#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা,পর্ব_১২,১৩
#Hrita_Hridi
#পর্ব_১২
বর্ষার হাত ধরে টেনে পাশের রুমে নিয়ে দেওয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরেছে। একহাতে মুখ চেপে ধরেছে যেনো আচমকা চিৎকার চেচামেচি করতে না পারে বর্ষা।
বর্ষার হাত এতো শক্ত করে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরেছে যে, হাত ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করতে গিয়ে আরও ব্যাথা পেতে হচ্ছে ওকে।
রুমের জানালা বন্ধ থাকায় খুব আলো না থাকলেও এতোটাও অন্ধকার নেই যে, কাউকে চেনা যাবেনা।
সামনে থাকা মানুষটাকে খুব ভালো ভাবেই দেখতে পাচ্ছে বর্ষা।
বর্ষা দেওয়ালের সাথে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে সামনে থাকা ব্যক্তির দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বললো তুমি!?
বর্ষণ তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে বললো, কেনো অন্য কাউকে আশা করেছিলি বুঝি?
বর্ষাঃকি বলছো ভাইয়া! আমি অন্য কাউকে আশা করতে যাবো কেনো ? আর অন্য কাকে আমি আশা করবো বলো?
বর্ষণঃ রেগে চোয়াল শক্ত করে বলে, কেন?তোর শাফিন ভাইয়া!
বর্ষাঃবুঝতে পেরেছে বর্ষণ খুব রেগে আছে এখন কিছু বলতে যাওয়াটা বোকামি হবে। তাই শাফিনের বিষয়ে কিছু না বলে বললো, ভাইয়া হাতটা ছাড়ো আমার লাগছে।
বর্ষণঃ হাতটা আরও শক্ত করে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে রাগে ফুসতে ফুসতে বলে তোকে কতোবার বলেছি বল! কারো সাথে না মিশতে।কোনো ছেলের সাথে মেশা, কথা বলা তো নয়ই।অন্য কোনো ছেলের মুখে প্রশংসা শুনতে তোর খুব ভালো লাগে তাইনা?
অন্য পুরুষ তাকিয়ে থাকবে, প্রশংসা করবে বাজে অফার করবে এটাতে তুই খুশি তাইনা? অন্য কেউ তোর সাথে নৃত্য করবে, টাচ করবে এই জন্য নাম লিস্ট করিয়েছিস?
বর্ষাঃ এসব কি বলছো ভাইয়া! এমনটা কিছুই ন…
বর্ষণঃ বর্ষাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
বর্ষাঃ চুপচাপ ওখানে দাঁড়িয়েই কান্না করতে থাকে।আর কান্না করাটাই তো স্বাভাবিক। বর্ষা তো এসব ইচ্ছাকৃত ভাবে করেনি। ইনফ্যাক্ট নৃত্যের বিষয়টা বর্ষা জানেও না।
বর্ষাঃ কান্নাকাটি করার পরে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হওয়ার জন্য। কেননা চোখ মুখের যে অবস্থা হয়েছে এভাবে কারও সামনে যাওয়া যাবেনা। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখলো নদী ওয়েট করছে। কিরে তুই এখানে?
নদীঃ হুম, বর্ষণ ভাইয়া বললো তোর নাকি হেল্প লাগবে তাই পাঠিয়ে দিলো।
বর্ষাঃ না আমার কোনো হেল্প লাগবেনা। আমি ঠিক আছি চল।
নদীঃ সে তো দেখতেই পাচ্ছি কেমন ঠিক আছিস। চোখমুখের কি অবস্থা করেছিস।এদিকে আয় আমি ঠিক করে দেই। বলেই নদী বর্ষাকে আগের মতো করে সাজুগুজু করিয়ে দেয়।
বর্ষাঃ কিরে পেত্নী তুই কি সবসময় এগুলো সাথে করে নিয়ে ঘুরিস?
নদীঃ হুম।ভাগ্যিস সাথে নিয়ে ঘুরি তা না হলে তো এখন আবার তোকে পার্লারে নিয়ে যেতে হতো?
