#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই,০২,০৩
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
#পার্টঃ২
বলতে বলতে বিষন্ন আমার একদম সামনে দারালো।ওর নিশ্বাস আমার মুখের ওপর পড়ছে।বিষন্ন আমার ওড়নাটা বুক থেকে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো।এরপর ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো বিছানায়।
বিছানায় ফেলে দিয়ে বিষন্ন শয়তানের মতো হাসছে।ওর এমন আচরনে আমার যেমন ভয় হচ্ছে তেমনি রাগও হচ্ছে। আমি বিছানা থেকে উঠতে চেষ্টা করলে বিষন্ন আমার দুই হাত চেপে ধরলো।ওর শক্তির কাছে আমি পেরে উঠতে পারলাম না।অনেক্ক্ষণ ওর সাথে হুরঝুটি করে এখন খুব ক্লান্ত লাগছে।বিষন্ন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে আছে। আমি রাগি স্বরে বললাম
” বিষন্ন ছাড় আমায়,তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? কেনো করছিস এমন? ছাড় প্লিজ,কেউ দেখে ফেললে আমার মরণ ছাড়া উপায় থাকবে না ”
” এখন কেনো এসব বলছো? যখন সারাক্ষণ পেছন পেছন ঘুরেছিলাম,সারাক্ষণ ভালোবাসি ভালোবাসি বলতাম তখন তো খুব বকা দিতে,শাসন করতে।একবারও আমার মনের অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করোনি, ”
” বিষন্ন তুই ভুলে যাচ্ছিস আমি তোকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখি।আর আমি এতোদিন ভাবতাম তুই মজা করে বলতিস এসব,কিন্তু… ”
” কোনে কিন্তু নয়,অনেক সহ্য করেছি আমি।এই বিষন্নকে তুমি অনেক ঘুরিয়েছো,সেই সবকিছুর প্রতিশোধ আমি এবার নিবো ”
” বিষন্ন প্লিজ এরকম করিস না,ছাড় আমায়।হাতে প্রচন্ড ব্যাথা লাগছে ”
” লাগলেও আমার কিছুই করার নেই,এর থেকেও অনেক কষ্ট তুমি আমাকে দিয়েছো।এসব বাদ দাও,চলো তোমায় একটু আদর করি, ”
কথাটা বলেই বিষন্ন আমার মুখে আছড়ে পড়া চুলগুলি সরিয়ে দিতে লাগলো।আমি কয়েকটা চিৎকার দিতেই ওর হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরলো।আমার চোখ দিয়ে শুধু টপটপ করে পানি পড়ছে।এই মুহূর্তে নিজেকে খুব তুচ্ছ লাগছে।বিষন্ন আরো কাছাকাছি আসলো।লজ্জায়,ভয়ে আমি ঠোঁটে ঠোঁট চেপে চোখ বন্ধ করে রইলাম।
বেশ কিছুক্ষণ হলো বিষন্নর কোনো স্পর্শ পাচ্ছি না।ভয়ে ভয়ে চোখটা হাল্কা মেলতেই দেখলাম বিষন্ন চেয়ারে পা নাচিয়ে নাচিয়ে চা খাচ্ছে।আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলাম।কি হলো ব্যাপারটা? ও কি অন্য কোনো মতলব আঁটছে নাকি? আমি বিছানা থেকে উঠে বসলাম।হাত খুব ব্যাথা করছে।হাত চেপে ধরায় চুরির আঘাতে হাত কালচে হয়ে গেছে।বিছানা বসে থেকেই আয়নাটা দেখা যায়।আয়নায় নিজেকে দেখে একটু অবাক হলাম।আয়নায় দেখছি আমার চুলে একটা গোলাপ,সাথে বেলী ফুলের মালা।আমি বিষন্নর দিকে তাকালাম।
বিষন্ন নিজের মতোই পা নাচিয়ে চা খাচ্ছে।এমন একটা ভাব করছে যেন কিছুই হয়নি।রাগে গা ঘিনঘিন করতে লাগলো আমার।উঠে গিয়ে ওর গালে ঠাস করে একটা চর বসিয়ে দিলাম।বিষন্ন চুপ করে মাথা নিচু করে বসে রইলো।চুল থেকে বেলী ফুলের মালা আর গোলাপটা ওর মুখে ছুড়ে দিয়ে কিছু কটু কথা গজগজ করে বলে বাইরে চলে আসলাম।কথাগুলি ছিলো
