তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_৮

0
2165

তোমার_প্রেমে_মাতাল,পর্ব_৮
লেখিকা_মায়াবিনী (ছদ্মনাম)

আজ ক্যাম্পাসে স্ট্রাইক চলছে। সব স্টুডেন্ট মাঠে অনশন করছে। সন্ধ্যায় মায়াবিনী আনতে গেলাম ক্যাম্পাসে। মেয়েটার মুখ ঠোঁট শুকিয়ে গেছে। বাইক থেকে নেমে ওকে কল করলাম।ওর এক ফ্রেন্ড ওকে এগিয়ে আমার কাছে পৌঁছে দিয়ে গেল।ওর ফ্রেন্ড ছেলে ছিল। না খেয়ে মেয়েটা দূর্বল হয়ে গেছে। মাথা ঘুরানোর জন্য মায়াবিনী দাঁড়িয়ে গেলে ছেলেটা ওর বাহুতে ধরে। মায়াবিনী চটজলদি ঠিক হয়ে দাঁড়িয়ে ওর হাত সরিয়ে দিল। আমি ততক্ষণে ওর কাছে পৌঁছে মায়াবিনীকে নিজের কাছে টেনে নিলাম। ছেলেটা প্রচুর শকে আছে। আমি মায়াবিনীকে নিয়ে এসে বাইকে চড়ে স্টার্ট দিলাম।ও চুপচাপ এসে বসল আমার শার্ট খামছে ধরে। গন্তব্য মায়াবিনীর বাসা।

-আমি এখন বাসায় যাব না। ব্রিজে নিয়ে যান।খোলা হাওয়া দরকার আমার।

-বাসায় যেয়ে খেয়ে রেস্ট নেওয়া উচিত তোমার।

-না নিয়ে গেলে একাই যাব।

জানি এখন মায়াবিনীকে জোর করে লাভ নেই। ও কথা শুনবে না। ব্রিজের দিক বাইক টানলাম।

অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি ব্রিজে। মায়াবিনী একটা চিপস আর এক কাপ চা খেয়েছে।কোনো কথা আমাদের মাঝে হয়নি। হটাৎ বলল
-প্রেমিকা গোপন করে রেখে, প্রেমিকার বন্ধুর কাছে নিজের পরিচয় জানানো মানে কি?

-মায়াবিনী!

-চিৎকার কেন করছেন। মানুষ শুনবে।

-আশেপাশে তেমন মানুষ নেই।
কিছুক্ষণ থেমে
-তুমি আমার কাছে কি তোমার বোঝার ক্ষমতার বাহিরে মায়াবিনী। তোমার উপর কোনো ছেলের নিশ্বাস পড়ুক তাই আমি চাইনি।তোমাকে কেউ ছুঁবে কি করে সহ্য করব আমি? আমি ছেলেটাকে মারতেও একপা পিছাতাম না। শুধু আমি তোমার সামনে নিজের ভয়ংকর রুপ দেখাতে চাইনি। চাইনি তুমি বোঝো আমি তোমাকে নিয়ে কত পোসেসিভ।

এখন ওর দিকে তাকালাম। ছেলেটার চোখে এত কষ্ট কেন? এমন কিছু তো হয়নি ও এতো কষ্ট পাবে। খুব ভাবাচ্ছে আমাকে। ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-পানি খাবো।

-আবার? আমার কথা শুনলে তোমার গলা কেন শুকায়? এত কিসের পিপাসা? আমার ভালোবাসার তো পিপাসা পায় না তোমার।

এসব বলে পানির বোতলের ছিপটা খুলে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। একটা প্রশস্ত হাসি দিল মায়াবিনী। জানি না ওর হাসিতে কি ছিল।অশান্ত মনটা হটাৎ করেই ওর বশীভূত হয়ে গেল।

মৃদু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। হাওয়াতে ওর চুলগুলো বেসামাল উড়েই চলেছে। মায়াবিনী ঢকে ঢকে পানি খেয়ে চলেছে। পানি ঠোঁট বেয়ে গলা হয়ে জামার ফাকে ঢুকে যাচ্ছে। শেষে বোতলটা আটকালো। ওর ঠোঁটের উপর পানি জমে আছে এখনো। কেমন মোহনীয় দেখাচ্ছে ওকে। তাকাতে চাইনা আমি। কিন্তু চোখ কিছুতেই সরাতে পারছিলাম না আজকে। বোতলটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল।

