তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা #পর্ব২৪,২৫

0
1366

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#পর্ব২৪,২৫
#Hridita_Hridi
পর্ব২৪

বর্ষণঃ হোয়াট! চাবি ছাড়া বসে আছিস? কার কাছে আছে বল?

নিপুঃ বর্ষা আপুর হাতে আছে। খুঁজে বের করো তাকে।আমাদের রুমে বন্ধি করে বেশ মজা নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে।

বর্ষণঃওকে ওয়েট কর, আমি বর্ষাকে নিয়ে আসি।বর্ষণ বর্ষার রুমে গিয়ে খুঁজে পেলোনা। কিচেনে, ড্রইং রুমে কোথাও নেই। বর্ষণ তার মমকে জিজ্ঞেস করলো বর্ষাকে দেখেছে নাকি।
বর্ষণের মম বললো বেশ কিছুক্ষণ দেখিনি তবে কিছুক্ষণ আগে ছাঁদের দিকে যেতে দেখেছি। ছাঁদে গিয়ে দেখতে পারিস।

বর্ষণ আর কোনো কথা না বলে ছাঁদের দিকে ছুট লাগালো।
ছাঁদে গিয়ে দেখে বর্ষা চিলেকোঠার একপাশে দাঁড়িয়ে আছে।
বর্ষণ এগিয়ে গিয়ে বলে কিরে এতো রাতে ছাঁদে এসেছিস কেনো?

বর্ষাঃ তোমার পরীর সাথে দেখা করতে এসেছি।তার সাথে কথা বলার খুব সাধ জেগেছিলো তাই এতো রাতে ছাঁদে এসেছি।কিন্তু তুমি কেনো এসেছো?

বর্ষণঃ আমিও আমার পরীর খোঁজেই এসেছি। তুই ছাঁদে এসেছিস ভালো কথা চাবি কোথায় রেখে এসেছিস? সেটা তো দিয়ে আসবি।

বর্ষাঃ চাবি!কই আমি তো জানিনা চাবি কোথায়? অবাক হওয়ার ভান করে বলে বর্ষা।

বর্ষণঃ ভ্রু কুচকে বলে সত্যি কি তুই জানিস না যে চাবি কোথায় !

বর্ষাঃ নাহ্! আমি জানবো কি করে বলো?

বর্ষণ একটু একটু করে বর্ষার দিকে এগুতে থাকে। বর্ষাও একটু একটু করে পিছিয়ে যেতে থাকে। বর্ষণ বলে R u sure তো! চাবি কোথায় তুই জানিস না?
বর্ষা পিছিয়ে যেতে যেতে বলে হুুম আমি জানি না।

বর্ষণ আর একটু এগিয়ে যেতেই চিলেকোঠার দেয়ালে বর্ষার পিঠ ঠেকে যায়। বর্ষণ দেয়ালের এক পাশে হাত দিয়ে বর্ষার দিকে একটু ঝুঁকে বললো এখনো বলবি চাবি তোর কাছে নেই!

বর্ষাঃ ভয়ে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে বলে আ আ আছে। এ এই যে চাবি বলেই চাবি বের করে বর্ষণের হাতে দেয়।

বর্ষণ একটু দুষ্টু হেসে বলে এই তো বললি নেই। এতো তারাতারি আবার কোথায় পেলি। পরী এসে দিয়ে গেলো বুঝি!

বর্ষা আর কিছু না বলে তারাহুরো করে বর্ষণের সামনে থেকে চলে আসে। রিতীমত যে তার হাত পা কাপছে আর হার্টবিট ও চলছে ফার্স্ট।

বর্ষাকে এভাবে তারাহুরো করে যেতে দেখে রাফসান ডেকে বলে এদিকে আসো বর্ষা।

বর্ষা রাফসানের সাথে কথা বলতে বর্ষণ চলে আসে।দরজা খুলে তিনজনই ভেতরে ঢুকে যায়। রুমে ঢুকে তো তিনজনই অবাক। যারা রুমের ভেতরে ছিলো তারা আরামে বসে নিশ্চিন্তে গল্প করছে। আর এদের মধ্যমণী হয়ে বসে আছে নতুন ভাবি!

