তৃষ্ণার্থ_প্রেয়সী,পর্ব ১৪

0
980

তৃষ্ণার্থ_প্রেয়সী,পর্ব ১৪
লাবিবা_ওয়াহিদ

অফিস থেকে ফিরে ফারিশ প্রথমেই সানামের ঘরে চলে গেলো। সেখানে গিয়ে দেখলো সানাম কম্বক মুড়ি দিয়ে থরথর করে কাঁপছে৷ তার আঁখিপল্লব বন্ধ। পাশে অন্তু বসে সানামকে জলপট্টি দিচ্ছে। সানামের এমন অবস্থা দেখে ফারিশের কলিজা কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। সানামের অসুস্থতায় তার ভেতর এতো যন্ত্রণা কেন হচ্ছে? কেন সহ্য করতে পারছে না? ফারিশ এক পা এগোবে এমন সময়ই অন্তু ফারিশকে বলে উঠে,

-“এসেছিস বাবা। দেখ মেয়েটার কেমন ভয়ানক জ্বর বেঁধেছে। ওষুধ দিয়েছি তাও কেমন কাঁপছে৷ ডক্টর এসে দেখে গেছিলো, বললো ভালোমতো সেবাযত্ন করতে। খাওয়া দাওয়াও নাকি ঠিকমতো করে না!!”

-“ডক্টর কী সলিউশন দিয়েছে সেটা বলো।”

-“একটা ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছে এবং দুটো মেডিসিনও দিয়েছে। সেগুলোই তোর বাবা আনতে গেছে।”

ফারিশ কিছু বলার মতো ভাষা পেলো না। তাই আস্তে করে “ওহ” বলে নিজের ঘরে চলে গেলো। বাসায় আসার পর তার গলা দিয়ে খাবার আর নামলো না। রাতে সবার সাথে কোনোরকমে খেয়ে উঠে গেলো। অন্তু রাত ১২টা পর্যন্ত সানামের পাশে বসে নিজের ঘরে চলে আসে। এদিকে ফারিশ চিন্তিত মনে মুখে হাত দিয়ে একনাগাড়ে পায়চারি করেই চলেছে। তার মধ্যে একটাই চিন্তা, সানাম ভালো আছে তো? রাতে কোনো সমস্যা হবে না তো? সানামের চিন্তায় ফারিশের ঘুমই হাওয়া হয়ে গেছে। অবশেষে সে সিদ্ধান্ত নিলো সানামের রুমে যাবে।

ফারিশ আস্তে করে দরজাটা খুলে এদিক সেদিক তাকালো। কোথাও তার মাকে দেখা যাচ্ছে না। ফারিশ আর দেরী না করে আস্তে ধীরে সানামের রুমের সামনে আসলো। দরজা খোলাই আছে, ফারিশ সামান্য ইতস্ততবোধ নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। সানামের পাশে বসে সানামের কপালে আলতো করে হাত রাখলো। জ্বর এখনো অনেকটা আছে। ফারিশ ধীরে ধীরে হাত সরিয়ে উঠে যেতেই দেখলো টেবিলের উপর পানির বোল আর একটা ছোট রুমাল রাখা। ফারিশ ভাবলো যদি জলপট্টি দেয়া যায় তাহলে জ্বর নামলেও নামতে পারে৷ ফারিশ তার ভাবনা অনুযায়ী সানামকে জলপট্টি দিতে শুরু করলো। সানাম তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। কিছুক্ষণ জলপট্টি দেয়ার পর ফারিশ চলে যেতে নিবে ওমনি সানাম তার হাত ধরে টান দিলো। হাতে আকস্মিক টান পরায় ফারিশ চোখ বড় বড় করে পিছে ফিরে তাকালো। সানাম হাত শক্ত করে ধরে কিসব বিড়বিড় করছে। সানামের বিড়বিড় শুনতে ফারিশ আবার সানামের পাশে বসে সানামের মুখের সামনে তার কান নিলো।

-“প্লিজ আপনি অন্যকারো হবেন না, আমি আপনাকে অন্যকারো সাথে সহ্য করতে পারি না।আমার এই হাতটা ধরে সারাজীবন চললে কী এমন খারাপ হতো? আপনি ছাড়া এ দুনিয়ায় আমার আপন বলতে যে কেউ নেই।”

