#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব_৭,৮
#Hridita_Hridi
#পর্ব_৭
বক্স খুলতে শুরু করে বর্ষা। বক্স খুলে যা দেখলো তাতে সবাই তো হা হয়ে গেছে।একটা সুন্দর কিউট টেডিবিয়ার? আর বক্সের মধ্যে যতোটুকু জায়গা বাকি ছিলো সেটাও বাহারি চকলেট দিয়ে পরিপূর্ণ।
বর্ষা তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে। একসাথে এতোগুলো চকলেট আবার তার পছন্দের কিউট টেডিবিয়ার।
সবচেয়ে মজার বিষয় যেটা সেটা হলো টেডির বুকের উপর লাভ শেপের মাঝে ছোট্ট করে লেখা আছে বর্ষণ। সেটা দেখেই বর্ষা চুপ হয়ে যায়। আর ভাবতে থাকে তাহলে কি এটা বর্ষাণ ভাইয়ার কাজ?
তখনি নিপু বলে বর্ষা আপু দেখো বক্সে একটা কাগজ ও আছে। মনে হয় কিছু লেখা আছে তাতে।
নিপুর কথা শুনে বর্ষা তারাহুরো করে কাগজটা নিয়ে পড়তে শুরু করে।তাতে লেখা ছিলো—
??️?
–পিচ্চির জন্য উপহার হিসেবে এর থেকে ভালো কিছু আর খুঁজে পেলাম না। যেদিন বড় হবি সেদিন ভেবে দেখবো কি গিফট দিবো।এলোমেলো ভাবে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমানো বাদ দিয়ে এটাকে জড়িয়ে ঘুমাস। আর চকলেট গুলো সব তোর জন্য।
—– বর্ষণ?
কাগজটা পড়ে চোখ বড় বড় করে তাকালো বর্ষা। নিপু বললো কি লেখা আছে বর্সা আপু? বর্ষা কিছুনা বলে বর্ষণের দিকে তাকিয়ে দিলো এক দৌড়।
বর্ষণ নিপুকে চকলেট আর টেডিটা বর্ষার রুমে রেখে আসতে বলে উপরে চলে গেল। রায়হান খান ও নিজের রুমে চলে যায়। নিপু বর্ষার রুমে ঢুকতেই দেখলো বর্ষা ফ্রেশ হয়ে রেডি হচ্ছে ভার্সিটির জন্য।
রমা বেগম টেবিলে খাবার রেডি করতে বললো। সবাই নিচে এসে একসাথে ব্রেকফাস্ট করে যে যার কাজে বেরিয়ে পরে।
রায়হান খান অফিসে চলে যায়। বর্ষণ বর্ষাকে নিয়ে ভার্সিটিতে যাচ্ছে।
বর্ষাঃ তুমি যে বক্সটা এনেছিলে আগে বলোনি কেনো।তাহলে তো আমি সবার সামনে নিয়ে এভাবে দেখাতাম না।
বর্ষণঃ বক্সটায় তোর নাম লেখা ছিলো , তুই নিজে না দেখে নিচে নিয়ে গেলি কেনো।তুই কবে কবে বড় হবি আর কবে বুঝবি?
বর্ষাঃ আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না, তুমি যখন বাসায় এসেছিলে তখন কেউ তোমায় দেখেনি?
বর্ষণঃ হুম দেখেছিল।
সার্ভেন্টরা, নিপু, মম, আর এগুলো যখন কিনেছি তখন পাপা সাথে ছিলো।
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা তো হা হয়ে আছে। বর্ষা একটু অভিমানের সুরে বললো – ওহ্! তার মানে সবাই জানে শুধু আমি ছাড়া।মামনী আর নিপুও কিছু বললোনা আমায়?
বর্ষণঃ হুম বলেনি। কারণ আমি বলতে নিষেধ করেছিলাম।
বর্ষাঃ কেনো নিষেধ করেছিলে?