বর্ষণ রাফসানকে উদ্দেশ্য করে বলে, ভাই রাফসান তুই তো শুধু শুধু চিন্তা করে শেষ হচ্ছিলি এদিকে আমাদের ভাবি তো দিব্যি গল্প করে কাটিয়ে দিচ্ছে ননদ, ননদাই আর দেবরকে নিয়ে।

রাফসান একটু দুঃখী দুঃখী ভাব নিয়ে বললো সেটাই তো দেখছি, কি কপাল আমার!কপালে হাত দিয়ে বলে রাফসান।

রাফসানের এমন ভাব দেখে সবাই হেসে ওঠে। অনেকটা সময় গল্প করে সবাই বেরিয়ে আসে রুম থেকে।

বাইরে এসে সবাই কথা বলছে, বিষয় হলো বাসর ঘরের টাকা আদায় , এর মধ্যে বর্ষা বলে অনেক টাকা তো পেয়েছি চলো সবাই মিলে এই টাকা থেকে নতুন ভাবিকে কিছু গিফট করি।

বর্ষার কথা শুনে সবাই একটু সময়ের জন্য হা হয়ে যায়।
সবাই বলে হ্যা সেটা গুড আইডিয়া , বাট কি গিফট দিবো?

বর্ষাঃ বলছি আগে সবাই হা টা তো বন্ধ করো। সবাই মুখ বন্ধ করে মুখে আঙুল দিয়ে রাখে।
বর্ষা তখন বললো আমরা যে টাকাটা পেয়েছি এটা কিন্তু নতুন ভাবির জন্যই। নতুন ভাবি যদি না বলতো পঞ্চাশের কম নিওনা তাহলে কিন্তু আমরা এতোটা জোরাজোরি করতাম না। তাই আমি চাই আমাদের তরফ থেকে তাকে একটা উপহার দিতে। যেটা আজকের স্মৃতি হিসেবে থাকবে ভাবির কাছে।

রোহিত,সবুজ, নিপু বললো আমরা এমন কি গিফট দিতে পারি?

বর্ষণ বললো এমন অনেক গিফট ই তো আছে, শাড়ি চুড়ি, রিং এসব।

বর্ষাঃ হুম কিন্তু শাড়ি চুড়ি কিনে দেওয়ার দায়িত্ব তো রাফসান ভাইয়ার। সেই দিক এগুলো।
আমরা বরং তাকে একটা ডায়মন্ড রিং গিফট করি।
সবাই খুশি হয় বর্ষার এমন আইডিয়াতে।

রোহিত বর্ষার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলে,, তা ছোট গিন্নি তুমি এমন ইউনিক আইডিয়া কোথা থেকে পাও বলোতো!

রোহিত আর বর্ষার মাঝে বর্ষণ দাঁড়িয়ে গলা খাকড়ি দিয়ে বলে, এই যে দুলাভাই এই ইউনিক আইডিয়া সর্বপ্রথম আমিই দিয়েছি। তো আমাকেও একটু প্রশংসা করো।

রোহিতঃ মোটেও না শালাবাবু, গিফট দেওয়ার আইডিয়াটা ছোট গিন্নির ই ছিলো।আর ডায়মন্ডের রিং দেওয়ার প্ল্যানটাও তার ই।

বর্ষণঃ ওকে ঠিক আছে বুঝলাম। বাট কাল তো বের হতে পারবো না আবার পরশুদিনও তো নতুন বউ থাকবে না তাহলে কি করা যায়!

বর্ষাঃ রাফসান ভাইয়াকে বলে ম্যানেজ করতে হবে। বউ কাল যাবেনা। কাল শনিবার বৌভাত রোববারে আমরা সবাই ঘুরতে যাবো ঐ সময় ভাবিকে কিনে দিবো। সোমবার যে যার মতো বাসায় ফিরে যাবো, সেদিন রাফসান ভাইয়া আর ভাবিও ঐ বাসায় যাবে হিসেব বরাবর।

রোহিতঃ কিন্তু নিয়ম ভেঙে যদি ওরা থাকতে না চায়? আর ও বাড়ির লোকেরা যদি না মানে?

