তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২১,২২

0
1840

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_২১,২২
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)
পর্ব_২১

“ইউ আর প্রেগন্যান্ট”
এ তিন শব্দের একটি বাক্য শুনে আমি থমকে গেলাম। নিশ্বাস নিতে যেয়েও নিতে পারছি না।জীবনের সুসংবাদ গুলো বুঝি হটাৎ করেই জীবনে আসে। খুশি আনন্দ গুলো এতবেশী প্রখর হয়ে উঠে এত অত্যাধিক ভাবে যেন মুখ ফুটে প্রকাশ করা অসম্ভব। ডক্টর এর কেবিন থেকে বাক্যটি শুনে আমি বের হচ্ছি। আমি যদি আর দশ মিনিট আগের মায়াবী হতাম তবে হসপিটালকে নিজের ঘর ভেবে রোগিদের নিজের বান্ধবী পাতিয়ে ডক্টর নার্সকে দর্শক বানিয়ে নাচানাচি শুরু করে দিতাম। ঠিক যেভাবে নিবিড় এর দেওয়া ঘুড়ি পেয়ে নিচে নেমে নেচে ছিলাম। একইরকম খুশি নয়। তবে দুইটার মাঝে একটা মিল রয়েছে। আমার জীবনে ভিন্ন ভিন্ন দুইটি মানুষের আগমন যা প্রতিটা নারী চায়। একজন জীবনের অর্ধাঙ্গ অন্যজন নিজের শরীরের বিন্দু বিন্দু রক্তকণিকা দিয়ে তৈরি। দুইটা মানুষকে না দেখার আগেই প্রতিটা নারী ভালোবাসে মনে মনে। তবে ভেবে দেখা যায় এই মানুষগুলো প্রথম যেদিন এসে জানান দেয় আমি এসে গেছি তবে আনন্দ প্রকাশের ভিন্নতা থাকবে কেন? কিন্তু এখন আমি একই ভাবে প্রকাশ করতে পারলাম না। আমার সন্তান আমায় ভেতর লালিত হচ্ছে। নেচে নেচে ওকে বাড়তে দেওয়ায় বাধা দেওয়া যাবে না।

কিন্তু এ কি করে সম্ভব? কি করে আমি ফেস করব ব্যপারটা?
আমার সন্তান আমার জীবন পাল্টে দিবে কি?

নিবিড় এর বুকে কাল ঢুলে পরার পর ও কোলে করে রুমে নিয়ে যায় আমায়। নিবিড় এর ফ্যামিলি ডক্টরকে ফোন করে নিয়ে আসে। কিছু টেস্ট করতে হবে বলে আমার ব্লাড নিয়ে যায়। ডক্টর বলে গেছেন কালকে হসপিটালে যেয়ে রিপোর্ট নিয়ে তাকে দেখিয়ে আনতে। তবে হ্যা কয়েকদিন বেশি খেটে ফেলেছি। খাওয়া হয়নি তেমন। নিজের কেয়ার নেওয়াও হয়নি। সেখানে কালকে থেকে ভাইয়ার বিয়ে নিয়ে আরো অনেক আমার দায়িত্বে ছিল। সেই ব্যস্ততায় সকাল থেকে চার কাপ চা আর দুটি বিস্কুট ছাড়া আমার পেটে কিছু পরে নাই। খালি পেটে চা য়ের ও ইফেক্ট পরেছে। দূর্বলতাই আমার সেন্সলেস এর কারন। আপাতত বিশ্রামের দরকার বলেই রুমে মাকে শুধু থাকতে দেওয়া হলো। আর আমার ঘাড় ত্যাড়া জামাই আমার জ্ঞান ফিরা না পর্যন্ত এক পা কোথাও যাবে না বলে কেউ তাকে নিজে থেকে যেতেও বলে নাই। আমাকে এখনই কিছু খাবার দিতে হবে বলে ডক্টর কিছু মেডিসিন লিখে আমায় ইনজেকশন পুশ করে দিয়ে চলে গেলেন।ভাগ্যিস সেন্সলেস ছিলাম নয়তো কে ইনজেকশন দিতে দিতো! যাওয়ার আগে বললেন কিছুক্ষণের মাঝে আমি জেগে যাবো। শশী আপু স্যুপ বানাতে চেয়েছিল আমার এক চাচী তা বানিয়ে দিলেন। আপু এনে মাকে এগিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। বাকি বাড়ির লোক অনুষ্ঠানটা ঠিক মতো চালিয়ে নিয়েছে।

