তোমার_সমাপ্তিতে_আমার_প্রাপ্তি Season_2,অন্তিম পর্ব

0
1308

#তোমার_সমাপ্তিতে_আমার_প্রাপ্তি Season_2,অন্তিম পর্ব
#রোকসানা_রাহমান

ইশাদ তিহির গাল দুটো পরম স্নেহে দুহাতে চেপে ধরল। ভেজা দুটি চোখে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে বলল,

“তিহিপাখি,এভাবে বলো না। যাকে কেন্দ্র করে চোখের জল ফেলছো তা তো প্রকাশই পায়নি। আমাদের মধ্যে দূরত্বটা কিন্তু অনেক। যতটা কাছে এসেছিলাম তা তো পুরোটাই ভুল ছিল। সেটাকে ধরে রেখে এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে? ভেতরের অনুভূতি ভেতরেই চাপা থাক। আজ আমি শুরু করছি,কাল তুমি করবে। জীবনের প্রতি পদে পদে,নতুন সূচনায় পা রাখতে হয়।”
“ভালোবাসি!”

তিহির আদুরী কণ্ঠের মোহে ভেজা শব্দটি ইশাদের বুকের খাঁচা ভেঙে হৃদয় স্পর্শ করল। হৃদস্পন্দন কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে গেল। তিহির সরলনেত্রের পানে চেয়ে থাকার দুঃসাহস হারিয়ে ফেলল। এমন আবেদনী চাহনি এর আগেও দেখেছিল কি? না। কখনোই না। আর দেখতেও চায় না। ইশাদ নিজের সাথে যুদ্ধ শুরু করে। চোখ ফিরিয়ে নেয়। তিহির অশ্রুসিক্ত নয়ন তখনো ইশাদের দিকেই। এভাবে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। ইশাদের গালদুটো চেপে ধরে। শক্ত টানে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। নিক্ষেপ করে হিংস্র চাহনি! কিন্তু মুখ ফুটে বের হয় না একটি শব্দও। যেন অতিরিক্ত রাগ,অভিমানে চাপা পড়েছে বাকশক্তি। কিছু বলার অদম্য ইচ্ছে ফুটে চলেছে কম্পিত ওষ্ঠে!

ইশাদ ভয় পায় না। কিংবা ভয়টাকে বাইরে প্রকাশ করে না। সে তিহির হাত দুটো নিজের অংশবিশেষ থেকে আলগা করতে করতে বলল,

“শক্ত,মোটা খোলসের আবরণে নিজের দুর্বলতাকে বন্দী করেছি। এভাবে নিয়ন্ত্রণহীন করে দিও না। দোয়া করি,সুখের রশ্মি সবসময় তোমার কপালের মধ্যিভাগে চিকচিক করুক। আসছি!”

ইশাদ কথা শেষ করে উল্টো ঘুরে দাড়ায়। শুকনো ঢোক গিলে। গলা চিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাওয়া কষ্টের দানাগুলো ভেতরেই পাঠিয়ে দেওয়ার কঠোর উদযোগ চালাচ্ছে। চোখের ভেতর মরণ জ্বালা শুরু হয়েছে। যেকোনো সময় চোখ ভিজে উঠতে পারে। গড়িয়ে পড়তে পারে অবিরত অশ্রুকণা! ইশাদ সেই সুযোগ দিতে চায় না। স্থির পা দুটো সক্রিয় হয়। এক পা শেষে আরেক পা ফেলতে চায়। পারে না। পেছনে কারো প্রবল টান অনুভব করছে। এই টান ছিঁড়ে বের হওয়া যে স্বইচ্ছায় পৃথিবীকে বিদায় দেওয়ার সমতুল্য! ইশাদ আরেকটি বার তিহির দিকে তাকাতে চায়। চোখের জল মুছে দিতে চায়। মাথায় স্নেহের হাত রাখতে চায়। পরম ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরতে চায়। এত এত চাওয়াগুলো এক ঝটকায় পূরণ করা সম্ভব। তবুও করতে পারছে না। ভাবতেই বুকের ভেতর গাঢ় ক্ষত তৈরী হয়। কানে আসে তিহির নিশ্বাস বন্ধ হওয়া ফুঁপানির শব্দ! ইশাদের মন প্রশ্ন করে বসে,’কারো চোখের জল ফেলে কাউকে সুখি করতে চাওয়া ঠিক নাকি ভুল?’

ইশাদ উত্তর পায় না। উদ্ভ্রান্তের মতো মস্তিষ্কে খোঁজ চালায়। হতে পারে এই উত্তরটাই তার সঠিক দিক নির্দেশনা দিবে। কয়েক সেকেন্ড পেরিয়ে যেতেও উত্তর পেল না। সেই সময় দরজায় করাঘাত পড়ে। ইশাদ চমকে যায়! চোখে ভীত চাহনি। যেন দরজার ওপাশে স্বয়ং আজরাইল দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে ডাকছে বিকটস্বরে!

