তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা #পর্ব ৯ শ্যামবতী নয়না

0
26

#তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা
#পর্ব ৯
শ্যামবতী নয়না

(প্রথমেই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এত দেরী করে দেওয়ার জন্য 😣😣আমি অসুস্থ ছিলাম যার কারণে গল্প লিখে পোস্ট করা সম্ভব হয়নি আমি অত্যন্ত দুঃখিত🙏🙏🙏)

আমি : আমি থাকবো না আপনার সাথে,, আমি সোফায় ঘুমাবো আর আমাদের ডিভোর্স পেপার তৈরি করুন আমি চলে যাব (ডিভোর্স এর কথা শুনে ফারহান আমাকে টেনে তার সাথে মিশিয়ে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আর জোরে একটা বাইট কামড় বসিয়ে দেয়,,, আমি ব্যাথায় কাকিয়ে উঠি আমার চোখের কোনে পানি জমে যায়,,, ফারহান আমাকে ছেড়ে দেয়..
ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখি রক্ত বেরিয়ে গেছে..

ফারহান : আর কখনো ডিভোর্স এর কথা মুখে আনলে এর চেয়েও খারাপ হবে ( বলেই আমাকে বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে আর আমি কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ি আর সকালে উঠে দেখি…

আমি অচেনা একটা ঘরে শুয়ে আছি,,,, আমি উঠে বসে কোথায় আছি বুঝার চেষ্টা করছি,,এর মধ্যে ফারহান কফি নিয়ে রুমে আসলো,,ওকে দেখে সব মনে পড়লো,,, আর আমি রাগে দেখেও না দেখার ভান করে অন্য পাশ ফিরে বসে আছি…ফারহান কফি রেখে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে…

ফারহান : good morning সোনা বউ☺
আমি : কিসের বউ… কার বউ.. আমি কারো বউ না,,, আর আপনি আমাকে যখন তখন জড়িয়ে ধরেন কেন😡😡(ফারহানকে ছাড়িয়ে,,, রেগে)
ফারহান : নিজের বউকে না জড়িয়ে ধরলে কাকে ধরবো😦😦আচ্ছা যাই হোক,,,ফ্রেশ হয়ে আসো যাও একসাথে কফি খাবো…তাড়াতাড়ি আমার অফিস যেতে হবে…
আমি : আমিও যাবো আফিস😶😶
(ফারহান কিছু একটা ভেবে বলে..
ফারহান : ওকে…আর একটা কথা মিরাজ শেখ আসবে উনার থেকে দূরে থাকবে,,,,আর সেদিন থাপ্পড় মারার জন্য আমি স্যরি বউ আমি জানি দোষ তোমার ছিলো না তখন নিশু আর মিরাজ শেখ এর কথা শুনে রাগ হয়েছে খুন,,, কিন্তু পরে তিশা আমাকে সব বলেছে আমি সত্যি স্যরি( আমার গালে হাত দিয়ে)

আমি কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলাম,,,
ফ্রশ হয়ে বের হলাম আর ফারহান আমাকে কফি হাতে দিলো,,, আমি কফিতে একটা চুমুক দিয়ে রেখে বললাম,,, ভালো হয়েছে,, রেডি হয়ে আসুন….ফারহান রেডি হলো আমিও রেডি হলাম,,,ফারহান এসে বলে..