নিবিড় নীরবকে বুঝি আজকে মারতোই। ভাগ্যিস আমার বাবা রুমে চলে আসায় নিবিড় থেমে গেল।আমার বাবা আমার মা চলে যাওয়ার পর থেকেই নাকি গম্ভীর। আগে নাকি এমন ছিল না মোটেও। তাতে আমার কি? আমি তো জন্মের পর থেকে বাবাকে এমনই দেখছি। কিন্তু মোটেও বদমেজাজি নয় বাবা। আমাকে বরাবরই তিনি বড্ড ভালোবাসেন। দেখান কিছুটা কম। বাবা ভেতরে প্রবেশ করায় মা আমার পাশ থেকে উঠে দাঁড়ালেন।

-আরে ভাই আপনি। ভিতরে আসুন।

-না না আপনাকে উঠতে হবে না বোন। মায়াবী উঠেছে কিনা দেখতে এলাম।

-বাবা ও মাত্রই উঠেছে। (নিবিড় বাবাকে বলল)

মা আমার বাবাকে বিছানায় বসতে বললেন।

-আমি আমার মেয়েটার সাথে আসার পর কথাই বলতে পারিনি। মাস খানেক আগে মেয়ের আজ ছেলের বিয়ে। বেশি কাজ পরে গিয়েছিলো একসাথে তাই আর কি। বোন আপনি যদি কিছু মনে না করেন আপনার বাড়ির লক্ষীর সাথে কি আমি কিছুক্ষণ থাকতে পারি?

-আরে ভাইসাহেব কি বলছেন। আপনার মেয়ে আমাদেরকে দিয়েছেন। আমরা এতে ধন্য। কথা বলবেন আমরা কি বাধা দিতে পারি? (নিবিড় নীরবকে ইশারা করে) তোরা দুইজন বাহিরে চল।

বলে বের হলেন। পিছনে নীরব। নিবিড় আমার দিকে তাকিয়ে আছে। একবার স্যুপটা দেখছে একবার আমাকে।

-তুমি কিছু বলবে?(বাবা আমার পাশে বিছানায় বসে তাকিয়ে দেখলো নিবিড় এখনো যায়নি।)

-না বাবা মানে…

-নিবিড় বাবা আমি মায়াবীকে খাইয়ে দিবো। চিন্তা করো না।

নিবিড় আর আমি দুইজন অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলাম। নিবিড় আর দেরি না করে বেরিয়ে গেলে আমার বাবা আমার দিকে তাকালেন।

-তুই কেমন আছিস মা?

-(বাবার মুখ পানে চেয়ে) এ কথা জিজ্ঞেস করছো কেন? এখন তো ভালো আছি।

-উঁহু। তুই ভালো আছিস মানলাম। কিন্তু সুখে আছিস তো?

-কি বলছো? সুখে নেই আমি?

-ছাদে দেখেছি শ্বশুর শাশুড়ী জড়িয়ে ধরে আদর করছিল। মনে হচ্ছিল তুই মায়ের অভাববোধ করছিস না আর। দেখে অনেক আনন্দিত হয়েছি মা। আমি এত আদরে বড় করেও যা দিতে পারিনি। তোর শাশুড়ী তোকে একমাসেই দিয়ে দিয়েছে। আমি এখানে তোর বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম না। কারন একদিন তোর শাশুড়ী তোকে নিতে চায়নি। মা মরা মেয়ে সংসারী হবে কিনা তার সন্দেহ ছিল। পরে অবশ্য নিজে এসে তিনি তোকে চেয়ে নিয়ে গেছেন। তখনো আমি দোটানায় ছিলাম মেয়ে কি আমার সুখি হবে? আজ তোর জন্য উনাদের টেনশন, তোকে খাইয়ে দেওয়া, বিচলিত হওয়া তোর শ্বশুর বাবাকে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বুঝেছি তুই বেজায় সুখি। তোর ওই বাড়িতে বিয়ে দিয়ে আমি ভুল করিনি।

-উনারা আমাকে মেয়ে ভাবে বাবা। বাবা তো আমায় সবসময় মা ডাকেন। এমন কি মা আমাকে কপালে চুমুও খান। আমি সত্যি খুব ভাগ্যবতী বাবা।

-ভাগ্যবতী তো তুই অবশ্যই নিবিড় এর মতো একজন স্বামী পেয়ে। ছেলেটা তোকে অনেক ভালোবাসে।

-বাবা।
(বাবার সাথে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক কখনোই ছিল না আমার। আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে। এই কথাটি বাবার মুখ থেকে শুনতে আমার লাজে মরে যাওয়ার মতো লাগছিল)

