তুমি_আমার?Part_17

0
1738

তুমি_আমার?Part_17
#Written_By_Samia_Islam

রিধি হাতের মধ্যে ছুঁড়িটা ধরে দুই তিনবার কাটতেই মাথাটা ঝিমঝিম করতে থাকে,,, চোখ থেকে অঝরে পানি পড়ছে,,,হঠাৎ করেই হাত থেকে ছুঁড়িটা নিচে পড়ে যায়,,, রিধিও আর চোখ খুলতে পারছে না,, নিজেকে ধরে রাখার শক্তিটাও জারিয়ে ফেলেছে,,,

এদিকে অনেক্ষণ ধরে সবাই দরজা ধাক্কাছে কিন্তুু রিধির কোনো আওয়াজ না পেয়ে সবাই অনেক ভয় পেয়ে যায়,,, শান্ত সবাইকে সাইড হতে বলে দরজা ভেঙ্গে ফেলে,, শান্ত ভিতরে ডুকে রিধির এই অবস্থায় দেখে নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছে না,,,

নয়ন চোখের সামনে রিধিকে এভাবে দেখে ফ্লোরেই বসে যায়,,,,নিপা রিধির পাশে বসে যায়,,, নিপা হাত পা নাড়ানোর শক্তিটাও হারিয়ে ফেলেছে,,, চোখের সামনে রিধিকে এভাবে দেখবে এটা কখনো ভাবেনি,,, রিধির এই অবস্থা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়,,,, শান্তও বুঝতে পারছে না এই সিচুয়েশন এ কি করা দরকার,,,

শান্ত সবার সামনে হঠাৎ করেই রিধিকে কোলে তুলে নেয়,, নাহিদ, নয়ন শান্তর পিছন পিছন যেতে লাগে,,,

শান্ত রিধিকে হসপিটালে নিয়ে যায়,,, শান্তর চোখ গুলা ফুলে লাল হয়েগেছে,,,

সন্ধ্যায়,,,

রিধির হাত পায়ে ব্যান্ডেজ করা,,, সেন্স এখনো আসেনি,,, ডক্টর বলছে কিছুক্ষণের মধ্যে সেন্স আসবে,,, নিরা, নিপা, নয়ন রিধির পাশে বসে আছে,,, একটু পর রিধির আস্তে আস্তে চোখ খুলে,,, নিপার চোখে পানি থাকা সত্ত্বেও মুখে হাসি ফুটে উঠলো,,, নয়ন রিধির হাত ধরে চোখের পানি মুছলো,,,

নয়ন:: এখন কেমন লাগছে,,,

রিধি:: ভাইয়া,, ?

নয়ন:: এভাবে কেঁদোনা,,, আমি যতক্ষণ আছি তোমার কিছুই হতে দিবোনা,,,

রিধি:: ভাইয়া আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,, হাতে খুব ব্যাথা করছে,,,?

নয়ন:: খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে,,,? তুমি একদম টেনশন করবে না,,,

এরপর নিপা আর নিরাও রিধির সাথে কথা বলে,, তারপর তারা বেরিয়ে যায়,,,, ওরা যাওয়ার পর রাইসা আর শান্ত একসাথে কেবিনে ডুকে,,, রিধি ওদের একসাথে দেখে অন্য দিকে ফিরে যায়,, রাইসা রিধির পাশে এসে বসে,,, শান্ত অনেকটা দূরেই দারায়,,,

রাইসা:: রিধি,,,,

রিধি:: আপু sorry আমার জন্য তোমার লাইফের সবথেকে ইনর্ফটেন্ট দিন এভাবে নষ্ট হয়ে গেলো,,, আপু আমি জানি তুমি আমাকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না,, আমি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যও নই,,, চেয়েছিলাম তোমাদের থেকে দূরে চলে যাবো,, কিন্তুু আমি পারিনি,,, ভাগ্য আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে,,,, কিন্তুু আপু তুমি দেখো,, আমি আর কারো মাঝে কাটা হয়ে দাড়াবো না,, খুব তাড়াতাড়ি চলে যাবো,,,

রাইসা:: এরকম কথা যেন আর কখনো না শুনি,,, তুমি আমাদের কাছ থেকে কখনো যেতে পারবে না,,, আমরা যেতে দিবো না,,, সব সময় আমাদের সাথে থাকবে,,, তোমাকে বাঁচতে হবে,,, আমাদের জন্য না হোক শান্তর জন্য হলেও বাঁচতে হবে,,,

রিধি:: উনার জন্য তুমি তো আছো,,,

রাইসা:: হ্যাঁ শান্তর জন্য আমি আছি সেটা শুধু বোন হিসাবে,,,

রিধি:: আপু কি বলছো এসব???

