়ে এতো কথা জিজ্ঞেসা করছে তাও আবার ফাস্ট টাইম আবার রেগেও যাচ্ছে।
★★★
এদিকে মেঘ গাড়িতে এসে বসে কোনো কথা না বলে গাড়ি চালাতে থাকে মেঘকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও কতটা রেগে আছে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। কুয়াশা অনেক আগে শান্ত করছে মেঘা এখন চুপ করে বসে আছে ও শক কাটিয়ে উঠতে পারছে না ও। কুয়াশা হঠাৎ বলল-ভাইয়া
মেঘ মেঘা আর কুয়াশার মুখে ভাইয়া ডাক শুনলে কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায় ওর।
-বল(মেঘ)
-ভাইয়াকে কিছু বলবে না প্রমিজ করো(কুয়াশা)
-পারবো না আমি তো ভাইয়াকে বলবোই ঔ মেয়ে লাইফ হেল করে দিবো কত বড় সাহস বিয়াদ্দপ একটা(মেঘ)
-ভাইয়া তুমি এমন করতে পারো না কিছু হয়নি তো আমি ঠিক আছি যদি তুমি ভাইয়াকে বলো তাহলে কাল থেকে আর কলেজে আসতে দিবে না প্লিজ ভাইয়া ভাইয়াকে বলবে না বল প্লিজ তুমি যদি বলে দাও তাহলে আমিও বলে দিবো তুমি প্রেম করো হুহ্ (কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল কুয়াশা)
-তুই আমাকে ব্লাকমেল করছিস(মেঘ)
-অবশ্যই হ্যা(কুয়াশা)মেঘা হাতের কনুই দিয়ে গুতা দিলে বলল -এমা না না তুমি বলবে না প্লিজ
মেঘ একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বলল -ওকে
-প্রমিজ (কুয়াশা)
-পাক্কা প্রমিজ(মেঘ)
-ইয়ে….কিন্তু আমরা এখন বাসাই জাবো না আজ সারাদিন ঘুড়বো(কুয়াশা)
-মানে(মেঘ)
-ভাইয়া প্লিজ না করবে না আমাদের সবার প্লান ছিলো আজ মজা করবো(মেঘা)
-কি প্লান ছিলো(মেঘ)
-এই খাবো,ঘুরবো,মজা করবো(কুয়াশা)
-ও কোথায় জাবি তাইলে(মেঘ)
-পার্কে (মেঘা)
-ওকে….কিন্তু সন্ধ্যার আগে বাসায় আসবি (মেঘ)
-আচ্ছা(সবাই)
-ঈশান,রাহুল (মেঘ)
-জী(ঈশান+রাহুল)
-তোরা ওদের বডিগার্ড ঠিকঠাক বাসায় পৌঁছে দিবি ওদের তিনটাকে(মেঘ)
-জানতাম এইটাই বলবা(ঈশান)
-কেনো ভাইয়া তুমি থাকবা না(কুয়াশা)
-নাহ আমার কাজ আছে (মেঘ)
-তুমি থাকলে ভালো হতো(মন খারাপ করে বলল কুয়াশা)
-জানি তো আমার পকেট খালি করার মতলব (মেঘ)
সবাই উচ্চস্বরে হেসে উঠলো।
.