-আমি তা জানি মায়াবী। যে ছেলে বাবা মার বিপক্ষে যেয়ে আমার কাছে হাঁটু গেরে হাত পেতে তোকে চেয়েছিল। তোর মায়ের ছবির কাছে বসে তোকে তুলে দিতে বলছিল ওই ছেলে তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে। ভালোবাসতে সে জানে। মা মরা মেয়েকে গুরুজন ছাড়া একটা ছেলের কাছে তুলে দিতে পারিনি তোকে। আর নিবিড় এর বাবা মার দোয়া ব্যতিত তুই কখনো সুখেও থাকতে পারতি না। আমি তাই সেদিন ছেলেটাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। পরে ওর মায়ের বলায় আরস্ত হয়ে দিয়ে দিলাম ছেলেটার হাতে। আমি জানতাম তুই সুখি হবি। নিবিড় তোকে সুখেই রাখবে।

-বাবা আমি ভেবেছিলাম তুমি রেগে আছো আমার সাথে। নিজের পছন্দ করে বিয়ে করায়। তাই বিয়ের দুইদিন পর বাসায় এসে দুইদিন থাকলাম। কথা বললে না।

-মা রে আমি ব্যস্ত ছিলাম। তাই আজ কষ্ট লাগছিল। বিয়ের পর মাস পেরিয়ে গেছে এখনো মেয়েটার সাথে কথা বলিনি। আমায় ক্ষমা করে দিস মা।

-বাবা কি বলছো তুমি? তুমি আর ভাইয়াই আমার কাছে সব জন্ম থেকে। তোমাদের উপর রাগ করার ক্ষমতা না আমার কোনোদিন ছিল না কখনো হবে। তোমরা আমায় সব দিয়েছো। কখনো অভাববোধ করিনি।

-নে তবে খাইয়ে দেই। খাওয়াতে দিস যদি তবে বুঝবো বাবার উপর রাগ নেই।

-বাবা তুমি?

-বানু আপা আর ফয়সাল তোকে খাইয়ে দিয়েছে সবসময়। আমি কখনোই সিরিয়াল পাইনি। আজকে আমার পালা।

হেসে দিলাম বাবা আর আমি। খাওয়ানো শেষে বাবা চলে যেতে নিয়েও বললেন,
-সুখে আছিস তুই আমি দেখেছি। কিন্তু কোথায় যেন খাপছাড়া লেগেছে। বিষয়টা কি বুঝতে পারলাম না। আমার এমন লাগা ভুল ও হতে পারে। তাও বলছি পছন্দের বিয়ে করিস ঠিকই কিন্তু আমার অনুমতি ব্যতিত না। কখনো একবিন্দু খামতি পেলে আমায় জানাবি। ভাববি না বাবাকে কোন মুখে বলবো। আমাকে নয়তো ফয়সালকে জানাবি।কিছু হলে দ্বিতীয় বার ভাবার দরকার নেই। (বলে কপালে চুমু একে দিয়ে বাবা বেরিয়ে গেলেন)

ঠায় বসে রইলাম। বাবা মা বুঝি এমনই হয়। কয়েক মুহূর্ত মুখ দেখে বুঝে জান সন্তানের কিছু হয়েছে।

মা বাবা আমার রুমে এসে বিদায় নিয়ে চলে গেল। তবে আমি তো নিবিড় এর অপেক্ষায় ছিলাম। ছেলেটি আর একবারও এলো না যাওয়ার আগে। ওর সেই থিওরি মনে পরে গেল।
“শেষ যাওয়া তো না। ফিরে তোমার কাছেই আসতে হবে। তবে কেন বিদায় দিবো?”

বিদায় না দাও দেখে যেতে স্যুপটা শেষ করেছি কিনা। বিরক্তিকর ছেলে!

সকালে আজ আমাকে কেউ কাজ করতে দিচ্ছে না। সোফায় বসে সবাইকে দেখছি আর তদারকি করছি। বিচ্ছু ভাই বোন গুলো খুব খাতির করছে আমার আজ।একটু পর পর এটা খাবা ওইটা খাবা, এই সেই চলছেই।মনে হচ্ছে পাল্লাপাল্লি করছে। কার চেয়ে কে বেশি আমার যত্ন করতে পারে। ব্যপারটা ঠিক হজম হলো না। হাঁদারাম গাধা একটাকে বের করে ডাক দিয়ে আমার পাশে বসালাম সোফায়।

-এই তিন্নি এখানে আয় তো।

-কেন রে মায়াবী আপি?

-এসে বস তো।কত কাজ করছিস আজকে তুই। আমার সব কাজ তুই একা করছিস।তোর তো প্রমোশন করাতে হবে।

-ঠিক বলছিস আপি?(অবাক হয়ে)

-আরে হ্যা হ্যা। কিভাবে প্রমোশন ঘটবে জানিস?

-কিভাবে? লিডার বানিয়ে?

