“তৃ-তনয়া” পর্ব- ১০৪

0
2417

“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ১০৪
(নূর নাফিসা)
.
.
দ্বাবিংশ রমজানে নাফিসা ও নিশাতকে নিয়ে শপিং করতে গেছে ইমরান। সাথে আশিককেও ডেকেছে। তারা বাসা থেকে বেরিয়েছে বিকেলে। কেননা শপিং করে তারা রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া করে আসবে। আশিক ও ইমরান নামাজ পড়লেও নিশাত ও নাফিসার মাগরিবের নামাজটা মিস হয়ে গেলো। ইফতার করে ঘুরাফেরা ও কেনাকাটার পরপর তারা ডিনার করতে রেস্টুরেন্টে এলো। আশিক চেয়ার টেনে বসেই নাফিসার দিকে মেনু এগিয়ে দিয়ে বললো,
– ভাবি, কি খাবেন? অর্ডার করুন।
– ওরেব্বাস! আপনি খাওয়াবেন নাকি?
– কেন নয়!
– আচ্ছা!
নাফিসা বেছে বেছে কয়েকটা আইটেম অর্ডার করলো। এখানে আসার সম্পূর্ণ সময়টাতেই সে লক্ষ্য করলো নিশাত ও আশিক একে অপরের সাথে তেমন কথাবার্তা বলছে না। স্বামী স্ত্রী তো দূরে থাক, তারা যে আগে ভাইবোন ছিলো তার রেশটুকুও উপলব্ধি করা যাচ্ছে না! মনে হচ্ছে যেন তারা একে অপরকে চেনেই না! সে ভাবছে তাদের বিয়ের এক সপ্তাহ না যেতেই কি ঝগড়া বেধে গেলো?
খাওয়াদাওয়া শেষে তারা সবাই শপিং ব্যাগ-ট্যাগ সহ বেরিয়ে এলো। নাফিসা ঢেকুর তুলতে তুলতে বললো,
– মজা পেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেছি বোধহয়! যাইহোক, অবশেষে ধনেপাতা ডুলাভাইকে!
আশিক হাস্যকরভাবে বললো,
– ধনেপাতা আবার ডুলাভাই! যাক, ধনেপাতা আমার লাগবে না ভাবি। ওটা আপনি ভাইকে দিয়ে দিয়েন। কেননা রেস্টুরেন্ট বিলটা ভাই দিয়েছিলো।
আশিকের কথা শুনে নাফিসা রেগেমেগে তাকালো ইমরানের দিকে। আর আশিক যেন হাসতে হাসতে শহীদ! নিশাতও হাসছে! নাফিসাকে দেখে ইমরান বললো,
– এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? হাত ব্যাথা করছে? ব্যাগগুলো আমার আছে দাও তাহলে।
নাফিসা শাস্তিস্বরূপ ব্যাগ গুলো তো দিলোই সাথে তার পার্সটাও ইমরানের গলায় ঝুলিয়ে দিলো! ইমরান আশিকের সাহায্যে পার্সটা হাতে নিয়ে হাটতে লাগলো। অত:পর বাড়ির নিকটবর্তী স্ট্যান পর্যন্ত রিজার্ভ সিএনজি নিলো। আশিক সামনে আর তিনজন পেছনে বসেছে। নাফিসা সম্পূর্ণ পথ গাল ফুলিয়ে ছিলো! আর আশিক খোচা মেরে আরও রাগিয়ে দিচ্ছিলো তাকে! শুধু গাড়িতে আছে বিধায় কিছু বললো না আশিককে! নতুবা ইটা মেরে মাথা ফাটিয়ে দিতো! আশিক স্ট্যান থেকে তার বাসায় ফিরে গেছে। আর তারা নিজ বাসায় এসে পড়লো। ঘরে এসে নাফিসা রেগেমেগে চলাফেরা করছে বিধায় ইমরান বললো,
– ছি, তুমি এই খাওয়াদাওয়ার ব্যাপার নিয়ে এমন রেগে আছো! বড় ভাই হয়ে আমি তাকে বিল দিতে দেই কি করে!
