দখিনা প্রেম,পর্ব ০৫
লাবিবা ওয়াহিদ
সেহের এদিক সেদিক তাকিয়ে জলদি তার মায়ের ঘরে চলে গেলো। কারণ, সৎমায়ের ঘরে একটা ল্যান্ডলাইন টেলিফোন আছে। সেহের দরজা লাগিয়ে ওয়ারড্রবের উপরে থাকা ল্যান্ডলাইনের নাম্বার টেপ করে কানে লাগালো।
—“হ্যালো?”
—“আবিদ ভাই!”
—“ফুল তুই?”
—“হ্যাঁ ভাইয়া আমি। ভাইয়া প্লিজ তুমি এবাসায় আসো প্লিজ!”
—“কেন কী হয়েছে? তোর কন্ঠ এমন কেন লাগছে? কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি ফুল?”
—“বেশী কিছু বলতে পারবো না ভাইয়া। তপা আপু আর মা বাসায় নেই। ওই রাফসান শয়তানটা বাসায় আছে। ভাইয়া দয়া আসো ওই ছেলে একদমই সুবিধার না!”
—“আচ্ছা আচ্ছা আসছি। তুই সাবধানে থাক আমি সবটা সামলাচ্ছি!”
আবিদের কথায় সেহেরের মনের উপর থেকে যেন বড় একটা পাথর সরে গেলো। রাফসান উপরে শুয়ে আছে, যেকোনো সময়েই আশেপাশে ঘেঁষবে তা সেহের বেশ জানে। সেহের টেলিফোনটা ঠিকভাবে রেখে দরজার সিটকিনি খুলে সাবধানে বের হলো। ঘর থেকে বের হতেই শুনতে পেলো রাফসান উপর থেকে “সেহের” বলে তাকে ডাকছে! সেহেরের গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো ভয়ে। সেহের রাফসানের ডাকে সাড়া না দিয়ে নিজের ঘরে দরজা লাগিয়ে থম মেরে বসে রইলো আর মনের মধ্যে আল্লাহর নাম জোপ করতে লাগলো৷ সেহের বাসা থেকে বের হতে পারছে না কারণ এই বিকাল সময়ে সেহেরের বাসার বাইরে যাওয়া একদম মানা। আর সৎমা যাওয়ার আগে কড়া করে বলে গেছে সেহের যেন তার অনুপস্থিতিতে বাড়ির বাইরে পা না রাখে। তাই সেহেরের নিজের ঘরটাই ভরসা। রাফসান চরম রেগে সিঁড়ি দিয়ে নামছে। এতক্ষণ এতো করে ডাকলো সেহের উপরে যাওয়া তো দূর সাড়াশব্দও করলো না। রাফসান এখন যা ভেবে রেখেছে তা করতে না পারলে তার মন শান্ত হবে না।
তাই সে দ্রুত পা চালিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেলো কিন্তু সেহেরকে পেলো না। রাফসানের আবার মেজাজ খারাপ হলো। সে চেঁচিয়ে হাঁক ছাড়লো সেহেরের নাম ধরে। কিন্তু তাও সাড়াশব্দ মিললো না। এবার রাফসান রান্নাঘরের দিক থেকে এসে সেহেরের ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো। দরজা খুলতে গিয়ে দেখলো দরজা বন্ধ। দরজায় জোরে জোরে নক করতে করতে শান্ত গলায় বললো,
—“সেহের! সেহের! দরজা খুলো! এই অসময়ে ঘরে দরজা লাগিয়ে বসে আছো কেন?”