-লিডার তো হবি। এর সাথে ও আমার জামাইএর মতো হ্যান্ডসাম জামাই পাবি। এমন ছেলে দেখে প্রেম করিয়ে দিবো।

-আপি? তুই বলছিস?(খটকা লাগছে এমন ভাব)

-আলবাত?। কেন কোনো সন্দেহ আছে?

-দুলাভাই আর তোর তো অনেক মিল?।

-নিবিড় এখানে কোথা থেকে এলো?

-দুলাভাই ও তো একই কথা বলেছে।

-কি বলেছে?

-আরে কালকে দুলাভাই আমাদের দুইটা করে সব বিচ্ছু বাহিনীকে আইসক্রিম খাইয়েছে। বলেছে যে তার বউ এর বেশি খেয়াল রাখবে তাদেরকে সুন্দর সুন্দর বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে দিবে। আমাকে আর মৌকে তো বলেছে একদম দুলাভাই এর মতো হ্যান্ডসাম গুড লুকিং ছেলে খুঁজে দিবে। নাইলে সেম টু সেম কপি। (কত যে আনন্দের সাথে বলল কথাটা)

এতক্ষণে বুঝলাম কালকে কেন আমায় এসে দেখে যায়নি আর নিবিড়। এদের গিলাচ্ছিল আর পটাচ্ছিল কি না। আমার এতো খাতির যত্ন কেন বিচ্ছুদের এটার রহস্য ও বুঝতে পারলাম। নিজে থেকে কিচ্ছু করে নাই এরা। সব কয়টা লোভী। নিবিড়কে এখন পেলে মাথার মধ্যে ডাঁসা মারতাম। যত্তসব বাজে বুঝিয়ে গেছে এদের।

-নিলজ্জ পড়িস কোন ক্লাসে?(রাগে ঘটঘট করে বললাম)

-(খুশি মুখ বিলীন হয়ে যেয়ে) কলেজে উঠেছি।

-এ বয়সে আমিও প্রেম করিনি। তুই করতে চাস? তাও আবার আরেকজনের জামাই এর মতো দেখতে ছেলেকে? বেহায়া মেয়ে।

-(কাঁদো কাঁদো ফেসে) তুই সত্যি বাজে বকিস আপি। দুলাভাই ঠিকই বলে। কিসব ওয়ার্ড বলিস।

-অসভ্য মেয়ে। যাবি এখান থেকে। নাকি লাগাবো এক ঘা?

দৌড়ে উঠে চলে যেতে নিয়ে ও কি মনে করে আমার কাছে এসে একটু নিচু হয়ে বলল
-আপি দুলাভাইকে বলিস না আমি তোর কাছে ধরা পরে গেছি। নয়তো আমাকে না মৌকে বয়ফ্রেন্ড এনে দিবে। আর দুলাভাই এর মতো সেম আরেকপিছ একটাই আছে। পরে আমি পাবো না।

-কে আরেক পিছ?

-কেন তোর দেবর।(বলেই দু হাতে মুখ ঢেকে ফেলে লজ্জায় দৌড়)

ভাবছি কি বলে গেল। তবে এটা ঠিক নীরব অনেকটাই ওর ভাইয়ের মতো দেখতে। যদিও আমার নিবিড় বেশি সুন্দর। তবে লম্বায় চুল বডি প্রায় অনেকটাই একরকম। তবে স্মার্টনেস টা যেমনই হোক। নিবিড় এর বরাবর নীরব এর এমন পারসোনালিটি নেই। আসলে এই পারসোনালিটিটা নিবিড় এর বড্ড বেশি। এমন পুরুষ যেকোনো নারীর কামনা। ভেবে হাসলাম। ছেলেটা আমারই এখনো। আমার খেয়ালটাও ওর আগের মতোই আছে। শুধু আমাকে দেখতে দিচ্ছে না।কিন্তু কেন?

শশী আপু মনে করিয়ে দিল ডক্টর এর কাছে যেতে। ভাইয়াকে আমার সাথে পাঠাতে চাইলো। আমি বললাম আজকে বিয়ে প্লিজ কাহিনি করো না তো ভাবীপু। আমি বিচ্ছু বাহিনীর একটাকে নিয়ে যাচ্ছি। তাই উৎসকে ডেকে নিলাম। রেডি হয়ে আসছি বলে ওকে রিকশা ডাকতে বললাম। আমার থেকে উৎস এক বছরের ছোট। ওর সাথে আমার চুলোচুলি সম্পর্ক থাকা স্বত্তেও এক কথায় আমার সাথে হসপিটালে যেতে রাজি হয়ে গেল। আবার আমাকে সাবধানে রিকশায় তুলে বসালো। বুঝলাম এর ও গার্লফ্রেন্ড নাই। নিবিড় এর কথায় পটে গেছে বিশ্বাস ও করছে বলদ টা।

