“তৃ-তনয়া” পর্ব- ৯৬

0
2351

“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ৯৬
(নূর নাফিসা)
.
.
সকালে নামাজ পড়ে মেহেদী আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে এখনো ঘুম ভাঙেনি তার। মেহেরুনের সাথে রান্না শেষ করে নাহিদা রুমে এসেছে তাকে ডাকতে। বেশ কয়েকবার ডাকলো কিন্তু মেহেদী উঠছে না! তাকে ঠেলে ঠেলে ডাকলো তা-ও উঠছে না! তার চেহারার ভঙ্গি দেখে নাহিদার মনে হচ্ছে সে এতোক্ষণে জেগে গেছে ঠিকই কিন্তু চোখ খুলছে না। তাই নাহিদা এবার তার নাক চেপে ধরলো। তাতেও লাভ হলো না! কেননা মেহেদী ঠোঁট জোড়া একটু ফাঁক রেখে ঘুমায়। এবার সে নাকের পাশাপাশি অন্যহাতে ঠোঁটও চেপে ধরলো। এবার মেহেদী নাহিদার হাত সরিয়ে হেসে উঠলো এবং চোখ খুলে আড়মোড়া ভাঙার ভঙ্গিতে মোচড় দিয়ে নাহিদার কোলে মাথা রেখে শুয়ে রইলো। অত:পর পেটে একটা চুমু দিয়ে বললো,
– এতো দেরী লাগে কেন!
– কিসের দেরী!
– বাবু কোলে নেওয়া নাকি আরও অনেক দেরী!
– ইশ! ওঠো, আটটা বেজে গেছে।
– এই জামা পড়ো কেন এখনো? ই না এনে দিলাম, ওই যে কি যেনো বলে! মেক্সিকো নাকি কি যেনো।
নাহিদা হেসে উঠলো এবং বললো,
– যখন পড়া প্রয়োজন হবে তখন পড়বো। ওঠো তো!
– স্যারের কাছে আরেকটা আবেদন করতে হবে, সপ্তাহে তিনদিন অফিস করবো।
– একদম না। আমিও তোমার স্যারের কাছে উল্টো আবেদন করবো যাতে সপ্তাহে সাতদিন তোমাকে কাজে লাগিয়ে রাখে।
– একদমই পাষাণ তুমি। আমার মতো অসহায় একজন বাবার উপর একটুও মায়া হয়না তোমার!
– না হয়না৷ ওঠো। নতুবা তোমার স্যারকে পাঠাবো বেত নিয়ে আসতে।
মেহেদী চুপচাপ তাকিয়ে আছে তার চেহারায়৷ কখনো চোখে, কখনো, ঠোঁটে, কখনো নাকে, কখনো গালে আবার কখনো থুতনিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে! খুবের চেয়েও খুব বেশি অসস্তি ও লজ্জা লাগে তার এই দৃষ্টি! নাহিদা মেহেদীর চোখের উপর হাত রেখে ঠোঁট ছুয়ে দিলো। এরপর হাত সরিয়ে নিলে মেহেদী ওঠে বিছানা ছাড়তে ছাড়তে বললো,
– পা তো একদমই চলছে না এখন আর!
নাহিদা তাকে বাথরুমের দিকে ঠেলে দিয়ে বললো,
– গোসল করলে সব চলবে।
মেহেদী গোসল করে এলে নাহিদা ডাইনিং টেবিলে খাবার দিয়ে রুমে এলো।
– খাবার দিয়েছি। যাও।
– খেয়েছো?
– উহুম।
– একসাথে খাবে চলো।
– ভার্সিটি যাবো ভাবছিলাম।
– সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুইদিন। এ সপ্তাহে দুইদিন যাওয়া হয়েছে। আবার আগামী সপ্তাহে।
– তুমি কি শপিংমলে যাবে এদিকে?
– কেন?
– ভাবছিলাম নাফিসাকে একটা বোরকা গিফট করবো। ওরকম একটা বোরকা এনে দিতে পারবে?
– ওকে। সাইজ কত?
– ৫৬।
– আরো কিছু?
– উহুম।
– নাফিসাকে গিফট করবে, আপুকে করবে না?
