তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি?,পর্ব_২৩ (শেষপর্ব)
Anika Fahmida
ঠিক এক সপ্তাহ পর আজকে আদ্র এবং অনুর বিয়েটা খুব দুমদাম করে হয়ে গেল। অনুর বাবা আরমান রহমানও অনু আর আদ্রের বিয়েতে কোনো বাঁধা দেন নি। যেহেতু আনোয়ার হোসেন আদ্র এবং অনুর বিয়েটা মেনে নিয়েছেন তাই আরমান রহমানও মেনে নিয়েছেন। অনুর মা আমেনা বেগমও আদ্র এবং অনুর বিয়ে খুশিমনে মেনে নেন। সবাই আদ্র এবং অনুর বিয়েটা মেনে নিয়েছেন। বাসর ঘরে লাল শাড়ি পড়ে অনু চুপ করে বসে আছে। অনু বেশ ঘাবড়ে আছে আবার ভীষণ ভালোও লাগছে। কিছুক্ষণ পর আদ্র বিয়ের গোল্ডেন পাঞ্জাবী পোশাকে রুমে এসে প্রবেশ করল। আদ্র বিছানার কাছে আসতেই অনু তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে উঠে আদ্রের পায়ে হাত দিতে গেলে আদ্র অনুকে থামিয়ে দেয়। আদ্র শান্ত স্বরে অনুকে বলল,
–এই অনু কি করছো?
অনু একটু অবাক হলো। আজ প্রথম আদ্রের মুখে অনু তুমি শুনছে। অনু অবাক হয়ে আদ্রকে বলল,
–তুমি আমাকে তুমি বলছো?
আদ্র হেসে অনু্কে বলল,
–হ্যা নিজের বউকে তুই বললে ভালো লাগে নাকি? আর এখন তুমি তো আর আমার সেই খালাতো বোন নেই। এখন তুমি আমার বউ। তাই আমার বউ তোমাকে তো তুমি বলতেই হয়। তাই না?
অনু মুচকি হাসল। তারপর অনু আদ্রকে বলল,
–আমাকে সালাম করতে দিচ্ছো না কেন?
আদ্র অনুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
–আমার সামনে এতো নিয়ম কানুন দেখাতে হবে না।
তোমার স্থান আমার পায়ে নয়। এই বুকের বাম পাশে।
আদ্র অনুকে জড়িয়ে ধরল। অনুও আদ্রকে জড়িয়ে ধরল। আদ্রকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় হঠাৎ অনুর চোখ পড়ল আদ্রের টেবিলে রাখা ডায়েরীর দিকে। অনু আদ্রকে ছেড়ে দিয়ে সামনের টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল। টেবিল থেকে ডয়েরিটা হাতে নিয়ে উল্টিয়ে অনু অবাক হলো। কারণ ডায়েরিটা অনেক পুরোনো। ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠায় শুধু আদ্র অনুকে নিয়ে লিখেছে। আদ্রের হাতের লেখা অনু চিনে। তাই আদ্রই যে অনুকে নিয়ে ডায়েরি লিখেছে অনু বুঝতে পারে। ডায়েরির প্রথম পাতায় অনেক বছর আগের সালের আদ্রের লেখা। লেখাটি হলো,
–তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি কখনো বদলাবে না অনু। আমি চাইলেও পারব না। এ কেমন অনুভূতি আমার জানা নেই। কিন্তু এই অনুভূতি খুব ভয়ংকর।
পরের পৃষ্ঠা উল্টিয়েও অনু অবাক হলো। কারণ পরের পৃষ্ঠায় আদ্র লিখেছে,
–তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে অনু। অনুকে আমার ডায়েরিতে তুমি করেই বলি। আর বাস্তবে তুই। তোমাকে দুই জায়গায় দুইভাবে ডাকতেও বেশ ভালো লাগে। একটা আলাদা অনুভূতি জন্মায়।
অনু আদ্রের দিকে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে বলল,
–তুমি আমাকে নিয়ে দশ বছর আগে থেকে ডায়েরি লিখছো আদ্র?
