তোর উঠানে বিকাল ছায়া?,২৩তম খন্ড,২৪ তম খন্ড (সব রহস্য খোলাসা)

0
3222

তোর উঠানে বিকাল ছায়া?,২৩তম খন্ড,২৪ তম খন্ড (সব রহস্য খোলাসা)
লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
২৩তম খন্ড

সকালের মিষ্টি রোদটা দেখার সৌভাগ্য হয় না কারোর।
কারন সকালে এতোই মেঘ এতোই বৃষ্টি হচ্ছে যে মনো হচ্ছে আজ পৃথিবীর বুক থেকে সমস্ত ময়লা ধুয়ে মুছে জাবে।
কতো না ভালো হতো যদি সত্যি বৃষ্টির পানি দ্বারা পৃথিবীর সব ময়লা দুর করা যেত তাই না।
–কি ভাবছো ছায়া?
ছায়া বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিল নামাজ শেষ করে।
হটাৎ নির্ঝর এর কথায় নির্ঝর এর দিকে তাকায়।
–ভাবছি যদি বৃষ্টির পানিতে পৃথিবীর সব ময়লা দুর হয়ে যেত তবে খুব ভালো হতো তাই না।
–তুমি ত বেশ unique চিন্তা ভাবনা করো ছায়া।
–আচ্ছা বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেলে কেমন হয়।
–তোমার খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে?
–হ্যাঁ বৃষ্টি তে খিচুড়ি বেশ মানাবে।
–তোমার ইচ্ছে হলে ত সেটা অবশ্যই রান্না হবে আমি সার্ভেন্ট দের বলে দিবো।
–না।
–কি না।
–আর সব সার্ভেন্ট দিয়ে করিও শুধু খিচুড়ি টা রুহির হাতের প্লিজ।।
–রুহি ভালো রান্না করে কি?
–হ্যা হাতের খিচুড়ি খেলে আপনার তাক লেগে যাবে।
–আচ্ছা বলবো কিন্তু আনার এখন কনফারেন্স মিটিং আছে।
আমি সেটা করে আসি তুমি এই চা বিস্কুট আর এই ফল গুলো শেষ করো ছায়া আমি জেন এসে কিছু না পাই।
নির্ঝর চলে গেল অন্য রুমে।
নির্ঝর অন্য রুমে যাবার কিছু সময় পর রুহি আসে রুমে।
–কি রে আমার পুচুকু কি করিস তুই?
–খাচ্ছি খাবি।
ছায়া বেশ বিরক্ত নিয়ে কথাটা বলে।
রুহি খিলখিল করে হেসে দেয়।
–হায় রে বাবুর আম্মু খেতে মোটে ইচ্ছে হয় না তাই না।
–সত্যি একটুও ইচ্ছে হয় না।
রুহি শুন৷
–হ্যাঁ বল এখানেই আছি।
–বলছি খিচুড়ি রান্না করবি?
–তুই খাবি?
–হুম।
–কেন করব না অবশ্যই করব।
আমি ত বলি এখনি করব।
–সত্যি!
–হ্যাঁ।
সকালে সবাই মিলে খাওয়া যাবে।
–কি মজা আই লাভ উ মেরে জান।
–আই লাভ উ টু মারি জান।
আয় হাঁটিয়ে আনি তোকে।
রুহি ছায়াকে নিয়ে বেলকনিতে আসে।
রুম দিয়ে হাঁটিয়ে আনে।
কিছু সময় পর বসিয়ে দেয়।
–আচ্ছা ভাইয়া চলে আসবে এখনি আমি গেলাম রান্না করতে ঠিক আছে।
–আচ্ছা।।
রুহি নিচে চলে আসে।
নির্ঝর কিছু সময় পর ছায়ার কাছে চলে যায়।
রুহি রান্না করছে আর সার্ভেন্ট রা সাহায্য করছে।
হটাৎ আবির এসে বলল,
–এই তোমরা কি করো?
–স্যার ম্যাম কে হেল্প করি।
–আমি করছি তোমরা অন্য কাজ করো।
–আপনি পারবেন স্যার।
–পারব না কেন সেতু যাও।
রুহি চোখ রসগোল্লা করে তাকিয়ে আছে।
আবির কি বলছে টা কি ছেলেটা একদম পাগল।
সেতু চলে যাওয়ার পর।
আবির গিয়ে রুহির কোমড় জড়িয়ে ধরে।
–ইয়া আল্লাহ আমি জানতাম হেল্প এর নামে তুমি এগুলা করবা ছাড়ো প্লিজ।
–আল্লাহ সমস্যা কি তোমার।
–তুমি এমন করো কেন আজব।
–কেমন করি।
–আমি কাজ করছি কেউ চলে আসলে কি হবে।
–কিছুই হবে না করো কাজ।
–উফ তোমার জন্য আমি পাগল হয়ে যাবো।
–আচ্ছা তার পর এক সাথে পাবনা গিয়ে ঘুরে আসব।
–আবির।
–রুহি!
