তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_৫+৬

0
2316

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_৫+৬
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)
পর্ব_৫

পরদিন বিকালে, মায়াবী মাত্র পড়া থেকে উঠে মোবাইল হাতে নিল। একটু গ্রুপ চ্যাট করবে সাজেশনের জন্য।
1 message request, Nibeer Ahmed
নিবিড়ঃ আজকে সময় মতো উপরে চলে এসো।

-এ্যাঁ? আমার আইডি কি করে পেল? তাহলে কি লোকটা আমার নাম জানত? তবে মায়াবিনী কেন ডাকে? কি জানি বাবা! ওরে নবাব সিরাজুদ্দৌলার! তুই আমাকে বিদায় দিয়ে যাস নাই। আবার উল্টো হুকুম?? যাব না আমি।তুই যা মন চায় কর। পহেলা এপ্রিল ছাড়া তো আমি বের হচ্ছি না। এই চার মাস তুই আমার নাগাল পাবি নাকি?
আরও কতো কি বললাম তাকে মনে মনে।

আগেরদিন রাতে,
শালা মারবি নাকি? বাইকের সামনে এভাবে কেউ দাঁড়ায়? তুইও মরতি আমাকেও মারতি।
ব্রেক কষে ছিল নিবিড়, শিমুল ওকে ফোন দিতেই থাকে।কিন্তু নিবিড় তুলছিল না। রাস্তায় দেখে নিবিড় বাইক চালিয়ে এইদিকেই আসছে।চলন্ত বাইক আটকানোর এই একটা পদ্ধতিই মাথায় আসছিল তখন। সামনে দাড়িয়ে যাওয়া।
শিমুলঃ ফোন ধরছিলি না।ওই একটা উপায়ই মাথায় আসছিল।বাই দা রাস্তা কোন ধান্দায় ছিলি তুই??
নিবিড়ঃ শুনতে পাই নাই?।( মায়াবিনীর খেয়ালে ডুবে ছিলাম। কি করে টের পেতাম)
এসব বলে ক্যাম্পাসের সামনে চলে আসলো। শিমুল আগে ঢুকেছিল। নিবিড় বাইক পার্কিং করায় লেট হচ্ছিল।

আযানের সময় হয়ে গেছে। আমি উপরে যাইনি।একটা মেসেজ আসলো মেসেঞ্জারে। চেক করে দেখি নিবিড় এর মেসেজ।

“প্লিজ আসো না মায়াবিনী! রক্ত দিয়েছি আসার আগে।শরীরটা অনেক দুর্বল। দাড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। তুমি না এলে আমি কোথাও যাব না। ডিসিশন তোমার হাতে মায়াবিনী”।

আর কিছু ভাবার প্রয়োজনবোধ করিনি। দৌড়ে চলে গেছিলাম ছাঁদে।
মনমরা একটা ছেলেকে দেখতে পেয়েছিলাম রাস্তায়। যে আমার মুখ দেখা মাত্র একটা উৎফুল্ল হাসি দিয়েছিল। ওই হাসিটা আমার মনে গেঁথে গিয়েছে।হাসি দিয়েই বাইকে চড়ে বসল। তারপর চলে গেল।আজকেও বিদায় দিল না।কিন্তু বিন্দু পরিমাণ খারাপ লাগেনি আমার।ওই হাসিতে যা ছিল তা আমার মন ভালো হওয়ার ঔষুধ। মন খারাপের আগেই মেডিসিন পেয়েছি আমি। কি করে মনটা খারাপ হবে!!

ওইদিন আমার মেসেজ পাওয়ার ঠিক ১মিনিটের মধ্যে মায়াবিনীকে ছাঁদে দেখতে পেয়ে বুঝে গেছি আমার আর কিছু চাওয়ার নাই। যা চেয়েছিলাম মনে মনে, তার চেয়েও বেশি আমি পেয়ে গেছি। পেয়ে গেছি আমি মায়াবিনী। তুমি দিয়ে দিয়েছো। শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা।

মেসেজে দুই তিনদিন পর পর কথা হতো আমাদের। তেমন কিছু না। এই দুই তিন দিন সকাল সন্ধ্যা কি করেছি A to Z প্রতি সেকেন্ডের করা কাজের লিস্ট আমাকে তাকে টেক্সটে লিখে জানাতে হতো।কেন রে ভাই? প্রতিদিন কথা বল।কি কি করি প্রতিদিনেরটা প্রতিদিন জেনে নাও। না না। তার আবার এসব পছন্দ না। পরিক্ষার আগে নাকি রোজ কথা বলা যাবে না। কারন কি বলে নাই আমাকে। সময় নষ্টের চিন্তা থাকলে এইটা ম্যাথ ঠিকই বুঝতো।একদিনে কি করছি লিখতে যা সময় লাগে, দুতিন দিন পর ৩দিনের করা কাজ লিখতে তিনদিনের সময় যোগ করে তা লিখতে লাগে। বরং বেশি লাগে সময়।আগের দিনে কি করছি মনে করতে সময় লাগে। আবার সন্ধ্যায় সেই প্রতিদিনের দশ মিনিট তো আছেই। অংকে বড়ই কাঁচা। কি করে শহরের সরকারি ভার্সিটিতে চান্স পেল? তাও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ? হিসেব মিলে না?।হাহ!!

