তুমি অন্য ধর্মের,পর্ব-৪
রোমান্টিক থ্রীলার
শাহরিয়ার আবিদ
আবিদ দৌড়ে তার রুমের দিকে গেল।
সেখানে আবির তার কিছু কাপড়, আরো প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস গোছিয়ে নিচ্ছে। তা দেখে আবিদের আবিরের মোবাইলে আসা মেসেজটির কথা মনে পড়ে গেল। আবিদ বুঝতে পারছে আবির ফ্রান্স চলে যাচ্ছে। এসব আবিদ লুকিয়ে থেকে দেখছিল। ভাগ্যভালো আবির খেয়াল করেনি। তারপর আরো নিশ্চিত হলো আবিরের হাতে থাকা পাসপোর্ট আর কিছু কাগজপত্র।আবির দরজা দিয়ে বের হচ্ছিল। ঠিক তখনি আবিদ আবিরকে লক্ষ্য করে আক্রমন করে। আবির মাঠিতে পড়ে যায়। আবিদ গোয়েন্দা হওয়াতে তার কাছে সরকারি লাইসেন্স করা রিভলবার রয়েছে। আবিদ রিভলবার টি আবিরের দিকে তাক করিয়ে রেখেছে।
তারপর বলল
-তা বন্ধু তুমি কখন থেকে এই ছক আঁকছ?(আবিদ)
-…..
হঠাৎ আবির ওঠে আবিদের ওপর আক্রমন করে।আবিদ আবিরের দিকে লক্ষ্য রাখার ফলে সে ঠেকিয়ে দেয় আক্রমন। তারপর আবির কে একটা তাপ্পর দেয়। সাথে সাথে একটি ঘটনা ঘটে যায়। আবিদ এটি দেখার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।
আবিদের তাপ্পর খেয়ে আবিরের মুখের চামড়া আলগা হয়ে যায়। আবিদ চামড়াটা টান দিলে। পুরো একটি মুখোশ খুলে আসে। আবিদ অভাক হয়ে যায়। একে একে সে সব রহস্যের সমাধান পেয়ে যায়।
এখন তার সামনে বড়। এটা কে? আর আবিরবা কোথায়? এর সাথে ঐ প্রিয়ন্তি রুপি মেয়ের কি সম্পর্ক?
আবিদ আবির রুপে ছদ্দবেশ ধরে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে রিভলবার তাক করে। জিগ্যেস করে
-আবির কই বল? আর কে তুই?(আবিদ)
– আমি……(মুখোশ দারি লোকটি)
-বল না হয় গুলি চালাবো।
-বলছি। আমি রায়হান। আমাকে কন্টাক্ট করে আবিরকে কিডন্যাপ করতে বলা হয়েছে?
-মেয়েটি কে?
– কোন মেয়ে? আমি চিনি না।
-(আবিদ ছবি দেখিয়ে বলল)এই মেয়েটি। বল না হয় গুলি চালাবো।
-মেয়েটিকেও আমার মত কন্টাক্ট করে এনেছে প্রিয়ন্তি নামের একটি মেয়েকে কিডন্যাপ করার জন্য।
-আবির আর প্রিয়ন্তি এখন কোথায়?
-সেটা আমি জানি না।
তাপ্পর মারল আবিদ
-বল কোথায় ওরা কই রেখেছিস।
-সত্যি আমি জানি না।
– তুই কিডন্যাপ করেছিস আবার জানিস না কই ওরা। তাহলে কে জানে?