কয়েকবার দরজায় থাপ্পড়ের শব্দ পড়ে। অতঃপর শাহিনা শাইখার গলা ভেসে আসে। মায়ের গলা পেয়ে ইশাদ দরজা খোলে দেয়। মায়ের উদ্দেশ্যে কিছু বলার পূর্বেই তিনি অতিদ্রুত বললেন,

“তোর ঘরে নাকি একটা মেয়ে ঢুকেছে? তার সাথে তোর প্রেমের সম্পর্ক? গভীর প্রেম। যাকে না পেলে মরে যাবি! আসলেই?”

মায়ের এমন একের পর এক প্রশ্নে ইশাদ বেশ ঘাবড়ে গেল। অজান্তেই চোখ চলে গেল পেছনে। না,তিহিকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু মাত্রই তো এখানে দাঁড়িয়ে ছিল মেয়েটা। চোখের পলকে কোথায় চলে গেল? ইশাদ সংগোপনে পুরো রুম তল্লাসী চালায়। হঠাৎই ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় তিহির অর্ধেক শরীরের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ল। সে দরজার আড়ালে লুকিয়ে আছে। সাবধানে শ্বাস ছাড়ছে!

“কীরে চুপ করে আছিস কেন? কথাগুলো কি সত্যি? দেখি পথ ছাড়। মেয়েটাকে আমি দেখতে চাই।”

ইশাদ পথ ছাড়ার বদলে আরো সামনে এগিয়ে আসে। ঠোঁটে কৃত্রিম হাসি ঝুলিয়ে বলল,

“আমাকে বরের সাজে কেমন লাগছে,আম্মু? সব ঠিকঠাক আছে তো?”

শাহিনা শাইখার চোখ সরু হয়ে আসে। কিছুক্ষণ ছেলের দিকে তাকিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে বললেন,

“তুই কি অন্য কাউকে ভালোবাসিস?”

ইশাদের হাসি মিলিয়ে গেল। তার মুখ থমথমে,বিমর্ষ,নিরানন্দ! ভেতরটা নিঃশব্দে কেঁদে উঠছে। শ্বাস-প্রশ্বাস দ্বিধাগ্রস্থ। কী বলবে মাকে? সত্যি নাকি মিথ্যা? কোনটা বলা উচিত? ইশাদ খানিক্ষণ নীরব রইল। অতঃপর শক্ত ঢোক গিলে,চোখ বন্ধ করে,গভীর গলায় বলল,

“না।”
“ও মিথ্যা বলছে,আন্টি।”

পেছন থেকে দ্রুত ভেসে আসা ইমদাদের কণ্ঠে ইশাদ চোখ মেলে। শাহিনা শাইখা বিভ্রান্তে ভুগছেন। ইশাদ কড়া চোখে তাকায় ইশাদের দিকে। ইমদাদের উৎসাহ এবং অতি সাহস ফুরিয়ে এল। মাথা নত করে দুর্বল গলায় বলল,

“মজা করছিলাম,আন্টি!”

শাহিনা শাইখা বিরক্তভঙ্গিতে চলে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ থেমে বললেন,

“তিহিকে কোথাও দেখেছিস?”

তিহির নাম উঠতে ইশাদ মৃদু কম্পনে চমকে উঠল। একি সাথে মনে পড়ল তিহিকে সে শুধু দেখেইনি। তার চোখের সামনে আছে। এ কথা কি আম্মুকে বলে দিবে? নাকি মিথ্যে বলবে যে,’তিহিকে দেখেনি?’ পরপর মিথ্যা বলায় সায় পেল না ইশাদ৷ পাল্টা প্রশ্ন করল,

“কেন,আম্মু?”

শাহিনা শাইখা বিমর্ষ গলায় বললেন,

“ওর আম্মু খুঁজছে। সব কিছু গোছানো শেষ। হয় তো এখনি বের হবেন।”
“বের হবেন? কোথায়?”

শাহিনা শাইখা এক কদম এগিয়ে এসে বললেন,

“তোকে তো জানানোই হয়নি। তিহিরা বাসা ছেড়ে দিয়েছে।”

ইশাদ আৎকে উঠে বলল,

“কী বলছো,আম্মু!”
“বিশ্বাস হচ্ছে না তো? আমারও হয়নি। আমিও তোর মতো অবাক হয়েছিলাম। কত করে বললাম,আমার ছেলের বিয়েটা শেষ হোক। তারপর নাহয় যাবেন৷ কিন্তু কে শোনে কার কথা? বললেন,খুব জরুরী প্রয়োজনে বাসা ছাড়তে হচ্ছে। এখনি যেতে হবে!”