হসপিটালে গাইনি বিভাগে গেছি বলে উৎস ভিতরে যায়নি। হসপিটাল থেকে বের হয়ে উৎসকে কিছু বললাম না।নিবিড় এর অফিসের দিকে যাবো ভাবছি। ওকেই আগে জানাতে হবে। অন্য কেউ জানলে কেলেংকারী হয়ে যাবে যে……

#তোমার_প্রেমে_মাতাল
#লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্ননাম)
#পর্ব_২২

হিসেব মেলাচ্ছি পিরিয়ডের ডেট কবে ছিল। পাক্কা দুই মাস যাবৎ মিস করেছি অথচ কোনো খেয়াল নেই। কি করে বেখেয়ালি হয়ে গেলাম? পিরিয়ডে আমার অনেক কষ্ট হয়। না হলেই বাঁচি। তাই না হওয়াতেই মাথায় আসে নাই। ইচ্ছে করে মনেও করি না। মনে করলেই পেট ব্যথা করবে এমন ভাব৷ কিন্তু ভাবতে লাগলাম আমার বিয়ের ৮/৯ দিন আগে ডেট ছিল আমার। মাঝে মাঝে কয়েকদিন আগে পিছেও হয়। তাই মাথা ঘামাচ্ছিলাম না। দেরি হচ্ছে বলে। বিয়ের ও ডেট এসে পরেছিল। মেহেদি হলুদ শপিং এ সব ভুলে গিয়েছিলাম। আবার সেকেন্ড মাস টাও এমন হয়েছে। ফ্যাশনশো এর কাজে এত ব্যস্ত ছিলাম ঘুমিয়েছি সেখানে কাজ করেছি বসে যেখানে। এই অবস্থায় পিরিয়ডের ডেট কিভাবে মনে থাকবে।

শীতকালটা চলে আসবে বলেই জানান দিচ্ছে সন্ধ্যার দিকে এই ঠান্ডা আবহাওয়া দ্বারা। বেশ কিছুদিন বৃষ্টি পাবো না বলেই বড়ই আপস। আমার পেটের বাবুর জন্য কি আবহাওয়াটা ভালো? না বোধহয়। মায়ের এতো ঠান্ডা লাগছে আমার বেবির জন্য হার্মফুল সিউর আমি।

কিছু না ভেবে তাড়াতাড়ি রওনা হলাম বাসার দিকে। বেলা ৪ টা বাজে৷ ফোনে ঘড়ি দেখতে যেয়ে দেখলাম ভাইয়ার ২১টা, শশী আপুর ২৭টা কল আর নিবিড় এর ৫২টা।আজকে ভাইয়ার হাতে মার খাবো সিউর।প্রায় তিন ঘন্টা পার্কে ছিলাম একা।সবাই চিন্তা তো করবেই। কারো কল রিসিভ করিনি। ভাইয়া শশী আপুর ওয়েডিং আর রিসেপশন একসাথে হচ্ছে বড় পাঁচতারা হোটেলে। যেহেতু বিয়ে পড়াতে হবে না তাই আর কি। সন্ধ্যার দিকে থেকে ফাংশন শুরু হবে। বাসায় যাবো কখন, খাবো কখন, রেডিই হবো কখন। কত কাজ।

পার্কের বেঞ্চ থেকে উঠে রাস্তায় এলাম। রিকশা খুজছি। তাড়াহুড়োর সময় ঠিক প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়াও যায় না। হটাৎ কেউ পাশ থেকে বলে উঠল
-কেমন আছো ভাবী?

-শিমুল ভাইয়া আপনি? ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

-জি আমিও।তুমি এখানে কি করছো?

-আসলে দরকার ছিল। আর এইদিকে আপনি?

-কাজে।অফিসের একটা ব্রাঞ্চ এইদিকে। তাই আসা।রাস্তার ওপাশ থেকে দেখলাম তুমি রিকশা খুঁজছো। তাই ভাবলাম কথা বলি।কালকে তো তোমার সাথে কথা হলো না।

-হ্যা ভাইয়া কালকে তো আপনাকে আমি দেখিও নেই।

-দেরিতে এসেছিলাম।যখন তুমি নাচছিলে আর আমার বন্ধু যেয়ে তোমাকে অন্যের কাছে দেখে সহ্য করতে না পেরে নিজে কাছে টেনে নিয়ে নাচতে লাগলো তোমার সাথে, তখন গিয়েছিলাম। (বলে ভাইয়া মুচকি হাসলেন)

আমার লজ্জা পাওয়া উচিত শিমুল ভাইয়ার কথা শুনে। কিন্তু আমার আরো রাগ হলো। যেন আমাকে কাটা গায়ের নুনের ছিটা দিয়েছেন।