– একদম চুপ! একটা কথাও বলবা না। ওই আশিক্কা বারবার আমার খরচ করিয়ে দৌড়ে পালায়! সেদিন ভার্সিটিতে যেই রাগ উঠেছিলো, ভাবলাম আজ বেশি বেশি খেয়ে তার উশুল তুলবো! আসছে আরেক মহান দরদী ওয়ালা! আজকের বিলটাও তারই দেওয়ার ছিলো! বেশি খেয়ে এখন আমার অবস্থা টাইট!
– এক্কেবারে উচিত হইছে! অন্যের জন্য কূপ খুড়লে সেখানে নিজেকেই পড়তে হয়।
– তুমি না এলেই তো পড়তাম না! কূপ তো ওই আশিক্কা খুড়ছে! আসুক আবার। শ্বশুর বাড়িতে জামাই আদরে জামাল গোটা খেয়ে যাবে!
ইমরান হেসে বললো,
– আচ্ছা? দেখো, সেই জামাল গোটা যেন আবার তোমার পেটে না যায়! এখন কি একটা সেভেন আপ এনে দিবো? খাবার হজম হয়ে যাবে তারাতাড়ি।
নাফিসা রেগে তার গলা চেপে ধরে পিছু ঠেলতে লাগলো। ইমরান হাসতে হাসতে ইচ্ছে করেই পিছু হেলে নাফিসাকেসহ বিছানায় ধপাস করে শুয়ে পড়লো। নাফিসা উঠতে চেষ্টা করলো কিন্তু ইমরান তাকে দুহাতে জড়িয়ে রেখে চোখ বুজে ঘুমের ভান করে আছে! নাফিসার প্রায় সম্পূর্ণ ভারই ইমরানের উপর। সে ছাড়তে বললেও ছাড়লো না তাই নাফিসাই আবার ব্যর্থ নিশ্বাস ফেলে তার বুকের মধ্যখানে মাথা রেখে শুয়ে রইলো। দু’মিনিট চুপচাপ থেকে অত:পর শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বললো,
– ছি! শার্ট থেকে ঘামের কি দুর্গন্ধ বেরিয়েছে। ছাড়ো।
ইমরান তবুও কোনো রেসপন্স করলো না!৷ নাফিসা এবার তার পেটে চিমটি দিয়ে বললো,
– ওই ব্যাটা, ছাড়তে বলিনি?
ইমরান ব্যাথা পেয়ে তাকে ছেড়ে দিলো! নাফিসা উঠে পড়লো আর ইমরান পেটে স্লাইড করতে করতে উঠে বসে বললো,
– ওফ! আমি বউকে আদর করি আর বউ আমাকে এমন অত্যাচার করে! কারে বলিবো, এই মনের দুঃখ গো…আমি?
তার মুখে এমন সুর শুনে নাফিসা মৃদু হেসে বললো,
– নিজে তো চিতপটাং হয়ে আরামে শুয়ে আছেন! উপুড় হয়ে যে আমার দম আটকে যাচ্ছে সেটা চোখে পড়ে না?
– ধুর কথা নাই তোমার সাথে।
– বলতে হবে না কথা। শার্ট দাও।
– দিবো না। অর্ধেক খুলে রাখছো কেন?
নাফিসা এবার কাছে এসে পুরোটাই খুলে নিলো। সাথে তার খোচা খোচা দাড়িযুক্ত গালে আলতো কামড় বসিয়ে দিলো। ইমরান বাঘের থাবার মতো ভঙ্গিতে রিটার্ন করতে গেলে নাফিসা খিলখিলিয়ে হেসে পেছনে সরে এলো। ইমরান ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুমের দিকে যেতে যেতে বললো,
– ওইঘরে ফ্রিজে মনে হয় সেভেনআপ আছে। দেখে এসো। না হলে দোকান থেকে এনে দিবো।
নাফিসা বেরিয়ে বড় ঘরে গিয়ে সেভেন-আপ নিয়ে এলো। ভাবলো নিশাতকে জিজ্ঞেস করা যাক খাবে কি-না। তাই নিশাতের রুমে এলো। দরজা চাপানো ছিলো। সে একটু ঠেলে ফাঁক করতেই দেখলো নিশাত এক হাতে জামাকাপড়, জুতা গুছিয়ে রাখছে আর ফোনে কথা বলছে,
“বাসায় ফিরেছো?”