রুহি জানে আবির কে কিছু বলে লাভ নাই তাই রুহি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খাবার এর দিকে মন দেয়।
রান্না র সবরা সময় জুড়ে আবির রুহিকে জ্বালিয়েছে।
রুহি বেচারি কিছুই বলে নি।
খাবার টেবিলে সবাই বসে।
–মেরি জান তুই আমার জন্য এতো সুন্দর খিচুড়ি রান্না করবি তাহলে আমি সারা দিন খিচুড়ি খাবো।
–থাক আর পাম দিও না।
–মুই পাম দেয় না। মুই সত্যি কথা কই।
— হ হ খাইয়া মুরে ধন্য করো।। তোমার খাওয়া দেখলে ভালো লাগে।
ছায়া হেসে দেয়।
–রুহি তোমার বান্ধবী বলছিল রুহির হাতের খিচুড়ি খেলে জীবনে ভুলবেন না।
বান্ধবী কিন্তু তোমার সত্যি কথা বলেছে
খুব সুন্দর হয়েছে।
–ধন্যবাদ ভাইয়া।
সবাই খাওয়া শেষ করে।
ছায়া একটু টিভি দেখতে বসে রুহিকে সাথে করে।
নির্ঝর কাজের জন্য রুমে চলে যায়।
আর আবির বৃষ্টির জন্য অফিসে যায় নি তাই অনলাইনে মিটিং এটেন্ট করতে যায়।
নয়লা বেগম তিনি নাতি/নাতনির জন্য কাথা সেলাই করতে বসেন।
যতোই হোক প্রথম নাতি/নাতনি বলে কথা।
রুহি আর ছায়া মিলে টিভি এনজয় করছে এমন সময় হটাৎ মেইন ডোরে কলিং বেল বেজে ওঠে।
রুহি উঠতে যাবে তখন সেতু বলে,
–ম্যাম আপনারা বসুন আমি খুলছি।
সেতুর কথায় রুহি বসে পরে।
হটাৎ কারোর চিৎকার শুনে রুহি ছায়া দু’জন পেছনে তাকায়।
পেছনে তাকিয়ে ছায়া থ হয়ে যায় রুহির হাত থেকে রিমোট টা পরে যায় টিভির।
তমা শাড়ি পরে এসেছে বাবার সাথে লয়ার নিয়ে।
তমার আবিরের নাম ধরে চিল্লাতে আছে।
তমার চিৎকার শুনে সবাই নিচে চলে আসে।
আবির তমাকে দেখে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নেয়।
নির্ঝর আবিরের পিঠে হাত দেয়।
আবির চোয়াল শক্ত করে নেয়।
–আবির আমি থাকতে তুমি ওই মেয়েকে বিয়ে কি করে করলে?
আমার সাথে তেমার ডিভোর্স হয় নি।
তোমায় আমি ভালোবাসি আবির।
তুমি আমায় তোমার বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমি ভেবেছিলাম তুমি আমায় নিতে আসবে কিন্তু না তুমি আসো নি উল্টে বিয়ে করে নিলে।
কেন আবির?
