তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা #পর্ব ১৫ এবং সমাপ্ত শ্যামবতী নয়না

0
19

#তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা
#পর্ব ১৫ এবং সমাপ্ত
শ্যামবতী নয়না

ফারহানের এমন কথার দিপ্তি সোফায় বসে বসে কান্না করছে ফারহান এটা দেখে হাটু গেড়ে দিপ্তি সামনে বসে বলে

ফারহান : লক্ষি বোন কান্না করিস না,,, আমি এভাবে কষ্ট দিতে চাইনি,,, ক্ষমা করে দে তোর ভাইকে (দিপ্তির গালে হাত দিয়ে)

দিপ্তি : ক্ষমা করতে পারি একটা শর্তে….
ফারহান : আমি সব শর্ত মানতে রাজি আছি বলুন মহারানী

দিপ্তি : তাহলে তোমাকে আবার বিয়ে করতে হবে ভাবিকে(দিপ্তির এমন কথা শুনে ফারহান হো হো করে হেসে দেয়..আর বলে

ফারহান : তোর শর্তে আমি রাজি (মুচকি হেসে)
দিপ্তি : তাহলে আমরা আজকে বাসায় যাই,,, শপিং করতে হবে কত কাজ উফ আমার কত কাজ(চোখ টিপ দিয়ে বলে)
ফারহান : না আজকে বাসায় যেতে হবে না এখানে থাক তোরা,,সুহাকে নিয়ে এলি
নেহার : না বাবা সুহা পরে আবার আসবে এখন অনেক কাজ সবাইকে ইনভাট করতে হবে তোর বিয়ের কার্ড।ছাপাতে হবে ফারিয়ার বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে হবে আমরা বরং আজ যাই,,,(মিসেস নেহার,,, দিপ্তি,,,আর সুহা চলে গেলো……এতক্ষন উপর থেকে দাঁড়িয়ে সব দেখলো ফারিয়া নিজের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখে খুব অবাক হয়,,, ফারিয়া নিজে কখনোই ভাবেনি ফারহান তাকে এতোটা ভালোবাসে খুব আপসোস হচ্ছে ফারহানকে এভাবে কষ্ট দেওয়াতে কিন্তু তা ফারহানকে কিছুতেই বুঝতে দিবে না ফারিয়া,,,,

ফারহানের মা চলে যাওয়ার পর ফারিয়া রুমে এসে শুয়ে থাকে,,,ফারহান কফিলের কাছে কল দিয়ে বলে আজকে অফিস যাবে না,,, সে যাতে সব দেখে রাখে,,,ফারহান অনেক্ষন পর রুমে আসে এসে দেখে ফারিয়া শুয়ে আছে ফারহান ফারিয়ার পাশে গিয়ে হাত ধরে বলে
ফারহান : কালকে রাতের জন্য আমি সত্যি দুঃখিত জান (ফারিয়া কিছু না বলে হাতটা ছাড়িয়ে নিলো)

দুপুরে ফারিয়া ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে ফারহান খাবার নিয়ে বসে আছে,,,,

ফারহান : বসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে(ফারিয়া কিছুনা বলে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ফারহান,,,আর ফারহান বলে উঠে..

ফারহান : সকাল থেকে আমি কিছু খাইনি,,,সে খবর তো কেউ রাখে না এখন যদি খাবার খেতে না আসো আমি এখনও খাবো না আমি মরে গেলেও তো কারো কোন সমস্যা হবে না এখন(ফারহানের কথা শুনে ফারিয়া রুমে ডুকেই ফারহানের কোলে বসে পড়ে,,, আর এটা দেখে ফারহান মুচকি হেসে ফারিয়াকে খাইয়ে দিতে শুরু করে,,, ২ লোকমা খাওয়ার পর ফারিয়া আর খাচ্ছে না দেখে ফারহান বলে