পরে অবশ্য জেনেছি, একমাস আগেই এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছিল। O- রক্ত হওয়ায়, ও ছাড়া আর ওর কোনো বন্ধুর সাথে মিলে না।ওইদিন গর্ভবতী এক মহিলার ইমার্জেন্সি দরকার পরছিল। এক মাসের ব্যবধানে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়ায় শরীর সত্যি দূর্বল ছিল।

এভাবে মাস খানেক কেটে গেল। আমার আর নিবিড় এর মাঝে কথা অতো খানিতেই আছে। সে সারাদিন কি কি করে তা জানা যায় না। আমারটা জেনেই আচ্ছা বলে অফলাইন হয়ে যায়।তার ছিড়া কোথাকার!

আজ জানুয়ারি ১১, বজ্জাত লোকের সাথে কালকে কথা হয়েছে। তাও দুপুরে।আর সন্ধ্যায় আবার বিদায় না দিয়ে চলে গেছিলো।আজকে বিকেল হয়ে গেল। এখনো কোনো খোঁজ নেই।এত স্পেশাল একটা দিন। সে আমাকে কিছু বলবে এটা আশা করতেই পারি আমি। কিন্তু করব কি করে? সে কি জানে নাকি।দূর বাবা! সব বোকামি আমার।

হটাৎ তার মেসেজ। ঠিক সময় ৫.০৫ এ।
“ছাদে এসো”।
আজকে এত আগে? মনে হয় সন্ধ্যায় কাজ আছে। তাড়াতাড়ি এসেছে তাই।আজ টিশার্ট পরিনি। বাবার দেওয়া সালোয়ার স্যুট পরেছি আকাশীরং এর।শুধু ওড়নাটা সাদা।নেই কোনো সাজ। চুল গুলো হাত খোপা করে একটা কাঠি দিয়ে আটকানো।

উপরে উঠে রাস্তায় তাকালাম। উঁহু নেই তো। এখনো আসেনি? আনমনে ভাবছি। আকাশে তাকালাম। ঘুড়ি উড়ছে।বেশি উপরে নয়। একদম আমার ছাদের উপর অল্প উচুতে। মনে হচ্ছে আমার সাথে ঘুড়ির দূরত্ব কমছে।ঘুড়ির মালিকের ঠিকানা খুজতে আশেপাশের বিল্ডিং এ তাকালাম। আমাদের থেকে দু বাসার পর তিন নাম্বার বাসার ছাদে আমার খুব পরিচিত একটা মুখ।

হ্যা এ তো নিবিড়। খুব বেশি দূরে না সে। স্পষ্ট তাকে দেখা যায়।আকাশীরং এর ফুল স্লিভ শার্ট ফ্লোড করা হাতা, কালো জিন্স। ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত সে।আমার তাকানো দেখে একবার আমার দিকে ফিরে একটা হাসি দিলো। আবার সাথে সাথে ঘুড়িতে মন।ঘাম ছুটে যাচ্ছে তার। বেশরম বাতাস তার চুল এলোমেলো করে দিচ্ছে বারবার। ঘুড়ি সামলাবে নাকি চুল। অসভ্য বাতাস!

আমার দিকে আজকে তাকানোর সময় নেই তার। তবে তাড়াহুড়ো করে ডেকেছে কেন? আর আমার সাথে ম্যাচিং করে কে পড়তে বলেছে তাকে? অসহ্য ছেলে!
(তার দিকে তাকিয়ে এসবই ভাবছিলাম। সে জোরে ডেকে উঠলো)

মায়াবিনী ধরো”
উপরে তাকালাম ঘুড়ি টা কেটে গিয়ে আমারই ছাদে পড়ছে। পিছিয়ে ধরে ফেললাম।
হাতে নেওয়া ঘুড়িতে দেখলাম কিছু লেখা।গুটি গুটি অক্ষরে বাংলায়।

