তোমাতেই পূর্ণ আমি #পর্ব -৫,০৬

0
892

#তোমাতেই পূর্ণ আমি
#পর্ব -৫,০৬
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা
০৫

সারারাত আর ঘুম আসে নি চোখে।যাকে কখনও দেখি নি, কন্ঠ ও শুনি নি তার লিখা চিরকুটেই প্রেমে পড়ে গেছিলাম সেই মানুষ টা বাস্তবে এতো ভয়ংকর হবে ভাবি নি আমি।এসব ভাবতে ভাবতে হেটে যাচ্ছি টিউশনি তে।সকালের হিম বাতাস টা ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে সারা শরীরে।কিন্তু মনে যে প্রচন্ড বেগে বাতাস বয়ছে যা ঝড় আকারে রুপ ধারণ করছে।হাঁটার তালে তালে পায়ের পায়েলটা রিমঝিম শব্দ সৃষ্টি করে চলেছে ।পায়েল টা আমি কখনও খুলতে পারি নি।বিয়ের পরও না।মানুষ বলে বিয়ের পর অন্যকে ভালোবাসা হারাম।কিন্তু আমি পারি নি তাকে ভুলতে।ঐ মানুষ টা গেঁথে ছিল আমার মনে।যখন স্বামী নামক মানুষটা অত্যাচার করত তখন আরো বেশি মনে পড়ত তার কথা।স্বামীর ভালোবাসা কখনো আমার নসীবে জুটে নি।অন্ধকার রুমে যখন চোখের পানি ঝরাতাম তখন মনে হতো আপনি থাকলে এই চোখের পানি ও আমার সঙ্গী হতো না।দশ মাস আগে যখন একটা ছেলে কলেজ গেটে আমার হাত ধরেছিল।পরের দিন জানতে পারি সেই ছেলেটা আইসিইউ তে।আপনার জন্য কোনো ছেলে আমার সাথে কথা বলতে পর্যন্ত ভয় পেত।আড়ালে আমায় প্রটেক্ট করতেন কলেজ গেটে দারোয়ান এর কাছে চিরকুট, গিফট দিয়ে যেতেন তবে আমার বিয়েটা কেন আটকাতে পারেন নি?কেন অন্য কারো হতে দিলেন আমায়?কেন?কেন বিয়ে হবার পরও একবার ও আমার খোঁজ পর্যন্ত নেন নি?তবে কি ধরে নিব আপনার ওইসব মোহ ছিল?কখনও কি ভালোবাসেন নি আমায়?তাহলে আবার কেন ফিরে এসেছেন? কেন আবারও সেই পুরোনো ডাক?

স্টুডেন্ট কে পড়াচ্ছি তখনই আন্টি এসে দাঁড়ালেন।আন্টি ভীষণ ভালো।পৃথিবীর সব মানুষ তো খারাপ হয় না।ওনি সবসময়ই বলেন যদি ওনার কোনো ছেলে থাকত তবে অবশ্যই আমায় ছেলের বউ বানাতেন। ছেলে ছোট হলেও প্রবলেম ছিল না।আন্টির এই কথা শুনলে অনেক হাসি পায়।বিধবা দের সবাই খারাপ চোখে দেখে না।কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙি অন্য রকম ও হয়।চেয়ার টেনে আমার পাশে বসলেন আন্টি।

—শ্রেয়া তোমার জন্য একটা খুশির খবর আছে।(হেসে)

আন্টির কথায় অবাক না হয়ে পারলাম না।আমার জন্য খুশির খবর এটা অবাক হওয়ার কথাই।আম্মু মারা যাওয়ার পর জীবনে ওই মানুষটাই খুশি নিয়ে এসেছিল আবার ওনিই কেঁড়ে নিয়েছেন।মুখে হাসি টেনে জবাব দিলাম,,

–কেমন খুশির খবর আন্টি?

—তোমার জন্য নতুন একটা টিউশনি খুঁজে পেয়েছি।

আন্টির কথায় চোখ দুটো খুশিতে ছলছল করে উঠল।দুটো টিউশনি দিয়ে ঢাকা শহরে থাকা আমার জন্য পসিবল ছিল না।পড়ালেখা ও চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হত না।আরেকটা টিউশনির খুব বেশি প্রয়োজন ছিল।খুশিতে গদগদ করে প্রশ্ন করলাম,,,

–কোথায় আন্টি?আর এই মাস থেকে পড়াতে পারব?

