“তৃ-তনয়া” পর্ব- ৬৮

0
2602

“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ৬৮
(নূর নাফিসা)
.
.
গত দুই রাতের মতো আজও তাদের নির্ঘুম রাত কাটলো! ভোরে পাশের এক কেবিন থেকে আর্তনাদ শুনা গেলো। প্রসবের চারদিন পর আজ প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হলো। স্বজনরা সব কান্নার রোল তুলেছে। মেয়েটির মা হামাগুড়ি দিয়ে কাদছে! নাহিদা দেখতে গিয়েছিলো। সহ্য করতে পারেনি সেই কান্না! আজ যদি সে মরে যায় তাহলে তো তার পরিবারও এভাবে কাদবে তার জন্য! তাছাড়া মা হারা এই নবজাতক বাচ্চাটারই বা কি হবে! চাপা কান্না নিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো নাহিদা। মেহেদী কেবিনের বাইরে ছিলো। নাহিদাকে সে দেখেছে দৌড়ে যেতে। কিছুক্ষণ পর যখন মৃত দেহ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো, পুরুষ লোকটিকেও হাউমাউ করে কাদতে দেখেছে মেহেদী। কান্নার বিলাপে বুঝে নিয়েছে লোকটার স্ত্রী ছিলো, যে মারা গেছে। হসপিটাল এমন এক জায়গা, যেখান থেকে কেউ কোল ভরে মহাখুশি হয়ে বেরিয়ে যায় আবার কেউ মূল্যবান কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে বের হয়! সেই ভেবে বড়সড় এক নিশ্বাস ছাড়লো মেহেদী।
একটু পর মেহেদী তার পরিবারের সবার জন্যই নাস্তা এনে দিলো। যদিও তার মাঝে সেই ক্ষমতা নেই সবাইকে সান্তনা দিয়ে খাওয়ানোর! তবে আসিফ বলে বলে খায়িয়ে নিয়েছে সবাইকে। গতকাল মেহেদীর বিষয় জেনে আসিফ এককভাবে মেহেদীর সাথে কথা বললো কিছুক্ষণ। নিজের সাধ্যমতো বুঝাতে চেষ্টা করেছে মেহেদীকে। মেহেদী তখন ছিল নিশ্চুপ। কানে তো পৌছেছে ঠিকই কিন্তু তা মগজে এঁটেছে কি-না কে জানে !
সকাল নয়টার দিকে অফিসের ম্যানেজার এসেছে জহিরুল ইসলামের সাথে দেখা করতে। তিনি এক পর্যায়ে অফিসের বিষয় তুললে জহিরুল ইসলাম বললেন, দেনাপাওনা মিটিয়ে কার্যাদি সব বন্ধ করে দিতে। তার মরোমরো অবস্থা নিয়ে অফিস তো যেতেই পারবে না, তাছাড়া কারো উপর ভরসাও করতে পারবে না! জীবন শেষ পথে চলে গেছে, এই দুনিয়া নিয়ে ভাবনার কোনো প্রয়োজন নেই। যেভাবে সম্ভব, যেন ব্যবসায়ের অবসান ঘটিয়ে দেয়।
মেহেদী বলেছিলো সে আজকের ডিলিং মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করবে কিন্তু জহিরুল ইসলাম তাকে হেলা করে ম্যানেজারকে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিদায় করে দিলো। কিন্তু বললেই কি আর এভাবে হঠাৎ ব্যাবসায়ের অবসান ঘটানো যায়!