বর্ষণঃ হঠাৎ করে গিফট টা পেয়ে যে খুশি হয়েছিস, বলে দিলে কি এতোটা আনন্দ পেতিস নাকি এতোটা সারপ্রাইজড হতিস।
বর্ষা কিছু বলবে তার আগেই গাড়ি ভার্সিটির গেটে এসে থামে। বর্ষাকে পৌঁছে দিয়ে বর্ষণ অফিসে চলে যায়।
বর্ষা আর নদী ক্লাসে বসে আছে। শাফিন ভাইয়া এসে বললো যারা রিহার্সাল করবে তারা হলরুমে চলে আসো আর নদী বর্ষা তেমরা আমার সাথে এসো।
বর্ষা নদী আর শাফিন ভাইয়া এবং তার বন্ধুরা একসাথে আলোচনা করছে রিহার্সাল এর ব্যাপারে।
যারা রিহার্সাল করবে তাদের গাইড করার জন্য একজন কে খুঁজতে হবে।
শাফিনঃ নদী তুমি কি ওদের গাইড করতে পারবে? যদি তুমি গাইড করতে পারো তাহলে ভালো হয়।
নদীঃ কি বলেন ভাইয়া আমি গাইড করলে তো সবাই একি ড্যান্স করবে। কারণ আমি ঐ একটা ড্যান্স ই পারি সেটা হলো – ব্রেক ড্যান্স।
নদীর কথা শুনে সবাই হাসতে শুরু করে।
বর্ষাঃ নদীকে থামিয়ে দিয়ে বলে আহ্! নদী কি হচ্ছে কি থাম এবার। সিরিয়াস মুহুর্তে ও ফাজলামো না করলে তোর শান্তি হয়না তাইনা?
নদীঃ ওমা! আমি ফাজলামো কখন করলাম , যেটা সত্যি সেটাই তো বললাম।
শাফিন ওদের দুজনকে থামিয়ে দিয়ে বলে এবার হয়েছে থামো তোমরা। ঝগড়া বাদ দিয়ে বলো কি করা যায়, এখন এমন মেয়ে পাই কোথায়? ছেলেদের ব্যাপারটা না হয় আমি বুঝে নিবো কিন্তু মেয়েদের?
নদীঃ চোখের সামনে ভরা কলসি থাকতে পানি খুঁজতেছেন ভাইয়া?
নদীর কথা শুনে বর্ষা শাফিন সহ সবাই নদীর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
শাফিন বললো মানেটা কি?
তখন নদী বললো এই যে আমাদের বর্ষা আছেনা? ও থাকতে তো চিন্তা নাই ও নাচ গান অভিনয় আবৃত্তি সব কিছুতেই এক্সপার্ট।
নদীর কথা শুনে সবাই বর্ষার দিকে তাকাতেই বর্ষা বলে,কিহ্! আমি!
বর্ষা বললো আমার প্রবলেম আছে আমি পারবেনা।
শাফিন বললো তোমায় তো পারফর্ম করতে বলছিনা জাস্ট গাইড করতে হবে।না করোনা প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
বর্ষাও আর না করতে পারলোনা। রিহার্সাল করার জন্য সবাই চলে এসেছে। সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হলো মেয়েদের গাইড করবে বর্ষা আর ছেলেদের গাইড করবে শাফিন।
সবাইকে নিজেদের মতো গান choose করতে বলা হয়। এদিকে শাফিন, বর্ষা আর নদী ব্যাস্ত আছে কাকে কি কাজ দেওয়া হবে তার লিস্ট দেখতে।
শাফিন সব কাজের লিস্ট এবং কাকে কি কাজ দেওয়া হবে তার ও লিস্ট করে ফেলেছে এই দুদিনে।এখন শুধু সেটা চেক করে নিচ্ছে কোন কিছু বাদ পরেছে নাকি।
সবাই রিহার্সাল নিয়ে ব্যাস্ত। বর্ষারও খুব ব্যাস্ততার মাঝে সময়টা কেটেছে।
রাতের খাবার শেষ করে তারাতারি ঘুমিয়ে পরেছে বর্ষা। শরীর টা খুবই ক্লান্ত। কাল আবার সকাল সকাল ভার্সিটিতে যেতে হবে।
রাত ১ঃ৩০ মিনিট। বর্ষণ বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বেডে বসলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে দুইটা বেজে দুই মিনিট। কি একটা ভেবে বর্ষার রুমের দিকে পা বাড়ায় বর্ষণ।
বর্ষার রুমে গিয়ে বর্ষণ দেখে টেডিটাকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে বর্ষা। এমন ভাবে ধরে রেখেছে মনে হচ্ছে ও এটা ছেড়ে দিলেই কেউ হয়তো কেড়ে নিয়ে যাবে। বর্ষণ বর্ষার এমন কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসে।
বর্ষণ বর্ষার মাথার পাশে বসে, বর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে আসে।
সকালে…..