“না, আবার ডিনার করবো বুঝি! খেয়ে না এলাম।”
“ইশ তুমিই খাও আবার।”
“ভালো হইছে, আমি মোটা ই। তাই আর খাবো না। তুমি চিকন তুমিই খাও বেশি বেশি।”
“না, নামাজ পড়বো, তারপর ঘুম।”
নিশাতের কথাবার্তা শুনে বুঝে গেছে আশিকের সাথেই কথা বলছে। তাই আর ডিস্টার্ব করলো না নব দম্পতিকে। আস্তে করে দরজা চাপিয়ে সে নিজের রুমের দিকে এগোতে এগোতে বললো,
– হুহ্! তখন দেখালো যেন কেউ কাউকে চিনেই না! আর এখন চোখের আড়াল হতেই এতো আলাপ! আহা, কি প্রেম!
মাঝপথে হঠাৎই ইমরান বেরিয়ে এসেছে বাথরুম থেকে। তার শেষ উক্তি শুনে বললো,
– কি বলছো একা একা?
– তোমার ভাই বোনের মাঝে কি প্রেম! একটু আগে দেখা করে এলো আর এখনই ফোনে জমে গেছে! আমাদের বিয়েতেও তো প্রোগ্রাম হয়নি! আমিও বাপের বাড়ি চলে যাই, কি বলো? তারপর না হয় ফোনে প্রেম করতে করতে ভার্সিটি পাড় করেই তোমার কাছে আসবো!
ইমরান হেসে তাকে নিজের সাথে চাপিয়ে রুমের দিকে হাটতে হাটতে বললো,
– অসম্ভব। তোকে ছাড়া আমার চলবে নাকি! আর আমাদের মতো প্রেমই কেউ করতে পারে নাকি!
– এহ! আসছে বিখ্যাত প্রেমিক! এওয়ার্ড কে দিবে শুনি?
– তুই ই আমার এওয়ার্ড। আর কিছু লাগে না আমার।
– নাও, ধরো। এটা নিয়ে যাও। আমি ওযু করে আসি। একসাথে নামাজ পড়বো।
দরজার সামনে এসে ইমরানের হাতে বোতল ধরিয়ে দিয়ে নাফিসা ওযু করতে চলে গেলো। বাড়ির অন্যান্যরা ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত। তারা নামাজ পড়ে দেড়ি করেই ঘুমালো।
ঈদুল ফিতর কাটলো তাদের আনন্দের সাথেই। নাফিসার ইচ্ছে ছিলো কোথাও বেড়াতে যাবে কিন্তু সামনে এক্সাম থাকায় ইমরান নিয়ে গেলো না। রোজার আগে বেড়াতে গিয়েছে তাই নাফিসাও তেমন জোর করলো না। তাছাড়া তারা দিনাজপুরে ঘুরে এলো, রোজা গেলো, ঈদ গেলো হাতটানও তো পড়েছেই কিছুটা! তা ভেবে নাফিসা দ্বিতীয়বার আর সেই কথা তুলেনি। তবে একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে সে। তার আবদার বা ইচ্ছাতে ইমরান কখনোই সরাসরি না করেনি। সাথে সাথে পূরণ সম্ভব না হলে পরে পূরণ করার জন্য সময় নেয়। ইমরানের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোই নাফিসাকে তার প্রতি দ্রুত আকৃষ্ট করেছে। যদিও শখের বশে ফটাফট প্রকাশ করে ফেলে কিন্তু পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নাফিসাও দ্বিতীয়বার সেই শখ প্রকাশ করে না। যদি অতিব জরুরি না হয়, তবে সেটা ক্যান্সেল করে দেয়। আর জরুরি হলে অপেক্ষা করে।
.