আমি নিবিড়ের দিকে বোতলটা এগিয়ে দিতে গেলাম।ওর চোখ আজ অন্যরকম। নেশা ভরা চোখ। এ চোখে আমি বারবার ডুবে যেতে চাই। হাওয়াটা আরো জোরে বয়ে যাচ্ছে। নিবিড় বোতল ধরার বদলে আমার হাত ধরে ওর কাছে টেনে নিল। আমার আর নিবিড় এর মাঝে দুই ইঞ্চির দূরত্বও নেই। আমরা অন্য এক ভুবনে বিরাজ করছি সব ভুলে।

মায়াবিনী অনবরত কেঁপে চলেছে।একহাত দিয়ে মায়াবিনীর হাত ধরে কাছে এনে অন্য হাত দিয়ে ওর ঘাড়ে চেপে ধরে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে নীচে থেকে থুতনী চেপে ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের সামনে ধরলাম। পানি জমা ঠোঁট থেকে আজ আমি পিপাসা মিটাতে চাই। অন্যকিছু আমি ভাবতে চাই না। আমার মায়াবিনীকে চাই।আর অপেক্ষা না করে ওর কাঁপা ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়েই দিলাম।

কত সময় ছিলাম জানি না। ওকে ছেড়ে তাড়াতাড়ি বাইকে চড়ে বসলাম। ও চুপচাপ পিছনে বসে পড়লো। ওকে বাসার সামনে নামিয়ে চলে আসলাম বাসায়। এতোদিন যার জন্য ওর দিকে তাকাতাম না সেটাই হল। এখন যদি ও আমায় ভুল বোঝে। আমি পাগল হয়ে যাব। মরে যাব। মায়াবিনী ভুল বোঝো না আমায়। আমি যে #তোমার_প্রেমে_মাতাল।

এরপর আমাদের বেশ কিছুদিন এ নিয়ে আর কথা হয়নি। আগের মতো সব চলছিল। শুধু ওই রাতের কথা আমরা কেউ তুলিনি।কিন্তু নেশা জাতীয় দ্রবের উপর মানুষের বরাবরই আসক্তি। যারা এডিক্টেড না তারা আসক্তি হওয়ার অনুভূতি বুঝবে না। আসক্তি না হলে ওই বস্তু কেউ ছুঁইবে না কিন্তু আসক্তি হওয়া বস্তু চোখের সামনে থাকলে নেশা না করে থাকা যায় না। নিবিড় এর ও বুঝি তাই হলো। কিছুদিন যায় যায় নেশা মিটাতে চলে আসে।আমার ঠোঁটে ওর নেশা।ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় মাতাল ছেলে।

আমি আমার নিবিড়কে হিমু সাজিয়েছি। কি রাগ তার। হলুদ কেউ পড়ে নাকি? বাজে দেখা যাবে।আমি কি উপন্যাসের নায়ক নাকি? আরো কত কি যে বলেছে। অসহ্য একটা ছেলে। এতো জ্বালায় কেন ছেলেটা।

খুব রাগ তার। বাইক ছাড়া আসতে বলেছি তাই। সবসময় কি সতীন নিয়ে ঘোরা যায়? বেশিরভাগ সময়ই সতীনের সাথে থাকে। বিরক্ত মুখে হলদে মাখানো ছেলেটা এসেছে। ফর্সা ছেলেটাকে এতো সুন্দর দেখা যাচ্ছে। ভরদুপুরে হলুদের মাঝে টমেটো মুখ খানা। রাগে যেন লালটা বেশি হয়েছে। আমার দিকে চোখ তুলে তাকানোতেই তার রাগের মুখখানা বদলে গেছে। বাতাস হটাৎ জোরে বইছে। তার ওই ঘামে ভেজা চুল গুলো এখন উড়া শুরু করছে। আমার চোখ এত নিলজ্জ কেন? ওর চুলে আমার ডুব দিতে মন চায়। পুরোই উল্টো?।

আমার মায়াবিনী এই প্রথমবার আমার রং এ সেজেছে। নীলের মায়ায় ওকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ও ওর হিমুকে আমার মাঝে খুজঁছে।যেয়ে ওর হাতের আঙ্গুলে ভাঁজে আমার হাতের আঙুল দিয়ে দিলাম। ফের হাঁটা শুরু। বলে বসলাম
-ওহ! নীল আমার জন্য না। হিমুর জন্য?।