রাইসা:: হ্যাঁ রিধি আমি ঠিকি বলছি,, আমি ছোট থেকে শান্তকে ভালোবাসতাম,,,, সবসময় স্বপ্ন দেখতাম শান্তর বউ হওয়ার,,,, আমি বিদেশে বড় হলেও মনটা থাকতো শান্তর কাছে,,, কিন্তুু শান্ত এসবের কিছুই জানতো না,,, আমি কখনো বলিনি,,, ভেবেছিলাম সারপ্রাইজ দিবো,,, দেশে এসে শুনলাম শান্ত কেউ একজনকে ভালোবাসত সে মেয়েটা বিয়ের দিনই শান্তকে ফিরিয়ে দিয়েছে,,
কিন্তুু এটা জানতাম না যে মেয়েটা তুমি,,, হোটেল থেকে তুমি না বলে চলে আসার পর নাহিদ আমাকে বলে মেয়েটা আর কেউ নয় তুমিই,,, ভেবেছিলাম শান্তকে কখনো আমার কাছ থেকে হারাতে দিবো না,,, কিন্তুু আজ যেটা দেখলাম আমার তোমার প্রতি পুরু বিশ্বাস জন্মে গেছে,,, আমি শান্তকে হয়তো ভালবাসতে পারবো কিন্তুু ওর জন্য জীবন দিতে পারবো না,, কিন্তুু আজকে তোমাকে দেখার পর মনে হচ্ছে আমার চেয়ে তুমিই শান্তকে বেশি সুখে রাখতে পারবে,,, আমি শান্তকে সুখী দেখতে চাই,,,

রিধি:: ??

রাইসা:: তোমরা কথা বলো আমি পরে আসবো,,,

রাইসা রিধির চোখের পানি মুছে দিয়ে চলে গেলো,,, রাইসা চলে যেতেই শান্ত রিধির পাশে এসে বসল,,, রিধি চোখ বন্ধ করে অন্য দিকে ফিরে আছে,,, রিধির কিছুক্ষণ পর মনে হলো যেন রিধির হাতে গরম টারি জাতীয় কিছু পড়ছে,,

রিধি তার হাতের দিকে তাকিয়ে উপরের দিকে তাকাতেই দেখতে পায় শান্ত কাঁদছে,,, শান্তর চোখ গুলা লাল হয়ে গেছে,,, রিধি উঠার চেষ্টা করলো কিন্তুু দূর্বল থাকার কারণে উঠার শক্তিটাও পাচ্ছে না,,, শান্ত রিধিকে উঠিয়ে আধশোয়া করে বসিয়ে দিল,,,

রিধি:: একটু আমার কাছে এসে বসবেন,,,?

শান্ত রিধির অনেকটা পাশে গিয়ে বসে,,,রিধি একহাতে ব্যান্ডেজ থাকার কারণে নাড়াতে পারছে না,, অন্য হাতে অনেক কষ্ট করে শান্তর চোখের পানি মুছে দিল,, শান্ত আচমকা রিধিকে জড়িয়ে ধরলো,, রিধির চিৎকার দিয়ে উঠে,,, শান্ত তাড়াতাড়ি রিধিকে ছেড়ে দেয়,,,

শান্ত:: কি হয়েছে,,,?

রিধি:: হাতে ব্যাথা পেয়েছি,,,?