শাহিনা শাইখার শেষ কথাগুলো বেশ অস্পষ্ট হয়ে ইশাদের কর্ণবিবরে প্রবেশ করছে৷ তিহি সত্যিই চলে যাচ্ছে? তার চলে যাওয়ার পেছনে কারণ কি ইশাদ? ইশাদের ভাবনাশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। যন্ত্রণা শুরু হয় শিরায় শিরায়!

_______________________________
ফাল্গুন মাসের ত্রিশতম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। রাত নয়টা। ইশাদ আর মিহির বিবাহকার্য শুরু হবে কিছুক্ষণের মধ্যেই। কাজী সাহেব এসেছেন অনেক্ষণ হলো। বিভিন্ন নিয়ম-কানুন শেষ করে ইশাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে সবেমাত্র। তার উপস্থিতিতে অন্যদের মধ্যে নীরতা সৃষ্টি হলেও ইশাদের ভেতরে চলছে অগ্নিঝরা ঝড়। তার কপাল বেয়ে ঘাম ঝরছে অনর্গল! বুকের ভেতর হাঁসফাঁস হচ্ছে। নিশ্বাস নিতে হচ্ছে জিরিয়ে জিরিয়ে। যেন এক উত্তপ্ত রুমে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। কথা বলা নিষেধ,নড়াচড়া নিষেধ,চোখ তুলে তাকানোও নিষেধ। নিষেধ অমান্য করলেই গর্দান কেটে নেওয়া হবে! কাজী সাহেব কিছু একটা লেখা নিয়ে ব্যস্ত। সেই সময় সোবহান শাইখ ইশাদের পাশে এসে বসলেন। হাঁটুর উপর নিথরভাবে পড়ে থাকা হাতটিতে হাত রাখলেন। ফিসফিসিয়ে বললেন,

” এখনও সময় আছে। তোর রাগের কারণ যথার্থ। কিন্তু ঝোঁকের বশে তোর জীবনটা কেন নষ্ট করছিস? বিয়েটাও একটি চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক। কিন্তু অন্যসব চুক্তির মতো মেয়াদভিত্তিক নয়। সাইন করবি এক জায়গায়। জড়িয়ে পড়বি অজস্র মায়াজালে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসা কতটা দুর্লভ সেটা আমাকে দেখেই বুঝে নে। আমি চাইলেই তোর মাকে ছেড়ে ভিন্ন সংসার তৈরি করতে পারতাম। কিন্তু পারিনি!”

ইশাদ বাবার চোখে তাকাল। করুণ চাহনি! অস্পষ্ট গলায় বলল,

“আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!”

ইশাদের কথার বিপরীতে কথা তোলার সুযোগ পেলেন না সোবহান শাইখ। কাজী সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করার জন্য ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন। পাশ থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ কণ্ঠ ভেসে এল। ইশাদ বাবার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিল। বাবার হাতের নিচ থেকে হাত সরিয়ে নিল। কাজী সাহেবের হাত থেকে কলম নিতে, কোথাও থেকে ভেসে এল,’বিয়ের কনে কোথায়?’

ইশাদের কান সজাগ হয়ে যায়। সে চারপাশে সেই কণ্ঠধারীকে খোঁজার চেষ্টা চালায়। ভিড়ে উপস্থিত সকলেই স্বাভাবিক। কোনো রকম দুশ্চিন্তা,উৎকণ্ঠা,উচ্ছৃঙ্খলতা নেই। কিন্তু বিয়ের আসর থেকে বিয়ের কনে হাওয়া হয়ে গেলে তো এতক্ষণ শোরগোল বাঁধার কথা। তাহলে কি সে ভুল শুনল? সেই সময় ইশাদের হাত পকেটে চলে যায়। তার মনে হচ্ছে কেউ কল করেছে। ফোন সাইলেন্ট করা। ইশাদ ফোন বের করে আশ্চর্য হয়ে যায়৷ সত্যিই কল এসেছে। কিভাবে বুঝল সে? আরো বেশি অবাক হলো স্ক্রিনে ভেসে উঠা নাম্বার দেখে। ইমদাদের নামটি কাঁপছে! কিন্তু ইমদাদ কেন কল করেছে? সে তো এখানেই থাকার কথা। তার পাশেই। ইশাদ পাশে তাকাল। নেই। ইমদাদের জায়গায় মামা আর অয়ন দাঁড়িয়ে আছে। ইশাদ সন্দেহ নিয়ে ফোন কানে নিল। ওপাশ থেকে ইমদাদের গলা ভেসে এল,

“তোর ক্লিনিকের সামনে যে কাজী অফিস আছে? আমরা ওখানে তোর অপেক্ষায় বসে আছি। জলদি চলে আয়।”

ইশাদ বিরক্ত নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

“কাজী অফিস? বিয়ে করছি আমি,তুই কাজী অফিসে কী করছিস? আমরা বলতে কাকে বোঝাচ্ছিস? তোর সাথে আর কে?”

