তুমি অন্য ধর্মের,পর্ব-১
রোমান্টিক থ্রীলার
শাহরিয়ার আবিদ
-দোস্ত দেখ মেয়েটা কেমন? (আবিদ)
-ভালোই তো।(আবির)
-হুম।
-কেন রে?
-না এমনি।
-কি বলবি না।
-…..
-আচ্ছা যা না বললে না বল।(রাগ করে আবির বলল)
-না আসলে ভাই। মেয়েটারে আমার ভালো লাগে।
-ও এই ব্যাপার তা কবে থেকে চলে এসব।(আবির)
-কাল থেকে।(আবিদ)
-কিহ?
-মেয়েটার নাম কি?
-প্রিয়ন্তি সাহা।
-মেয়েটা কি হিন্দু?
-হুম।
-না ভাই এটা বাদ দে।
-কেন?
-আরে ভাই বুঝছ না কেন?
-হিন্দু তাতে সমস্যা কি। ওরে তো আমার অনেক ভালো লাগে। আমি ওরেই ভালোবাসি, ওরেই বিয়ে করবো।
– যা তোর যা ভালো লাগে তাই কর।
(আবিদ আর আবির দুই বন্দ্ধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তি হলো আবিদের পছন্দ করা একটি মেয়ে। মেয়েটি কলেজ এ পড়ে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে।)
আবিদ আবির তারা দুজনে মেসে থাকে।ভালোই চলছিল। বিকেলে আবিদকে একমনে মোবাইলে দেখে থাকতে দেখে বলল,
– কিরে কি দেখছ?(আবির)
– তোর ভাবিকে।(আবিদ)
-ভাই তুই অন্য কাউরে পছন্দ কর।মেয়েতো আর একটা না। কত মেয়ে আছে।
-আমার জন্য মেয়ে একটাই।
-তোরে বুঝাই কোনো লাফ নাই।
-দোস্ত এখনো প্রপোজ করিনাই। আমাকে একটু হেল্প করনা তোর তো আবার অনেক এক্সপেরিয়ান্স আছে এই বিষয়ে।
-তুই আরেকবার ভাব।
-এত ভাবার টাইম নাই।
-হুহ…..
-সাহায্য করবি কিনা বল?(আবিদ)
-ওকে বল কি সাহায্য করব। (আবির)
– ওকে কেমনে প্রপোজ করব ভাই?
-মেয়েকি তোকে পছন্দ করে।
-মনে হয় করে।
-ও ঠিক আছে।তাহলে কাজটা আরো সহজ হলো। প্রয়ন্তির সাথে কথা বলছ।
-না। ওর একটা ফ্রেন্ডের সাথে।
-ওর সাথে দেখা হয়।কই থাকে।
-থাকে ঐ পাশের এলাকায়। আর প্রতিদিন দেখা হয়।
মাঝের মধ্যে মেসেন্জারে কথা হয়।
-ঠিক আছে। তুই ওকে মেসেজ দিয়ে বলবি কালকে দেখা করতে পারবে কি না।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
রাতে মেসেন্জারে
– কেমন আছেন?(আবিদ)
-ভালো। আপনে?(প্রিয়ন্তি)
-জ্বি, ভালো। কি করেন?
-এইতো বসে আছি। আপনে?
-আমিও বসে আছি। আচ্ছা আপনাকে একটা কথা বলব যদি কিছু মনে করেন।
-হুম, বলেন।
-কেমনে যে বলি?
– সোজাসুজি বলে ফেলেনতো।
-আচ্ছা।আপনি কি আমার কাল একবার দেখা করতে পারবেন?
-……..
-কিছু বলতেছেন না যে।
-….
– প্লিজ কিছু একটা বলেন।প্লিজ একবার।
-ঠিক আছে।কিন্তু বেশিক্ষন থাকতে পারব না।
-ঠিক আছে। কিন্তু কোথায় দেখা করব আমরা?
