তোর উঠানে বিকাল ছায়া?,১৭তম খন্ড,১৮তম খন্ড
লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
১৭তম খন্ড
ছায়াকে বন্দি করে রেখে ঘরের চারি দিকে কেরোসিন দিচ্ছে আদনানের সহচর রা।
ছায়ার ভেতরে কোন বোধ নাই।
ছায়া ঘাড় কাত করে প্রাণহীন শরীররের মতো শুয়ে আছে।
ছায়ার হাত পা মুখ বাঁধা।
চারিদিকে কেরোসিন ছড়ানোর পর আগুনের জন্য আদনান নিজে মেঝ লাইট জ্বালিয়ে ছুড়ে মারে মুহুর্তের মাঝে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে পুরো ঘর।
আদনান ও তার সহচারী রা বিকট শব্দে হাসি দেয়।
কিন্তু এ হাসি দীর্ঘস্থায়ী নয়।
হটাৎ কেউ পেছন থেকে আদনানের মাথায় জোরে আঘাত করে।
আদনান অচেতন হয়ে পরে। ছায়ার চারিদিকে আগুন দাউ দাউ করছে।
ছায়া ভেতরে বসে আছে হাত ওা বাঁধা অবস্থায়।
লোকটা ছায়াকে ছাড়িয়ে পাজকোল করে বাইরে নিয়ে আসে।
★★★
জ্ঞান ফিরতে ছায়া নিজেকে নিজের রুমে আবিষ্কার করে।
হাতে সেলাইন।
মাথাটা তখনো ঝিম ঝিম করছে ছায়া।
চোখ মেলে সামনে নয়লা বেগম আর আবির কে দেখতে পায় ছায়া। কিন্তু ছায়ার দুটো চোখ যাকে খুজতেছে তাকেই পাচ্ছে না৷
নির্ঝর এর উপস্থিতি এখানে নেই কেন।
ছায়ার এমন অবস্থা অথচ নির্ঝর নেই এটা কি করে হয়।
ছায়াকে চোখ খুলতে দেখে নয়লা বেগম এগিয়ে আসে,
–মা তুই ঠিক আছিস কষ্ট হচ্ছে না ত।
–মা নির্ঝর?
ছায়ার কথা শুনে নয়লা বেগমের চোখের কোনে দু ফোঁটা পানি জন্ম নেয়।
–আছে বাইরে গেছে।
–আমার এই অবস্থা ও বাইরে এটা সম্ভব না মা।
ও কেথায় ওকে আসতে বলুন প্লিজ মা।
–ছায়া তোমার কষ্ট হচ্ছে বুঝতেছি তুমি প্লিজ উত্তেজিত হইও না।
ভাইয় চলে আসবে এই বাইরে গেছে।
আবির কথা গুলো বলার সময় গলা আঁটকে আসছিল।। কিন্তু এই মুহুর্তে ছায়াকে এগুলা জানানো যাবে না।
ডক্টর বলেছে ছায়ার অবস্থা ভিশন খারাপ।
ও কিছু কষ্টের কথা শুনতে পারবে না। নিতে পারবে না।
–মা ওকপ আসতে বলুন জলদি আসতে বলুন।
চোখ বন্ধ করে কথা গুলো বলছে ছায়া।
–আসবে মা ও আসবে খুব জলদি চলে আসবে আমি ফোন করছি ওকে।
ছায়ার মধ্যে উত্তর দেবার আর কোন শক্তি অবশিষ্ট নাই তাই ছায়া চুপচাপ হয়ে যায়৷
ভিশন ক্লান্ত ছায়া।
সত্যি জীবনের সব থেকে বড়ো কালো রাত ছিল কাল।,
নয়লা বেগম মেডকে দিয়ে খাবার আনায়।
ছায়াকে উঠিয়ে বসায়,
–খেয়ে নে মা।
–না মা উনি না আসলে খাবো না।
–অসুস্থ মানুষ তুই চলে আসবে নির্ঝর খেয়ে নে মা।
–না ওনাকে আসতে বলো না ওনার হাতেই খাবো আমাকে শুইয়ে দেও প্লিজ আমার অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে মাথায়। আর পেটে।
