“তৃ-তনয়া”
পর্ব- ৯৮
(নূর নাফিসা)
.
.
গিফটের কথা মনে হতেই রাতে প্যাকেটটা খুললো নাফিসা। বোরকা গিফট করেছে নাহিদা, তা দেখে ভীষণ খুশি। এদিকসেদিক ঘুড়িয়ে দেখছে, ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে তার সাথে জড়িয়ে দেখছে। তারটাও কফি কালার। কিন্তু নাহিদার সেই বোরকা থেকে ডিজাইন ভিন্ন। ইমরান রুমেই ছিলো। সে ইমরানের সামনে দাড়িয়ে বললো,
– দেখো, সুন্দর না?
ইমরান বই থেকে চোখ সরিয়ে বোরকার চেয়ে বেশি দেখলো নাফিসার চেহারায় ভেসে উঠা উৎফুল্লতা। সে আবার বইয়ে তাকিয়ে বললো,
– হুম।
তার মুখভঙ্গি এবং এমন মন্তব্য নাফিসার মোটেও পছন্দ হলো না! তাই সে বললো,
– এমন পেঁচার মতো মুখ করে বলার কি আছে! হুহ্!
ইমরান কিছু না বলে নিজের পড়ায় মনযোগ দিলো। নাফিসার একটু খটকা লাগলো তার আচরণ! সে এমন কেন করলো সেটাই ভাবছে নাফিসা! বোরকা খাটের একপাশে রেখে ইমরানের হাত থেকে বই নিজের হাতে নিয়ে মেলে রাখা দুই পায়ের উপর বসে বললো,
– রাগ করে আছো কেন?
ইমরান দুইহাত গুটিয়ে খাটে হেলান দিয়ে বললো,
– কই?
– তাহলে এভাবে কথা বললে কেন?
– আমি তো তেমন কোনো কথাই বললাম না!
– সেটাই তো জানতে চাইছি, বললে না কেন?
– পাগল হয়ে গেছো? একবার জানতে চাইছো কথা বললাম কেন! আরেকবার জানতে চাইছো বললাম না কেন!
– আমি যেমনতেমন, তোমার কিছু হয়েছে। সেটা ক্লিয়ার করো আমাকে।
– কিছু হয়নি আমার। নিজে তো পড়োই না, আমার পড়ায়ও ডিস্টার্ব করছো!
– এরিয়ে যাচ্ছো না আমাকে?
– আশ্চর্য! কিছু হয়নি, বললাম তো! শুধু দেখলাম কারো গিফট পেয়ে তুমি যে কতটা খুশি হতে পারো।
– এটা তো সবাই হয়। গিফট পেলে আমি বরাবরই অনেক অনেক খুশি হই।
– হবেই তো! ধনী পরিবার থেকে দামী গিফট এসেছে যে!
– গিফটে দামী আর কমদামী কি! একটা চকলেট হলেও এতোটাই খুশি হতাম।
– হয়তো হতে। কিন্তু আমি গিফট করলে নিশ্চয়ই হতে না। একটা না একটা উশখুশ থাকবেই আমার গিফটে। যাইহোক, আপুকেই যেহেতু বলেছো কিনে দিতে তো আমাকে আবার বললে কেন? নাকি আমি সাথে সাথে কিনে দিতে পারিনি দেখে আপুকে কিনে দিতে বলেছো? কোনটা?
ইমরানের মাঝে এমন হিংসে মাখা প্যাচ ধরতে পেরে নাফিসা হতবাক হয়ে গেছে! ইমরান তার হাত থেকে বই নিতে চাইলে নাফিসা বই সরিয়ে বললো,
– তুমি এতোটা নিচ কিভাবে ভাবতে পারো আমাকে! আমি তোমার কাছে চাইছি বলে কি আপুদের কাছে চাইবো!
– না চাইলে আপু জানলো কিভাবে তোমার বোরকা প্রয়োজন?