-আপনি কাল আমার কলেজের সামনে চলে আসবেন।
-আচ্ছা।
আজকে শনিবার।আবিদ সকাল সকাল ওঠে যাই। ওঠে আবিরকে ডাকে।
-আবির ওঠ। কয়টা বাজে দেখ। চল প্রিয়ন্তির কলেজে যেতে হবে। ওঠ দেরি হয়ে যাচ্ছে।
আজকে আবির তার প্রিয় নীল পান্জাবিটা পড়ছে।চুলে হাল্কা জেল দিল। সাথে তারা প্রিয় ব্ল্যাক কালারের ঘড়িটা হাতে পড়ল। সামনে সে একবার ট্রাই করে নিল কেমনে প্রিয়ন্তিকে প্রপোজ করবে।হাতে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা।( আসলে রজনীগন্ধ ফুল দিয়ে প্রপোজ করে কিনা জানি না। আমার পছন্দ তাই এখানে রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে প্রপোজ করার কথা উল্লেখ করেছি।)
আবির উঠল নাস্তা করে তারা বেরিয়ে পরল প্রিয়ন্তির কলেজের উদ্দেশ্যে। দেখল প্রিয়ন্তির কলেজে আজ প্রোগ্রাম চলতেছে।প্রিয়ন্তি আজ একটা শাড়ি পড়ে এসেছে তাকে।আজ অনেক সুন্দর লাগতেছে। কখন আবিদের সামনে প্রিয়ন্তি চলে এসেছে সেদিকে খেয়াল নেই আবিদের তার দিকে তাকিয়েই আছে।শেষে সংবিৎ ফিরে পেল।
-কেন দেখা করবেন বলেছেন?
আবিদ কোনো কিছু না বলে হাঁটু গেরে বসে বলল,
– তোমাকে প্রথম যেদিন সেদিন তোমাকে ভালোবেসে ফেলি। তার পর থেকে তোমার চিন্তায় বিভোর আমি। যেখানেই যাই তোমাকে দেখছি,সারাক্ষন তোমার চিন্তা মাথায় গুরছে।প্রতিদিন দেরি করে বের হয় ভার্সিটিতে যেতে শুধু তোমাকে একপলক দেখব বলে।
তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলিছি।
I LOVE YOU.
(পাশ থেকে আবির দেখছিল সব।)
প্রিয়ন্তি চুপ হয়ে রয়েছে কিছু বলছে না সে।
-দেখ কিছু তো বল। (আবিদ)
-দেখেন আপনি মুসলিম আমি হিন্দু।
-তাতে কি।
-…
– আমি আপনাকে ভালোবাসি। তুমি আমাকে ভালোবাসো কিনা সেটা বল?
– হুম।(প্রিয়ন্তি)
– সত্যি।(আবিদ)
-I LOVE YOU 2 ।
আজ তাদের সম্পর্ক দুইবছর হলো। এর মাঝে তাদের মধ্যে দুএকবার ব্রেকআপ হইছে আবার মিলেও গেছে।
আবিদ আজ তাদের সম্পর্কে দুবছর হওয়ায় প্রিয়ন্তিকে আবিদ সারপ্রাইজ দিবে বলে ঠিক করেছে। সকালে আবিদের মোবাইলটা বেজে উঠল। মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখল প্রিয়ন্তি কল দিচ্ছে। রিসিভকরল কলটা।
-হ্যালো।(প্রিয়ন্তি)
-হ্যা বলো। তোমাস কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন?কি হয়েছে তোমার?বাদ দাও। তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।(আবিদ)
তারপরেই প্রিয়ন্তি বলতে শুরু করল হঠাৎ করে আবিদের হাতের মোবাইলটি পড়ে গেল। আর বলল আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার আগে তুমি আমাকে সারপ্রাইজ করে দিলে…….
চলবে
(সারপ্রাইজটা কি? প্রিয়ন্তি কি বলল? আবিদের হাতের মোবাইলটি পড়ে যাওয়া কারণ কি?)