এই পতিতালয়ের মেয়ে ভার্সিটি তে কি তুমি কাস্টমার খুঁজতে আসো…?
হঠাৎ স্যারের এমন প্রশ্নে নীলা সহ ক্লাসের সবাই চমকে উঠে। স্যার নীলাকে দাঁড় করায়।
ক্লাসের সব ছাত্র-ছাত্রীরা নীলার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে।
ভার্সিটি কি তোমার পতিতালয় মনে হয়..?
স্যারের এমন প্রশ্নে পুরো ক্লাস নিস্তব্ধ হয়ে যায় ।নীলা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে স্যারের দিকে।
নীলাকে নিশ্চুপ থাকতে দেখে স্যার আবার প্রশ্ন করে কি হল কথা বলছো না কেন। তোমার বাবা কি করে।
নীলা আস্তে আস্তে বলে পুলিশের চাকরি করে স্যার
ও তোমার বাবা জনগণের টাকা মেরে খাচ্ছে আর তুমি জনগণকে সবকিছু দেখিয়ে বেড়াচ্ছ তাই না।
নীলা কিছু বলতে যাবে তার আগেই স্যার বলল এই তোমাদের কারো কাছে যদি কোনো এক্সট্রা ওড়না থাকে তাহলে প্লিজ ওকে দাও।
নীলার বান্ধবী মুসকান তার ব্যাগ থেকে একটা ওড়না বের করে নীলার গায়ে জড়িয়ে দেয়।
স্যার আবার বলতে শুরু করে। জানো নীলা আজ তোমাদের মত কিছু আলট্রা মডার্ন মেয়েদের জন্য আমাদের দেশের পুরো নারী জাতিকে লাঞ্চিত হতে হচ্ছে।
তোমাদের মত কিছু মেয়ে। যারা আধুনিকতার নামে ছোট ছোট পোশাক পড়ে নিজের সবকিছু দেখিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষকে। আর এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে অসহায় মেয়েদের।
আচ্ছা নীলা আমাকে একটা কথা বলতো তুমি বা তোমরা যে এমন খোলামেলা ভাবে সবাইকে সবকিছু দেখিয়ে বেড়াচ্ছ এতে কি তোমার লাভ হচ্ছে। ছেলেটা তোমার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। ছেলেরা তোমার সাথে প্রেম করার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়েছে। একটা কথা বলি শোনো যে ছেলেগুলো আজ তোমার সাথে প্রেম করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তারা কিন্তু কখনো তোমাকে বিয়ে করবে না। দুইদিন মজা নিবে তারপর দেখবে ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেলেছে।
স্যারের কথা শুনে নীলা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে নীরবে চোখের পানি ফেলে।
কি প্রমান নিবা আচ্ছা তাহলে এখনই প্রমাণ দিচ্ছি আমি। স্যার ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দর ছেলে আসিফ কে দাঁড় করায়।
আচ্ছা আসিফ তুমি কি চাইবে তোমার ওয়াইফ কখনো নীলার মত এমন খোলামেলা পোশাক পড়ে সবার সামনে ঢং ঢং করে ঘুরে বেড়াক।
আসিফ জবাব দেয় না স্যার এমন মেয়েদের সাথে সাথে প্রেম করা যায় বিয়ে করা যায়না।
স্যার: কেন বিয়ে করা যায় না কেন?
আসিফ: এদের সভাব কখনো চেঞ্জ হয়না।আর একটা ছেলে কখনোই চাইবে না তার স্ত্রী খোলা মেলা ভাবে চলাফেরা করুক আর অন্য পুরুষেরা তার দিকে খারাপ দৃষ্টি দেখুক।
স্যার: তোমার গার্লফ্রেন্ডকে ছোট ছোট কাপড় পরিয়ে তুমি সবাইকে দেখাতে পারবে তাহলে বউকে কেন পারবে না। তোমরা গার্লফ্রেন্ডের সাথে মজা নিয়ে সেই ভিডিও আবার ফেসবুকে ভাইরাল করে দিতে পারো আর বউকে ছোট কাপড় পরে সবাইকে দেখাতে পারবে না।
গার্লফ্রেন্ড কি মেয়ে না তার কি মান সম্মান নেই। এখন বলবে স্যার ও তো আমার আপন কেউ না। ওর যা খুশি হোক তাতে আমার কি।
এরপর যখন বেশি প্রেসার দিব তখন সুবার মত বলবে মজা আমিও পেয়েছি মজা সেও পেয়েছে এখন জনগণ একটু মজা নিক তাইনা। বলে স্যার একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিল।
পেছন থেকে একজন বলল জী স্যার জনগণের কি মজা নেওয়ার অধিকার নেই।
