তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব১৮,১৯

0
1305

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব১৮,১৯
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৮

ক্লাস শেষ করে নদী, বর্ষা ক্যাম্পাসে হাঁটছে আর কথা বলছে। কিভাবে হাত কেটেছে এ দুইদিনে কি করেছে সে সব গল্প করছে দুজন। অবশ্য এসব কথা বর্ষা বলতে চায়নি। নদী বার বার করে জিজ্ঞেস করায় বর্ষা বলতে বাধ্য হয়েছে।

বর্ষাঃ আচ্ছা নদী! আমরা যে ঘুরতে গিয়েছিলাম মানে আমি আর বর্ষণ ভাইয়া সেটা তোকে কে বললো? আমি যে বিরিয়ানি রান্নার সময় আঙুল কেটে ফেলেছি সেটা তুই জানলি কি করে?

নদীঃ কেমন করে আর জানবো বল! তুই তো আমার কলিজার দোস্ত তাই আমি তোর ব্যাপারে সব জানি। কিন্তু আমি তো তোর কেউ না, তাই তুই আমার কোনো খোঁজ রাখিসনা।

বর্ষাঃ ঐ ড্রামা কুইন! থাম এবার অনেক হয়েছে। কিছু জানতে চাইলে কিভাবে প্রসঙ্গ চেঞ্জ করবি সেই চিন্তায় থাকিস যত্তসব।

দুজন কথা বলতে বলতে এগিয়ে যাচ্ছে কোনো দিকে খেয়াল নেই তাদের তারা তো ঝগড়া নিয়ে ব্যাস্ত। আচমকা শাফিন এসে ওদের সামনে দাঁড়াতেই নদী আর বর্ষা থেমে যায়।

শাফিনঃ আরে নদী, বর্ষা কেমন আছো তোমরা?
কি নিয়ে ঝগড়া করছো দুজন জানতে পারি কি?

বর্ষাঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কিন্তু আমরা যে ঝগড়া করছি সেটা আপনাকে কে বললো?

শাফিনঃ কেউ বলেনি তো! আমি নিজেই তো শুনতে পেলাম।

বর্ষাঃ আড়িপেতে শুনেছেন আমাদের কথা?

শাফিনঃ নাহ্ একদমি নাহ্। একচুয়েলি আমি তোমাদের পেছনেই ছিলাম তাই একটু একটু শুনতে পেলাম তোমাদের কথা, কিন্তু পুরো কথাটা বুঝতে পারিনি।

বর্ষাঃ ওহ্ তাহলে পিছু নিয়েছেন? ফলো করছেন আমাদের?

শাফিনঃ হু সেটা বলতে পারো। তোমাদের ফলো করছিলাম বটে।

বর্ষাঃ কেনো? ফলো করছিলেন কেনো?

শাফিনঃ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

বর্ষাঃ বাট, আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই আপনি কেনো বুঝতে পারছেন না?
বর্ষা রেগে গিয়ে আঙুল উঁচিয়ে কথাগুলো বলতেই শাফিন বর্ষার হাত চেপে ধরে। বর্ষা তো অবাক হয়ে যায় শাফিন ওর হাত ধরাতে।

শাফিনঃ বর্ষা! তোমার হাতে কি হয়েছে ব্যান্ডেজ কেনো! কি হয়েছে বলো! কিভাবে হলো! প্লিজ কথা বলো!অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলো শাফিন।

নদী তো হা হয়ে শুধু দেখছে।ক্লাস শেষে সকল স্টুডেন্ট ক্যাম্পাসে , সবার সামনে এভাবে শাফিন হাত ধরাতে নদী যেনো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।

বর্ষণ গাড়ি নিয়ে গেটে ঢুকতেই এমন কান্ড দেখে তো মাথায় রক্ত চেপে যায়। শাফিন বর্ষার হাত ধরে আছে আর বর্ষা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে।
এক মুহুর্তের জন্য বর্ষণের মনে হচ্ছে তার কলিজা ধরে কেউ টানাটানি করছে।

বর্ষণ দ্রুত গিয়ে এক ঝটকায় বর্ষার হাত শাফিনের হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়। আর শুধু তাই নয়, বর্ষাকে এক হাতে জড়িয়ে বুকের সাথে রেখে অন্য হাতে শাফিনকে কষে এক থাপ্পড় মারে।

শাফিন গালে হাত দিয়ে বর্ষণের দিকে তাকিয়ে দেখে বর্ষণের চোখ লাল হয়ে আছে। শাফিন বললো ভাইয়া আপনি?