বর্ষা নদী কথা বলতে বলতে স্টেজের কাছে চলে আসে। বর্ষা তাকিয়ে দেখে বর্ষণ চুপচাপ বসে আছে।অনুষ্ঠান শেষে বর্ষণ গাড়িতে বসে আছে। নদীর সাথে কথা বলতে বলতে গাড়ির পাশে এসে নদীকে বিদায় দিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
বর্ষা গাড়িতে উঠতেই গাড়ি নিয়ে ছুটে চলে বর্ষণ। সারাটা সময় ধরে একটা কথাও বলেনি বর্ষার সাথে।
বাসায় এসে সোজা নিজের রুমে চলে যায় বর্ষণ। বর্ষাও কোনো কথা না বলে সোজা উপরে চলে যায়।বর্ষা এক ঘন্টা ধরে সাওয়ার নিয়ে বের হয়।
সবাই একসাথে লাঞ্চ করছে। বর্ষা আর বর্ষণ কোনো কথা বলছেনা। রমা বেগম জিজ্ঞেস করেছে কেমন কাটলো সারাদিন , অনুষ্ঠান কেমন হলো। বর্ষা জবাব দিলেও বর্ষণ কোনো জবাব না দিয়ে চুপচাপ খেয়েই চলেছে।
খাওয়া শেষ করে নিজের রুমে গিয়ে বর্ষণ ঘুমিয়ে পরে।
বর্ষার খাওয়া শেষ হলে রমা বেগম জিজ্ঞেস করলো৷ কিরে বর্ষা! বর্ষণের কি মুড অফ নাকি।
বর্ষা রমা বেগমকে ভার্সিটির সব কথা খুলে বলে। রমা বেগম বললো এবার বুঝতে পারছি আমার ছেলের মুড অফের কারণ।
রাতের খাবার খাওয়ার সময়ও বর্ষণ কোনো কথা বলেনি।
বর্ষাও রাতের খাবার খেয়ে দেরি না করে ঘুমিয়ে পরে। সারাদিনের ব্যাস্ততায় শরীরটা বড্ড ক্লান্ত।
বর্ষা সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামবে তখন শুনতে পায় বর্ষণ নিপুকে ডেকে কফি দিতে বলছে।
বর্ষা নিচে নেমে রমা বেগমের পাশে দাঁড়াতেই বর্ষার হাতে কফির মগ ধরিয়ে দিয়ে বললো যাহ্ গিয়ে বর্ষণকে দিয়ে আয়।
বর্ষাঃ আমি যাবোনা।নিপু কোথায়? তুমি নিপুকে পাঠাও।
রমাঃ নিপু থাকলে কি আর তোকে পাঠাতাম?নিপু একটু বাইরে বেরিয়েছে আর আমার হাতে কাজ আছে তাই যেতে পারবোনা।
বর্ষাঃতোমার কি কাজ আছে সেটা আমায় বলো আমি করে দিবো। তোমার ছেলের কফি তুমি নিজে গিয়ে দিয়ে আসো।
রমাঃ না মা তোমায় আর এসব কাজ করতে হবে না। শেষে আবার কি বিপত্তি ঘটিয়ে বসবে আল্লাহ জানে। তুমি লক্ষি মেয়ের মতো কফিটা দিয়ে আসলেই হবে।
বর্ষার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বর্ষণকে কফি দিতে যেতে হচ্ছে বলে মনে মনে কতো যে কথা শোনাচ্ছে নিপুকে আর বর্ষণকে। তা শুধু আল্লাহ ই ভালো জানে। মনে মনে কথা শোনাতে শোনাতে বর্ষণের রুমে যায়। গিয়ে দেখে বর্ষণ নেই। বর্ষা তো মহা খুশি। কফির মগটা টি টেবিলে রেখে ঘুরে দাঁড়াতেই। বর্ষণের সামনে পরে যায়।
বর্ষণ সাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে বর্ষাকে নিজের রুমে দেখে রেগে যায়। বর্ষাকে ধমক দিয়ে বলে তুই কেনো আমার রুমে?
বর্ষাঃ মামনী বলেছিলো ক ক কফিটা ত তো তোমায় দি দিতে। নিপু বাসায় নেই বাইরে গিয়েছে তা-ই এসেছি বলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে বর্ষা।
বর্ষণঃ নিপু নেই তো কি হয়েছে? তোকে কফি আনতে হবে? আমার কফি লাগবেনা তুই যা।
বর্ষা কফি নিয়ে ফিরে যাচ্ছে হঠাৎ বর্ষণ হাত ধরে বললো কোথায় যাচ্ছিস?
বর্ষাঃ কেনো? তুমি তো চলে যেতে বললে তাই চলে যাচ্ছি।
বর্ষণঃ যাবি যা কফি নিয়ে যাচ্ছিস কেনো?