-ভাইয়া আপনার বন্ধু আমার সাথে কাউকে সহ্য করতে পারে না কিন্তু নিজের অন্যের কাছে ঠিকই যায়।(মুখটা যথেষ্ট শক্ত করে বললাম ভীষন রাগে)

কখনোই আমি কোনোদিন ও নিবিড় এর কোনো বন্ধুর সাথে এভাবে কথা বলিনি। শিমুল ভাইয়ার মুখটা ছোট হয়ে গেল। কিন্তু আজকে আমি আবার যা দেখেছি তা দেখার পর আমার শাশুড়ী আমাকে নিবিড় নিয়ে কিছু এখন বললে উনাকেও দুটো কড়া কথা শুনিয়ে দিতাম।

-ভাবী তুমি রুশমিকে নিজের বাসায় থাকতে দিচ্ছো কেন?

অবাক হয়ে শিমুল ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি ও কি তবে জানেন ব্যাপারটা?

-মানে?

-আসো পার্কটায় বসি। দাঁড়িয়ে কতক্ষণ। আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলাটা কেমন না?

-জ্বি ভাইয়া। চলুন। (আমার দাঁড়িয়ে থাকতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। দুপুরে এখনো কিছু খাইনি বলে)

-রুশমির কথা তোমাকে নিবিড় আগেই বলেছে আমি জানি। নিবিড় তোমাকে কেমন ভালোবাসে তাও আমি জানি। কিন্তু এখানে নিজের ভালোবাসা থেকে ওর দায়িত্ব অনেক বেশি।

-দায়িত্ব? কি বলছেন ভাইয়া আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

-রুশমি নিবিড় এর প্রাক্তন জেনেও মেয়েটাকে বাসায় রাখা ঠিক করো নাই। জানি তুমি নিবিড়কে বিশ্বাস কর। আর ও বিশ্বাস করার মতোই ছেলে। কিন্তু বেশি ভালো হওয়াও ঠিক নয়। তোমারও না নিবিড় এর ও না। রুশমির বিয়ের পর নিবিড় যেমন হয়ে গেছিলো তা তুমি ওর জীবনে আসার আগ পর্যন্ত নিবিড় এমনই ছিল। তবে তুমি আসার পর থেকে নিবিড় আগের থেকে বেশি পরিবর্তন হয়েছে বরং আরো দায়িত্ববান হয়েছে। আজ ওর বিজনেস এভাবে এত তাড়াতাড়ি উঠে যাবে শীর্ষে আমরা বন্ধুরাই চিন্তা করিনি। এসব তোমার জন্যই হয়েছে।

নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম। শিমুল ভাইয়া আবার বলা শুরু করলো।

-কিন্তু এখানে রুশমির সাথে নিবিড় এর আগে দেখা না হলে তোমার জন্য ও এত পাগলও হতো না। এটাও সত্যি।

-মানে?

-রুশমিকে নিবিড় নিজের কাছে রাখতে পারে নাই নিজের জীবনে। কোনো মেয়েকে নিজের জীবনে ইনভলভ করে সারাজীবন পাশে রাখতে পারবে না এই পরিস্থিতিতে ও আর পরতে চায়নি কখনো।কিন্তু তোমার প্রেমে যখন পরে যায় তখন বুঝে তোমাকে ও ছাড়তে পারবে না। তার জন্য ওর যা যা করতে হইছে ও করেছে। তোমার সাথে যে ওর দুই বছর আগেই বিয়ে হয়েছে তাও নিবিড় চেয়েছিলো বলে। তোমাকে ও নিজের সাথে বাধতে চেয়েছিলো বলে। তোমাকে সব ভাবে নিজের করে পেতে চেয়েছিলো বলে। তবে অপবিত্রতায় নয় পবিত্র করে চেয়েছিলো। তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো আমি কি বোঝাতে চেয়েছি?

শিমুল ভাইয়ার কথা আমি অলরেডি বুঝে ফেলেছি। কিন্তু বিস্তারিত আমায় জানতে হবে।

-তবে নিজে কি করে বলবে বুঝছিল না।তুমি নিজেই বলে ওকে সুযোগ করে দিলে। কিন্তু পরে যদি পস্তাও বাসায় না জানিয়ে বিয়ে করেছো। তাই তোমাকে নিবিড় ভাবার সময় দেয়। কিন্তু মাস খানেক প্রতিদিন বিয়ে কর বিয়ে কর শুনে বুঝে গেল তুমি বিয়ে করতে প্রস্তুত। তোমার সম্মতিতেই বিয়ে টা হলো।

-ভাইয়া আপনি এসব কি বলছেন?

