তোমাতে আবদ্ধ আমি,পর্বঃ- ১

0
2545

তোমাতে আবদ্ধ আমি,পর্বঃ- ১
লেখকঃ- Tamim

আপনার মা’কে বাঁচাতে হলে আপনাকে আমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। তাহলেই আমি আপনাকে আপনার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা দিব।

মায়ার এমন কথা শুনে তামিম অনেকটা অবাক হলো। মায়ার থেকে তার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা চাওয়াতে মায়া যে তাকে এরকম একটা প্রস্তাব দিয়ে বসবে এটা তামিম সপ্নেও ভাবেনি। তামিম কিছুক্ষণ চুপ থেকে শান্ত গলায় বললো…

তামিমঃ ম্যাডাম আপনি ভালো করেই জানেন যে আমি বিবাহিত তা ছাড়া আমার একটা মেয়েও আছে। তারপরও আপনি কিভাবে আমায় এই প্রস্তাবটা দিলেন.?

মায়াঃ হ্যাঁ আমি জানি আপনি বিবাহিত আর এটাও জানি আপনার একটা মেয়েও আছে। কিন্তু আপনি হয়তো ভুলে গেছেন যে আপনার স্ত্রী এখন আর বেঁচে নেই। আপনি হয়তো আপনার স্ত্রীকে ছাড়া কোনোভাবে সারাজীবন কাটিয়ে দিবেন কিন্তু আপনার মেয়ে তো এখনো অনেক ছোট সে কিভাবে একটা মা ছাড়া

তামিমঃ মাইশার চিন্তা আপনাকে করতে হবে না। ওর মা মারা যাওয়ার পর থেকে আমিই ওকে লালন-পালন করে আসছি আর সারাজীবন করে যাব। তা ছাড়া আমিই ওর বাবা আর আমিই ওর মা (মায়াকে পুরো কথা বলতে না দিয়ে তামিম একনাগাড়ে কথাগুলো বললো)।

মায়াঃ এই কথাগুলো বলতে যতটা সহজ তা বাস্তবে রুপান্তরিত করা ততটা সহজ নয় তামিম সাহেব (কোমল স্বরে)।

তামিমঃ আমার মা খুবই অসুস্থ ম্যাডাম। আপনি কি উনার চিকিৎসার জন্য আমায় ২ লাখ টাকা দিতে পারবেন না.? (মাথা নিচু করে প্রসঙ্গ পালটানোর জন্য কথাটা বললো)

মায়াঃ আমি আপনার নামে আমার এই পুরো কোম্পানিটাই লিখে দিব তামিম সাহেব, শুধু আপনি আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। আর আপনার মেয়েকে আমি একদম নিজের মেয়ে মনে করেই ভালোবাসবো।

তামিমঃ আপনার এই কোম্পানির প্রতি আমার বিন্দু পরিমাণও লোভ নেই যে কোম্পানির মালিক হওয়ার জন্য আপনাকে আমি বিয়ে করবো। সরি ম্যাডাম আমার পক্ষে আপনার এই প্রস্তাবটা রাখা সম্ভব নয়। তা ছাড়া আপনার আম্মু-আব্বুও চাইবেন না যে আমার মতো একটা বিবাহিত পুরুষের সাথে আপনার বিয়ে হোক। তাহলে কেন এমন করছেন.?

মায়াঃ আমার আম্মু-আব্বুর কথা আপনাকে ভাবতে হবে না। আমি ওদের বুঝিয়ে বললে ওরা অবশ্যই রাজি হবে।

তামিমঃ ম্যাডাম প্লিজ, একটু বোঝার চেষ্টা করুন। এটা আমার মায়ের বাঁচা-মরার বিষয় (অনেকটা মিনতির স্বরে কথাটা বললো)।

মায়াঃ আমার প্রস্তাবে রাজি হলেই আমি আপনাকে আপনার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা দিব Otherwise I’m Sorry.

