তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_১২
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)
আজকে সকাল থেকে কাজ রেখে গল্প করছি শশী আপুর সাথে। সকাল সকাল এসে পরেছে আপু। এখন অবশ্য শুধু আমার আপু নয় ভাবী ও। আমার ভাইয়া ফয়সালের সাথে শশী আপুর সম্পর্ক দুই বছরের। আমাকে সিলেট নিবে বলে ভাইয়াকে মানাতে গেছিলো উল্টো ভাইয়া ওর পারসোনাল নাম্বার দিয়ে মানিয়ে দিয়েছিল। ওদের প্রেম করার সময় হয়নি বিয়েই হয়ে গেছিলো। ভাইয়া এবোর্ড চলে গেছিলো বিয়ে করেই।আমার হলুদের রাতের আগের দিন এসেছে। শশী ভাবী আর ভাইয়ার বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়েছিল না তেমন। তাদের দুই বছরের এনিভার্সারী কে বিয়ের মতো করে বড় অনুষ্ঠান করা হবে। আপাতত বিয়ের পর ননদকে দেখতে তো আসে নাই। এসেছে নিজের বিয়ের শপিং করবে আমাকে নিয়ে?।
-দেখ ভাবীপু আমি তোমার শপিং করে দিতে পারবো না।
-তুই ও না আমার ভাবী। চল না জান!?
-তুমি আগে বলো কমিশন দিবা?।
-তোর জামাই এর কম টাকা? তাও ছোঁচামি করিস?।
-অনুষ্ঠান আরো ১১ দিন পর। ১০ দিন পর হলুদ। কি ভাবীপু এত আগে কে শপিং যায়।ভাইয়া এতোদিন আগে আসছে দেখো পোয়াতী হয়েছো কিনা?।
হটাৎ আমার শাশুড়ী আসতে আসতে বলল,
-মায়াবী মা কিছু খেয়ে নে তো সকাল থেকে কিছু মুখে দিসনি। নিজেও খা শশীকেও খেতে দে।
(আমার কথা শুনে ফেলেছে নাকি?)
শশীঃ আচ্ছা শয়তান মেয়ে তো। ভাবছি শাশুড়ী নেই আরাম করে সংসার করতে পারবো। তা দেখি এক বজ্জাত ননদ পাইছি। বিদায় করে দিয়েও পার পেলাম না।আর এইদিকে দেখি শাশুড়ী থাকাই ভালো ছিল। তোর মতো আদর পেতাম!
মাঃ তুই কাকে বলছিস? তোর বিয়ে হয়ে গেছে মায়াবী।আমরাও সুখবর শুনি।
আমিঃ মা!( লজ্জায় মুখ নামালাম)
মাঃ শশী মা তুমিও আমার মেয়ের মতো।মন খারাপ করে না মা।
শশী আপু আর মা হেসে গল্প করতে লাগলো।এভাবে অনেকক্ষণ যাবৎ আমাকে মানানোর ও চেষ্টা চলছে। শশী আপু বলল,
-হ্যা তোর জামাই কোথায় রে ভাবী। আসার পর নিবিড়কে দেখলামই না।
শশী আপু আমাদের সবটা জানত। আমাদের বিয়ে। ভাইয়ার বউ হয়েও ভাইয়াকে বলে দেয়নি। শশী আপু বিয়ের পর ভাইয়ার রুমে থাকতো তখন ও জানতো পাশাপাশি রুম হওয়ার ফলে নিবিড় প্রতিরাত আমার রুমে আসতো।তাও কখনো ভাইয়াকে বলেনি। আমার মনে হলো ওই আমার একমাত্র ভরসা।ওর কাছে নিবিড় এর সাথে আমার সম্পর্ক নিয়ে বলতে পারবো। যে ভাবা সে কাজ,
-ভাবীপু তোমার সাথে আমার জরুরি কথা আছে। রুমে চলো।
-কি কথা?
-রুমে না গেলে বলবো কিভাবে?
-চল তবে।
রুমে এসে দরজা আঁটকে দিলাম। বললাম নিবিড় বাইরে গেছে।ও প্রতিদিন সকালে কোথাও যায়। ২ ঘন্টা পর চলে আসে।আসার সময় ও হয়ে গেছে। ও আসার আগে তোমাকে সবটা বলতে হবে।
-নিবিড় বন্ধের দিনে কোথায় যায়?
-আমি জানি না।
-তুই বউ ওর তুই জানিস না? কবে থেকে যায়?