–আমি জানি ত অতিরিক্ত ঔষধ পরার কারনে তোর পেটে তিব্র যন্ত্রণা হচ্ছে।। ডক্টর বলেছে খেয়ে নিতে।। তোর সেন্স আসলে যেন খাইয়ে দি।
একটু খা মা।
–মা একটুও না। আমাকে শুইয়ে দেও প্লিজ। আমার কষ্ট হচ্ছে।
–ছায়া দুই চামচ মা। একটু।
ছায়া চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে নেয়,
–সহ্য হচ্ছে না মা প্লিজ ওনাকে আসতে বলো।
ছায়ার এই অবস্থা দেখে নয়লা বেগমের আর সহ্য হচ্ছে না৷
চোখ দিয়ে বিশাল এক ঝর্ণা পানি গড়িয়ে পরছে।
কি বলবে ছায়াকে।
কি বলে শান্তনা দিবে।
কি করে বোঝাবে ছায়াকে।
কি করে সামলাবে।
কিছুই বুঝতে পারছে না নয়লা বেগম।
আবির ও হতভাগ হয়ে আছে।
নয়লা বেগম চুপচাপ বসে আছে হাতে সুপের বাটি।
এভাবে হবে না।
ছায়াকে জোর করে দুই চামচ খাইয়ে দিলো নয়লা বেগম।
তার পর মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলো।
ছায়া নির্ঝর কে মনে করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।
নয়লা বেগম চিন্তায় ভেঙে পরলো।
ছায়াকে কি করে সামলাবে।
ছায়ার পালিত মা বাবা এখন আর ছায়ার ধার ধারে না।
তমাকে তারা বার করে দিয়েছে।
তারা ছায়ার সাথে আর কোন সম্পর্ক রাখতে চায় না।।
তমা তার মা বাবাকে ছায়া সম্পর্কে বাজে কথা বুঝিয়েছে যার জন্য ছায়ার পরিচয় তারা আর দিবে না।
যদি মায়ের মতো করে ছায়াকে সামলাতে পারত তারা৷। কিন্তু সামলায় নি।
নয়লা বেগম আর আবির এখন ছায়ার পৃথিবী।
ছায়ার বেস্টু রুহি এসেছে ছায়াকে দেখার জন্য।
রুহি ভেতরে এসে ছায়ার পাশে নয়লা বেগম কে বসে থাকতে দেখে,
–আন্টি।
নয়লা বেগম পেছনে তাকায়।
নয়লা বেগম কে কাঁদতে দেখে রুহি ছুটে যায়।
–আন্টি কাদবেন না প্লিজ।
–না কেঁদে ত উপায় নাই রে মা।
আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না।
আপনি চিন্তা করবেন না।
আমার এ দিন দুনিয়াতে কেউ নেই নিজের মতোই থাকি সব সময়।
আপনি চাইলে ছায়ার পাশে কিছু দিন থেকে যেতে চাই।
–তুমি থাকবে আমার মেয়েটার পাশে।
–হ্যাঁ আন্টি থাকব আপনি পার্মিশন দিলে।
–আমি পার্মিশন কেন দিবো না।
অবশ্যই দিবো।
রুহি ছায়ার পাশে গিয়ে বসে।
–আপনি রেস্ট নিন আমি ওর কাছে আছি।
ভাইয়া আন্টিকে রুমে নিয়ে কিছু খাইয়ে দিন প্লিজ।
আবির মা কে নিয়ে চলে আসে।
,
পরের দিন সকালে,
ছায়া একটু চোখ মেলে তাকায়।
–রুহি তুই।
–হ্যাঁ রে আমি তোর কেমন লাগছে এখন।
–নির্ঝর কই রুহি?