তামিমঃ ম্যাডাম প্লিজ।

মায়াঃ আর কিছু বলার থাকলে বলেন নাহলে এখন যেতে পারেন (বলেই একটা ফাইল নিয়ে কাজে লেগে পরল)।

তামিম আর কিছু না বলে সেখান থেকে নিজের ডেক্সে চলে আসলো। ডেক্সে এসে তামিম মন খারাপ করে বসে আছে এমন সময় তার ফোনে একটা কল আসলো। তামিম ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল ডাক্তার ফোন দিয়েছে।

তামিমঃ আসসালামু ওয়ালাইকুম। জী বলুন.? (কল রিছিভ করে)

–তামিম সাহেব আপনার মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে আছে। যত দ্রুত উনার চিকিৎসা করবেন ততই উনার জন্য ভালো হবে।

তামিমঃ জী আমি আগে চিকিৎসার টাকাগুলো ম্যানেজ করে নেই তারপর

–ওকে তাহলে আপনি টাকা ম্যানেজ করেন আমি এখন রাখছি (বলেই কল কেটে দিল)।

ডাক্তারের সাথে কথা বলা শেষে তামিম মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলো। সে কি করবে এখন, এতো টাকা কিভাবে ম্যানেজ করবে তাঁর কিছুই ভেবে পাচ্ছে না সে। মায়াদের কোম্পানিতে তামিম ৩ মাস ধরে কাজ করছে। মায়া তামিমের বসের মেয়ে। সে কোম্পানিতে জয়েন হওয়ার এক মাস পরেই মায়ার বাবা মায়াকে পুরো কোম্পানির বস বানিয়ে তাঁর কাধে পুরো কোম্পানির দায়িত্ব দিয়ে দেন। তামিম প্রতি মাসে এইখান থেকে ২৫ হাজার টাকা বেতন পায়। তা দিয়ে বাসা ভাড়া আর মাইশার পড়াশোনার খরচ, তার মায়ের ঔষধ খরচ সাথে পুরো সংসারটাও চালায়। এসবের মধ্যে ভালোই চলছিল তাদের দিনকাল কিন্তু ইদানীং কিছুদিন ধরে তামিমের আম্মুর শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না তাই সে একদিন সময় করে তাঁর আম্মুকে নিয়ে একটা ডাক্তারের কাছে যায়। ডাক্তারের কাছে গিয়ে তামিম জানতে পারে তাঁর আম্মুর তল পেটে টিউমার হয়েছে। এই কথাটা জানার পর থেকেই তামিমের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে।

তারপর থেকেই তামিম তার আম্মুর চিকিৎসার জন্য টাকা ম্যানেজ করার চেষ্টায় লেগে যায়। তাঁর কোনো পরিচিত আত্নীয়ও নেই যে তাদের কাছে গিয়ে তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা চাইবে। তাই সে একপ্রকার বাধ্য হয়েই আজ অফিসে এসে মায়ার কেবিনে গিয়ে তাঁর আম্মুর অসুস্থতার কথা জানিয়ে তাঁর কাছে ২ লাখ টাকা ধার চায়। কিন্তু টাকা দেওয়ার বদলে যে মায়া তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসবে এটা তামিম ভাবতেই পারেনি।

তামিম আর নীলা (তামিমের স্ত্রী) দুজনে প্রেম করে বিয়ে করেছিল। তামিম ছিল গরিব পরিবারের ছেলে, তখন সে টিউশনি করিয়ে যা টাকা পেত তা দিয়েই সংসার চালাত তাই নীলার পরিবার তামিমের কাছে তাকে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু নীলা পরিবারের অমতে গিয়ে তাকে বিয়ে করায় নীলার পরিবার নীলার সাথে সব ধরনের সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় আর এটাও বলে দেয় সে যেন আর কোনোদিনও তাদের কাছে ফিরে না আসে। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের সংসার আলোকিত করে মাইশা জন্ম নেয়। কিন্তু ওইদিন মাইশাকে জন্ম দিতে গিয়ে নীলা এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। মারা যাওয়ার পূর্বে নীলা তামিমকে একটা কথাই বলে যায়, নিজের জন্য না হোক তাদের মেয়ের জন্য সে যেন দ্বিতীয় বিয়ে করে নেয়। কিন্তু তামিম নীলার জায়গা অন্য কাউকে মেনে নিতে পারবে না বলে আজও বিয়ে করেনি। নীলার মৃত্যুর কিছুদিন পরেই তামিম সেই শহর ছেড়ে এই শহরে চলে আসে।