“শুভ জন্মদিন মায়াবিনী।সাড়ে সতেরো ঘন্টা পর শুভেচ্ছা জানানোর জন্য দুঃখিত। আজকের দিনের জন্য একটা মাস অপেক্ষা করেছি। কবে তোমার আঠারো হবে কবে তোমার উপর নিজের অধিকার রাখতে পারব। বললে আগেই বলে দিতে পারতাম।কিন্তু আমি চেয়েছি তুমি নিজের বাক স্বাধীনতা নাগরিক হিসেবে পাও এবং পূর্ণরূপে যুবতী হও তারপর নিজের ইচ্ছেতে আমাকে গ্রহণ কর। আজ এসবে তুমি পরিপূর্ণ। তাই লিখিত দিলাম আজ হতে তুমি আমার প্রেমিকা। তোমার উপর আমি ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের নিশ্বাসও গায়ে পড়বে না। প্রতিটি পা ফেলবে আর মনে করবে, ‘আমি আমার নয় আমি নিবিড়ের’। তোমার হৃদয় স্পন্দন শুধু আমার নামে উঠা নামা করবে।
আর আমার মন? জানি প্রশ্ন করবেই। বোকা মেয়ে! আমার মন আমি ১৬ই নভেম্বরেই দিয়ে দিয়েছিলাম। মন শূন্য আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি।এই মনহীন মানুষটাকে তোমার মন দিবে মায়াবিনী? খুব প্রয়োজন আমার।না দিলেও মন, তুমি আমার প্রেমিকা। এ কথার কোনো নড়চড় নেই।
পরের বছর এইদিন স্পেশাল হবে দুটি কারনে। এক. আামার মায়াবিনীর জন্মদিন, দুই. আমাদের প্রথম প্রেম বার্ষিকী। আর পরের বছর তোমার মাথা আমার এই বুকে থাকবে এ সময়। শুভ হোক তোমার প্রতিটি দিন আজ থেকে আমার সাথে।”

ভাইয়া প্রতি বছরের মতো ঠিক বারোটায় চকোলেট দিয়ে উইশ করে এই দিয়ে আঠারোতম বার। চকোলেটের সংখ্যা বয়সের সাথে বাড়িয়ে দেয় ভাইয়া। বানু খালা সকাল থেকে রাত অব্দি ওইসব রেঁধে খাওয়ায় যা আমার পছন্দ। প্রতিবার টাকা জমিয়ে সুতির একটা জামা বানিয়ে দেন নিজ হাতে। সকালে গোছল সেরে দুপুর পর্যন্ত পরে থাকি।বিকালে বাবার দেওয়া জামা পড়ি। আর প্রতিবার যখন যেটার প্রয়োজন সেবার তা কিনে দেন। যেমন ফোন পিসি।আমি রাত ১১.৩০টায় হই। মা চলে যায় ১২.৪৫এ।মানে পরেরদিন পরে গেছে।জন্ম দিয়ে মা ওইদিন চলে গেলেও মৃত্যু বার্ষিকী আলাদা দিন পরে। তাই বুঝি বাবা ভাইয়া আমার দিনটা নষ্ট করেন না।কিন্তু আমি কখনো কেক কাটি না।বন্ধুদের সাথে ঘুরতেও যাই না। বাসাতেই থাকি। রাত ১১.৩০ থেকে মায়ের ছবি বুকে জড়িয়ে কেঁদে কেঁদে কখন ঘুমাই জানি না।

এবারো রুটিন চেঞ্জ হতো না। যদি না নিবিড় আমার জীবনে আসতো।
আমার পাওয়া সবচেয়ে মূল্যবান উপহার এই ঘুড়ি। ঘুড়িতে লেখা সবকটি শব্দ। ঘুড়ি জড়িয়ে ওইদিন কেঁদে দিয়েছিলাম।হাঁটু ভাজ করে ছাঁদে বসে পড়েছিলাম। এত সুন্দর কোনো উপহার হয় আমার তা জানা ছিল না।নিবিড়ের ডাকে চেতনা ফিরে পেয়েছিলাম।

মায়াবিনী!

সে ওই ছাঁদ থেকে ছটফট করছিল।এতো দূরে দূরে বিল্ডিং। লাফিয়ে আসার কোনো সুযোগ ছিল না। আমার কাছে পৌছানোর কোনো উপায় ওর ছিল না। মেইন গেইটে দারোয়ান থাকে না ঠিকই। কিন্তু ক্যাচি গেইটে তালা লাগানো থাকে। যে ঢুকে, চাবি দিয়ে খুলে ঢুকে লাগিয়ে রেখে যায়। আমার কাছে আসতে না পারার কতো যে আপস তার। কান্না মুছে এক চিলতে হাসি ফেরত দিয়েছিলাম রিটার্ন গিফট হিসেবে। ভাগ্যিস! ঠিক সময় মুখ তুলে তাকিয়েছি। এখনই রওনা দিচ্ছিল নিজের হাড় ভাঙ্গতে।

কি বুঝলো কে জানে? হাত মেলে দিল।তার আমার মাঝে বিল্ডিং না থেকে রাস্তা থাকত যদি, তাহলে এর মানে হতো দৌড়ে এসো, বাহুতে জড়িয়ে নিবো বুকে মাথা রাখো মায়াবিনী!