-বিয়েরদিন রাত থেকে।
-কিহ!
-আস্তে চেচাও।মানে আমি বুঝিয়ে বলছি।
-বল জলদি।
-বিয়ের পরদিন সকাল থেকে প্রতিদিন বাইরে যেত সকালে।আসতো রাতে।তোমাদের বাসায় যেদিন গেলাম ওই দুই দিনও অফিসে কথা বলে ওইখানে যেত। কোনখানে যেত সেটা আমি তো জানি না। কিন্তু ও বাইরে যেত। অফিস যেত না। যে তোমাদের বাসা থেকে আসার পর আমি অফিসে জয়েন করি। অফিসে যেদিন জয়েন করি তার পরের দিন থেকে নিবিড় অফিসে আসা শুরু করলো। কিন্তু সে এখন আবার আমাকে অফিসে ড্রপ করে কোথাও একটা চলে যায়। দু’ঘণ্টা থেকে অফিস চলে আসে। বাকিটা সময় অফিসে থাকে। বন্ধের দিনগুলোতেও যায়।
-ওকে জিজ্ঞেস করবি।
-দুর ভাবীপু। আমাদের এমন সম্পর্ক নেই।
-মানে কি বলছিস তুই? কেমন সম্পর্ক?
-মানে মমানে..
-আমতাআমতা করছিস কেন? শোন পুরুষ মানুষ যেমনই শক্ত হোক, রাত হলে বউ এর আঁচলের নিচে আসে। (বলেই ভাব নিল শশী আপু)
-তোমার ওই বন্ধু বউয়ের আঁচলের তলাতেও আসলে তো?।
-হোয়াট? কি বললি তুই? নিবিড় এর সাথে তোর কেমন সম্পর্ক?
-তুমি যেমন বুঝছো ওমনই।
-মানে এই ২২/২৩ দিন বিয়ের, নিবিড় তোকে কাছে টেনে নেয়নি? (অবাকের চরমসীমানায় পৌঁছে গেছে)
-নারে ভাবীপু?।
-ওহ আচ্ছা। (ভাব নিয়ে?)
-তোমায় এতো বড় নিউজ দিলাম। তুমি বলছো ওহ আচ্ছা?
-তোদের বিয়ের দুই বছর হবে পরশুদিন।মনে হয় আমার বন্ধু হাঁপিয়ে উঠেছে। মনোরঞ্জন কর।
-কিহ! মনোরঞ্জন মানে?
-তুই যা ভাবছিস ওইটাই?।
-মানে কি? ইউ মিন সিডিউস??
-ইয়াহ বেবি?।
-কি বাজে বুদ্ধি তোমার। এসব আমার দ্বারা হবে না?।
-এই তুই কি নববিবাহিতা? তোর বিয়ের দুই বছর পার হয়ে গিয়েছে তো এসব কি বলিস তুই পারবি না? নব বিবাহিতা মহিলাদের মতন লজ্জা পাচ্ছিস! আশ্চর্য কিভাবে স্বামীকে বাধতে হয় এগুলো কখনো শিখিসনি? জলদি যা বলছি আজকে এপ্লাই করবি। পরশুদিন হওয়ার আগে জানে আমার বন্ধু মেনে যায়, তোর আঁচলের নিচে চলে আসে ভাবী?।
-?????
