তোমাতে_আমি
অন্তিম পর্ব
#লেখিকাঃRadhika_Rai_Bormon
?
রিদ কে বরন করে কিরনের মা ভেতরে নিয়ে গেলো, অন্যদিকে কিরন এখনো অপেক্ষা করে আছে জানালায়, কোন একজনের অপেক্ষায়, খুব ইচ্ছে করছে ঈশানের সাথে কথা বলতে, কিন্তু বাড়ি ভর্তি মানুষ এতো মানুষের ভিরে ফোন করলে নির্ঘাত সন্দেহ করবে সবাই। রিদ এর কয়েকজন কাজিন এসে রুমের ভেতর ঢুকলো,
কি গো বৌদি জানালায় দাড়িয়ে কি দেখো? দাদাকে দেখছ বুঝি? রিদের বোন রিহা বলল।
আরে কি করছিস এভাবে কথা বলছিস কেনো বৌদি লজ্জা পাচ্ছে দেখিস না (নেহা)
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে,
এর মধ্যেই রুমে আরেকটা মেয়ে এসে ঢুকলো,
এই কে গো তুমি? (নেহা)
আমি,, আমি কিরনের বান্ধবী রাই।
কিরন অবাক হয়ে তাকালো এই মেয়েটা কি বলছে ওর বান্ধবী? এর সাথে তো কখনো দেখাই হয়নি, মেয়েটা চোখের ইশারায় কিরন কে চুপ থাকতে বলল।
,
কিছু মনে না করলে একটু বাহিরে যাবেন আমার কিরনের সাথে কিছু কথা আছে, আসলে কিছুক্ষণ পর চলে যাবে তো (রাই)
ওকে, বাট বৌদি রেডি থেকো অনেক জালাবো কিন্ত, (নেহা)
ঠিক আছে বোন, জালাইয়ো আমি কিরন কে সেভাবেই প্রস্তুত করে দিবো (রাই)
নেহা আর রিহা রুমের বাহিরে চলে গেলো।
রাই তাড়াতাড়ি দরজা টা ভেতর থেকে নক করে কিরনের দিয়ে হিংস্র ভাবে আসতে লাগলো,
কে, কে আপনি আর এভাবে আসছেন ক্যানো? (কিরন)
মারতে এসেছি, খুব সখ না রিদ কে বিয়ে করার, সখ মিটিয়ে দিবো, (রাই)
কিরন ভয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে।
হো হো করে হেসে উঠলো রাই ,ওহ বৌদি তুমি ভয় ও পাও, যা সুন্দর লাগছে না এভাবে দেখতে, দাদা দেখলে তো অজ্ঞান হয়ে যাবে..।
দাদা? কে রিদ?
তুমি আসলেই পাগলি রিদ হবে ক্যানো, ঈশান,
ওহ ও কোথায় কেমন আছে, কি করছে, ভালো আছে তো গড় গড় করে প্রশ্ন করলো কিরন.
উফ বৌদি কেমন আছে সেটা শুভ দৃষ্টিতেই দেখতে পাবে, এখন আসি বাহিরে সবাই অপেক্ষা করছে (রাই)
মুচকি হেসে রাই কে বিদায় দিলো কিরন।
কিছুক্ষনের মধ্যেই বাড়িতে পুলিশ আসায় হইচই পড়ে গেলো বাড়িময়। সেদিন ঈশানের ফোনটা কেড়ে নিলেও আরেকটা ফোন ছিলো ঈশানের কাছে, ঈশান সি আইডি অফিসার, রিদের ব্যাপারে অনেকদিন থেকেই রিপোর্ট আসছিলো, বিভিন্ন রকমের মেয়ে পাচার, ইফটিজিং রেপ কোনো কেস বাকি নেই টাকার জন্য সব করে, কিন্তু এতোদিন প্রমানের অভাবে ধরতে পারেনি, তাই এডমিশন নিয়ে কিরনের কলেজে ভর্তি হয়, আর তারপর থেকেই নানা রকম প্রমান জোগাড় করে রিদের বিরুদ্ধে কিরনকে বিয়ে করে সম্পত্তি হাতাতে চাওয়ারো প্লান ধরা পড়ে যায়, ঈশানকে গোডাউনে রেখে যাওয়ার পর ঈশানের গ্যাং এসে ওকে ছাড়িয়ে নেয় আর রিদ কে ধরার জন্য বিয়ে নামক নাটক টা করলো কিরন, সেদিন রাতেই মেসেজে সব জানিয়ে দেয় ইশান। রিদকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ইশান আর ওর ফ্যামিলি নিয়ে আসে কিরনকে বিয়ে করতে।