সেহের টুশব্দও করলো না। এবার সেহেরের চোখে পানি চলে আসলো। রাফসান কী করতে চাইছে সেটা সেহের ভালোভাবে বুঝতে পারছে কিন্তু নিজেকে এর হাত থেকে বাঁচাবে কী করে? আবিদই বা কোথায়? এতো কেন দেরী করছে সেটা সেহের বুঝতে পারছে না। এদিকে রাফসান ডাকতে ডাকতে হয়রান হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের রাগ দমিয়ে রাখতে পারলো না। দরজা জোরে জোরে ধাক্কাতে ধাক্কাতে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে আর থ্রেড দিয়ে দরজা খুলতে বলছে নয়তো দরজা ভেঙ্গে সেহেরের অবস্থা খারাপ করে দিবে। এদিকে সেহের মুখে হাত দিয়ে নিশব্দে কেঁদেই চলেছে।
—“হে মাবুদ! আমাকে এই জানোয়ারটার হাত থেকে বাঁচান।”
—“মা*** এতিমের বাচ্চা দরজা খুল! তোর মা**বা***। আমি দরজা ভাঙলে তোরে গালতে গালতে মাইরাই ফেলমু দরজা খুল!!”
এদিকে আবিদ আর তার সাঙ্গপাঙ্গ তখনই দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো। পিছে কিছু মুরব্বিরাও ছিলো। দরজা হালকা ভেঁজানো ছিলো বিধায় কলিংবেল বাজাতে হয়নি। তারা ভেতরে ঢুকতেই রাফসানের অকথ্য গালিগালাজ বেশ শুনতে পেলো। আবিদ এসব শুনে তো রেগে আগুন হয়ে গেলো। আবিদ তেড়ে গিয়ে রাফসানের কলার ধরে দরজার সামনে থেকে সরিয়ে আনলো। রাফসান হঠাৎ চুপ হয়ে যাওয়ায় সেহের নিজের কান্না কিছুটা কমালো। হঠাৎ বিকট থাপ্পড়ের শব্দ শুনতে পেলো। এবার সেহেরের কান্না পুরোপুরি থেমে গেলো। সে চোখ মুছে মাথায় ভালোভাবে ঘোমটা দিয়ে নাক টেনে উঠে দাঁড়ালো। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কান পেতে শোনার চেষ্টা করলো বাহিরে ঠিক কী হচ্ছে। আবিদের কন্ঠ শুনতে পেতেই সেহের তৎক্ষনাৎ দরজা খুলে সামনে তাকালো। বাইরে এতো মানুষ দেখে সেহের অস্বস্তিতে পরে গেলো। আবিদ সকলের সামনে রাফসানকে আচ্ছাভাবে কেলাচ্ছে।
—“আমার বোনকে রেপ করবি তুই না? এতো সাহস? যার সিংহের মতো ভাই আছে তারে রেপ করার স্পর্ধা দেখাতে আসছিস? তোরে তো আজ মাটিতে পুঁতে রাখবো জানোয়ার! আর তোরা দাঁড়িয়ে আছিস কেন মশলাপাতি দে আরও!”
আবিদের কথায় তার বন্ধু-বান্ধবরাও আবিদের সাথে যোগ দিলো। বেচারা রাফসানের তো পুরো আধমরা অবস্থা। মুরব্বিরা ক্ষীপ্ত দৃষ্টিতে রাফসানকে দেখছে। রাফসানের প্রতিটা কথাই সে শুনেছে। এই কয়েকটা কুলাঙ্কারের কারণেই গ্রামে দুদিন পর পর এই ধর্ষণের দুঃসংবাদ তারা শুনতে পায়! আর আজ তো নরখাদককে চোখের সামনে দেখলো। ভাগ্যিস তারা সময়মতো এসেছিলো নয়তো দরজা ভেঙ্গে আরও খারাপ কিছু করে ফেলতো। সেহের মুখে মুখোশ বেঁধে কাঁদতে কাঁদতে আবিদকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। আবিদ রাফসানকে ছেড়ে সেহেরের মাথায় হাত দিয়ে আশ্বাস দিয়ে বলে,
—“কাঁদিস না বোন! দেখ আমরা চলে এসেছি। এই কুলাঙ্কার তোর কিচ্ছু করতে পারবে না। কাঁদিস না বোন কাঁদিস না!”
এক চাচা সেহেরের দিকে এগিয়ে এসে বললো,
—“কেঁদো না মা। আমরা সবাই এই বিষয়টা সামলে নিবো!”
