তোকে_চাই
পার্ট_১০
#লেখনীতে_সুহাসিনী_চৌধুরী(ছদ্মনামের লেখিকা)
রিক্ত সবাইকে সবটা খুলে বললো কাল রাতের কথা।সব শুনে সবাই থ হয়ে গেলেও আড়ালে একজন হেঁসে উঠলো।আর মনে মনে বললো,
“এই বিয়েটা তো হওয়ারই ছিলো।কারণ আমি আর কখনোই তোমাকে জিততে দিবোনা মিস্টার…”
রিক্তর কথা শুনে রিক্তর দাদু চিল্লিয়ে বললেন,
“এটা কিছুতেই হতে পারেনা।একটা নাম,পরিচয়বিহীন মেয়ে খান বংশের পুত্রবধু হতে পারেনা।”
রোজ ঘুম ভেঙ্গে দেখলো ওও একটা বড় রুমে বেডের মধ্যে শুয়ে আছে।উঠতে গেলেই মাথাটা কেমন ঘুরে উঠলো।আস্তে করে উঠে বোঝার চেষ্টা করলো ওও কোথায় আছে।চারিদিকে তাকিয়ে বেড সাইট টেবিলের উপরে রিক্তর একটা হাস্যজ্জল ছবি দেখলো।পরে দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখলো সেখানে বড় করে একটা ছবি টাঙ্গানো রিক্তর,যেখানে রিক্ত হাতে গিটার নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।ছবিটাতে রিক্তকে অসম্ভব রকম সুন্দর লাগছে।রোজ বুঝতে পারলো ওও এখন রিক্তর রুমে আছে।আস্তে আস্তে উঠে রোজ বাইরে বের হলো।তখনি রিক্তর দাদুর কথা শুনে থমকে যায় রোজ।
“আমি শরীফ রায়হান খান কখনোই এই বিয়েটা মেনে নিবো না।ঐ মেয়েটার না আছে কোনো বংশ পরিচয়,আর না আছে ভালো কোনো কোয়ালিটি।তাই এই বিয়েটা আমি মানছি না।রিক্ত ডিভোর্স দিবে ঐ মেয়েটাকে।”
দাদুর কথা শুনে রিক্ত বললো,
“এটা সম্ভব নাহ দাদু।রোজের সাথে আমার বিয়েটা যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন তা কিন্তু ইসলামিকভাবেই হয়েছে।আর রোজের তো এখানে কোনো দোষ নেই।তাহলে ওও কেন সাফার করবে?”
এতোক্ষণ পর রিক্তর চাচ্চু মুখ খুললেন,
“রিক্ত!তুই কি করে এই মেয়েটাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিচ্ছিস?তুই কি ওয়ানিয়ার কথা ভুলে গেছিস?ওয়ানিয়া ফিরে আসলে তাকে কি জবাব দিবি তুই?”
“চাচ্চু,ওয়ানিয়াকে তো দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে খোঁজা হলো।পুরো বাংলাদেশের প্রতিটা কোনায় কোনায় ওকে খোঁজা হয়েছে।কিন্তু তাকে কি পাওয়া গেছে,হ্যা আমি মানছি,ওয়ানিয়াকে আমি ভালোবাসি।কিন্তু তাই বলে আমি রোজকে অপমান করতে পারবো না।ওয়ানিয়া আমার অতীত।আর রোজ আমার বর্তমান।”
“বাহ রিক্ত বাহ!এই তোর ভালেবাসা,আমার মেয়েটা আজ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নিখোঁজ।আর তুই কিনা বলছিস ওও তোর অতীত!আর এই দুই দিনের মেয়েটা তোর বর্তমান?”