” তোকে আমি এতো স্নেহ করি,আর তুই আমার সাথে এরকম জঘন্য একটা কান্ড করতে পারলি? আমার চোখের সামনে আর কখনে আসবি না তুই।আমিও আর আসবো না এই বাড়িতে।এই আসাই আমার শেষ আশা।আমার মনে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছিস তুই,কখনে ভাবিনি তুই এমন একটা কাজ করবি ”
বলে ওড়নাটা বুকে জরিয়ে স্বাভাবিক হয়ে ঘরের বাইরে চলে আসলাম।বিষন্নকে যখন এসব বলছিলাম তখন লক্ষ্য করেছিলাম বিষন্নর চোখে জল।চোখে জল তাতে কি হয়েছে? ও যে কাজটা করেছে তাতে ওর এটা প্রাপ্য।ওড়টাটা মাথায় জড়িয়ে চোখের জল মুছে দোতলা থেকে নিচে নামতেই কেউ একজন পেছন থেকে আমার হাত ধরে ফেললো।বুঝতে বাকি রইলো না যে এটা বিষন্ন। আমি পেছন না ফিরেই বললাম
” খবরদার বলে দিচ্ছি আমার টার্চ করবি না ”
” মিষ্টি আমার কথাটা একবার শোনো প্লিজ? ”
” নাম ধরে ডাকছিস? তোর কি সাহস বেড়ে গেলো? সে যাই হোক আমার সামনপ যদি তোকে দেখি তাহলে তোর খবর আছে বলে দিলাম ”
” আমার কথাটা না শুনলে পড়ে পস্তাবে, প্লিজ শুনে যাও ”
ওর কোনো কথা না শুনে ওখান থেকে চলে আসলাম।রিকশায় উঠে হুট তুলে বসলাম।প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। ওরনায় মুখ ঢেকে চোখের জল ফেললাম।
হোস্টেলে পৌঁছেই সোজা ওয়াসরুমে গেলাম।গিয়ে নিজেকে আর আটকাতে পারলাম না।শরীর ঘিনঘিন করছে, মুখ ভর্তি করে বমি করে শাওয়ার নিয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলাম।কখন চোখ চোখ ভর্তি হয়ে ঘুম চলে এলো বুঝতেই পারলাম না।
ফোনের রিংটনে ঘুম ভাঙ্গলো সন্ধায়।ঘুমঘুম ঘোরে ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একটা মেয়ে কান্নার আওয়াজ পাওয়া গেলো।স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম নীলু ফোন করেছে।নীলু কান্না করতে করতে বললো
” মিষ্টি,তুই কোথায়? ”
” আমি তো হোস্টেলে,কি হয়েছে? কান্না করছিস কেনো? ”
” বিষন্ন খুব অসুস্থ, হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি,আমার খুব ভয় লাগছে,তুই আসবি? আমি বাড়িতে একাই, মা এখনো মামার বাড়িতে।মা বললো বিষন্ন বাড়িতে একা আছে,আমি যেন বাড়িতে চলে আসি।আমি এসে দেখি, তুই আসবি? ”
” ওহহ শিট,বিষন্ন কি ছোটো বাচ্চা নাকি? এরকম পাগলামি কেই করে,আচ্ছা তুই দারা আমি আসছি”
” তুই হোস্টেলের সামনেই থাক।হসপিটাল তো তোর হোস্টেলের সামন দিয়েই যেতে হবে, ওখানে উঠিয়ে নিবো তোকে ”
” আচ্ছা তাড়াতাড়ি আয়,আমি নিচে নামছি ”
ফোনটা রেখে দৌড়ে নিচে গেলাম।নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে।যদি ওর কথা তখন শুনতাম তাহলে হয়তো ওর এমনটা হতো না।মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।
কালো রঙ্গের একটা কারের ভেতর থেকে নীলু ডাকলো।আমি গাড়ির ভেতরে ঢুকে বিষন্নকে দেখে আঁতকে উঠলাম।এটা কিভাবে করতে পারলো বিষন্ন?
