তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২

0
3388

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)

পাখির কিচিরমিচির শব্দ যেন আজকে আমার বিরক্তির কারন হয়ে উঠেছে। সেই কখন থেকে বিভিন্ন ভাবে আমাকে উক্তত করে চলেছে। কি আশ্চর্য! মেয়ে মানুষ দেখলেই শিস মারতে ইচ্ছে হয় বুঝি? এত বেহায়া কেন পুরুষ জাতি। মানুষ হোক আর পশুপাখি জন্ত হোক, মেয়ে দেখলেই হচ্ছে। উফফফ অসহ্য!
এসব ভাবছিলাম আর চা খাচ্ছিলাম বারান্দায় দাঁড়িয়ে। নিবিড়কে রুমের বিছানায় বসে থাকতে দেখে তার সামনে চা রেখে আমি বারান্দায় দাড়ালাম।
এরপর থেকে আজব খামখেয়ালিপনা ভেবেই চলেছি। চা বেচারা ঠান্ডা হয়ে গেছে।
নিবিড়ঃ বেচারা? নাকি বেচারি?
কিঞ্চিৎ ভ্রু জোড়া গিট্টু মারলাম তার দিকে পেছন ফিরে। সে যেন তা দেখতেই পায়নি।ভাবলীশহীনভাবে আকাশের দিকে তাকালো।আমার দিকে না তাকিয়েই আবার বলল
নিবিড়ঃ পুরুষ মানুষ নিয়ে এত ক্ষোভ প্রকাশ করলে মাত্র অথচ নিজের চা কেও এখন পুরুষ জাতিতে ফেললে? তবে কি তোমরা নারীরাও প্রতি পদক্ষেপে পুরুষকেই চাও? কেন বলতো? দৈনন্দিন জীবনের এই দুবেলা চা যে খাও। তাও পুরুষ ভেবে?
আমিঃএ কি বলল ও? মাথা মোটা কোথাকার।(মনে মনে)
নিবিড়ঃ একদম! যেমন তুমি তার ছিড়া জেনেও বিয়ে করে আনছি, মাথামোটা বলেই এমন বউ আনে মানুষ। দেখ না কেমন বাজে বকে বউটা। (হাসি আটকে রেখে)
আমিঃ পুরো বোকা বানিয়ে দিল।(মনে মনে রেগে বললাম) চোখ রাঙিয়ে তাকালাম। তারপর ঘটঘট করতে করতে সোজা রান্না ঘরে।

আমি মোটামুটি ভালোই রান্না করতে পারি। ভাত ডাল তরকারি ভাজি নুডলস স্নেক্স এসব জাতীয়। কিন্তু কখনো রুটি পরোটা বানাইনি। ময়দা মাখতে জানি না আর কি।
যেয়ে ভাজি কেটে চুলায় চড়িয়ে দিলাম। মা রুটি বানাচ্ছেন।
মাঃ মায়াবী অন্য চুলায় তাওয়া বসিয়ে রুটি ছেকে নাও। আমি তোমার বাবাকে আর তোমার দেবর কে ডেকে আনছি।
আমিঃজি মা।

আমার একটা দেবর।সমবয়সী। একই কলেজে পড়তাম। তখন যদিও আমি ওর ভাইএর প্রেমিকা ছিলাম নাহ। এইসএসসি -এর তিন মাস আগে প্রেম হয়। তবুও অর সাথে তখন ভাল বন্ধুত্ব ছিল। নীরবের সাথে ফেসবুকে এড থেকেও এই বিগত চার বছর এ কথা হয়নি। কারন নিবিড় কেন জানি নীরবের সাথে আমায় মিশতে দিতে চাইতো নাহ। হয়তোবা ছোট ভাইএর সহপাঠীকে প্রেমিকা মানতে নারাজ লাগতো। তাই কখনো এসব নিয়ে আর মাথা ঘামাতাম না। বিয়ের ১৪ দিন আগেই আমার সাথে নীরবের দেখা হয়। আমাদের বাসাতে। ভাইএর পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে, তাই পরিবার মিলে ডেট ঠিক করতে এসেছিল। আমি জানতাম ওর ভাই-এর সাথে আমার রিলেশন। কিন্তু ওর বান্ধুবী যে ভাই এর প্রেমিকা তা নীরব জানত না। আমাকে দেখে একদম হা করে তাকিয়ে ছিল। যেন ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না। এরপর বিয়ের আগের রাতে হটাৎ এক প্রশ্ন করে উত্তর না নিয়েই চলে যায়। আর কথা হয়নি আমাদের।