-আমিও তো আপনার মায়াবিনী না। হিমুর রুপা?।

-আচ্ছা আচ্ছা। তা রুপার মাঝে কি যেন মিসিং।

-কিহ?☹️

-এসো সাথে।

একপাতা টিপ কিনে নিজে হাতে পরিয়ে দিলো।ওইদিনই আমি নিবিড়কে বলি।বিয়ের দিন ওর রঙে সাজবো আমি।এর আগে আমি আর নীল পরবো না।কিন্তু নিবিড়ের ও পরা বন্ধ নীল।বিয়েতে নীলই পরতে হবে। সে কপালে হাত দিয়ে বলে উঠলো
-শেষে এই জেদটাও মায়াবিনীর করতে হলো। আরও কি কি যে দেখা লাগবে।

আমি তো হেসেই শেষ।

আমি অনেক রেগে আছি। নিবিড়ের ফোন ধরিনি। ছাঁদে যাই নাই। ক্যাম্পাস থেকে ফেরার সময় যা দেখেছি। কোনো ভাবেই আমার রাগ কমবে না। কোনো ফোন আমি তুলবো না।

রাত ১২.৩৭টা বাজে। বারান্দার দরজা নক করছে কেউ। ভয়ে আমি বিছানায় লেপ্টে আছি। এই প্রথম আমি নিবিড়ের সাথে সিরিয়াস রাগ করেছি। কথাও বলি নাই একদম।খাইনি ও সারাদিন। ঘুমাতেও ইচ্ছে করছিলনা। তার মধ্যে নাকি ভুতের আগমন। ওমা! ভুত দেখা যায় কথাও বলতে পারে। ঢুকতে নাকি তার দরজা খোলা লাগবে। এই ভুত এমন কেন? আশ্চর্য!

-মায়াবিনী। এই মায়াবিনী। দরজা খোলো।

মায়াবিনী? নিবিড়ের ভুত আসছে।আল্লাহ গো।(কান্নাই করে দিব এমন ভাব)

-মায়াবিনী আমি। দরজা কি খুলবে? নাকি ভাঙ্গবো?

দৌড়িয়ে যেয়ে দরজা খুললাম। নিবিড়ের ভুত না স্বয়ং নিবিড়?।ঘেমে চুপেচুপে শরীর। রাগে চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।নির্ঘাত আমাকে গিলে খাওয়ার ধান্দা। ও ভিতরে আসতেই বললাম
-কি করে দোতালায় উঠছেন??

– নান অফ ইউর বিজনেস।

-বলেন বলছি। ভাইয়া রাস্তার পাশের বারান্দা ওয়ালা রুমটা নিয়েছে ছোট থাকতেই। আমাকে ওর বিপরীত রুমটা দিয়েছে। বারান্দাটা পুরো রাস্তার বিপরীতে। আমার বারান্দা থেকে গাছ পালা আর অন্য বিল্ডিংয়ের পেছন পাশ দেখা যায়। আসলেন কি করে?

-ঘটে বুদ্ধি থাকা লাগে।তোমার ভাই বড্ড মাথামোটা। রাস্তার পাশে বারান্দা হলে পাইপ কোথায় পেতাম? উঠতাম কিভাবে? পিছনের দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে দিয়ে দিয়ে এসে তোমাদের বিল্ডিংয়ের পাইপ বেয়ে উঠছি।বুঝছো? সে যাই হোক। ( বলে ওর কব্জি ধরে আমার কাছে আনলাম।)

-মানে?

-জানো না? ফোন ধরো নাই কেন আমার?

-ব্যস করেছি। আমার কাছে কেন আসছেন? রাস্তায় যার সাথে ছিলেন তার কাছে যান।আমার কাছে কি?

-কিহ? কার সাথে ছিলাম?

-আপনি জানেন না? (বলে ওর হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে দিলাম)

-নাহ।কি বলার চেষ্টা করছো তুমি? (শান্তভাবে)

তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম
-বাহ! জানেনই না? তা জানবি কেন? রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক মেয়ে হাতে রুমাল বেঁধে দেয়।তোর হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে অথচ ব্যথা সে পায়। কাঁদতে কাঁদতে তার অবস্থা খারাপ। আমাকে আনতে যাওয়া তো হয়নি।উল্টো আমার ফোনও ধরিসনি।এরপর বলিস জানিস না? বের হয়ে যাহ আমার রুম থেকে।
(একদমে বলে হাঁপাতে লাগলাম।)

চোখ কপালে তুলে ফেলছি।এই মেয়ে বলে কি?
-তুই করে বললে তুমি? ওয়েট ওয়েট??(হেসেই যাচ্ছি কথা কি বলবো)