আজ আকাশে মেঘের মেলা ক্ষনে ক্ষণে ঠান্ডা বাতাস বইছে। এই দুপুর টাইমে পার্ক ফাঁকা তেমন কেউ-ই নেই বলেই চলে।আর তার মধ্যে ঈশান,রাহুল, মেঘা,অনু,কুয়শা পার্কে ঘাসের ওপরে গোল হয়ে বসে গল্প করছে বাদাম,আইসক্রিম, চকলেট কিনে ওদের মাঝক্ষানে রাখছে।কুয়াশা স্বাভাবিক হয়ে গেছে অনেক আগে মুখে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়েছে ব্যাথায়।গল্পের মাঝে ওরা ঝগড়া মারামারি তো আছেই।
-দোস্ত আমার একটা গফ পটাই দে কেউ একা একা আর কতদিন থাকবো সামনে যদি রোমাঞ্চ করতে দেখি সবসময় আমারও তো ইচ্ছে হয় নাকি(রাহুল)
-সবসময় কে রোমাঞ্চ করে(ঈশান)
-কেন তুই আর অনু(দাঁত কেলিয়ে বলল রাহুল)
-তো তুই তো প্রেম কর রোমাঞ্চ কর কে বারন করছে(অনু)
– মেয়ে পাই না তো(ঈশান)
– সমস্যা নেই আমরা দুজন আছি না?(মেঘা)
– আমি বাচ্চাদের সাথে প্রেম করি না(ঈশান)
– কি আমরা বাচ্চা?কতবড় অপমান….যা তোর সাথে ব্রেকআপ(কুয়াশা)
– হুহ যা তোর সাথে আমার ও ব্রেকআপ। আমি তো সিনিয়র আপু দের সাথে প্রেম করবো(ঈশান)
– সিনিয়র (অবাক+চিল্লিয়ে বলল সবাই)
– হুম(ঈশান)
– সিয়িয়ারদের সাথেই কেনো? ছোটদের সাথে না কেনো(রাহুল)
– আরে সিনিয়র কোনো মেয়ের সাথে প্রেম করলে আমাকে খাইতে দিবে আমি তার থেকে ছোট বলে। আমি তার থেকে ছোট বলে সে আমার কাছ থেকে কিছু চাইতে লজ্জা করবে কিছু চাইবে না। আর ছোটদের সাথে প্রেম করলে উল্টো আমার টাকা যাবে তাই এ সিদ্ধান্ত। (ঈশান)
ঈশানের কথা শুনে সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাইতে লাগলো।
সারাদিন ঘুরাঘুরি করে,খেয়ে মজা করে,তার সাথে ঝগড়া মারপিট তো আছেই,সবাই ক্লান্ত হয়ে যে যার বাসায় চলে গেলো এর মধ্যে কুয়াশা সকালের কথা ভুলে গেছে।বন্ধু জিনিসটাই এমন যাদের সাথে থাকলে কষ্ট কি জিনিস সেটাই আমরা ভুলে যায়।বন্ধুরা সাথে থাকলে বয়স যতই হক না কেনো সে বাচ্চা দের মতো ব্যবহার করবেই। যতক্ষণ তারা একসাথে থাকবে ততক্ষণ মুখ থেকে হাসি সরবেই না। বন্ধুরা একসাথে থাকলে মনে হয় কষ্ট গুলি ভয়ে পালিয়ে যায়।
কুয়াশা,আর মেঘাকে ঈশান বাসায় পৌঁছে দিয়ে গেছে। আর রাহুল অনুকে পৌঁছে দিয়েছে।কুয়াশা আর মেঘা অনেকগুলা চকলেট কিনে আনছে নাহলে দুজন অনেক রাগ করবে যে।কুয়াশা আর মেঘা বাসায় আসতেই কেউ ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো দু’জনকে। ওরা ও খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরলো…..
#চলবে
#tasnim_tamanna
[ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট করা জন্য ?]
#তাসনিম_তামান্না
#ভালোবাসি_প্রিয়তম
#পর্ব_৩
???