বর্ষণঃ সাট আপ! জাস্ট সাট আপ! হাউ ডেয়ার ইউ টাচ হার।
রেগে বললো বর্ষার দিকে কেউ তাকানোর সাহস পয়না কথা বলা তো দুরের কথা আর তুমি হাত ধরে টানাটানি করছো?

শাফিনঃ ভাইয়া বর্ষাকে আমার ভালো লাগে, ও আর পাঁচটা মেয়ের মতো উশৃংখল নয়। আমি ওকে ভালো…

বর্ষণঃ ব্যাস! অনেক বলে ফেলেছো।কিন্তু তুমি কি জানো! বর্ষা অন্য কারও বাগদত্তা।
ভবিষ্যতে এমন ভুল আর কখনো করবেনা।

বর্ষা যে বাগদত্তা এটা শুনে বর্ষা ভ্রু কুচকে বর্ষণের দিকে তাকায়।

বর্ষণ সেটা তোয়াক্কা না করে বর্ষাকে নিয়ে গাড়ির কাছে যায়। গাড়ির গেট খুলে বর্ষাকে বসতে বলে। বর্ষা কিছু না বলে গাড়িতে বসে পরে।

বর্ষণ ড্রাইভ করছে কোনো কথা বলছে না। বর্ষা বার বার বর্ষণের দিকে তাকাচ্ছে কিন্তু কিছু বলছে না। বলবে কিভাবে বর্ষণ তো মুখ গম্ভীর করে আছে।

বাসায় পৌঁছে বর্ষণ কিছু না বলেই উপরে চলে যায়।

বর্ষার মাথায় শুধু একটা কথাই ঘুরছে বর্ষণ তাকে বাগদত্তা বললো কেনো।

বর্ষা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠবে তখন রমা বেগম ডেকে ওঠে বর্ষাকে। রমা বেগম বললো ফ্রেশ হয়ে নিচে আয়। বর্ষা ঘাড় নেড়ে সায় দিয়ে উপরে চলে যায়।

দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই নিচে বসে আছে। বর্ষণ, বর্ষা, নিপু রমা বেগম। বর্ষণ আজ আর অফিসে যায়নি। সবাই বসে কথা বলছে।

নিপু উঠে কিচেনে চলে যায়। রমা বেগমের ফোন বেজে ওঠে রায়হান খান ফোন করেছে। রমা বেগম কথা বলতে বলতে রুমে চলে যায়।

বর্ষণ আর বর্ষা বসে আছে।বর্ষা বর্ষণের দিকে তাকিয়ে বলে ভাইয়া..

বর্ষণঃ বর্ষাকে কিছু বলতে না দিয়ে আগেই বলে বসে ” তুই কি শাফিনকে পছন্দ করিস? ভালোবাসিস ওকে!”

বর্ষাঃ কি বলছো ভাইয়া আমি শাফিন ভাইয়াকে কেনো ভালোবাসতে যাবো! নবীনবরণ এর পর থেকে ওর সাথে আমি কথা পর্যন্ত বলিনি।সবসময় ওকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি, আর তুমি কি না বলছো আমি ওকে….
তোমার এটা কেনো মনে হলো ভাইয়া

বর্ষণঃ নাহ্ এমনি জানতে চাইলাম।

বর্ষাঃ কিন্তু আমি আমার প্রশ্নের আনসার পাইনি।

বর্ষণঃ সময় হলে ঠিক জানতে পারবি আর খুব শিঘ্রই জানতে পারবি।বলেই বর্ষণ চলে যায় উপরে।

………….

এক সপ্তাহের বেশি কেটে গেছে। বর্ষা ক্লাসে যায় ক্লাস করে বাসায় আসে নদী ছাড়া কারও সাথে কোনো কথা হয়না তার।
এমনকি শাফিনের সাথে ও না।

সেদিনের পর থেকে শাফিন নিজে থেকেই দুরে সরে গিয়েছে। মন থেকে বর্ষাকে হয়তো সরাতে পারেনি তাই দুর থেকেই বর্ষাকে দেখে সে।

আগামীকাল সবাই রাফসানদের বাসায় যাবে। এর মধ্যে অনেকবার ফোন করেছে রাফসানদের বাসা থেকে। তাদের আত্নীয় স্বজনরা সবাই আসতে শুরু করেছে।বর্ষণরাও যেনো তারাতারি চলে যায়।

ভোরে নাস্তা করে সবাই বেরিয়ে পরেছে রাফসানের বাসার উদ্দেশ্যে।

রাফসানের বাসায় পৌঁছাতেই সবাই এসে ঘিরে ধরেছে বর্ষাকে আর বর্ষণকে।অনেকদিন পরে দেখা হলো তাদের। সবাই তো মহা খুশি। ভেতরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সবাই গল্পে মেতে ওঠে।