বর্ষাঃ আরে দুলাভাই মানবে মানবে। বাড়ির বড়রা বুঝিয়ে বললে ঠিক মানবে।আমাদের বাড়ির বড়দের বোঝাবে রাফসান ভাইয়া। আর রাফসান ভাইয়াকে বোঝাবে বর্ষণ ভাইয়া আর সবুজ ভাইয়া।
আর নিয়মের কথা বলছেন? সব কিছু নিয়ম মাফিক হলে তো আর স্মৃতি স্মরণীয় হবেনা। নিয়ম ব্রেক করলে তবেই না সেটা স্মরণীয় হবে।

রোহিত বাহবা দিয়ে বর্ষার সাথে হাত মেলাতে গেলে বর্ষণ তার হাত আগেই বাড়িয়ে দেয়। বর্ষণের সাথে হাত মিলিয়ে রোহিত বর্ষার দিকে হাত এগিয়ে দিতেই বর্ষণ আবার নিজের হাত বাড়িয়ে দেয়।

বর্ষা আর নিপু সেটা বুঝতে পেরে ফিক করে হেসে ফেলে।

অবশেষে সবাই যে যার রুমে চলে যায়।

বর্ষা আর নিপুও ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পরে। নিপু বলে বর্ষা আপু দেখছো, ভাইয়া কেমন তোমাকে হাত মেলাতে না দিয়ে নিজেই দুইবার হাত মেলালো।

বর্ষাঃ হুম যতো নিয়ম নীতি, দায়বদ্ধতা আমার বেলায়। সে তো ঠিকই চুটিয়ে প্রেম করে বেড়াচ্ছে তার পরীর সাথে। আহা! কি মনোমুগ্ধকর বর্ণনা শুনলে গা পিত্তি জ্বলে যায় একদম।

নিপু মুচকি মুচকি হেসে বলে আপু তুমি কি জেলাস!

বর্ষা মুখ ঘুরিয়ে বলে বয়েই গেছে আমার জেলাস হতে হুহ্।
এটা বলেই পাশ ফিরে শুয়ে ঘুমিয়ে পরে বর্ষা।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে সবাই নতুন বউয়ের সাথে বসে গল্প করছে।একচুয়েলি এ যুগের মেয়ে হিসেবে ঈশিতা অনেক ভালো আর ফ্রি মাইন্ডের।

নিপু, ঋতু আর বর্ষা সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।ঈশিতা হাসিমুখে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে আর কথা বলছে।

এদিকে রাফসান, সবুজ, রোহিত আর বর্ষণ রান্নার এই দিকটায় বিভিন্ন দায়িত্ব নিয়ে বিজি আছে। সেই ফাঁকে সবাই মিলে রাফসানকে রাজি ও করে ফেলেছে না যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে।

পার্লার থেকে বিউটিশিয়ান এসেছে ঈশিতাকে সাজাতে। এই ফাঁকে বর্ষা, নিপু আর ঋতুও রেডি হতে চলে যায়।

পাশাপাশি বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বর্ষা আর নিপু ঈশিতাকে এনে বসিয়ে দেয়। ঈশিতার বাড়ি থেকে লোকজন চলে এসেছে । সবাই ঈশিতার সাথে দেখা করে খাওয়া দাওয়া করছে।

ঈশিতার বাসার সবাই চলে গেছে। অবশ্য ঈশিতাকে ছাড়া যেতে চায়নি সবাই মিলে বলাতে, বিশেষ করে ঈশিতা বলাতে রেখে গেছে।

চলবে….

হ্যাপি রিডিং ?