বর্ষাঃ তুমি তো বললে কফি লাগবেনা। তাই নিয়ে যাচ্ছি।
বর্ষণঃ বেশি পাকামো করিস তাইনা! কফি মগ রেখে যা।
বর্ষা মগ রেখে চুপচাপ চলে আসে।বর্ষা বুঝতে পেরেছে বর্ষণ খুব বেশিই রেগে আছে। এই সময় বর্ষণকে আর না রাগানোই ভালো। আজ শুক্রবার তাই ভার্সিটি ও বন্ধ। সারাদিন গল্প গুজবে কেটে গেছে বর্ষার।
শনিবার সকালে নাস্তা করে রুমে বসে আছে বর্ষা। ভেবেছে আজ ভার্সিটি যাবেনা।
বর্ষার এটা ভাবার যথেষ্ট কারণ ও রয়েছে। বর্ষণ তে বর্ষার উপর রেগে আছে তাই বর্ষা তাকে বলতে পারবেনা ভার্সিটিতে নিয়ে যাওয়ার কথা আর দ্বিতীয়ত বর্ষা তো একা একা ভার্সিটি গেলে বর্ষণ তাকে পানি ছাড়াই গিলে খাবে!
নিপু এসে বর্ষা রেডি হয়নি দেখে বললো জলদি রেডি হয়ে নাও বর্ষণ ভাইয়া গাড়িতে ওয়েট করছে।
এটা শুনে বর্ষা তো লাফিয়ে উঠে দুই মিনিটে রেডি হয়ে নিচে দৌড়ায়।
গাড়িতে উঠে বসতেই, বর্ষণ একবার বর্ষার দিকে তাকিয়ে বলে ক্লাস কয়টায় আর এখন কটা বাজে?
বর্ষা আমতা আমতা করে বলে না মানে ভেবেছিলাম আজ যাবোনা তাই লেট হয়ে গেছে।
বর্ষণঃ হোয়াট! যাবিনা মানে? ক্লাস ফাঁকি দিতে চাস? ফাঁকিবাজ কোথাকার?
বর্ষা তো বর্ষণের এমন কথা শুনে অবাক হয়ে গেছে। যে কিনা গতোকাল ও এতো বকাঝকা করলো সে ই কিনা আজ এসব বলছে?
চলবে…..
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৩
বর্ষা ভাবছে এই ছেলের মাথায় কোনো গন্ডগোল আছে নাকি! এতো তারাতারি আপনাআপনি পরিবর্তন ঘটে কি করে এর মাঝে? এই রেগে গিয়ে যা নয় তাই বলছে, আবার কিছু সময় পরে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছে। ওহ্ আল্লাহ! এই ছেলেটার সাথে সাথে আমাকেও পাগল করে দিও না।
বর্ষণঃ ধমক দিয়ে,, কিরে এমন হা করে কি ভাবছিস? আমি কতোটা খারাপ সেটা?
বর্ষাঃ এমা! না না! ছিঃ ছিঃ! এসব তুমি কি বলছো ভাইয়া?
আমি ওসব কেনো ভাবতে যাবো বলো? আমি তো ভেবেছিলাম…
বর্ষণঃ কি ভেবেছিলি? আমি আর তোর সাথে কথা বলবোনা? নাকি ভেবেছিলি আমি আর কখনো তোর মুখটাই দেখতে চাইবোনা হুমমমম!
বর্ষাঃ ঠোঁটের কোনায় হাসি ঝুলিয়ে মনে মনে বলে এসব কেনো ভাবতে যাবো। আমায় না দেখে আমার সাথে কথা না বলে যে তুমি থাকতে পারোনা সেটা আমি খুব ভালো করে জানি ভাইয়া।
বর্ষণঃ কিরে কিছু না বলে হাসছিস কেনো?
বর্ষাঃ না ভাইয়া তেমন কিছু না, আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমাকে আর ভার্সিটি যেতে দেবেনা। কারণ ভার্সিটি গেলে তো শাফিন ভাইয়ার সাথে আমার দেখা হবে।আর দেখা হলে তো শাফিন ভাইয়া আমার সাথে কথা বলবে।
বর্ষণঃ শোন চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো মানুষ আমি নই।কোথায় কে কি করলো I don’t care.