গতকাল বিকেল এসেছে মেহেদী অথচ এই পর্যন্ত বাবা তার দিকে ফিরেও তাকায়নি! এমনকি আসিফ ছাড়া বাকিদের মধ্যে কেউ নিজ থেকে কোনো কথাও বলেনি তার সাথে! এতোটা অবহেলা কার সহ্য হয়! ম্যানেজার চলে যাওয়ার পরপরই মেহেদী তার বাবার পায়ের কাছে বসে দুই পা ধরে ক্ষমা চাইছে, বারবার বলছে, “আব্বু, আমি আর কখনো ওসব খাবো না। এবার ক্ষমা করে দাও, আর কখনো কোনো খারাপ কাজে লিপ্ত হব না।”
জহিরুল ইসলাম নিস্তব্ধ। বেশ কয়েকবার বলার পরেও কোনো কথা বললেন না তিনি। একদম পাথর হয়ে গেছেন! ডাক্তার এলে মেহেদী উঠে কেবিনের এক কোনে চলে গেলো। দু-হাতে ভেজা চোখের ধার মুছে নিয়েছে সে। ডাক্তার প্রেশার মেপে বেরিয়ে যাওয়ার পর জহিরুল ইসলাম নাহিদাকে কাছে ডাকলেন। নাহিদা এসে পাশে বসলে জহিরুল ইসলাম অপরাধী মনোভাবের সাথে বললেন,
– পারলে ক্ষমা করে দিও মা। বুঝতে পারিনি দুধকলা দিয়ে কালসাপ পুষেছি। না জেনে না বুঝে তোমার জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছি আমি নিজ হাতে! খুব বড় আশা নিয়ে হাত পেতেছিলাম তোমার বাবার কাছে। তোমার বাবা তো আমাকে ফিরিয়ে দেয়নি। আমার পরিবারে তোমাকে পাঠিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছিলো আমার খালি হাত। কিন্তু দেখো, কি হতবাগা আমি! পারলাম না তার সেই মর্যাদা রাখতে! সুন্দর জীবনটাকে নষ্ট করে দিলাম!
মেহেদীর ভেতরটায় সইছে না বাবার কষ্ট! সবদিক থেকে আজ নিরুপায় এবং তুচ্ছ মনে হচ্ছে নিজেকে! জহিরুল ইসলামের উক্তিত নাহিদা অশ্রুসিক্ত লোচন মুছে বললো,
– এসব কি বলছেন বাবা! এতে আপনার কোনো দোষ নেই। আপনার মতো বাবা দুনিয়াতে দু-একটা খুজে পাওয়া দুষ্কর। তাছাড়া আমার ভাগ্যে লেখা ছিলো সবটা। তারই স্বীকার আজ।
– সব ভাগ্যের লিখন না রে মা! অধিকাংশই আমাদের নিজ হাতে গড়া! পরীক্ষা নিতে আল্লাহ স্বাধীনভাবে চলাচলের বোধশক্তি দিয়েছেন তো আমাদের মাঝে! সেই বোধশক্তির অপব্যবহার করেই ঠেলে দেই আমরা ভাগ্যের নামে।
একটুও ভালো লাগছে না বাবার মুখে এমন সব কথা শুনতে। মেহেদী বেরিয়ে গেলো কেবিন ছেড়ে। অত:পর ডাক্তারের সাথে কথা বললো বাবার বর্তমান অবস্থা জানার জন্য। ডাক্তারের সাথে কথা শেষ করে মেহেদী ম্যানেজারকে কল করে জিজ্ঞাসা করলো,
– আংকেল, ডিল কি ক্যান্সেল করে দিয়েছেন?
– না। কেন?
– ক্যান্সেল করার প্রয়োজন নেই। আমি আসছি মিটিংয়ের জন্য।
– আমিও ভাবছিলাম তোমাকে কল করবো। স্যার তো মনে হলো রেগে বলেছেন। কিন্তু সময় কি আর কারো রাগ দেখে বসে থাকবে! বললেও তো হঠাৎ করে এভাবে কাজ থামিয়ে দেওয়া যায় না। কখন আসবে তুমি?