মায়াবিনীর পরিবারে কে কে আছে, কে কি করেন সব খোজ নেওয়া শেষ।তা নাহলে কি পাগল প্রেমিক হই? বাবা ওর ক্লাস টিচার।ওর ফর্ম খুঁজে ওর বয়স জানতে চেয়েছিলাম। মাস খানেকও নেই ওর আঠারোতে পা দেওয়ার। শুনেছি অপেক্ষার ফল মিষ্টি। এইদিনটার অপেক্ষা করা শুরু করলাম। ভাবছিলাম, বেশি কথা বলে ভালোবাসার প্রকাশ না ঘটিয়ে দেই। আবার যেদিন কথা বলতাম, জানতাম মায়াবিনী আমার কথা ওই সারাটা দিন ভাবে।পরিক্ষার আগে পড়তে দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। এখন প্রেম ভালোবাসার কথা বলতে থাকলে ওর ক্ষতি। জন্মদিনের দিন শুধু জানিয়ে দিব সে এখন থেকে লিখিত আমার। প্রেম করব পরিক্ষার পর থেকে।

মায়াবিনীর বাবাকে আজ শপিং মলে দেখলাম। আকাশীরং এর মেয়েদের পোশাক কিনা দেখে বোঝে গেলাম এটা মায়াবিনীর জন্য। বাসায় সেম রঙের শার্ট থাকায় আকাশের কাছাকাছিতে আকাশ টুকরো একসাথে সাজার লোভ সামলাতে পারিনি। সাদির বাসা ওর বাসার দুবাসা পরেই। এতেই ঘুড়ি উড়ানোর প্ল্যান মাথায় আসছিল।সাদিকে উপর আসতে দেইনি। সিড়ি ঘরের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে অভিযান চালানো।

ওকে আনন্দ দিতে চেয়েছিলাম। হটাৎ মেয়েটা কান্না শুরু করে দিবে তাও এভাবে বসে। আমার ভাবনায় ছিল না।পারছিলাম না লাফ দিয়ে চলে যেতে। অনেক দূরত্ব। পার হওয়া অসম্ভব। জোরে ডেকে উঠলাম মায়াবিনীকে। নাহ! আর এভাবে থাকা সম্ভব না। লাফ দিতে যাব, অমনি চোখ মুছে আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল। এতো শান্তি কারো হাসিতে আমার লাগতে পারে তা ধারনার বাহিরে ছিল। মনে হচ্ছিল হৃদয় খুলে বাহিরে বেরিয়ে আসবে এ-ই বুঝি।

হাসি দিয়ে সে ঘুড়ি বুকে নিয়েই দৌড়ে নিচে নেমে গেছে। আমার উত্তর আমি পেয়ে গেছি….

#তোমার_প্রেমে_মাতাল
#লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)
#পর্ব_৬

নিচে নেমে নিজের রুমে নাচানাচি লাফালাফি আর কতো কি যে করে ফেলেছি। ১৬ নভেম্বরই আমিও যে অবাধ্য চুলের অধিকারীকে মন দিয়ে ফেলেছিলাম। আমার তীব্র বিশ্বাস ছিল সে আমায় খুঁজবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি পাবে এই বড় শহরের কঠিন গলিতে? এটা ভাবনাতে ছিল না। ওয়াশরুমের তার আগমন, তার ছোঁয়া, এতো কাছে সে।ভাবতেই মনে হচ্ছিল নির্ঘাত স্বপ্ন দেখছি প্রতিবারের মতো।এইদিকে এতো নড়ছি।একবিন্দু পরিমাণ নড়তে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল এটা স্বপ্নই। তার মুখে হটাৎ বলা কথা শুনে বুঝে গেছিলাম এ স্বপ্ন নয়। কারন তার কন্ঠস্বর আমি শুনি নাই সেদিন। স্বপ্নে তাকে দেখা হয়। কন্ঠ শোনার ভাগ্য হয়নি স্বপ্নে।তাকে দেখে এক তো খুব আনন্দের অশ্রু চলে আসছিল আবার প্রথমে এভাবে ছুঁয়ে ফেলেছে এ ভেবেও কান্না পাচ্ছিলো।সে ছেড়ে দিয়ে যা বলেছিল তা শুনে গলা শুকানোই স্বাভাবিক। আমার মন পড়ে ফেলেছিল সে।আয়না দেখে তার চুল ঠিক করা ছিল আমার বুকের ভিতর উতাল ঝড়।আমাকে কেউ ছুঁয়ে সিগনেচার দিবে না, তার এই বারণে ছিল আমার ভালো লাগা। আমার পিছু নিয়ে আমার বাসার ঠিকানা জানতে ছিল আমায় মুগ্ধ করা। রক্তদানে মা ও শিশুকে বাঁচানোতে ছিল আমার মন জয়।আর প্রতি সময় তার এই অধিকারবোধ আমার উপর দেখানো ছিল, ওর উপর আমার প্রেম সঞ্চারিত করা। প্রেম প্রস্তাব না দিয়েও যে প্রেমের সূচনা করা যায় তার ঘুড়ি না পেলে আমার জানাই হতো না। ভালোবাসি আমি তাকে…

এই কয়েকটা পড়বাই। কমন পড়বে। ১০০তে ৫০ এখান থেকে কমন পাবে। তো ৪৪-৪৫ এমনি পাবে এখান থেকে। আর তুমি তো মনযোগ দিয়ে পড়ছো তিন মাস।গ্রুপেও আসো নাই। বাকি ৫০ থেকে ৩৫-৩৬ পাবে।প্লাস এমনি চলে আসবে।চিন্তা করো না মায়া।ঠিক আছে?