সেহের ছলছল চোখে মাথা নাড়ায়। তখনই সৎমা আর তপা হাতে বেশকিছু শপিং ব্যাগ নিয়ে বাসায় এসে হাজির হয়। বাসায় এতো মানুষ দেখে সৎমা জোহরা দৌড়ে ভেতরে এসে দেখলো তার আদরের ভাগনে আধমরা হয়ে পরে আছে। রাফসান আপাতত বেহুঁশ!এ দৃশ্য দেখে জোহরার মাথায় যেন বাজ পরলো। সে শপিংব্যাগ রেখে দৌড়ে রাফসানের কাছে এসে বলা শুরু করলো,
—“রাফসান এই রাফসান? কী হয়েছে তোর আর তোর এই অবস্থা কেন?”
—“তোমার এই ভাগনে আমাগো চেয়ারম্যানের মাইয়ারে ধর্ষণ করার তালে ছিলো হেই খবর জানো?”
এক মুরব্বি কথাগুলো বললো। জোহরা অবাক হয়ে মুরব্বির দিকে তাকালো। ভাঙ্গা গলায় বললো,
—“আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না!”
—“তা কেন বুঝবেন আপনি? আমার বোনকে এইসব জানোয়ারের কাছে একা ফেলে এদিক সেদিক ঘুরতে বের হোন! সামান্য জ্ঞান বিবেচনা নেই আপনার যে একটা মেয়েকে একটা ছেলের কাছে একা ফেলে গেলে ঠিক কী পরিস্থিতি হতে পারে? সারাদিন কামলার মতো খাটান, অত্যাচার করেন তা দিয়ে কী পেট ভরে না? আপনারা কী মানুষ?” পাশ থেকে আবিদ কথাগুলো বললো। আবিদের কথা শুনে জোহরা রক্তচক্ষু দৃষ্টি নিয়ে আবিদের দিকে তাকালো। জোহরা এই আবিদকে একবিন্দুও সহ্য করতে পারে না। তখনই জেঠু, দাদীমা আর চাচী ছুটে আসলো বাড়িতে। দাদীমা তো সেহেরকে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখলো। সেহের একদম চুপ হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জোহরা চাইলো তার ভাগনের দোষটা কাটাতে তাই সে সেহেরের ঘাড়ে দোষটা চাপাতে নিজেকে প্রস্তুত করলো।
—“আমার রাফসান যে ওকে কিছু করেছে তার প্রমাণ কী? ওই হারামজাদী তো গিরিঙ্গিবাজ! এ তো ক্ষণে ক্ষণে নিজের রূপ বদলায়। নিশ্চয়ই এই মেয়ে আমার রাফসানরে কালাযাদু করে বশ করসিলো আর খারাপ কাজে আসার জন্য অনুপ্রেরণা দিছিলো নয়তো আমার এতো ভালো ভাগনেটা এমন মাইর খায়? এই মেয়ের চরিত্রে দোষ নাই তার কী গ্যারান্টি আছে? আমি কিছুতেই বিশ্বাস করি না আমার রাফসান এসব করতে পারে!”