– আপু তো পড়ে না এসব।
– তুমি গিফট করলে ফেলে দিবে?
নাহিদা আর কিছু বললো না। বিকেলে মেহেদী বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে আবার ঘুরতে বেরিয়েছে। ইশারের সময় ফিরেছে হাত শপিং ব্যাগ। চারটা বোরকা এনেছে। মেহতাজ, নাজিয়া, নাফিসা আর নাহিদার জন্য আরও একটা। ডিজাইন একই কিন্তু কালার ভিন্ন। তবে ডিজাইনটা আগেরটার মতো না। রাতে খাওয়ার সময় মেহতাজ কল করেছে। প্রতিদিনই এসময় কল করে কিন্তু আজ তাদের ডিনার করতেই একটু লেট হয়েছে। লাউড স্পিকারে রেখে বাবা-মা কথা বলছে আয়াশ আরিশা ও মেহতাজের সাথে। মেহেদীর কথা জিজ্ঞেস করে মেহতাজ বললো,
– মেহেদী কোথায়?
– হুম, বলো?
– কি ব্যাপার! কল করে তাড়াহুড়োর মাথায় হঠাৎ বোরকার সাইজ জানতে চাইলি!
– টেইলরের কাজ শিখে গেছি তাই ভাবছি বোরকা বানিয়ে দিবো তোমাকে।
– ওরে বাবা! তুই আর টেইলর!
এদিকে জহিরুল ইসলাম জবাব দিলো,
– টেইলর! সবাইকে কল করে বোরকার সাইজ জিজ্ঞেস করে আর আমাকে কল করে তার একাউন্ট ব্যালেন্স শেষ তা ইনফর্ম করে! কই একবারও তো বললো না, “আব্বু তোমার পাঞ্জাবীর সাইজ কত!”
মেহেদী বিষম খেয়ে বললো,
– পাঞ্জাবী লাগবে তোমার! যাও, ঈদের সময় পাঞ্জাবীর সাথে লুঙ্গি ফ্রী। শুধু আমার একাউন্টটা ফুলফিল রেখো।
– সেই তো আমাকেই টানলে না!
সবাই হেসে উঠলো তাদের কান্ডে! বাকিটা সময়ও গল্পগুজবের সাথেই খাওয়া শেষ করলো।
এক্সাম দিয়ে এসে নিশাত রাতেই বইটা পড়ে ফেললো। এক্সাম শেষ হওয়া পর্যন্ত এতো ধৈর্য সে ধারণ করতে পারছে না। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় তার মনের ভেতর উশখুশ করছে। হতেও পারে এই উশখুশের জন্য তার লাস্ট এক্সামে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে! তাই সে উশখুশ বন্ধ করতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে ফেললো। সন্ধ্যায় পাঠ্যবই পড়ে ইশারের পর থেকেই পড়া শুরু করেছে। রাত সাড়ে বারোটার সময় শেষ করেছে। মায়ের রুমেই ছিলো সে, কিন্তু মা ভেবেছে পাঠ্যবই ই পড়ছে! যদিও মনে মনে পড়ছে বিধায় আবিদা বেগম জিজ্ঞেস করেছিলো সে বই পড়ে নাকি ঝিমায়! তখন সে বলেছিলো জোরে পড়তে ইচ্ছে করছে না তার।
কিন্তু পড়া শেষেও তার চোখে ঘুম নেমে আসেনি! কেননা গল্পের মর্মার্থটা বুঝেছে সে। গল্পের নামটাও বুঝেছে এবার। এটা হচ্ছে এক রাজকুমারের গল্প! যে ভালোবেসেছে কোনো এক প্রাসাদ পরিচারিকার মেয়েকে। রূপে নয়, মেয়ের গুণে মুগ্ধ হয়েছিলো সে! মন থেকে খুব করে চাইতো তাকে! কিন্তু পাওয়ার সুযোগ ছিলো না! পিতার কাছে প্রস্তাব করার পর পিতা তো প্রস্তাব গ্রহণ করেইনি, উল্টো পরিচারিকাকে কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে এবং রাজ্য ছাড়া করে বনবাসে পাঠিয়ে দিয়েছে। রাজার অজান্তে রাজকুমার বেশ খুঁজে খুঁজে প্রায় অনেকদিন পর তার দেখা পায়। কিন্তু সেই মেয়েটি তখন গর্ভবতী! পাশের রাজ্যের এক তাতির সাথে বিয়ে হয়েছে তার। দুজনেই সুখী পরিবারে বসবাস করছে। যদিও মানতে পারছিলো না রাজকুমার, তবুও মেনে নিতে বাধ্য! অত:পর সেই রাজকুমার, সেই মেয়ের মায়া নিয়েই কাটিয়েছে অনন্তকাল! বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা সকল রাজকন্যার বিয়ের প্রস্তাব সে প্রত্যক্ষভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। এটাই ছিলো গল্পের মূল প্রেক্ষাপট। রাজকুমারের অনন্তকাল কুমার রয়ে যাওয়া থেকেই গল্পের নামকরণ করা হয়েছে অনন্ত রাজকুমার!