(নীরব ফোন করে এসব বলেছিল আমাকে। পরিক্ষার ২ দিন বাকি। নীরব আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয়।দুই বছর ওর সাজেশনে কলেজ পাস করেছি। ভালো বন্ধু আমরা। পড়া বুঝতাম ওর কাছে লাইব্রেরিতে। যখন বলতাম তখনই।কোনোদিন আমাকে না করে নাই। অথচ সবার কাছে ওর অনেক ডিমান্ড। আমি ছাড়া ওর আর বন্ধু ছিল না।তাই হয়তো আমাকে কখনোই না করে নাই। এতদিন গ্রুপে ঢুকা হয় নাই।ওর মেসেজ ও সিন করিনি। এক্সামের দুই দিন বাকি বলেই কল দিয়ে সাজেশন দিয়ে দিল।ছেলেটার মন অনেক ভালো)

আমিঃ হ্যা। ঠিক আছে। থ্যাংকস নীরব।
নীরবঃ বন্ধুকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে হয় না মায়া।
এই ছেলেটা আমাকে মায়া ডাকে।
আমিঃ পরিক্ষার দিন দেখা হবে। আর ওল দ্যা বেস্ট।(একটু হেসে বললাম)
নীরবঃ তোমাকেও মায়া।
ফোন রেখে দিলাম।

এই তিন মাসে কিচ্ছু চেঞ্জ হয়নি আমার আর নিবিড় এর মাঝে। ওই দুই-তিন পর পর কথা।প্রতিদিন ছাদে ১০মিনিট দেখা। আগে শুধু তার আর আমার মাঝে অদৃশ্য একটা টান থাকতো।আর তিন মাস ধরে জানি এই টানের নাম প্রেম।আমি তার প্রেমিকা। মানে আমি তার বাঁধনে।

পরিক্ষার আগের দিন নিবিড় মেসেজ দেয়,
“আজ থেকে মে মাসের ১৩ অব্দি কোনো টেক্সট আমাদের মাঝে আদান-প্রদান হবে না। আমি কয়েকটা জব ইন্টারভিউ দিয়েছি।আশা করি হয়ে যাবে।এমএসসি এর ফর্ম ফিলাপ করে ফেলছি। পড়ার পাশাপাশি সঞ্চয় দরকার। ছাদে আসবে না পরিক্ষার আগের দিন। এমনি দিন গুলোতে দেখা দিও।তোমার সুন্দর ভবিষ্যত দরকার আছে। পুরুষের উপর খাবারের জন্য নির্ভরশীল হতে নেই মায়াবিনী। তুমি তোমার যোগ্যতায় দাঁড়াবে। আর আমি তোমাকে পেতে উচুঁতে দাড়াবো। তোমার এক কদম সামনে।যেন তুমি আগে পা দিয়ে পিছলে না যাও। পড়তে বসো। ১৩ই মে দেখা হবে…”

পরিক্ষার মাঝে নীরব কল করে সাজেশন দিত।৪৫-৫০ কমন পরত ভালোই। নিবিড় এর কন্ঠ শোনা হয়না অনেকদিন।আজকে শেষ পরিক্ষা। ল্যাব এক্সাম। সকাল থেকে দুই দফা বমি করে ফেলছি।মাথা প্রচন্ড ঘোরাচ্ছে। টেনশনে মনে হয়। শেষ হওয়ার আগেই রেজাল্টের চিন্তা। বমি হতো না। ভাইয়ার ঠেলায় খাওয়া।বমি করছি বলে আরেক দফা খাওয়াচ্ছিলো। এখন আবার করলাম। ওয়াশরুম থেকে বের হলে দেখবো প্লেট হাতে আবার দাড়িয়ে আছে সিউর। তাই ওয়াশরুম থেকেই চিৎকার করে বললাম,
ভাইয়া তুই কি চাস পরেরবারের বমি ভাইবার টিচারের উপর করি?
ফয়সালঃ নাহ।(চিৎকার করে)
আমিঃ তাহলে খাবার সরিয়ে নে ভাইয়া।(অনুরোধের সুরে)
ফয়সালঃ আচ্ছা আচ্ছা বনু।তুই বের হ।আমি যাচ্ছি। রিকশা ডাকলাম। তাড়াতাড়ি আয়।
আমিঃ ওকে।