শান্ত:: Ooo sorry,,,, হাতে ব্যান্ডেজ এর কথা আমিতো ভুলেি গেছি,,, বেশি ব্যাথা পাইছো,,,

রিধি:: না একটু,,,,

রিধির শান্তর বুকে আস্তে করে মাথা রাখলো,,,

পরের দিন রিধিকে বাসায় নিয়ে আসা হয়,,, শান্ত ফোন করে রিধি কখন কি করছে, কখন ঘুমাচ্ছে, কখন খাচ্ছে, মেডিসিন রেগুলার খাচ্ছে কি না সব প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ড জেনে নিচ্ছে,,, আর রাতে পুলিশ স্টেশন থেকে বাসায় যাওয়ার সময় রিধিকে দেখে যেতো,,,

৭ দিন পর,,,,,

এখন রিধি অনেকটাই সুস্থ,,, শান্ত এখন নতুন কিছু কেইস এর ইনভিস্টিকেশন নিয়ে অনেক ব্যস্ত,,, আগে তো দিনে ১০-১২ বার কল দিয়ে রিধি কি করছে জিঙ্গাস করতো,,, কিন্তুু এখন দুইবারের বেশি দেয়না,,, এতে রিধি শান্তর উপর খুব রেগে আছে,,,

রাতে রিধি বারবার ফোনের দিকে তাকাচ্ছে আর চোখের পানি মুচছে,,, রাত ১১ টা কিন্তুু শান্ত এখনো কল দিলো না,,, রিধির এতটাই রাগ বেরে গেল যে কান্না করা ছাড়া কমবে না,,, হঠাৎ করেই রিধির ফোনটা বেজে উঠলো,, রিধি চোখ মুছে,, ফোনটা হাতে নিয়ে রিসিভ করলো,,,

শান্ত::: রিধি,,,,

রিধি::( ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাদছে,,,)

শান্ত::: কাঁদছো কেন?? কি হয়েছে,,,??

রিধি:: (রিধির কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল)

শান্ত::: রিধি Sorry আসলে খুব বিজি ছিলাম তাই দেরি হয়ে গেলো,,,

রিধি:: আমার থেকে তো আপনার কাজটাই বড় হয়ে গেলো তাই না???? ( কাঁদতে কাঁদতে)

শান্ত::: আরে পাগলী তোমার থেকে বড় আমার জীবনে কিছুই নেই।

রিধি:: মিথ্যা কথা,,, এখন তো আমাকে আর ভালো লাগবে না,,, পুরুনো হয়ে গেছি আমি,,, ?

শান্ত::: কথাটা আর একবার বল তো,,,?

রিধি:: ঠিকি তো বলছি,, যখন থাকবো না,,, তখন,,,,

শান্ত::: রিধি ?

রিধি:: বকছেন কেন??? আমাকে বলতে দেন,,,

শান্ত::: ৫ মিনিটের মধ্যে ছাদে এসো,,,?

রিধি:: ছাদে কেন?? ?

শান্ত::: আসতে বলছি সো আসবে,,, নো মোর ওয়ার ওয়ার্ড,,,,?

রিধি ফোনটা বেডে রেখে দৌড়ে ছাদে গেল,,, রিধি ছাদে গিয়ে দেখে রেলিং এর উপর হাত রেখে শান্ত দাড়িয়ে আছে,,,,রিধি দৌড়ে গিয়ে শান্তকে জড়িয়ে ধরলো,,, শান্ত রিধিকে নিজ থেকে ছাড়িয়ে নিল,,,

শান্ত:: তখন কি বলছিলে?? ?

রিধি:: ক…ক.ক,,,

শান্ত::: ককক করছো কেন? বলো,,?

রিধি:: রাগ দেখাচ্ছো কেন??? তুমি লেইট করে ফোন করছো তাই আমারও খুব রাগ হইছে,,,

শান্ত::: রাগ হইছে তাই বলে এগুলা বলবে,,?

রিধি:: ok sorry আর বলবো না,,, তবুও প্লিজ আর বকা দিওনা,,

শান্ত::: ok দিবনা তবে একটা শর্তে,,,

রিধি:: সব শর্তে রাজী,,,,

শান্ত::: ঠিক তো??