-মুখ বন্ধ কর।
শশী আপু সব বুঝিয়ে দিয়ে গেল। আজ রাতেই এপ্লাই করব। কিন্তু ওসব কিছু করতে পারব না। প্রথমরাত ও আমার কাছে যেভাবে এসেছিল ওইভাবেই কাছে আনাতে হবে নিবিড়কে।এমন বলেই মনে মনে হেসে ফেললাম।
অনেকদিন পর আমি আমার নিবিড়ের জন্য সাজবো। মনটা অনেক ভালো কিভাবে সাজবো আমি নিবিড়ের জন্য লাল শাড়ি পড়বো না নীল শাড়ি পরবো। লাল শাড়ী পড়বো প্রথম রাতের মতো। যেভাবে ওকে ডেকেছিলাম। সেইভাবেই সাজবো আমি আবার আজকে নতুন করে।
পিঠের দেওয়া একটা ফিতাওয়ালা ব্লাউজ বের করে পড়লাম। দুইটাই শাড়ী ও লাল কালার ব্লাউজও। চুল খোলা রেখে হালকা সেজেছি।
ঠোঁট গাঢ় লাল রঙের সাজিয়েছি, চোখে পড়েছি কাজল আর কপালে এক চিমটি কালো টিপ। আর লজ্জায় তো গাল রাঙাই।
রাতের খাবার খেয়ে আমি দরজা আটকে রেখে দিয়েছি যেন নিবিড় ঘরে না ঢুকতে পারে।অনেকবার দরজা ধাক্কা দিয়েছে কিন্তু আমি খুলিনি কারণ আমি সাজতে ব্যস্ত। এখন ভাল মত শাড়ি পড়ে নিলাম। আমি জানি আমাকে খুব সুন্দর লাগতাছে। এখন আস্তে করে দরজাটা খুলে দিলাম। জানি এখন নিবিড় ঘরে প্রবেশ করবে।
কালো টিপ টা পাল্টে লাল টিপটা পড়ে নিলাম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। পিছনে এসে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখছে নিবিড়।কারণ আমি আয়না দিয়ে দেখতে পেলাম ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ আমার কাছে এসে আমার পিছনে দাঁড়াল। আমি আয়না দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।ও নিজেও আমার দিকেই তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। সেই আগের দৃষ্টি। নজরকারা।এই দুটি চোখে আমি ডুবে যেতে চাইতাম বহুবার। বহুবার আমার ইচ্ছেতেই মন চাইতো আমার কত কাছে এটাই যেন আমি চেয়েছিলাম। আমি চোখ মেলে তাকিয়ে।
বড্ড মায়া চোখজোড়ায়। আজ ডুবে যাব আবার। আমাকে নিবিড় এর চোখ বলছে, “আমি মাতাল, আমি তোমার প্রেমে মাতাল”
নিবিড় আমার চুল গুলো মুখ থেকে সরিয়ে দিল। বলল,
-এতক্ষণ দরজা আটকে রেখেছিলে কেন?
-মানে
-এমন সঙ সাজছো কেন?
আমি তাকিয়ে আছি নিবিড় এর দিকে। কি বলল? সঙ?
-এভাবে সঙ সেজে মাঝরাতে কোথায় যাচ্ছো? ছাঁদে?
-কিহ!
-আজকাল ছাদেই তো যাও রাতে। কি করো না করো কে জানে? আজকে আবার এমন সেজে। স্পেশাল বুঝি?
চোখ দিয়ে আমার পানি পড়ে গেল দুফোঁটা।
-এসব ঢঙ করা বন্ধ করে যাও চোখের সামনে থেকে। এতোদিন ভাবতাম আমি তোমার সাথে অন্যায় করছি। কিন্তু আজ জানলাম তুমি নিজের সুখ অন্যখানে খুঁজে নিছো।
এসব বলে বের হয়ে চলে গেল নিবিড়। আমি মাটিতে বসে পরলাম। কি বলে গেল ও? এ সে ছেলে যাকে আমি ভালোবাসি। এ লোকটা এতো নিচে নেমে গেল? নাকি আমাকে নামিয়ে দিয়ে গেল।চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম।কি বলল নিবিড়? এই সাজ কার জন্য সাজলাম? লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আরো কতো কি যে বললাম কাঁদতে কাঁদতে।
রাত ২.৪৫, নিবিড় ঘরে ফিরেনি। বারান্দার দরজায় হেলান দিয়ে বসে আসি।শাড়ির আঁচল নিচে এলোমেলো। চুল সাজ সজ্জায় মলিনতা। কান্নার বেগ কমে আসছে আমার। চাঁদের দিকে তাকালাম।সম্পূর্ণ নয় সে। তাও আমাকে বলে চলেছে চাঁদ, তোমার থেকে আমি অনেক বেশি সুখি মায়াবী। বলেই করুণার হাসি দিল। চোখ বন্ধ করে নিলাম। মনে পড়প গেল একই সাজের আমাকে। আর আমার নিবিড় কে। যে আমায় ভালোবেসেছিল…..
———————-
-প্রতিরাতে আমার কাছে কি তোমার?
-বউএর কাছে আসবে নয়তো কার কাছে যাব?
-তুমি কাছে আসো??