নির্ঝর এর কথা শুনে রুহি চুপ হয়ে যায়।
–কি হলো কথা বলছিস না কেন।
কাল মা বলেছে ও চলে আসবে বাইরে গেছে কই আসছে না কেন এখনো।
বল না কি হয়েছে বল না।
তখনি নয়লা বেগম রুমে আসে।
রুহির পাশে বসে।
রুহির হাত দুটো ধরে,
–মা আমার।
–কোথায় মা উনি।
–নির্ঝর আর নেই। ও চির কালের জন্য চলে গেছে আমাদের ছেড়ে।
নয়লা বেগমের কথা শুনে ছায়ার চারিদিকের শব্দ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
চারিদিকে ঘোলা দেখছে ছায়ার।
–মিথ্যা বলছো মা।
ওকে আসতে বলো প্লিজ।
আমার সহ্য হচ্ছে না।
আমার চারিদিকে ঘোলাটে লাগছে মা।
ছায়া কথাটা বলে ঢুলে পরে।
রুহি ধরে বসে।
সবাই কান্নায় ভেঙে পরে।
,
,
ছায়া খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে।
ছায়া রোগাটে হয়ে যাচ্ছে।
চেহারা ভেঙে যাচ্ছে।
মাত্র ১ মাসে ছায়ার মাঝে বিরাট পরিবর্তন লক্ষ করছে নয়লা বেগম। সারাদিন নির্ঝর নির্ঝর করে।
এদিকে কিছু খেলেই বমি পায়।
অসুস্থাতা এক দম সীমা ছাড়িয়ে দিচ্ছে।
ডক্টর চেকাপ করতে এসেছে।
ডক্টর চেকাপ করে নয়লা বেগমের দিকে তাকালো।
–আপনার বউমা কন্সেপ করেছে এমনি থেকে বয়সটা তার অল্প। তার উপর উনি খাওয়া দাওয়া ছেড়েছে। তার উপর ওনাকে দেওয়া হয়েছিল ড্রাগ তাও তিব্র মাত্রায়।
বাচ্চার বেঁচে থাকার কথা ছিল না কিন্তু বেঁচে আছে সে।
এভাবে চলতে থাকলে ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
ছায়াকে প্রচুর খেতে হবে। প্রচুর মানে প্রচুর। আর ঔষধ সব বাদ কিছুই খাওয়ানো জাবে না৷ নতুন কিছু অল্প পাওয়ারের ঔষধ দিচ্ছি।
কথা গুলো বলে ডক্টর কিছু ঔষধ দিয়ে চলে যায়।
,
ছায়া চোখ বন্ধ করে আছে।
নয়লা বেগম ছায়ার মাথায় হাত দেয়,
–এমন করিস না মা এখন দুই জন তোরা।
তুই এখন একা নস৷
দয়া করে খেয়ে নে।
খাবার খা এভাবে আর মুখ বুঁজে থাকিস না।
ছায়া চুপ করে নয়লা বেগমের কথা শুনছে।
কিছুই বলার মতো শক্তি নাই তার।
কিছু ফল খাইয়ে দিলো ছায়াকে রুহি।
,
রাতে,
রুহি ঘুম হটাৎ ছায়ার ঘুম ভেঙে যায়।
পানির পিপাসায়।
পাশে পানি খেতে চাইলে জগে পানি নেই।
রুহির দিকে তাকায়।
মেয়েটা সারা দিন অনেক কষ্ট করে ছায়ার জন্য এখন একটু শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে।
তাই ছায়া নিজে উঠে শিড়ির বেড় ধরে নিচে নামতে থাকে।
পেটে ব্যাথা হচ্ছে।
বাবুটা আসার পর থেকেই হুটহাট করে ব্যাথা হয় ছায়ার।
পেটে হাত দিয়ে নামছে ছায়া।
নিচে নেমে রান্নাঘর পর্যন্ত যেতে গিয়ে অন্ধকারে হোঁচট খায়।। কিন্তু পরার আগে ছায়াকে কেউ ধরে বসে।
লোক টার বাহুডোরে আটকা পরে ছায়া।
তার শরীরের ঘ্রাণ টা ছায়ার ভিশন চেনা।
চলবে,
তোর উঠানে বিকাল ছায়া?