রিধি:: একদম,,,,

শান্ত::: অনেক দিন হলো মিষ্টি খাইনা,,, তাই ভাবছি,,,,

রিধি:: এটা কোনো শর্ত হলো,,, ফ্রিজ থেকে এক্ষুনি নিয়ে আসছি,,,

রিধি নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে শান্ত রিধির হাত ধরে টেনে এনে ওর বুকের মধ্যে ফেলে,,,

শান্ত::: কোথায় যাচ্ছো??

রিধি:: আপনি তো বললেন মিষ্টি খাবেন,,,তাই আনতে যাচ্ছি,,,,

শান্ত::: আমি ঐ মিষ্টির কথা বলিনি,,,

রিধি:: তাহলে,,,??

শান্ত::: এই মিষ্টির কথা বলছি,,,( রিধির ঠোটে স্লাইড করতে করতে)

রিধি শান্তকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল,,,

রিধি:: ছিঃ ছিঃ এসব কি বলছেন,,,

শান্ত::: শর্ত কিন্তুু এটাই,,,,

রিধি:: আমি পারবো না,,, ?

শান্ত::: সত্যি পারবে না,,,

রিধি:: না,,,?

শান্ত::: ok… তাহলে তুমি ঘুমাতে যাও আমি যাচ্ছি,,,,

শান্ত চলে যেতে লাগলে রিধি শান্তর হাত ধরে নেয়,,,

শান্ত:: কিছু বলবে,,,?

রিধি:: রাগ করছেন??

শান্ত::: না রাগ করবো কেন?? কার উপর রাগ করবো?? কে তুমি আমার যে তোমার উপর রাগ করবো,,,?

রিধি:: আমি জানি আমার উপর রাগ করছেন,,,

শান্ত::: রাগ করার অধিকারটা এখনো অর্জন করতে পারি নি,,, অনেক রাত হয়েছে এখন যাও,,,

রিধি:: এভাবে কথা বলছেন কেন?? ?

শান্ত::: আমি আসছি,,

রিধি শান্তর সামনে গিয়ে দাড়ায়,,, শান্ত কিছু বুঝে উঠার আগেই রিধির শান্তর পায়ের উপর উঠে শান্ত ঠোটকে ওর ঠোট দিয়ে আঁকড়ে ধরে,,,শান্ত এটার জন্য মোটেও প্রস্তুুত ছিলনা,,, শান্ত রিধির কোমড় জড়িয়ে ধরে রিধিকে আরো কাছে নিয়ে আসে,, রিধি শান্তর ঠোট ছেড়ে দিলেও শান্ত রিধির ঠোটকে আঁকড়ে ধরে আছে,,,

রিধিও শান্ত দুজনেই যেন একটা নেশার মধ্যে আছে,, শান্ত নিজেকে কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারছে না,,, কিন্তুু এই মুহূর্তে এসব করা ঠিক না এটা ভেবেই শান্ত রিধিকে ছেড়ে দেয়,, রিধি শান্তর থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে হাপাঁতে থাকে,,, আরেকটু হলে নিশ্বাস টা বন্ধ হয়ে যেতো,,, শান্ত রিধির কাঁধে হাত রাখতেই রিধি শান্তর দিকে ঘুরে শান্তর বুকে ঝাপিয়ে পড়ে,,, শান্ত রিধির লজ্জা মাখা মুখটা দুহাতে তার দিকে ধরে,,,

শান্ত::: এত লজ্জা কোথা থেকে আসে??

রিধি:: জানিনা?

শান্ত::: যাই বলো,,,মিষ্টিটা কিন্তুু সেই ছিলো,,?

রিধি:: উপপপ কি বলছেন এসব ?

শান্ত::: ঠিকি বলছি,,, বিয়ের পর ব্রেকফাস্ট আর ডিনার এই মিষ্টি দিয়েই করতে হবে,,,?

রিধি:: লজ্জা শরমের মাথা খাইছেন নাকি,,, ?

শান্ত::: তোমার এত লজ্জা কিভাবে আসে জানিনা,,, কিন্তুু লজ্জা ভাঙ্গানোর দায়িত্ব টা কিন্তুু আমার,,

রিধি:: হয়েছে এখন যান,,,

শান্ত::: আরেকটু থাকি ,,??