-হ্যা ঠিকই বলছি। তোমাদের সম্পর্ক এক ধাপ করে এগিয়েছে তুমি নিজে থেকে চেয়েছো বলে। প্রত্যক্ষ এমন মনে হলেও কিন্তু আসলে এটা নয়। নিবিড় তোমাকে দিয়ে করিয়েছে, এসব নিবিড় চেয়েছে বলেই হয়েছে। নিবিড় নিজে না বলে তোমাকে দিয়ে বলিয়েছে। এতে নিবিড় ও বুঝে গেছে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করছে না। তুমিও আপস করবে না কোনোদিন। নিবিড় জোর করে করিয়েছে বলে দোষ ও চাপাতে পারবে না।

শিমুল ভাইয়ার কথা শুনে পুরোনো সব মিলাতে লাগলাম। সত্যি মিলে যাচ্ছে একে একে।

-ভাবী এত ভেবো না। নিবিড় তোমাকেই ভালোবাসে। তোমাকে পেতেই ও সব করেছে। কিন্তু রুশমির সাথে ব্যপারটা অন্য। যার সাথে রুশমির বিয়ে হয় নিবিড় আগেই খোঁজ নিয়ে দেখে ছেলে খুব ভালো। জার্মান জব করে। রুশমি সুন্দরী ছিল বলেই মেয়ে বয়সে ছোট অবস্থায় বিয়ে করে। বাইরে নিয়ে তাকে পড়াবেও। নিবিড় প্রথম দিকে খোঁজ ও রাখতো। রুশমি ওখানে পড়ালেখা শুরু করে দেয়। জীবনে সুখে আছে। তাই নিবিড় খোঁজ নেওয়া ছেড়ে দেয়।কিন্তু আজ রুশমির যে অবস্থা নিবিড় তার জন্য নিজেকে দায়ী করছে। ও যদি সব সময় খোঁজ রাখতো তবে রুশমির এত খারাপ পরিস্থিতি আসতো না।

-রুশমির খারাপ পরিস্থিতি?

-হ্যা। ওর সাংসারিক জীবন ভালো যাচ্ছিল না। এক্সাক্টলি কি হয়েছে আমি জানি না। তবে ওর হাসবেন্ড মেবি ভালো না। বৈবাহিক জীবন ভালো যাচ্ছিল না। পালিয়েই বাংলাদেশে এসেছে। নিবিড় তাই তোমাদের বাসায় জায়গা দিয়েছে। ওর সব ঠিক না হওয়া পর্যন্ত রাখবেও। ওর না হয় দায়িত্ব কাজ করেছে। তোমার তো কিছু না। তুমি কেন এল্যাউ করছো? রুশমি থেকে নিবিড়কে দূরে রাখো। তুমি তো নারী। নারীদের নাকি ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় স্বামী নিয়ে বেশি সজাগ থাকে। তুমিও নিশ্চয়ই আমার কথা বুঝতে পেরেছো?

মাথা উপর নিচ করে হ্যা বুঝিয়ে দিলাম।

-ছেলেটা বড্ড ভালো। ওকে ছেড়ে দিও না এভাবে। আচ্ছা ভাবী অনেক বাজে। বাসায় যেয়ে তো রেডি হয়ে আবার বের হতে হবে।

-হ্যা ভাইয়া। আপনাকেও তো।

-হু। চলো তবে। আমি তোমায় পৌঁছে দেই।

-না ভাইয়া আপনার তো যেতে হবে। আমি রিকশা করে চলে যেতে পারব।

-সিউর তো?

-জ্বি ভাইয়া।

-তবে চলো তোমায় রিকসা করে দেই।

রিকশায় উঠার পর শিমুল ভাইয়া আবার বলে দিল ব্যাপারটা মাথায় রাখতে। রিকশায় বসে দেখলাম অনেক বেশি দেরি করে ফেলেছি। শশী আপুকে কল দিয়ে বললাম,
-বকা পরে দিও ভাবীপু। এখন মেজাজ ভালো লাগবে না। তুমি পার্লারে মৌকে নিয়ে গেছো জানি। উৎস আমাকে জানিয়েছে। আর উৎসই তোমাকে আর মৌকে পার্লার থেকে নিয়েও যাবে। আমি বাসা থেকে রেডি হয়ে হোটেলে পৌঁছে যাবো। চিন্তা করো না। আর তোমার জামাইকে তুমি জানিয়ে দিবে আমি ঠিক আছি।

শশী আপুকে আচ্ছা ছাড়া আর কিছু বলতে দিলাম না। ফোন কেটে দিলাম। নাহলে পেঁচাল পারবে।

রিকশায় বসে ভাবতে লাগলাম কি দেখেছি। হসপিটাল থেকে বের হয়ে উৎসকে বললাম,
-তুই বাসায় যা তো। আমার কাজ আছে।

-নাহ! দুলাভাই পিটাবে।

-আমি তোর দুলাভাই এর কাছেই যাবো বলদ।

-ওহ তাই বল।কেন রে জামাইকে ছাড়া থাকতে ভাল্লাগে না??