আরাফ ইশার নামাজ পড়ে ঘরে এসেছে। নাজিয়া রান্নাবান্নার কাজকর্ম সেড়ে দরজা চাপানো রেখে নামাজ পড়ছিলো। আরাফ এসে দেখলো মোনাজাতে খুব কাঁদছে নাজিয়া। হয়তো আরাফের উপস্তিতি টের পেয়েছে। তাই মোনাজাতে আর বেশি সময় নিয়ে কান্না করেনি। দুতিন মিনিটের মধ্যেই সে শান্তভাবেই মোনাজাত শেষ করে উঠে পড়লো। নাজিয়া জায়নামাজ রাখার সময় আরাফ টুপি রাখতে রাখতে বললো,
– মিসেসের মনটা কি কোনো কারণে খারাপ হয়ে আছে?
– উহু, ভাত খেতে এসো।
– এই, দাড়াও!
নাজিয়া দৃষ্টি নিচের দিকে রেখে জবাব দিয়ে বেরিয়ে যেতে লাগলে আরাফ থামিয়ে দিলো। আজ বিকেলেই বাসায় ফিরেছিলো সে। তখন থেকে একটা বারও নাজিয়াকে তার দিকে তাকাতে দেখেনি! এমনকি কোনো কারণে তার কাছও ঘেঁষেনি! নিজেকে কেমন যেন আড়াল রাখতে চাইছে, এবং আরাফকে এড়িয়ে চলছে। যেটা এ পর্যন্ত বারবার লক্ষ্য করে আরাফ নিশ্চিত হয়েছে। আর এখন তাকে থামিয়ে দিয়ে সে দরজা লাগিয়ে নাজিয়ার কাছে এসে বাহুতে হাত রেখে বললো,
– হয়েছে কি, বলোতো?
– কোথায় কি হয়েছে!
– আমাকে এড়িয়ে চলছো তুমি।
– কি বলো এসব! এড়িয়ে চলবো কেন! ক্ষুধা লেগেছে, খেতে এসো।
– এখনো তুমি একবারের জন্যও আমার দিকে তাকাওনি।
নাজিয়া জোরপূর্বক হাসি ফুটিয়ে আরাফের চোখে তাকাতে গেলো। কিন্তু মিথ্যে হাসিটা পরিপূর্ণ ভাবে ফুটে উঠলো না! তার আগেই চেহারায় বিষন্নতার ছাপ ও চোখে অশ্রু ভীড় জমিয়েছে! আরাফের ব্রু অটোমেটিক কুচকে গেলো! নাজিয়া তাকে ছাড়িয়ে চলে আসতে চাইলে আরাফ হাতের বাধন শক্ত করে বললো,
– কি হয়েছে? বলো আমাকে?
– কিছুনা।
– নাজিয়া, বারবার একই কথা শুনতে ভালো লাগছে না। বিনা কারণে পরিস্থিতি এমন হয় না।
সাথে সাথেই নাজিয়া আরাফকে ঝাপটে ধরে হুহু করে কেঁদে উঠলো! আরাফ তার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
– আরে! কাঁদছো কেন? কি হয়েছে বলো আমাকে?
– আরাফ, আমার খুব ভয় করছে। খুব ভয় করছে আমার! বারবার যদি একই ঘটনা ঘটে আমার সাথে। আমি পারবো না মানতে।
আরাফ কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে নাজিয়ার মাথায় থুতনি রেখে বললো,
– আরোহী ফ্যাক্ট কিছু?
নাজিয়া ভয়ার্ত কান্নার মাঝেই জবাব দিলো, “হু”! আরাফ মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে নাজিয়ার মুখখানা দু’হাতে ধরে বললো,
– আরোহীর আম্মুটা ইদানীং অনেক ধৈর্যহীন হয়ে পড়েছে! তুমিই না বলো, “পা ফেললে মচকে যেতে পারে সেই ভয়ে কি আমরা হাটা বন্ধ করে দিবো?” তাহলে আজ তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেন?