আদ্র অনুর কাছে এগিয়ে এসে বলল,
–হ্যা অনু৷ দশ বছর আগে থেকেই তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি মনের চারপাশে নিজের অজান্তেই ছড়িয়ে পড়েছে। আমি না চাইতেও তোমার কথা বার বার ভাবতাম। আর সেই অনুভূতিগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখতাম।
অনু শান্ত স্বরে আদ্রকে বলল,
–আমায় এতো ভালোবাসো কেন?
আদ্র মুচকি হেসে অনুকে বলল,
–ভালোবাসার কারণটা আজও আমার কাছে অজানা। কিন্তু আমি এইটুকু জানি তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়। তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি যতই দিন যাচ্ছে ততই গভীর হচ্ছে।
অনু হঠাৎই আদ্রকে নিজ থেকে আদ্রের ঠোঁটে চুমু দিল।
আদ্র অনুর এই কাজ দেখে হেসে বলল,
–এই কিউটি তুমি এটা কি করলে?
অনু অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে হেসে আদ্রকে বলল,
–তোমাকে আদর করলাম।
আদ্র দুষ্টু হেসে অনুকে বলল,
–এবার তো আমার পালা।
অনু অবাক হয়ে আদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,
–কিসের পালা?
আদ্র বিরক্ত স্বরে বলল,
–হায়রে আমার বউ দেখছি কিছুই বুঝে না। তোমাকে আদর করার পালা।
অনু লজ্জা পেয়ে গেল। আদ্র অনুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে অনুর গলায় মুখ ডুবাল। অনু কেঁপে উঠল। অনু আর আদ্রের জীবনে আর কেউ বাঁধা হয়ে রইল না।
কিছুদিন পর আদ্র এবং অনু হানিমুন যাবে ঠিক করেছে। তাই বেশ কিছুদিন পর আজকে এক শপিং মলে আদ্র এবং অনু গিয়ে শপিং করছিল। সেই শপিং মল থেকে কেনাকাটা করে বের হওয়ার পর রাস্তায় আদ্র এবং অনুর সামনে এসে পল্লব দাঁড়াল। পল্লবকে দেখে অনু ভয় পেয়ে আদ্রের পেছন গিয়ে দাঁড়াল। কারণ পল্লব আগের থেকে ভীষণ বদলে গেছে। কেমন যেন পল্লবকে অগোছালো দেখতে লাগছে। পল্লবের মুখে আগের মতো সেই হাসিটাও নেই। বেশ গম্ভীর হয়ে গেছে পল্লব। আদ্র পল্লবকে দেখে হেসে বলল,
–আরে পল্লব আপনি এখানে?
পল্লব আদ্রকে বলল,
–এখানেই একটা কাজ ছিল তাই এসেছিলাম।কেমন আছেন আপনি এবং অনু ?
আদ্র পল্লবকে শান্ত স্বরে বলল,
–হ্যা আমি এবং অনু দুজনেই ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
পল্লব আদ্রকে বলল,
–আমিও ভালো আছি।
পল্লব এবার অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
–অনু তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো? ভয় নেই! আমি তোমার আর আদ্রের কোনো ক্ষতি করবো না। আমাকে ভয় পেয়ো না।
পল্লবের কথা শুনে অনু আদ্রের পেছন থেকে সামনে এসে আদ্রের সাথে দাঁড়াল।অনু পল্লবকে জিজ্ঞেস করল,
–দিনকাল কেমন যায় তোমার পল্লব?
পল্লব হাসার চেষ্টা করে বলল,
–দিনকাল আর আমার? হ্যা ভালোই তো যায়। আমি খুব ভালো আছি অনু।
অনু পল্লবকে আবারও শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করল,
–তোমার ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছো?