সানামের অগোছালো কথার কিছুই বুঝতে পারেনি ফারিশ। কিছুক্ষণ পরেই সানামের বিড়বিড় বন্ধ হয়ে গেলো৷ ফারিশের হাত তার দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে পরম সুখে ঘুমিয়ে গেলো। ফারিশ সানামের দিকে তাকালো। তার অপর হাত দিয়ে সানামের কপাল থেকে রুমালটা সরিয়ে কপালে হাত রাখলো৷ জ্বরের তীব্রতা আগের মতো নেই, কিছুটা কমে এসেছে। ফারিশ উঠতে গিয়েও পারলো না। সানামের থেকে হাত ছাড়াতে নিলে যদি সানাম উঠে যায়? সানাম উঠে যাওয়ার পর ফারিশকে এ ঘরে দেখলে তো কেলেঙ্কারি ঘটে যাবে। তাই ফারিশ আলতো করে চেষ্টা করেও যখন হাত ছাড়াতে পারলো না তখন ফারিশ সেখানেই চুপচাপ বসে রইলো এই অপেক্ষায়, কখন সানাম তাকে নিজে থেকে ছাড়বে। অপেক্ষা করতে করতে ফারিশ দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে সেখানেই ঘুমিয়ে পরলো।

রাতে ইকরাম ফরিদ পানি খেয়ে নিজের ঘরের দিকে যাবে এমন সময়ই তার সানামের কথা মনে পরলো। তিনি দাঁড়িয়ে পরলো এবং সানামের রুমের দিকে চলে গেলো। দরজা খুলে ফারিশকে ওভাবে দেখে ইকরাম ফরিদ কিছুটা থমকে গেলেন। ওভাবে কিছুক্ষণ কাটানোর পর উনি মুচকি হেসে ভাবতে লাগলেন,

-“আমি জানতাম এদের মধ্যে কিছু চলছে। নয়তো আমার ছেলে কোনো অচেনা মেয়ের প্রতি এতোটা প্রসেসিভ হয় না। কিন্তু ফারিশ বিয়ে করতে রাজি হলো কেন? কিছু তো গোলমাল আছে।” ভেবে সুন্দর করে দরজা ভিজিয়ে উনি চলে গেলেন।

ফজরের আযানে ফারিশের ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সানামের দিকে তাকাতেই দেখলো সানাম ফারিশের হাত ছেড়ে অন্যদিকে ফিরে ঘুমাচ্ছে। ফারিশ চোখ কচলাতে কচলাতে সানামের কপালে হাত রাখলো। নাহ জ্বর নেই বললেই চলে। ফারিশ নিশ্চিন্ত মনে নিজের ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো।

সকালে সানাম ঘুম থেকে উঠে আশেপাশে ভালো করে তাকালো। বুঝলো বেশ বেলা করে উঠেছে। মাথাটা এখনো কেমন ভার হয়ে আছে, শরীরটাও যেন চলছে না। জ্বর নেই এখন আর, তার শরীর ঘাম দিয়েছে। একদিনে জ্বর কমে গেলো ভাবতেই অবাক হলো। কঠোর সেবা-যত্ন ছাড়া তো তার সুস্থ হওয়া সম্ভব ছিলো না। অন্তু আন্টি করেছে বেশ, তাই বলে এতো বেশিও তো করেননি। তাহলে? সানামের কেন যেন মনে হচ্ছে পুরো রাত তার পাশে কেউ ছিলো। উপস্থিতি টের পেয়েছে সে। কে সে? সানামের ধারণা কী ভুল নাকি ঠিক?

নাহ এতো ভেবে মাথা খারাপ করতে চায় না সে। আস্তে আস্তে উঠে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো। ওয়াশরুম থেকে ফিরে দেখলো অন্তু আন্টি হাতে স্যুপের বাটি নিয়ে বসে আছে। সানাম দুর্বল চোখে অন্তু আন্টির দিকে তাকিয়ে ঠোঁট জোড়া প্রসারিত করলো। স্যুপের বাটিটা রেখে অন্তু আন্টি খুব যত্ন করে মুখ মুছে দিয়ে বিছানায় বসালো। অতঃপর স্যুপটাও খাইয়ে দিলো।

-“বাহ জ্বর তো নেই দেখছি। ভালো লাগছে এখন?”