বাসায় আসতেই কুশ আর শান এসে জড়িয়ে ধরলো কুয়াশ আর মেঘাকে ওরা খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরে কোলে নিলো।কুয়াশা শানকে কোলে নিলো আর মেঘা কুশকে কোলে নিলো।
-পিপি তোমরা আমাদের জন্য চকলেট আনছো তো(শান)
-হ্যাঁ সোনা বাবা নিয়ে এসেছি(মেঘা)
-ও চোনা বাবা না আমি চোনা বাবা(কুশ)
-না আমি চোনা বাবা (শান)
-তোমরা দু’জনই সোনা বাবা নো ঝগড়া। ঝগড়া করলে মাম্মা এসে পিটুনি দিবে তোমাদের দুজনকে(কুয়াশা)
-আচ্ছা আল তাহলে ঝগলা কলবো না চকেট দাও এবাল(কুশ)
সোফায় বসিয়ে দিয়ে চকলেট বের করে দিলো ওদের দুজনকে।
-এতো গুলা ইয়ে(কুশ+শান)একসাথে বলল
ড্রাইংরুমে চেচামেচি শুনে পাখি রুম থেকে বেরিয়ে আসলো। এসে দেখে কুশ,শান,মেঘা,কুয়াশা বসে আছে আর সামনে টিটেবিলে অনেক গুলা চকলেট। চকলেট দেখে মাথায় চাপরাতে চাপরাতে ওদের সামনে গেলো।কুশ আর শান পাখিকে দেখে কুয়াশা আর মেঘার কাছে গিয়ে লুকালো।
-এই তোরা আবার চকলেট নিয়ে এসেছিস আমার কথা একটুও শুনিস না এতো করে বললাম চকলেট যেনো বাড়ির এিসীমানায় না আসে তারপর ও নিয়ে আসলি (পাখি)
-ওফফ ভাবিপু কি হইছে চকলেট আনছি তাই(মেঘা)
-কি হইছে মানে কি হইনি তাই বল ওদের দুইটার দাঁতে পোকা লাগছে দাঁতে ব্যাথায় যদি দুইটা কাঁদিস তোদের দুইটারে আছার দিবো বিয়াদ্দপ (পাখি)
-ওভাবিপু ওদের বকছো কেনো দেখতো কত ভয় পাচ্ছে আর তোমাকে রাগলে পুরা ডাইনোসরের মতো লাগে(দাঁত কেলিয়ে কুয়াশা বলল)
-ঠিক বলছিস দেখ আবার সাপের মতো ফোঁস ফোঁস ও করতেছে(দাঁত কেলিয়ে মেঘা বলল)
-তাহলে ব্যাপারটা ডাইনোসাপ দাঁড়ায় (কুয়াশা)
-বাহ ভালো নাম বের করেছি তো ডাইনোসাপ(মেঘা)
বলে ওরা দুজন হো হো করে হেসে দিলো কুশ আর শান কিছু না বুঝেই ওদের সাথে হাসতে লাগলো।
-তবে রে দাঁড়া তোদেরকে আজ…. (তেরে এসে পাখি বলল)
পাখির পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই চারজন চারদিকে পালালো
-এই এই দাড়া কই পালাছিস(পাখি)
পাখি মুচকি হেসে রান্নাঘরের দিকে যায়।পাখি এই পাঁচ বছর ধরে এ-ই সংসার আর সংসারের মানুষ গুলোকে ভালোবেসে আগলে রাখছে।পাখি যখন অর্নাস ফাইনাল ইয়ারের পড়ে তখন ওর জন্য ওর বাবা মা পাএ ঠিক করে বিয়ে দিবে বলে।এদিকে কুশান আর পাখি দু’জন দু’জনেকে খুব ভালোবাসে সেম ইয়ার রিলেশনশিপ হওয়ায় পাখির বাবা-মা মেনে নিচ্ছিলো না তার পর কুশান আর পাখি পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে কুশান এভাবে বিয়ে করতে চাইনি কিন্তু পাখির জোরাজোরিতে রাজি হয়ে যায়। পাখি ওর বাবা-মাকে চিনে যেকরেই হক অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিতো।বিয়ের পর পাখির বাবা-মা মেনে নেই। কুশানের পরিবার একটু অভিমান করছিলো না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য কিন্তু সে অভিমান বেশিক্ষন থাকে নি ঠিকই কাছে টেনে নিয়েছিলো।সবই ঠিকঠাক চলছিলো সংসারের সবাইকে নিয়ে খুব সুখেই দিন কাটছিলো পাখির হঠাৎ একটা ঝড়ে সব উল্টোপাল্টা হয়ে গেলো।