পল্লব অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
–আমার আবার ভালোবাসার মানুষ লাগে নাকি? আমি তো একজনকেই ভালোবেসেছি৷ সেই একজন হলো তুমি। আর কাউকে হয়তো এই জীবনে ভালোবাসতে পারব না।
অনু অবাক হয়ে পল্লবকে বলল,
–মানে তুমি কাউকে বিয়ে করবে না?
পল্লব স্বাভাবিক স্বরেই অনুকে বলল,
–আমার বিয়ে করার ইচ্ছে নেই।
অনু মন খারাপ করে পল্লবকে বলল,
–এভাবে কেন বলছো তুমি পল্লব? আমার জন্য তুমি কাউকে বিয়ে করবে না? নিজেকে কেমন অপরাধী লাগছে। প্লিজ তুমি ভালো কোনো মেয়ে দেখে বিয়ে করো তাহলে সুখী হবে।
পল্লব অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
–বললাম তো বিয়ে করার ইচ্ছে নেই।
আদ্র গম্ভীর স্বরে পল্লবকে বলল,
–আপনি কিন্তু বোকার মতো কথা বলছেন পল্লব। অনুর সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেছে। অনু এখন আমার স্ত্রী। আর আপনি অনুর জন্য কাউকে বিয়ে করবেন না? এটা কেমন ধরনের কথা বলছেন? আপনার জন্য নিশ্চয়ই ভালো কোনো মেয়ে আছে। নিজের জীবনটা এভাবে নষ্ট করবেন না।
পল্লব আদ্রকে হেসে বলল,
–আমি তো ইচ্ছে করলেই আপনার কাছ থেকে অনুকে কেড়ে নিয়ে জোর করে বিয়ে করতে পারতাম। অনু আমার স্ত্রী হতে পারতো। কিন্তু আমি জোর করি নি৷ কেন করিনি জানেন? কারণ অনু আমাকে না আপনাকে ভালোবাসে। আর আমি অনুকে ভালোবাসি। আমি অনুকে তার ভালোবাসার মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি৷ কিন্তু আমার ভালোবাসাকে এই বুকের ভিতর চেপে রেখেছি। আমাকে আপনার বোকা মনে হতে পারে আদ্র। কিন্তু আমি বোকা নই। কাউকে মন থেকে ভালোবাসলে সেই ভালোবাসা আর কারও জন্য চাইলেও আসে না। আমি অন্য কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাই না। অন্য কোনো মেয়ে আমার জন্য অসুখী হবে তাও চাই না। আমি নিজের মতো আছি এই অনেক ভালো আছি৷ মন থেকে আমি দোয়া করি আপনারা দুজন অনেক সুখী হন৷ খুব সুখী হন।
পল্লবের কথায় না চাইতেও অনুর চোখে জল চলে আসলো। এখন অনুর মনে হচ্ছে পল্লবের সাথে বন্ধুত্ব না করলেই হয়তো ভালো হতো। একটি ছেলের জীবনে নিজের অজান্তেই অনু ঝড় তুলে দিল তা যেন অনু কিছুতেই মানতে পারছে না। আদ্রেরও পল্লবের কথায় ভীষণ মন খারাপ লাগল। পল্লবের কষ্টটা আদ্র বুঝতে পারছে। যদি অনু আদ্রকে ভালো না বাসতো তাহলে হয়তো আদ্র নিজেই অনুকে জোর করে বিয়ে করতো। কারণ অনু আদ্রের অক্সিজেন। অনুকে ছাড়া আদ্র এক মুহুর্তও চিন্তা করতে পারে না। অনুও আদ্রকে মন থেকে ভালোবাসে তাই অনু আর আদ্রের বিয়েতেও কোনো বাঁধা আসে নি।