চোখ খুলতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু মুখের উপর অনেক পানি।মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসতাছে। গালে কারো স্পর্শ। এখন আমাকে কেউ ডাকছেও। চোখ খুলে আবারও বড়সড় রকমের ঢাক্কা খেয়েছি।
মায়াবিনী? এই মায়াবিনী?
আমিঃ এ্যাঁ?
নিবিড়ঃ তোমার শরীর এখন কেমন? ভাল্লাগছে?
আমি একটা চায়ের দোকানে নিবিড় এর পাশে বসা কিন্তু বুকে ঢুলে পড়া অবস্থায় আছি।মনে করার চেষ্টা চালাচ্ছি কি করে এখানে পৌছালাম।পরিক্ষার কেন্দ্রের বিপরীতেই দোকান টা।অন্য একটা ছেলে কাউকে দোকানে ঢুকতে দিচ্ছে না। উনাকে আমি চিনি।কোচিং এ এই ভাইটাও এসেছিলেন। আমি উঠা মাত্র উনি এসে জিজ্ঞেস করলেন।
শিমুলঃমায়াবী তোমার কেমন লাগছে?
(একবার নিবিড়ের দিকে তাকালাম, আমাকে ইশারায় কথা বলতে বলল)
আমিঃ জ্বি ভালো।
শিমুলঃ নিবিড় উঠ।মাত্র বেল দিল।এখন পুরো রাস্তায় মানুষ ভরে যাবে।ওকে বাসায় দিয়ে আয়।
নিবিড়ঃ বাইকটা এ পাশে এনে দে।এই নে চাবি।(পকেট থেকে চাবি বের করে)
শিমুল ভাইয়া বের হয়ে গেলেন দোকান থেকে।আমাকে বাইরে থেকে কেউ দেখতে পারছে না। বেঞ্চের ভেতর পাশে বসা আমি।নিবিড় আড়াল করে রেখেছে আমাকে।
নিবিড় আমার বাহু দুই হাতে চেপে ধরে দাড়া করালো।নিজের শার্ট খুলল। ও বুঝলো আমি উঠতে চাচ্ছি না।তাও জোর করে তুললো। ও নিচে সাদা হাফহাতার টিশার্ট পরা ছিল। শার্টটা দিয়ে আমার কোমড় জড়িয়ে বেঁধে দিচ্ছে। আমি বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। বাঁধা দিতে চাইলাম ওকে।আমার দিকে তাকিয়ে উল্টো চোখ গরম করে টেনে বেধে দিল।ঢোক গিলে ওকে বাধতে দিলাম।

শিমুল ভাইয়া এসে ডাক দেওয়ায় নিবিড় আমার হাত ধরে বের করে আনলো।বাইকে চড়ে বসে আমাকে বলল
নিবিড়ঃ বসো একপাশে পা দিয়ে।(আমার দিকে তাকিয়ে)
আমিঃ না না।(ভয় পেয়ে)
নিবিড়ঃচুপ! বসো বলছি।(রাগে লাল হয়ে আছে)
চুপচাপ উঠলাম ভয়ে।জানি নামার পরও আরো রাগ দেখবো।কিন্তু আপাতত বন্ধুরা কেউ দেখার আগে কেটে পরতে চাই এইখান থেকে।উঠে নিবিড় এর গেঞ্জি খামচে ধরে আছি।নিবিড় শিমুল ভাইয়ার দিকে ফিরে বলল,
মামাকে ৩০০ টাকা দিয়ে যাস( চায়ের দোকানের বিক্রেতাকে বুঝিয়ে বলল)
শিমুল ভাইয়া মাথা উচু নিচু করে হ্যা বুঝিয়ে দিল।

পরিক্ষা চলাকালীন বুঝে গেলাম পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে। তার উপর শরীর খারাপ। পিরিয়ড যেদিন হয় ওইদিন বমি করি খুব।বসে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠে। মাঝে মাঝে ব্যথায় সেন্সলেস হয়ে যাই। আজকে তাই রিক্স নিতে চায় নাই।১৫ মিনিট বাকি। তাও বেরিয়ে আসলাম হল থেকে। এত খারাপ লাগছিল। হাঁটতে পারছিলাম না। হেলতে দুলতে গেইট পর্যন্ত আসছি। গেইট থেকে বের হয়ে রিকশা খুজছিলাম। কিন্তু চোখ খুলে রাখতে কষ্ট। সামনে একটা মানুষ এসে দাড়ালো।
নিবিড়ঃ মায়াবিনী আর ইউ ওকে? (বিচলিত হয়ে)
আমিঃ ওর দিকে তাকিয়ে শরীর আর ধরে রাখতে পারলাম না। মাথা ঘুরিয়ে পরে গেলাম। ওর বাহুতে জড়ানোর জন্য মাটিতে পরি নাই।

