“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ২৯
(নূর নাফিসা)
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই তারা ব্যাগ গুছিয়ে নিলো রিসোর্ট ছেড়ে দিবে বলে। অত:পর রেস্টুরেন্ট এসে খাবার অর্ডার করলো। হিমেল বললো,
– এখন কি সোজা সীতাকুণ্ডে যাবি নাকি অন্যকোথাও?
মেহেদী জবাব দিলো,
– না, এখন হিমছড়ি উদ্যানে যাবো। এরপর সীতাকুণ্ড।
– ওকে।
নাহিদা বুঝতে পারছে না তাদের কথাবার্তা। তারা তিনদিনের ট্রিপে এসেছে। তিনদিন তো শেষ, তাহলে কি আজ বাড়ি ফিরে যাবে না! খাওয়াদাওয়া শেষ হলে সবাই বেরিয়ে এলো যারযার ব্যাগ নিয়ে। নাহিদা ও মেহেদীর দুইটা লাগেজ ও একটা ব্যাগ থাকায় একটা লাগেজ বন্ধুদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে সে একটা লাগেজ ও একটা ব্যাগ নিলো। নাহিদার কিছু টানতে হচ্ছে না। শুধু তার পার্সটা হাতে। তারা গাড়ির জন্য রাস্তায় এসে দাড়ালো। নাহিদা মেহেদীর পাশে এসে বললো,
– এখন কি ঢাকা ফিরবেন না?
– না, এখন হিমছড়ি উদ্যানে যাবো। আগামী একমাসের জন্য ঢাকা যেতে পারবে না।
– কি! একমাস!
– জ্বি।
– আমি যাবো না কোথাও। আমাকে ঢাকা ফিরিয়ে দিয়ে এসে আপনারা ঘুরাঘুরি করুন।
মেহেদী বিদ্রুপস্বরূপ বললো,
– সেকি! বউ ছাড়া হানিমুন হয় নাকি! আমরা তো হানিমুনে এসেছি!
– অনেক হয়েছে হানিমুন। আমি ঢাকা যাবো।
– তো যাও।
– একা কিভাবে যাবো!
– আমি কি জানি! এসেছো কেন!
– আমি তো আসতে চাইনি। বাবা মা বলেছে তাই এসেছি।
– তাহলে বলো বাবা-মাকে নিয়ে যেতে।
– আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে বলেছেন উনারা।
– আমি যাচ্ছি না। চুপচাপ লেজের মতো পিছু পিছু চলো। বেশি কথা বলবে তো এখানেই ফেলে যাবো।
– বসে থাকবো নাকি এখানে! রাস্তা চিনে গেছি। চলে যাবো আমি একা একাই। স্টেশন গিয়ে ঢাকার ট্রেনে উঠে পড়বো।
– বাহ! ভালো চিনে গেছো! এখন ভালোয় ভালোয় আবার ভুলে যাও। এবং চুপচাপ গাড়িতে উঠো।
– যাবো না আমি।
মেহেদী বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকালে নাহিদা দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো। গাড়ি ঠিক করা হয়ে গেলে সবাই উঠতে লাগলো আর সে দাড়িয়েই রইলো। একটুও ইচ্ছে করছে না তাদের সাথে যেতে। শুধু ইচ্ছে করছে বাড়ি ফিরে যেতে। তাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে মেহেদী রাগান্বিতভাবে তার দিকে তাকাতেই সে মনে মনে ফুসতে ফুসতে উঠে বসলো গাড়িতে। চলে এলো হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানে। সেখান থেকে আবার টেকনাফ ওয়াইল্ডলাইফে এসেছে। একাধারে ওয়াইল্ডলাইফ ও ইনানী ঘুরাফেরা করেছে। লাঞ্চ সেড়ে এখানে কিছুক্ষণ কাটিয়ে তারা আবার সিএনজি রিজার্ভ করে রওনা দিলো সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে। নাহিদার প্রথমে ইচ্ছে না থাকলেও এখন