—হুম কাল থেকে পড়াতে পারবে।তীহুর স্কুল ম্যামের মেয়েকে।মা টিচার হলে কি হবে মেয়ে তার কাছে একদম পড়তে চায় না।একটু দুষ্টমি করে কিন্তু অনেক কিউট একটা মেয়ে।ক্লাস ওয়ানে পড়ে।ওনি টিচার হয়েছেন শখের বশে।মাশাল্লাহ ওনাদের কিছুর অভাব নেই। অনেক বড়লোক ওনারা।তোমাকে বেতন ও খুব ভালো দিবে।তবে একটা প্রবলেম আছে।

আন্টির কথায় ভয়ে পেয়ে গেলাম আমি।

—কি প্রবলেম আন্টি?

–ওনার মেয়েকে সন্ধ্যার দিকে পড়াতে হবে শ্রেয়া।কিন্তু তুমি তো এই সময় আরেকটা টিউশনি তে থাকো।

আল্লাহ যা করে হয়তো ভালোর জন্যই করে।আল্লাহর কাছে মনে মনে লাখ লাখ শুকরিয়া জানালাম। কারণ আল্লাহ একমাত্র জানে একটা টিউশনের জন্য ওনার দরবারে কতো প্রার্থনা করেছি আমি।

—সমস্যা নেই আন্টি।ওই টিউশনি টা আমি এখন বিকালে করাই।শুধু রাতে বেলা আসা যাওয়া টা প্রবলেম হবে এতটুকুই।

—পড়ানো শেষে ওনারা নিজেদের গাড়ি করে তোমায় বাসায় দিয়ে আসবে।সব তো সলভ হয়ে গেল।এই নাও ওনাদের বাড়ির এড্রেস।কাল থেকেই চলে যাবে।ওনাকে ফোন করে জানিয়ে দিব আমি।

–ঠিক আছে।

বাসা থেকে বেরিয়ে শান্তি তে একটা নিঃশ্বাস নিলাম আমি।নিজেকে অনেক রিলেক্স লাগছে।আর একটা ভেজাল থেকে মুক্ত হতে পারলেই হলো তা হচ্ছে –তূর্য চৌধুরী নামক ভেজাল।
রীতি আপুর থেকে ৫০০ টাকা ধার নিয়েছি আজ।প্রেকটিক্যাল খাতা কিনতে হবে।কিছু করার নেই। ভাগ্য টাই খারাপ।সকাল আট টা বাজে।এতো সকালে তো কোনো দোকানই খোলে নি।মা কে দেখে এসে নাহয় ভার্সিটি যাবার সময় কিনে নিব।গত দু মাসে মা কে তিনবার দেখতে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু এই মাসে একবারও যাওয়া হয় নি।মা হয়তো ভীষণ রাগ করে আছেন আমার সাথে।বিয়ের পর এই একটা মানুষ আমায় আগলে রেখেছে। নিজের মায়ের মতো আদর দিয়েছে যেই আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম আমি ছোটবেলায় । আমার জন্য নিজের ছেলের বিরুদ্ধে গিয়েছে। কিন্তু ছেলে আর স্বামী মারা যাওয়ার পর অন্য ছেলেরা ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তাকে।আমায় বের করে দিয়েছেন বাড়ি থেকে।এতে মায়ের কোনো দোষ নেই তিনি নিজেই তো অচল।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সি এনজি ডেকে উঠে পড়লাম।এত দূর হেঁটে যাওয়া সম্ভব না।

—————–
একটা দুতলা বাড়ির সামনে এসে সিএনজি থেকে নামলাম আমি।এটা আমার শশুরবাড়ি।শশুরবাড়ি বললে ভুল হবে শশুরবাড়ি ছিল।এখন তো শুধু বরের ভাইদের বাড়ি।যেখানে অনেক কষ্টে অনুমতি পেয়েছি মাঝে মাঝে শাশুড়ীর সাথে দেখা করার।নয়তো কেউই এই বাড়িতে সহ্য করতে পারে না আমায়।যেখানে বরই কখনো সহ্য করতে পারত না সেখানে বাড়ির অন্য সদস্য রা আমায় পছন্দ না করাটাই স্বাভাবিক। ভিতরে ঢুকে দেখলাম মায়ের কোলে একটা ছেলে মাথা রেখে হাঁটু গেড়ে বসে আছে। অবাক হলাম আমি।কে এই ছেলেটা?ভালো করে খেয়াল করার পর আমি যাকে দেখলাম তাতে আমার চোখ দুটো বের হয়ে আসার উপক্রম। বিস্ময়ে থ মেরে রইলাম আমি।

—কী রে শ্রেয়া কখন আসলি?(হেসে)

মায়ের কথায় ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকাল।মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,,

—এই মেয়ে এখানে কেন খালা মণি?

–এই মেয়ে এখানে কেন মানে?তুই কি শ্রেয়াকে চিনিস তূর্য?