রিধি:: না আর থাকতে হবে না,,,

শান্ত::: প্লিজ,,,

রিধি:: বললাম তো না,,,

শান্ত::: বিয়েটা করে নি,, সব সুধে আসলে আদায় করবো,,,

রিধি:: সেটা পরে দেখা যাবে,,,

শান্ত::: তখন কিন্তুু বারণ করলেও শুনবো না,,, আজ কন্ট্রোল করলেও ঐ দিন কন্ট্রোল করতে পারবো না,,,

রিধি:: যা ইচ্ছা তাই করিয়েন,,, এখন যান তো,,,

শান্ত::Ok Good Night,,, ??

রিধি:: Good Night,,,,, ?

পরের দিন,,,

সকালে শান্তর আম্মু ফোন করে বলেছে দুপুরে সবাই যেন তাদের বাসায় যায়,,, রিধি তো নিরাকে ছাড়া কোথাও যায়না,,, তাই রিধি নিরাকে তাদের বাসায় আসতে বলে,,, নয়ন, নিপা, নিরা রিধি দুপুরে শান্তদের বাসায় যায়,,,

শান্ত সকাল থেকে রিধির সাথে কথা বলেনি,,, রিধি ভাবল হয়তো বাসায় আছে,,, কিন্তুু শান্ত বাসায়ও নেই,,,, রিধির তো ইচ্ছা করছে শান্তকে খুব করে বকতে,,, দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর নয়ন নিপা আর শান্তর আব্বু আম্মু বসে কথা বলছে,,, নিরা আর রিধি শুয়ে শুয়ে গল্প করে,,,

বিকালে নয়ন আর নিপা বাসায় চলে যায়,,, শান্তর আম্মু রিধি আর নিরাকে যেতে দেয়নি,,, সকালে নাহিদ ওদের বাসায় দিয়ে আসবে বলে রাতটা রেখে দেয়,,,,

সন্ধ্যায় নিরা বেডে বসে মোবাইলে গেমস্ খেলছিলো আর রিধি হাটতে হাটতে পুরু বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলো,,, রিধি একটা রুমে ডুকে খুটেখুটে সব জিনিস দেখছিলো,, বেডের পাশে টেবিলের উপর শান্তর ছবি দেখে বুঝতে বাকি রইল না এটা কার রুম,,,

রুমটা অনেক বড় রুমের মাঝখানে বেড বেডের পাশে ছোট একটা টেবিল টেবিলের উপর একটা টেবিল লেম্প আর শান্তর একটা ছবি অন্য পাশে একটা ওয়ার ড্রপ আর রিধির সবথেকে বেশি ভালো লাগলো রুমে যা কিছু আছে সবকিছুই খুব সুন্দর ভাবে গুছানো,, রুমের এক কোণায় ফ্লোরে কয়েকটা ফুলের টবও আছে( রিয়েল ফুলের টব না প্লাস্টিক জাতীয়) ,,,

রিধি হাটতে হাটতে বেলকনিতে গেল,,, বেলকনির একপাশে একটা গিটার দেখতে পেয়ে রিধি খুব অভাক হয়,,,,

রিধি::: মানুষটার মধ্যে আর কত ধরনের গুন আছে আল্লাহই জানে,,,

রিধি গিটারটা স্পর্শ করে রুমে চলে আসল,,, তারপর শান্তু ছবিটা নিয়ে শান্তর ছবিটাকে বারবার স্পর্শ করছে,,, ছবিটাতে শান্তকে অনোক সুন্দর লাগছে,,, সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট,,, হাতে ঘড়ি,,শার্টের হাতাগুলা ফ্লোড করা,, শার্টের বুকের দিকের দুই টা বোতাম খোলা,,

ছবিটা দেখে যেকোনো মেয়েই ক্রাশ খাবে,,, রিধি নিজেও অনেক লজ্জা পাচ্ছে,,, রিধি ছবিটা রেখে দিল,, রিধি পিছন দিকে ফিরবে তার আগেই কেউ রিধিকে জড়িয়ে ধরলো,, রিধি প্রথমে অনেক ভয় পেয়ে গেলো,, রিধি তার গাঁড়ে কারো ঠোটের স্পর্শ পেল,,, রিধির বুঝকে বাকি রইলো না এটা কে,,,

রিধি:: ছাড়ুন আমাকে,,,, একদম আমাকে স্পর্শ করবেন না,,,

শান্ত যেন রিধির কোনো কথাই শুনছে না,,,নিজের মতো করে হারিয়ে যাচ্ছে এক অজানা সুখে,,,

রিধি শান্তর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল,,,,

শান্ত:: কি হলো??