ইমদাদ কোনো ভণিতা ছাড়াই সরাসরি বলল,

“মিহি।”

ইশাদের হাত থেকে কলম পড়ে গেল। দ্রুত চোখ বুলাল চারপাশে। আম্মুকে খুঁজছে। কোথাও দেখা যাচ্ছে না। তাহলে কি অস্পষ্টভাবে ভেসে আসা কথাটিই সত্যি? কিন্তু এখানের পরিবেশ এত শান্ত ও স্বাভাবিক কেন? তাহলে কি ইমদাদ ভুল বলছে? ইশাদ ঝাড়ি দিয়ে বলল,

“এটা কি ফাজলামি করার সময়? আমি যদি ওখানে পৌঁছে যায় তোর কপালে দুর্গতিই আছে।”

ইশাদের শাসানি বাক্যের উত্তর দিল মিহি,

“কখন আসবে,ইশাদ ভাইয়া? এখানে কারেন্ট নেই। আমার খুব গরম লাগছে। বেনারশী পড়লে কি এমন গরমই লাগে?”

মিহির কণ্ঠ পেয়ে ইশাদ বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। সে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না৷ মিহি এখান থেকে বেরোল কী করে? কাজী অফিসেই বা কী করছে? তাও আবার ইমদাদের সাথে? কিডন্যাপ করেনি তো? করতেই পারে! ইশাদের মনে মনে চলা প্রশ্নের উত্তর এল ইমদাদের নিকট থেকে,

“আমি কোনো গুন্ডা নই যে কিডন্যাপের মতো জঘন্য কাজে জড়াব। মিহি নিজ থেকেই আমার সাথে এসেছে। বিশ্বাস না হলে মিহিকে জিজ্ঞেস কর।”

ইশাদের এবারও প্রশ্ন করতে হলো না। ফোনের ওপাশ থেকে মিহি সহজ গলায় বলল,

“ইশাদ ভাইয়া,আমি নিজ ইচ্ছাই এসেছি। আপনিও আসুন।”

________________________________

কাজী অফিসে পৌঁছেই ইমদাদের কলার চেপে ধরল ইশাদ। গর্জে উঠে বলল,

“মিহি তোর সাথে আসতে পারে না। কেন আসবে? তোদের তো পরিচয়ের সাক্ষাত হয়নি। দেখাও হয়নি। তাহলে কেন আসবে? সত্যি করে বল,তুই ওকে জোর করে তুলে এনেছিস?”

ইশাদের রক্তচক্ষুতে ইমদাদের কলিজা একটুখানি হয়ে গেল। তবুও সাহস জুগিয়ে আস্তে আস্তে বলল,

“সত্যি বলছি ও নিজ থেকে এসেছে।”
“আমি বিশ্বাস করি না। তুই মিথ্যা বলছিস। মিহি খুব ভালো করেই জানে আজ ওর বিয়ে। তাহলে বিয়ের আসর ছেড়ে এখানে আসবে কেন?”
“ভালোবাসার টানে। তোকে কে বলেছে আমাদের দেখা হয়নি? আমাদের দেখা হয়েছে,কথা হয়েছে,প্রেম হয়েছে আর..”
“আর?”
“বিয়েও হয়েছে।”

ইশাদ ইমদাদের কলার ছেড়ে দিল। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে চেয়ে আছে বন্ধুর দিকে। সে কি স্বপ্ন দেখছে কিংবা কল্পনা? যাকে সে বাস্তব ভেবে ভুল করছে?

ইমদাদ ইশাদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে বড় বড় নিশ্বাস ছাড়ল কয়েকটা। কিছুটা ধাতস্থ হতেই মিহির এক হাত চেপে ধরে ইশাদের সামনে এনে দাঁড় করাল। বলল,

“চুপ করে আছো কেন? তোমার সামনে তোমার স্বামী মার খাচ্ছে,দেখতে পারছো না? সত্যিটা বলো। আমি কি তোমাকে জোর করে এনেছি?”