খুব ভালো লাগছে। মেহেদী যেনো তাকে চোখে চোখেই রাখছে। বারবার তাকে সাথে সাথেই হাটতে বলছে। সন্ধ্যায় তারা সীতাকুণ্ড এসেছে। এক রাতের জন্য দুটি রুম ভাড়া করে নিয়েছে। সন্ধ্যার পর তাদের সময় কাটলো রেস্টুরেন্ট ও রুমেই। সকালে তারা ঘুরতে বেরিয়েছে। সারাদিন তারা সীতাকুণ্ডের মহামায়া লেক, চন্দ্রনাথ পাহাড়, গুলিয়াখালী সী বীচ, বাশঁবারী সী বীচ ভ্রমণ করলো। খুব গভীরভাবে উপভোগ করলো নাহিদা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য! সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিলো সেই মুহূর্তটা যখন চন্দ্রনাথ পাহাড়ে দাড়িয়ে সে বিরুপক্ষ মন্দির দেখছিলো তখন মেহেদী তার পেছনে হাত রেখে গা ঘেঁষে দাড়িয়েছিলো কাপল ছবি তোলার জন্য! রায়ান ফটোশুট নিয়েছে তাদের। যদিও মেহেদী বলেছিলো বাসায় গিয়ে দেখাবে বলে তুলেছে তবুও নাহিদার ভালো লেগেছে। এমনকি তাদের চার বন্ধুর ছবি তুলতে নাহিদা ফটোশুট নিয়েছে। সবমিলিয়ে অনেক ভালো কেটেছে আজকের দিনটা। এছাড়া মজা বাড়িয়ে দিতে তাদের বন্ধুদের ছোটাছুটি দুষ্টুমি তো আছেই। এই মারামারি, এই ঠেলাঠেলি আবার এই গলা জড়িয়ে হাটাহাটি! তবে নাহিদাকে দৃষ্টির আড়ালে রাখেনি মেহেদী।
সেদিন রাতেই তারা ফেনীতে চলে এসেছে। সকালে নাস্তা করে ফেনীর কিছু অঞ্চল ঘুরে তারা দুপুরে রওনা দিলো কুমিল্লার উদ্দেশ্যে। দুই রাত একদিন কুমিল্লা কাটিয়ে পরদিন খুব সকালে রওনা দিয়ে সকাল দশটার আগেই তারা ঢাকা ফিরে এসেছে। বাড়িতে শুধু মেহেরুন ইসলাম আছে। তার সাথে দেখা করে রুমে এসে ঝটপট গোসল সেড়ে মেহেদী ধপাস করে বিছানায় পড়লো। কতোদিন সে তার বিছানা থেকে দূরে। আজ মনের মতো একটা ঘুম দিবে। আর নাহিদা কাপড়চোপড় যথাসম্ভব গুছিয়ে রেখে গোসল করতে গেলো। মেহেদী গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে। মেহেরুন খাওয়ার জন্য ডেকে গেলেন কিন্তু তার কানে যায়নি। নাহিদা মেহেরুনের সাথে কিছুক্ষণ বসে থেকে পরে আবার রুমে এসে মেহেদীর একপাশে শুয়ে পড়লো।
দুপুরের শেষদিকে নাহিদার ঘুম ভাঙলো। মেহেদীকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করতে দেখলো। তার দেহে চাদরও দেখতে পেল। মেহেদী দিয়েছে সে নিশ্চিত। মেহেদীকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে মাত্র ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এসেছে। নাহিদাও আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো। মাথাটা তার ব্যাথা করছে একটু। বিছানা ঠিক করে সে বাথরুমে ফ্রেশ হয়ে এসে আর মেহেদীকে দেখতে পেল না। রুম থেকে বেরিয়ে সে কিচেনের দিকে এসে দেখলো মেহেরুন ইসলাম রান্নার ব্যবস্থা করছে আর মেহেদী কেবিনেটের উপর বসেই প্লেট হাতে নিয়ে ভাত খাচ্ছে। নাহিদাকে আসতে দেখে মেহেরুন বললো,
– নাহিদা, তুই কি অসুস্থ? এমন দুর্বল দেখাচ্ছে কেন তোকে!