-কিহ! বুকে নিয়ে ঘুমাই। এটা কাছে না? আমার বুকের ভিতর ঢুকে ঘুমাও।
-বলদ??।
লুকিয়ে বিয়ের এক মাস হয়ে গেছে প্রায়। বিয়ের দিন রাতের থেকে নিবিড় পাইপ বেয়ে আমার রুমে আসে প্রতিদিন রাতে।প্রেমিকা ছাড়া ঘুমানো যায় কিন্তু বউ ছাড়া নাকি ঘুমানো যায় না। কিন্তু ওই ঘুমানো পর্যন্ত। আশ্চর্য ছেলে! বুকে জড়িয়ে নেয়। কিন্তু গভীর ভালোবাসা?। উফফ অসহ্য?।
ভোরে আমরা দুইজনই উঠে পরি।নামায পড়ি আমি ফজরের। ও আমার রুম থেকে বের হয়ে মসজিদে চলে যায়।তারপর ওর বাসায় চলে যায় ওই একই পদ্ধতিতে।
রাত ১২টা বাজলে আমার রুম থেকে বের হয়ে মায়াবিনীর কাছে যাই।আজকেও বারান্দা দিয়ে ওর রুমে ঢুকলাম। মেয়েটা আয়নার সামনে দাড়িয়ে টিপ পড়ছে। মেয়েটাকে পিছন থেকে দেখলাম লাল শাড়ী পরেছে।চুল খোলা যা কোমড় ছুঁয়ে আছে।আমি বারান্দা থেকে এসে দরজা লাগিয়ে দরজায় ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে ওকে দেখছি।আজ শাড়ী পরেছে কেন? হটাৎ চুল গুলো সামনে নিয়ে নিল। খোলা পিঠ ওর।একটা ফিতে দিয়ে ওর বেঁধে রেখেছে ব্লাউজটা ওকে জড়িয়ে। হলদে ফর্সা শরীরে লাল রংটা কেমন ফুটেছে।আমি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি। এতোদিন চাইনি ওকে কাছে মিশিয়ে নিতে। আজ কি ভুল হয়েই যাবে?
ও এখন আমার দিকে ঘুরলো। চুলগুলো কাধ থেকে সরিয়ে আমার দিকে হাসি মুখে তাকাল। লাল রঙে ঠোঁট রাঙিয়ে আছে। চোখজোড়া খালি। কিন্তু কপালে লাল টিপ। এত সুন্দর কেন লাগছে মেয়েটাকে।
-কেন মায়াবিনী?
-কি কেন?
-তুমি শাড়ি পড়ছো কেন?
-আমার ইচ্ছে।?
-চেঞ্জ করে আসো।(মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে বললাম)
-আমার ঘর আমার শাড়ি আমার শরীরে আমি জড়িয়েছি।তোমার কি??
বলেই আমার কাছে এসে সামনে দাড়াল মায়াবিনী। ক্ল্যাভিকলটা কেমন ফুটে উঠেছে লাল পড়ার জন্য। আমি বার বার ঢোক গিলছি। মনে হচ্ছে আসক্ত হয়ে যাচ্ছি।
-তুমি তাকিয়ে আছো কেন? তোমার জন্য তো পরিনি?।
-তবে কার জন্য সেজেছো?(ওর মুখের উপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিলাম)
মেয়েটা ঈষৎ কেপে উঠেছে। ওর চোখ নাক ঠোঁটের উপর চোখ বোলাচ্ছি। অকে পুরোটা দেখে নিলাম এক নজর। পরীও ওর কাছে ফিকে লাগবে আজ।এতো সুন্দর কোনো নারী হয় আমার জানা ছিল না। আমার তাকানো দেখে বুঝি ও লজ্জা পেল।পিছন ঘুরে ও চলে যেতে চাইলো। আমি ওর হাত ধরে থামিয়ে দিলাম। কি করে ওকে যেতে দেই? আমি যে ডুবে গেছি মায়াবিনীতে। পকেট থেকে একটা রিং বের করে অনামিকায় পড়িয়ে দিলাম।
-আমার বউকে এনগেজমেন্টের রিং দেইনি। প্রপোজের রিং ও দেইনি।
-বিয়ের শাড়ি কসমেটিক তো তুমি দিয়েছিলে। তবে রিং কেন?
-বাসরঘরে বউকে কিছু দিতে হয়?।
চোখ বড় বড় হয়ে গেল নিবিড় এর কথা শুনে। বাসররাত মানে? ছেলেটার মনে এ ছিল?
-এ রিং নিয়ে কবে থেকে ঘুরছি।তুমি রেডি হয়েছো কিনা কি করে বুঝতাম? বিয়েটা হুট করে হয়েছে স্বাভাবিক অবস্থায় তুমি তৈরি না আমি জানতাম। তাই তোমাকে সময় দিচ্ছিলাম। তা তুমি এভাবে সেজে আমাকে বোঝাবে তা কিন্তু আমি জানতান না?।
বাদর ছেলেটা এমন করলো? নিজে এসে ধরা দিলাম??। অসভ্য একটা!