ফারহান : হা করো (ফারিয়া কিচ্ছু বলছেনা খাচ্ছেও না,,, ফারহান কিছু একটা ভেবে খাবার তার মুখে নেয় তার পর আবার ফারিয়া খেতে শুরু করে..দুজনে খেয়ে নেয় ফারিয়াকে ওষুধ খাইয়ে দেয় ফারহান,,, ফারিয়া শুয়ে থাকে ফারহান এসে ফারিয়াকে বুকে নিয়ে শুয়ে থাকে কেউ কোন কথা বলে না শরীর দুর্বল থাকায় ফারিয়া কখন ঘুমিয়ে গেছে সে নিজেও জানে না,,,,ফারিয়া ঘুমানোর পর ফারহান ফারিয়াকে রেখে আস্তে করে উঠে চলে যায়,,, সন্ধ্যায় ফারিয়ার ঘুম ভাঙে,, ফারিয়া উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়,,এখন শরীর মোটামুটি সুস্থ লাগছে তার,, অন্যদিকে ফারহানকে রুমে না দেখে ভাবলো হয়তো অফিসের কাজ করছে কিন্তু অনেক্ষন পরও যখন ফারহান কে দেখয়ে পেলো না ফারিয়ার মনের ভিতর অস্থিরতা শুরু হয়ে যায়,,রহিমা খালার কাছে বার বার গিয়েও জিজ্ঞেস করতে পারছে না ফারহান কোথায় বার বার ফিরে যাচ্ছে,,রহিমা খালা ফারিয়ার এমন আচরণ দেখে মুচকি মুচকি হাসছে তা দেখে ফারিয়া রুমে গিয়ে বসে আছে মন খারাপ করে,

অনেক্ষন পর ফারিয়ার ফোনে মেসেজ এর শব্দ হলো,,ফোন হাতে নিয়ে দেখে অচেনা নাম্বার থেকে একটা মেসেজে লিখা বউ একটু ছাদে আসবে অপেক্ষায় আছি..মেসেজ দেখে ফারিয়ার বুঝতে বাকি রইলো না এটা ফারহান আরেকটা মেসেজ আসে…. “বিছানায় একটা গিফট বক্স রাখা আছে তাতে একটা শাড়ি আছে ওটা পরে এসো প্লিজ প্লিজ বউ”….ফারিয়া মুচকি হেসে ফোন রেখে শাড়ি পরে নেয় চোখে গাড় করে কাজল দেয় আর চুল গুলো ছেড়ে দেয়,, কপালে ছোট একটা কালো টিপ দিয়ে ছাদে চলে যায়,,, ফারিয়া ছাদে গিয়ে দেখে পুরো ছাদে মোমবাতি দিয়ে সাজানো আর গোলাপ ফুলের পাপড়ি ছিটানো এক পাশে দোলনা সেটা পুরোটাই ফুলে ঢাকা,,তার উপর অনেক গুলো বেলুন তাতে লিখা “sorry” দোলনার সামনে একটা লাভ ফুলের পাপড়ির,,,ভিতরে লিখা “sorry bou” আর ফারহান একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ফারিয়া এত কিছু দেখে অবাক হয়ে যায়,,তখন ফারহান বলে উঠে

ফারহান : কি হলো বউ তোমার পছন্দ হয়নি দাঁড়িয়ে আছো কেন? এসো(ফারহানের কথায় ফারিয়া তার সামনে গেলো ফারহান ফারিয়াকে দোলনায় বসিয়ে দিয়ে গিটার বাজিয়ে গানি গাইতে শুরু করলো…

Meri Raahein Tere Tak Hai
Tujhpe Hi Toh Mera Haq Hai
Ishq Mera Tu Beshaq Hai
Tujhpe Hi Toh Mera Haq Hai

Sath Chhodunga Na Tere Pichhe Aaunga
Chhen Lunga Ya Khuda Se Maang Launga
Tere Naal Takdeeran Likhvaunga
Main Teri Ban Jaunga
Main Teri Ban Jaaunga