নিশাতের মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো! সে নিশ্চিত আশিক এজন্যই তাকে বইটা দিয়েছে কারণ সে জানে নিশাত তার প্রতি দুর্বল। আর এই বইয়ের মাধ্যমেই সে দুর্বলতা কাটিয়ে তাকে প্রত্যাখ্যান করতে চাইছে! এই ভেবে নিশাতের ভেতরটা ভারি হয়ে এলেও বাইরে সে স্বাভাবিক! কিন্তু নিজেকে শক্ত রেখে ভেতরটা হালকা করতে তার অনেকটা সময় লেগেছে। যার ফলে ঘুমিয়েছে দেরীতে আর ঘুম ভেঙেছেও দেরীতে। মা, বড়মা কয়েকবার ডাকলো কিন্তু সে এপাশ ওপাশ করে আবার ঘুমিয়ে গেছে! নাফিসা ইমরান বাড়ি ফিরলে তাদের কণ্ঠ সাথে জিহানের হৈ-হুল্লোড়ের কারণে ঘুম ভেঙেছে তার। রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে চোখ ডলতে ডলতে! জিহানের জন্য রিমোর্ট কন্ট্রোল গাড়ি এনেছে ইমরান। ইমরানের সাহায্যে জিহান তা চালাচ্ছে আর গাড়িতে গান বেজে চলছে! ইমরান নিশাতকে দেখে বললো,
– বাহ! মহারানী এতোক্ষণে ঘুম থেকে উঠেছে!
নিশাত চেয়ার টেনে বসে বললো,
– দিনাজপুর থেকে কি এনেছো আমার জন্য?
– কেন, আমরা এসেছি তাতে খুশি হসনি?
নিশাত কিছু বলতে যাবে তার আগেই জিহান এক জুতা এনে নিশাতের কোলে দিলো আরেক জুতা সে পড়ে ঘরে হাটতে লাগলো! নাফিসা হেসে উঠলো তার কান্ড দেখে! আর নিশাত জুতা পায়ে দিয়ে দেখলো তার পায়ের মাপের তখন উৎফুল্ল হয়ে বললো,
– ওয়াও! ভেরি নাইস! তুমি এনেছো না ভাবি? থ্যাংক ইউ সো মাচ!
– ইনকাম করি আমি আর ক্রেডিট তোর ভাবির!
– ইনকাম যার তার! পছন্দ ভাবির ছিলো, আ’ম শিওর! কেননা তুমি পাম সো ছাড়া অন্য কোনো জুতা আমাকে কিনে দাও না!
– ওটাই তো ভালো! একটু বড় কিংবা ছোট হলেও মানিয়ে নেওয়া যায়!
– হুহ! যেন এক জুতোতে জীবন পার করবো যে বড় ছোট হবে!
– ব্রাশ কর গিয়ে! খাটাশনী!