চলবে?
#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#পার্টঃ৩
#জয়ন্ত_কুমার_জয়
কালো রঙ্গের একটা কারের ভেতর থেকে নীলু ডাকলো।আমি গাড়ির ভেতরে ঢুকে বিষন্নকে দেখে আঁতকে উঠলাম।এটা কিভাবে করতে পারলো বিষন্ন?
ওর ডান হাতে পো*ড়া পো*ড়া দাগ,দেখে মনে হচ্ছে গরম কোনো কিছু হাতের ওপর চেপে ধরেছে।বিষন্ন চোখ বন্ধ করে ছিলো,আমায় ঢুকতে দেখে একটু মুচকি হাসলো।কেনো হাসলো বুঝতে পারলাম না।নীলু বলে উঠলো
” এই মিষ্টি,দেখেছিস হাত পু*রিয়ে কি অবস্থা করেছে।আমার তো মা’কে নিয়ে ভয়।মা জানলে না জানি কি শুরু করবে,ভেবেই আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ”
” কি এমন হয়েছে? সামান্যই তো হাত পুরেছে।”
কথাটা বলার সাথে সাথে বিষন্ন চোখ মেলে একবার আমার দিকে তাকালো।তার দৃষ্টিতে বোঝা যাচ্ছে সে আমার কথায় মহা বিরক্ত।আচ্ছা!ওকে আরেকটু রাগিয়ে দিলে কেমন হয়?এমন কিছু একটা বলবো যেটা শুনে ওর রাগ আরো বেড়ে যাবে।স্বাভাবিক হয়ে নীলুকে বললাম
” দেখ কোনো মেয়ের জন্য এমন করেছে কি না।এই বয়সে নাক টিপলে দুধ বেরুবে,আর তোর ভাইয়ের মতো অনেকেই প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে এসব করে। হাত পুরেছে ঠিকই আছে, তোর গয়না নিয়ে ওই মেয়ের সাথে পালিয়ে যায়নি এটা তোর কপাল ”
দেখলাম বিষন্ন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ওর দৃষ্টি অগ্রাহ্য করে আবারো বললাম
” দোস্ত তোর গয়না গুলি সাবধানে রাখিস,বলা তো যায় না কার মনের ভেতর কি আছে।আর… ”
আমার পুরো কথা শেষ না হতেই বিষন্ন কড়া গলায় ড্রাইভারকে বললো গাড়ি থামাতে।ড্রাইভার সাথে সাথেই গাড়ি থামালো।বিষন্ন গম্ভীর স্বরে বললো
” আমি কোথাও যাবো না।নেমে যাচ্ছি ”
নীলু অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো ” নামবি মানে? হাতের অবস্থা দেখেছিস তুই? ড্রেসিং না করালে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে ”
বিষন্ন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে গজগজ করে বললো ” হোক, তাতে তো তোদের কিছু যায় আসে না।আমি কে? আমার পেছনে তোদের সময় দিতে হবে না।”
নীলু অল্পতেই ভেঙ্গে পড়ে,নিজের ভাইকে অধিক ভালোবাসার ফল এটা।কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো ” এটা তুই বলতে পারলি বিলু? আমি তোকে কতো ভালোবাসি তুই সেটা অস্বীকার করছিস? ”
বিষন্ন এতোক্ষণে নেমে গেছে।নীলুর মুখে বিলু ডাকটা শুনে অনেকটা ঝুকে এসে বললো
” কিসের বিলু,এই নামটা আমার একদম পছন্দ না।কখনো এই নামে ডাকবি না আমায়। আমি গেলাম,আর আমার কোনো কিছুতে তোর কাউকে ডাকতে হবে না। ”
বাইরের বলতে যে বিষন্ন আমায় মিন করছে এটা বুঝতে পারলাম।ছেলেটা আমার ওপর অনেক রেগে আছে মনে হচ্ছে।কেউ রাগ করলে সেই রাগ আরো বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে,আমিও এখন সেটাই করছি। আবে এই রাগ ভাঙ্গা আমার একটা চুটকির কাজ।নীলু আমার হাত ঝাঁকিয়ে বললো
” দোস্ত, বিলু তো চলে যাচ্ছে,কিছু একটা কর।ওকে হসপিটালে নিতে হবে তো ”
” দারা আনছি,ওর অনেক সাহস বেড়েছে ”
” তোর কথা শুনবে বলে মনে হয় না ”
আমি গাড়ি থেকে নামলাম। বিষন্ন হেলেদুলে হেঁটেই যাচ্ছে। আমি বিলু বলে কয়েকবার ডাকলাম।বিষন্ন শুনতে পেয়েছে,কিন্তু পেছন ফিরে তাকালো না।মনে হচ্ছে বিলু ডাক শুনে তার হাঁটার স্পিড আরো বাড়ছে।হাহাহাহা,এই ছেলেটার বাচ্চামি স্বভাব এখনো যায় নি।আমি দৌড়ে কাছে গিয়ে ওর হাতটা ধরতেই বিষন্ন উহুঃ বলে চেঁচিয়ে উঠলো।সাথেসাথেই হাত সরিয়ে নিলাম।বুঝতে পারলাম ওর পো*ড়া যায়গাটায় হাত দিয়ে ফেলছি।লজ্জা ভঙ্গিতে বললাম
” সরি,সরি, দেখতে পাইনি ”
“……………”
” গাড়ি থেকে নেমে এলি কেন? খুব সাহস হয়েছে তাই না ?
“…………..”
” চুপ করে আছিস কেন? ”
” আমার কারো প্রয়োজন নেই,”
” সেটাতো বুঝতেই পারছি,হাত পুরিয়ে বসে আছিস ছোটো বাচ্চাদের মতো ”
” তাতে তো কারো কিচ্ছু যায় আসে না ”
” বড়দের মতো কথা বলিস,আর কাজ করিস বাচ্চাদের মতো তাই না।চুপচাপ গাড়িতে চল”
” আমি যাবো না ”
” ভয় নেই ডাক্তার ইনজেকশন দিবে না। হাত পুরে গেলে ইনজেকশন দিতে হয় না”
” সত্যি? ”
মনে হলো আনন্দে বিষন্নর চোখ চকচক করে উঠলো।বেচারা ইনজেকশন খুব ভয় পায়।একটু গম্ভীর স্বরে বললাম
” হাত কিভাবে পুরলি? ”
” সেটা জেনে তোমার কি? তুমি তো ডাক্তার না যে বললে ঠিক করে দিবে ”
” এতো পাকনামি করিস কেন তুই হ্যা? ”
” কলেজে পরুয়া একটা ছেলেকে বারবার তুই তুই বলাটা মোটেও ভদ্রতা না।কিছু মানুষকে এটা বারবার বললেও সে শুনে না ”
ওর কথা শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না।হাসি চেপে রেখে বললাম
” বয়সে ছোট বাচ্চা একটা ছেলেকে তুমি বলাটার মোটেও ভদ্রতা না।এখন তুই আসবি নাকি এই রাস্তার মাঝে চড় মারবো? চড় মারলে কি হবে জানিস? ”
বিষন্ন হতাশ ভঙ্গিতে বললো
” কি হবে? ”
দেখলাম একটু দূরে কয়েকটা মেয়ে দারিয়ে গল্পগুজব করছে।হাত উঁচিয়ে ওদের দিকে দেখিয়ে দিয়ে বললাম
” ওই মেয়েগুলা তোকে বারবার দেখছে।মনে হয় তোকে ওরা পছন্দ করে।এই সময় যদি পট করে একটা চড় বসিয়ে দিই,তাহলে ওদের সামনে তোর প্রেস্টিজ কোথায় পৌঁছাবে…..