কুশানের বাবারা দুইভাই।কুশানের বাবা বড় কুশান আর কুয়াশা তাদের সন্তান। মেঘের বাবা ছোট মেঘ আর মেঘা তাদের সন্তান।কুশান,কুয়াশা,মেঘ,মেঘা এরা চাচাতো ভাইবোন হলেও তাদেরকে দেখে কেউ বলে বলবে না এরা চাচাতো ভাইবোন সবসময় অপনের চেয়েও বেশি তারা তাদের সবাই-ই দেখতে সুন্দর কিন্তু কুয়াশা একটু বেশিই সুন্দর। বাসার সবাই মিলে ঠিক করে পিকনিকে যাবে সে অনুযায়ী সব ঠিক করে বড়রা একগাড়িতে আর ছোটরা একগাড়িতে।কিন্তু বড়রা যে গাড়িটাতে ছিল সে গাড়িটা ব্রেকফেল হয়ে খাদে পড়ে আগুন লেগে যায় গাড়িতে।[আসল লেখিকা তাসনিম তামান্না ]অনেক চেষ্টা করছিলো বাবা-মা, চাচা-চাচিকে বাচানোর কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি।সেদিন ওরা পিকনিকে গিয়েছিল ঠিকি কিন্তু পিকনিক করা হয়নি সবাই পাথর হয়ে গিয়েছিলো।মেঘ,মেঘা,কুয়াশা,কুশান ভেঙ্গে পড়ে ছিলো পাখি নিজেও ভেঙে পড়েছিলো মার মতো আরও দুইটা মা পেয়ে ও গর্ব করত। মেঘা আর কুয়াশা তখন ৮ম শ্রেণিতে পড়ে।মেঘ তখন ইন্টার ১ম বর্ষে পড়ে। কুশান আর পাখি ও তখন স্টুডেন অনাস ফাইনাল ইয়ারের পড়ে।ছাতার মতো আগলে রাখার তখন কেউ নেই অল্প বয়সেই অনাথ হয়ে যায় ওরা। পাখি তখন কুশানকে বুঝিয়ে অনেক কষ্টে পরিবারটাকে আবার আগের মতো পরিবারটাকে গড়ে তোলে।কুশান পড়ালেখার পাশাপাশি অফিস দেখাশুনা করে।পাখিও পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারটাকে ভালোবেসে আগলে রাখে।কুশ আর শান ওরা দুজন টুইস কুশান আর পাখির সন্তান ওদের বয়স ২ বছর। মেঘও পড়াশোনার পাশাপাশি একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার হয়ে ওঠে।এখন মাস্টার্স করছে তুষার আর মেঘ ক্লাস মেট কিন্তু কেউ-ই কাউকে চিনে না কারণ মেঘ ভার্সিটি তে তেমন যায় না।
কুয়াশা আর মেঘা ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নিচে এসে কুশ আর শানের সাথে দুষ্টুমি করে পাখির সাথে অনেকক্ষণ গল্প করলো আজ কি,কি করলো সবই বলল শুধু কলেজে ঘটনা টা স্কিপ করে গেলো।কুশ আর শান ঘুমিয়ে গেছে।এর মধ্যে কুশান আর মেঘ ও বাড়ি ফিলো।সবাই একসাথে খেতে বসছে।
-আজ ভার্সিটির ফাস্ট দিন কেমন কাটলো তোদের(ভাত মাখতে মাখতে বলল কুশান)
-অনেননননননক ভালো ভাইয়া(মেঘা+কুয়াশা)