ব্রেকফাস্ট করছে সবাই। বর্ষণ বললো আমি আগামীকাল রাতের ফ্লাইটে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছি।
রমা বেগম বললো তুমি তো বলেছিলে শনিবার যাবে।
বর্ষণ বললো হুম বলেছিলাম। বাট, শনিবার অফিসে কাজ আছে। সেদিন গেলে অনেক লস হবে। যে প্রয়োজনে যাবো হয়তো সেটা হবেই না। তাই আমি এ ব্যাপারে কোন রিস্ক নিতে চাইনা। শুক্রবার রাতের ফ্লাইটেই যেতে চাই।
বর্ষণ বর্ষাকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে চলে আসে অফিসে।
সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে বসে আছে বর্ষণ।
তখন ওর কেবিনে সাগর আসে।সাগর বললো তুই নাকি আমায় আসতে বলেছিস?
বর্ষণঃ হুম বোস এখানে তোর সাথে আমার কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে। তুই তো জানিস আমি কালকের ফ্লাইটে চলে যাচ্ছি তাই কথাগুলো বলা জরুরি। বলেই দুজন অনেক সময় ধরে ব্যাবসায়িক আলোচনা করে।
রাত ১০ টা..
আজ সবাই একসাথে বসে ডিনার করছে। ডিনার শেষে প্যাকিং নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে বর্ষণ।
প্যাকিং কমপ্লিট?
কথাটা শুনে পিছনে তাকায় বর্ষণ।বর্ষন বললো আরে বর্ষা তুই এতো রাতে? ঘুমাসনি এখনো?
বর্ষাঃ না ভাইয়া ঘুম পাচ্ছে না। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম , তাই ভাবলাম তোমার সব গোছানো হয়েছে কিনা দেখে আসি৷
বর্ষণঃ একা একা বেলকনিতে দাঁড়িয়েছিলি কেনো?
বর্ষা বললো এমনি বাইরে তো অন্ধকার নাই জ্যোৎস্না রাত।
বর্ষার কথা শুনে বর্ষণ বললো এই বর্ষা! চাঁদ দেখবি? ছাদে যাবি?
চলবে…….
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব_৮
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা বললো না ভাইয়া এতো রাতে ছাদে যাবোনা চাঁদ দেখতে।
বর্ষণঃ কেনো?
বর্ষা বললো এতো রাতে ছাদে চাঁদ দেখতে গেলে যদি ভুত এসে ঘাড় মাটকায়!
বর্ষণঃ কিছু হবেনা পাগলি কোথাকার! আমি আছি না?
বর্ষাঃ হুম সেটাই তো ভয়ের ?
বর্ষণ বর্ষার কথা শুনে ভ্রু কুচকে বলে মানে?
বর্ষাঃ ভূত সাহেব তোমাকে মেরে যদি আমার সামনে এসে দাঁড়ায় তখন! তখন কি হবে বলো? সেই আমাকেই তো টুপ করে তুলে নিয়ে যাবে। আর তা না হলে আমার ঘাড়ে চেপে সারা এলাকা ঘুরবে!
বর্ষার কথা শুনে বর্ষণ মাথায় হাত দিয়ে বেডে বসে পরে। আর বলে হইছে আমার চাঁদ দেখা যা এবার তুই। অনেক রাত হয়েছে ঘুমোতে যা।তোর ঘুম পেয়েছে ঘুমের ঘোরে কি বলছিস বুঝতে পারছিস না।
বর্ষাঃ কিন্তু আমার তো ঘুম পায়নি।
বর্ষণঃ আমার ঘুম পেয়েছে।তুই যাহ্ আমি ঘুমোবো।
বর্ষাঃ ঠিক আছে ঘুমাও বলে চলে গেলো বর্ষা।দরজার কাছে যেতেই হঠাৎ কিছু একটা ভেবে আবার ফিরে এলো।
বর্ষণ কিছু বলবে তার আগেই বর্ষা বর্ষণের হাত ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে এলো।
বর্ষণঃ আরে আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস এভাবে টানতে টানতে বলবি তো।
বর্ষাঃ বর্ষণের কথার জবাবে বললো কোথায় নিয়ে যাচ্ছি গেলেই সেটা জানতে পারবে। এখন কোনো কথা না বলে চুপ চাপ চলোতো।
বর্ষণ ও আর কিছু বললো না। বর্ষার পিছু পিছু যেতে থাকলো। বর্ষণ জানে হাজার বার জিজ্ঞেস করলেও এ পাগলি এখন কিছুই বলবে না। তাই এখন কিছু জিজ্ঞেস করাটাই বেকার।
বর্ষা ছাদে গিয়ে বর্ষণের হাত ছেড়ে দেয়।বর্ষণ বললো তুইনা বললি ভুত তোকে টুপ করে তুলে নিয়ে যাবে বলে তুই ছাদে আসবিনা। আবার ছাদে এলি যে!