তমা যে অভিনয় করছে তা বুঝতে কারোর বাকি রইলো না।
আবির নিজেকে শান্ত করে বলে,
–আমি তোমায় আজও ভালোবাসি তমা।
ওকে বিয়ে করেছি শুধু সার্থের জন্য।
তুমি তোমার কাপড় নিয়ে আমার রুমে যাও।
রুহির জিনিস পত্র বের করে দেও।।
নয়লা বেগম কথাটা শুনে আবিরের গালে চাড় বসিয়ে দেয়।
–এই শিক্ষা দিয়েছি তোকে আমি।
মায়ের রাগ কন্ট্রোল করতে নির্ঝর নয়লা বেগম কে ধরে বসে।
–মা প্লিজ প্রেস চলে আসবে তুমি সিনক্রিয়েট করো না।
–প্রেস মিডিয়ার ভয়ে আবির কাপুরষ হয়ে যাবে নির্ঝর।
–না মা প্লিজ তুমি রেগো না।
নির্ঝর নয়লা বেগম কে থামিয়ে নেয়।
রুহির চোখ দিয়ে টুপটুপ করে অশ্রু পরছে।
আবিরের দিকে দৃষ্টি স্থির রুহির।।
কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।
রুহির অবস্থা দেখে ছায়া রুহির হাত ধরে।
নির্ঝর ছায়ার কাছে যায়।
–রুহি তুমি,
–ভাইয়া কি হচ্ছে এগুলা।
–কি হচ্ছে এগুলা এই মেয়ে এই তুই আমি থাকা সত্ত্বেও আমার স্বামীকে বিয়ে করিস লজ্জা লাগে না। (তমা)
–নির্ঝর ওকে থামতে বল (নয়লা বেগম)
–আবির।
নির্ঝর আবিরের দিকে তাকায়।
আবির তমাকে নিয়ে রুমে চলে যায়।
সেখান থেকে উকিল আর তমার বাবাও চলে যায়।
রুহি উপরের দিকে তাকায়।
তার সব কাপড় ছুড়ে ফেলছে তমা ঘরের বাইরে।
–মা আমায় অনুমতি দিন আমি আর এখানে থাকতে চাই না।
নির্ঝর রুহির কথা শুনে রুহির হাত দুটো ধরে বসে।
–রুহি বোন আমার ভাই এর মতো করে আমাকে শেষ বারের মতো বিশ্বাস করো আমি সব ঠিক করে দিবো।
সেতু রুহির কাপড় মায়ের রুমে রেখে দেও।
–বউ মা তুমি চলে গেলে আমারা কি নিয়ে থাকবো।
–তুই যাস না রুহি আমি কি করবো রুহি।
সবার দিকে তাকিয়ে রুহি দৌড়ে শাশুড়ী মায়ের রুমে চলে আসে।
হটাৎ এ কি ঝড় এলো।।
যা শুখের পরিবার তচনচ করে দিচ্ছে।
নির্ঝর চোখ বন্ধ করে শপথ নিলো।
–শেষ এটাই আমি আর অশান্তি হতে দিবো না।
একটু ভরশা রাখো মা।
ছায়াকে নিয়ে নির্ঝর উপরে চলে আসে।

চলবে,

তোর উঠানে বিকাল ছায়া?
২৪ তম খন্ড (সব রহস্য খোলাসা)
লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা

–নির্ঝর কি হচ্ছে এগুলা।
আমাকে বুঝান৷
প্লিজ রুহির সাথে,
–তোমার কি মনে হয়।
আমি কোন ক্ষতি হতে দিবো।
বিশ্বাস নেই আমার উপর।
–আছে ত খুব বিশ্বাস আছে তাই জন্য ত চুপ ছিলাম।
–কথা দিচ্ছি আবার সেই শান্তি ফিরিয়ে আনবো।
আবার সুখের মুখ দেখবো সবাই।
–সত্যি ত!
–৩ সত্যি।
নির্ঝর ছায়ার গালে হাত রেখে কথাটা বলে।
ছায়া চোখ বন্ধ করে নেয়।
অশান্তি গুলো মাথায় চেপে বসেছে।
এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির একটাই উপায় তা হলো এই রহস্য ভেদ করে আসল সত্যি জানা৷
–ছায়া!
–জি!
–গল্পটা শুনবে?
–কিসের গল্প।
–এক রাজার গল্প।
ছায়া চোখ খুলে তাকায়।
নির্ঝর এর চোখে মায়া আকা।
ছায়া মৃদু হেসে বলে,