-গুড কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবি আর মেঘ তো আছেই(কুশান)
-আচ্ছা ভাইয়া(কুয়াশা+মেঘা)
কুয়াশা একলোকমা খেতেই ঠোঁটের কাটা যায়গায় ঝাল লাগতেই ব্যাথায় ‘আহ’ শব্দ করে চোখ মুখ কুচকে ফেললো।
-কি হলো ছাগলের মতো করছিস কেনো(মেঘ)
-ও কে ছাগলের মতো বলছো কেনো ওতো ছাগলই(মেঘা)
কুয়াশা মেঘার কথা শুনে চোটে গিয়ে বলল
-আমি ছাগল হলে তুই হাতি(কুয়াশা)
-স্টপ কি হইছে? সবসময় ঝগড়া না করে থাকতে পারিস না?(পাখি)
-আরে ভাবিপু তুমি জানো না ওরা তো ঝগরুটেই সারাদিন ভেউ ভেউ করে(মেঘ)
-তারমানে তুমি আমাদেরকে ইন্ডাইরেক্টলি কুকুর বলছো(মেঘা)
-ইন্ডাইরেক্টলি না ডাইরেক্টলি বলছি(মেঘ)
-কত বড় অপমান(কুয়াশা)
-ভাইয়া তুমি কিছু বলো কেমন অপমান করছে দেখছো না?(মেঘা)
-আমি আর কি বলবো? আমি ঝগড়া থামাতে বলে তোরা আরও ঝগরা শুরু করিস তোদের কাছ থেকে আমার ছেলে দুইটাও শিখতেছে (কুশান)
-শিখতেছে না শিখা হয়ে গেছে সারাদিন দুইটা ঝগড়া করতেই থাকে (পাখি)
ঝগড়া করতে করতে খাওয়া শেষ করলো।কুয়াশা ঠোঁট কাটা জ্বলার জন্য বেশি খেতে পারলো না সবাইকে জিভে ঘা বললো না হলে টেনশন করতো।আরও কিছুক্ষণ গল্প করে ঘুমাতে গেলো।
★★★
তুষার কলেজে থেকে ফিরে ঘরের দরজা দিয়ে বসে আছে।সাওয়ারের নিচে ১ঘন্টা দাড়িয়ে ছিলো রাগটা অনেকটাই কমে গিয়েছে।কিন্তু কেনো রাগ করলো একটা মেয়ের জন্য এতো কেনো কষ্ট হচ্ছে ওর এতো কেনো রাগ লাগছে ওর তুষার সেটাই বুঝতে পারছে না কেনো মেয়েটার কান্না মিশ্রিত মুখ ভেসে উঠছে ও কিছু ভাবতে পারছে না।খায়ইও নি সার্ভেন্টরা খাবার নিয়ে আসলে ফিরেয়ে দিয়েছে।তুষার বেডে বসে বল ওলে দিচ্ছে আবার বেক করে ওর কাছেই ফিরে আসছে।ওর মাথা থেকে কিছু তেই কুয়াশার মুখ সরছে না।এবার জোরে বলটা ওলের দিলো ছিটকে অন্য দিকে চলে গেলো বলটা। তুষার মাথা দু’হাত দিয়ে চেপে ধরে বলল
-কেনো এমন হচ্ছে? কেনো? বার বার কেনো ঔ মেয়ের মুখ বার বার মনে পরছে কেনো ভুলতে পারছি না? ওফ্ফ কেনো সরছে না কেনো কেনো তাহলে কি আমি ওকে ভালোবাসে ফেলছি?কিন্তু প্রথম দেখায় কেমন করে ভালোবাসা হয়? না না আমি কাউকে ভালোবাসবো না? সবাই ঠকাই সবাই কেউ ভালোবাসে না সবাই চলে যায়। না না আমি আর ঔ মেয়ের কথা ভাববো না?
বেড থেকে উঠে দুইটা স্লিপিং পিল খেয়ে বেডে শুয়ে পড়লো। স্লিপিং পিল না খেলে আজ রাতে আর ঘুমাতে পারতো না কষ্ট গুলো এলোমেলো করে দিতো তুষারকে।
-কেনো চলে গেলে কেনো?কেনো আমাকে কষ্ট দিলে আমার কি দোষ ছিলো …..
বিরবির করতে করতে ঘুমিয়ে পরলো।
#চলবে
#tasnim_tamanna
[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সাপোট করার জন্য ধন্যবাদ ]