—চিনি তো।খুব ভালো করে চিনি।(মুচকি হেসে)

—-কিভাবে চিনিস?

মায়ের প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেলাম আমি।এই লোক যা খারাপ আবার ভার্সিটির সব কান্ড বলে দিবে নাতো?এখনতো ওনার প্রতিশোধ নেওয়ার ভালো সুযোগ পেয়েছেন।আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলে তিনি।

–ওই তো খালামণি ভার্সিটিতে,,,

ওনাকে বলার সুযোগ না দিয়ে দৌড়ে মায়ের পাশে গিয়ে বসলাম।তাড়াহুড়োয় বলে উঠলাম,,

–মা আপনার শরীর ঠিক আছে?ওষুধ খেয়েছেন আপনি?

–হ্যা খেয়েছি রে মা।আচ্ছা তূর্য তুই বল তুই শ্রেয়া কে কিভাবে চিনিস?

–আমাদের ভার্সিটি তে পড়ে।সেখান থেকেই চিনি।খুব ভালো মেয়ে খালা মণি।তা ও এখানে কেন?আর তোমাকে মা ডাকছে কেন?

ওনি সত্যি টা বলে নি।বাহ্!! এতো ভালো কবে থেকে হলেন ওনি।মা আবার আমার ব্যাপারে বলে দিবে নাতো?যা সত্য তাই তো বলবেই। কিন্তু এসব সহ্য করতে পারব না আমি।কথাগুলো কেমন যেন হৃদয়ে আঘাত করে।তাই মাকে বলে পানি খাওয়ার বাহানা করে ড্রইং রুম থেকে চলে আসলাম আমি।


শ্রেয়া আভাসের বউ তূর্য।তুই তো ঐ ঘটনার জন্য আভাসের বিয়েতে আসিস নি আবার ও যখন মারা যায় তখনও আসতে পারিস নি।পরে তো বিয়ের কথা শুনেছিস।তুই তো জানিস আভাস কেমন ছিল।মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। আভাস আমার ছেলে হলে কি হবে নির্দ্বিধায় আমি বলব মেয়েটা কে সে একটু ও সুখ দেয় নি।আর শ্রেয়া আমার জন্য দিন রাত ওর সব অত্যাচার সহ্য করে গেছে এই ভেবে হয়তো আভাস ভালো হবে।বেরিয়ে আসবে অন্য মোহ থেকে।কিন্তু হিতে বিপরীত হল।মেয়েটার জীবন আমি নিজের হাতে নষ্ট করে দিয়েছি।আভাস মারা যাওয়ার পর তোর খালু চেষ্টা করেছে মেয়েটা কে বিয়ে দেবার কিন্তু নারাজ ছিল সে।তাই আমরাও আর জোর করি নি।আভাস মারা যাওয়ার একমাস পরই তোমার খালু অনেক অসুস্থ হয়ে পরে আর ছলেবলে আমার বড় দুই ছেলে সব সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নেই। সব তো তুই জানিস।আভাসের বাবা মারা যাওয়ার পর ওরা শ্রেয়া কে বিধবা, অপয়া বলে বের করে দেয় বাড়ি থেকে।আমার কোনো কথাই শুনে নি।আমায় কোনো মতে ফেলে রেখেছে হয়তো আমি ওদের মা বিধায় নয়তো কবেই তো,,,,,, কথাটা বলে কেঁদে দিলেন শাহরিন বেগম।মেয়েটার জন্য আমি কিছুই করতে পারি নি তূর্য। মেয়েটার জীবন আমি শেষ করে দিয়েছি।—কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললেন তিনি।

তূর্য কিছুই বলল না শুধু চুপ করে শুনে গেল।আভাসের বড় ভাবির ডাকে খালাকে নিয়ে এগিয়ে গেলেন ডাইনিং রুমে।ওনি আভাসের খালাতো ভাই অথচ একদম ভিন্ন আভাস থেকে।আর ওনাকে আমাদের বিয়েতে এবং আভাসের মৃত্যুর দিন কেন দেখিনি?