–বলো শুনি।।
–ভালোবাসি।
–গল্প শুনাবেন না।
–আজ না সঠিক সময় এলে শুনাবো।
ঘুমাও।
নির্ঝর ছায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
একটা সময় ছায়া ঘুমিয়ে যায়।
নির্ঝর ছায়াকে বুকে নিয়ে ভাবতে থাকে পুরোনো দিনের কথা।
বয়স নির্ঝর এর তখন মাত্র ৬,
ছোট ভাইকে পৃথিবীতে আনতে গিয়ে মা মারা যায়৷
ছোট্ট ছেলেটি মাত্র ৬ বছরে যেন অনেক বড়ো হয়ে গেছিল।
নিজের স্কুলের টাই নিজে বাধা শিখে গেল।
জুতার ফিতা গুলো নিজে বাঁধা শিখে গেল।
যেখানে স্কুল যাবার আগে মাকে না পেলে ছেলেটি বাড়ি মাথায় করে নিতো।
সেখানে নিজের ব্রেকফাস্ট নিজে করে এখন।
কারোর খাইয়ে দেওয়া লাগে না।
৬ বছর বয়সে মাত্র ক্লাস ১ এ পড়ে সে।
বাবার অফিস।
ভাই এর জন্য একটা পালিত মা রাখা।
কিন্তু সে ভাই এর ভালো খেয়াল রাখতে পারে না।
ভাই কাঁদে সারা দিন কাঁদে।।
স্কুলে যাবার আগে যে ছেলে দৌড়ে দৌড়ে ব্রেকফাস্ট করত আজ সে ছেলে ভাই এর কপালে চুমু দিয়ে নিচে আসে।
এক জন ড্রাইভার তাকে পৌঁছে দেয় স্কুলে।
আর নিয়ে আসে।
এভাবে বেশ কিছু দিন কাঁটার পর,
নির্ঝর এর বাবা বুঝতে পারেন তার ছেলে দুটোর জন্য কোন মা লাগবে।
তখন তিনি ঘরে এলটা লাল টুকটুকে বউ নিয়ে আসেন।
যে পরির মতো আসে নির্ঝর এর জীবনে।
মায়ের মতো খেয়াল রাখে।
ভালোবাসে।
কিন্তু শুধু মাত্র একটা জিনিস এ সে নির্ঝর কে কষ্ট দিতো তা হলো আদনানের বিষয়ে।
নয়লা বেগম নিজের চিরটা জীবনে শুধু কষ্ট করেছে৷
নির্ঝর এর জন্য
আবিরের জন্য।
নিজের ছেলেটাকে ত সে কাছেই পায় নি।
ভাগ্যের এক বাজে খেলা এটা৷।
নির্ঝর এর বয়স তখন ৮।
একটা ফুটফুটে বাচ্চা কোলে এক ভদ্র মহিলা নির্ঝর এর বাবার কাছে আসেন।
ভদ্রমহিলা দেখতে বেশ স্মার্ট।
কিন্তু হিজাব পরিহিত সে।
কিছু সময় পর তার পিছন দিয়ে আসেন একজন ভদ্রলোক।
নির্ঝর লক্ষ করে বুঝতে পারে তারা এক সুখী দম্পতি।
তারা বাবার ঘরে যায়।
নির্ঝর তখন বই নিয়ে বাবার ঘরে যাচ্ছিল।
বাকি দুনিয়া, আবির, নয়লা বেগমের কাছে নির্ঝর এর বাবা ভীষন রাগী মানুষ হলেও,
নির্ঝর এর কাছে তার সব থেকে কাছের বন্ধু ছিল সে।
তখন নির্ঝর এর পড়ার টাইম ছিল।
তাই সে বাবার রুমে গেল।
ওই দম্পতির সাথে।
ভদ্রমহিলা নির্ঝর কে দেখে হাসি মুখে প্রশ্ন করে,
–কেমন আছো বাবা?
–আলহামদুলিল্লাহ আন্টি আপনি?
–আলহামদুলিল্লাহ বাবা।
আপনার ছেলেট ভীষন মিষ্টি মি.চৌধুরী।
–ধন্যবাদ মিসেস.খান।
বসুন।
তারা দু’জন বসে।
হটাৎ তাদের কোলে কথা মেয়ে বাবুটা কান্না শুরু করে।
তখন নির্ঝর বলে,
–আন্টি কিছু মনে না করলে ওকে আমার কাছে দিবেন?
–তুমি সামলাতে পারবে বাবা।
–হ্যাঁ আমি আমার ভাইকে সামলায়।
ভদ্রমহিলা নির্ঝর এর কোলে বাচ্চা টাকে দিলো।
সত্যি বাচ্চা টা নির্ঝর এর কোলে গিয়ে থেমে গেল।
–মিস্টার. চৌধুরী আজিজ রায়হায় এর প্রোমোশন টা আটকান প্লিজ।
–কেন?