“চাচ্চু প্লিজ চুপ করো।আমি কারো সাথে অন্যায় করতে পারবো না।জন্ম,মৃত্যু,বিয়ে এই তিন বিধাতা নিয়ে।এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি।তাই এইটাতে আমার কোনো অভিযোগ নেই।হয়তো রেজের সাথেই আমার বিয়েটা ছিলো।তাই আল্লাহ তায়ালা আমাদের বিয়ের মতো পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।”
রিক্তর কথা শুনে সবাই চুপ করে গেলো।কারণ ওর কথাগুলো মিথ্যে নয়।প্রত্যেকটা কথায় চিরন্তন সত্য।রোজ একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে আছে রিক্তর দিকে।ওও তো বিশ্বাস করতেই পারছেনা যে রিক্ত ওকে মেনে নিয়েছে।অবিশ্বাস্যকর লাগছে সবকিছু রোজের কাছে।রোজ ধীর পায়ে নেমে এলো নিচে।এসেই মাথা নিচু করে নিলো।এর মাঝেই রিক্তর ফুপি অর্থাৎ মিস শিরিন রায়হান খান রোজের সামনে এসে দাড়ালো।রোজ প্রথমেই তাকে সালাম দিলো।রিক্তর ফুপি সালামের উত্তর নিয়ে রোজকে সবার সামনে নিয়ে গেলো।রিক্তর দাদু আর চাচ্চু রোজকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলো।রোজ একে একে সবাইকে সালাম দিলো।তখনই রোজের নজর গেলো রিক্তর মামনির দিকে।তিনি রোজের দিকে ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছে।রোজ ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে ভ্রু কুঁচকে নিলো।তখনি রোজকে এসে জরিয়ে ধরলো লিয়া আর সাফরিন।রোজ ওদের দুজনকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।
“তোরা এখানে?কি করে এলি?আর জানলিই বা কেমনে যে আমি এখানে আছি?”
পাশে থেকে রোজের মাদার মিস জুলি বললেন,
“আমাদেরকে এখানে মিস শিরিন রায়হান খান ডেকেছেন।”
মিস জুলির কথা শুনে সবাই শিরিনের দিকে তাকালো।সেই চাহুনি উপেক্ষা করে তিনি হাসলেন।তারপর রিক্তর মামনির কাছে গিলো বললো,
“ছোট ভাবি,চিনতে পারছো রোজের গলায় ঝুলে থাকা সেই লকেটটা?”
মিসেস লামিয়া রায়হান খান ছলছল চোখেই বললেন,
“এটা তো সেই লকেট যেটা ওয়ানিয়ার গলায় থাকতো সব সময়।”
“হুম এটা সেই লকেট যেটা ওয়ানিয়াকে আমি পরিয়ে দিয়েছিলাম ওর আকিকার দিনে।”
“কিন্তু এই লকেট তাহলে এই মেয়ের কাছে কেন?”
“কারণ এই সেই রোজ যে আমাদের ওয়ানিয়া!”
মিস শিরিন রায়হান খানের কথায় সবাই চমকে গেলো।রিক্ত এক প্রকার চিল্লিয়েই বললো,
“কিহহহহহহহহ”
“হুম রিক্ত এই মেয়েটাই আমাদের হারিয়ে যাওয়া ওয়ানিয়া।যে হারিয়ে গিয়েছিল তার চতুর্থতম জন্মদিনের পার্টি থেকে।”
রোজ কারো কথার ই আগা-মাথা বুঝতে পারছে না।সব ওর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।কি হচ্ছে এসব?রোজ নিজের কৌতুহল দমাতে না পেরো জিজ্ঞেস করেই ফেললো,
“কে এই ওয়ানিয়া?আর আমিই বা ওয়ানিয়া হলাম কি করে?কি বলছেন এসব আপনারা?”
“রোজ!আমি তোমসকে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা খুলে বলছি।”
“হ্যা মাদার বলুন।আমি জানতে চাই সবকিছু।”
“শোনো তাহলে,”
এই বলেই মিস জুলি বলতে লাগলেন,,,
চলবে???
বিঃদ্রঃ গল্পটা শেষ করে দিবো খুব শীঘ্রই।কারণ আপনাদের ভালো লাগছে না এই গল্পটা বুঝতে পারছি।একজন তো বলেই দিলেন,এটা নাকি স্টার জলসার নাটক।শুনে খুব অবাক হয়েছি।যাইহোক,সবার থেকে গল্পটা সম্পর্কে মতামত আশা করছি।আর কি মনে হয়?গল্পটা কি হ্যাপি ইন্ডিং হবে?নাকি স্যাড ইন্ডিং হবে?