Sonh Teri Main Qasam Yahi Khaunga
Kite Wadeyan Nu Umran Nibhaunga
Tujhe Har Baari Apna Banaunga
Main Teri Ban Jaaunga
Main Teri Ban Jaaunga

Lakhan Toh Juda Main Hoia Tere Khatir
Tu Hi Manzil Dil Tera Musafir
Rab Nu Bhula Baitha Tere Karke
Main Ho Gaya Kaafir

Tere Liye Main Jahaan Se Takraunga
Sab Kuchh Kho Ke Tujhko Hi Paunga
Dil Banke Main Dil Dhadkaunga
Main Teri Ban Jaunga
Main Teri Ban Jaaunga

Sonh Teri Main Qasam Yahi Khaunga
Kite Wadeyan Nu Umran Nibhaunga
Tujhe Har Baari Apna Banaunga
Main Teri Ban Jaaunga
Main Teri Ban Jaaunga

Meri Raahein Tere Tak Hai
Tujhpe Hi Toh Mera Haq Hai
Ishq Mera Tu Beshaq Hai
Tujhpe Hi Toh Mera Haq Hai…

গান শেষ করে ফারহান ফারিয়ার কাছে গিয়ে হাটে গেড়ে বসে কানে ধরে বলে

ফারহান : বউ আমি কখনো আর তোমাকে কষ্ট দিবো না প্রমিস আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ (কানে ধরে)
ফারিয়া : বাবুই ক্ষমা না করলে কি তোমার কথা মত তোমার দেওয়া শাড়ি পরে এসেছি নাকি (বলেই ফারহানকে তুলে জড়িয়ে ধরে,,,আর ফারহান ফারিয়ার কানের কাছে গিয়ে বলে
ফারহান : বউ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে,, প্রেমে পড়ে গেছি
ফারিয়া : যাহ দুষ্টু,,, কালকে যদি মরে যেতাম😒😒😒

ফারহান : সোনা বউ আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি,,, তুমি তো আমাকে কিছু বলোনি আমাকে কিছু না জানিয়ে চলে গেছো তাই খুব বেশি রাগ হইছে আর কখনো এমন হবে না

ফারিয়া : সত্যি তো
ফারহান : হুম সত্যি সত্যি সত্যি
ফারিয়া : চলো যাওয়া যাক,,,আহ😫 (পা ধরে বলে উঠে)
ফারহান : কি হলো বউব(অস্থির হয়ে)
ফারিয়া : আমি হাটতে পারছিনা,,, আমাকে কোলে তুলে নাও
ফারহান : ওহ তাই বুঝি(বলেই কোলে তুলে নিয়ে রুমে চলে গেলো,,,ফারিয়াকে খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাইয়ে দিলো ফারহান নিজেও খেয়ে নিলো,,,

দুই দিন পর ফারিয়া পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে গেলো,,,মিসেস নেহার ফারিয়ার পরিবারের সাথে কথা বলে আবার নতুন করে ফারহান আর ফারিয়ার দুমদাম করে বিয়ে দিলো,,,, সবাই খুব খুশি,,,ফারিয়াকে দিপ্তি,,, তিশা সুহা বাসর ঘরে বসিয়ে রেখেছে,,,,পুরো বিছানায় ফুলে ভরা,,,আর রুমের ভিতরে মোমবাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে…ফারহান রুমে আসলো ওমনি দিপ্তি,,, তিশা,, সুহা এক সাথে বলে উঠে