– এইতো, এখন রওনা দিবো।
– আচ্ছা।
আসিফকে বলে মেহেদী চলে গেলো অফিসে। মিটিং শেষ হতেই আবার হসপিটাল চলে এলো। ওদিকে দুদিন ধরে আসিফের কাজকর্ম বন্ধ যাচ্ছে। তাই মেহেদী এলে আবার আসিফ চলে গেলো দুপুরের দিকে। মেহতাজ আয়াশকে তার দাদুর কাছে রেখে আরিশাকে নিয়ে হসপিটালেই আছে। আরও একদিন হসপিটালে কাটিয়ে তারা আজ বাসায় ফিরেছে। গত দিনগুলোতে জনশূন্য বাড়ি যেন এলোমেলো হয়ে আছে! তারা বাড়ি ফেরার আগেই নাহিদা বাড়িতে এসে সব ঠিকঠাক করে নিলো। এর আগেও গোসল ও রান্না করে নিয়ে যেতে এসেছিলো একবার , সেদিন কুরআন শরীফ সে জায়নামাজের উপর রেখে গেলেও তখন বাড়ি ফিরে সেটা ওয়ারড্রবের উপর দেখেছে। মেহেদীই রেখেছিলো নিশ্চয়ই!
জহিরুল ইসলাম বাড়ি ফেরার পর নিয়াজ উদ্দিন ও রুমানা বেগম এসে দেখে গেছেন। বাবামায়ের কাছে নাহিদা শুনতে পেলো ওদিকে আবার ইমরান দুদিন আগে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে! পরপরই নাফিসার সাথে কথা বলেছে নাহিদা। চারিদিকে এতো বিপদ-আপদ ছড়িয়ে আছে, কোনো দিক থেকে যেন একটু বিশুদ্ধ শ্বাস গ্রহণের সুযোগ নেই!
সন্ধ্যায় ম্যানেজার কল করেছিলেন অফিসের একটু প্রয়োজনে। তখন জহিরুল ইসলাম প্রায় ধমকে বললেন, “আপনাকে না বললাম কাজ এগিয়ে না নিতে! অর্ডার কেন নিলেন! দেনাপাওনা মিটিয়ে সব বন্ধ করে দিন। কোম্পানি চালনার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। পার্টনারস কে ডাকুন, তাদের হাতে বুঝিয়ে দিয়ে আমি লিভ নিবো।”
নাহিদা ও মেহেরুন পাশেই ছিলো। মেহেদীও রুমের বাইরে থেকে শুনেছে বাবার গলা। ফোনে কথা বলা শেষ করলে নাহিদা সাহস যুগিয়ে কিছু প্রস্তাব রাখার চেষ্টা করলো। এতোটা সাহস হচ্ছে না তবুও ধ্বংসের হাত থেকে বেচে উঠতে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতস্তত বোধ করে বললো,
– বাবা, একটা কথা বলবো?
– হ্যাঁ, বলো?
– আমি যদি বুঝে নেই অফিসের কাজকর্ম?
প্রস্তাব রেখে নাহিদার বুক ধুকপুক করছে। জহিরুল ইসলাম ও মেহেরুন দুজনেই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। নাহিদা দৃষ্টি নিচের দিকে রেখে আবার বললো,
– এভাবে সব শেষ করে দিলে বাকি জীবন চলবে কি করে! পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে এতোটা না ভেবে আমরা যেকোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফেলি। পরে আবার তা নিয়ে আফসোস করি৷ চোখের সামনে সব তো আর জলে ভেসে যেতে দেখা যায় না! তাই বলছিলাম…
– বলেছো, তাতে তো খুশি হয়েছি। কিন্তু এতোটা ভারি কাজ কি তুমি পারবে! তাছাড়া বাবা থাকতে মেয়ে ভার বহন করে সেটা কেমন দেখায় তুমিই বলো?
– কেমন দেখায় সেটা দেখলে তো চলবে না, বাবা! বাচার জন্য যেকোনো পথ খুজতে মানুষ প্রস্তুত। কেননা এটা সবাই জানে, হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে মুখে অন্ন আসবে না। তার জন্য প্রচেষ্টা থাকতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। তাছাড়া মেয়েরাও তো কোনোদিকে পিছিয়ে নেই। তাহলে সেখানে আমি এগিয়ে গেলে সমস্যা কি?