ফারহান : আমি রেডি চলো..
আমি : আমি আপনার সাথে যাবো না,,,আমি রিক্সা করে চলে যাবো আপনি চলে জান
ফারহান : আমার সাথে যাবে না মানে,,,রিক্সায় কেন যাবে,,
আমি : আপনার সাথে গেলে সবাই খারাপ ভাববে,,,
ফারহান : কে খারাপ ভাববে,,, তুমি আমার বউ কে কি ভাবলো তাতে আমার কি,,,আমার সাথেই যেতে হবে এটাই শেষ কথা ( ফারহানের জোরাজুরিতে তার সাথে এক সাথেই গাড়িতে গেলাম)

অফিসে সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে,,,ফারহানের সাথে আমাকে দেখে…
ফারহানকে দেখে সবাই দাড়িয়ে good morning বললো..তখনি নিশু এসে…

নিশু : hey farhan good morning,, (বলে হাগ করতে নিলেই আমি সামনে চলে আসি আর নিশু আমার সাথে হাগ করে,,, আমাকে দেখে রেগে বলে উঠে…

নিশু : আমি তোমার সাথে হাগ করতে চাইছি নাকি😡😡
আমি : একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে লজ্জা করে না..
নিশু : তুমি চুপ করো আর ফারহান ও তোমার সাথে কেন 😡(আমার দিকে তাকিয়ে)
ফারহান : নিশু ও..(আর কিছু বলার আগেই আমি বলি..
আমি : আসলে আসার সময় গাড়ি পাচ্ছিলাম না তো তাই স্যারকে আসতে দেখে রিকুয়েস্ট করলাম আমাকে নিয়ে আসতে
নিশু : ওহ… তোমাদের মত মেয়েরা তো স্মার্ট ছেলে দেখলে আরো কত কিছুর বাহানা দেয় (গাল বাকা করে)
ফারহান : নিশু ঠিক ভাবে কথা বলো( দাঁত চেপে)

এর মধ্যের কফিল এসে বলে..

কফিল : স্যার আজকে তো মিটিং আছে একটু পরেই সবাই আসবে আর আমি ফাইল গুলো সব ঠিক করেছি কাইন্ডলি দেখবেন চলুন
ফারহান : ওকে চলো,,, আর মিস ফারিয়া আপনিও আসুন আমার কেবিনে..
আমি : জ্বী স্যার আসছি(বলেই ফারহানের কেবিনে গেলাম,,,কফিল এর ফাইল গুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে ফারহান,,, আর আমি ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছি অন্য রকম একটা টান অনুভব হয় ফারহানের প্রতি খুব মায়া কাজ করে কিন্তু আমাকে মায়ায় জড়িয়ে গেলে হবে না সবার কোপালে সব সুখ বেশি দিন থাকে না হয়তো আমি তাদের মধ্যে একজন,,,এই সব ভাবছি এর মধ্যে ফারহানের ডাক পড়লো

ফারহান : মিস ফারিয়া..
আমি : (তখন ভাবনার জগৎে আমি.
ফারহান : মিস ফারিয়া এদিকে আসুন (ফাইলের দিকে তাকিয়ে…আমি কিছু না বলায় ফারহান এবার একটু জোরেই ডাকলো..
ফারহান : মিস ফারিয়া আপনি কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ধ্যান করছেন?(জোরে….তার ডাকে অপ্রস্তুত হয়ে আমি বললাম
আমি : জ…..জ…জ্বী স্যা..র বলুন (ভয়ে)
ফারহান : এইদিকে আসুন,,,আমার পাশে এসে বসুন
আমি : কেন স্যার😥😥
ফারহান : প্রজেক্ট এর কাজ সম্পর্কে বুঝিয়ে দিবো,,, কি ভাবে কি করতে হবে

(আমি ভয়ে ভয়ে ফারহানের পাশে গিয়ে বসলাম,,, একটা জিনিস বার বার জিজ্ঞেস করেছি একটুও রাগ দেখায়নি বরং সুন্দর করে সব বুঝিয়ে দিয়েছে,,,,,

কিছুক্ষন পর মিরাজ শেখ সহ সব ম্যানেজাররা আসলো ডিল ফাইনাল করতে,,,,ফারিয়া খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করলো,, সব চেয়ে সুন্দর প্রজেক্ট ও ভালো উপস্থাপনার জন্য ফারহানের কোম্পানির সাথে ডিলটা ফাইনাল হলো…..