আরে ভুত রাজা আমাকে নিতে পারবে না, তুমি আছো না!
বর্ষণ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো কেউ একজন বলেছিল আমায় মেরে নাকি তাকে তুলে নিয়ে যাবে ভুত বাবাজী।
বর্ষাঃ ইশশ!! বললেই হলো? আমি মারতে দিলে তো!আমি তো তোমায় আগলে ভুতের সাথে লড়তাম।
বর্ষণ চোখ বড় বড় করে বললো তাই! তা কি করতেন আপনি!
বর্ষাঃ কি আর করতাম, ভুত দেখলেই তো আমি অজ্ঞান হয়ে যাইতাম। ভুত বাবাজী ভাবতো আমি মারা গেছি…..
আর বাকিটুকু বলতে পারলোনা বর্ষা। বর্ষণ ওর মুখ চেপে ধরে রেখেছে হাত দিয়ে। বর্ষণ বর্ষার খুব কাছে চলে এসেছে।বর্ষণের গরম নিঃশ্বাস পরছে বর্ষার চোখে মুখে। চাঁদের আলোয় এটুকু স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বর্ষণ খুব রেগে আছে। আর শুধু রেগেই নেই কষ্টও যে পেয়েছে সেটা তার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চোখ দুটো টলমল করছে মনে হচ্ছে এখনি নোনাজল গড়িয়ে পরবে।দাঁতে দাঁত চেপে বর্ষণ বললো Don’t dare to say that.
বর্ষা বুঝতে পেরেছে বর্ষণ এ বিষয়ে সিরিয়াস।তাই মুখ থেকে বর্ষণের হাত সরিয়ে বললো এটা তো জাস্ট কথার কথা ছিলো।আমি তো মজা করছিলাম।
বর্ষণঃ তোর মুখ থেকে এ কথাটা যেন আর না শুনি কখনো। এটা মজার কথা নয় আর এটা মজার বিষয় ও নয়।
বর্ষাঃ আচ্ছা সরি সরি। এই দেখো কান ধরেছি( দুই হাতে দুই কান ধরে) । এবার বলো উঠবস করতে হবে? কতোবার উঠবস করবো বলো?
বর্ষণ তো বুকে দুই হাত গুজে ভ্রু কুচকে বর্ষার পাগলামি দেখছে আর মুখ টিপে হাসছে।তারপর বলে ঠিক আছে আজ ক্ষমা করে দিলাম। আবার কখনো বললে সেদিন শাস্তি দিবো।
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা হাত পা ছড়িয়ে লাফিয়ে ওঠে। বর্ষাকে এমন করতে দেখে বর্ষণ বলে লাফালাফি করিসনা পরে যাবি তো।
বর্ষা চাঁদের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে দুই হাত ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে বর্ষা চোখ বন্ধ করে চাঁদের আলোর পরশ নিচ্ছে। চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে এই চাঁদনি রাতটাকে।
আর বর্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একমনে দেখে যাচ্ছে বর্ষাকে। চাঁদের আলোতে বর্ষাকে যেন আরো সুন্দর লাগছে।আজকের চাঁদ রাত যেনো বর্ষণের স্বপ্নের রাত লাগছে।
বর্ষাঃ কটা বাজে ভাইয়া?
বর্ষার কথায় ঘোর কাটে বর্ষণের। পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে তিনটা চার মিনিট।
বর্ষাঃনিচে চলো ভাইয়া।
বর্ষার কথায় বর্ষণ বললো এখনি যাবি?