বড় ভাইয়ের বউ রুম্পা ভাবি ওনাকে ডেকে ডাইনিং টেবিলে নিয়ে গেলেন।তূর্য চেয়ার টেনে খালাকে বসালেন।আরেকটা চেয়ার টেনে আমার দিকে ফিরে তাকালেন তূর্য ভাইয়া।ইশারা করে বললেন চেয়ার টা তে বসতে।থম মেরে গেলাম আমি।ওনি আমাকে কেন ডাকছেন ওনি তো জানেন না ভাবিরা আমায় একদম সহ্য করতে পারেন না।তাদের সাথে ডাইনিং এ বসলে হয়তো আগুন লাগিয়ে দিতে পারেন।তাই তাড়াতাড়ি করে সামনের দিকে এগিয়ে বললাম,,,

—মা আমি আসছি।ভালো থাকবেন।

কথাটা বলে যেই না সামনের দিকে পা বাড়াব তূর্য ভাইয়া গম্ভীর কন্ঠে বললেন,,,

—তোমাকে কি যেতে বলা হয়েছে?দেখেছ খালা কেমন বেয়াদব মেয়ে?

—হ্যাঁ রে শ্রেয়া নাস্তা করে যা।করে তারপর চলে যাস।তূর্য ও তো ভার্সিটিতে যাবে ওর সাথে নাহয় চলে যাবি।

—ওকে কেন ডাকছেন মা?সকাল বেলা কি অপয়া মেয়েকে দেখে সারাদিন টা মাটি করতে হবে?
পাশ থেকে ভাবি বলে উঠলেন।ভাবির কথায় চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল বেয়ে পড়ল।কেউ দেখার আগে চট করে মুছে নিলাম।হাসলেন তূর্য ভাইয়া। ভাবির দিকে তাকিয়ে বললেন,,

—যদি অপয়া মেয়ের নজরে আপনার পেট খারাপ হয়ে যায় সেটা কি ভালো হবে বলেন ভাবি?তার চেয়ে বরং ও আমাদের সাথে খেয়ে নিক।

তূর্য ভাইয়ার এমন কথায় বুক টা হাহাকার করে উঠল আমার।ভাবি হাসতে হাসতে বললেন,,

–আয় খেয়ে যা শ্রেয়া।পেট খারাপ হলে তো আমার সব প্রোগ্রাম আজ ক্যান্সেল হয়ে যাবে।

—তোমরা কি শুরু করেছ?শ্রেয়া খেয়ে যা নাহয় মা খুব কষ্ট পাবো।
মায়ের কথায় চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লাম আমি।তূর্য ভাইয়া ও আমার পাশে চেয়ার টেনে বসে পড়লেন।সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভাবি ও তার বোন সিমথী রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।এই এক মেয়ের জন্য আভাস কখনও আমায় সহ্য করতে পারে নি।সিমথী তূর্য ভাইয়ার পাতে খাবার দিতে নিলেই বাঁধা দিলেন তিনি।গম্ভীর গলায় বললেন,,,

—আমি নিতে পারব।

তূর্য ভাইয়ার এমন কথায় সিমথী রাগে নিজের চেয়ারে গিয়ে বসে পড়লেন।তূর্য খাবারের বাটি হাতে নিয়ে প্রথমে খালার পাতে দিলেন।তারপর আমার পাতে দিতেই আমি সহ সবাই বিস্মিত হয়ে রইল।কিন্তু ওনার কোন ধ্যান নেই নিজের প্লেটে খাবার নিয়ে দিব্যি খেয়ে যাচ্ছেন তিনি।এ কোন তূর্য কে দেখছি?ওনি কি সেই তূর্য যিনি আমায় দুচোখে দেখতে পারেন না ভার্সিটি তে অত্যাচার করেন!!!আর না ভেবে খাবারে মনোযোগ দিলাম আমি।খাবার শেষে ড্রইং রুমে বসল সবাই।আমি নিজের ব্যাগ নিয়ে চলে যাবো এমন সময় ভাবির কথায় থমকে গেলাম। মোবাইলের স্ক্রিন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মাথা তুলে তাকালে তূর্য ভাইয়া।

—তা তূর্য এখন তো তুমি ওয়েল সেটেল্ড। মা শা আল্লাহ কোনো কিছুর অভাব নেই তোমাদের।কয়েক মাস পর মাস্টার্স ও কমপ্লিট হয়ে যাবে।আই থিংক বিয়ে করে নেওয়া উচিত তোমার।

হাসলো তূর্য ভাইয়া। সিমথীর দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—অবশ্যই করা উচিত। করে ফেলব খুব তাড়াতাড়ি তবে আপনার বোনকে নয়।

তূর্য ভাইয়ার জবাবে হাসি মুখটা চুপসে গেল ভাবীর। বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বললেন তূর্য,,,,

–যেই মেয়ে পর পুরুষের উপর পরের স্বামীর উপর নজর থাকে তাকে অবশ্যই তূর্য চৌধুরী বিয়ে করবে না।এসব মেয়ে সংসার করার জন্য নয় সংসার ভাঙার জন্য পারফেক্ট।