রাগে শরীর জ্বলছিল।হাসার মতো কি বললাম।

-মায়াবিনী শোনো( মায়াবীর দুই বাহু চেপে ধরে।)
চৌরাস্তায় ক্যাম্পাসের ১৩ ব্যাচের জুনিয়রদের সাথে ওদের ইমিডিয়েটদের সাথে ঝামেলা লাগছিল। কোন আহাম্মক ছুরি আনছিল।আমি আটকাতে গেছিলাম।ধস্তাধস্তিতে আমার হাতটা কেটে যায়। আমরা ফ্রেন্ডরা সংঘের কাজ নিয়ে মোড়েই কথা বলছিলাম। তুমি যাকে দেখেছো ও নীলা। মেয়েটা আমার বন্ধু ছিল।আমাকে পছন্দ করে।

-কিহ? আমি জানতাম তো এমন কিছুই।
(বলেই পাশ ফিরতে নিলাম ঝাঁকি দিয়ে আমাকে ওর দিকে আবার ফিরালো)

-শোনো আগে।পছন্দ সে ৫বছর যাবৎ করে। কান আমার ঝালাপালা করে দিতো।এখন বন্ধুত্বতাও নেই। এসব ঘ্যানঘ্যান আমার ভাল্লাগে না।সবার সাথে ওর ভাল সম্পর্ক।একা আমি কেন ওকে আসতে না বলবো। আবার সংঘের সদস্য ও। তাই মিটিং আড্ডাতে থাকে। আজকে আমার হাত কাটায় ওই রুমাল বাঁধছিল। ব্লাড পরা কমছিল না। কারো কাছে কাপড় ছিল না।ওরটাই নিতে হইছিল।তুমি ওকে বাধতে দেখছো।আমি ঝাড়া দিয়ে ওকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। পরে শশী বেঁধে দিয়েছে।

-আপনার হাত?( বিচলিত হয়ে)

-থাক এখন দেখতে হবে না।তুমি কাটাও দেখছো হাত।তাও আমার খোঁজ না নিয়ে উল্টো ফোন ধরছো না।

-কিন্তু উনি তো কাঁদছিল।উনার খুব কষ্ট লাগছিল।উনার কাছেই যান তবে?।

-তাই বরং যাই।( বারান্দার দরজার কাছে যেতে যেতে।

-তুই রুম থেকে বের হ খালি, খুন করে দিব একদম।(রাগে কান গরম হয়ে গেছে)

-কি করবা? (ভ্রু নাচিয়ে)

-মেরে তক্তা বানিয়ে দিব?।হাত টা দেখান তো।

বলে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি ফার্স্ট এইড বক্স এনে। নিবিড়কে বিছানায় বসিয়ে আমি ওর পায়ের কাছে বসে আছি ফ্লোরে। ও এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে।

-তুৃমি করে তো কখনো বল না।আজকে সরাসরি তুই?

-(খানিকটা লজ্জা পেয়ে মুখ নিচু করে রাখলাম)
– বলো না মায়াবিনী। তোমার মুখে তুই বড় সুন্দর লাগে। রাগ করলে এভাবেই বকবে আমায়।তোমায় খুব মানায়। তুমি করে বলোনা মায়াবিনী। একটু বলো।

-যাহ! আমার লজ্জা লাগে।

-তুই ডাকতে লাগে না?

-উঁহু। (বলেই জ্বিবে কামড় দিলাম।)

-?ওয়াট?

-এখন বাসায় যান তো। অনেক রাত হয়েছে। নাপা টা খেয়ে নিন। ব্যথা কমে যাবে।

-আমার তো হাতে না এখানে(বুকের দিকে ইঙ্গিত করে) ব্যথা। এ ব্যথা প্যারাসিটামল এ যাবে মায়াবিনী?

নীচে বসেই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।কতো যে ব্যথা ওই চোখজোড়াতে। আহত ওর হৃদয়ের দরজা খুলে দিয়েছে ওই চোখ। আপনাআপনি আমার চোখ বেয়ে দুফোঁটা জল পড়ল।কি করে এতো নিষ্ঠুর হতে পারলাম আমি।

ওর বাঁহাত আমার দু’হাতের মাঝে নিয়ে,
-আমায় ক্ষমা করে দাও নিবিড়। আমি তোমায় ভালোবাসি। আমার জীবনের থেকেও বেশি। তোমার যেমন অন্য পুরুষকে আমার ধারের কাছেও সহ্য নয়। আমার তেমনি কোনো পরনারীকে তোমার আশেপাশেও সহ্য নয়। তুমি কেবল আমার। আমি শুধু তোমায় ছুঁইতে পারব। তোমার উপর সকল অধিকার আমার।(হাতে অসংখ্য চুম্বন দিয়ে) কথা দাও আর কখনো কেউ ছুঁবে না তোমায়! ভালোবাসি নিবিড় খুব ভালোবাসি।