ফারহান অনেক খুশি ডিলটা হাতে পেয়ে কালকে জন্য পার্টি এরেঞ্জ করেছে আমাকে বেশ কয়েকবার ধন্যবাদ জানালো….দুপুরে এক সাথে লাঞ্চ করলো আমার সাথে আমি না বলার পরও জোর করলো,,,

সন্ধ্যায় অফিস ছুটির পর অফিস থেকে বের হয়ে আমি হোস্টেলের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই কেই হাত ধরে ফেলে

ভয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি ফারহান হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,

আমি : স্যা..র আ..পনি? 😦
ফারহান : কেন অন্য কাউকে আশা করে ছিলে বুঝি
আমি : না স্যার,,, কিছু বলবেন?
ফারহান : কোথায় যাচ্ছো?
আমি : কেন স্যার হোস্টেলে যাচ্ছি (স্বাভাবিক ভাবে)
ফারহান : তুমি আমার বউ আমি চাই না আমার বউ হোস্টেলে থাকুক,,,তাছাড়া আমার একটা বাড়ি আছে এমন তো নয় যে আমি আমার বউকে বাড়িতে জায়গা দিতে পারবোবনা(গম্ভীর ভাবে)
আমি : দেখুন স্যার আপনি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছেন আমি যাবো না আপনার সাথে,,(বলেই চলে যেতে নিলে ফারহানে বলে
ফারহান : তুমি আমার সাথেই যাবে (আমার হাত ধরে টেনে গাড়িতে তুলে ফেলে,,,ফারহানের জেদের কাছে হার মেনে তার বাড়িতেই আসতে হলো,,,আমি বাসায় গিয়ে চুপ করে বসে আছি আমাকে এই ভাবে বসে থাকতে দেখে ফারহান বলে..

ফারহান : মহারানীর কি হয়েছে এভাবে বসে আছেন কেন?
আমি কিছু না বলায় ফারহান আবার বলে
ফারহান : কি হলো ফ্রেশ হবেন না মহারানী.. মন খারাপ করে বসে থাকলে কিন্তু পেচার মত দেখায়😆😆 (বলেই হেসে দিলো)
আমি রাগি চোখে ফারহানের দিকে তাকালাম😡😡 তা দেখে ফারহান বলে..

ফারহান : এই ভাবে পেচার মত তাকালে ভয় লাগে যান ফ্রেশ হয়ে আসুন,😜(চোখ টিপে)
আমি : আমি ফ্রশ হবো না,,,আর আমাকে পেচার মত লাগলে তোর কি হুম তোকে বলছি আমার দিকে তাকাতে😡(ফারহানের কলার ধরে)
ফারহান : ইসস কত দিন পর তুমি আমাকে তুই করে কথা বললে😘তবে যাই হোক আমার বউএর দিকে তো আমিই তাকাবো তাই না (বললেই আমাকে কোলে তুলে নিলো)
আমি : এই কি করছেন আমাকে কোল থেকে নামান😡(রেগে)
ফারহান : নাহ আমার বউটা অনেক জেদ ধরেছে সে নাকি ফ্রেশ হবে না তাই আমি তাকে ফ্রেশ করে দিবো(বলেই ডেবিল স্মাইল দিলো আর আমাকে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগলো)
আমি : স…স্যা…র আ…ম..মি ফ্রে..শ হবো প্লিজ আমাকে নিচে নামিয়ে দিন নামিয়ে দিন😭
ফারহান : না আমি ফ্রেশ করিয়ে দিবো☺তুমি আগে আমার কথা শুনো নাই কেন,😁
আমি : স্যার আমি আপনার কথা শুনবো প্লিজ আমি নিজেই ফ্রেশ হবো
ফারহান : ওকে তবে একটা শর্ত আছে,,তুমি শর্ত মানলে আমি নামিয়ে দিবো(মুচকি হেসে)
আমি : কি শর্ত আমি শুনবো স্যার
ফারহান : সত্যি শুনবে
আমি : হুম স্যার প্লিজ নামিয়ে দিন😣
ফারহান : ওকে বলছি (বলেই আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো)
আমি : স্যার কি শর্ত (ভয়ে ভয়ে)
ফারহান : আমাকে একটা চুমু দাও 🙈(বলেই আমাকে কাছে টেনে নিলো)
আমি : ওকে আগে চোখ বন্ধ করুন😒
ফারহান : ওকে করলাম😍 (বলেই চোখ বন্ধ করে ফেললো,,,সেই সুযোগে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশরুমের ভিতরে দরজা লক করে দিলাম আর ভিতরে গিয়ে জোরে জোরে হাসতে লাগলাম,,ফারহান বলে উঠলো
ফারহান : আমাকে বোকা বানানো তাই না সব সুদে আসলে বুঝে নিবো পরে হুহ😏😏