কথাটা বলেই হনহনিয়ে বেড়িয়ে গেলেন তিনি।ভাবি রক্তিম চোখে তাকালেন আমার দিকে।পাত্তা না দিয়ে মাকে বলে আমিও বেড়িয়ে আসলাম।বেড়িয়ে এসে দেখলাম তূর্য ভাইয়া গাড়িতে হেলান দিয়ে মোবাইলে কথা বলছে।পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিব,,,,

চলবে,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

#তোমাতেই পূর্ণ আমি
#পর্ব -৬
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা

“মিস শ্রেয়সী গাড়িতে বসুন। “–পাশ কেটে যেতে নিলেই তূর্য ভাইয়ার কথায় থমকে গেলাম আমি। মায়ের কথা এই লোক সিরিয়াসলি নিয়ে নিল নাতো?আমি যাবো না এই লোকের সাথে।বেয়াদব লোক একটা।ভার্সিটিতে আমার স্বস্তিতে নিশ্বাস নেওয়া হারাম করে এখন দরদ দেখানো হচ্ছে!! আমার তো মনে হচ্ছে প্রথম দিনের অপমানের শোধ নেওয়ার জন্য নতুন কোনো ফন্দি আটছে।ভুলে ও ফন্দি তে পা দেওয়া যাবে না।এসব ভেবেই ওনার কথা কে পাত্তা না দিয়ে চলে যেতে নিব আবারো ডেকে উঠলেন ওনি।কান থেকে ফোনটা সরিয়ে এগিয়ে এলেন আমার কাছে।ওনার কাছে আসা টা শিহরণ তুলছে মনের মাঝে।তাই কিছুটা পিছিয়ে গেলাম আমি।রাগান্বিত চোখ নিয়ে আমার চোখে চোখ রাখলেন তূর্য ভাইয়া। নিমিষেই সরিয়ে নিলাম আমি নিজের চোখ দুটো ওনার চোখের দৃষ্টি থেকে।সাথে সাথেই তূর্য ভাইয়া রাগী কন্ঠে বললেন,,,,,

—ইডিয়ট গার্ল।কি বলেছি শুনতে পাও নি?বয়রা তুমি??কানে শুনতে পাও না?নাকি শুনেও না শোনার ভান করছো?(ধমকে)

রাগ উঠে গেল আমার।ওনি কেন আমায় ধমকাবেন? কোনো অধিকার নেই ওনার আমাকে ধমকানোর।তাই উচ্চ স্বরে বললাম,,,

—যাবো না আমি আপনার সাথে?আমার ইচ্ছা আমার যেভাবে মন চায় ওইভাবেই যাবো।তবে আপনার সাথে ভুলেও না।

—-খালা আমাকে তোমাকে ভার্সিটিতে নিয়ে যাওয়ার রেসপন্সিবিলিটি দিয়েছে।সো এই মুহূর্তে তুমি আমার সাথেই যাবে।নো মোর ওয়ার্ডস।গাড়িতে গিয়ে বসো।

—আপনার সাথে যাব না আমি।

সামনের দিকে পা বাড়াতেই হাতে কারো স্পর্শ পেয়ে থমকে গেলাম আমি।হৃদপিণ্ডটা ছলকে উঠল তড়িৎ গতিতে। কেঁপে উঠল সারা শরীর।ধীরে ধীরে মাথা ঘুরিয়ে দেখলাম তূর্য আমার হাত টা টেনে ধরে রেখেছে।চোখে দুটো রাগান্বিত। এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে যে টেনে ও ছাড়িয়ে আনতে পারছি না।ওনার শক্তি বেশি নাকি আমার শক্তি কম বুঝতে পারছি না।কারো হাত এতো শক্ত কেমনে হয়।হঠাৎ আমার মনে হলো এই স্পর্শ আমি আগেও অনুভব করেছি।হয়তো বা আমার মনের ভুল।তূর্য ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে গাড়ির কাছে নিয়ে এলো।ডোর খুলে বসতে ইশারা করল আমায়।হাত ছাড়ানোর জন্য মোচড়াতে মোচড়াতে বলে উঠলাম,,,

—আপনি কোন সাহসে আমার হাত ধরেছেন?লিভ মাই হ্যান্ড। ছাড়ুন আমার হাত।

আমার কথায় ওনি আরো শক্ত করে ধরলেন হাতটা।মনে হচ্ছে হাতের কব্জির হাড্ডি ভেঙে গুড়িয়ে যাবে।এ কেমন অসভ্যতামি!!ওনি বড় বলে যা ইচ্ছে তাই করবে নাকি?রাগী স্বরে বলে উঠলাম,,,,