তামিম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল ১২ টা বেজে গেছে। এতক্ষণে মাইশার স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। মাইশা একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে তাই ১২ টার দিকেই তাঁর স্কুল ছুটি হয়ে যায়। তাকে এখন মাইশাকে আনতে তাঁর স্কুলে যেতে হবে। তাঁর আগে তাকে মায়ার কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য ছুটি নিতে হবে, তাই সে তাঁর ডেক্স থেকে উঠে সোজা মায়ার কেবিনে চলে আসলো।

তামিমঃ May I Coming Madam.?

মায়াঃ Yes.

তামিমঃ ম্যাডাম মাইশার স্কুল ছুটি হওয়ার সময় হয়ে গেছে। আমাকে এখন তাকে আনতে তাঁর স্কুলে যেতে হবে।

মায়াঃ যদি আমি আপনাকে যেতে না দেই.?

তামিমঃ কিন্তু কেন ম্যাডাম.? আপনি তো প্রতিদিন আমাকে

মায়াঃ আরে শান্ত হোন, আমি তো বলিনি যে যেতে দিব না জাস্ট বললাম যদি না দেই আর এতেই আপনি উত্তেজিত হয়ে পরলেন.! বসুন একটু।

তামিমঃ এখন বসলে হবে না ম্যাডাম, আমাকে যেতে হবে।

মায়াঃ উফফ আপনি এতো কথা বলেন কেন হে.? আপনাকে বসতে বলেছি বসেন (কিছুটা রেগে গিয়ে)।

তামিম আর কিছু না বলে বাধ্য হয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পরল। প্রায় ৫ মিনিট ধরে মায়া তামিমকে তাঁর কেবিনে বসিয়ে রেখে ল্যাপটপে কাজ করে যাচ্ছে। মায়ার এমন কাজে তামিম অনেক বিরক্ত হয়ে উঠেছে সাথে মাইশার জন্য টেনশনও করছে। মেয়েটা স্কুল থেকে বেরিয়ে যদি তাকে না পায় তাহলে সে কি করবে.?

–আব্বু, আমি এসে গেছি।

হঠাৎ পিছন থেকে একটা বাচ্চা মেয়ে কথাটা বলে উঠলো। তামিম ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে ফিরে তাকাতেই চমকে উঠলো। একি মাইশা এইখানে কিভাবে এলো.! কে নিয়ে এসেছে তাকে এইখানে.? তামিম বসা থেকে উঠে দাড়ালো আর মাইশার কাছে এসে বললো…

তামিমঃ তুমি এইখানে কিভাবে এলে মামনি.?

মাইশাঃ আমাকে একটা আংকেল গাড়ি করে এইখানে দিয়ে গেছে আব্বু।

তামিমঃ কোন আংকেল.? তুমি চিন উনাকে.?

মাইশাঃ নাহ উনি বললো তুমি নাকি উনাকে পাঠিয়েছ তাই আমি উনার সাথে চলে এসেছি।

মায়াঃ উনি আমার ড্রাইভার ছিলেন। আমিই উনাকে পাঠিয়ে ছিলাম মাইশাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার জন্য।

তামিমঃ আপনি শুধু শুধু এমনটা

মায়াঃ আর কতদিন এইভাবে কাজ রেখে ওকে আনতে যাবেন শুনি.? যাইহোক বাদ দেন, মামনি এইখানে আস তো।

মাইশাঃ কি আন্টি.? (মায়ার কাছে এসে)

মায়াঃ এই নাও চকলেট এটা তোমার জন্য (মাইশার দিকে এগিয়ে দিয়ে)।

মাইশাঃ Thank You আন্টি (বলেই মায়ার গালে একটা চুমু খেল)।

মায়াঃ Welcome মামনি (বলে সেও মাইশার গালে একটা চুমু খেল)।

তামিমঃ ওকে তো স্কুল থেকে নিয়ে আসলেন এখন ওকে বাসায় কে নিয়ে যাবে.?