– ঐ লোকটা।
-ঐ লোকটা মানে…(উচ্চস্বরে বলল আবিদ)
-হ্যাঁ। আমাদের মেসেজ এ কথা হয়। আর আমাকে ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়। আমি ঐ মোতাবেক কাজ করি। আমি আর মেয়েটি মিলে আবির আর প্রিয়ন্তিকে একটা হোটেলে আটকে রাখি তারপর চাবিটা দরজার নিচে রাখি আসি। এরকিছুক্ষন পর গিয়ে দেখি ওরা নেই। ওদের কেউ নিয়ে গেছে। আমাকে যেভাবে ইন্সট্রাকশন দিয়েছে আমি ঠিক সেভাবে করেছি।
-তোকে মেসেজ দেয় নাম্বারটা দে।
(নাম্বারটি নিয়ে মোবাইল নিয়ে রায়হানকে বেঁধে রাখে আবিদ।তারপর নিজের ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে। আবিদ সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার। আর দক্ষ হ্যাকার।
আবিদ নাম্বারটির লোকেশন চ্যাক করে। নাম্বারটির লোকেশন দেখাচ্ছে ফ্রান্স কিন্তু নাম্বার আমেরিকান। পরে হ্যাক করার স্বিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু পারে নি উল্টা আবিদকে হ্যাক করে ফেলে। আবিদ বুঝতে পারে এর পিছনে কোনো গভীর চক্রান্ত রয়েছে আর চক্রান্ত কারি কম শক্তিশালি নয়।)
আবিদ আবার রায়হানের কাছে যাই। তার পাসপোর্ট দেখে। রায়হান ফ্রান্সে যাচ্ছে। পাসপোর্ট দেখে বুঝতে পারে আবিদ। আবিদ তার মোবাইলটা নিয়ে তার অফিসে কল দেয়। তার সহকারী জিহাদকে কল দেয় এবং তাকে ফ্রান্সের জন্য দুটো টিকেট কেটে আনতে বলে একটি আবিদের জন্য অন্যটি সহকারী জিহাদের জন্য।
আবিদ রায়হানের কাছে যায় বলে
-প্রিয়ন্তিকে কিডন্যাপ করার জন্য যে মেয়েকে পাঠানো হয়েছিল সেও কি যাবে নাকি তোর সাথে?(আবিদ)
-হ্যাঁ।(রায়হান)
-ফ্লাইট কখন।
-কাল বিকেল পাঁচটায়।
-ও
আবিদের সহকারী জিহাদ কল দিল। বলল স্যার কাল ৫ টায় পাওয়া গেছে টিকেট।
– আবিদ আবার রায়হানকে বলল
-কাল তো তুই ফ্রান্স যাবি। আমিও যাবো। কিন্তু তুই আমার হয়ে কাজ করবি। কত চাই?(আবিদ)
-স্যার, ৫০ হাজার।(রায়হান)
-৫০ পারবো না ২০ হাজার পারবো।
-কিন্তু
-কোনো কিন্তু নই সাথে তুই লাইফ পাচ্ছিস। আর কি? ঠিক যেমন বললাম তেমন করবি। উল্টা পাল্টা করলে ওপারের টিকেট কেটে দিব।
-জ্বি স্যার।
-ওকে DONE.
আবিদ জিহাদকে কল দিল বলল
-কাল আমরা ফ্রান্স যাচ্ছি। তৈরি থেকো।
– জ্বি স্যার।
-ওকে।
রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু আবিদ ঘুমাতে পারল না।শেষ রাতে ঘুমাল। ঘুম থেকে ওঠল আবিদ। সকাল৭.১৯ বাজে।আবিদ গোসল করে নাস্তা করে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গুছিয়ে নিল।
শেষে দুপুরে খাবার খেয়ে ১.০০ টার দিকে বেরিয়ে পড়ল। বেরোবার আগে রায়হানকে বলল তোমার কানে ব্লুথুতটি লাগিয়ে নাও। আর হ্যা এটি কখনো ফেলবে না। আবিদ রায়হানের মাথার মধ্যে একটা পিন লাগিয়ে দিল। কিন্তু এটি রায়হান বুঝতে পারে নি। আবিদের পিনটি রায়হানের মাথায় দেয়ার কারণ রায়হানের গতিবিধি দেখতে পারবে। পিনটি যতক্ষন আবিদ ততক্ষন বলতে পারবে রায়গান কোন জায়গায় রয়েছে। ছিপিটি আবিদের তৈরি। যাক এবার সে এটি কাজে লাগাবে।
তারা গেল। এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেল তারা। আবিদ আর জিহাদ হাঁটছে তাদের থেকে বেশ কিছুটা সামনে রয়েছে রায়হান। তারপর রায়হান কোত্তেকে একটি মেয়ে এসে কথা বলতে শুরু করল। আবিদ মেয়েটির চেহারা এখনো দেখেনি। আবিদ রায়হানকে কল দিল। রায়হান কল রিসিভ করলে আবিদ রায়হানকে বলল মেয়েটি কি প্রিয়ন্তিকে কিডন্যাপ করতে এসেছিল সেই মেয়েটি তো।
-জ্বি স্যার।
আবিদ মেয়েটির চেহারা দেখার চেষ্টা করল। আর যখন মেয়েটার চেহারা দেখল দেখে আবিদ অভাক হয়ে গেল। তার সামনে আকাশটা ভেঙ্গে পড়লেও সেরকম অবাক হতো না। যতটা না এই মেয়েকে দেখে অবাক হলো।
(মনে হয় গল্পটি আপানাদের কাছে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারছি না। ভুল ত্রুটি হলে মাফ করবেন। আশা করব গঠনমূলক কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ)
-(চলবে)