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২৫

রাতে সাবাই বসে আছে ঈশিতার কাছে। কথা হচ্ছে আগামিকাল ঘুরতে যাবে সেটা নিয়ে। কোথায় যাবে কি করবে সেটা নিয়ে মতবিরোধ চলছে সবার মধ্যে।

এক কোণে চুপটি করে ঘাপটি মেরে বসে আছ বর্ষা।সেটা দেখে বর্ষণ রোহিতকে বললো তা দুলাভাই তোমার ইউনিক বুদ্ধিমতি চুপ করে বসে আছে কেনো? তাকে বলো কোন ইউনিক বুদ্ধি দিতে।

বর্ষণের কথা শুনে রোহিত বললো আহা! শালাবাবু তুমি আবার ছোট গিন্নির পেছনে পরলে কেন? সে তো চুপচাপ ই বসে আছে।

বর্ষণঃ হুম তো আমি ও সেটাই বলছি চুপ কেনো আছে! ইউনিক বুদ্ধি দিতে বলো।

বর্ষাঃ আরে দুলাভাই বুঝোনা কেনো আমার প্রশংসা তো তার সহ্য হয়না। তুমি কেনো শুধু শুধু আমার প্রশংসা করতে গেলে বলোতো! তুমি যদি তার পরীর নামে দুচারটা ভালো ভালো কথা বলতে তাহলে তো বেচারা মনে একটু শান্তি পেতো।

বর্ষণঃ হুম সহ্য হয়না তো। তোর নামে কেউ প্রশংসা করলে আমার সহ্য হয়না। কেনো করবে প্রশংসা!
আর আমার পরীর নামেও কিছু বলতে হবেনা। তার থেকে ভালো তুই এটা বল, সবাই মিলে কোথায় ঘুরতে যাবে?

বর্ষাঃ আমি আমার ডিসিশন জানাতে পারি তবে সবাইকে মনোযোগ দিয়ে সেটা শুনতে হবে। এবং আমার সাথে একমত হলে সেটা জানাতে হবে আর যার উপর যে দায়িত্ব পরবে তাকে সেটা মেনে নিতে হবে।

সবাই একসাথে বললো হুম হুম তাই হবে বলো বলো।

বর্ষাঃ আমরা লাঞ্চ করে বের হবো। প্রথমে শপিং করবো তার পরে নদীর পারে ঘুরবো ঘুরেফিরে ক্ষুধা লেগে গেলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসে পরবো আর বিল মেটাবে দুলাভাই।

রোহিতঃ আরে ছোট গিন্নি আমায় নিয়ে পরলে কেনো আবার!

নিপুঃ কেন দুলাভাই! আপনি তো বলেছিলেন রাফসান ভাইয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে রেস্টুরেন্টের বিল আপনি দিবেন।

রোহিতঃ সে বলেছিলাম কিন্তু তখন তো ছোট গিন্নি ছিলোনা। তাহলে ছোট গিন্নিকে এ খবরটা দিলো কে?

ঋতুঃ আরে আরে এতো ভাবছো কেন ম্যায় হু না? আমি বলেছি বর্ষাকে।যাই হোক আমার বোনেদের ও তো হক আছে দুলাভাইয়ের টাকায় রেস্টুরেন্টে খাওয়ার।

রোহিতঃ হয়ে গেলো! একেই বলে ঘরের শত্রু বিভীষণ।

ঋতুঃ যাই বলো বর্ষার প্ল্যানটা কিন্তু সত্যি ইউনিক।তাহলে আমরা আজ ডিনার টা রেস্টুরেন্টে করছি আর বিল মেটাচ্ছো তুমি তাইতো!

রোহিতঃ অগত্যা।

বর্ষণ হাসতে হাসতে বললো, দুলাভাই আপনার ছোট গিন্নি তো ইউনিক প্ল্যানে আপনাকে মেরে দিয়েছে।

রোহিতঃকি আর করবো বলো!
আড্ডা শেষে সবাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে।

পরদিন..

দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই বেরিয়ে পরে।
আজ সবাই মিলে একটা গাড়ি করে বেরিয়েছে। বর্ষণ অবশ্য দুটো গাড়ির কথা বলেছিলো রাফসানদের জন্য কিন্তু ঈশিতা রাজি হয়নি। সে বলেছে আজ সবাই একসাথে ঘুরবো।তাই একটা গাড়ি করেই ঘুরবো।