মায়াবিনীর চোখ থেকে আমার ভালোবাসার পানি। আজকে শুধু ভালোবাসার পানি না।মুখেও বলে ফেলেছে ভালোবাসি। হাতটা মায়াবিনীর হাত থেকে সরিয়ে নিয়ে ওর দুগাল চেপে ধরে কপালে চুমু দিয়ে বললাম
-এতো ভালোবাসো আমায়? তুমি কি জানো তুমি আমার নেশা? আমি #তোমার_প্রেমে_মাতাল। তোমার মাঝে আমি বিলীন।

মেয়েটার চোখের পানি এত ভালো লাগছে কেন আমার? ডুবে যেতে ইচ্ছে করছে ওর মাঝে।কোনো কিছু আর ভাবতে পারছি না।আমাদের চোখজোড়া একে অপরের মাঝে ডুবে আছে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিতে কি বাঁধা! ডুবিয়ে দিলাম….

হুস ফিরতেই ওকে ছেড়ে খাটে বসা থেকে উঠে দাড়ালাম। মায়াবিনীও মাটি থেকে উঠে দাড়ালো। আমি বারান্দায় বের হয়ে গেলাম। পিছন থেকে মায়াবিনী বলে উঠলো
-সাবধানে নেমো।

মুচকি হেসে নামা শুরু করলাম। আবার বলে বসলাম
-তোমার মুখে তুমি বলাই মানায়।

লজ্জায় দরজা লাগিয়ে দিলাম বারান্দার। অসভ্য ছেলে একটা!

ক্যাম্পাস মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম বন্ধুরা। একটা বিশেষ কারনে সবাইকে এখানে ডেকেছি।
দিহানঃকিরে ভাই নিবিড় ডাকছে কেন এমনে?
সাদিঃপ্রেম করে।এই নিউজ দিতে?।
সবাই একসাথে ওয়াট?????
শশীঃ চুপ করবি তোরা?কি কারন বুঝতাছি না।
দিপুঃনিবিড়কে আজকাল খুব কম সময় পাওয়া যায়।জব নিয়ে এত ব্যস্ত।আমাদেরকে সময় দেয় না।হটাৎ ম্যাচিউরড হয়ে গেছে।
দিহানঃ ম্যাচিউরড না।এমন ভাব দুই বাচ্চার বাপ।দায়িত্ব মাথার উপর।
সবাই হেসে দেয়।
নীলাঃ সাটাপ। ফাইজলামি করিস?চুপ কর।
(মনে মনে নিবিড় আমাকে তো কখনো ডাকে না। আজকে শশীকে দিয়ে আমাকে কেন ডাকালো?)
শশীঃ শিমুল রে। আমার যেন কেমন খটকা লাগছে। তুই কি কিছু আন্দাজ করছিস? কালকে নীলাকে যে ধমক দিল। জল ঘোলা লাগছে।
শিমুলঃ আসুক নিবিড়। এত ভেবে কি হবে।(কি করে বলি আমি বছর খানেক আগেই জানি।নিবিড় না বললে কি করে জানাই যেখানে আমাকেই নিজ মুখে এখনো বলে নাই)
সাদিঃনিবিড় আসতাছে।

বাইকে নিবিড় আসছে।পিছনে এক মেয়ে। নিবিড় এর কাঁধে হাত দিয়ে বসে আছে। বাইক থেকে নামলো দুজন।
সবাই অবাক শিমুল বাদে।এ প্রথম কোনো মেয়ে নিবিড় এর বাইকে চড়েছে।শশী নিজেও কখনো বসতে চায় নাই। নিবিড় ও ওকে তুলে নাই। নীলা এসব ভেবে আগে মেয়েটাকে ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলো। হালকা গোলাপি রং এর লং কামিজ পরেছে।হলদে গায়ের রং তার। অনেক লম্বা চুলের অধিকারী সে। সাজ নেই কিন্তু ঠোঁটে গোলাপি রংএর লিপস্টিকে মানাচ্ছে। বলতে গেলে মেয়েটা বেশ সুন্দর।নিবিড় এর পাশে মেয়েটাকে ভালো দেখা যাচ্ছে। না না। কি ভাবছি এসব। মানাচ্ছে না একসাথে, একদমই মানাচ্ছে না……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here