তাদের ভাইবোনের কথা কাটাকাটি চললেও নাফিসা চলে গেছে গোসল করতে! কখন একটু ঘুমাতে পারবে সেই প্রচেষ্টায় আছে সে। এরপরই খেয়েদেয়ে ইমরানসহ সে লম্বাটে ঘুম দিলো। সাথে ইমরানের গলা ঝাপটে জিহানও।
ঘুম ভাঙলো ইমরানের ফোনের শব্দে। কল করেছে কেউ। ইমরান রিসিভ করে কথা বললো। অত:পর ফোন রেখে দেখলো নাফিসা তাকিয়ে আছে। জিহান এখনো ঘুমাচ্ছে। সে জিহানকে ছাড়িয়ে দুজনকে টপকে নাফিসার ওপাশে চলে গেলো। নাফিসা হাই তুলছে আর ওদিকে যোহরের আযান পড়ছে। ইমরান বললো,
– হয়েছে না ঘুম? ওঠো এবার।
নাফিসা চুপচাপ শুয়েই রইলো সাথে ইমরানও। ঘুরাঘুরি করে শরীর যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে যার ফলে উভয়েই আলসেমি করছে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে নাফিসা ইমরানকে বললো,
– আমাকে একটা বাদুড় কিনে দিও তো।
ইমরান ব্রু কুচকে বললো,
– কিহ!
– বাদুড়, বাদুড়।
– বাদুড় দিয়ে কি করবে! আর কিনতে পাওয়া যায় না-কি!
– শপিংমলে অভাব নাই!
– শপিংমলে বাদুড়!
– আরে! ওইযে এক প্রকার বোরকা আছে না, হাত মেললে যে বাদুড়ের মতো ডানা ছড়ায়? ওইটা।
ইমরান শরীর কাপিয়ে হেসে বললো,
– আমি তো ভাবছি তোমার বুঝি মুরগী পালনের মতো বাদুড় পালনের শখ জেগেছে!
নাফিসা তার দুই গাল টেনে বললো,
– এতো বেশি বেশি ভাববে কেন! হুম! একেবারে নাকমুখ টেনে বিড়াল বানিয়ে দিবো।
ইমরান তার হাত টেনে নিয়ে আঙুলে কামড় বসিয়ে দিলো!
সেই যে দুপুরের পর লাঞ্চ করে বেরিয়েছে, সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়ে ইমরান ঘরে এসেছে। নাফিসা ঘরেই বুকসেল্ফ গুছিয়ে নিচ্ছিলো। ইমরান ঘরে প্রবেশ করতে করতে বললো,
– সুপ্রিয় শ্রোতামন্ডলি, আমরা এখন অবস্থান করছি হোসাইন মঞ্জিলে ইমরান হোসাইনের কামরায়। আপনারা জানেন যে গত ছয়দিন যাবত মিস্টার ও মিসেস ইমরান ঢাকার বাইরে ভ্রমণ করে এসেছে। ভ্রমণ শেষে আজ সকালেই তারা নিজ আবাসস্থলে ফিরে এসেছে। তো চলুন আমরা জেনে নেই দিনগুলো তারা কেমন উপভোগ করলো। মিস্টার ইমরানকে দেখা যাচ্ছে না তবে মিসেস ইমরান আমার সামনেই আছে। তো শ্রোতামন্ডলি, চলুন আমরা মিসেস ইমরানের মুখেই শুনি।
নাফিসা প্রথমে চমকে উঠলেও এবার বিড়বিড় করতে করতে নিজের কাজে মনযোগ দিলো। ইমরান দরজা চাপিয়ে তাৎক্ষণিক নাফিসাকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে মুখের সামনে ভুট্টা ধরলো! আর নাফিসা চোখ বড় করে ভয়ে একটু পিছিয়ে গেলো! সে খেয়ালই করেনি ইমরানের হাতে ভুট্টা ছিলো! যার ফলে হঠাৎ দেখাতে একটু ভয় পেয়ে গেছে! এখন ইমরান আবার বলতে লাগলো,
– তো মিসেস ইমরান, বলুন কেমন কাটলো আপনার দিনক্ষণ! আর কি কি উপভোগ করলেন? কাইন্ডলি আপনার ফিলিংসটা শেয়ার করুন আমাদের সাথে।
নাফিসা ভুট্টা সরিয়ে দিয়ে বললো,
– পাগলছাগল! ছাতার মাথা!