শপিংমলে গিয়ে সবাই পছন্দমতো জিনিস কিনে চলে যায় জুয়েলার্সে। সেখানে একটার পর একটা রিং দেখে যাচ্ছে কিন্তু পছন্দ হচ্ছে না কারও।
কারও পছন্দ হচ্ছে না বললে ভুল হবে আমাদের বর্ষার ই পছন্দ হচ্ছে না।
অবশেষে একটা রিং পছন্দ হলো বর্ষার, যেটা এখনো বর্ষা আঙুলে পরে আছে। কিন্তু বর্ষণ বললো ভালো লাগছে না অন্য একটা দেখো।
আবার বাছাই শুরু হলো খুঁজতে খুঁজতে একটা রিং পেয়েও গেলো। ঈশিতার হাতে পরিয়ে দিয়ে বর্ষা বললো এটা তোমার জন্য নতুন ভাবি। তোমার রায়বাঘিনী ননদিনীদের পক্ষ থেকে আর তোমার কিউট দেবরদের পক্ষ থেকে তোমার উপহার ।

ঈশিতা তো গিফট পেয়ে মহা খুশি সাথে অবাক ও হয়েছে খুব। এজন্যই তাহলে তোমরা আমায় যেতে দাওনি বলে বর্ষাকে জরিয়ে ধরে ঈশিতা।
সবাই তাকিয়ে ঈশিতা আর বর্ষাকে দেখছে অন্য দিকে বর্ষণ ঐ রিংটার বিল পে করে রিংটা পকেটে রেখে দেয় সবার নজর এড়িয়ে।

তারপর সবাই নদীর পারে হাঁটতে চলে যায়।প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। সবাই নদীর পারে হাঁটছে শুধু বর্ষা বসে আছে।

বর্ষণ এসে বললো কিরে বসে আছিস যে,শরীর খারাপ? নাকি মন খারাপ?
বর্ষা বললো নাহ্ এমনি ভালো লাগছে না তুমি যাও ওদের সাথে হাঁটতে।

বর্ষণঃ ওদের দিকে তাকিয়ে দেখ সবাই দুজন দুজন হাঁটছে আর আমি ওদের মধ্যে যাবো হাঁটতে!

বর্ষাঃ তোমার পরীকে ডেকে নাও। আমি যাবো ন…..

বাকিটা বলার আগেই বর্ষণ বর্ষাকে কোলে নিয়ে হাঁটা শুরু করে।
বর্ষা তো হাত পা ছুড়াছুড়ি শুরু করে আর বলে নামাও ভাইয়া কি করছো কি! সবাই আছে তো দেখলে কি বলবে বলোতে?
আমায় নামিয়ে দাও আমি হেঁটে যাবো।

কিছুদুর গিয়ে বর্ষাকে নামিয়ে দিলো বর্ষণ। তারপর বর্ষার হাতটা টেনে নিয়ে আঙুলে ডায়মন্ডের রিং টা পরিয়ে দিয়ে বলে আমার অনুমতি ছাড়া কখনো এই রিংটা খুলবি না।

বর্ষা তো বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। কি বলবে বুঝতে পারছেনা। শুধু বললো এটা তো ঐ রিং টা

বর্ষণ বললো হুম এটা শুধু তোর জন্যই তৈরি করা হয়েছে তাই এটা তোর। আজ পর্যন্ত তোর কোন পছন্দ তোর কোনো সখ আমি অপূর্ণ রাখিনি তাই এটাও রাখলাম না।

বর্ষা তখন একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো আমার সব পছন্দের গুরুত্বই বোঝো কিন্তু যেটা আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ সেটা কি আমায় দিতে পারবে?

বর্ষণঃ শুধু একবার বলে তো দেখ এনে দিতে পারি কিনা!