ইমদাদের কণ্ঠস্বরে ইশাদ চিন্তার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে। মিহির দিকে তাকায়। সে মাথা দুদিকে নেড়ে বোঝাচ্ছে,জোর করে আনে নি।

ইশাদ সেদিকে মন দিল না। তার দৃষ্টি আটকে আছে মিহির হাত ধরে রাখা ইমদাদের হাতে। সহসা সে মিহিকে নিজের দিকে টেনে নেয়। ইমদাদের হাত ছাড়িয়ে বলল,

“তুই ও কে ছুঁবি না।”

ইমদাদ হতভম্ব! ক্ষনিকের জন্য বাকশূন্য হলো। অতঃপর জোর গলায় বলল,

“আমার বউকে আমি ছুঁব না?”

ইমদাদের মুখে বউ শব্দটা বড্ড বেমানান ঠেকছে ইশাদের কাছে। যার দিনরাত কাটে হাড়ি হাড়ি মেয়েদের নিয়ে তার সাথে বউ,সংসার শব্দগুলো যেন অশোভনই। সে শক্ত গলায় বলল,

“না ছুঁবি না। প্রথমতঃ আমি এখনও শিউর হইনি যে মিহি তোর বউ। দ্বিতীয়তঃ হলেও আমি মানব না।”

ইমদাদ চোখ বড় বড় করে বলল,

“সে কি! বন্ধু হয়ে বন্ধুর সংসারে কাঁটা বিছাবি?”
“দরকার হলে তাই করব। এমন ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে তোর বউ হবে? ছি!”
“এমনভাবে ছিঃ বলছিস যেন আমি কোনো দুর্গন্ধের পেট থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধ পোলা। আমার গা থেকে সবসময় দুর্গন্ধ বাতাস ছড়ায়।”

ইশা ঠোঁট একপাশে টেনে বলল,

“তার থেকেও খারাপ!”

ইমদাদের চোখ দুটো আরো বড় হয়ে গেল। যেন মনিদুটো এখনি বের হয়ে আসবে। ইমদাদ ইশাদের কথার প্রতিত্তোর করতে যাবে তার আগেই ইশাদ মাথা সামনে ঝুকিয়ে আনে। ফিসফিসিয়ে বলল,

“সম্পর্কে বন্ধু হোস দেখে এখনো তেমন কিছু বলছি না। আমাকে রাগাস না কিন্তু। এখনও সময় আছে সত্যি কথা বল।”

ইমদাদ খানিকটা ভয় পেল। এক পলক মিহির দিকে তাকাল। সে শাড়ি নিয়ে কিছু একটা করছে। চোখে,মুখে অপ্রসন্নতা! তাদের কথপোকথনে খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ইমদাদ একটু ভরসা পেল। সে বলল,

“আর কোন সত্যিটা শুনবি? যা সত্যি ছিল বলে দিয়েছি। এখন যদি তুই চাস,আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কথা শুনতে তাহলে সেটাও বলতে রাজি।”

ইশাদ ক্ষেপে গেল। মিহি না থাকলে হয় তো এতক্ষণে কয়েক শত ঘুষি পড়ত ইমদাদের শরীরে। সে মাথা ঠান্ডা রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। তারমধ্যেই বলল,

“মিহির কি বিয়ের বয়স হয়েছে যে,তোকে বিয়ে করবে?”
“আমাকে বিয়ে করতে বিয়ের বয়স হওয়া লাগবে আর তোকে করতে লাগবে না?”

এই পর্যায়ে ইশাদ অপমানবোধ করল।তার মনে হচ্ছে,সে পৃথিবীর সব থেকে বোকা প্রাণী। আর ইমদাদ চালাক ও চতুর! কথা বাড়ালেই অপমানিত হবে। কিন্তু ইমদাদের সাথে মিহির বিয়ে? সে কোনোমতেই বিশ্বাস করতে পারছে না। এমনও তো হতে পারে মিহির সাথে তার বিয়েটা আটকানোর জন্য ইমদাদ মিথ্যে বলছে। সবটাই তার পরিকল্পনা। মিহিকেও সে রকম কিছুই বুঝিয়েছে। শিখিয়ে,পড়িয়ে নিয়েছে। মিহির বয়স কম,বুদ্ধিও! তাকে বশ করা খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়। কিন্তু স্বীকার করাবে কিভাবে? পরিকল্পনা তো বেশ পোক্ত!

ইশাদ বহুক্ষণ ভেবে হঠাৎ বলল,

“তোদের আবার বিয়ে হবে।”

ইমদাদ চমকে উঠল। দ্রুত চোখ রাখল মিহির ওপর। মেয়েটা এখনও শাড়ি,গয়না নিয়েই পড়ে আছে। সে আমতা আমতা করে বলল,

“আবার কেন? বিয়ে তো বিয়েই। একবার করলেও বিয়ে,দুই বার করলেও বিয়ে। শুধু শুধু এত ঝামেলা করার কী আছে?”