– না, মা। এমনি। জার্নি করার ফলে মাথাটা একটু ব্যাথা করছে।
– আমি জানতাম তো, এই অভদ্র ছেলেটা তোর একটুও খেয়াল রাখবে না!
মেহেদী খাওয়ার মাঝেই বলে উঠলো,
– আম্মু, তুমি সবসময় এতো বেশি জেনে যাও কেন! আমি খেয়াল না রাখলে এখনো তোমার সামনে দাড়িয়ে আছে সে! তুমি নাহিদার কাছেই জেনে নাও খেয়াল রেখেছি কিনা!
– নাহিদার বলতে হবে কেন! আমি স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছি না!
– আচ্ছা, তুমিই বলো। তিন প্লেট খাবার সামনে দিলে যদি এক প্লেট গিলে তাহলে সেখানে আমার কি করার থাকে! বড়জোর বাকি দুই প্লেট আমার পেটে ভরে নিতে পারবো। এর বাইরে তো আর কিছু করার নেই!
মেহেরুন ইসলাম হেসে উঠলেন এবং বললেন,
– তুই তোরটা গিলেও আবার নাহিদার দুই প্লেট গিলে নিয়েছিস!
– ধুর! কথার কথা বললাম। আপু কবে গেছে?
– তোরা যাওয়ার তিনদিন পরই চলে গেছে। নাহিদা, ভাত তরকারি আছে। খেয়ে নে।
– না, মা। এখন খেতে ইচ্ছে করছে না। এখন কি রান্না বসাবেন?
– হ্যাঁ। সন্ধ্যার আগে আগেই রান্না শেষ করে নিবো।
– আমি কেটেকুটে দিবো কিছু?
– না, আগে খেয়ে নে। আমার বাড়িতে কেউ একবেলাও না খেয়ে থাকতে পারবে না। এমনিতেই রোগা হয়ে গেছিস ক’দিনে! তারাতাড়ি প্লেট হাতে নে।
মেহেরুনের কথায় বাধ্য হয়ে নাহিদা অল্প খেয়ে নিলো। তারপর রান্নার কাজে হাত লাগালো। সন্ধ্যার পর নামাজ পড়ে ড্রয়িংরুমে বসে মেহেরুন নাহিদার মাথায় তেল মালিশ করে দিতে লাগলো। খুব মনে পড়ছে নাজিয়ার কথা! এ ও তো এক শ্বাশুড়ি আর বড় আপুর ঘরেও তো এক শ্বাশুড়ি! মানুষের মধ্যে এতো তফাত কেন হয়! ইনি পুরো মায়ের আসন দখল করে নিচ্ছেন আর উনি শ্বাশুড়ি শব্দটাকেই কলঙ্কিত করে ফেলছেন! এভাবে একটু ভালো আচরণ করলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যায়! ভাবতে ভাবতে নাহিদার চোখে পানি এসে পড়েছে। এদিকে মেহেরুন দু এক সপ্তাহের মধ্যে নাহিদার বাবা-মা ও বোনদেরকে দাওয়াত করবে সেই কথা বলে যাচ্ছেন। হঠাৎই কলিং বেল বেজে উঠলো। নাহিদা চোখ মুছে বললো,
– মা, আমি যাচ্ছি।
– না, তুই বস। আমিই যাচ্ছি।
নাহিদা মাথায় ঘোমটা টেনে বললো,
– হাতে তো তেল মাখানো। খুলবেন কিভাবে! আমি খুলে দিয়ে আসি।
– আচ্ছা।
নাহিদা দরজা খুলে দিয়ে দেখলো মেহেদী এসেছে। অথচ এদিকে মাত্র ইশার আযান পড়ছে। তাই নাহিদা জিজ্ঞেস করলো,
– নামাজ পড়েননি?