মেহেরুন বললেন,
– নাহিদা কিন্তু ঠিক বলছে। তুমি কাজের সম্পূর্ণ ভার তাকে না দাও, নিজেকে স্বাবলম্বী করার সুযোগ তো দাও। এমনিতেই তো দুঃস্বপ্ন দেখে মেয়েটাকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছি। এখন কার উপর তার দায়ভার তুলে দিবে যদি তাকেও নিজের পায়ে দাড়াতে না দাও?
– বুঝতে পারছি তোমার কথা, কিন্তু আমি চাইলেই তো সবটা হয়ে গেলো না! নিয়াজ উদ্দিন ভাইয়ের সাথে কথা বলতে হবে আমাকে।
নাহিদা বললো,
– বাবাকে এ নিয়ে কিছু জানানোর দরকার নেই। এখন বলতে গেলে পূর্বের ঘটনা জানাতে হবে বাবা। আর সংঘঠিত ঘটনা জানতে পারলে তিনিও আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এর চেয়ে কিছু না জানানোই ভালো। তবে আমি এটা নিশ্চিত, বাবা কখনোই নিষেধ করবে না ভালো কাজে অগ্রসর হতে। আমারও খুব ইচ্ছে নিজেকে কোনো কর্মের সাথে যুক্ত রেখে অবসর সময় কাটানোর।
– আচ্ছা, ভেবে দেখবো।
হঠাৎ করেই মেহেদীর আগমন! দরজার সামনে থেকেই জেদি কন্ঠে বললো,
– আমি কি মরে গেছি? অফিসের দায়দায়িত্ব সামলে নিতে পারবো, এইটুকু ভরসা রাখতে পারছো না আমার উপর! বারবার বলছি নিজেকে শুধরে নিবো তাও কেন কেউ বিশ্বাস করতে চাইছো না? বলছিতো সংসার পুরোপুরিভাবে সামলে নিবো, মানছো না কেন?
কেউ কোনো উক্তি রাখলো না তার প্রতুত্তরে! জহিরুল ইসলাম মুখ ফিরিয়ে নিলেন, নাহিদা চুপচাপ বেরিয়ে গেলো কিচেনের উদ্দেশ্যে, আর মোহিনীও চোখ মুছতে মুছতে স্বাভাবিকভাবে বললো,
– রাতে ভাত খাবি নাকি রুটি খাবি?
সকলের এমন অবহেলা দেখে মেহেদী জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেলো ঘরের বাইরে। তিন-চার মিনিট বাইরে কাটিয়ে আবার নিজের রুমে এসেই বসে রইলো। এভাবে জেদ করে বাইরে সময় কাটালে চলবে না। পরিবারে তাকে প্রয়োজন। কখন কি ঘটে যায় বলা দুষ্কর! যেমনটা সেদিন ঘটেছিলো! কোনো পুরুষের অনুপস্থিতিতে কিভাবে তারা সবটা সামলে নিয়েছে তারাই জানে! এখন সে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সকলকে খুশি করতে। হোক সেটা অবহেলার মাধ্যমেই, কিন্তু হাল ছাড়বে না।সেদিনের পর থেকে সে-ও কাদছে কিন্তু তার অশ্রু গাল গড়ায় না সবসময়! যদিও মনে রক্তপাত হয় কিন্তু অশ্রু অদৃশ্যমান!
রাতে খাওয়ার জন্য ডাকতে মেহেরুন রুমে এলো। খাটের মাঝামাঝিতে কপালে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে মেহেদী। মেহেরুন দরজার সামনে থেকেই বললো,
– মেহেদী?