-মনে মনে গালি না দিয়ে চুমু দাও তো।
চলে আসছিলাম নিবিড় এর হাত ছাড়িয়ে। টান দিয়ে ওর বুকে ফেলো দিল আমায়।কোমড় জড়িয়ে ধরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-মায়াবিনী তুমি কি জানো তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নারী আমার চোখে।সারাজীবন তোমার দিকে তাকিয়ে থাকলেও আমার মন ভরবে না। তোমার প্রেমে আমি মাতাল।নেশাগ্রস্ত। আমি তোমায় মন থেকে ভালোবেসেছি।আজ আমার ভালোবাসা তোমায় দেখাতে চাই। তুমি কি আমাকে সেই অধিকার দিবে? তোমার চোখে ঠোঁটে শরীরের ভাজে আমি মিশে যেতে চাই। গেঁথে যেতে চাই তোমার মাঝে।তুমি কি আমায় সে অধিকার দিবে? আমার ভালোবাসায় তোমায় রাঙিয়ে দিতে চাই। চাই তোমার মাঝে নিজেকে ধারণ করতে। আমায় কি সে অধিকার দিবে?
এতো সুন্দর করে কে এ কঠিনতম ভালোবাসা বাসতে পারে? ওর প্রশ্নের কোনো জবাব আমি দিতে পারব না।এর কোনো উত্তর হয় না। ওর বুক থেকে হাত তুলে গলা জড়িয়ে ধরলাম। অন্য হাত ওর চুলে ডুবিয়ে দিলাম। আমি চোখ বন্ধ করে কপাল এগিয়ে দিলাম নিবিড় এর ঠোঁটের কাছে।
আমি মায়াবিনীর উত্তর পেয়ে গেছি। ওর বাঁকা কোমড় থেকে খোলা চুল সরিয়ে খালি কোমড়টা জড়িয়ে ধরলাম আরো শক্ত করে। কপালে চুমু একে দিলাম। আমার আসক্তি হওয়া ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলাম। আজ কোনো বাধা নেই আমাদের মাঝে। ওকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিলাম। ওর উপর ভর দিয়ে শুয়ে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে দিলাম।
নিবিড় এর ভালোবাসায় আমি উথাল পাথাল। নিশ্বাস বারবার আঁটকে আসছে। ওর প্রতিটা ছোঁয়াতে আমি নিজেকে আলাদা আলাদা করে চিনছি যা আমার নিজেরই অজানা ছিল। হটাৎ ও মুখ উঠিয়ে বলল,
-ভালোবাসার শিকড় গভীর থেকে গভীরে পৌঁছে যাচ্ছে।আমরা কি আমাদের প্রেম কে চুড়ান্ত প্রেমে রুপ দিতে পারি মায়াবিনী?
এই মুহূর্তেও কেউ পারমিশন চায়? যত দেখছি ওকে, যত দেখছি ওর ভালোবাসাকে, ভালোবাসার ধরনকে তত হিংসে হচ্ছে। আমি কেন ওর মতো ওকে ভালোবাসতে পারি না? খুব রাগ হলো আমার। ওর পিঠ জড়িয়ে নিজের উপর ফেলে দিলাম। এক হাতে পিঠ খামচে ধরে অন্য হাতে চুল চেপে ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিচ্ছি।ও যেন ব্যথার বদলে নেশায় ডুবে গেল আরো। মাতাল ছেলে!!
————————————–
সকালে নাস্তা বানিয়ে টেবিলে আনলাম। অফিস যাবো রেডি হয়েই নিচে নেমেছি। নিবিড় সকালে বাসায় ফিরেছে। আমি ছাড়া আর কেউ জানে না। নাস্তা খেয়ে আমরা বাসা থেকে বের হলাম। নিবিড় বাইক বের করে আমার সামনে দাড়ালো। আমি বিরক্ত হয়ে একটু সরে যেয়ে দাঁড়ালাম।
-কি ঢং শুরু করছো? পিছনে এসে বসো।অফিস পৌঁছিয়ে তোমাকে আমার বের হতে হবে।
-আমার জন্য কষ্ট করতে হবে না মি. নিবিড় আহমেদ। আপনি আপনার কাজে যান। আমি একাই চলে যেতে পারব অফিস।
-একরাতে জাদুু করে দিল? তুমি থেকে আপনি? বাহ!
-হোয়াট?(অবাক হয়ে গেলাম)