ইমদাদের কথায় ইশাদের সন্দেহ গাঢ় হয়। চৌকস হাসি নিয়ে বলল,

“আমি এত কিছু জানি না। আমার সামনে বিয়ে হলে তবেই আমি বিশ্বাস করব। তোরা যে সত্যি বলছিস,মেনে নিব।”

ইমদাদ মহাচিন্তায় পড়ে গেল। মিহির মনোযোগ এদিকে আনতে উঁচু গলায় বলল,

“তোর বিশ্বাসে আমাদের কী? আমি আর মিহি বিশ্বাস করলেই হবে। বিয়ে তো আমাদের হয়েছে,তোর না। সংসারও আমাদের হবে। তোর কথা শুনতে হবে কেন?”

মিহির মনোযোগ এদিকে আসলেও কী নিয়ে কথা হচ্ছে বুঝতে পারল না। সে সহজ মনেই বলল,

“কেন শুনবেন না? ইশাদ ভাইয়া সবসময় ভাল কথা বলে। ভাল কথা শুনতে হয় জানেন না?”

মিহির কথায় ইশাদ বিস্মিত। ইমদাদ আতঙ্কিত! চোখের ইশারায় অনেক কিছু বুঝাচ্ছে। কিন্তু সে কিছুই বুঝতে পারছে না। এ দিকে ইশাদ বলল,

“মিহির আপত্তি নেই। তাহলে তোর এত আপত্তি কিসের? তাহলে কি ধরে নিব,তুই মিথ্যে বলছিস?”

ইমদাদ তেজে উঠে বলল,

“কী তখন থেকে সত্যি,মিথ্যা নিয়ে পড়ে আছিস। বিয়ে করতে হবে তো? চল। এখনি করব। তার আপত্তি না থাকলে আমারও নেই।”

ইমদাদ তেজ নিয়ে কাজী অভিসের একদম ভেতরে চলে গেল। একা নয়,মিহিকে নিয়ে। বড় বড় কদম ফেলতে ফেলতে ফিসফিসিয়ে কিছু বলছে। মিহি বুঝতে না পেরে স্বাভাবিক স্বরে বলল,

“এত আস্তে করে বললে,বুঝব কিভাবে? আরেকটু জোরে বলুন।”

সেই সময় ইশাদ পাশে এসে বলল,

“মিহি তো ঠিকই বলেছে। জোরে বল। আমিও শুনি।”

ইমদাদ এক পলক বন্ধুর দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল। মিহির হাত ছেড়ে দূরের চেয়ারে বসল।

মিহি রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করার পূর্বে একবার ইমদাদের দিকে তাকাল। ইমদাদ সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নিল। মিহি কী বুঝল কে জানে! সে বেশ সময় নিয়ে,ধীরে সুস্থে,পরিষ্কার অক্ষরে যত্নসহকারে নিজের নামটা লিখল।

বিয়ে সম্পন্ন হতে ইশাদ ইমদাদকে জড়িয়ে ধরল। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,

“আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে,তোর সাথে মিহির বিয়ে হয়েছে। তোদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক ছিল আমি তাও জানিনা। কিন্তু এখন? এখন এটা জানি এবং বিশ্বাস করতে চাই,মিহি তোর বউ। ওকে ওর প্রাপ্য সম্মানটুকু দিবি তো? আমি কখনও তোর জীবন স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করিনি। এখনও করব না৷ শুধু এটা কখনও ভুলে যাস না,যাকে তোর অর্ধাঙ্গিনী করেছিস সে আমার বোন।”

বোন শব্দটা বেশ জোর ও তৃপ্তিভরে উচ্চারণ করল ইশাদ। মুহূর্তেই তার হৃদয়জুড়ে প্রবল স্নেহের ঢেউ শুরু হলো। এই সবটা স্নেহ সে মিহিকে উজার করে দিতে চায়। সবসময়! ইশাদ ইমদাদকে ছেড়ে মিহির নিকট এসে সস্নেহে বলল,

“বোন,এই ছেলেটা যদি ভুলেও তোকে কষ্ট দেয়,তুই শুধু আমাকে একটা কল দিবি। ব্যস! তারপর এর হাড্ডি গুড়ো হবে,নাকি চামড়া ছিঁড়ে আলগা করতে হবে,নাকি মাংস টুকরো টুকরো করে রোদে শুকাতে হবে সেটা আমি দেখব।”

মিহি কিছু বলার আগেই ইমদাদ বলল,

“মাত্রই না বললি,আমার জীবন স্বাধীনতায় ঢুকবি না?”

ইশাদ ইমদাদের দিকে সহাস্যে বলল,

“তোরটাই তো ঢুকছি না। আমি আমার বোনেরটাই ঢুকছি। তার ভালো,মন্দ দেখার প্রধান দায়িত্বে আমি আছি ভগ্নিপতি মশায়!”