– আমার বোরকা প্রয়োজন ছিলো না এখন। আপু এমন একটা বোরকা পড়ে এসেছিলো সেদিন বাসায়। তখন আপুকে দেখে ভালো লেগেছিলো। বোরকাটা সুন্দর বলে আমি শুধু দামটা জানতে চেয়েছিলাম আপুর কাছে। আপু বলেছে জানে না দাম কত। ভাইয়া এনে দিয়েছিলো। আর কোনো কথাই হয়নি এ নিয়ে! আপুকে দেখে শখের বশে তারপর তো তোমাকেই বললাম এনে দিতে। আজ ভার্সিটিতে এসে আপু আমার হাতে ব্যাগ ধরিয়ে দিলো। নাজিয়া আপুর বিয়ে হয়েছে কত আগে, তার কাছেই আমি এখন পর্যন্ত কিছু চাইলাম না। আর নাহিদা আপুর কাছে যাবো চাইতে! যা প্রয়োজন হয়েছে সবসময় বাবার কাছে বলেছি। আর বিয়ের পর বাবার কাছে বাদ দিয়ে তোমার কাছে। এতেই তুমি এই কথা বলতে পারলে!
– অযথা চোখে এতো পানি আসে কোত্থেকে!
নাফিসা তার কোলে বই রেখে নেমে যেতে চাইলে ইমরান ধরে ফেললো।
– ছাড়ো, পড়বো না আমি এটা। ফেরত দিয়ে দিবো আপুকে।
ইমরান একহাতে চোখ মুছে দিতে দিতে বললো,
– গিফট আবার ফেরত দেয় কিভাবে! আপু কষ্ট পাবে না?
– পাক কষ্ট, কারো কটু কথা শোনার চেয়ে এটুকু কষ্টই ভালো।
ইমরান তাকে নিজের সাথে আরও জড়ো করে বললো,
– মাইর দিবো একটা। দেখোতো, এই বইটাতে কি লেখা আছে।
– জানিনা।
– তাইতো দেখতে বললাম।
– নিজের পড়া নিজে পড়। আমারও বই আছে।
ইমরান নাফিসাকে মুক্তি না দিয়েই নিজের পড়ায় মনযোগ দিলো। নাফিসা তার উপর হেলান দিয়ে আছে। ইমরানের মনোভাব ঠিক হয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করতে নাফিসা তার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
– তুমি এনে দিবে না বোরকা?
ইমরান বই থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো,
– এতো বোরকা দিয়ে কি করবে? আপুই তো দিয়েছে, ওটাই পড়।
– আপু দেক আর না দেক, তোমার কাছে আমি চাইনি?
– কবে যাবে?
– আমি যাবো না। তুমিই নিজের পছন্দে আনবে।
– তারপর আবার বলো, এটা ভালো না, পছন্দ হয়নি, চেঞ্জ করে আনো!
– বলবো না।
– ওকে। বেতন উঠাই, তারপর যাবো।
অত:পর নাফিসা চুপচাপ মিশে রইলো ইমরানের সাথে। ইমরান পড়তে পড়তে একটু পর লক্ষ্য করলো নাফিসা ঘুমিয়ে যাচ্ছে। সে তাকে ঝাকিয়ে বললো,
– আরে! আরে! এই সন্ধ্যায় ঘুম! দিনে ঘুমাওনি! উঠো। আরাম পেয়ে একেবারে পড়ার সময় ঘুমিয়ে যাচ্ছে। যাও বই হাতে নাও৷
– ধুর! খালি ডিস্টার্ব!