স্যার একবার সেদিকে তাকিয়ে বলল আসলে তোমাদের যে নৈতিক শিক্ষার অভাব সেটা আমি খুব ভালো করে বুঝতে পারছি। বাবা-মা তোমাদের নৈতিক শিক্ষা দিতে পারেনি যার কারনে আজ চারিদিকে এত ধর্ষণ হচ্ছে।
আচ্ছা আসিফ বস। তো নিলা শুনলে তো আসিফ কি বলল। তোমাদের মত মেয়েদের সাথে শুধু প্রেম করা যায় বিয়ে করা যায় না।
নীলা মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।
নীলার শরীরের মধ্যে যেন আগুন জ্বলছিল কিন্তু সে তাও চুপচাপ দাঁড়িয়ে স্যারের কথা শুনছে।
আচ্ছা নীলা তোমার কি এটা আমেরিকা মনে হয় বা ইন্ডিয়া। ওখানে তুমি বিকিনি পরেও ঘুরতে পারো কেউ দেখতে আসবে না। কিন্তু এটা বাংলাদেশ একটু শালীন পোষাক পড়ে আসতে পারো না। এই পোশাকগুলো যেগুলো তুমি পড়ো এগুলো না হয় বাসায় পড়ো। আমিতো তোমাকে একদম বোরখা পড়ে পর্দা করে আসতে বলি নাই। তোমার মত এই ক্লাসে তো আরও 15-20 জন মেয়ে আছে তাদের দিকে দেখো একটু তারা সবাই তো আর পর্দা করে আসেনা। তোমার বান্ধবী মুসকান কে দেখো ওতো সালোয়ার পরে আসে কিন্তু সে পরিপাটি ভাবে চলাফেরা করে।
জানো নীলা তোমাকে দেখার অধিকার শুধু তোমার স্বামীর আছে। তুমি যে এমন ছোট ছোট কাপড় গুলো পড়ে নিজের দেহ দেখিয়ে বেড়াচ্ছ এটা ঠিক না।
সবাই অবাক চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে আছে। নীলার মত বদরাগী মেয়ে স্যারের এতগুলো কথা শুনেও যে চুপ করে আছে কেউ এটা বিশ্বাস করতে পারছ না।
আচ্ছা নীলা তোমার মা তোমাকে কিছু বলে না।
মার কথা শুনে নীলার গালবেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
কি হল কাঁদছো কেন..?
নীলার পাশ থেকে মুসকান বলে স্যার নীলার মা বেঁচে নেই।
ওহ্ আই এম সরি আসলে আমি জানতাম না তো। আসলে খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি তোমার দিকে মানে তোমাদের মত ছাত্রীদের দিকে বকাটে ছেলে গুলো ডেব ডেব করে তাকিয়ে থাকে। তোমরা তো কোনো বাজারের পণ্য না। যে তোমরা এতটা সস্তা ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছ।
মেয়েরা তোমাদের সবাইকে বলছি তোমাদের দেখার অধিকার একমাত্র তোমাদের স্বামীর আছে পর পুরুষদের নিজের দেহ দেখিয়ে নিজের দাম কমিয়ে দিও না।
আর নীলা তোমাকে বলছি নেক্সট টাইম যেন এসব ফালতু ড্রেস তোমার গায়ে না দেখি।
ক্লাস শেষে নীলা তার কয়েকজন বান্ধবীর সাথে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
নীলা আমার মনে হয় কি জানিস আবির স্যার তোকে পছন্দ করে তাছাড়া কেন তোকে সামান্য কাপড়ের জন্য এত বকতে যাবে । স্যার তো কখনোই কাউকে এসব বিষয়ে নিয়ে কিছু বলেই না মাহি বলল।
হুম আমারও তাই মনে হয় । দেখিস না আমরা পড়া না পারলে আমাদের কত বকে কিন্তু তোকে কিছুই বলে না। সামথিং সামথিং…. বলেই মুসকান মুসকি হাসি দেয়।
ওই চান্দুর আমি সামথিং সামথিং বের করব। শালা নীলাকে চেনে না সামান্য টপস পড়ে এসেছি বলে আজ পুরো ক্লাসের সামনে আমাকে অপমান করল। ওই চান্দু রে আমি মজা বুঝাবো। ওই কি মনে করছে আমার বাবা হাবিলদার। ওই চাঁদ তো আমার বাবারে চেনেনা। বাবারে বলে যদি ওর চাকরি না খাওয়াইছি তাহলে আমার নাম নীলা চৌধুরী না।
আর আমি কাল থেকে রেগুলার টপস পরে আসবো দেখি ঐ শালা কি করে।
কখন থেকে শালা শালা করতিছিস তুই কি ভুলে গেছিস উনি আমাদের স্যার হয়।
রাখ তোর স্যার । স্যারের গুষ্টি ষষ্ঠী মারি । ওই ব্যাটা আমারে ক্লাসের মধ্যে অপমানিত করছে আমি ওকে পুরো ভার্সিটির সামনে অপমানিত করব…
#তুমি আমার অনুভূতি
#পর্ব: (১)
#চলবে…..
বিশেষ দ্রষ্টব্য ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন।