তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব-১৩+১৪ (খোলাশা পর্ব/সিক্রেট ফাঁস)

0
1808

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব-১৩+১৪ (খোলাশা পর্ব/সিক্রেট ফাঁস)
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)
পর্ব_১৩

বাইক ছুটে চলেছে গন্তব্য বিহীন শেষ সীমানায়। আজকাল ধরে বসতে হয় না সামনের মানুষকে। পাচঁবছরের অনেক লং ড্রাইভের অভ্যেস আছে হাইওয়েতে। জনবহুল রাস্তায় এই স্পিডে বাইক চললে আঁকড়ে ধরার প্রয়োজনীয়তা নেই। এসবই ভাবছিলাম ধাক্কা খেতে খেতে বেচেঁ গেলাম সামনে মানুষটার সাথে।ভাগ্যিস নিবিড় এভাবেই ব্রেক কষে দিত, বলেই এখন অভ্যস্ত।ধাক্কা খাই না।

-সরি সরি মায়া!

-এভাবে ব্রেক করেছো কেন?(খানিকটা বিরক্ত হয়ে)

-ভাইয়া হসপিটালের সামনে দাঁড়াবে আগে বুঝিনি তো।

সামনে তাকিয়ে দেখলাম নিবিড় বাইক পার্ক করছে হসপিটালের সামনে।

-সরি মায়া। আমি বেখেয়ালবসত দাঁড় করিয়ে ফেলেছি। আর একটু সামনে এগোলে ভাইয়া আমাদের দেখে ফেলতো।(গিল্টি নিয়ে)

-ইট’স ওকে।

নিবিড় আমাকে বাসার সামনে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। এমনটাই আমি চেয়েছিলাম। নীরবকে আজকে সকালেই বলেছি

-নিবিড়কে ফলো করবো আমি। কিন্তু ও বাইকে যায়। বাইক ছাড়া ওকে ফলো করা পসিবল না।আমি নিবিড় ছাড়া আর কারো বাইকে কখনো চড়িনি।কি করে পিছু নিবো?

পরে নীরব নিজেই বলেছে,
-আমার বাইক আছে তুমি জানো।কখনো উঠনি বলা উঠা যাবে না কে বলেছে?

-না মানে

-এত মানে মানে কর কেন? বন্ধু হই তোমার চড়তেই পারো। আর খারাপ কিছু নয় তো নিজের সংসার বাঁচাতে হাসবেন্ডকে ফলো করবা তাও তারই ভাইকে নিয়ে। এখানে অপরাধবোধের কি আছে?

-ওকে রেডি হয়ে নিচে আসো। আজ অফিসে যাবো না। এখান থেকেই যাবো ওর পিছন।

————-

-নীরব ও হসপিটালে গেল কেন?ওর কি কিছু…?

-বাজে কথা মাথায় আনার আগে দেখে আসি চলো।

-আমার ভয় করছে।

-ভাইয়া অলরেডি ভিতরে চলে গেছে মায়া।এখন আমাদের সাবধানে ওকে খুজতে হবে কোথায় গেল।

-হ্যা!

-চলো তবে।

মাথা দুলিয়ে ইশারা করলাম আচ্ছা।

আজকে মায়াবিনীকে অফিস ড্রপ করতে হয়নি।তাই ওকে দেখতে আগে আগে আসা হয়েছে।ডক্টরের সাথে দেখা করে জানলাম ওর আজ সকালেই হুঁশ ফিরেছে। দৌড়ে ওর কেবিনে গেলাম। মেয়েটা জড়সড় হয়ে বেডে শুয়ে আছে।আমি দরজা খোলা মাত্র চমকে উঠলো।

চেহারায় আজ কত মলিনতা। এই চেনা মুখটাকে চিনতে বড় কষ্ট হচ্ছে। যেন চিনতেই পারছিনা ।আমি মানুষটা কি কোনদিন দেখছি মনে হচ্ছে না আমার। চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে ডার্ক সার্কেল পড়ে গিয়েছে না না গোল চাকতি দিয়ে পুরো চোখজোড়া আকা হয়েছে। আমি ওকে চিনি না কোনভাবে, আমি মেয়েটাকে চিনতেই পারছি না। কেমন করে মুখটা কালো হয়ে গেছে যত সুন্দর একটা মেয়ে ছিল, হাস্যউজ্জল ছিল, আজ ততটাই ওকে মনে হচ্ছে বেদনার শিকার।যন্ত্রণায় মেয়েটা মুখপানে তাকানো যায় না। আমার এ হৃদয় ক্ষত হয়ে যাচ্ছে ওকে দেখে। তবে ওর হৃদয়টা কেমন।

ওর কাছে যেয়ে বললাম
– শোনো। ভয় পেও না।

ও আরো কাচুমাচু হয়ে বসল। পারলে বেডের সাথে মিশে যেত। আমি আর একটু এগিয়ে যেতে নিলে মেয়েটা চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে নিল।আমি দাড়িয়ে গেলাম। বুঝলাম আগে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। বললাম,

-রুশমি এই রুশমি! রিল্যাক্স।

মেয়েটা শক্ত হয়ে ছিল। এখন নরম হলো কিছুটা।

-রুশমি আমি নিবিড়। ভয় পেও না। আমি আছি তোমার সাথে।

মেয়েটা চোখ খুলল খুব আস্তে আস্তে। এখন ওর চোখে কোনো ভয় নেই। অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমার সাহস খানিকটা বাড়লো। আমি ওর কাছে গেলাম এগিয়ে।

-আমায় চিনেছো রুশমি? আমি নিবিড়। তুমি আমার কাছেই। ভয় পেও না।দেখো আশেপাশে আর কেউ নেই।শান্ত হও।

রুশমির চোখ ছলছল হয়ে গেল।একটু উচু হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।মনে হচ্ছে এখন চোখ থেকে পানি পড়ে যাবে।বুঝলাম ওর সাহারা খুব দরকার। যেয়ে ওর কাছে বেড ঘেষে দাঁড়ালাম।মাথায় হাত রাখলাম। মেয়েটা একফোটা সময় নষ্ট করলো না।আমায় ঝাপটে ধরে কেঁদে দিল। হাওমাও করে কাঁদতে লাগলো।এতো তাড়াতাড়ি সবটা ঘটলো বুঝে উঠার আগেই আমার মন আরো নরম হয়ে গিয়ে হরমোন কাজ করা শুরু করে দিয়েছে। ওর কষ্ট আমার সহ্য সীমানার বাহিরে চলে গেল। আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম এক হাতে। অন্য হাত ওর মাথায়। রুশমি আমার কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই চলেছে। মনে হচ্ছে কতোদিনের চাপা কষ্ট ও নিজের মাঝে লুকিয়ে রেখেছিল। আমি চাই ও কাঁদুক। কেঁদে কষ্ট লাঘব করুক।

কিছুক্ষণ থেমে বললাম,
-রুশমি কেঁদো না আর। এখন এটা শরীরে ইফেক্ট পরবে।

তাও কাঁদতে আছে।হটাৎ মুখ তুলে তাকালো আমার দিকে আমাকে জড়িয়ে রেখেই। আমিও ওর দিকে তাকালাম। ওর চোখ কিছু বলতে চাচ্ছে। মনে হয় অভিযোগ অভিমান সব একসাথে জড় হয়েছে। আমাকে ওর চোখ বলছে এতো দেরি করলে কেন? আমার নিজের কিছুই বলার ছিল না। চোখ নামিয়ে নিলাম। ও বুঝে গেছে আমার বাধ্যতা। ফের আমার জড়িয়ে ধরলো। আমিও এভাবেই ধরে রাখলাম। বুঝলাম রুশমি আজও আমাকে বোঝে ফেলেছে। আমার পরিস্থিতি। আমার অক্ষমতা।

-রুশমি আমি আছি।কোথাও যাবো না তোমায় ছেড়ে। ভরসা করো। আমি আছি।

আজ এত মেঘলা কেন আকাশ! আমার মনের মতো আকাশের গায়ে মেঘ জমেছে। এখন হুটকরে বৃষ্টিতে রুপান্তিত হলো মেঘ। আকাশ পরিষ্কার হচ্ছে। মানে এটাও আমার মনের মতো। এতোদিন সব ধুয়াশা ছিল।মেঘে ছেয়ে ছিল সবটা।আজকে সম্পুর্ন জেনে ফেলেছি আমি।মেঘ কেন জমে থাকবে? বৃষ্টি তো হবেই আকাশের মতো আমার মনে। সেই খোলা মাঠ যেখানে আমি আর নিবিড় ভিজে ছিলাম এক বৃষ্টিতে এক সাথে।আজ এখানে আমি একা নয়। আমার কষ্ট গুলোও ভিজে চলেছে। কাঁদছি কেবল কাঁদছি। শব্দহীন কান্না। আজও আশেপাশে কেউ নেই। আজ কেউ নেই আমার। কেউ নেই যাকে ধরে আমি সাহারা পাবো।কেউ নেই আমাকে বলবে, “আমি আছি মায়াবিনী, আমি আছি”।

-মায়া!

চোখ তুলে তাকালাম। নীরব দাঁড়িয়ে আছে। চোখ নামিয়ে নিলাম। আমার পাশে বসে পরল মাটিতে। কাঁধে হাত রেখে বলল
-মায়া আমি আছি তোমার পাশে। বন্ধু হিসেবে সবসময় তুমি আমাকে পাবে। কোনো পরিস্থিতিতে তোমায় ছাড়বো না।

হসপিটালে ঢুকে নিবিড়কে পেলাম না। ভিতরে যেয়ে আমি নীরব সব ফ্লোরে প্রতি রুম চেক করছিলাম। চার তোলা পর্যন্ত এভাবে খুজে হয়রান হয়ে গেলাম।নীরব বলল এখন টপ ফ্লোর থেকে খোজা স্টার্ট করি চলো। বললাম আচ্ছা। নতলা লাস্টের দিকের একটা কেবিনের দরজা খুলে চমকে উঠলাম। নীরব ও আমার পিছনে দাঁড়ালো। নিবিড় একটা মেয়েকে জড়িয়ে রেখেছে।মেয়েটা আর নিবিড় একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। হটাৎ মেয়েটা নিবিড় এর বুকের কাছে মাথা রেখে দিলো। নিবিড় ওকে সরালো না বরং জড়িয়ে ধরলো।আমি তাও এগিয়ে যাচ্ছিলাম। হটাৎ থমকে গেলাম নিবিড় এর কথা শোনে।

বের হয়ে গেলাম আনমনে হসপিটাল থেকে। কই যাচ্ছি জানি না। নীরব পিছন থেকে ডাকছিল। কিছু মাথায় আসে নাই। মনে মনে নামটা আওড়াচ্ছি।

-রুশমি? রুশমি?

চট করে মাথায় চলে আসে।দৌড়ে চলে আসি এই মাঠটায়। কিভাবে আসলাম খেয়াল হচ্ছে না। নীরব বাইক আনতে যেয়ে আমার দূরে রয়ে যায়। হসপিটাল থেকে মাঠটা কাছে। চলে এসেছিলাম। নীরবের আমায় খুজতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি।

নীরবের এ কথা শুনে আর পারলাম না নিজেকে ধরে রাখতে। কাঁদতে শুরু করে দিলাম চিৎকার করে। আমি জানি না কতক্ষণ কেঁদেছি। কতক্ষণ ওখানে ছিলাম। কিভাবে নীরব আমাকে থামিয়েছে আমি জানি না।

নীরব আমাকে একটা চায়ের দোকানে বসালো। এখন আমি বাসায় যাবো না। বৃষ্টি ভরপুর চলছে। নীরব এমন বর্ষন দেখেই মাঠের শুরুভাগ রাস্তার পাশে চায়ের টং এ আমায় বসালো। ওর শার্ট খুলে আমায় জড়িয়ে দিলো। দোকানটায় আমরা দুইজনই ছাড়া শুধু চায়ের দোকানের বুড়ো দাদু রয়েছেন। নীরব ওনাকে চা দিতে বলল দু কাপ। চা খেয়ে নিলে শরীর খানিকটা গরম হয়েছে।

নীরব হটাৎ আমার দুইবাহু চেপে ধরে ওর দিকে ঘুরালো। চোখে আমার তখনো পানি।

-মায়া তুমি দৌড়ে পালালে কেন? মেয়েটা কে? ভাইয়ার কি হয় জানো? না জেনে কেন পালালে? হতেও তো পারে ভাইয়ার কোনো পরিচিত কেউ। হতে পারে ভাইয়া দরকারে মেয়েটির কাছে গিয়েছিল। আমরা না জেনে অনেক কিছু ভেবে ফেলি।আর চোখের দেখা অনেক সময় ভুল হয়। আমাদের উচিত ছিল জানা। তোমার উচিত ছিল ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করা। মেয়েটিকে কেন এই অবস্থায় তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। এইসব জেনে ভাবা উচিত। কেনো তুমি চলে আসলে? বলো আমাকে। বলো!

-হ্যা আমি চিনি। আমি জানি। আগে থেকে আমার সবটা জানা। কি করে আমি অস্বীকার করি?

-মানে

-রুশমি। তোমার ভাইয়ের প্রাক্তন সে।

-কিহ! ভাইয়ার কি?

-যা শুনেছো তাই।(চিৎকার করে বলে ওর হাত সরিয়ে দিলাম)

নীরব কিন্তু একটুও দমে গেল না। সহজ ভঙ্গিতে বলল
-তুমি কি করে জানলে? জেনে মেয়েটাকে কি করে চিনো? আর ভাইয়ার প্রাক্তন ছিল তা তো আমিই জানতাম না। তুমি জানলেও চিনলে কি করে এই সে মেয়ে। আমাকে সম্পুর্ন বলো।

আমি নীরবের দিকে তাকিয়ে ভরসা পেলাম।

—————————

#পর্ব_১৪

নিবিড় এর যন্ত্রণায় আমি অতিষ্ঠ তখন। এতোদিন আমি একাই ওর কেয়ার দেখতাম। এখন সবার সামনেই এমন করে। মানে আমার বন্ধু ওর বন্ধু কিছুই মানে না ছেলেটা। এখানে যেও না ওখানে যেও না। সেটা খেও না।অসুখ যেন না হয়। রাস্তায় হাত ধরে পার করা।নিজে হাতে খাইয়ে দেওয়া। মুখ মুছে দেওয়া। গোছল করে চুল ছেড়ে এলে, শুকিয়ে গেলে চুলে বিনুনি করে দেওয়া। খোলা চুল কেন কেউ দেখবে। আরো কতকিছু যে। শুধু শুধু কি শিমুল ভাইয়ারা ওকে নিব্বা ডাকে! আজকাল যেদিন আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো তারপর থেকেই এমন হয়ে আসছে।

নীলা নিবিড় এর বন্ধু নয় ঠিকই। কিন্তু নীলা মেয়েটি এক দৃষ্টিতে আমার নিবিড়কে দেখতেই থাকে। রাক্ষুসে মেয়ে একটা। সংঘের সদস্য হওয়ায় নিবিড় এর সাথে আজকাল আরো বেশি সময় থাকা হয়। এতদিন ও ওর বন্ধুদের সময়ই দিতো না আমার জন্য। এখন আমাকেই সবার মাঝে নিয়ে যায়। সবাই এতেই খুশি।তাদের বন্ধুকেও পাচ্ছে ফ্রিতে ভাবীও।ভাবী হইনি তখনো। কিন্তু নিবিড় সবাইকে বলে দিয়েছে তার প্রেমিকাকে ভাবী ডাকতে। শশী আপু ভাবী ডাকে তবে তুই সম্মধ্য করে।

দিহানঃতা ভাবী তোমার পিছনে কতোদিন ঘুরেছে তোমার প্রেমিক? কয়েক মাস তো ঘুরাইছো তাইনা??
সাদিঃ সুন্দরীরা এতো তড়িঘড়ি ধরা দেয়! বছর বল বছর।?
শশীঃ হ্যান্ডসাম বন্ধু আমার। পাত্তা দিবে না মানে??
দিপুঃ সুন্দরীর তুলনায় নিবিড় কিছুই না।? (বলেই আমার মুখের কাছে এসে দাঁত কেলিয়ে দিছে)

নিবিড় একটু দূরেই দাড়িয়ে আছে। ফোনে কথা বলছিল।
শিমুলঃ শালা আজকে হেব্বি কেলানি খাবে?।

নিবিড়ঃ এ ভাই তোর সমস্যা কি? আমার মায়াবিনী সুন্দর আমি জানি ও নিজেও জানে। তোর আলাদা কইরা বলতে বলছে কে?(রাগে চোখমুখ কুচকে)

আমার সামনে কখনোই নিবিড়কে রাগ হতে দেখিনি। অথচ সবাই এত ভয় পায়। কেন রে বাপু? সবাই ঢোক গিলচ্ছে।

আমিঃ তোমার বুঝি হিংসে হচ্ছে??
নিবিড়ঃ কি??
আমিঃ তোমাকে সুন্দর বলেনি বলে?।
নিবিড়ঃ??☹️? ভ্যাবাচেকা
দিপুঃ নিবিড় ভাবী কিন্তু শুধু সুন্দরী না মায়াবি ও?।
নিবিড়ঃ???

সবাই হেসে দিলো। সবাই জানে প্রতিবার এমনই হয়। কিন্তু নীলা নামের মেয়েটা এ কোনো কিছুতেই তখন খুশি না।এভাবেই চলছিল সবটা।

একদিন আমি শশী আপু ফুসকা খাচ্ছিলাম নিবিড়ের অলক্ষ্যে। এদিকে আমি এক্সট্রা ঝাল নিয়ে মরছি।

-উফফ এতো ঝাল

-ভাবী তোর কি হয়েছে? অনেক ঝাল?

ঝালের ঠেলায় কথা বের হচ্ছে না।

-মায়াবিনী? এই কি হয়েছে তোমার? তোমাকে না বলেছি রাস্তার খাবার খাবে না। শশী তোকে তো আমি পরে দেখে নিবো।

শশী আপু ভয়ে শেষ। নিবিড় দৌড়ে দোকান থেকে ঠান্ডা জুস এনে দিলো আমাকে খেতে। খেয়ে নিলাম।পেট ভরায় জুস ও খাওয়া যাচ্ছে না। তাও অনেকটা ঝাল আছে। নিবিড় মুখে ফু দিচ্ছে। মুখ থেকে লালা ফেলতে বলছে। রাস্তাতেই ঠোঁটে চুমু দিচ্ছে। যেন ওর দুনিয়ার কোনো খবর নেই। আমার ঝাল কমেছে কিনা সেটাই বড় কথা।

-মায়াবিনী এখন ঠিক আছো?( গাল চেপে ধরে দুই হাতে)

-হু।

এমন সময় নীলা এসে নিবিড় এর হাত ধরে টেনে সামনে ঘুরালো।

-কি সমস্যা কি তোমার? হাত ধরছো কেন?

-আমার সমস্যা? নাকি তোমার সমস্যা নিবিড়? কথা দিয়ে তুমি কথা রাখতে জানো?

-কি বলতে চাও নীলা?

-তুমি না আর কখনো প্রেম করবে না। কাউকে মন দিবে না? তবে এসব কি?

-আমি কি তোমাকে কথা দিছি?

-এখন এ কথা? তখন বলছিলে মন কাউকে দিবে না আর আজ লাজ লজ্জা ভুলে রাস্তায় এসব নোংরামি করছো? ছেলে মানুষ মানেই খারাপ। সু্যোগ পেলে কে ছেড়ে দেয়?
আর এই মেয়ে তুমি এত নির্লজ্জ কিসের জন্য? এত বেহায়া কেন? রাস্তার মানুষ মাননা। এসব কি?
আর নিবিড় তোমাকে এই মেয়ে কি দেয় যা আমি তোমাকে দিতে পারবো না? আমাকেও বলতে আমি তোমাকে দিতাম। সব দিয়ে দিতাম তো আমার কাছে থাকতে তুমি। এর কাছে কেন গেলে নিবিড় বলো আমাকে বলো।ওর কাছে আলাদা কি আছে? কি চাই আমাকে ব..

-সাটাপ।শুধু মেয়ে বলে তোমার গায়ে আজ হাত তুললাম না। আর একটা কথা বলবে তোমাকে জানে মেরে দিতে আমার এক ফোঁটা দিলে কাপবেনা। মাইন্ড ইট।
আর মেয়ে মেয়ে কাকে বলছো? ও হচ্ছে মায়াবিনী। আমার নিশ্বাস। আমার ভালোবাসা ও।ওর কাছে কি আছে জিজ্ঞেস করলে না? ওর কাছে আমার জীবন রাখা। ওকে ছাড়া আমি বাচঁতে পারবো না।

( বলেই আমাকে টানতে টানতে বাইকে চড়িয়ে নিয়ে ব্রিজটা এসে দাড় করালো।)

অনেকক্ষণ যাবৎ আমি আমার ব্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কারো মুখে কোন কথা নেই। দুজনেই চুপচাপ। হয়তোবা আমরা প্রকৃতির সাথে কথা বলছি নিশ্চুপে।হঠাৎ নীরবতা ভাঙলো নিবিড়।

-মায়াবী হয়তোবা সবার জীবনে কিছু কালো অধ্যায় থাকে।না হয় কারো জীবনের কোন অতীত থাকে। আমার জীবনে কোন কালো অধ্যায় নেই তবে হয়তো’বা অতীত আছে। আর অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ এর সাথে যুক্ত নয়।
আমার মনে হয় আরো অনেক আগেই তোমাকে বলা উচিত ছিল। হয়তোবা সময় মিলে নাই হয়তোবা অবস্থান মিলে নাই। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এটা বলা খুব জরুরী ছিল। তাও মনে হয় খুব বেশি দেরি করে ফেলি নি আমি। তাই তোমার কাছে হয়তো বা জানানো উচিত এখন। সঠিক সময় তোমাকে বলার সু্যোগ আজই।

কি এমন বলবে নিবিড়? ভয় করছে খুব। খুব ভয় লাগছে।নীলার কথা এতক্ষণ ভাবছিলাম। কি বলল মেয়েটা। এখন নিবিড় আমাকে ভাবাচ্ছে।

-আমি জানি তোমার মনের ভেতর অনেক রকম প্রশ্ন অনেক টাইপের কথা জমা হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তোমাকে বলবো আজকে। সম্পর্কের প্রায় আড়াই বছর পর, হয়তো এতদিন প্রয়োজন হয়নি আজ হয়ত বা বলা খুব বেশি জরুরি।
জানো মায়াবিনী আমার কাছে প্রথম ভালোবাসা বলতে কোন কিছুই নেই। কোন দিন ছিল না আমি তোমাকে ভালবেসেছি তোমাকে সারাজীবন ভালোবাসবো।

কিন্তু তার আবেগ ছিল না ভালোবাসা ছিল আমি সত্যিই জানি না। আমি সত্যিই জানি না। একটা অদ্ভুত অনুভুতি ছিল কিন্তু আমি অনুভূতিটা খুব মিস করি। জানো না আমি খুব মিস করি।

– কিসের অনুভুতি?

-প্রথম প্রেমে কিশোরের মনের মাঝপ কোনো কিশোরীর জন্য সেই অনুভূতি যে অনুভূতি না কাউকে বোঝানো যায় না নিজে বোঝা যাচ্ছে। অন্য কাউকে বলা যায়না। কাউকে বলা যায় না শুধু নিজের মনের ভিতরেই থেকে যায়।

আমি তাকিয়ে আছি নিবিড়ের দিকে একদৃষ্টিতে।

-তোমাকে খুলে বলছি ব্যাপারটা। সেই সাড়ে ১০ বছর আগের ঘটনা।যখন আমি একটি কিশোর বয়সের ছেলে। বয়স ১৫ তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি।তখন আমি আর শিমুল দুই বেস্ট ফ্রেন্ড।শশী তখন আমাদের কোচিং পড়ুয়া বন্ধু।হঠাত্ একদিন কোচিং এর পড়া অবস্থা দেখলাম নতুন একটি মেয়ে আসলো যে শশীর পাশে বসলো। বুঝলাম মেয়েটি শশীর বান্ধবী।ওকে দেখছিলাম ঘুরে ঘুরে।লাল টুকটুকে ফর্সা একটি মেয়ে চুলগুলো লালচে লালচে রঙের কি সুন্দর মেয়েটা। ঠোঁটের উপরে তিল বসানো মনে হচ্ছে চোখমুখ ঠোট গুলো এত সুন্দর। আমার ধারণা ছিল না তখন হয়তো, এখন আমি জানি তখন সুন্দরীর প্রেমে পড়েছিলাম, মেয়েটার প্রেমে নয়।কিন্তু আমার জন্য ছিল প্রেমের সুচনা। শুরু হয়ে গেল আমার মেয়েটার জন্য দাঁড়িয়ে থাকার এক অদ্ভুত পরীক্ষা। যখনই ও যেখানে যায় ওর পিছনে পিছনে যেতাম। হয়তো কোথাও যাওয়ার আগে আমি যেয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতাম। বিকেল বেলার মেয়েটার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কতকিছু যে করতাম আমি। কিশোরের বয়সে জাগা প্রথম অনুভূতি থেকে দেখলে বুঝতে। আমার কি হয়ে যেত যে নিজের হার্টবিট আমি নিজের শুনতে পেতাম ওকে দেখলে। জানিনা কি ছিল।ও কাছে আসলে নির্ঘাত শুনতে পেত আমার হৃৎস্পন্দন। আমি জানতাম আমাকে না দেখলে চলবে না। কিছুদিন যাওয়ার পরে দেখলাম মেয়েটাও আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। হাসি দেয়। বুঝলাম সেও হয়তো আমাকে সাড়া দিতে চায়। কিন্তু কিশোরের মন তো! কি করে জানাবে মেয়েটিকে কোনোভাবে কিশোরীর মনে জায়গা নিলেও আমি কিশোরী কি সেটা বলতে পারবো? কোনোভাবেই আমি মেয়েটাকে জানান দিতে পারছিলাম না সাহসে কুলাচ্ছিলো না। হঠাৎ এরকম অনেক ভাবনার পর শিমুল আমাকে বলল যা বলে দে।নয়তো দেখবি তুই বলার আগে অন্য কেউ ফাঁকি দিয়ে নিয়ে চলে গেছে। ব্যস তখন আমাকে শশী একমাত্র হেল্প করলো একটি চিঠি দিয়ে দিলাম মেয়েটিকে এর মাধ্যমে। মেয়েটিও আমাকে চিঠির উত্তর দিতো। এরকম করে আরো দশ বারো দিন চলে গেল আমাদের চিঠি আদান-প্রদানের। সামনা সামনি দাঁড়িয়ে প্রেম করা, একসাথে কোথাও বসে আড্ডা দেওয়া, কোনোদিন স্পর্শ করার সুযোগ মিলেনি। কোন কিছুই আমাদের হতো না। শুধু দূর থেকে আমার ওকে দেখা আর হচ্ছে শশী শিমুলের মাধ্যমে চিঠি আদান প্রদান করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।আমাদের কেটে গেলে এভাবে তিনটি মাসের সম্পর্ক।হঠাৎ একদিন আমাকে জরুরি তলব দিল রুশমি।হ্যা ওর নাম ছিল রুশমি। মেয়েটার বাবা মারা গিয়েছিল ছোট থাকতেই। রুশমির ছিল ছোট ভাই ও মা। মা টেলারের কাজ করে দিন কাটাতো। এভাবেই চলছিল ওদের অভাবের সংসার। হঠাৎ একদিন ওর দূরসম্পর্কের এক মামির রুশমির জন্য সম্মন্ধ নিয়ে আসলো।খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল রুশমি। দৌড়ে আমার কাছে ছুটে এসেছিল।আমি একটু হেসে বলেছিলাম সম্বন্ধে এনেছে তাই কি? তুমি মাত্র ক্লাস টেনে পড় এখন কি তোমাকে বিয়ে দিবে? আর এখন বলছে একটু দেখবে? ভয় পেয়ো না। এখন তোমার কোনো বিয়ে হবে না। আমি আমার বাবার সাথে কথা বলিয়ে তোমার মার সাথে কথা বলাবো।তুমি একদম চিন্তা করো না রুশমি।শান্ত করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু নিজের মনের মধ্যে চলছিল ঝড়। মনে হচ্ছিল রুশমিকে হারিয়ে ফেলবো।হটাৎ এসে হঠাৎ হারিয়ে যাবে আমার জীবন থেকে। কিছুই ভাবতে পারছিলাম না আমি।কিন্তু সত্যি ওর বিয়ে হয়ে যাবে আমি চিন্তাও করতে পারিনি।ওকে দেখে আংটি পড়িয়ে রেখে গেলো। পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল পরের সপ্তাহের শুক্রবারে ওর বিয়ে হয়ে যাবে। রুশমি আমাকে অনেকবার বলে যেন পালিয়ে যাই। কিন্তু আমার মন সায় দেয়নি পালিয়ে যেতে। আমি তখন ছোট ছিলাম কি করে পালিয়ে যাব? কি করে খাওয়াবো? আমার দ্বারা সম্ভব ছিল না। বাবাকেও বলার মত কোন প্রকার সাহস আমার তখন ছিল না। আমি কাপুরুষের মত মুখ নিচে নামিয়ে নিয়েছিলাম।বলেছিলাম আমাকে ক্ষমা করে দাও। আর তুমি বিয়েটা করে নাও। খুব কেঁদেছিল মেয়েটা। আমার উপর ছিল কড়া অভিযোগ অভিমান। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছিলাম যে পাত্র এবোর্ড থাকে। ছেলেটা খুব ভালো চাকরি করে।রুশমি সুন্দর বলেই ছোট হওয়া সত্যেও বিয়ে করতে রাজি হয়েছে। নিয়ে যাবে রুশমিকে বিয়ের পরেই।ওখানে নাকি বউকে পড়াবেও সে। আমি চাইনা ওর সুখ ছিনিয়ে নিতে।যেখানে ছিল ওর ওর ভাইয়ের মায়ের খাবারের কষ্ট। কি করে বলতাম আমার জন্য দুটি বছর অপেক্ষা করো, আমি তোমাকে বিয়ে করব। আমার দ্বারা সম্ভব ছিল না। আমি চেয়েছি এখন থেকেই সুখে থাকুক মেয়েটা। চলে যাবে ওর হাজবেন্ডের সাথে বিদেশে তাহলে হয়তো খাবার নিয়ে কষ্ট করতে হবে না বরং ঢেড় সুখে থাকতে পারবে।

আমার চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি পড়ে গেল। নিবিড় এর কষ্টে নাকি ওই কিশোরের ত্যাগের জন্য নাকি দুইটা মানুষের মিলনের পূর্বেই আলাদা হয়ে যাওয়ায় বুঝতে পারছিলাম না। এখন আমার দিকে তাকিয়ে নিবিড় বলা শুরু করলো,

-জানো মায়াবিনী এরপর আমি কোনোদিন ও কোনো মেয়ের দিকে তাকাইনি দ্বিতীয়বার। নীলাসহ অনেক মেয়ে আমার জীবনে আসতে চেয়েছে। আমি আসতে দেইনি। কারো উপর মন বসেনি। রুশমিকে আমি ভালোবেসেছি কিনা জানি না। কিন্তু আমার মন ওকে দিয়েছিলাম। ওই অনুভূতি আমি কোনোদিন অসীকার করতে পারবো না। মনে হয়েছে কারো কাছে গেলে আবার হারিয়ে ফেললে মেয়েটাকে কষ্ট দেওয়া হয়ে যাবে। ওইদিন রুশমির চোখে যা ছিল, অন্য কোনো নারীর চোখে আমার জন্য ওই অভিমান অভিযোগগুলো আমি আর দেখতে চাই নাই। নীলাকেও বুঝিয়ে না করে দিয়েছিলাম।

নিবিড় আমার বাহু ধরে ওর কাছে টেনে নিল।
-জানো মায়াবিনী, এভাবে তোমার সাথে আমি মায়ায় জড়াবো কোনোদিন ভাবিনি। যেদিন তোমায় প্রথম দেখলাম। আমি আর নিজের মাঝে ছিলাম না।তোমার সৌন্দর্যে নয় আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম। মনের সাথে যুদ্ধ করে আমি কোচিং থেকে বের হয়ে ছিলাম। কিন্তু তোমায় হারিয়ে ফেলব ভাবিনি। ওই একমাস আমি রাতে ঘুমাতে পারিনি। তোমার মুখখানা আমার চোখে ভেসে উঠতো।আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম তোমার খোঁজ না পেয়ে। হঠাৎ যেদিন তোমার খোঁজ পাই আমার মনে হচ্ছিল তোমার জন্য বাঁচা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ওই রাতটা কিভাবে যে কাটিয়েছি। ছুটে এলাম পরদিন তোমায় দেখতে। আমার জীবনের এই একটাই লক্ষ হয়ে দাঁড়ালো তোমাকে অর্জন। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে আমার তোমাকে চাই। তুমি আমার দুর্বলতা না। অনুভূতি নয়।তুমি ভালোবাসা। আমার বাঁচার একমাত্র কারন। আমার জীবনটাই তুমি। তুমি নেই এটা কখনোই সম্ভব নয়।তুমি আাসার পর থেকে আমি কত সিরিয়াস। এখন থেকেই সঞ্চয় করছি। তোমার জন্য গয়না বানাচ্ছি মাসে মাসে লোন দিয়ে। ব্যাংকে টাকা রাখছি ব্যবসা করবো বলে। সব তোমার জন্য। শুধু তোমাকে পেতে। তোমার জন্য আমি এমন হয়ে যাবো এইটা কেউ কল্পনা করেনি। শশী শিমুল অবাক হয়ে যায়। তাহলে নীলা তো হবেই। অবশ্য ওর জন্যই তোমাকে জানাতে পারলাম সবটা। এখন আমি হালকা। অন্য কোনোকিছু নেই আমার যা তুমি জানো না। বুঝেছো? আমি মাতাল মায়বিনী। আমি তোমার প্রেমে মাতাল।

মৃদু হাসলাম। তারপর নিবিড়কে জড়িয়ে ধরলাম।
-বলো আমি ছাড়া অন্য কাউকে এভাবে জড়িয়ে ধরোনি?

-কখনোই না। কেবল তোমাকেই।

-কখনো ধরবেও না?(মুখ উঠিয়ে ওর পানে চেয়ে বললাম)

-কথা দিলাম তুমি ছাড়া কোনো নারীকে আমি ছুঁয়ে দেখবো না। জড়িয়ে তো ধরবোই না পুরুষত্বের অধিকারে।

হাসি মুখে জোড়ে শ্বাস টেনে নিবিড়কে জড়িয়ে ধরলাম।

———————–

নীরবের বাইকে চড়ে বেলা ৩টার দিকে বাসায় ফিরলাম। নিবিড় তখনো ফিরেনি। অফিসে নাকি হসপিটালে আমি জানি না। জানার ইচ্ছেও আমার মাঝে নেই। বাসায় এসে গোছল করলাম। সারাদিন ভেজা শরীরে থাকায় জ্বর জ্বর লাগছে। সাথে কেঁদেছিও। হাচ্চি দিচ্ছি বারবার। মা জিজ্ঞেস করেছিলো আমি এসময় বাসায় কেন? আর নীরবই আমায় আনলো কি করে। ভিজলামই বা কি করে একসাথে। নীরব উত্তর করেছে হয়তোবা। আমি নিজের রুমে চলে এসেছিলাম।

মা রুমে এসে জোড় করিয়ে এক গ্লাস গরম দুধ খাওয়ালো। নীরবের নাকি জ্বর চলে এসেছে। শুনে খারাপ লাগছিল। আমার জন্যই তো ও ভিজেছে। ওকে একবার দেখে আসি গিয়ে। রওনা হলাম নীরবের ঘরের উদ্দেশ্যে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here