ইমরানের ধাক্কায় নাফিসা চোখ কচলাতে কচলাতে নেমে চলে এলো বুকসেল্ফের কাছে।
পরদিন ইমরান ও আরমান অফিস থাকাকালীন বড়মা, নাফিসা ও আরাফ গিয়েছে জেরিনকে আনতে। আবিদা বেগমকে বলা হয়েছিলো কিন্তু আবিদা বেগম যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলো। তাই বাধ্য হয়ে বড়মা ও আরাফের সাথে নাফিসাকেই যেতে হলো। জেরিন খুব খুশি হলেও তার বাবা-মা নারাজ। বাবা তা-ও এ পরিবারের লোকজন দেখে কিছুটা স্বাভাবিক কিন্তু মা একেবারেই নারাজ। তিনি বারবার একই কথা বলে যাচ্ছেন তার মেয়েকে পাঠাবে না। তার এমন জেদের মূল কারণ, ফিরিয়ে নেওয়ার হলে আরমান এলো না কেন! কিন্তু জেরিন তার মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে তৈরি হয়ে যাচ্ছে সে ফিরে আসবে। মেহমানদের খালি হাতে ফিরিয়ে দিলে অসম্মান করা হবে ভেবে এক পর্যায়ে তার বাবাও পারমিশন দিয়ে দিলো। তাছাড়া ধারণা করা যায় বড়মা তার বোন এবং আরাফ ভাগিনা হওয়ায় আর নিষেধ করেনি। তবে আবিদা বেগমের উপর তিনি রাগান্বিত। জেরিনের বাবা তাদের জন্য রান্না করতে বলেছিলো। কিন্তু বড়মা নিষেধ করলো। তারা হালকা খাবার খেয়ে বিকেলের পূর্বেই ফিরে এলো। আরাফ চলে গেছে। স্কুল মিস হলেও তাকে কোচিং-এ যেতে হবে। জেরিনকে দেখে আবিদা বেগম গম্ভীর, নিশাত নিশ্চুপ, জিহান খুশি, জেরিন নাফিসার প্রতি কৃতজ্ঞ আর নাফিসার মনের ভেতর জমা হাজারো ভয়!
বিকেলে কর্তারা বাসায় ফিরেছে। ইমরান সোজা তার রুমে চলে এসেছে আর আরমান বড়ঘরে। জেরিনকে রুমে দেখে যেন তার গায়ে আগুন ধরে গেছে! সে তার সামনে গিয়ে বললো,
– তুই এখানে কিভাবে?
জেরিন ভয়ে নিশ্চুপ হয়ে গেছে! আরমান কোনো জবাব না পেয়ে তার গালে এক থাপ্পড় দিয়ে বললো, “তোর সাহস কি করে হয় আবার এখানে আসার!”
কথাটা বলেই সে তার হাত টেনে রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে। জেরিন তার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বললো,
– আরমান, প্লিজ। আমার কথাটা শুনো। একবার শুনো আমার কথা। বড় মা…
নাফিসা আর আবিদা বেগম কিচেনে ছিলো আর বড়মা নামাজ পড়ে কুরআন পড়ছিলো। তাদের কথাবার্তা শুনে সবাই বেরিয়ে এলো। বড়মা আরমানের হাত ধরে থামিয়ে বললো,
– হয়েছে কি?
– এই মেয়ে এখানে এলো কি করে! তার সাহস কি করে হয় এবাড়িতে পা রাখার।
– হাত ছাড়! আমি এনেছি তাকে।
– কেন? খুব ইচ্ছে করে সাপের ছোবল খেতে? আমি বারবার বলেছি এর জায়গা হবে না এবাড়িতে। তা-ও কেন ঠাই দিলে তোমরা? আমার চেয়ে বেশি আপন সে তোমাদের কাছে?