আদ্র শুধু একটা কথাই পল্লবকে বলল,
–পারলে অনুকে ভুলে যাবেন।
পল্লব হেসে আদ্রকে বলল,
–মনের মধ্যে অনুকে ঘিরে এতো অনুভূতি পুষে রেখেছি তা আমি ভুলে যাই কি করে বলতে পারবেন আদ্র? চাইলেও ভুলতে পারবো না।
আদ্রও বুঝতে পারল পল্লব অনুকে কখনো ভুলতে পারবে না। তাই আদ্র পল্লবকে আর কিছু বলল না। আদ্র অনুর দিকে তাকিয়ে দেখল অনু কাঁদছে। আদ্র বুঝতে পারছে পল্লবের এমন পরিণতির জন্য অনু নিজেকে হয়তো অপরাধী ভাবছে। আদ্র অনুর চোখের জল মুছে দিলে অনু আদ্রের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে থাকে। পল্লব গম্ভীর স্বরে অনুকে বলল,
–এই অনু কাঁদছো কেন? শুনো তুমি নিজেকে দোষী মনে করো না। তোমার তো কোনো দোষ নেই৷ তুমি আদ্রকে ভালোবাসো জেনেও আমি তোমাকে ভালোবেসেছি। তুমি তো আর আমাকে ভালোবাসো নি৷ তাই নিজেকে দোষী মনে করো না। আর আমার থেকেও বেশি তোমাকে আদ্র ভালোবাসে। আমি তোমার প্রতি আদ্রের গভীর ভালোবাসা বুঝতে পেরেছি। তাই তো তোমাকে আদ্রের হাতেই তুলে দিয়েছি। নাহলে তো তোমাকে আমিই জোর করে বিয়ে করতাম। আদ্রের সাথে ভালো থেকো। নিজের খেয়াল রেখো। আমি আসি তাহলে। কেঁদো না প্লিজ।
পল্লব চলে যাচ্ছিল। অনু আদ্রের বুক থেকে মাথা তুলে পেছন ফিরে পল্লবকে ডাক দিল,
–এই পল্লব দাঁড়াও।
পল্লব দাঁড়িয়ে পেছন ফিরে অনুর দিকে তাকিয়ে বলল,
–কিছু বলবে অনু?
অনু কাঁদতে কাঁদতে পল্লবকে বলল,
–নিজের লাইফটা আমার জন্য এভাবে তুমি নষ্ট করো না। পারলে ভালো কাউকে বিয়ে করে সুখী হয়ো।আমার খুব নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। তোমাকে আমি নিজের অজান্তেই অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।
আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও পল্লব। আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারলাম না। কারণ আমি আদ্রকে মনে প্রাণে ভালোবাসি কিন্তু বিশ্বাস করো তুমি আমার খুব ভালো বন্ধু। তুমি খুব ভালো ছেলে। আমরা তো সারাজীবন ভালো বন্ধু হয়ে থাকতে পারি তাই না?
পল্লব হেসে অনুকে বলল,
–তুমি আমাকে বন্ধু মনে করলেও আমি তোমাকে কোনোদিন বন্ধু মনে করতে পারি নি অনু। তোমাকে আমি নিজের ভালোবাসা হিসেবে ভেবেছি, আর ভবিষ্যতেও তোমাকে ভালোবাসা হিসেবেই ভেবে যাবো।
আমার থেকে তুমি দূরে থাকার চেষ্টা করো অনু। আমি চাই না আমার জন্য তোমার আর আদ্রের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হোক। আর হ্যা বন্ধু হয়ে থাকার কথা বলছো তো? তুমি নাহয় দূর থেকেই মন থেকে আমাকে বন্ধু ভেবেই মনে রেখো। এটাই বা আমার জন্য কম কিসের!