দুপুরে লাঞ্চ করে সবাই বের হবে শপিংয়ের জন্যে। কি কি শপিং করবে তার লিস্টে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে বর্ষণ একবার।

বর্ষণঃ কিরে রায়ফসান বিয়ে করতে এই এতো কিছু কিনতে হয় নাকি! চোখ বড় বড় করে করে বলে রাফসান।

রোহিতঃ আরে শালা বাবু এতো কিছু কি বলছো এগুলো তো কিছুই না। না মানে বলছিলাম এগুলো তো একদিনের জন্য কেনা হচ্ছে। এবার বুঝো সারাজীবন ধরে কতো কি কিনতে হবে।

বর্ষাঃ দুলাভাই! আপনি কি বলতে চাইছেন টা কি হু…! আমরা মেয়েরা সবসময় মার্কেটেই বসে থাকি? দিস ইজ নট ফেয়ার দুলাভাই।

রোহিতঃ ঐ দেখো ছোট গিন্নি তুমি এতো রেগে যাচ্ছো কেনো? আমি সেকথা কখন বললাম। আমি তো জাস্ট বলেছি..

ঋতুঃ থাক অনেক বলাবলি হয়েছে এবার থামোতো।শপিংমলে চলো তারপর তোমায় বোঝাবো কি কি কিনতে হয়।

দুপুরে লাঞ্চ করে সবাই বেরিয়ে পরেছে।ঈশিতার ফ্যামেলি আসবে ওখান থেকে একসাথে কেনাকাটা করবে ।

শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটা শুরু করে। হলুদে ম্যাচিং শাড়ি পান্জাবি। মেহেদীতে লেহেঙ্গা। বিয়ের জন্য একটা ড্রেস বৌভাতের একটা ড্রেস প্রতিটা ড্রেসের সাথে ম্যাচিং অর্নামেন্টস।
তবে বর্ষার সবগুলো ড্রেস পছন্দ করে দিয়েছে বর্ষণ। অবশ্য সেটা বর্ষার ইচ্ছেতেই।

শপিংমল থেকে বেরিয়ে রেস্টুরেন্টে যায় সবাই। কেনাকাটা করতে করতে সবাই ক্লান্ত একটু কিছু খেতে হবে এখন। রাত ও হয়েছে অনেকটা।তাই রেস্টুরেন্টে ডিনার টা সেরে সবাই গাড়িতে উঠে বসে।

বাসায় এসে সবাই যে যার মতো রুমে চলে যায়। বর্ষাও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ধপাস করে বিছানায় শুয়ে পরে।

চলবে…..

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৯

নিপু আর বর্ষার জন্য একটা রুম বরাদ্দ।টেডিটা নেই বলে নিপুকে টেডি বানিয়ে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে বর্ষা।

নিপু ঘুম থেকে উঠে নড়াচড়া করতে পারছেনা।বাধ্য হয়ে বর্ষাকে ডাকে নিপু।
এই বর্ষা আপু! উঠো,আপু!

বর্ষা ঘুরে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে ঘুম জরানো কন্ঠে বলে নিপু ডিস্টার্ব করিসনা ঘুমোতে দে।
নিপু বর্ষার কথা শুনে হাসতে হাসতে বিছানা ছেড়ে উঠে যায়।
বর্ষা আবার ঘুমিয়ে পরে।

এদিকে বর্ষণ আর রাফসান এক রুমে ঘুমিয়েছে। একচুয়েলি বর্ষণ রাফসানের রুমে নয় বরং বর্ষণের জন্য যে রুমটা দেওয়া হয়েছে, রাফসান বুকে বালিশ জরিয়ে সেই রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।তারপর দুজন অনেক গল্প গুজব আর আড্ডা দিয়ে শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে পরে। প্রায় বেলা ১০ টা বাজতে চললো তবুও এখনো ঘুম ভাঙেনি তাদের।

বেলা ১০ টা..
বর্ষা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে চলে যায়। সেখানে খালামনি মামনী সবাই আছে সাথে কাজের লেকেরাও কাজ করছে।তারা সবাই রান্না বান্না নিয়ে ব্যাস্ত।আবার কেউ কেউ আড্ডা খাওয়া দাওয়া নিয়ে ব্যাস্ত। তবে যাই হোক বাড়িতে এক জমজমাট পরিবেশ।