ইমদাদ আর কথা বাড়াল না। যার জন্য এত কিছু তাই যদি না হয় তাহলে তো সব বৃথা। ইমদাদ হাতঘড়িতে চোখ রাখে। প্রায় বারোটা বাজছে! সে ঘড়ির দিকে চোখ রেখেই বলল,

“তিহিরা কি চলে গেছে?”

ইশাদের খুশিরাঙা আকাশটা হঠাৎই কালো আঁধারে ঢাকা পড়ল। ইমদাদের দিকে অসহায় দৃষ্টি রাখতে, সে বলল,

“এখনও দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ওকে আটকাবি না?”

ইশাদ তখনও থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে। সর্বশরীর কাঁপছে তার। তিহি কি এখনও তার অপেক্ষায় আছে? কেন থাকবে? নিশ্চয় এতক্ষণে চলে গিয়েছে। কোথায় গেছে? আম্মুকে কি ঠিকানা দিয়ে গিয়েছে? যদি না দেয়? ঐ বাড়িটিতে তিহি ছাড়া কি তার বেঁচে থাকা সম্ভব?

ইশাদের ভাবনার মাঝে কাঁধে হাত রাখে ইমদাদ। ধীরস্বরে বলল,

“এখন তো তোর ভালোবাসার পথে আর কোনো কাঁটা নেই। তারপরও কী ভাবছিস? দৌড়া! এই রাতে রিকশাও পাবি না।”

ইশাদ নড়ল না। সেই আগের জায়গায় স্থির,অনড়! পা বাড়ানোর সাহস পাচ্ছে না৷ ছুটে গিয়ে যদি হতাশ হয়?নিরাশ হয়?আশাহত হয়? তিহিদের রুমটা শূন্যে পড়ে থাকে? সহ্য করতে পারবে তো? এতটাও সহ্যশক্তি কি তার মধ্যে আছে?

ইমদাদ ইশাদকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। ইশাদ টাল সামলাতে না পেরে অনেকটাই দূরে চলে আসে। প্রায় পড়েই যাচ্ছিল। ইমদাদ চেঁচিয়ে বলল,

“তোর বউকে নিয়ে কাল আমার বাড়ি আসবি। তার সাথে পরিচয় পর্ব সারতে হবে। তোর জন্য চোখের দেখাটাও তো পেলাম না!”

_______________________________

বাড়ির গেইটে পা রাখতেই ইশাদের শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে গেল। রাস্তার পাশেই দুটো পিকআপ দাঁড়িয়ে আছে। মাল বোঝাই করা। তাহলে কি তিহিরা এখনও যায় নি? ইশাদ সামান্য আশার আলোর দেখা পেল। বিয়ের সম্পর্কে জড়াতে পারবে কী পারবে না সে পরে দেখা যাবে। কিন্তু মেয়েটা চলে যাওয়ার আগে নিজের অনুভূতির কথাটা জানাতেই হবে। ইশাদ ভেতরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতে পেছন থেকে মেয়েলি সুর ভেসে এল। ইশাদ হাওয়া বেগে ঘুরে দাঁড়ায়। পিকআপের পেছন থেকে অস্পষ্ট কথা ভেসে আসছে। ইশাদ সেদিকেই দৌড়ায়। এই কণ্ঠস্বর আর কারও নয় তার তিহিপাখির!

পিকআপের পেছনে এসে ইশাদ দেখল,একটা লোকের সাথে সে কথা বলছে। লোকটির বয়স ষাটোর্ধ্ব। মুখের ভাব কাঠিন্য। কপালে সাদা রঙের তিলকটি আলোতে হঠাৎ হঠাৎ চমকে উঠছে। পরনে হালকা নীল রঙের দামী স্যুটের সাথে যেমন তিলকটি মানাচ্ছে না তেমনি ড্রাইভার বলেও মনে হচ্ছে না। তাহলে কে? ইশাদ ভাবতে গিয়েও ভাবল না। তার মন অন্য দিকে ঘুরানোর কোনো ইচ্ছে নেই। সে ছুটে আসে তিহির সামনে। তারা কিছু বুঝার আগেই আচমকা তিহির হাত ধরে ফেলে ইশাদ। একটু দূরে নিয়ে এসে হাঁটু মুড়ে বসে। কিছুক্ষণ পকেট হাতরাল কিন্তু কিছু পেল না। উপায়ন্তর না পেয়ে নিজ হাতের আংটি খুলে তিহির দিকে বাড়িয়ে ধরে মৃদু গলায় বলল,

“আমার জীবন দলিল তোমার নামে করতে চাই,তিহিপাখি। Will u marry me?”