আমি ফ্রেশ হয়ে বের হলাম ফারহান দেখি ফোনে কথা বলছে কার সাথে আমাকে দেখে কল কেটে দিলো,,,আমি আর কিছু বলিনি,,,
রাতে ডিনার শেষ করলাম,,, আজকেও সোফায় ঘুমাতে চাইলে ফারহানের কথায় বাধ্য হয়ে বিছানা ঘুমাতে আসলাম আর বার বার নিষেধ করার পরেও ফারহান আমাকে তার বুকে নিয়েই ঘুমালো,, সকালে দুজনে নাস্তা করে রেডি হয়ে অফিস গেলাম আমি তিশাকে আমাদের ব্যাপারে সব বললাম তখনই ফারহান আমাকে তার কেবিনে ডাকলো আমি গিয়ে দেখি নিশু ফারহানের হাত ধরে বসে আছে ফারহানকে কি যেন দেখাচ্ছে তার ফোনে তা দেখে আমার খুব রাগ হলো ইচ্ছে করছে ওই নিশু প্রেত্নির চুল সব ছিঁড়ে ফেলি,,,আমি বললাম

আমি : আসবো স্যার?
ফারহান : হুম মিস ফারিয়া আসো…
আমি : স্যার কেন ডেকে ছিলেন কোন কাজ আছে?
ফারহান : হুম,,, নিশু তুমি এখন যাও
নিশু : ওকে ফারহান (বলেই চলে গেলো)
আমি : বলুন স্যার
ফারহান : তোমাকে নিয়ে একটু শফিং এ যাবো এখন,, আর আমি বাকি সব কাজ কফিলকে বুঝিয়ে দিয়েছি..
আমি : স্যার আমার ভালো লাগছে না আপনি বরং নিশুকে নিয়ে যান
ফারহান : নিশুকে কেন নিয়ে যাবো নিশু আমার বউনা আমার বউ তুমি
আমি : স্যার এটা অফিস আর এখানে আমি আপনার কর্মচারী,,
ফারহান : অফিস হোক আর বাসা তুমি আমার বউ আমি যা বলবো তাই হবে
আমি : প্লিজ স্যার আমি যাবো না আপনি বরং নিশুকে নিয়ে যান সে অনেক খুশি হবে😊
ফারহান : চুপ চাপ আমার সাথে এসো বেশি কথা বললে কোলে করে সবার সামনে থেকে নিয়ে যাবো(রেগে)
আমি : আপনি জান আমি আসছি (দাঁত চেপে)
ফারহান চলে গেল সে যাওয়ার পর আমিও গেলাম,,,

শফিং মলে দিয়ে আমাকে কিছু জুয়েলারি কিনে দিলো,, কিছু শাড়ি কিনে দিলো শফিং করে বের হওয়ার সময় ফারহান বলে উঠলো

ফারহান : কিরে তুই এখানে?
ফারহান কাকে এই কথা বলছে দেখার জন্য পাশ ফিরতেই দেখি……

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here