বর্ষঃ থাক সময় হলে চেয়ে নিবো।

নদীর পার থেকে চলে যায় রেস্টুরেন্টে। ডিনার করে ফিরে আসে বাসায়। ঈশিতা আজ মহা খুশি অনেক আনন্দ করেছে।

……

সকালের নাস্তা করে সবাই কথা বলছে। আজ যে যার বাসায় ফিরে যাবে। সারাদিন আড্ডা দিয়ে বিকেলে বর্ষারাও বেরিয়ে পরেছে বাড়ির উদ্দেশ্যে।সবুজও তার মা কে নিয়ে আজ বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এ সপ্তাহ থাকবে বাড়িতে তারপর আবার ফিরে যাবে মালয়েশিয়াতে।

বর্ষণরাও বাড়ি ফিরে এসেছে। আগামীকাল থেকে আবার বর্ষার ভার্সিটি যুদ্ধ শুরু। কিন্তু বর্ষার চিন্তা সেটা নিয়ে নয় তার চিন্তা হলো বর্ষণের পরীকে খুঁজে বের করা।
বর্ষা মনে মনে বলে আজ রাতে আর খুঁজবো না আগামীকাল থেকে মিশন শুরু হবে।

পরদিন ক্লাস থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বসে আছে বর্ষা ভাবছে বর্ষণের রুমে যাবে চিরুনি তল্লাশি করবে। কিন্তু তার আগেই বর্ষণ বাসায় ফিরে আসে।

বর্ষণকে বাসায় আসতে দেখে বর্ষার মুখটা শুকিয়ে যায়।
বর্ষা বর্ষণকে বলে এতো জলদি ফিরে এলে আজ?

বর্ষণঃ হুম ফিরে এলাম। রেস্ট করতে হবে। কয়েকদিন ঘুম হয়নি তাই ভালো লাগছে না। কেন কিছু বলবি নাকি।

বর্ষা আর কিছু না বলে বললো, না ভাইয়া কিছু না।

ঐ দিকে সবুজ আর নিপু তো কথা বলায় ব্যাস্ত৷ দুজন।

বর্ষণ রুমে ঘুমিয়ে আছে। বর্ষা কফি নিয়ে বর্ষণের রুমে যায়। কফির মগ রেখে। বর্ষা এদিকে ওদিকে কিছু একটা খুঁজতে থাকে।এমন সময় বর্ষণ নড়েচড়ে ওঠে। বর্ষা দ্রুত সরে এসে বর্ষণের পাশে দাঁড়ায়। বর্ষণ বর্ষাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো কি হলো চাঁদ আজ কোন দিকে উঠেছে।

বর্ষাঃ কি যা তা বলছো মাথা ঠিক আছে তোমার? নাকি রেস্ট করতে না পেরে পাগল হয়ে গেছো!
ওটা চাঁদ নয় সূর্য হবে।

বর্ষণঃ একটা হলেই হলো। তা তুই হঠাৎ আমার রুমে?

বর্ষাঃ বা রে এমন ভাবে বলছো যেনো আমি আসিইনা তোমার রুমে! আমি তো কফি নিয়ে এসেছিলাম।

বর্ষণঃ ওহ্! তাই বল।

বর্ষা কফি দিয়ে চলে যায়। আর মনে মনে বলতে থাকে, ধুর! আজই ফিরে আসতে হলো অফিস থেকে!

রাতেও শুয়ে শুয়ে বর্ষা ভেবেছে কি করে খুঁজে বের করবে পরীকে।
সকালে বর্ষাকে ভার্সিটির গেটে নামিয়ে দিয়ে বর্ষণ অফিসে চলে যায়। এ দুদিন বর্ষা ভালো করে বর্ষণের সাথে কথা বলেনি কারণ বর্ষার মাথায় এখন পরীকে নিয়ে চিন্তা। পরীকে খুঁজে পাবে কি করে সে সেই উপায় খুঁজতে থাকে সবসময়।

ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে বর্ষা সোজা বর্ষণের রুমে চলে যায়। পুরোটা রুম তন্ন তন্ন করে খুঁজে ও কিছু পেলোনা। ক্লান্ত হয়ে বর্ষণের বিছানায় বসে পরে বর্ষা।

কিছু একটা ভেবে নিয়ে বর্ষণের বিছানা থেকে বালিশ তুলতেই একটা ডায়েরি চোখে পরে বর্ষার। ডায়েরি টা হাতে নিয়েই অবাক হয়ে যায়। ডায়েরির উপরে লেখা আছে ডোন্ট টাচ্, আর প্রথম পাতায় লেখা ছিলো…

চলবে….

হ্যাপি রিডিং ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here