– না।
এদিকে মেহেরুন বললো,
– তা পড়বে কেন! নামাজ পড়লে তো দেহে ঠোসা পড়বে! আমারই ভুল হয়েছে! কেন আমি মাদ্রাসায় না ভর্তি করে স্কুলে ভর্তি করতে গেলাম! এসব ছেলেদের কোনো স্বাধীনতা দিতে হয়না! সারাদিন বন্দী রাখাই শ্রেয়!
মেহেরুন কথা বলছে আর মেহেদী দুই কানে আঙুল দিয়ে রুমে চলে গেলো। নাহিদার খুব খারাপ লাগলো বিষয়টি! সে দরজা লাগিয়ে আবার মেহেরুনের কাছে এসে বসলো। তেল লাগানো শেষ হতেই মেহেরুন নামাজ পড়ার জন্য চলে গেলো আর নাহিদা রুমে চলে এলো। মেহেদী পায়ের উপর পা তুলে হাতে ফোন নিয়ে খাটে শুয়ে আছে। নাহিদা বললো,
– বাইরে থেকে এলেন অথচ নামাজ পড়ে এলেন না কেন! আবার মায়ের কথায় কানে আঙুল দিয়ে চলে এলেন! এটা কি ঠিক হয়েছে!
– বেশি প্যাকপ্যাক করো না! নিজে নামাজ পড়ে না আবার অন্যকে শাসায়!
– আপনি জানেন আমি নামাজ পড়ি কি-না!
– না জেনেই বলেছি নাকি! এতোদিন ধরে ঘুরে এলে, কই! নামাজ পড়েছো এক ওয়াক্ত! আমিতো তাও মাঝে মাঝে পড়েছি তুমি তো একটুও না! আবার নামাজীগিরী দেখায়!
– আমার সাথে আপনার তুলনা করলে চলবে! তাছাড়া আমার হিসেব নিয়ে আপনার লাভ কি! আমার কবরে আমি যাবো, আপনার কবরে আপনি যাবেন। যার যার আমল তো তাকেই সংরক্ষণ করতে হবে।
– এজেক্টলি! আমিও সেটাই বলতে চাইছি। আমার হিসেব নিতে আসছো কেন তুমি! নিজে যা করো না, অন্যকে আবার তা করতে বলো!
নাহিদা আর কথা বাড়ালো না। কেননা আপাতত তার পাল্টা জবাব দেওয়ার সেই জোরটা নেই তবে অতি শীঘ্রই দিবে। তাই চুপই রয়ে গেলো। ফোনটা হাতে নিয়ে নাজিয়ার কাছে কল করে কথা বললো কিছুক্ষণ। জহিরুল ইসলাম নামাজ পড়ে বাড়িতে ফিরলে মেহেরুন টেবিলে খাবার দিতে লাগলো। মেহেদীকে ডেকে মেহেরুনের সাথে নাহিদাও হাত লাগিয়েছে। মেহেদী চেয়ার টেনে বসে গালে হাত রেখে টেবিলে কনুই ভর দিয়ে মেহেরুনকে বললো,
– আম্মু, তুমি কিন্তু বলেছিলে নাহিদার খেয়াল রাখলে আমাকে বোনাস দিবে।
কথার সাথে সাথেই নাহিদার কাজ থেমে দৃষ্টি মেহেদীর দিকে স্থির হলো! বোনাসের জন্য তাহলে পরবর্তী দিন গুলো এতো খেয়াল রেখেছে! আজব দুনিয়ার আজব মানুষ একটা! মেহেরুন খাবার প্লেটে বেড়ে দিতে দিতে বললো,
– হুম, বলেছি। তো?
– তো আবার কি! দাও।
– দেবোই তো। এতো তাড়া কিসের!
মেহেদী পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে বললো,
– এই যে দেখো, মাত্র ত্রিশ টাকা আছে। সকালে যদি খেয়ে নিতাম তাহলে বাড়ি ফেরা হতো না! কুমিল্লায়ই থাকতে হতো! আর তোমার ছেলেকে অনাথের মতো রাস্তায় রাস্তায় লোকজনের ধারে হাটতে হতো।
জহিরুল ইসলাম রুম থেকে বেরিয়ে টেবিলের দিকে আসতে আসতে জবাব দিলো,
– তবুও তো ভালো লাগতো আমার! পেটের দায়ে তো অন্তত একটু কষ্ট করে টাকা যোগাড় করার চেষ্টা করতে তুমি।
– তুমি কি ভাবছো, আমি ভিক্ষে করতে রাস্তায় হাটতাম!