যাকে কেয়ার করি সে কি করলো, কিভাবে চললো সেটাই জানার বিষয়। তাই এসব ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মন দিয়ে পড়াশোনা কর।আর প্রথম দিন যে কথাগুলো বলেছি সেগুলো মেনে চল তাতেই হবে।
ফ্ল্যাশব্যাক—
শুক্রবার সকালে কফিমগ রেখে বর্ষণের রুম থেকে বর্ষা বের হওয়ার পর পর ই বর্ষণের ফোনে ফোন আসে।
বর্ষণঃ হ্যালো
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ যাকে সবসময় চোখে হারান, যাকে এতোটা মিস করেন, যাকে অন্য কোন ছেলের পাশে দেখলে সহ্য করতে পারেন না। যার ছোট খাটো ইচ্ছে সখ আহ্লাদ আপনার কাছে এতোটাই ইম্পর্ট্যান্ট তাহলে তার উপর এইটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন না? তাকে এতোটা কষ্ট দেন কেনো?
বর্ষণঃ কি বলতে চাও কি তুমি!
শুভাকাঙ্ক্ষীঃ হুম! আমি এটাই বলতে চাই যে, সেদিন বর্ষা নৃত্যে নাম লেখায়নি ইনফ্যাক্ট সে তো জানতোই না যে তার নাম লিস্ট করা হয়েছে। আর কেউ যদি কাউকে প্রশংসা করে তবে তার জন্য কি কাউকে দায়ী করা যায়?হয়তো সে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য বলেই প্রশংসা পেয়েছে। তবে হ্যা বর্ষা এসব দায়িত্বে জরাতে চায়নি।স্যার আর আপনার মায়ের জোরাজোরিতে রাজি হয়েছে।শুধু শুধু কি ওকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলছেন না?
বর্ষণ কিছু না বলে ফোন রেখে দেয়।
বর্তমান—
ভার্সিটির গেটে বর্ষাকে নামিয়ে দিয়ে বর্ষণ অফিসে চলে যায়।
বর্ষা ক্লাসে বসে আছে। অনেকেই বর্ষাকে জিজ্ঞেস করেছে বর্ষণের ব্যাপারে যে ঐ হ্যান্ডসামবয়টা কে।বর্ষা বলেছে ওটা তার ভাইয়া বর্ষণ। ভাইয়া হয় শুনে অনেকে বর্ষাকে বলেছে তোমার ভাইয়ার সাথে একটু সেটিং করিয়ে দাওনা বর্ষা।আবার কেউ বলছে শোনো বর্ষা আজ থেকে আমাকে ভাবি ডাকবে।
কেউ বলছে ক্রাশ খেয়ছি, কেউ বলছে প্রেমে পরেছি । আবার কেউ কেউ বলেছে এমন চকলেট বয় পার্টনার হলে তো নাচের মঞ্চ এমনিতেই মেতে উঠবে।
বর্ষা কিছু না বলে চুপচাপ বসে শুনছে আর মনে মনে বলছে এই পেত্নী গুলোর যে খেয়েদেয়ে কোনো কাজ নেই সেটা ভালোই বুঝতে পারছি। তা না হলে কি আমার বর্ষণ ভাইয়ার দিকে নজর দিতো? আর ক্যাম্পাসে আসতে দিবোনা। পেত্নী গুলোর কত্তবড় সাহস বলে কিনা সেটিং করিয়ে দিতে হুহ্।
এমন সেটিং করিয়ে দিবো না! দৌড়াইয়াও কূল পাবিনা। আশি বছরের বুইড়ার সাথে সেটিং করিয়ে দিবো একসাথে বসে পান চিবুতে চিবুতে গল্প করবি। সবগুলো শাঁকচুন্নির কপালে বুইড়া জুটবো বদ দোয়া কইরা দিলাম। আমার পছন্দের মানুষের উপর নজর দিস।
এর মধ্যে নদী এসে বর্ষার কাছে বসে বলে কিরে কি ভাবিস?
বর্ষাঃ কিছু না।
স্যার ক্লাসে আসায় সবাই চুপ হয়ে যায়। ক্লাস শেষে নদী আর বর্ষা হেঁটে গেটের দিকে যাচ্ছে তখন শাফিন এসে সামনে দাঁড়ায় ।
নদীঃ কি হলো ভাইয়া? কিছু বলবেন!
শাফিনঃ নাহ্ কিছু বলবো না। এমনিতেই বাসায় যাচ্ছিলাম তোমাদের দেখে বাইক থেকে নামলাম।
নদীঃ ওহ্ আচ্ছা। তাহলে আমরা এখন আসি ভাইয়া?