-“অল্প। মাথা ভার হয়ে আছে।”

-“তুমি ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করো না? এটা কেমন কথা সানাম? দেখেছো, না খেয়ে খেয়ে শরীরে রোগে কেমন বাসা বেঁধেছিলো?”

-“আমার খুদা পায় না আন্টি তাই…”

-“কোনো এক্সকিউজ না। আজ থেকে বেশি বেশি খাবা বুঝলা? এখন এই মেডিসিনটা চুপচাপ খেয়ে নাও, ভার্সিটি আজ যাওয়া লাগবে না আর। রেস্ট করো!”

আজ সানামের কেন যেন অন্তু আন্টিকে তার মায়ের মতো লাগছে। কী সুন্দর অধিকার খাটাচ্ছে, যত্ন নিচ্ছে, শাসন করছে যেন আপন মা। এই মানুষ দুজনের থেকে সানাম যা ভালোবাসা পেয়েছে তা এই জীবনে আগে কখনো পায়নি সে। এই দুজন মানুষের মায়ার জ্বালে ভালোভাবেই ফেঁসেছে সে তাইতো চাইলেও এই বাসা ছেড়ে হোস্টেল গিয়ে উঠতে পারে না। ফারিশের এই অবহেলা গুলো নিরবে সয়ে যাচ্ছে।

সেদিন আর সানাম ভার্সিটি গেলো না। ফারিশ যে অফিস যাওয়ার আগে সানামের ঘরে উঁকি দিয়েছে তা নজর এড়ায়নি সানামের। নিজের অজান্তেই সে হেসে ফেলে। পরে ফারিশের বিয়ের কথা ভাবতেই

তার হাসি বন্ধ হয়ে যায়।

আগামীকাল অফিসে পার্টি। ফারিশদের কোম্পানির প্রজেক্ট বেশ ভালো সাফল্য অর্জন করেছে যার কারণে বস খুশি হয়ে পার্টি রেখেছে। আজও অফিসে তেমন কাজ ছিলো না। বস খুশি হয়ে ফারিশকে বোনাস দিয়েছে। ফারিশও আনন্দিত। অফিস থেকে বেরিয়ে সে অনেকক্ষণ তার দুই প্রিয় বন্ধুর সাথে আড্ডা দেয়। আড্ডা দেয়া শেষে তিনজন মিলে কিছু কিনতে শপিংমলে ঢুকলো। সেজান-সামির এক কাজিনের আগামী পরশু বিয়ে তাই তাদের কিছু কেনাকাটার প্রয়োজন। সেজান এবং সামি দুজন চাচাতো ভাই, সমবয়সী। দুজন জোর করেই ফারিশকে নিয়ে এসেছে। ফারিশ ওদের সাথে কেনাকাটা করতে শাড়ির শো-রুমে ঢুকলো। সেজান তার বোনের জন্য শাড়ি কিনবে। ফারিশ এদিক সেদিক হেঁটে বেড়াচ্ছে। চারপাশে মেয়ে মানুষ গিজগিজ করছে যা ফারিশের মোটেই ভালো লাগছে না। সেজান এবং সামি শাড়ি পছন্দ করতে ব্যস্ত।
ফারিশ এদিক সেদিক হাঁটতে গিয়ে একটা শাড়ির দিকে তার চোখ আটকে গেলো। সেই শাড়িটায় যেন ফারিশ পুরোপুরি সানামের প্রতিচ্ছবি দেখতে পারছে। শাড়ির রঙটা নেভিব্লু, খুব সুন্দর এবং সিম্পল। যাকে বলে সিম্পলের মধ্যে গরজিয়াছ! ফারিশ একমনে শাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই তার হাত পকেটে ঢুকালো। হাতে কছকছে নোটের স্পর্শ লাগলো। তার মনে পরলো আজ যে সে বোনাস পেয়েছে, তার কাছে তাহলে টাকাও আছে বেশ। তাহলে কী..??