জোহরা রাগে কী বলে ফেললো সে নিজেও ঠাহর করতে পারলো না। আবিদ এদিকে হাত মুঠিবদ্ধ করে রাগ দমানোর চেষ্টা করছে। এই মহিলা যে কতো নিচে নামতে পারে তা আবিদের জানা নেই। গিরিঙ্গিবাজ কে সেটা ভালোই বোঝা যাচ্ছে। সেহের ছলছল দৃষ্টিতে জোহরার দিকে তাকালো। শেষ অবধি নিজের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠবে সেটা যে সেহের ভাবতেই পারেনি। আপন মানুষগুলো ক্ষণে ক্ষণে কীভাবে রূপ পাল্টায় সেটা হয়তো সেহেরের চেয়ে বেশি আর কেউ জানে না। এক মুরব্বি তৎক্ষনাৎ জোহরার কথার প্রতিবাদ করে বলে,
—“আমরা না দেখে, যাচাই না করে কোনো কথা বলি না। নিজের চোখে দেখসি এই বেয়াদব, শুয়োর কীভাবে ফুলের মতো নিষ্পাপ মাইয়াটারে হুমকি দিয়াসে, অসভ্য ভাষায় কথা কইসে। এরে তো নাড়ু কইরা, মাথায় গোল ঢাইল্লা গাধার পিছে বসাইয়া গ্রাম থেকে বাইর করা উচিত। এদের মতো কীটের জন্য আমাগো ভালোবাসার গ্রাম আইজ ধ্বংসের পথে।”
এবার জোহরা মুরব্বিদের উপরে কথা বলার সাহস পেলো না। সে এক দৃষ্টিতে সেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে। তার শরীর যেন দাউ দাউ করে জ্বলছে। মুরব্বিরা কিছু কথা বলে চলে গেলো। তাদের পেছনে আবিদের বন্ধুরা মিলে রাফসানকে আলগা করে ধরে নিয়ে গেলো। তপা তৎক্ষনাৎ এসে সেহেরের গালে চড় লাগিয়ে দিয়ে বললো,
—“এই অপয়া মেয়ে আর কতো আমাদের সংসারে আগুন লাগাবি? এই পরিবারটা ধ্বংস করার জন্যে তো দেখছি উঠে পরে লাগছিস! কী চাস তুই স্পষ্ট করে বল তো? আর কতো খাবি এই পরিবারকে?”
এবার দাদীমা তপার গালে চড় লাগিয়ে দিলো। এতোই জোরে দিলো যে তপা তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে বসে পরলো। সেহের নিশ্চুপ হয়ে কেঁদেই চলেছে। দাদীমা হুংকার ছেড়ে বলে,
—“নাগিন মাইয়া!! অপয়া তুই নাকি আমার ফুল? তোরা দুই মা মেয়ে এসেই তো আমার সংসারটারে নষ্ট করে দিছোস! দুইটা তো একই রক্তের বিষাক্ত ছোবলময়ী নাগিন! সাহস তো কম না আমার সামনে দাড়াইয়া আমার ফুলরে থাপ্পড় দেস! এমন মাইর মারমু না তোর ওই গিরিঙ্গিবাজ মায়ের নামও ভুইল্লা গিল্লা ফেলবি!”
তপা গালে হাত দিয়ে রেগে দাদীমার দিকে তাকিয়ে রইলো। জোহরা ছুটে এসে মেয়েকে উঠিয়ে দাঁড় করালো আর চরম রেগে বললো,
—“মা আপনি আপনার সীমানা পার করবেন না! আমার বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে মারার সাহস কী করে হয়?”
—“আর তোর সাহস কেমনে হয় আমার ফুলরে কামের বেটির মতো খাটানের। শুধু কী খাটাস? আধমরা কইরা বাসা থেকেও বের করে দেস! মনে রাখিস এই বাড়ি আমার স্বামী নিজ হাতে তৈরি কইরা দিয়া গেছে তাই আমার তোর থেইকাও বেশি অধিকার আছে এই বাড়িতে। আগেই উচিত ছিলো এই চড় থাপ্পড়ের থেরাপি শুরু করা তইলে তোরা বেকটিনে লাডির মতো সোজা হইতি!”
—“মুখ সামলে কথা বলো বুড়ি! এক পা অলরেডি কবরের তলায় চলে গেছে তাও দেখছি তোমার তেঁজের শেষ নাই! আল্লাহ এতো ভালো ভালো মানুষরে নিয়া যায় আর এই কুটনি বুড়িরে নেয় না কেন?”
তপার কথায় দাদীমা চুপ করে থাকলো না আরেক থাপ্পড় বসিয়ে দিলো তপার গালে। হয়তো চুপ থাকতো এই কথায় কিন্তু তপা যে তার রক্ত না তাই তপার তেজ সে নিজেই ঘুচাঁবে! অনেকদিন পর এই সুযোগ পেয়েছে সহজে হাতছাড়া করবে না।
★
সা’দ বারবার ঘড়ি দেখছে আর এদিক সেদিক তাকাচ্ছে৷ সকলেই বিরক্ত এখন। রাগে সা’দের চোয়াল শক্ত হয়ে আছে। কারীব দূরে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। কথা বলা শেষ হতেই কারীব দৌড়ে সা’দের কাছে আসলো। কারীব হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
—“তুষার নাকি নিজের গাড়িতে করে নরসিংদী যাবে আর আমাদের অপেক্ষা করতে না বলে চলে যেতে বলেছে!”