বর্ষা মাথা নাড়লো( হ্যা সূচক)। বললো তোমার কাল ফ্লাইট। তোমার রেস্টের প্রয়োজন আছে।
বর্ষণঃ ঠিক আছে চল।
বর্ষা নিচে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলো, ফিরে আসবে কবে ভাইয়া?
বর্ষণ বললো আগামী শুক্রবার। বর্ষণ বর্ষাকে রুমে দিয়ে নিজও রুমে চলে যায়।
বর্ষা ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পরে।
বর্ষণ রুমে গিয়ে ডায়রি নিয়ে লিখতে শুরু করে-
জানি না কেউ কখনো দুটে চাঁদ একসাথে দেখেছে কি না। তবে আমি দেখেছি। চাঁদের আলোয় চাঁদমুখটা কি সুন্দর লাগছিলো।যে কেউ দেখলেই হয়তো হারিয়ে যাবে। আমিও ওর মাঝে নিজেকে হারাতে চাই বার বার।
ডায়েরি লেখা শেষ করে বর্ষণও ঘুমিয়ে পরে।
সকালে…
ব্রেকফাস্ট করে আবার ঘুমিয়ে পরেছে বর্ষা বর্ষণ দুজনেই।
১২ টায় ঘুম ভাঙে বর্ষার। ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিয়ে বের হয়। নিচে এসে দেখে রমা বেগম রান্নার কাজে ব্যাস্ত। নিপু সাহায্য করছে তাকে। আজ অনেক পদের রান্না হচ্ছে। ভাইয়া এক সপ্তাহ থাকবেনা কি খাবে কি না খাবে তাই এসব আয়োজন।
রান্না প্রায় শেষের দিকে। বর্ষাকে নিচে দেখে রমা বেগম বললো তোর জন্য স্পেশাল কি আইটেম করবো বল।আবার বলবি শুধু ছেলের জন্য করেছি তোর জন্য করিনি।শুধু ছেলেকে ভালোবাসি তোকে ভালোবাসিনা।
বর্ষা একটু হেসে রমা বেগমের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো আমার জন্য আলাদা কোনো আইটেম লাগবেনা। তোমার ছেলের জন্য যেটা করেছো সেটা থেকেই একটু ভাগ দিও তাতেই হবে।
বর্ষণঃ আমার থেকে তোকে কেনো ভাগ দিবো? আমার জিনিসের ভাগ আমি কাউকেই দেইনা। বলেই নিপুকে একগ্লাস পানি দিতে বললো বর্ষণ। নিপু পানি দিয়ে এসে বর্ষার পাশে দাঁড়ায়।
বর্ষাঃ কিন্তু আমি তো ভাগ নিয়ে নিয়েছি। তোমার পাপা আমার ভালো বাবা। তোমার মম আমার মামনী। তুমি ও তো আমার…… বলতেই বর্ষণের বিষম লেগে যায়।
এমন অবস্থা দেখে বর্ষা আর নিপু দৌড়ে গিয়ে বর্ষণের মাথায় আর পিঠে চাপড়াতে(থাপর দিতে) থাকে। বর্ষা আস্তে করে বলে কি হলে ভাইয়া বিষম খেলে কেনো। আমি তো বলতে চাচ্ছিলাম তুমিও ও আমার ভাইয়া ? বলেই একটা রহস্যজনক হাসি দিয়ে উপরে চলে যায় বর্ষা।
রমাঃ তোরা যে কি করিসনা! সাবধানে পানি খাবি তো।এখনি কি হতো বলতো?
বর্ষণঃ না মম কিছু হয়নি।আমি ঠিক আছি।বলে বর্ষণ রুমে চলে যায়। রুমে ঢুকতেই বর্ষণের ফোন বেজে ওঠে।
ফোন রিসিভ করে বর্ষণ বললো তুই সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে চলে আসবি একসাথে বের হবো বলেই ফোনটা রেখে দেয়।
কিছুক্ষণ পরে,রমা বেগম নিপুকে পাঠায় বর্ষা, বর্ষণ আর রায়হান খানকে ডাকতে। সার্ভেন্টদের বলে খাবার টেবিল সাজাতে।
সবাই একসাথে লাঞ্চ করে নেয়।
বর্ষণ নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কিছু একটা কাজ করছিলো হয়তো অফিসিয়াল কোনো কাজ হবে।
চলবে………..
হ্যাপি রিডিং ?