এসব ভাবতে ভাবতে রুটি পুড়ে যাচ্ছিল। তাওয়াটাতেও হাতে ছেক লাগত মা এসে চটজলদি হাত না সরিয়ে দিলে। রুটি টা নামিয়ে আমার বাহু ধরে উনার দিকে ফিরালেন।
মাঃ কি হয়েছে মায়াবী মা তোর? এত বেখেয়ালি কেন বিয়ের পরদিন ও? এত সাধনার ফল তোদের। কি এমন হয়েছে একটু পর পর ভাবনায় ডুবে যাচ্ছিস?( চিন্তার ছাপ স্পষ্ট মুখে চোখে)
আমিঃ (মায়ের চোখের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছি। এমন ও শাশুড়ী হয় বুঝি? এইতো আমাদের বিয়ের আগেও আমায় উনি দেখতে পারতেন না।আমরা আমাদের পছন্দের কথা যার যার বাসায় বলি। নিবিড় এর মা সবার আগে না করে দেন। সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা আমার শাশুড়ী করেন। যখন আমার বিয়ে অন্য জায়গায় একদম ঠিক। তখনই কি থেকে যে কি হয়ে গেল। এই মানুষটাই দৌড়ে গিয়েছিল আমাদের বাড়িতে। চেয়েছিল আমাকে উনার ছেলের জন্য। ওই দিন থেকেই মা ডাকি উনাকে। বড্ড ভালোবাসেন আমায়। মেয়ে নেই বলেই বুঝি এতো স্নেহ তার। আর ওই সময় আমার যা অবস্থা ছিল। উনি না থাকলে আজ আমি মৃত থাকতাম)
এসব ভাবছি এর মাঝেই আমাকে ধরেই হটাৎ মা বলে বসলেন
মাঃতুই কি আমার ছেলেকে ক্ষমা করেছিস মা?
এমন প্রশ্ন এ অবাক হবো নাকি লজ্জা পাব নাকি বলব তোমার ছেলেকে আমি কখনো ক্ষমা করব না। ভেবেছিলাম কালকে নতুন করে সব শুরু করব। তোমার ছেলে কি তা আর হতে দিল?
আমিঃমা এমন বলছো? আমার সব রাগ অনেক আগেই শেষ। এনগেজডমেন্টের পরদিন তোমার ছেলে আমার সব রাগ ভাংগিয়ে দিয়েছিল। এখন আমার সংসার মা। নতুন তো। ভেবে চলেছি কিভাবে কোনটা সাজাবো।তাই অন্য মনস্ক হয়ে যাচ্ছিলাম।
মাঃ সত্যি বলছিস তো তুই?
আমিঃ মা তোমার বোকা বোকা চিন্তা খালি?(কথা ঘুরানোর জন্য এমন করে বললাম)
মাঃতবেরে পাজি?(কান মলে দিলাম এক পাশে)
আমিঃ মা মা ছাড়ো। লাগছে তো?
মাঃদেখ মাকে বোকা বলার শাস্তি (কান ছেড়ে হেসে বললেন)
আমিঃ হেসেই চলেছি মায়ের সাথে?
হাসি যে কখন থামছেন জানি নাহ।মুগ্ধ নয়নে আমাকে দেখে চলেছেন। কপালে ঠোঁট দিয়ে স্নেহের স্পর্শ লাগিয়ে দিয়ে বললেন
মাঃ ভালো থাক মা। আজীবন এমন হাসি তোর মুখে লেগে থাকুক ?।আমার নজর ও যেন না লাগে।
আমিঃ এ কি বলছো?তুমি মা? মায়েদের আবার মেয়ের উপর নজর লাগে নাকি?(এক রাশ ভাল লাগা নিয়ে বললাম). তার পর উনিই আমায় জড়িয়ে ধরলেন। মায়ের বুকে কি যে নিরাপদ লাগছে নিজেকে। মাথা বুকে দিয়ে এভাবেই দাঁড়িয়ে আছি। থাকবো মায়ের মমতার ছায়ায়।