– মাথা ঠান্ডা কর। অফিস থেকে ফিরেছিস, হাতমুখ ধুয়ে খেয়ে নে তারপর কথা বলছি।
আরমান রেগে হনহন করে রুমে চলে গেলো। শার্ট চেঞ্জ করে হাতমুখ ধুয়ে সে জিহানের একটা টিশার্ট নিলো। জিহান ঘুমাচ্ছিলো। সে ঘুমের মধ্যেই টিশার্ট পড়িয়ে নিলো। অত:পর তাকে কোলে নিয়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। কোলে নেওয়ার সময়ই জিহানের ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো। সে পরিস্কারভাবে চোখ মেলে তাকাতে তাকাতে এতোক্ষণে আরমান বেরিয়ে এসেছে। বড়মা পিছু পিছু ডাকলো আর জেরিন গেইট পর্যন্ত এসে দাড়িয়ে রইলো। সবাইকে উপেক্ষা করেই বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো সে। জেরিন মন খারাপ করে রুমে এসে বসে রইলো। ভেতরটা কাপছে সাথে চোখ থেকেও অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। আচ্ছা, সে কি জানে দ্বিতীয়বার বাবা হতে চলেছে? বড়মা কি বলেছে তাকে? জিহানের সময় তো খুশিতে আপ্লুত হয়ে গিয়েছিলো সে, তাহলে এখন? না, সে নিশ্চয়ই জানে না। জানলে এমনটা করতো না। আজও খুশি হতো। তাকে জানাতে হবে। সে ফিরলেই জানাবে তাকে।
ইমরান ফ্রেশ হয়ে এই ঘরে এলো। বড়মা খাওয়ার কথা বললে সে বললো খেয়েছে দুপুরে। আরমানের কথা জিজ্ঞেস করেও বড় মা জানতে পারলো আরমানও খেয়েছে দুপুরে।
জেরিন কিচেনে কাজ এগিয়ে দেওয়ার জন্য গেলে আবিদা বেগম তাকে নিষেধ করে দিলেন কিচেনে পা রাখতে। এসেছে, থাকবে খাবে কিন্তু কোনো কিছুতে হাত লাগাবে না সে। আবিদা বেগম যেমন রাগান্বিত তেমন ভীতুও বটে। যদি খাবারে কিছু মিশিয়ে আবার তাদেরও মেরে ফেলে সেই ভয় আছে তার মনে। সে মোটেও চায়নি জেরিন আসুক। কিন্তু বড়মার মুখের উপর কিছু বলতে পারেনি। ফুপির আচরণে জেরিনের কষ্ট লাগলেও কিছু বললো না সে। চুপচাপ রুমে চলে এলো। কেউই কিছু বললো না আর।
ইমরান ঘরে থাকাকালীন নাফিসা তাদের ঘরে আসেনি। বড় ঘরেই সময় কেটেছে তার। ইমরান তখন জেরিনকে না দেখলেও মাগরিবের পর আবার বড় ঘরে এসে জেরিনকে রুম থেকে বের হতে দেখে সে বিস্মিত! সাথে সাথেই সে নাফিসার দিকে তাকালো! নাফিসা দৃষ্টি নামিয়ে নিয়েছে। কাউকে কোনো কিছু না বলে ইমরান চলে গেলো নিজের ঘরে৷ তার দু মিনিট পরেই নাফিসার ডাক পড়লো! “নাফিসা” হাক কানে ভেসে আসতেই ভেতরটা ধুক করে উঠলো! যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়! যেই ভয়টা পেয়ে যাচ্ছিলো সেটাই ঘটতে যাচ্ছে! নাফিসা মুখ মলিন করে দৃঢ় পায়ে এগিয়ে এলো ঘরে। সে রুমে পা রাখতেই ইমরান বললো,
– ও এখানে এলো কি করে?
– গাড়িতে করে।
সিরিয়াস মুডে নাফিসা এমন জবাব দিলো পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায়। কিন্তু ইমরান আরও বেশি রেগে বললো,
– ফাজলামোর একটা সীমা থাকা দরকার। কার সাথে এসেছে সে?
– বড়মা গিয়েছিলো আনতে।
– বড়মা একা গেছে?
নাফিসা মাথা দু’দিকে নাড়ালে ইমরান আবার বললো,
– কে কে গেছে?
– আরাফ ভাইয়াও গেছে।
– আর তুমি যাওনি?