১৮তম খন্ড
লেখিকা-লামিয়া রহামান মেঘলা
ছায়া চোখ বন্ধ করে ঘন নিশ্বাস নিচ্ছে।
আর পেছন থেকে দুটো হাত ছায়ার পেট জড়িয়ে ছায়াকে আকড়ে ধরে রেখেছে
কিছু সময় পর বাঁধন টা আলগা হতে লাগলো
ছায়া চোখ বন্ধ করে ছিল।
বাঁধন আলগা হবার আভাস পেয়ে ছায়া পেছনে ফিরে চিল্লিয়ে ওঠে,
–নির্ঝর।
ছায়ার চিল্লানো শুনে সবাই নিচে চলে আসে রুহি লাইট জ্বালিয়ে দেয়।
ছায়া দাঁড়িয়ে আছে,
রুহি জলদি ছায়ার কাছে যায়৷
–কি হয়েছে ছায়া।
–রুহি নির্ঝর ছিল এখানে।
–কোথায় ছায়া৷।
–রুহি ও এখানে ছিল আমি দেখেছি ও এখানে ছিল এখনি ছিল।
ছায়া উত্তেজিত হয়ে গেছে,
–ছায়া থাম এখানে কপউ নাই ।
তুই কেন একা নিচে এসেছিস।
–বিশ্বার কর রুহি ও এখানে ছিল।
–আচ্ছা চল ঘরে চল।
–না যাবো না।
ওকে আসতে বল আবার।
ছায়ার অবস্থা দেখে নয়লা বেগম কেঁদে দেন।
আবিরের চোখ টলমল করছে,
–ঘরে চল দেখছি চল।
–না আমি বলছি তোরা বিশ্বাস করছিস না।
ছায়ার নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে।
দম আঁটকে যেতে থাকে।
রুহি চট করে ছায়াকে ধরে বসে।
ধিরে ধিরে ছায়ার চোখ বুজে আসে,
–সত্যি বলছি ওকে দেখেছি।
ধিরে কথাটা বলে ছায়া রুহির কোলে ঢুলে পরে।
***
ছায়াকে বিছনায় শুইয়ে দিয়ে রুহি পাশে বসলো।
নয়লা বেগম ছায়ার পাশে বসে আছে,
–মেয়েটার এই অবস্থা আর চোখে সহ্য হচ্ছে না৷
ভিশন কষ্ট হচ্ছে আমার৷
–কি করব আন্টি কিছুই করার নেই।
–হে আল্লাহ আমার হাসিখুশি পরিবার টা ফিরিয়ে দেও।
,
,
,
সে রাতে কেউই ঘুমাতে পারলো না।
ছায়ার জ্বর চলে এলো।
জ্বরের ঘোরে বার বার নির্ঝরের নাম।
ছায়া চোখ বন্ধ করে অচেতন অবস্থায় নির্ঝর কে ফিল করে।। ভালোবাসা বুঝি এমন হয়।
ডক্টর ছায়াকে চেকাপ করছে,
–মিসেস.চৌধুরী ছায়াকে রক্ত দিতে হবে।
ওর অবস্থা দিন দিন যা হচ্ছে তাতে বাচ্চা মা কাউকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
ওকে পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করুন৷
পারলে এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে জান।
নির্ঝর এর অস্তিত্ব থেকে দুরে যেখানে ওর সাথে আপনারা সবাই থাকবেন৷
ওকে নির্ঝর এর কমতি কখনো ফিল করতে দিবেন না।
যদিও নির্ঝর এর কমতি কখনোই ছায়াকে ছাড়বে না।
তাও যতোটা পারেন।।
আপাততঃ ছায়া ঘুমাক।
ঘুম থেকে উঠলে ওকে খাবার দিয়েন।
ডক্টর চলে যায়।
রুহি নিচে আসে ছায়ার জন্য কিছু রান্না করতে।
নয়লা বেগম ছায়ার পাশে।
রুহির চোখে পানি বার বার মুছে দিচ্ছে কিন্তু আবার ভরে যাচ্ছে।
ছায়ার অবস্থা দেখার মতো অবস্থা পরিবারের কারোর নেই।
সত্যি মেয়েটাকে দিন দিন এভাবে মরতে দেখাটা সহ্য হচ্ছে না করোর।
রুহি রান্না করছিল তখন রান্না ঘরে আবির প্রবেশ করে,
–তুমি কাঁদছো
হটাৎ আবিরের কন্ঠ পেয়ে রুহি চমকে ওঠে।