ইমরান আবার তার মুখের সামনে ভুট্টা ধরে বললো,
– পাবনাতে পাগলের উপদ্রব বেশি, সেটা আগে থেকেই জানা ছিলো। আজ নতুন করে জানলাম দিনাজপুরেও এর প্রভাব রয়েছে। তাও আবার ছাগলের মাঝে! ধন্যবাদ নতুন কিছু জানানোর জন্য। কিন্তু ছাতার মাথাটা ক্লিয়ার না! গত দিনগুলোতে কি বৃষ্টি হয়েছিলো? যার ফলে আপনাকে মাথার উপর ছাতা নিয়ে বেড়াতে হয়েছে!
– আমি মাথার ছাতা বলিনি, ছাতার মাথা বলেছি!
– ওহ! আমি ভাবলাম মাথার ছাতা! যাক, ছাতার মাথা কেন বললেন? এ নিয়ে নিশ্চয়ই কোনো ঘটনা আছে?
ইমরানের মাঝে এখন তাকে বিরক্ত করার ফুটন্ত মনোভাব বুঝতে পেরে নাফিসা এবার তার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,
– হ্যাঁ, অবশ্যই!
– কি সেটা? আমরা জানতে ইচ্ছুক।
– মানুষ সাধারণত বৃষ্টির জন্য ছাতার হাতলে ধরে মাথার উপর রাখে। ভ্রমণরত অবস্থায় বৃষ্টির অভাবে আমি ছাতার হাতল আকাশমুখী রেখে ছাতার মাথার দিকে ধরে ভ্রমণ করেছি। ক্লিয়ার?
– ওয়াও! ফ্যান্টাস্টিক! আপনার কথা শুনে সিছিমপুরের হালুমের ঘটনা মনে পরে গেলো! যে কি-না ছাতা উল্টো করে বৃষ্টির পানি জমা করতো!
– হ্যাঁ, আমিও তাকে মনে করেই মাথায় ধরেছিলাম সৌরবিদ্যুৎ সংগ্রহ করতে।
– দারুণ! দারুণ! দেশের সম্পদ বৃদ্ধির কাজে আপনার পদক্ষেপ জটিল! আশা করি অতি শীঘ্রই বিদ্যুৎ এর সরবরাহ অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। দেশে লোডশেডিং বলতে কিছু থাকবেই না! তা এবার আমাদের মূল কথায় আসি। আমরা আপনার ভ্রমণ অনুভূতিটা জানতে চাচ্ছি! ঠিক কোন মুহূর্তে আপনি কেমন ফিল করেছেন?
– যখন ট্রেনে যাত্রা করছিলাম, ঝকাঝক অনুভব করেছি! যখন যানবাহনে চলছিলাম, পিপ পিপ অনুভব করেছি! যখন খা খা রোদ্দুরে রাস্তায় হেটেছি, ঠকঠক অনুভব করেছি! যখন ঘুমিয়েছি, মিও মিও অনুভব করেছি! যখন জেগেছিলাম, চূড়চূড়ে অনুভব করেছি! যখন মাঠেবনে ঘুরেছিলাম, ফুরফুরে অনুভব করেছি! যখন খেয়েছিলাম কুড়মুড়ে অনুভব করেছি! যখন হাতি দেখেছি দূর দূরে অনুভব করেছি! যখন ফিরে আসছিলাম মুড়মুড়ে অনুভব করেছি! আর এখন, একটা কুট্টুসকে অনুভব করছি! ভেবেছিলাম নিয়মিত টক শো দেখা কোনো এক পাগল বুঝি এসে হাজির হয়েছে আমার রুমে! কিন্তু না, তিনি হচ্ছেন আমার হবু পাগল সে!
কথাটা বলেই ভুট্টা ইমরানের মুখের দিকে ঠেসে দিলো নাফিসা। ইমরান হেসে ভুট্টা নামিয়ে নিতেই নাফিসা হেসে তার গলা জড়িয়ে ধরলো! এবং শরীরের অর্ধেক ভার ছেড়ে দিলো ইমরানের উপর। ইমরান বললো,
– আরে আরে! হচ্ছেটা কি! শ্রোতামন্ডলি শুনে ফেলছে কিন্তু সব!
– ওই, কিসের শ্রোতা! আর শুনবেই বা কি! আমি কিছু বলছি নাকি! একদম চুপ! কোনো কথা হবে না এখন!
– মিস্টার ইমরান…. প্লিজ হেল্প…! ইউর মিসেস শুড কিল মি বাই সামথিং সামথিং!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here