কিছুক্ষণ পর ছাদনাতলায় নিয়ে যাওয়া হলো কিরন কে, শুভ দৃষ্টি মালা বদল সাত পাক, আর সিদুর দানের মধ্যে বিয়ে বন্ধনে বাধা পড়ে দুজনেই।
সিন্ধান্ত তোমার ছিলো, পুরন আমি করেছি, আর এখন সংসার টাও তোমার হলে গেলো, তুমি যেভাবে চালাবে ঠিক সে ভাবেই চলবে তবে, যা করবে মন দিয়ে করবে ,, কাদতে কাদতে মা বলল।
তুমি দেখে নিও মা আমি যেমন তোমার অবাধ্য না তেমন ঈশান আর ঈশানের মায়েরো অবাধ্য হবো না, আমার পরিবারের জন্য আমি আমার সবটা দিয়ে দিবো, কখনো কাউকে কষ্ট পেতে দিবো না। (কিরন)
হুম আমার লক্ষি মেয়ে, তুমি সারাজীবন এতোটাই সরল থেকো (মা)
মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে ঈশানের বাড়িতে পা রাখলো কিরন।
চোখে অনেক স্বপ্ন, ছোট একটা সংসার নিয়ে।
অতি সমাদরে বরন ঘরে তোলা হলো।
বাসর ঘরে কিরন বসে আছে, কিছুক্ষণ পর ঈশান রুমে আসলো।
কিরন নেমে প্রনাম করতে গেলে ঈশান থামিয়ে দেয়।
রুমে আর কে আছে কিরন? (ঈশান)
মানে (কিরন)
ঈশান খাটের তলা থেকে রাইকে কান ধরে টেনে বের করলো।
উফফ দাদা ছাড় লাগছে খুব ,,
ছাড়ব এই তুই এখানে কেনো? (ঈশান)
আ আমিই ওই তে তেলা পোকা খাটের তলায় ছিলো ওইটা নিতে এসেছি (রাই)
কিহ তেলাপোকা ওরে বাবা,, এক লাফে খাটে উঠলো।
ও কি করছো খাট ভাংবে তো (ঈশান)
কিরন মুখ ভার করে বসে রইলো, শেষে কিনা ঈশান ও এভাবে বললো।
রাইকে বের করে দিয়ে ঈশান কিরনের কাছে আসলো।
আচ্ছা এতো বোকা কেনো তুমি? আরে আমি ফান করেছিলাম সরিই বউ।
কিরন মুখ ভার করে বসে আছে, কোনো উত্তর না দিয়ে,
আরে কিরনের মা কিরন সরি।
এ্যা এ আবার কেমন কথা (কিরন)
শোনো আমি আমাদের মেয়ের নাম ও কিরন রাখবো, আর যখন ডাকব কিরন, তখন মা মেতে দুজনেই ছুটে আসবে (ঈশান)
আগে তো জানতাম আমি পাগল এখন তো দেখি তুমিও (কিরন)
হ্যা পাগল তো, পাগল না হলে কি আর ভালোবাসতাম।
কিরন কে কাছে টেনে নিয়ে কপালে আলতো করে একটা টিপ একে দিলো ঈশান।
একটা সাদামাটা জীবন তোমাকে নিয়ে শুরু আজ থেকে, আর আমি ঠিক তোমার মাঝেই আমাকে পেয়েছি ভালোবাসি কিরন, তুমি আমার আর আমাতেই তুমি।
,
সমাপ্ত,,এতোদিন পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে ভালো থাকবেন, আর যারা আমার গল্প জগতে না থাকা নিয়ে প্রশ্ন করছো তাদের কে একটা কথাই বলি,লেখার জন্য খাতা কলম দুটোই লাগে আর আমার লাইফ থেকে কলমটা হারিয়ে ফেলেছি আমি, কখনো যদি কলম ছাড়া লেখার কোনো উপায় খুজে পাই তাহলে নিশ্চই ফিরে আসবো, তোমাদের ভালোবাসা থেকে দূরে থাকার সাধ্য নেই আমার, যথা সাধ্য চেষ্টা করব, এই কয়েকদিন ভালো থেকো, ভালোবাসা রইলো, শুভ রাত্রি??