নাস্তার টেবিলে আমি নিবিড় এর পাশে বসেছি। আমার অপজিটে নীরব। বার বার আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি অস্বস্তিতে খেতে পারছি না।ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট হয়ে গেলে বুঝি তার সাথে পরবর্তীতে এক ঘরে এক ছাদের নিচে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠে।

হটাৎ নিবিড় নীরবকে বলে বসলো, বিএসসি তো কমপ্লিট তোর। এখন এবোর্ড কবে যাচ্ছিস? ( নিচের দিকে তাকিয়ে খাবার খেতে খেতে)
নীরবঃ ভাইয়া( ভেবাচেকা খেয়ে)
(মনে হচ্ছিল ও এই সময় এমন শুনবে ভাবতে পারেনাই।)
নিবিড়ঃ জার্মান এর কতো গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম সিলেক্ট করে এপ্লাই কর।উইন্টার সিজন থেকেই যেন শুরু করতে পারিস। আইইএলটিএস এর ৭.৫ তো আছেই। যেতে তোর কোনো সমস্যা হবে নাহ আশা করি।( শান্ত দৃষ্টিতে নীরবের দিকে তাকিয়ে)
নীরবঃ( মা’য়ের দিকে তাকিয়ে যদি কিছু বলে)
বাবাঃ আমারও মনে হয় ২/৩দিনের মাঝে তোমাকে সব কমপ্লিট করা উচিত। সময় বেশি নেই নীরব।মাত্র ৫ বছরের বড় হয়েও নিবিড় তোমার থেকে, জীবন পুরো সাজিয়ে ফেলছে। ও এখন প্রতিষ্ঠিত। নিজের টাকায় বঊকে দেনমোহর দিয়েছে। বিয়ের সকল খরচ ও বহন করেছে। বঊএর গয়না থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিস নিবিড় নিজের উপার্জন এর, শুধু খানদানি আমার মায়ের হার বাদে। ওইটা তোমার মা তোমার ভাবীকে দিয়েছে। অন্য কিছু নিবিড় আমাদের দিতে দেয়নি। তোমারও উচিত এখন থেকেই সব গুছিয়ে নেওয়া। বড় ভাইকে দেখে কিছু শিখো।
নীরবঃ (আনমনে হটাৎ বলে বসলো) ভাবী!