….এই কোথায় যাচ্ছেন
ফারহান : কোথায় যাচ্ছি মানে আমার রুমে যাচ্ছি
সুহা : আমাদের টাকা দিয়ে দেন আমরা চলে যাই না হয় আজকে সারা রাত বউকে ছাড়া কাটান
ফারহান : তোদের কেনো টাকা দিবো হুম,,,আমার বউএর কাছে আমি যাবো টাকা দিতে হবে কেন😒😒
তিশা : আমরা এত কষ্ট করব বাসর ঘর সাজিয়েছি,,, টাকা দিন না হয় ভিতরে যাওয়া বন্ধ (সবাই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে)
দিপ্তি : ছিঃ ভাইয়া তুমি আজকের দিনে ভাবিকে ছাড়া কাটাবে নাকি আমাদের ঘুম পাইছে.. টাকা দাও চলে যাচ্ছি😴

ফারহান কোন উপায় না পেয়ে ওদের ১০ হাজার টাকা দিলো আর টাকা নিয়ে ওরা চলে গেলো,,,ফারহান রুমে এসে দেখে ফারিয়া বিছানায় বসে আছে,,,ফারহান ফারিয়ার কাছে গিয়ে বসলো,,,

ফারিয়া : আরো আগে আসতে পারলে না,,, ওরা আমাকে এখানে এত বারী লেহেঙ্গা পরিয়ে বসিয়ে রেখেছে উফফ মরে যাচ্ছি,,,
ফারহান : আমার বউটার খুব কষ্ট হচ্ছে বুঝি আচ্ছা তুমি চেঞ্জ করে এসো যাও আর শুনো এইসব আটা ময়দা সব ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো ভুতের মত লাগছে😒😒😒
ফারিয়া : ওকে বাবুই (বলে চলে গেলো)

ফারিয়া লেহেঙ্গা রেখে একটা শাড়ি পরে ফ্রেশ হয়ে বের হলো,,,চুল মুচতে মুচতে ফারিয়া আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুচতে লাগলো,,, আর ফারহান পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ফারিয়ার ভেজা চুলের স্মেল নিচ্ছে

ফারিয়া : কি করছো ছাড়ো
ফারহান : কি মনে হয় তুমি বললে ছেড়ে দিবো,,, (বলেই ফারহান ফারিয়ার ঘাড়ে নাক ঘষতে লাগলো,,,আর শাড়ির নিচে উন্মুক্ত পেটে হাত দিয়ে স্লাইড করতে লাগলো,,,ফারিয়া যেন বরফের মত হিম হিয়ে গেছে,,,সারা শরীরে শিহরণ অনুভব হচ্ছে তার.. অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে তার ভিতরে ফারহানের গরম নিশ্বাস ফারিয়ার ঘাড়ে পড়তেই বার বার কেপে উঠছে ফারিয়া,,ফারহান ফারিয়া নিজের দিকে ফিরিয়ে ফারিয়ার ঠোট জোড়া দখল করে নিলো,,ফারিয়া আজকে কোন বাধা দিচ্ছে না পরম আবেশে সেও ফারহানের চুলে হাত দিয়ে খামচে ধরে চুমু খাচ্ছে,,,ফারিয়া চায় ফারহান তাকে খুব ভালোবাসুক তাদের মাঝে আরো কোন দূরত্ব না থাকুক,,,ফারহান ফারিয়াকে কোলে তুলে নিলো আর দুজনে ডুব দিলো নিজেদের ভালো বাসায়……

তাদের জন্য অপেক্ষা করছে সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ মিষ্টি একটা সকাল,,,অনেক কষ্টে পূর্নতা পেল তাদের ভালোবাসা,,, ভালো থাকুক ফারহান ফারিয়া বেঁচে থাকুক তাদের ভালোবাসা,,,

সবাই দোয়া করবেন যাতে ফারিয়ার টুইন বেবী হয়🙈🙈

(সমাপ্ত)

(পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন প্লিজ,,, যারা গল্প পড়েছেন কখনো কমেন্ট করেননি তারা আজকে জানাবেন আপনাদের কেমন লেগেছে গল্পটা,, ভুল হলে ক্ষমা প্রার্থী.. সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন,,,,বাসায় থাকুন🙏)
#stay_home
#stay_safe

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here