মায়াঃ খালি বাসাতে ও একা একা থাকবে কিভাবে.? আপনি গিয়ে আপনার কাজ করেন ও ততক্ষণে আমার কাছে থাকুক। যাওয়ার সময় ওকে সাথে নিয়ে যাবেন।

তামিমঃ কিন্তু অফিসের স্টাফরা কি ভাববে.?

মায়াঃ এইখানে ভাবার কি আছে আজব.! যান তো আপনি গিয়ে কাজ করেন (ঝাড়ি মেরে)।

তামিমঃ আচ্ছা মামনি তুমি আন্টির কাছে থাক আমি এখন যাই কেমন.?

মাইশাঃ আব্বু আমি তোমার সাথে যাব।

তামিমঃ নাহ মামনি তুমি এইখানে থাক আব্বু যাওয়ার সময় তোমায় সাথে নিয়ে যাব।

মাইশাঃ আচ্ছা আব্বু।

তারপর তামিম সেখান থেকে নিজের ডেক্সে চলে গেল। তামিম কাজ করার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে মায়ার কেবিনের দিকে তাকিয়ে দেখছে মাইশা কি করছে। মায়া মাইশাকে নিজের পাশে বসিয়ে ল্যাপটপে কাজ করছে আর তাঁর সাথে কথা বলছে।

–––––––

অফিস শেষে তামিম মাইশাকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসলো তাঁর আম্মুকে দেখার জন্য।

তামিমঃ কেমন আছ আম্মু.?

তামিমের আম্মু তখন শুয়ে ছিলেন তিনি হালকা উঠার চেষ্টা করে বললেন, এইতো আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি। তুই কেমন আছিস বাবা.?

তামিমঃ আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আম্মু।

তামিমের আম্মুঃ দাদু ভাই তুমি কেমন আছ.?

মাইশাঃ আমিও ভালো আছি দাদু, তুমি কি আর বাসায় যাবে না.? তোমায় ছাড়া আমার বাসায় থাকতে ভালো লাগে না।

তামিমের আম্মুঃ হে দাদু ভাই যাব তো কিছুদিন পরেই (হালকা হেসে)।

তামিমঃ আম্মু তোমার চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড় করে ফেলেছি। তুমি আর চিন্তা কর না কাল-পরশু তোমার অপারেশন শুরু করে দিবে ডাক্তার বলেছে (মিথ্যা বললো)।

তামিমের আম্মুঃ এতো টাকা তুই কোথায় পেলি বাবা.?

তামিমঃ আমি যেই অফিসে কাজ করি সেই অফিসের বসের থেকে ধার নিয়েছি। প্রতি মাসে আমার বেতন থেকে কিছু টাকা রেখে দিবে তার থেকেই আস্তে আস্তে উনার টাকার শোধ করবো।

তামিমের আম্মুঃ শুধু শুধু এমনটা করতে গেলি কেন বাবা.? আমি আর কয়দিনই বাঁচ

তামিমঃ আম্মু চুপ কর তো (ধমকের স্বরে)। আচ্ছা আমরা এখন যাই, কাল সকালে আবার আসবো নে।

তামিমের আম্মুঃ আচ্ছা বাবা সাবধানে যাস।

তারপর তামিম মাইশাকে নিয়ে সেখান থেকে বাসায় চলে আসলো। বাসায় এসে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে চুলায় গরম করে মাইশাকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিল। খাওয়া শেষে সে মাইশাকে ঘুম পাড়িয়ে দিল। মাইশা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তামিম নীলার একটা ফ্রেমে বাঁধানো ছবি বের করে ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইলো। মারা যাওয়ার আগে নীলা নিজেই বলেছিল নিজের জন্য না হোক তাদের মেয়ের জন্য নাহয় সে একটা বিয়ে করে নেয়। হয়তো মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই নীলা কথাটা বলেছিল। কিন্তু এখন হয়তো তাঁর নিজের মা’কে বাঁচানোর জন্য তাকে আরেকটা বিয়ে করতে হবে। এই বিয়েটা যদি সে না করে তাহলে তো তাঁর মা’কে বাঁচাতে পারবে না। আর বিয়ের পর মায়া যদি মাইশাকে ভালো না বাসে তখন মাইশার কি হবে.? তা ছাড়া মায়া ম্যাডামের মা-বাবা কিভাবে আমার সাথে উনার মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি হবেন.? উনি হাজার বললেও তো ওরা উনাকে আমার সাথে বিয়ে দিবে না। তামিম সারা দুপুর এমনকি সারা রাত এ বিষয়ে ভাবলো। অনেক ভেবে চিন্তে তামিম একটা সিদ্ধান্ত নিল যার ফলে সে তাঁর আম্মুকে বাঁচাতে পারবে, আর তাকে এই কাজটাই করতে হবে।