তিহির চোখে পানি চিকচিক করছে। প্রথম দফায় তো সে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। এই ছেলেটা ইশাদ। ইশাদ তার হাত ধরেছে! পরমুহূর্তে যখন বিশ্বাস হলো তখন বিস্ময় আর অত্যাধিক আনন্দে কেঁদে দিল। মুখের বুলি হারিয়ে ফেলল। কোনোমতে বাম হাতটি নাড়াতে সক্ষম হলো। ইশাদের দিকে হাতটি বাড়িয়ে দিতেই,অন্য একটি হাত তিহির হাত চেপে ধরে। তিহি বিরক্ত নিয়ে হাতের সম্পূর্ণ মানুষটার দিকে তাকায়। তিনি আর কেউ নন,রেখা ভূইয়া। তিহি কিছু বলার আগেই তিনি ইশাদের উদ্দেশ্যে বললেন,

“তিহি তোমাকে বিয়ে করতে পারবে না। কারণ ও বিবাহিত।”

ইশাদ বিস্ফোরিত চোখে তাকায়। তিহিও। সে অবিশ্বাস্য গলায় বলল,

“এসব কী বলছো আম্মা?”

রেখা ভূইয়া তিহির দিকে তাকালেন। দৃঢ়কণ্ঠে বললেন,

“আমি তোমার শুধু আম্মা নই,শ্বাশুড়িআম্মা। আমার একমাত্র, এবং অতি আদরের ছেলে তাজের বিয়ে করা বউ।”

বিস্ময়ে ইশাদ বসা থেকে দাড়িয়ে গেল। একবার তিহির দিকে তাকাচ্ছে তো আরেকবার রেখা ভূঁইয়ার দিকে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মধ্যে পড়ে তার অনুভূতিগুলো নেতিয়ে পড়েছে। তিহি এক পা, এক পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে। মাথা দুই দিকে নাড়াতে নাড়াতে কিছু একটা বিড়বিড় করছে। সেই সময় সেখানে ইনা প্রবেশ করে। তিহির কাছে দৌড়ে গিয়ে বলল,

“তিহি আপু,গাড়িতে আমি তোমার কোলে বসব?”

রেখা ভূঁইয়া ইনার কাছে এগিয়ে এলেন। মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে বললেন,

“তিহি আপু নয়,তিহি মা। আজ থেকে শুধু মা বলে ডাকবে। কেমন?”

ইনা অবাক হল। দ্বিধায় পড়ল। কিছুক্ষণ নিজে দ্বিধা কাটানোর চেষ্টা করল। না পেরে সন্দেহী গলায় বলল,

“তাহলে কি তুমি আমার আম্মা আর তিহি আপু শুধু মা?”

রেখা ভূঁইয়া মৃদু হাসলেন। বললেন,

“না। আমি তোমার দাদিমা তিহি আপু শুধু মা!”

তিহি দূর থেকেই চেঁচিয়ে বলল,

“না। ও আমাকে মা ডাকবে না।”

রেখা ভূঁইয়া জোর ও শক্ত গলায় বললেন,

“ডাকবে। কারণ, ইনা তোমার আর তাজের প্রথম ও শেষ সন্তান।”

#সমাপ্ত

[ রেখা ভূঁইয়া কি সত্যি কথা বলছেন? যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তিহি স্বীকার করতে পারছে না? সত্যিই কি তার জীবনে তাজ নামের কেউ ছিল? কেমন ছিল তার তাজময় জীবন? তাজ নামের ব্যক্তিটি যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তিহি আর ইশাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? তিহি কি ইশাদের ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিবে নাকি গ্রহণ করে নিবে? আর ইশাদ? সেও কি সব জানার পরও তিহিকে একিভাবে চাইবে? এই সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই গল্পটির ‘Season 3’ হয়ে হাজির হবে। ততদিন আপনারা ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অনেকেই হয় তো মন খারাপ করবেন,রাগ করবেন যে মাঝ পথে কেন থামিয়ে দিচ্ছি? তাদের উদ্দেশ্যে বলা,সাধারণত আমার গল্পগুলো খুব বড় হয় না। বেশি হলেও ত্রিশের দশে শেষ হয়। কিন্তু এই গল্পটা আরো বড় হবে। আর আমার এত বড় লিখার ধৈর্য্য হয় না। এক ঘেয়েমি চলে আসে। পরে গল্পটা সাজাতে প্রচুর বেগ পোহাতে হয়। তাই কয়েকদিন এটা অফ রাখছি। মাথা ফ্রেশ করতে,এক ঘেয়েমি দূর করতে নতুন গল্প নিয়ে হাজির হব????]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here