অনু পল্লবকে শান্ত স্বরে বলল,
–ভালো থেকো পল্লব।
পল্লব হেসে অনুকে বলল,
–তুমিও আদ্রের সাথে খুব খুব খুব ভালো থেকো অনু।
পল্লব নিজের গাড়িতে উঠল। যাওয়ার আগে অনুর মুখের দিকে তাকাল। অনুর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। পল্লব একটু হাসার চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না। পল্লবের বুকের ভিতর কষ্টটা অনেক কষ্টে বুকের মধ্যেই চেপে রাখল। আর একমুহূর্ত না অপেক্ষা করে পল্লব গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে গেল। অনু আদ্রের দিকে তাকাল। অনু আদ্রকে কান্না জড়িত কন্ঠে বলল,
–আমি এভাবে পল্লবের কষ্টে কাঁদছি দেখে তুমি আমাকে ভুল বুঝছো নাতো আদ্র? আসলে আমার পল্লবের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।
আদ্র অনুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–পাগলী মেয়ে একটা। তোমাকে আমি ভুল বুঝি নি। আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। বন্ধুর কষ্ট দেখতে পেয়ে নিজের কষ্ট পাওয়া স্বাভাবিক। পল্লবও একদিন আমাদের মতো খুব সুখী হবে। তুমি দেখো।
অনু আদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,
–সত্যি বলছো আদ্র?পল্লব সুখী হবে তো?
আদ্র হেসে অনুর কপালে চুমু দিয়ে বলল,
–হ্যা তোমার বন্ধু পল্লব একদিন খুব সুখী হবে।
অনু্র মুখে হাসি ফুটে উঠল। অনু আদ্রকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–খুব ভালোবাসি তোমাকে আদ্র।
আদ্রও অনুকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–আমিও তোমাকে খুব খুব খুব বেশি ভালোবাসি অনু। তুমি তো জানো তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি কতোটা শক্তিশালী?
অনু মুচকি হেসে আদ্রকে বলল,
–হ্যা আমি জানি। আমিও তোমাকে একটা কথা বলতে চাই আদ্র?
আদ্র শান্ত স্বরে অনুকে বলল,
–হ্যা বলো কি বলতে চাও?
অনু আদ্রের গালে চুমু দিয়ে বলল,
–তোমাকে ঘিরে আমার অনুভূতি এতোই বেশি যা আমি বলে বুঝাতে পারবো না আদ্র।
আদ্র মুচকি হেসে অনুকে বলল,
–আমি জানি অনু। এবার বাসায় চলো। আই ওয়ান্ট টু লাভ ইউ মোর ইন আওয়ার রুম। রাস্তায় তো আর এতো আদর করতে পারি না। বাসায় চলো। বাসায় গিয়ে তোমাকে আদর করবো।
অনু লজ্জা পেয়ে আদ্রকে বলল,
–তুমি খুব দুষ্টু।
আদ্র অনুর কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে অনুর চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
–তোমার সাথে শুধু আমার দুষ্টুমি করতেই মন চায়। এতে আমার দোষ কি তুমি বলো অনু?
অনু হেসে আদ্রকে বলল,
–হুম দুষ্টুমি তো তুমি আমার সাথে প্রতিদিনই করো। আমি তোমাকে কোনো দোষ দিচ্ছি না। তোমার দুষ্টুমিগুলোই আমার ভীষণ ভালো লাগে।
অনু কথাগুলো বলে নিজেই লজ্জা পেয়ে চোখ বন্ধ করে নিল। আদ্র হেসে অনুর দুই চোখে চুমু দিল। তারপর আদ্র এবং অনু নিজের গাড়ি করে বাসায় চলে গেল। এভাবেই প্রতিদিন আদ্র এবং অনুর দিন ভালোবাসা ও দুষ্টুমিতে কাটতে লাগল। আর পল্লব অনুর কথা ভেবে আর অনুর ছবি নিজের বুকে জড়িয়েই দিন কাটাতে লাগল। আজও পল্লব অনুকে নিজের মন থেকে মুছতে পারে নি। হয়তো পল্লব অনুকে মন থেকে কোনোদিন মুছতে পারবেও না।
সমাপ্ত