– ওই সময়টা খুব কঠিন আরাফ। আমি ভোগ করে এসেছি সেই ব্যাথা৷ সহ্য করার মতো না! আজও খুব কষ্ট দেয় আমাকে। এমন মেয়েদের বারবারই সমস্যাটা দেখা দেয়। জানি না তারা কিভাবে সহ্য করে! আমার খুব ভয় করছে।
আরাফ তাকে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো,
– কিছু হবে না। আল্লাহর উপর ভরসা রাখো। সবকিছু সহিহ সালামত রাখার মালিক তিনি। কাল বা পরশু ডক্টরের কাছে যাবো। হুম? আরে, এভাবে কাদছো কেন তুমি? আমি আছি না তোমার পাশে! আর আল্লাহর রহমত আছে না আমাদের সাথে? বোকা বউ, এ তো আমাদের সৌভাগ্য আমরা প্যারেন্টস হবো। খুশির সময় কেউ এভাবে কাঁদে! হেসে হেসে কাঁদতে হয়। হাসো…
আরাফ চেষ্টা করে হাসাতে পারেনি কিন্তু শান্ত করতে পেরেছে। ওদিকে আয়েশা বেগমের হাক পড়লে নাজিয়া চোখ মুছে বেরিয়ে গেলো। মুখটা মলিন রেখেই খাওয়াদাওয়া সেড়ে এলো।
পরদিন দুপুরে বাসায় ফিরে এসেছে আরাফ। অত:পর বিকেলে নাজিয়াকে নিয়ে হসপিটালে গেলো। ডাক্তার নাজিয়াকে কয়েক মাস বেড রেস্টে থাকতে বললো। পাঁচ-ছয় মাস হলে নিজের সুবিধামতো টুকটাক কাজ ও হাটাহাটি করবে। আরাফ পড়ে গেল দুশ্চিন্তায়! কেননা সংসারের প্রায় সম্পূর্ণ কাজের ভারই নাজিয়া বহন করে। এতোগুলো দিন কি নাজিয়ার পক্ষে বেড রেস্টে থাকা সম্ভব! এই মেয়ে তো বসে থাকার না! সে ই বা আর কতক্ষণ তাকে চোখে চোখে রাখবে! বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিলে সে নিশ্চিন্তে থাকতে পারতো। কেননা রুমান বেগম মেয়েকে খুব সযত্নে রাখতে পারবেন। কিন্তু সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া কি ঠিক হবে! রুমানা বেগম একা মানুষ। মুরগির খামার দেখাশোনাসহ নিজের সংসারের কাজই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে! আর এদিকে আয়েশা বেগম যেতেও দিবে না। আবার তিনি যে তেমন যত্ন নিবে না সেটাও সে নিশ্চিত। তাই অনেক ভেবে সে সিদ্ধান্ত নিলো একটা কাজের লোক রাখবে। ভারি কাজকর্ম যা আছে সব করে দিয়ে যাবে, আর বাকিটুকু তার মা দেখাশোনা করবে। কিন্তু এখন তার মা মানবে কি-না সেটা দেখার বিষয়। বাসায় ফিরে সে মায়ের সাথে কথা বললো। ডাক্তারের বলা বিষয়াদি বুঝিয়ে কাজের লোক রাখার কথা বললো। তা না হলে বারবার সেই ঝুঁকি থাকে আর বাচ্চা ঠিকঠাকভাবে আসার সম্ভাবনা কম থাকে। আয়েশা বেগম প্রথমে নিশাতকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা চিন্তা করলেন। কিন্তু আরাফ নিষেধ করলো। কেননা সে তুলনামূলক ছোট। না পারবে কাজের দায়ভার নিতে, আর না পারবে যত্নাদির ব্যাপারে তেমন নজর দিতে। তাই তিনি আরাফের সিদ্ধান্তেই রাজি হলেন। আয়েশা বেগম তো রাজি হয়ে গেলেন৷ আরাফও খুশি হলো। এখন শুধু দেখার বিষয় যত্নাদি ঠিকঠাক মতো হয় কি-না! মায়ের ব্যাপারটা নিশ্চিন্ত হয়ে এবার নাজিয়াকে সাবধান করে দিলো তার কথার যেন অমান্য না করে। তবে আয়েশা বেগম আয়াতকে কল করে বললেন কিছুদিন থেকে যেতে। সে তো এখন ফ্রী ই আছে। মায়ের সাথে কাজকর্ম এগিয়ে দিতে পারবে। কাজের লোক ঠিক হলে না হয় চলে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here