—অসভ্যতামি করছেন আপনি তূর্য ভাইয়া। আমার হাত ছাড়ুন।বিধবা মেয়ের সাথে এমন আচরণ শোভা পায় না আপনার।আর এইটা ভার্সিটি ও না।ভুলে যাবেন না সম্পর্কে আমি আপনার ভাবি হয়।

কথাটা বলতে দেরি কিন্তু গালে থাপ্পড় টা পড়তে দেরি হয় নি।গালে হাত দিয়ে কেঁদে দিলাম।ভীষণ ব্যাথা করছে গাল টা।কিছু বলতে নিব তার আগেই আগুনের গোলকের মতো আমার দিকে তেড়ে এলেন তূর্য ভাইয়া। চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট। মুখটা লাল হয়ে গেছে একদম।আমার দিকে তেড়ে আসতেই গাড়ির সাথে একদম সেঁটে দাড়ালাম আমি।ওনার এতো কাছে আসা টা হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্বিগুণ। যা একদম ঠিক না আমার জন্য ।রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন ,,,,,,

—তোর শরীরে কোথাও লিখা আছে বিধবা?বল কোথায় লিখা আছে?(ধমকে)আর ভাবি মাই ফুট।কোন দিক দিয়ে তুই আমার ভাবি লাগিস?যেখানে ভাই -ই নেই সেখানে কিসের ভাবি!!আর তোদের বিয়ে ও আমি দেখি নি।তুই কারো বউ ও না আমার ভাবি ও না।আর কি বললি তুই আমি অসভ্য? তূর্য চৌধুরী কে অসভ্য বলার সুযোগ কখনও কেউ পায় নি।আরেকবার শুনলে তোর জ্বীভ টেনে ছিঁড়ে ফেলব আমি।(রাগী স্বরে)

ভয়ে চুপসে আছি আমি।যতই ভেজাল থেকে দূরে থাকতে চাই একা একটা নিজস্ব শান্তিনীড় বানাতে চাই ততই বেশি কষ্ট, অপমান,,ভেজাল আঁকড়ে ধরে আমায়।গাড়ির হর্নের শব্দে টলটল পায়ে গাড়িতে গিয়ে বসলাম আমি।শরীর এখনো কাঁপছে থরথর করে।কেন মানুষ এতো অপমান করে আমায়?কেন জবাব দিয়ে ও কষ্ট পেতে হয় আমার?কারণ আমি অবহেলিত,,, প্রভাবশালী নয়!!আমার মাথার উপর কারো হাত নেই তাই!!!নিজেকে এতো স্ট্রং করেও বার বার হেরে যায় আমি।হেরে যায় এই সমাজের মানুষ গুলোর কাছে। ভয় ভীতি ভীষণ পছন্দ করে আমায়।তাই চেপে ধরে বার বার।

তূর্য ভাইয়া আমার দিকে ঝুঁকতেই সিটের সাথে চিপকে রইলাম আমি। কেমন অদ্ভুদ ভাবে চেয়ে রইলেন আমার মুখের দিকে।শরীরের কম্পন বেড়ে গেল দ্বিগুণ। পারফিউমের ঘ্রাণ টা নাকে ভেসে আসতেই খুব পরিচিত মনে হলো আমার।সিট বেল্ট বেঁধে দিয়ে সরে গেলেন তিনি।গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে বললেন,,,,

—নিজেকে এতো হেল্পলেস মনে করতে নেই। কেউ না কেউ নিশ্চয়ই আছে তোমার অসহায় জীবনে সহায় হওয়ার জন্য।

অবাক চোখে তাকালাম আমি ওনার দিকে।ওনার দৃষ্টি সামনের দিকে।কি বললেন ওনি?কেউ না কেউ আছে মানে?ওনার এই কথাটা একদম মাথায় ঢুকল না আমার।আর ওনিও এমন ভান ধরে আছেন যেন কিছুই বলেন নি এখন।দৃষ্টি সরিয়ে জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকালাম আমি।বাতাসের দাপটে মাথার গোমটা টা পড়ে যাচ্ছে বার বার।আচ্ছা আজ এতো বাতাস কেন?চারদিকে এতো শীতলতা কেন?এক নজরে তাকিয়ে রইলাম বাহিরের দিকে। ব্যাথায় টনটন করছে গাল টা।শ্রেয়ার চুল গুলো উড়ে এসে বাড়ি খাচ্ছে তূর্যর মুখের উপর।কিন্তু এতে কোনো হেলদোল নেই তূর্যর।হঠাৎ গাড়ি থামাতেই চমকে উঠলাম আমি। তাকিয়ে দেখলাম একটা ফার্মেসীর সামনে গাড়ি থামিয়েছেন তূর্য ভাইয়া।ওনার আবার কি হলো?গাড়ি থেকে বেরিয়ে ফার্মেসীতে ঢুকলেন তিনি।মিনিট পাঁচেক পর ফিরে আসলেন হাতে একটা পানির বোতল নিয়ে।হয়তো ওনার পিপাসা পেয়েছিল।তাহলে ফার্মেসীর দিকে কেন গেল?দূর এতো ভেবে লাভ নেই। গাড়িতে বসে আমার দিকে একটা ট্যাবলেট এগিয়ে দিতেই অবাক হলাম আমি।ওষুধ কিন্তু কেন?আমার কি কোনো রোগ হয়েছে? ওনার দিকে তাকাতেই বললেন,,,,