এতক্ষণ খাওয়া বন্ধ রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে শুনছিলাম। নীরবের এমন অস্পষ্ট ভাবী শুনে আমি ওর দিকে তাকালাম।নিবিড় ও বুঝি একই কাজটি করল।
নীরব এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই প্রথম আমি ওর মুখে ভাবী ডাক শুনলাম।
নিবিড়ঃ তোর ভাবীকে বলে লাভ নেই। সেও তোর ভালোই চায়। যেতেই বলবে।( আমার উরুর উপর হাত রেখে বলল)
ধ্যানটাও ভেঙে গেল আমার। নিচের দিকে তাকালাম আমি।
নিবিড়ঃ ঠিক বলেছি না মায়াবিনী? ( উরুতে চাপ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে)
মাথা উপর নীচ করে বুঝিয়ে দিলাম জ্বি, ঠিক আছে।
কিন্তু এতক্ষন আমি বুঝতে পারছিলাম, ছোট ভাইএর ভবিষ্যত নিয়ে সবাই চিন্তিত। কিন্তু শেষের আচরণ নিবিড়ের, কেন যেন অস্বাভাবিক লাগছে। ওর এমন আচরণ আমি চিনি কখন করে। কিন্তু এখন এমন কিছু কি হয়েছে? নিজের মনে প্রশ্ন করলাম। থাক এত ভেবেও আর কি? বেশি আর মাথা ঘামালাম না এখন।
মনে পড়ল ওর করা কালকে রাতের ব্যবহার। উরু থেকে হাতটা দ্রুত সরিয়ে দিলাম ঝাড়া মেরে। তারপর উঠে চলে এলাম রান্নাঘরে। নিবিড় এর কি রিয়েকশন, দেখা হলো নাহ আর।

সকাল ৮ টার মাঝে শশুরবাড়িতে নাস্তা করা শেষ হয়ে য়ায়। রান্না মা নিজের হাতেই করেন। ঘর ঝাড়ু মোছা কাপড় ধোঁয়া এসব রহিমা খালা করেন। খালা আর খালু নিচে একতালায় থাকেন। মজিদ খালু আমাদের দাড়োয়ান। উনারা নিঃসন্তান। খাওয়ার ব্যবস্থাও উপর থেকে দেওয়া হয়। উনারাও এই বাড়ির সদস্য। সেই এসে নিবিড়কে কোলে দেখেছেন। রহিমা খালা নিবিড়কে খুব স্নেহ করেন।

বাবা নিবিড় নাস্তা খেয়ে বের হয়ে যান। বাবা কলেজ প্রফেসর। কলেজ থেকেই বাবা আমাকে চিনেন। উনার প্রিয় ছাত্রী ছিলাম কিনা, অনেক স্নেহ করতেন। নিবিড় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এমএসসি করার পাশাপাশি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে জব করতো। ১বছর আগে ফ্যাশন হাউজ তৈরি করে।এই এক বছরে ও অনেক ডিল সাইন করেছে। ওর কোম্পানীতে আমি ফ্যাশন ডিজাইনিং এ বিএসসি পড়া অবস্থায় ম্যাইন ফ্যাশনারের অ্যাসিস্ট্যান হিসেবে জয়েন্ট করছিলাম। বিএসসি কমপ্লিট আমার। বিয়ের পর আমার পদ উন্নতি হবে জানতাম। কিন্তু আমার যখন অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে গেছিল। আমি জব টা রিজাইন করে দিয়েছিলাম।বিয়ের পরদিন কোন বর অফিস এ যায়? তাও আবার নিজের অফিসে। তাও নাকি তার প্রেমের বিয়ে। হাসলাম একটু।