এ বাড়িতে রুহি এই ৩ মাস আছে কিন্তু এই ৩ মাসে আবির কখনো তার সাথে কথা বলে নি।
রুহি চোখ মুছে বলল,
–জি না ভাইয়া।
–কেঁদো না ছায়ার অবস্থা দেখে কষ্ট হচ্ছে সবার কিন্তু তুমি অসুস্থ হলে কে দেখবে বলো আমাদের।
তুমি এক মাত্র ভরসা।
তুমি সেদিন না আসলে কি করে যে কি সমাল দিতাম আমি নিজেও জানি না।
–এভাবে বলবেন না।
আমার কেউই নেই ছোট থেকে যখন স্কুলে ভর্তি হয়েছি প্রতিট স্কুলে এবং কলেজেও ছায়াকে পেয়েছি৷। ওকে আমি সব সময় পরিবার মনে করেছি৷
আমার ত কেউ নেই ওর এমন বিপদে ওকে একা ফেললে আমাকে নেমখারাম এর খেতাব নিতে হবে।
ও কখনো আমার দুঃখের সময় আমাকে ছেড়ে যায় নি।
–তুমি খুব ভালে রুহি৷
নাহলে দেখো না তমা ত ছায়ার আপন বোন নাহলেও চাচাত বোন রক্তের সম্পর্ক।
তাও আজ ছায়ার এই অবস্থার জন্য এক মাত্র তমাই দায়ি।
–আপনার অবস্থা ও কিন্তু ভালো না।
তমা শুধু ছায়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় নি আপনার ভালোবাসা কেও ও মজা বানিয়ে ছেড়েছে।
–আমার কথা বাদি দেও ভাইকে হারিয়ে সব কিছু শূণ্য শূণ্য লাগে।
–সত্যি নির্ঝর ভাই এ বাড়ির বট ছায় ছিল।
–হুম।
–খাবার হয়ে গেছে আমি ওকে খাইয়ে দিয়ে আসি।
–আচ্ছা।
–আপনিও খেয়ে বেরিয়ে পরুন।
–হ্যাঁ আমাকে ত অফিস যেতে হবে।
রুহি আবিরকে খাবার দিয়ে ছায়ার রুমে চলে আসে।
আবির খেয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে।
ছায়াকে দেখে এখন শুধু কষ্ট হয়।
চোখের নিচে কালো দাগ।
রোগাটে এক দম রোগাটে।
চোখ দুটো গর্তে চলে গেছে।
দেখে মনে হয় তার অস্তিত্ব কিছু দিনের মধ্যে বিলিন হয়ে যাবে।
নয়লা বেগম সারাট দিন বসে থাকে মেয়েটার কাছে।
রুহি চেষ্টা করে কিছু খাইয়ে দেবার।
কিছুতেই কিছু হয় না।
নির্ঝর এর কমতি কোন মতে ছায়ার উপর থেকে যাবে না।
ছায়াকে কোন মতে ঘুমিয়ে দিয়ে রুহি গোসলে চলে যায়৷
নয়লা বেগম ছায়াকে গভীর ঘুমে মগ্ন দেখে নামাজ পড়তে যায়।
ছায়া রুমে একা।
কেউ নেই চারিদিকে,
নিস্তব্ধ পরিবেশ।
ঘুমের মাঝেই ছায়ার মনে হতে লাগলো কেউ তাকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে।
খুব কাছে এসেছে ছায়ার।
এতোটাই কাছে যে তার নিশ্বাস আর ছায়ার নিশ্বাস মিশে যাচ্ছে এক সাথে।
–তোমার কাছ দিয়ে আসা ঘ্টাণ টুকুতেও শুধু মাত্র আমার অস্তিত্ব ছায়া।
অন্য কারোর না৷। খুব জলদি ফিরে আসব।
তোমার থেকে আর দুরে থাকবো না।। খুব ভালোবাসা দিবো তোমায়।।
এতোই ভালোবাসা দিবো যে তুমি এই কষ্টের দিন গুলোকে ভুলে যাবে।
লোকটা ছায়ার ঠোঁটে গভীর স্পর্শ দিয়ে চলে আসে।
লোকটা সরে আসতে ছায়া আবছা চোখ দু’টো খুলে আবার বুজে নেয়।
এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি এক মাত্র ঘুমি ছায়াকে দিতে পারে।
চলবে,