মেহেদী কপাল থেকে হাত সরিয়ে তাকাতেই মেহেরুন বললো,
– ভাত খেতে আয়।
– ভালো লাগছে না, খাবো না।
মেহেরুন এক পলক তার চোখে তাকিয়ে বললো,
– তা খাবি কেন? ভাতে কি আর ওসবের স্বাদ পাওয়া যায়!
কথাটুকু বলে আর এখানে অপেক্ষা করেনি মেহেরুন। কিন্তু মেহেদীর গায়ে লেগেছে কথাটা! বেশ বুঝতে পারছে এখন তার ভালো লাগা আর না লাগারও মূল্য নেই কারো কাছে! বারবার একই কথা শুনতে হবে। ভাবতে ভাবতে ভালো না লাগলেও সে চলে এলো ভাত খেতে। জহিরুল ইসলামের ওষুধপত্র এগিয়ে দিয়ে এসে টেবিলে মাত্র প্লেটে খাবার নিয়ে বসেছিলো নাহিদা। মেহেদীকে টেবিলের দিকে আসতে দেখে আর ভাতে হাত লাগালো না। বসে আছে চুপচাপ। যখন দেখলো মেহেদী বেসিন থেকে হাত ধুয়ে এসেছে তখন সে প্লেট নিয়ে মেহেদীর খাবার বেড়ে দিলো। যে যার মতো চুপচাপ খাওয়া শেষ করে উঠে পড়লো। নাহিদা সবকিছু গুছিয়ে রেখে মেহতাজের রুমে চলে গেলো। তার খুব উপকার হলো মেহতাজ বাচ্চাদের দুষ্টুমির জন্য বাসায় না আসায়। তা না হলে নাহিদাকে ড্রয়িংরুমে থাকতে হতো। মেহেদীর কাছে তো সে কখনোই যাবে না! এটা যেহেতু নিকটবর্তী রুম সেহেতু সকলের নজর এড়িয়ে এখানে থাকা যাবে।
বেশ কিছুক্ষণ হয়েছে রুমে এসেছে। কিন্তু ঘুম নামছে না মেহেদীর চোখে! গতদিন গুলোতে তার সাথে ঘটা এবং ডাক্তারের বলা বাবার অসুস্থতার কথা সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে! ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো সাড়ে এগারোটা বাজে। নাহিদা কি এখনো কাজ করছে! তা দেখার জন্য সে বিছানা ছেড়ে নেমে বেরিয়ে এলো। রুমের বাইরে কাউকে চোখে পড়লো না। ড্রয়িংরুমে উঁকি দিয়ে আবার কিচেনে উঁকি দিলো। কিন্তু কেউ নেই। তাহলে কি মায়ের রুমে বসে গল্প করছে? সেই রুমও তো বন্ধ! হয়তো একা একা সময় কাটাচ্ছে ওদিকটায়, তা ভেবে শেষ প্রান্তের ফাকা রুমটাতে উঁকি দিয়েও কাউকে পেল না। বাকি রইলো মেহতাজের রুম। মেহেদী দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে অন্ধকার রুম আলোকিত করলো। নাহিদাকে কাথা মুড়ে খাটে ঘুমাতে দেখে মেজাজ খারাপ করে সে লাইট অফ করে ঠাস করে দরজা চাপিয়ে নিজের রুমে চলে এলো।
লাইটের আলোতে কোনো উপলব্ধি না হলেও দরজা লাগানোর শব্দে নাহিদার কাচা ঘুম ভেঙে গেছে।
কিসের শব্দ হতে পারে!
চোর টোর আসেনি তো!
লাইট জ্বালিয়ে বিষয়টি বুঝার জন্য সে ভয়ে ভয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। বাইরে কাউকে না পেলেও তাদের রুমে মেহেদীকে বসে পানি পান করতে দেখে বুঝে নিলো, তাহলে সে-ই ছিলো এমন শব্দকারী। তাই আবার নিশ্চিন্ত হয়ে ঘুমাতে চলে গেলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here