৩টা বাজে। আমি বারান্দায় বসে আছি দোলনায়। দুপুরে আমি মা আর নীরব খেয়েছি। বাবা আর নিবিড় বাহিরে। মা বোধহয় এখন শুয়েছেন। নীরব নিজের ঘরে। হটাৎ পিছন থেকে ডাক এলো, মায়া?
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম নীরব। কিঞ্চিৎ ভ্রু উঁচু করে ওর দিকে তাকালাম। এই সময় এই ঘরে ওকে ভেবে।
আমিঃ তুমি এই সময় এখানে?
নীরবঃ আসা নিষেধ বুঝি? ( হাসি মুখে)
আমিঃ না না। আসো। কি ব্যাপার?
নীরবঃ পরশুরাতের পর তো আর কথা হয়নি। ভাবলাম গল্প করে যাই। বিয়ের পরদিন স্বামী সকাল সকাল বের হয়ে গেছে।তাও আবার লাভ ম্যারেজ। একা নিঃসংগ। ভাবলাম কোম্পানি দেই।পুরনো বন্ধু বলে কথা।( বারান্দায় ঢুকে রেলিং এ পিঠ থেকিয়ে আমার দিকে ঘুরে)
আমিঃ কথা বলতে আসলে বলো সমস্যা নেই। কিন্তু তোমার ভাই নেই বলে সংগ দিতে এসেছো এমন সংগ আমার চাই নাহ( কিছুটা রেগে অন্য দিকে মুখ করে)
নীরবঃ রাগ করছো কেন মায়া? আমি তো দেবর হিসেবে মজা করলাম।( ওই হাসি মুখেই)
আমিঃ এমন মজা আমার পছন্দ না। আর দেবর হিসেবে করলে ভাবী বলতে শিখো। তোমার বড় ভাইএর স্ত্রী আমি।( ওর চোখের দিকে তাকিয়ে)
হাসিটা মিলিয়ে গেল নীরবের মুখে থেকে।
নীরবঃ নিজের থেকে বয়সে ছোট মেয়ে কে আমি ভাবী ডাকতে পারব না। আর যাকে স্বামী বলছো,আদো কি জানো সে কোথায়?
আমিঃ অফিসে। আবার কোথায়! ( বলছি ঠিকই কিন্তু বুকে কেমন যেন লাগছে। হটাৎ নীরব এমন বলবেই বা কেন)
নীরবঃ তুমি খুব বোকা মায়া! এখনো বিশ্বাস করছো তোমার ওই সো কল্ড প্রেমিককে। ঊপস স্বামীকে।( আমার কাছে এসে নিচু হয়ে। ওর মুখে কেমন অদ্ভুত এক হাসি।)
(যা আমাকে ছারখার করে দিবে। এত কাছে ও। অনুভব করার সাথে সাথে ওর পাশ কাটিয়ে উঠে দাড়ালাম।)
নীরবঃ হলুদের রাতে কথাটা শুনলে আজ তুমি ঠকতে না মায়া।( সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে)
পকেটে হাত ঢুকিয়ে বারান্দা থেকে চলে যাচ্ছিল।দরজায় দাঁড়িয়ে বলল,
নীরবঃ অফিসে মিলি কে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করো ভাইয়া অফিসে গিয়েছে কিনা।( বলে বের হয়ে চলে গেল)

আমি এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। কি বলে গেল নীরব। নিবিড় কে কল করলাম দুবার।বেজে কেটে গেল।ভয়ে ভয়ে মিলিকে ফোন দিলাম।
আমিঃ মিলি তোমার বসের কি আজ কোনো মিটিং আছে?
(মিলি নিবিড় এর পিএ)
মিলিঃ না ম্যাম।আগামী ৭ দিন বসের কোনো মিটিং রাখেন নাই। বিয়ের পর এই কয়েকদিন স্যার আসবেন না বলে দিয়েছিলেন আগেই। আমাকে উনার সব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন।
(বুঝলাম ও অফিস এ যায় নাই।অকে আর এসব বুঝতে দিলাম না।)
আমিঃওহ! ও আসলে অফিসে আমাকে বলো তো।
মিলিঃজ্বি ম্যাম।
ফোন রেখে দিলাম। ধপ করে দোলনায় ফের বসে পড়লাম।

এই কি সে ছেলে যার গুন বাবা টেবিলে বলল? আমার জন্য সে কি করে নাই? ৫ বছরে আমি তার ভালোবাসায় মুড়িয়ে ছিলাম। জীবনে এত দূর এত তাড়াতাড়ি এসেছে, আমার জন্য। আমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে।বিয়েরদিন পর গাড়িতে আসার সময় ও কেমন আগলে রেখেছিল। বুকে মিশিয়ে। আর কালকে রাতে থেকে আমার কাছেও ঘেষেনি।নীরবের বলা হলুদের রাতের কথাটা আমার মনে পড়ছে।

ফিরে যাচ্ছি ৫ বছর আগে, নভেম্বরের ১৬ তে……..

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here