–আমার পরিবার কে মারার চেষ্টায় আছে আমার নিজের ভাই।
–কি বলছেন।
–হ্যাঁ।
আমার বাবার দেওয়া সম্পত্তি দুই ভাগে ভাগ করার পর এক অংশ তার ছিল অন্য অংশ আমার৷
আমার তখন কিছুই ছিল না বাবা যখন মারা যায়৷
কিন্তু বড়ো ভাইয়ার হাতে চাকরি ছিল।
আর ছিল তার স্ত্রী।
তখন থেকেই আমায় আলাদা করে দেয়।
ধিরে ধিরে নিজের বড়ো বিজনেস দাঁড় করায়।
আমি আমার ছোট্ট মেয়ে ছায়ার নামে সব দিয়ে দিয়েছি।
আমার মৃত্যুর পর সব তার৷। কিন্তু আমরা মারা গেলে আমার মেয়েটার জীবন টা শেষ হয়ে যাবে। ওর ১৮ বছরের আগে মৃত্যু হলে ওর সম্পত্তি একটা এতিম খানা পাবে।
আমার বিশ্বাস আমরা থাকি না থাকি৷
১৮ বছর হতে হতে ও বুঝতে পারবে সব।
দয়া করুন।
আপনি প্রোমোশন টা আটকে দিন ভাইয়ার।
–দেখুন মিস্টার. খান আপাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই নিছক শুধু মাত্র সাক্ষীর ভিত্তিতে আমি তার প্রোমোশন আটকাতে পারি না।
–এই জন্য ত আপনার কাছে আসা।
–ক্ষমা করবেন এটা সম্ভব না।
সে দিন নির্ঝর সব শুনেছিল।
আর ঠিকই ধরেছেন বাচ্চা টা ছিল ছায়া।
সে দিন ওই দম্পতি চলে যাবার পরের দিন আজিজ রায়হান এর প্রোমোশন হয়।
আর তার মাত্র ৭ দিনের মাথায় মৃত্যু হয় সেই দুই দম্পতির।।
ব্যাস নির্ঝর ছোট থেকে ছায়ার উপর অত্যাচার হতে দেখে এসেছে
ছায়া শখ এর উপর সব সময় প্রভাব দিয়েছে তমা।
আজো তাই করছে।
নির্ঝর এর পিতা কখনো নিজের ছাড় অন্য কিছুকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে নি।
তাই আজ ছায়া মা বাবা হারা এতিম।
যদি নির্ঝর এর বাবা আদনান কে মেনে নিত তবে হয়ত আজ এমনটা হতো না।
নয়লা বেগম কে নিজের সন্তান ছাড়া থাকতে হতো না।
এটাই কারন নির্ঝর কখনো আদনান কে মারতে চায় নি।
তার মা যে তাদের জন্য অনেক করেছে।
যদি সে দিন প্রোমোশন আটকে দিতো আজিজ রায়হান এর তবে হয়ত আজ ছায়ার মা বাবা জিবিত থাকত।
ছায়াকে বাঁচিয়ে রাখার একটাই কারন ছিল। আজিজ রায়হান এর।
তমার সাথে তমার প্রতিটা পদক্ষেপ এর সাথে ছিল আজিজ রায়হান।
সম্পত্তি আর সম্পত্তি কেউই বুঝে না আজ মরলে যে কাল দু দিন।
অদ্ভুত এ দুনিয়া।
ছায়া ছোট থেকেই কষ্ট পেয়ে এসেছে।। কিন্তু এখন সময় তাকে তার বিচার দেওয়ার৷
উপযুক্ত প্রমান পেয়ে তবে আজিজ রায়হান আর তমাকে শাস্তি দিবে নির্ঝর।
যার জন্য সে অপেক্ষা করছে সঠিক সময়ের।
,
বর্তমান,
ছায়া গভীর ঘুমে মগ্ন।
নির্ঝর ছায়ার কপালে চুমু দেয়।
একটা বাচ্চা মেয়ে লাগে ছায়াকে।
,
এদিকে,
চোখের পানি গুলো যেন বাঁধ ভেঙেছে।
ঝরতেই আছে।
কোন মতেই থামছে না।
রুহি জানালার কাছে গিয়ে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে।
শাড়ির আঁচল নিচে পরেছে।
সে দিকে তার খেয়াল নেই।
শাশুড়ী মায়ের রুমে এই জানালা টা তার ভীষন প্রিয়।
কাজ না থাকলে এখানে এসে বসে থাকতো।
কিন্তু আজ যেন ভিশন কষ্ট গুলে এই জানালার বাতাস শুনতে পাচ্ছে।
কেউ না বুঝলেও প্রকৃতি যেন বুঝতে পারছে মনের মাঝে চাপা কষ্ট অনুভব করছে রুহি।
–মা রে আর কতো বসে থাকবি আয় খেয়ে নে।
হটাৎ নয়লা বেগমের কথায় ধ্যান আসলো রুহির।
–না মা তোমরা খেয়েছো এটাই অনেক।
–মা রে এমন করিস না মা।
–মা প্লিজ আমার গলা দিয়ে খাবার নামবে না।
নয়লা বোগম নিজের অসহায় চেহারাটা আবার এক বার রুহির মাঝে দেখতে পাচ্ছে।
যদিও নয়লা বেগমের কারন অন্য আর রুহির কারন অন্য তাও আজ নিজের বউ দের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেয়ে ভীষন চাপা কষ্ট অনুভব করছেন তিনিও।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here