শাফিনঃ ওকে যাও।
নদী আর বর্ষা শাফিনকে পাশ কাটিয়ে চলে আসে। গেটের পাশে দাঁড়াতেই বর্ষণ আসে।বর্ষাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে বর্ষণ অফিসে চলে যায়।
প্রায় এক মাস খুব সুন্দরভাবে কাটছে বর্ষণ বর্ষার দিন। বর্ষণ বর্ষাকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে যায় আবার ক্লাস শেষে বাসায় নিয়ে যায়। এদিকে শাফিন সুযোগ পেলেই বর্ষার সাথে কথা বলার জন্য যায়। কিন্তু বর্ষা শাফিনের সাথে কোনো কথা না বলে পাশ কাটিয়ে চলে আসে। দু চারটা কথা বলার হলে নদী কথা বলে শাফিনের সাথে।
বর্ষার পাগলামি ছেলেমানুষীতে অভস্ত্য বর্ষণ। বর্ষা বর্ষণ একে অন্যকে ছাড়া যেনো একটা মুহুর্ত ও চলতে পারেনা। কিন্তু আজ অবদি মনের কথাটা কেউ কাউকে বলেনি।
বর্ষণ ভাবে তার পরীটা এখনো অনেক ছোট্ট।
আর বর্ষা ভাবে তার বর্ষণ ভাইয়া শুধুই তার। সেটা বললেই কি আর না বললেই বা কি।
এইসব ভেবে কেউ কাউকে কিছু বলনি। তবে সারা বাড়ি হাসি আনন্দ হৈচৈ তে মাতিয়ে রাখে বর্ষা আর বর্ষণ।
প্রতিদিন সকালে বর্ষণের কফিটা বর্ষাই নিয়ে যায়।বর্ষার যতো আবদার সব বর্ষণের কাছে। আর যতো অভিযোগ সেগুলো রায়হান খান আর রমা বেগমের কাছে। আর এ অভিযোগগুলো অন্য কাউকে নিয়ে নয় শুধু বর্ষণকে নিয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার,
সকালে কফি নিয়ে বর্ষণের রুমে গেলো বর্ষা।গিয়ে দেখে বর্ষণ ঘুম থেকে আড়মোড়া ভেঙে উঠছে মাত্র।
বর্ষাঃ গুড মর্নিং ভাইয়া।তোমার কফি।
বর্ষণঃগুড মর্নিং। থ্যাংকস।এবার গিয়ে রেডি হয়ে নে ভার্সিটি যাবিনা?
বর্ষাঃ চুপচাপ দাড়িয়ে আছে কোনো কথা বলছেনা।
বর্ষণঃ কি হলো কিছু বলবি?
বর্ষাঃ হুম। আমি আজ ভার্সিটি যাবোনা। আমাকে একটু ঘুরতে নিয়ে যাবে ভাইয়া?
বর্ষণঃ ক্লাস বাদ দিয়ে ঘুরতে যাবি? কোথায় যাবি বল?
বর্ষাঃ দুরে কোথাও না এই কাছে পিঠে কোথাও। বাসায় থাকতে থাকতে আর ভালো লাগছেনা তাই আর কি
বর্ষণঃ কফি খেতে খেতে বললো – ঘুরতে যাওয়ার জন্য ক্লাস মিস করতে হবে না। তুই ক্লাসে যা। আমার ১২ টায় একটা মিটিং আছে তাই এখন যেতে পারবোনা।
বর্ষা মন খারাপ করে মাথা নিচু করে রুম থেকে বের হতে নিলে, দরজার পাশে আসতেই বর্ষণ বর্ষাকে ডাকলো।বললো বর্ষা শোন, বর্ষা বর্ষণের কথা শুনে ঘুরে দাঁড়ায়।
বর্ষণঃজলদি রেডি হয়ে নে আমি ও রেডি হয়ে আসছি তোকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে অফিস যাবো।
বর্ষাঃ কিছু না বলে মাথা উপর নিচ করলো যার মানে দাড়ালো হুম।
বর্ষা ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিচে এলো। নাস্তা করে গাড়িতে গিয়ে বসে পরে।বর্ষাকে ভার্সিটির গেটে নামিয়ে দিয়ে বর্ষণ অফিসে চলে যায়।
অফিসে মিটিং শেষ করে সব দায়িত্ব সাগরের কাঁধে চাপিয়ে বর্ষণ বর্ষার ভার্সিটিতে চলে আসে।
চলবে….
হ্যাপি রিডিং ?