আমার কথা শেষ না হতেই বিষন্ন হন্তদন্ত হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলো।আমিও ওড়নায় মুখ ঠেকে হাসতে হাসতে গাড়িতে বসলাম।
ড্রেসিং করে বিষন্ন এখন বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে।তার পাশে বসে আছে নীলু।নীলু বিষন্নের ব্যান্ডেজ করা অংশে ফু দিচ্ছে। এতে নাকি জ্বালা কমে।ইতোমধ্যে আঙ্কেল অফিস থেকে এসেছে।তিনি গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বিষন্নের দিকে।ভয়ে আতঙ্কে বিষন্ন কাচুমাচু হয়ে আছে।হুঙ্কার দিয়ে তিনি বললেন
” হাতের এই অবস্থা হলো কিভাবে? ”
বিষন্ন কিছু বলছে না।ভয়ে ভয়ে নীলুর দিকে তাকালো।এই তাকানোর মানে হলো নীলু ভুজুংভাজুং কিছু একটা যেন বুঝিয়ে বলে।যাতে আঙ্কেল ওকে রাগ না হয়। নীলু আমতা আমতা করে বললো
” বাবা বাড়িতে কেউ ছিলো না।ও চা করতে গিয়ে হাতে গরম চা ফেলে দিয়েছে ”
তিনি আর কিছু বললেন না।হনহন করে রুম থেকে বেড় হয়ে চলে গেলেন।নীলু, বিষন্ন দু’জনই হাফ ছেড়ে বাঁচলো।আমি নীলুর উদ্দেশ্য বললাম
” নীলু,আমি আজ যাই,”
” এতোরাতে যাবি? আজ না হয় থেকে যা,”
” না রে,থাকতে পারবো না।আগের মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই ”
আমার কথায় বিষন্ন মন খারাপ করেছে এটা বেশ বুঝতে পারলাম।নীলুর হাত থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে আছে।নীলু বললো ” আচ্ছা আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি তোকে হোস্টেলে নামিয়ে দিবে ”
এরপর দুইদিন হয়ে গেলো বিষন্নদের বাড়িতে যাইনা।যাওয়ার কোনো ইচ্ছেও নেই।বিষন্ন যা পাগলামি করছে এতে ওর সামনে থাকা ঠিক হবে না।ওর মন আরো খারাপ হয়ে যাবে।হোস্টেলের ছাঁদে দোলনা আছে।সেই দোলনায় বসে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে দোল খাচ্ছি।তখনি ফোন আসলো।স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি আঙ্কেল ফোন করেছে। ভয় ভয় নিয়ে ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বললো
” তোমার কি শরীর খারাপ? ”
” না আঙ্কেল,আমি বালো আছি ”
” ও আচ্ছা,শুনলাম তুমি দু’দিন থেকে বিষন্নকে পড়াতে আসছো না,তাই ফোন করলাম যে তুমি অসুস্থ নাকি,কখনো তো এমন হয় না? ”
এখন আঙ্কেলকে কিভাবে বোঝাবো যে আমি আর কখনোই ওই বাড়িতে যাবো না? বিষন্নকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনতে ওই বাড়িটা চমার জন্য নিষিদ্ধ,কিভাবে বলবো সেটা?
চলবে?