এবার সা’দ যেন আরও রেগে গেলো। কপট রেগে শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো,
—“সেটা আগে বলে দিলে কী হতো? আমাদের রওনা হওয়ার কথা ছিলো ভোর সাড়ে পাঁচটায় আর ওই রাস্কেলটার জন্য ফুল ওয়ান আওয়ার লেইট! ফেমাস পাবলিক ফিগার বলে যা ইচ্ছা তা করবে নাকি? আমাদের কী মানুষ বলে মনে করে না? কীসের এতো অহংকার এর? রাস্কেল একটা!”
—“রিলেক্স স্যার! ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এমন দু-একটা ক্যারেক্টার থাকেই যারা পাবলিকের কাছে সৎ আর আমাদের মতো কর্মচারীদের সামনে ত্যাড়া! আমরা তো জানি এই মুখোশ পড়া মানুষগুলা কেমন ফাজিল!”
—“হয়েছে এখন সকলকে বলো যার যার গাড়িতে উঠতে, ২ মিনিটের মধ্যেই গাড়ি ছাড়বে। গো ফাস্ট!”
বলেই চোখে সানগ্লাসটা দিয়ে গাড়ির পেছনের সিটে বসে পরলো। কারীব এক কর্মচারীকে সবটা বুঝিয়ে দিয়ে নিজে এসে সা’দের গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে সিটবেল্ট বেঁধে নিলো। সা’দ একমনে বাইরের ভোরের শহরটা দেখছে ব্যস্ত। তুষার একজন প্রখর অভিনেতা। তরুণ প্রজন্মে তুষারের নাম যেন সকলের মুখে মুখে। তুষার সকলের সামনে ভালো ব্যবহার করলেও সে অতিরিক্ত অহংকারী এবং ঘাড়ত্যাড়া। এই ধরণের লোক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে না থাকলে যেন হয়-ই না। সা’দ তার বাবার মুখে শুনেছিলো তাদের সময়ে একজন আকবর নামের একজন অভিনেতা ছিলো। এর ভাষা এবং চরিত্র নাকি জঘন্য ছিলোম কিন্তু পাবলিকের সামনে সে ভালো মানুষ। প্রতিদিন স্মোকিং আর ড্রিংকস না করলে যেন তার হতোই না। তাও সে কীভাবে কীভাবে যেন অভিনিয় জগতে জায়গা করে নেয়। মাঝেমধ্যে মাতাল হয়ে অভিনয় করলেও কেউ ধরতে পারতো না সে আসলে স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক। আকবরের একমাত্র পাবলিসিটির জন্যেই প্রডিউসার, ডাইরেক্টররা তাকে ফিল্মে নিতে বাধ্য হতো। এদিকে আকবরের মতোই এই তুষার। যাকে সহজ ভাষায় বলে, “জাতে মাতাল তালে ঠিক!” এই তুষারকে যেমন সা’দ সহ্য করতে পারে না তেমনই তুষার সা’দকে পছন্দ করে না। তুষারের সা’দকে পছন্দ না করার কারণ অবশ্য আছে। তুষারের গার্লফ্রেন্ড ছিলো নাম তার রাজিয়া। সে পেশায় একজন মডেল। সে কীভাবে সা’দের প্রেমে পরে গিয়েছিলো যার ফলে রাজিয়া এবং তুষারের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এই একটা ঘটনার জন্যই তুষার সা’দকে সহ্য করতে পারে না। চাইলে বড়রকম শোধও নিতে পারতো কিন্তু পাবলিকের সিমপ্যাথির জন্য সে কিছুই করতে পারে না। তবে সে মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করেই স্টেপ ভুল করে। এতে করে সে পৈশাচিক আনন্দ পায়।
চলবে!!!