আজকে মায়াবিনীকে দেখবো।৫ মাস পর কাছে থেকে দেখবো। চোখ ভরে দেখে আসব ওকে।একটু ছুঁয়েও। সাদা গেঞ্জির উপর ফুলস্লিভ নীল শার্ট আর কালো জিন্স পরেছি। হাতে ঘড়ি।শিমুল আমার সাথে কলেজে গিয়েছে। ও জানে আমি নীরবের জন্য যাচ্ছি।ফাইনাল বেল দিলে শিমুল চলে যাবে। আমি আর শিমুল চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলাম।গেইটে তাকিয়ে দেখি মায়াবিনী। হেলচ্ছে অনবরত। দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে ওর সামনে দাড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম ঠিক আছে কিনা। আমার দিকে তাকিয়ে পরে যেতে নিলো। ওকে ধরে ফেললাম। কোলে নিয়ে রাস্তা পার হয়ে চায়ের দোকানে এসে পানি চাইলাম। ওকে কোল থেকে নামিয়ে বসানোর সময় দেখলাম ওর ইউনিফর্মের পিছনে লাল দাগ। বুঝলাম ব্লিডিং হচ্ছে।চিন্তার কারন নেই তবে।সেন্স এখনই চলে আসবে। শিমুল হা করে তাকিয়ে আছে। কি হচ্ছে বোঝার চেস্টা করছে।যেখানে কোনো মেয়েকে আমার ধাড় ঘেষতে দেইনা। সেখানে একটা মেয়েকে কোলে করে রাস্তা পার করছি। আবার আমার বুকে চেপে ধরেছি।আবার মেয়েটা নিয়ে আমি বিচলিতও।
নিবিড়ঃ হা করে না তাকিয়ে বাইরে যা! কেউ ভিতরে যেন না ঢুকে। ব্যাপারটা বাজে হয়ে যাবে।
শিমুলঃ আগে বল মেয়েটাকে তুই চিনিস? কে মেয়েটা?
নিবিড়ঃ মায়াবী। মায়াবী ওর নাম। জানা হইছে তোর? এখন যা( রাগ যেন চোখ দিয়ে বের হচ্ছে)
দুই মিনিট পরেই মায়াবীর সেন্স চলে আসে।

নিবিড় বাইক চালাচ্ছে। আমি ওর পিছনে বসে আছি। গেঞ্জি ওভাবেই ধরে রাখছি।সারা রাস্তা কোনো কথা বলেনি। এতদিন পর দেখা হবার পরেও।তার উপর আমি আবার অসুস্থ।খাটাশ একটা! বাসার সামনে দাড়া করালো।
নিবিড়ঃ নামো মায়াবিনী। তোমার কমনসেন্স প্রচুর কম। বাসায় যাও।(রাগ কমেনি মোটেও)
আমি ওর শার্টটা আমার কোমড় থেকে খোলার চেষ্টা করছি।কান্না পাচ্ছে।
নিবিড়ঃ কি করছো?এখানে মানুষজন আছে। খুলে তুমি চলে যেতে নিলে অস্বস্তিতে পরবে।উপরে যাও।কালকে শার্টটা দিবা।
আমি বুঝতে পারছি, আমার পিরিয়ডের ব্যাপারটা নিবিড় জানে।বাইক ঘুরিয়ে যাওয়ার সময় বলল।কালকে না পরশু।তুমি দুইদিন রেস্ট নাও।(শান্ত স্বরে বললাম)
আমিঃআচ্ছা।(মাথা নিচু করে)
নিবিড়ঃ আর খবরদার শার্ট টা ধুবে না।( ডান ভ্রু উঁচু করে)
সাথে সাথে ওর দিকে তাকালাম। ও বাইক টান দিল।দৌড়ে উপরে চলে আসলাম।

ছেলেটা আমার মন পড়তেই পারে না শুধু আমাকে বুঝতে পারার অসম্ভব ক্ষমতা রাখে। দিন দিন সে আমার মন ছাড়িয়ে এত গহীনে চলে যাচ্ছে, তার হদিস এতদিন আমার নিজেরই অজানা ছিল।

এই তিনদিন আমার ছাদে যাওয়া নিচে নামা নিষেধ ছিল। কিন্তু ফোন কল? ভাইরে ভাই।এতদিন যে কল করে নাই তা এই তিনদিনেই উসুল করে ফেলছে। প্রতি ঘন্টায় ১০ মিনিট করে।আমি সিঊর এ্যার্লাম দিয়ে রাখছে ফোনে। রাতের ৩টা থেকে ৯টা অব্দি বাদ রেখেছে শুধু। তার কমন কথা।
“এই সময় রাতে ঘুমাতে দেরি হয়, তাই দুপুরে ঘুমাবে”।
বেটা তুই প্রতি ঘন্টায় ফোন দেওয়া বন্ধ করলে তো আমার ঘুম আসবে নাকি?
তার কাছে ঝারিও খেয়েছিলাম খুব।পিরিয়ডের ডেট জানা সত্বেও এক্সাম হলে এভাবে কেন চলে গেলাম? আগে থেকে কেন কোনো ব্যবস্থা করে যাই নাই? সেদিন সে আগে এসে না থাকলে কি হতো? এত ইউজলেস কেন আমি? এই পাঁচ মাসেও কেন সে জানলো না আমার পিরিয়ড টাইম এত কষ্ট হয়। তাহলে কি আমাকে ছাঁদে আসতে বলতো নাকি? আমার কষ্ট মানে তার দ্বিগুণ কষ্ট। তাহলে তাকে কেন তার দ্বিগুণ কষ্টের কথা না জানিয়ে পাঁচ মাসেরটা জমিয়ে এখন একসাথে কেন দিচ্ছি?
মানে কি এসবের? কোনো মানে আছে? মাঝে মাঝে ইউজলেস কথা বলে। নিব্বা টাইপ?‍♀️?‍♀️।