– তো?
– আরে তোমার ছবি দেখিয়ে লোকজনকে ডেকে ডেকে বলতাম, “দেখুন, কিপ্টুস ধনী লোকের সন্তান আমি। ইনি আমার আব্বু। আব্বু হয়তো জানে না আমার ওয়ালেট ফাকা হয়ে গেছে! দয়া করে কেউ আমার আব্বুকে জানানোর ব্যবস্থা করুন যাতে আপনাদেরও কিছু আয় হয়।”
জহিরুল ইসলাম বললেন,
– মেহেরুন, শুনো তোমার বজ্জাত ছেলের কথাবার্তা!
– ধুর! আব্বু তুমি একটু চুপ থাকো তো! আম্মুর সাথে জরুরি মিটিং চলছে আমার। আম্মু কখন দিবে?
– আমি না। তোর আব্বু দিবে বলেছে। আমি শুধু তোকে জানিয়েছি।
– তাই নাকি! আব্বু কখন দিবে?
– তুমি চাইলে এখনই।
– ওফ্ফ! তাহলে আর দেরি কিসে! তারাতাড়ি দাও। আমার ওয়ালেট একেবারে ফাকা!
জহিরুল ইসলাম চেয়ার ছেড়ে রুমের দিকে যেতে লাগলে মেহেদী বললো,
– পাচ হাজারের নিচে চলবে না।
জহিরুল ইসলাম জবাব দিলো,
– পনেরো হাজার পাবে।
মেহেদী অতি খুশিতে স্তব্ধ হয়ে গেছে! বাবাকে রুম থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে টেবিলে ঢোল বাজাতে বাজাতে উৎফুল্ল হয়ে বললো,
– আব্বু তুমি সত্যিই পনেরো হাজার দিবে?
– হুম।
– ওফ্ফ! আগে দিলে কি হতো! তাহলে কি আমি শুধু ঢাকা টু চিটাগং হাইওয়ে ঘুরে আসি! একটু উত্তর পূর্বেও তো যাওয়ার পরিকল্পনা করতাম!
– চতুর্থ দিনে বাড়ি ফেরার কথা ছিলো, সেখানে আজ সপ্তম দিন!
– ওইতো, হানিমুনে একটু বোনাস টাইম লাগে। তাছাড়া আমার কি দোষ! আমি তো কক্সবাজার একদিন কাটাতাম, তুমি সেখানে তিনদিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছো। এজন্যই তো ডাবল সময় কাটলো!
– ওকে, অনেক হয়েছে ঘুরাফেরা। প্রয়োজনে আবার যাবে। আমার কোনো আপত্তি নেই। এই নাও তোমার বোনাস।
– এটা কি!
– জয়েনিং লেটার। কাল থেকে তুমি অফিস জয়েন করছো। মাস শেষে বেতন পনেরো হাজার টাকা। কাজের ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হবে বেতনও বাড়বে।
– হোয়াট! এটা আমার বোনাস!
– হুম। তুমি পাচ হাজার চেয়েছো আমি সেটা পনেরো হাজারে নিয়ে এসেছি। মাস শেষ হওয়ার সাথে সাথেই হাতে পেয়ে যাবে।
মেহেদীর চেহারা দেখার মতো হয়েছে! এতোক্ষণ মেহেদীর কথাবার্তা শুনে নাহিদার ইচ্ছে করছিলো প্লেট দিয়ে একটা মেরে মাথা ফাটিয়ে দিতে! আর এখন তার অফুরন্ত খুশি লাগছে! মেহেদীর টেবিল বাজানোর মতো তার এখন প্লেট বাজাতে ইচ্ছে করছে!