—পেইন কিলার টা খেয়ে নাও।তূর্যর থাপ্পড় খেয়ে গাল ব্যাথা করবে না তা হতেই পারে না।ইশশশ গালটা তো একদম লাল হয়ে আছে।বেশ জোরেই লেগেছে তাই না?

ওনার কথায় গা জ্বলে উঠল আমার।অযথা কারণে থাপ্পড় মেরে এখন আবার আদিখ্যেতা দেখানো হচ্ছে। মুখ ফিরিয়ে নিলাম আমি।ওষুধ টা হাতে নিয়ে আমার মুখের সামনে ধরলেন ওনি।না নিয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইলাম আমি।

–খেয়ে নাও।নয়তো পরে তো আবার খালা মণির কাছে বলবে বেয়াদব তুর্য চৌধুরী আমায় মেরেছে। (হেসে)

ওনার কথায় চোখ দুটো বড় বড় করে তাকালাম। ওনি কিভাবে জানলেন আমি ওনাকে বেয়াদব ডাকি?

—চোখ দুটো এতো বড় করলে তো বের হয়ে আসবে।পরে আমি চোখ কোথা থেকে আনবো বলো?(মুচকি হেসে)

আমার মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে যাব।ওনার এতো রুপ দেখে যেকোনো মানুষেরই নিজেকে পাগল পাগল মনে হবে।না জানি আরো কত রুপ আছে ওনার।কথা না বাড়িয়ে পেইন কিলার টা খেয়ে নিলাম আমি।সত্যিই গালটা ভীষণ ব্যাথা করছিল। এতো শক্ত হয় কারো হাত!!!

—————

ভার্সিটির কাছে আসতেই ওনাকে বললাম গাড়ি থামাতে।ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওনি আমার দিকে।সহজ ভাবে প্রশ্ন করলেন,,,,

—এখানে কেন?

কি জবাব দিব!!ওনাকে কিছুতেই বলা যাবে না যে প্র্যাকটিক্যাল খাতাগুলো হারিয়ে গেছে নয়তো আবার নতুন কোনো শাস্তি দিবেন ।ভার্সিটিতে আসলেই তো ওনি আগের রূপে ফিরে আসবেন শিওর।তাই মিথ্যা বলতে বাধ্য হলাম।আমতা আমতা করে বললাম,,,,

—-আসলে ভাইয়া আমার একটা বই কিনতে হবে তো তাই।

—ঠিক আছে।

গাড়ি থামাতেই নেমে পড়লাম আমি।আর পিছু না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি করে হেঁটে চলে আসলাম লাইব্রেরি তে।দোকানদার কে বললাম,,,—চারটা ফিজিক্স প্র্যাকটিক্যাল খাতা দিন।

“তার কোনো প্রয়োজন নেই “—কথাটা শুনে পিলে চমকে উঠল আমার।ঢুক গিলে মাথা উঁচু করে পাশ ফিরেই দেখলাম তূর্য ভাইয়া দাড়িয়ে। আজ শেষ আমি!!আবার কোন নতুন ঝামেলায় পড়ি ভেবেই হাত পা অসার হয়ে আসছে।কিছু বলতে যাবো তার আগেই ওনার ” ফলো মি” বাক্য টা শুনে ওনার পিছু পিছু ছুটলাম ।আজকে আর রক্ষে নেই। আমাকে দেখে প্রিয়ু ছুটে আসল আমার দিকে।ফিসফিস করে বলল,,,

–কি হয়েছে শ্রেয়া? তুই তূর্য ভাইয়ার পিছু পিছু যাচ্ছিস কেন?
—এখন আমার সাথে চল সব পরে বলব তোরে যদি আজ বেঁচে থাকি আরকি!!!