চারদিনের দিনও ছাদে যাওয়া নিষেধ ছিল। আমি ফোন তুলিনি অভিমান করে। সে কি বোঝে না, আমার তাকে না দেখে মন টিকছে না? পরে আমার জেদের কাছে হার মেনে সে টেক্সট করেছে।
“ছাদে এসো”।
তাকে দেখে কি যে একটা আনন্দ মন ছুঁয়ে হৃদয় স্পর্শ করেছে, সে কি তা দেখতে পেয়েছে?

পঞ্চম দিনেও ওই একটু দেখা পাওয়া গেছে মায়াবিনীর। এতো অবুঝ কেন মেয়েটা? প্রতিদিন তো আমার অভ্যেস তার কাছে চলে আসা। পরিক্ষার দিন গুলোতে ওকে আসতে বারণ করেছিলাম ছাদে। কিন্তু নিজে চলে আসতাম ওর বাসার সামনে রাস্তাতে। ওর দেখা না পেলেও মনে হতো স্থানের দূরত্ব কম আমাদের মাঝে!!

এই চারদিনও অপেক্ষা করছি ওর বাসার নিচে। তিনদিন চুপচাপ ছিল। চতুর্থ দিনের পর তাকে ঘরে রাখা দায়। কি অভিমান। ছাদে উঠবেই। ফোন ধরা বন্ধ করে রাখছিল।অথচ ও জানেই না আমি ওর বাসার নিচেই। কি করে বলি পাগলী তোর এই মিষ্টি অভিমান আমার মাঝে ঝড়ের পুনঃবার্তা দেয়। নাগালে থাকলে কি যেন করে ফেলতাম আমি।

পঞ্চম দিনেও তার জেদ জয়ী হয়েছে। কিন্তু এতে আমিই সবচেয়ে বেশি খুশি।

সাইড ব্যাগে ফোন নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। বানু খালা জোর করে মুখে দুইবার রুটি ডিম দিয়ে মুখে পুরে দিলেন।
আমিঃ খালা সকালে চা খাইছি তো। উফফ আর খাবো না।
বানু খালাঃ মা জননী এইসব কইলে কি খায়ানো তোরে বন্ধ করমু? নে হা কর।ডিঙ্গার মতো সকালে কই যাস?
আমিঃ চুপ করো।তোমার লাড্ডু শুনে যাবে। পরে যাওয়ার আগে ঘ্যান ঘ্যান করবে।
ফয়সালঃ তুই সাজ সকালে কোথায় যাস মায়াবী? (রুম থেকে বেরিয়ে)
আমিঃ খালা দেখছো বলছিলাম আস্তে বলো?।
বানু খালাঃ লাড্ডু ওরে যাইতে দে। যাওয়ার আগে খাইতে দে মেয়েটারে।শুকায়া কাটা হয়া গেল।
আমিঃ??( ভাইয়াকে ভেঙ্গিয়ে দৌড় দিলাম)
ফয়সালঃ ওই আজীবনই শুটকি আছিল খালা?। ওই তুই কই যাস বলে গেলি না?
ততক্ষণে আমি নীচে পৌঁছে গেছি।

১৮ই মে ছিল আমাদের প্রথম ডেট। আগেরদিন রাতে নিবিড় ফোনে বলেছে,
“তোমাকে শুভ্রতার মায়ায় দেখতে চাই মায়াবী। কালকে ১০টায় বাসার নিচে থাকবে।”

বলে ফোন কেটে দিয়েছে। মানে কি বোঝালো শেষ কথাতে? মানে এই ছেলেকে নিয়ে আর পারি না।বেখেয়ালি কিসব যে বলে না!

কি হলো বুঝলাম না। কিন্তু আমিও নিবিড়কে বুঝে ফেলার অসম্ভব ক্ষমতাটা পেয়ে গেছি। সাদা কামিজ সালোয়ারের সাথে হলুদের ছিটা ওড়না পড়েছি।উঁচু করে ঝুটি করলাম।আর হালকা গোলাপি লিপস্টিক। নিচে নেমেছি সুদর্শন এক পুরুষকে দেখবো বলে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here