রিধি:: আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না,,,

শান্ত:: আমি কি করলাম??

রিধি:: কি করলেন মানে??? আপনি তো জানতেন আজ আমরা এখানে আসবো তাহলে আপনি আজ বাসায় থাকাটা উচিত ছিলনা,,,

শান্ত:: আরে কাজ ছিলো,,,

রিধি:: কাজ কাজ আর কাজ,,, এটা শুনতে শুনতে না আমার অসহ্য লাগে,,,,,,,,

শান্ত:: ok… সহ্য করার মতো কিছু করি,,,?

রিধি:: এই একদম মজা করবেন না,,,?

শান্ত:: ok মজা করলাম না,,, এখন বলো লুকিয়ে লুকিয়ে আমার ছবি দেখছো কেন??

রিধি:: কোথায় দেখলাম??

শান্ত:: আমি কিন্তুু অনেক্ষণ আগেই এখানে এসেছি তুমি কি কি করেছো সব দেখছি,,, সো মিথ্যা বলে লাভ নেই,,,

রিধি:: না মানে এমনি,,,

শান্ত:: ছবি তে না দেখে বাস্তবে যা ইচ্ছা তাই করতে পারো,,

রিধি:: এই আপনি সব সময় নেগেটিভ টা ভাবেন কেন?? ছবিটা সুন্দর হইছে তাই দেখছিলাম,,,,

শান্ত:: ছবিটা সুন্দর কিন্তুু ছবির মানুষটা সুন্দর না,,,

রিধি:: আমি সেটা কখন বললাম??

শান্ত:: ok বাদ দাও,,, আজ কিন্তুু তুমি আমার সাথেই থাকছো,,,

রিধি:: কি??? ?

শান্ত:: জ্বী ম্যাম,,,

রিধি:: বিয়ের আগেই,,,, ?

শান্ত:: প্রবলেম কি???

রিধি:: ছিঃ ছিঃ এরকম কখনো হয় নাকি,,, বিয়ের আগে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনো একটা রুমে থাকতে পারেনা,,,

শান্ত::কিন্তুু আমার তো কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই,,

রিধি:: হ্যাঁ,,, কিন্তুু এটা ঠিক না,,, আমি থাকতে পারব না,,,

শান্ত:: প্লিজ,,,

রিধি:: বাড়াবাড়ি করলে কিন্তুু আমি বাসা থেকে বেরিয়ে যাবো,,,

শান্ত:: ok ok,,,, আর বলব না,,

রিধি:: হুম এখন ফ্রেশ হয়ে আসেন,,,,

শান্ত:: হুম যাচ্ছি,,, তুমি টাওয়ালটা নিয়ে দাড়াও আমি যাচ্ছি,,,

রিধি:: ছিঃ ছিঃ আপনি নিয়ে যান আসি পারবো না,,,

শান্ত:: কেন?? এটাতে প্রবলেম কি??

রিধি:: আপনার লজ্জা করবে না,,

শান্ত:: আজব এখানে লজ্জার কি আছে, ?তোমার সবকিছু যেমন আমার তেমনি আমার সবকিছুও তোমার তাই না,,,, ?

রিধি:: আল্লাহ প্লিজ উনার মুখে একটু লাগাম দাও,,,

শান্ত:: আমি যাচ্ছি টাওয়াল খুজে বের করো,,,

শান্তু শার্ট খুলে বেডে রেখে দিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়,, রিধি আর কি করবে টাওয়ালটা নিয়ে দিয়ে আসে,,, কিছুক্ষণ পর শান্ত ফ্রেশ হয়ে বের হয়,,, রিধি ওয়ার ড্রপে শান্ত শার্ট গুলা এক এক করে দেখছিল,,

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here