–––––––

–আমি আপনার প্রস্তাবে রাজি ম্যাডাম। তবে আমার কিছু শর্ত আছে।

সকালবেলা অফিসে এসে তামিম সোজা মায়ার কেবিনে চলে আসে আর উপরোক্ত কথাগুলো বলে। হঠাৎ তামিমের আগমন + সে মায়ার প্রস্তাবে রাজি হওয়াতে মায়ার মুখে একটা বিশ্বজয়ী হাসি ফুটে উঠলো। মায়া বেশ আনন্দের সাথেই বলে উঠলো…

মায়াঃ আপনি রাজি হয়েছেন এটা শুনে খুব খুশি হলাম। বলুন আপনার কি শর্ত আছে.?

তামিমঃ মাইশা আমার সন্তান কিন্তু আমার সাথে আপনার বিয়ে হলে সেও আপনার সন্তান হবে আর মাইশাই সারাজীবন আমাদের একমাত্র সন্তান হয়ে থাকবে। মানে বিয়ের পর আমি কোনো বেবি নিতে পারবো না। যদি মাইশাকে নিজের মেয়ে হিসেবে মানতে পারেন তাহলে আপনাকে বিয়ে করতে আমার কোনো আপত্তি নেই। ভেবে দেখুন এবার কি করবেন।

মায়াঃ আমি তো সেদিনই বললাম যে আমাকে বিয়ে করলে আমি মাইশাকে একদম নিজের মেয়ের মতোই দেখবো। আর আমি কখনো নিজ থেকে আপনাকে বেবি নেওয়ার জন্য চাপ দিব না। যদি কখনো আপনার বেবি নেওয়ার ইচ্ছা হয় তাহলেই আমরা বেবি নেওয়ার বিষয় নিয়ে ভাবব (মুচকি হেসে)।

তামিমঃ তাহলে আমরা কবে বিয়ে করছি.?

মায়াঃ আজ অফিস শেষে আমার জন্য অপেক্ষা করিয়েন দুজন মিলে একটা কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করে নিব। জানি আপনি অনুষ্ঠান করে বিয়ে করতে রাজি হবেন না তাই আমি ঠিক করেছি আমরা এভাবেই বিয়ে করবো। আর হে, বিয়ের পর কিন্তু আমি আপনার বাসাতে থাকব মাঝেমধ্যে আমাদের বাসাতেও যাব।

তামিমঃ বিয়েতে আপনার আম্মু-আব্বু আসবেন না.?

মায়াঃ শুধু আব্বু আসবেন আম্মু একটু অসুস্থ তাই আসবেন না।

তামিমঃ আচ্ছা তাহলে আমি এখন যাই (বলেই সেখান থেকে বেরিয়ে নিজের ডেক্সে চলে আসলো)।

সন্ধ্যাবেলা…

তামিম আর মায়া অফিস শেষে কাজি অফিসে এসে কাজির সামনে বসে আছে। তাদেরই পাশে মায়ার আব্বু মাইশাকে কুলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মাইশাকে স্কুল থেকে সোজা অফিসে নিয়ে আসা হয় অতঃপর অফিস শেষে তাদের সাথে কাজি অফিসে। কিছুক্ষণ পর কাজি সাহেব মায়াকে কবুল বলতে বললে সে কবুল বলে দিল। তারপর যখন তামিমকে কবুল বলতে বলা হলো তখন সে একবার মাইশার দিকে তাকিয়ে চোখ বুজে খুবই কোমল কণ্ঠে ‘কবুল’ শব্দটা বলে উঠলো। অবশেষে তাঁরা দুজনে ‘বিয়ে’ নামক একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেল.!
.
.
.
.
.
Loading…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here