তূর্য ভাইয়ার পিছু পিছু ওনাদের ক্লাসে আসলাম আমরা।সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে।এক কোণে দাড়িয়ে রইলাম দুজনে।আমাদের দেখে আয়ুশ ভাইয়া এগিয়ে আসতেই প্রিয়ু ফিসফিস করে বলে উঠল,,,

—আয়ুশ কত্তো সুন্দর তাই না রে শ্রেয়া!(লজ্জিত ভঙ্গিতে)

প্রিয়ুর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম আমি।বলে কি এই মেয়ে?এই মেয়ে আবার আয়ুশ ভাইয়ার উপর ক্রাশড নয় তো?

—ক্রাশ খেয়েছিস?(হেসে)
–নাতো।প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি। (ভাবলেশহীন ভাবে)

প্রিয়ু আয়ুশ ভাইয়া কে ভালোবাসে?তবে ওই চিরকুট, আমার প্রতি আয়ুশ ভাইয়ার চাহনি!!!না কিছুতেই প্রিয়ু কে কষ্ট পেতে দেওয়া যাবে না।মেয়েটা আমার জন্য অনেক করেছে। পাশে এসে দাড়িয়ে আয়ুশ ভাইয়া কিছু জিজ্ঞেস করবে এমন সময় তূর্যর রাগী কন্ঠে ওনার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করল সবাই।।

—খাতা গুলো বের কর নিশি,,,
—-কিসের খাতা তূর্য,,,? (আমতা আমতা করে)
বাঁকা হাসলেন তূর্য ভাইয়া।

–ওহ্ তুই জানিস না?তাহলে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। শ্রেয়সী কে গতকাল যেই প্র্যাকটিক্যাল খাতাগুলো করতে দেয়া হয়েছিল সেগুলো,,

—মানে?

—মানে টা খুব ইজি নিশি।এত বড় বাড়ির মেয়ে হয়ে ও তুই চুরি করা শুরু করে দিয়েছিস।

—তুই আমায় এমন করে বলতে পারিস না তূর্য। খাতাগুলো আমি নিয়েছি তবে কোনো রিজন আছে তাই না?

নিশি আপুর কথায় বুঝার আর বাকি রইল না কাল খাতাগুলো ওনি নিয়েছেন। শুরু থেকেই ওনি কেমন যেন বিহেভ করতেন আমার সাথে।হয়তো অনেকের মতো তারও আমাকে অপছন্দ।

—কি কারণ শুনি?—প্রশ্ন টা করে পাশের চেয়ার টা তে বসলেন তূর্য ভাইয়া।

খাতাগুলো বের করে তূর্য ভাইয়ার সামনে রাখল নিশি আপু।আমার দিকে অগ্নি চোখে তাকিয়ে বললেন,,,,,

—এই মেয়ে তোকে অপমান করেছে তূর্য। তুই ভালো করেই জানিস তোকে কেউ অপমান করলে সেটা কখনো সহ্য করব না আমি।তাই এই মেয়েকে শিক্ষা দেয়ার জন্য খাতাগুলো সরিয়ে নিয়েছি আমি যেন খাতাগুলো কমপ্লিট করতে না পারে আর সুযোগ হারিয়ে তোর কাছ থেকে কঠিন একটা শাস্তি পায়।আমি ভালো করেই জানি এই মেয়ে খাতা কিনে দু দিনে কমপ্লিট করতে পারবে না।কারণ এই মেয়েতো একটা ফকিন্নির বাচ্চা।

সাথে সাথেই আমার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগল।এমন একটা কথায় কলিজা টা ছিঁড়ে যাচ্ছে আমার।এখানে থাকলে আর নিজেকে সামলাতে পারব না। আকস্মিক খাতাগুলো ছুঁড়ে ফেললেন তূর্য ভাইয়া। আমার দিকে একবার তাকিয়ে নিশি আপুর দিকে রক্তিম চোখে তাকালেন।

—-ঐ মেয়েকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার শুধু আমার।ও আমার দোষী তাই ওকে শাস্তি ও আমি দিব।তুই কে দেওয়ার?কেন এসেছিস আমাদের মাঝে?কোনো অধিকার নেই তোর বা অন্য কারো ওকে আঘাত করার।ওকে কষ্ট, আঘাত দেওয়ার অধিকার ও শুধু আমার।আমার পিছন পিছন চাল চালিস।আজ বন্ধু বলে বেঁচে গিয়েছিস নয়তো এখানেই জ্যান্ত পুঁতে ফেলতাম।–উচ্চস্বরে রেগে বললেন তূর্য। পাশের চেয়ার টা কে লাথি দিয়ে ফেলে আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে।

সবাই থমকালো ওনার কথায়।ওনি কেন এসব বললেন?সামান্য একটা ব্যাপারে এতো রিয়েক্ট!!!!!!

চলবে,,,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here