নাফিসা চুপ করে আছে! তার নিরবতাই স্পষ্ট জবাব দিয়ে দিয়েছে। ইমরান তার হাতে থাকা বইটা টেবিলে আছড়ে রেখে বললো,
– লজ্জা করে না তোর? যার জন্য তুই মৃত্যুর পথ থেকে ঘুরে এসেছিস আজ তার উপরই দরদ এতো উতলে পড়ছে! নিষেধ করেছিলাম না জেরিনের ব্যাপারে তুই কোনো কথা বলবি না। তাহলে আমার কথা অমান্য করলি কেন? গতকালও ফোন চেক করে দেখেছি তুই ফোনে কথা বলেছিস তেরো মিনিট। তবুও আমি কিছু বলিনি। এখন আমার কাছে জবাবদিহি কর, এবাড়িতে জেরিন এনেছে তোকে নাকি আমি এনেছি? বল?
– তুমি।
– তাহলে তুই আমাকে অমান্য করে জেরিনকে মানতে গেলি কেন?
– বড়মা নিয়ে গেছে, আমি কি নিষেধ করতে পারতাম?
– খবরদার, এখন বড়মার কথা বলে কাটিয়ে দিবি তো! তোকে আমার চেনা নেই? কতদিন যাবত শুরু করেছিস এসব? বারবার আমার কানই তো ঝালাপালা করে ফেলছিলি জেরিন জেরিন করে! কি হয় এই জেরিন তোর? মায়ের পেটের বোন? যার জন্য দরদ এতো উতলে উঠে!
– এভাবে কথা বলছো কেন তুমি!
– তুই এটাই প্রাপ্য। যতটাই না ভালোবাসতাম তোকে আজ ততটাই ঘৃণা করি। তোর জন্য আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি দিনে দিনে ক্ষণে ক্ষণে! ভুলটা শুরুতেই আমার ছিলো। না তোকে এতোটা আপন করে চাইতাম আর না আজ এসবের সম্মুখীন হতে হতো!
– কি বলছো এসব! তুমি একবার শু…
– একটা কথাও বলবি না আমার সাথে। জেরিন প্রিয় জেরিনের কাছেই যা। কোনো প্রয়োজন আর অপ্রয়োজনে আমার সম্মুখীন হবি না।
– বারবার ভুল বুঝে রাগ করো কেন!
– হ্যাঁ, আমি ভুল বুঝি আর তুই সাধু ব্যক্তি? তাই না? তুই বারবার ভুল করতে পারবি আর আমি ভুল বুঝতে পারবো না? তোকে জাস্ট অসহ্য হচ্ছে, আমার সামনে থেকে দূর হো!
– একবার শুনলে কি হয়!
– ধ্যাৎ!
বিরক্ত হয়ে ইমরানই বেরিয়ে গেলো! কি আর শুনবে তার মুখে! এতো শত বাহানা দিয়ে নিশ্চয়ই পরিবারে জেরিনের প্রয়োজন উল্লেখ্য করবে! বড়মার প্রতিও কিছুটা রাগ হচ্ছে ইমরানের। আর সবচেয়ে বেশি রাগ হচ্ছে নাফিসা তাকে না জানিয়ে জেরিনের বাসায় যাওয়ায়! সবার রাগ একসাথে দেখিয়ে এলো নাফিসার সাথে। তবুও মন শান্ত হলো না! আর এদিকে নাফিসাও নিজেকে অপরাধী ভাবছে। হবেই না কেন! তার জানিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো। সে জানে হাসব্যান্ডের পারমিশন ছাড়া যাওয়া ঠিক হয়নি তার। কিন্তু তখন কি ই বা করার ছিলো! ইমরান জানলে তো তাকে কখনোই যেতে দিতো না। আর আবিদা বেগম না যাওয়ায় বড়মার তাৎক্ষণিক প্রস্তাবেও নাফিসা নিষেধ করতে পারেনি! সব জেনেশুনে তার মাঝে এই ভয়টাই কাজ করছিলো যে ইমরান তার উপর রাগ করবে। এবং তখনকার মতো এখনো আশাবাদী সে ইমরানকে মানিয়ে নিবে। নিজের মধ্যে এই আশ্বাসটা রেখেই সে গিয়েছিলো তখন। তার এই ক্ষণিকের রাগের জন্য তো আর এতোগুলো জীবন নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।