-চটকানা লাগাবো বেহায়া।

-আচ্ছা আচ্ছা মজা করছিলাম। তবে কি অফিসে যাবি? আমি নামিয়ে দিয়ে যাই।

-যেয়ে উল্টো ফেরত আসবি কেন? রিকসায় উঠে যাবো। চিন্তা করিস না। রোজ একাই যাতায়াত করি।ঢং।

-তুই অনেক খিটখিটে মায়াবী।(বলে রিকশা ডেকে দিল)

রিকসায় উঠে অফিসের কাছাকাছি চলে আসায় দেখি রাস্তার ডান পাশে নিবিড় আর রুশমি। রিকসা থামাতে বলে ওদের দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম। ভাবছিলাম ফার্মাসির সামনে কি করে এরা। দেখি রুশমির বাহাত ব্যান্ডেস করা। নিবিড় ওর ব্যান্ডেস করা হাত টা দেখছে। আর এই সেই বলছে। মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করলাম।

-তোমার নিজের কোনো কেয়ার নেই রুশমি? এখন তোমার কিছু হয়ে গেলে? এমন জেদ কেন করো? অন্য কেউ ক্ষতি করছে না বরং তুমি নিজেই নিজের ক্ষতি করছো।

-আমাকে ক্ষমা করে দাও নিবিড়!

-এসবের কোনো ক্ষমা নেই। ফারদার আমি এমন কিছু তোমায় করতে দেখেছি তবে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না।

অমনি রুশমি নিবিড়কে জড়িয়ে ধরলো। নিবিড় ওকে না ধরে বরং ছাড়িয়ে নিলো। দেখে খানিকটা আরস্থ হলাম। কিন্তু ওইটা খানিকের জন্যই।

-হয়েছে হয়েছে। এসব করলে আমার রাগ কমবে না। তুমি এখন আমার দায়িত্বে আছো। এসব যেন দ্বিতীয়বার না হয়।

-আচ্ছা তো সরি। আর কখনোই এমন করবো না প্রমিজ।শুধু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।(বলে আবার জড়িয়ে ধরলো)

-(নিবিড় এখন ছাড়ালো না আবার নিজে ধরলো ও না) কিছু হলে আমাকে আগে বলবে। নিজে থেকে কিছু করবে না।

ওরা দুইজন এত নিজেদের মধ্যে মেতে আছে আমি রাস্তার বিপরীতেই রিকসায় বসে ওদের দেখছি কারো কোনো খেয়াল নেই। চলে আসলাম রিকসা ঘুরিয়ে পার্কটায়। যেখানে নিবিড় আমাকে প্রথমদিন নিয়ে গিয়েছিল।

মায়াবিনী ছাড়া আমি এত অচল কেন? রুশমির জন্য এত ব্যস্তায় থেকেছি মায়াবিনীর কাছে বসাও হয়নি একদণ্ড বিয়ের পর। কিন্তু তবুও দেখতে তো পেতাম। আমার চোখের সামনে থাকতো। বাসাতে একরুমে থাকি এমনি দেখতে পাই। অফিসে বার বার ওকে কয়েকবার কেবিনে ডেকে নেই কাজ কতো টুকু করেছে দেখতে, যেখানে আমি জানি ওর উপর যতখানি দায়িত্ব থাকে, যতখানি কাজ ওর আন্ডারে থাকে, মায়াবিনী ওইসবটা সময় শেষ হওয়ার আগেই সব সাবমিট করে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দেয়। শুধু ওকে দেখার বাহানায় কত কিছু করি। ওর ঘুমানোর অপেক্ষায় শুধু শুধু কত রাত লেপটপ নিয়ে বসে কাজের ভাব দেখিয়ে সজাগ থেকেছি। ঘুমিয়ে গেলে চোখের তৃষ্ণা মেটাতে শুরু করি।কালরাতে ওকে দেখে দেখে ঘুমাতে পারিনি। আজকেও কত সময় হয়ে গেল মায়াবিনীর ছোট গোল মুখটা, টানা টানা বড় চোখজোড়া, ফোলা ফোলা গোলাপি ঠোঁট, আর কোমড় ছোয়া চুলগুলোকেও দেখতে পাচ্ছি না। কখন সন্ধ্যা হবে কখন তোমায় দেখবো বউ? আর যে সবুর করতে পারছি না।
(নিবিড় নিজের ফোনের ওয়ালপেপারটায় চুমু খেয়ে বলে) তোমার মাতাল ছেলের মনে কেমন প্রেম প্রেম পাচ্ছে মায়াবিনী!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here