ঋতু নিপুকে পাঠিয়েছে বর্ষণ আর রাফসানকে ডাকতে। সবাই সকালের খাবার খেয়ে নিয়েছে। শুধু ঋতু, রোহিত,বর্ষা, বর্ষণ, নিপু আর রাফসান বাঁকি আছে।রাফসান বর্ষণ নিচে আসাতে একসাথে ব্রেকফাস্ট করছে সবাই।

প্রায় সকল গেস্ট ই চলে এসেছে।গ্রাম থেকে রাফসানের দাদু দিদা,চাচা চাচীরাও চলে এসেছে। শুধু এক চাচী আসে নাই সে আসবে বিকেলে।তিনি আবার সব বিষয়ে একটু খুঁতখুঁতে টাইপের।

ছাঁদ সাজানো হয়েছে সুন্দর করে এই ছাঁদেই আজ মেহেদী পরানোর ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। আগামীকাল হলুদের আয়োজন টা এখানেই করা হবে।
বিকেল থেকে সবাই ব্যাস্ত কে কি সাজ দেবে তা নিয়ে আবার কেউ কেউ ছুটেছে পার্লারের দিকে কারণ এই অনুষ্ঠানে কোনো বিউটিশিয়ানকে ডাকা হয়নি সাজুগুজু করার জন্য।যারা এসেছে তারা শুধু মেহেদীই পরাবে। অবশ্য এটা জেনে বুঝেই করা হয়েছে।

নিপু, ঋতু, বর্ষা বসে বসে সবার সাজের বহর দেখছে আর তিনজনে মিলে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। তাদের সাথে এসে যোগ দেয় বর্ষণ আর রাফসান।

সন্ধ্যার পরে ঋতু, বর্ষা আর নিপু রেডি হতে চলে যায়। আর রোহিত,বর্ষণ রাফসানকে নিয়ে যায় রেডি করতে সাথে তারাও রেডি হয়ে নেবে।
মেহেন্দি অনুষ্ঠানে সব মেয়েরা লেহেঙ্গা পড়বে আর ছেলেরা পান্জাবি।কারণ মেহেদী পরানোর সাথে সাথে একটু নাচ গানও হবে তাই জন্য এমন ড্রেসআপের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।

সবাই রেডি হয়ে নিচে বসে আছে শুধু পাত্তা নেই তিন মহারাণীর। রোহিত ডাকতে জাবে তখনি তিনজন সিঁড়ির দরজা খুলে ছাঁদে আসে। বর্ষণ আর রোহিত তো হা করে তাকিয়ে আছে।

আর শুধু এরা দুজন নয় অনুষ্ঠানের প্রায় লোকই তাকিয়ে আছে ওদের তিনজনের দিকে কারণ তারা সেম কালার সেম ড্রেস সেম পড়েছে। আর সাজুগুজু ও সেম। আর চেহারায় তো তিনজনই মাশাআল্লাহ।
তাই সবাই তাকিয়ে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। যে যেমন পেরেছে সাজুগুজু করেছে বাট এরা তিনজন আলাদা।

রাফসান বললো কিরে তোরা আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবি আমায় বলতে পারিস?
ঋতু হাসতে হাসতে বললো আর বসে থাকতে হবেনা এবার মেহেদী পরতে পারিস ভাই।

রাফসানঃ এতো সহজে বললে তো হবেনা। এতোটা সময় বসিয়ে রেখেছিস আপু,শাস্তি টা নিবিনা?

ঋতুঃ শাস্তি! কিসের শাস্তি?

রাফসানঃ তোরা ডান্স করবি আমি মেহেদী পরবো, এটাই তোদের শাস্তি।

রোহিত- ঋতু, বর্ষা-বর্ষণ মিউজিকের তালে তালে ডান্স করছে। নিপু একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। সবার মাঝ থেকে একটা ছেলে হাত বাড়িয়ে দেয় কিন্তু নিপু হাতটা না ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। ছেলেটি বললো বিশ্বাস করতে পারো।
নিপু বর্ষণের দিকে তাকায় বর্ষণ অনুমতি দিলে নিপুও ছেলেটির সাথে ডান্স করে।

মেহেদী পরানো শেষ,রাফসান সহ সবাই সারপ্রাইজড হয়ে যায়। সবাই একসাথে বলে ওঠে সবুজ! তুই কখন আসলি।এইতো দুদিন আগেই বললি আসতে পারবিনা, এখন আবার চলে এলি?