সানাম গালে হাত দিয়ে বসে আছে। ইতি ফোন করে বলেছে আগামীকাল বস পার্টি রেখেছে, সেখানে সকলকেই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সানাম ভাবছে সে এখন কী করবে? তার পরার মতো জামা বা শাড়ি নেই। অসুস্থ শরীর নিয়ে যে বের হবে তাও পারছে না কারণ সে এখনো অনেকটা দূর্বল। অন্তু আন্টির থেকে আগেও শাড়ি ধার করে পরেছিলো, আবার চাইতে লজ্জা লাগছে তার। এ মাসের টাকাও সে নিজের হাতে রাখেনি৷ ফারিশকে এবং ভার্সিটির ফি দিয়েই এবার তার হাতে টাকার কম পরেছে। আবার একটা নতুন ফোনও কিনেছে। এখানেই তার মাসিক বারতি খরচ। সকলেই স্মার্টফোন ইউস করে, তারও বিভিন্ন কাজে, অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রয়োজন হয়। তাই বাধ্য হয়েই ফোন নিয়েছে। সানাম গালে হাত দিয়ে ভাবছে তখনই অন্তু আন্টি হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।
সানাম ওনাকে দেখে মুচকি হাসি দিলো। অন্তু আন্টিও উত্তরে মুচকি হাসি দিয়ে রুমে প্রবেশ করতে করতে বললো,

-“কি করছিলে একা বসে বসে?”

-“তেমন কিছু না আন্টি। এই সময়ে আসলেন? কোনো প্রয়োজন?”

-“হু। প্রয়োজন আছে বলেই তো এসেছি নাকি? এখন এটা নেও দেখি।” অন্তু আন্টি প্যাকেটটা সানামকে ধরিয়ে দিয়ে বললো।

-“কী আছে এতে আন্টি?”

-“একটা শাড়ি আছে। অনেকদিনের ইচ্ছে ছিলো তোমায় একটা শাড়ি দেয়ার। তাই আজ দুটোই দিলাম। কাল নাকি তোমার অফিসে পার্টি আছে, এখান থেকে যেকোনো একটা পরে যেও! এখন যাই ফারিশকে কফি দিয়ে আসি!” বলেই ব্যাগটা দিয়ে একমুহূর্ত না দাঁড়িয়ে বেরিয়ে গেলো। সানাম বেকুবের মতো প্যাকেটটার দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তু বাইরে এসে ফারিশকে দরজার পাশেই দেখতে পেলো। ছেলেকে দেখে মুচকি হেসে বললো,

-“শাড়ি নিয়েছে। তুই এখন ঘরে যা!”

ফারিশ কিছু না বলেই চলে গেলো নিজের রুমে। অন্তু আন্টিও মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলো। সানাম বড় ব্যাগটা খুলে দেখলো আরও তিনটা শপিং ব্যাগ। সানাম সামান্য ভ্রু কুচকালো। ব্যাগগুলা বের করে দেখলো শপিংব্যাগ দুটোতে আলাদা আলাদা দোকানের নাম। ঠিকানা দেখেও বুঝলো একেকটা একেক জায়গা থেকে কেনা। সানাম এসবে মাথা না ঘামিয়ে ভেতরের প্যাকেট খুলে তো টাস্কি খেলো। দুটো শাড়ি। একটা মেজেন্ডা কালার এবং অন্যটি নেভিব্লু। দুটো শাড়ির থেকে নেভিব্লু কালারের শাড়িটা সানামের বেশ পছন্দ হয়েছে। এবার সে ৩য় ব্যাগটি খুললো। এবার তো সানাম আকাশ থেকে পরলো। নেভিব্লু কালারের কানের দুল, ৪ ডজন নীল-সাদা চুড়ি, নীল রঙের গলার লম্বা মালা, একটা গাঁজরা, সাথে কিছু কসমেটিকস। সবই নেভিব্লু শাড়ির সাথে ম্যাচ করা। সানাম ভেবে পাচ্ছে না অন্তু আন্টি এতোকিছু কীভাবে করলো? এতো নিখুঁত তার পছন্দের মান। সানাম জাস্ট বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। সানাম মুচকি হেসে নেভিব্লু শাড়িটাই বেছে নিলো আগামীকালের পার্টির জন্য। নেভিব্লু কম্বিনেশন তার বেশ পছন্দ হয়েছে।