সবুজঃ হুম চলে এলাম। আসলে আমার অফিসের বস টা খুব ভালো তাই নিজে থেকে আমাকে ছুটি দিয়েছে। বর্ষণের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে কথাটা বললো সবুজ।

সবুজের কথা শুনে রাফসান ও বর্ষণের দিকে তাকিয়ে বর্ষণকে ছোট্ট করে একটা থ্যাঙ্কস জানিয়ে দেয় কারণ সবুজ যে বর্ষণের কোম্পানির মালয়েশিয়ার শাখার দায়িত্বে আছে সেটা শুধু রাফসান, বর্ষণ আর সবুজ ই জানে।

সবুজের সাথে নিপুকে ডান্স করতে দেখে রাফসানের খুত খুঁতে চাচির গায়ে জ্বালা ধরে যায়।জ্বালা ধরবেইনা বা কেনো বলেন,ছেলেটা তো তার ই।

রাফসানের চাচী নিপুকে দেখিয়ে রমা বেগমকে বললো এটা তোমাদের বাড়িতে বড় হওয়া সেই এতিম মেয়েটা না? তা মেয়েটা এখনো তোমাদের ঘাড়েই থাকে নাকি? তোমরা পারোও বটে বাড়িটা একেবারে আশ্রম বানিয়ে ফেলেছো।

রমাঃ শুনুন, আপনি আমার আত্নীয়, বোনের জা হন। আমি চাইনা আপনি অসম্মানিত হন।আমি কোনো ভাবে আপনাকে হার্ট করতে চাইনা কিন্তু তার মানে এটা নয় আপনি আমার কাছের মানুষদেরকে, আমার ভালোবাসার মানুষগুলোকে অপমান করবেন, যা নয় তাই বলবেন আর আমি সেটা মেনে নিবো।

নিপু আমার সন্তান। বর্ষণ যেমন আমার ছেলে, নিপুও তেমন আমার মেয়ে।বর্ষণের মতো নিপুও নিজের অধিকারেই থাকে আমার বাড়িতে। আপনাদের মতো মামী আছে বলেই আজ মামীদের নামের পাশে ট্যাগ লাগানো।

নিপু পাশ থেকে সবকিছুই শুনেছে, কিছু না বলে শুধু চোখের জল মুছতে মুছতে ছাঁদ থেকে নেমে আসে।বর্ষাও নিপুকে ডাকতে ডাকতে নিপুর পিছু পিছু আসে।আজ বর্ষার ও বড্ড মন খারাপ। কারণ কথাগুলো বর্ষার ও গায়ে লেগেছে।

বর্ষণ জবাব দিতো কিন্তু যেখানে তার মম জবাব দিয়ে দিয়েছে সোখানে বর্ষণের আর জবাব দেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা।
বিশেষ করে বড়দের মুখে মুখে তর্ক করার শিক্ষাটা ছোটবেলা থেকে পায়নি সে।

সবুজ তো তার মায়ের কথা শুনে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। তবুও মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো মা তুমি আর পরিবর্তন হলেনা। এখনো এসব ধারণা নিয়ে চলো তুমি? মা এবার নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করো কথাটা বলে সবুজ নিচে নেমে আসে।

একে একে উপর থেকে সবাই নিচে চলে আসে। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে নেয়। নিপু খেতে চায়নি তবে বর্ষাও ছাড়েনি। একসাথে বসে খাবার খেয়েছে।

ঋতু,বর্ষা আর নিপু একসাথে বর্ষার রুমে মানে বর্ষা আর নিপুর জন্য যে রুমটা বরাদ্দ সেই রুমে বসে কথা বলছে। হঠাৎ নিপু বললো আপু তোমরা কথা বলো আমি আসছি বলে হাঁটতে হাঁটতে ছাঁদে চলে যায়।

অন্যদিকে
বর্ষণ, সবুজ, রাফসান আর রোহিত বর্ষণের রুমে বসে কথা বলছে। সবুজ বার বার তার মায়ের হয়ে ক্ষমা চাইছে বর্ষণের কাছে। রোহিত বলে ওঠে ওর কাছে নয় শালাবাবু, অন্যায় টা যার সাথে হয়েছে ক্ষমাটাও তার কাছেই চাইতে হবে।

ঋতু আর বর্ষা ও ওদের সাথে আড্ডায় যোগ দেয়।ঋতু বলে চলো আমরা আজ রাতে ছাঁদে আড্ডা দেই সবাই তাতে হয়তো সবার মন ভালো থাকবে।ঋতুর কথায় সবাই রাজি হয়ে যায়।

ছাঁদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নিপু চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পরছে।

–সরি,

কারও কথা কানে আসতেই পেছনে ঘুরে তাকালো নিপু।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here