পার্টির জন্য ফারিশ একটা নেভিব্লু পাঞ্জাবি পরেছে। হাতে ব্ল্যাক ঘড়ি, চুলগুলো স্পাইক করা, চোখে সানগ্লাস। আর কিছু থাকুক বা না থাকুক এই সানগ্লাস তার স্টাইলে থাকবেই। ফারিশকে ভিষণ সুন্দর লাগছে। কে জানে আজ কে বলে, “প্রেমে পাগল হয়ে গেলাম, প্রেমে পাগল হয়ে গেলাম।” ফারিশ রেডি হয়ে লিভিংরুমে গিয়ে বসলো। সানামকে নিয়ে একসাথেই পার্টিতে যাবে সে। সানাম আসা অবধি সে ফোন ইউস করতে থাকলো। ৫-৭ মিনিট বাদে খট করে দরজা খোলার শব্দ কানে এলো ফারিশের। ফারিশ সাথে সাথে সামনে তাকালো। মুহূর্তেই সে থমকে গেলো। সানাম শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে রুম থেকে বের হচ্ছে। আজ দ্বিতীয়বার সানামকে শাড়িতে দেখলো ফারিশ। এতোটা অপরূপ লাগছে বলে বোঝানোর মতো নয়। চুড়ির ঝিনঝিন শব্দ ফারিশের কতোটা মধুর লাগছে। সানাম নেভিব্লু কালারের কম্বিনেশনেই নিজেকে সজ্জিত করেছে। সানাম সামনে ফারিশের দিকে তাকাতেই ফারিশ ফোনের দিকে তাকালো যক্র কারণে সানাম ফারিশের দৃষ্টি দেখতে পারলো না। তবে সানাম নিজেও ফারিশকে দেখে ক্রাশ খেয়ে গেছে সাথে অবাকও হয়েছে। তাদের দুজনের কালারই ম্যাচিং! আচ্ছা এটা কী ফারিশ খেয়াল করেছে?

ফারিশ ফোনের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলো,

-“তুমি যদি রেডি হয়ে থাকো তাহলে যাওয়া যাক?!”

সানাম যেন আরেকটা ঝটকা খেলো। কতোদিন পর ফারিশ তাকে তার সাথে যাওয়ার কথা বলেছে সে কী করে অমত করতে পারে? সানাম কিছু না বলে চুপ করে থাকে। ফারিশ ফোন পকেটে ঢুকিয়ে উঠে দাঁড়ায় এবং সদর দরজার দিকে যেতে যেতে বললো,

-“চলো!”

সানাম বিনা বাক্যে ফারিশের পিছে পিছে যেতে লাগলো। অন্তু আন্টি তো সানামকে দেখেই বলে উঠে,

-“কী মিষ্টি লাগছে দেখো! যেন কোনো হুর এসেছে আমার ঘরে। কারো যেন নজর না লাগে।”

বলেই সানামের কপালে চুমু খেলেন। সানাম মুচকি হেসে ভাবতে লাগে, “যার নজর লাগা উচিত তারই তো আমায় চোখে পরে না।”

অবশেষে ফারিশ সানামকে নিয়ে নিচে নামলো। পার্কিং গিয়ে বাইকে বসলো। সানাম সামান্য ইতস্ততবোধ নিয়ে বাইকের পিছনে বসলো তবে দূরত্ব বজায় রেখে। এ বিষয়টা ফারিশের লাগলো, তাই ইচ্ছা করেই জোরে টান দিলো যার ফলে সানাম মুখ থুবড়ে ফারিশের পিঠে গিয়ে পরলো। ফারিশ এতে তৃপ্তির হাসি হাসলো।

পুরো রাস্তায় দুজনের মধ্যে নিরবতা পালন হলো। কেউ একটা টুশব্দও পরলো না। দূর থেকে যেই ওদের দেখছে তারাই ভাবছে ওরা কাপল, তাইতো সেম ড্রেস।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here